দাম্পত্যে রাগ অভিমান ও কষ্ট

মানব মনের অনুভূতির বহিঃপ্রকাশ বিষয়টি বেশ চমৎকার ও আকর্ষণীয়। আপনার অবচেতন মন যদি কারো প্রতি রাগ, অভিমান বা কষ্ট পোষে রাখে তবে তা আপনি মুখে নয় বরং তা আচরনে প্রকাশ করবেন।

তবে মনোবিজ্ঞানীদের মতে- ভালোবাসার সম্পর্কে রাগ, অভিমান থাকা ভালো। এতে সম্পর্কের ভিত্তি মজবুত হয়।

অহেতুক রাগ এড়িয়ে চলুনঃ

রাগ হল মানুষের মনের হিংসাত্মক মনোভাব। রাগ বা ক্ষোভ মানুষের মনে বেশীদিন জমা থাকলে এক পর্যায়ে অপর ব্যক্তির উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এছাড়া যার মনে ক্ষোভ অনুভূতি কাজ করতে থাকে সে মানসিক দিক থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রাগ যে কারো প্রতি সৃষ্টি হতে পারে। তবে দাম্পত্যে জীবনে অতিরিক্ত রাগ এড়িয়ে চলা ভালো।

অভিমানের মূল্যায়ন বুঝতে হবেঃ

অভিমান বিষয়টি দারুন একটি অনুভূতি যা দাম্পত্য জীবনে থাকা প্রয়োজন। ‘অভিমান অনুভূতি’ মূলত কাছের মানুষের সাথেই ঘটে থাকে। অভিমান হয় অপর ব্যক্তির প্রতি ভালোবাসা ও প্রত্যাশা থেকে। তবে ব্যাক্তির অভিমান কে সর্বক্ষণ অবহেলা করলে সম্পর্ক খারাপ দিকে যেতে পারে।

অযথা কষ্ট নিতে নেইঃ

সুখ-দুঃখের অঙ্গিনায় তৈরি হয় কষ্ট। কষ্ট যেকোন কারনেই আসতে পারে। হতে পারে পারিবারিক বা ব্যক্তিগত কারন। তবে কষ্ট ভাগাভাগি করে নিলে দাম্পত্য জীবনে এর প্রভাব অনেকটা কমে আসে।

গবেষণায় দেখা গেছে – রাগ যাদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলোর একটি, তাদের হৃদরোগ হওয়ার সম্ভাবনা অন্যদের তুলনায় দ্বিগুণ।

রাগ, অভিমান ও কষ্টের নেতিবাচক দিকঃ

অতিরিক্ত রাগের ফলে দাম্পত্যে কলহ বাড়তে থাকে।

রাগ ও কষ্ট পরস্পর শ্রদ্ধাবোধ নষ্ট করে, অনেক সময় মানসিক দিক থেকে উভয়কে ক্ষতিগ্রস্ত করে।

অভিমান ও রাগ থেকে সম্পর্কে প্রতিযোগিতা দেখা দেয়।

অতিরিক্ত কষ্টের ফলে পরস্পরের সম্পর্কের প্রতি অনীহা কাজ করে।

রাগ, অভিমান কষ্টেরও কিছু ইতিবাচক দিক আছেঃ

সঙ্গীর রাগ ভাঙ্গানোর ফলে সম্পর্ক ক্ষীর মধুময় হয়।

অভিমান শেষে ভালোবাসা ও প্রত্যাশার স্বীকৃতি ঘটে।

কষ্ট বাস্তবতা শেখার ফলে পরবর্তী পথ চলায় পরস্পরের প্রতি আস্থা বাড়ে।

সম্পর্কে সচেতনতার বৃদ্ধি ঘটে।

সম্পর্কে রাগ, অভিমান, কষ্ট বিষয়গুলো ঠিক যেন টক, ঝাল, মিষ্টি স্বাদের মত যা দাম্পত্যে জীবনে উপভোগ করা দরকার। তবে এ বিষয়গুলো বেশীদিন মনে পুষে না রাখাই ভালো। এ পরিস্থিতি গুলোতে দুজন সমঝোতায় আসতে পারলে ভালোবাসা ও সম্পর্ক আগের চেয়ে মধুর হয়।

কিছু পরামর্শ নিতে নেই এতে দাম্পত্যে সম্পর্ক নাজুক হয়!

দাম্পত্য সম্পর্ক সুখের হোক বা না হোক – সেই সম্পর্কের ভবিষ্যৎ কেমন হবে তা ঠিক করার দায়িত্ব একমাত্র আপনার। অনেক সময়ই সম্পর্কের নানা সমস্যায় আমরা পরামর্শ চাই কাছের বন্ধু বা আত্মীয়দের কাছে। কখনও কখনও সে সব পরামর্শে কাজ হয়, কখনও আবার হয় না।

তবে কাজ হোক বা না হোক, পরিস্থিতির দায়িত্ব আপনাকেই নিতে হবে এবং নিজেই পথটা খুঁজে বের করতে হবে। এ সব ক্ষেত্রে বন্ধু বা আত্মীয়দের পরামর্শগুলোর ব্যাপারেও সাবধান থাকা দরকার।

স্বামীর সঙ্গে তর্ক কোরো নাঃ

কোনও মতেই এই পরামর্শে কান দেবেন না! তর্ক করলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হতে পারে ঠিকই, কিন্তু সেই ভয়ে চুপ করে থাকাটা কোনও কাজের কথা নয়। নৈর্ব্যক্তিক হয়ে বিষয়টা পর্যালোচনা করা এবং কোথায় আপনাদের দু’জনেরই ভুল হচ্ছে, সেটা খতিয়ে দেখা দরকার। যদি মনে হয় আপনাকে বিনা কারণে দোষী করা হচ্ছে, তা হলে চুপ করে না থেকে মুখ খুলুন। সম্পর্ক সফল করতে দু’জনেরই সক্রিয় ভূমিকা থাকা দরকার।

স্বামীকে পালটানোর চেষ্টা করোঃ

এটা আর একটা ভুল পরামর্শ। কোনও দুটো আঙুল যেমন একরকম হয় না, তেমনি দু’জন মানুষও একরকম হতে পারেন না। সেই পার্থক্যটা মেনে নিতে হবে। স্বামী বা পার্টনারকে যদি পালটাতে চেষ্টা করেন, সেটা হবে আপনার সবচেয়ে বড়ো ভুল। পরস্পরের ব্যক্তিস্বাতন্ত্রকে মেনে নিয়ে জীবনটা গড়ে তোলার চেষ্টা করুন।

সংসারের রাশ নিজের হাতে রাখোঃ

সম্পর্কের মূল কথা হল দু’জনের মধ্যে একটা ভারসাম্য বজায় রাখা। সব কিছুর রাশ নিজের হাতে রাখলে মাথায় অতিরিক্ত দায়িত্ব নিয়ে ফেলবেন, এবং তা থেকে এক সময় হতাশা আর ভুলবোঝাবুঝি তৈরি হবে যা যথেষ্টই এড়ানো সম্ভব। তাই সব দায়িত্ব নিজের উপর রাখবেন না, স্বামীর সঙ্গে ভাগ করে নিন।

স্বামীর ফোনের উপর নজর রাখোঃ

এরকম পরামর্শ শুনলে সেই পরামর্শদাতা ব্যক্তিকে এড়িয়ে চলাই ভালো। অপরের ফোন ঘাঁটা একইসঙ্গে অনৈতিক এবং অভদ্রতার চূড়ান্ত উদাহরণ। স্বামীর ব্যাপারে কোনও কারণে আপনার সন্দেহ তৈরি হতেই পারে, কিন্তু তার জন্য স্বামীর ফোন লুকিয়ে দেখতে যাবেন না। বরং সরাসরি স্বামীর সঙ্গে কথা বলুন।

দাম্পত্য সম্পর্কে দুজনের মনের যোগাযোগের পথটা হওয়া চাই মসৃণ। হঠাৎ করেই সঙ্গীর চেনা আচরণে অচেনা সুর, ছোটখাটো ভুলত্রুটিতে বড় চেহারা দাম্পত্যে অস্থিরতা বাড়িয়ে তুলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে তৃতীয় পক্ষের উপস্থিতিতে সম্পর্কে এমন সমস্যা সৃষ্টি হয়। দুজনের মনের যোগাযোগের পথ হতে হবে দূর্দান্ত;

পারস্পারিক বুঝাপড়া সমান্তরাল। তাই নিজেদের অকৃত্রিম সম্পর্ককে টিকিয়ে রাখতে দুজনেই যথেষ্ঠ সচেতন হোন।

ভালোবাসা দিয়েই ভালোবাসা আদায় করে নিতে হয়!

পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত এবং আলোচিত শব্দ “ভালোবাসা”। ভালোবাসা মূলত সাধনার বিষয়। আপনি যত বড় সাধক হবেন তত সফল হবেন। আপনি আজ উজাড় করে দিবেন পরবর্তীতে এর পরিমাণ উত্তম কিছু পাবেন এটাই প্রকৃতির ধর্ম। প্রকৃতির এ নিয়ম যদি আপনি বিশ্বাস করে থাকেন তাহলে হতাশায় না ভুগে ভালোবাসা দিয়েই ভালোবাসা আদায় করে নিন।

প্রত্যাশা রাখবেন নাঃ কি পেলাম, কতটুকু পেলাম এ নিয়ে হিসেব-নিকাশ করবেন না। মানুষ বেশী কষ্ট পায় যখন সে মনে প্রত্যাশা রাখে।

তার প্রিয়জন হনঃ আপনি তখনই একজন মানুষের প্রিজন হতে পারবেন যখন আপনার সঙ্গ তার ভালো লাগবে। তাই সম্পর্কে বন্ধুত্ব সম্পর্ক গড়ে তুলন।

স্বার্থপর হবেন নাঃ ভালোবাসার বিষয়ে স্বার্থ থাকতে নেই আর প্রকৃত ভালোবাসয় স্বার্থপরতা নেই ।

বিশ্বস্ত হনঃ যে কোন সম্পর্কে বিশ্বাস অতি গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যখন কারো বিশ্বস্ততা অর্জন করতে পারবেন তার কাছে আপনার চেয়ে মূল্যবান কিছু থাকবে না। সে আপনার কাছেই আসবে বার বার।

প্রয়োজন হবার চেষ্টা করুনঃ তার প্রয়োজন হওয়ার জন্য অবশ্যই ব্যক্তির কাজে সহযোগী হওয়ার চেষ্টা করুন, এর ফলে আপনাদের বোঝাপড়া বিষয়টি মজবুত হবে। প্রয়োজন থেকেই কিন্তু প্রিয়জন হওয়া সম্ভব।

ছাড় দিনঃ সম্পর্কে তখনই ফাটল ধরে বা ব্যক্তি অপছন্দের কারন হয়ে যায় যখন সম্পর্কে ছাড় দেয়ার বিষয়টি থাকে না। হারাবার ভয় হবেই এটাই স্বাভাবিক। পোষা পাখির মত আটকে রাখবেন না। মানুষটি যদি আপনাকে ভালোবাসে যে যতদুরেই যাক আপনার কাছে ফিরবেই।

ঈর্ষাঃ ব্যক্তিকে ভালোবাসেন আর মনে ঈর্ষা জন্মাবে না তা আসলে হয় না, তবে এর পরিমাণ যেন তীব্র না হয়। কারন অতিরিক্ত ঈর্ষাবোধ একটি রোগ ও সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার সম্ভবনা বাড়িয়ে দেয়।

হতাশা হবেন নাঃ চিন্তা করুন তো; দিন গড়িয়ে যেমন রাত আসে তেমনি রাত পেরিয়ে আবার ভোর হয়! তাই আজ যা কিছু করবেন সময় আপনাকে ফলাফল দিবেই তাই হতাশ হবেন না।

ভালো লাগা বা সম্পর্ক বিষয়টি চট করে হয়ে গেলেও ভালোবাসা তৈরি হয় ধীরে ধীরে। ভালোবাসা গড়ে উঠে পরস্পরের বোঝাপড়ার মধ্যে দিয়ে। সম্পর্ক আছে কিন্তু ভালোবাসা নেই বা একপক্ষের অনুভূতি এ বিষয়টি অনেক সম্পর্কেই দেখা যায়। আর এ সম্পর্ক গুলো প্রতিনিয়ত হতাশায় ভুগে, অতঃপর কারো কারো ক্ষেত্রে হয়ে যায় বিচ্ছেদ।

ভালোবাসা নিয়ে ‘ টমাস ফুলার বলেছেন -ভালোবাসতে শিখুন, ভালোবাসা দিতে শিখুন তাহলে আপনার জীবনে ভালোবাসার অভাব হবে না।

বিয়ে নিয়ে ভয়?

কারও বিয়ের ছবি বা ভিডিও অথবা সিনেমা-নাটকে বিয়ের গল্প দেখলে অবচেতন মনে যে কেউ নিজের বিয়ের কল্পনা করে ফেলেন; স্বপ্ন বুনতে থাকেন। আবার বিয়ে নিয়ে অনেকের মাঝে ভয়ের অনুভূতিও কাজ করে এ বিষয়টি হয়তো অনেকেরই অজানা।

বিয়ে করতে ভয় পাওয়ার বিষয়টিকে একটি মানসিক রোগ হিসাবে সনাক্ত করা হয় যার নাম “গ্যামোফোবিয়া”। গ্রিক ভাষায় গ্যামো মানে বিয়ে আর ফোবিয়া মানে ভয়। বিয়ে ভীতি বিষয়টি আজকাল অনেক তরুন-তরুণীদের মাঝে ব্যাপক দেখা যাচ্ছে।

লক্ষণঃ

যাদের গ্যামোফোবিয়া হয় তারা সাধারণত সম্পর্কের ব্যাপারে বেশ উদাসীন থাকে, এসব নিয়ে সিরিয়াস কোনো কথা উঠলে এড়িয়ে যেতে চায়। এছাড়া, বিয়ে সংক্রান্ত যেকোনো আলোচনা তারা অপছন্দ করে। এমনকি বিয়ের আয়োজনেও তারা যেতে চায় না। বিয়ের ফর্মালিটিজকে তারা বেশ অপছন্দ করে। তারা সবসময়ই মনে করে সম্পর্কে জড়িয়ে যাওয়াটা হয়ত ভুল সিদ্ধান্ত হবে। এই সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগতে থাকাও গ্যামোফোবিয়ার একটি লক্ষণ।

প্রতিকারঃ

গ্যামোফোবিয়া হয়েছে কিনা এটি অনেকক্ষেত্রে বুঝার আগেই সম্পর্কগুলো নষ্ট হয়ে যায়। কমিটমেন্টে কারো অনীহা থাকলে তাকে যেভাবে তিরস্কার করা হয়, বিপরীতে সে আবার যে প্রতিক্রিয়া দেখায় এর ফলেই সম্পর্ক তিতকুটে হয়ে যায়। ফলে যে মানুষটা গ্যামোফোবিয়ায় ভুগছে সে আরো বেশি সম্পর্কের প্রতি বিরক্তিবোধ করে। আর যে গ্যামোফোবিয়া আক্রান্ত মানুষের সাথে সম্পর্ক নষ্ট করে ফেলেছে মাত্র সেও হয়ত গ্যামোফোবিয়ায় ভুগতে শুরু করবে একটা সময়।

কারনঃ

– ব্যাক্তি স্বাধীনতা হারানোর ভয়।

– দায়িত্ব নেয়ার ভয়। – সঙ্গীর থেকে প্রতারণা হবার ভয়।

– পারিবারিক কলহ হবে এ নিয়ে দুশ্চিন্তা।

– বিয়ের খরচ।

– বন্ধু মহল হারানোর ভয়।

– অনেকেই স্বাবলম্বী না হয়ে বিয়ে করতে চাইছেন না।

– অল্প বয়সে বিভিন্ন সম্পর্কজনিত জটিলতা।

– পরিবারের বা আশেপাশে কারও বিচ্ছেদ থেকে মনে জন্মানো নেতিবাচক ধারণা।

বিয়ে নিয়ে ভয়ের মাত্রা সবার এক নয়। তাই বিয়ে নিয়ে যাদের ভয়ের মাত্রা কম তাদের ক্ষেত্রে আশেপাশের নিকট আত্মীয়স্বজন বা বন্ধুবান্ধব বিয়ের ইতিবাচক বিষয়গুলো বোঝালে তারা স্বাভাবিকভাবে বিয়ে তে রাজি হবে। তবে যাদের ভয়ের মাত্রা বেশী তাদের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি আয়ত্তের মাঝে ফিরিয়ে আনতে এ রোগের জন্য ডাক্তার দেখাতেই পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ফোবিয়ার সবচেয়ে উপযোগী চিকিৎসা হচ্ছে হাইপোথেরাপি, সাইকোথেরাপি ও নিউরো-লিঙ্গুইস্টিক প্রোগ্রামিং।

ভালো সঙ্গী হতে হলে

‘অমরসঙ্গী’ হওয়ার তাগিদ দিলে হয়তো রোমান্টিকতার বাড়াবাড়িই হবে। তবে আরও একটু বেশি হলে ক্ষতি কী?… সফল ও ভালো জীবনসঙ্গী সবারই চাওয়া থাকে। ‘সঙ্গী রোমান্টিক হবে। আমার সব কথা বুঝবে। দারুণ সুন্দর সময় কাটাব।’ প্রত্যেকেই ভাবেন, তাঁর সঙ্গী তাঁকে ঘিরেই নতুন জীবন রচনা করবেন—জীবন কাটাবেন। তাঁর রাজ্যে তিনি একাই রাজত্ব করবেন। এখানে অন্য কেউ অপরের ভাবনায়, প্রকাশ্যে, ফেসবুক অথবা মোবাইলে কাজে-অকাজে ভাগ বসাবে না। দুজনের পারস্পরিক মুগ্ধতা যেন সারা জীবন থাকে।

আবার পারিবারিক সম্বন্ধ করে হওয়া বিয়ের ক্ষেত্রে বিয়ের পর এই ভালোবাসাবাসীর পর্বটা শুরু হয়। বিয়ের মূল লক্ষ্য যেটা থাকে সেটা হলো, মনের মধ্যে যে মিলনের আকাঙ্ক্ষা তার নান্দনিক বাস্তবায়নে নিজেকে প্রকাশ করা, রোমান্টিকতা। আর এসব ঘিরে রয়েছে সামাজিকতা। এসব নিয়েই তো বিয়ে।

মার্কিন লেখক মিগনন-ম্যাকফলিন যেমনটা বলেছেন, দায়িত্ব দু-তরফেরই। সম্পর্ক হবে এ রকম; একজীবনেই বারবার প্রেমে পড়া চাই একে অপরের। শুধু তো দায়িত্ববোধ না, পরস্পরের প্রতি মুগ্ধতা না থাকলে ভালো সঙ্গী হয়ে ওঠা দুষ্কর। আগে থেকে পরিচয় না থাকলে পারিবারিক সম্বন্ধ করা বিয়েতে আরেকটু কাঠখড় তো পোড়াতেই হয়। মার্কিন দুঁদে মঞ্চকর্মী রবার্ট ব্রল্টের কথাটাই বা বলি না কেন! সংসার রঙ্গমঞ্চে দুজনকে হতে হবে দুজনার। আর ভালোবাসার প্রশ্নে সারা পৃথিবীর বিরুদ্ধে দরকারে এককাট্টা হয়ে লড়াই।

রম্যলেখক রবার্ট কুইলেন বলেছেন, সুখী ও ভালো সম্পর্ক হলো—যুগলের দুজনই একে অপরের প্রতিÿআস্থাশীল, সহৃদয়, সদয় এবং সংবেদনশীল।

তাহলে কী করতে হবে?

বিয়েটা যদি হয় সম্বন্ধ করে:

দুজনের পছন্দ-অপছন্দ বিয়ের আগে আলোচনা করে নিলেই ভালো হয়।

কারও বিয়ের আগে প্রেম থাকতেই পারে। সে ব্যাপারটা দুজনেই দুজনের স্মৃতি থেকে ঝেড়ে ফেলতে পারবেন কি না, নিজেকে জিজ্ঞেস করুন। এই বোঝাপড়া যত আগে হবে ততই ভালো।

নিজের মতের বিরুদ্ধে বিয়ে করা উচিত নয়। এতে উভয়ের পরিবার ও নিজেদের মধ্যে ঝামেলা বাড়বে।

নারীদের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ যদি না থাকে; তা শোধরানোর মানসিকতা থাকতে হবে।

পারস্পরিক দুর্বলতাগুলো জানতে ও জানাতে পারলে ভালো। এ কারণে, যাতে সে ব্যাপারে আপনি ‘কেয়ারিং’ হতে পারেন। আপনার ওপর আপনার সঙ্গীর আস্থা যেন বাড়ে। অযথা সেসব বিষয় নিয়ে জীবনকে তিতকুটে বানানোর কোনো মানে নেই।

বিবাহিত জীবন টিভির সিরিয়াল— ডেইলি সোপ বা অপেরা নয়। গোপন গল্পগুলো জীবননাট্যের ক্লাইমেক্স বা জটিলতা বাড়ানোর জন্য মজুত রাখবেন না।

আপনার সঙ্গীর আগ্রহের দিকটায় নজর দিন। তাকে উৎসাহ দিন। দেখবেন সেও আপনার প্রতি তার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।

যেমন: পড়াশোনা করা, বছরে অন্তত একবার বেড়িয়ে আসা, কোনো সামাজিক সচেতনতামূলক কাজ করা, সিনেমা দেখা ইত্যাদি। আবার কেনাকাটাও হতে পারে। একদিন না হয় গেলেনই সঙ্গীর সঙ্গে।

শারীরিক ব্যাপারটি উপভোগ্য করে তুলুন। ব্যাপারটি নিয়ে লজ্জা না করে নিজেদের মধ্যে খোলাখুলি আলোচনা করা ভালো। প্রয়োজন হলে নিজেদের পরিতৃপ্তির জন্য চিকিৎসক-পরামর্শ, ইন্টারনেটের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।

অন্যের দোষ-খুঁতগুলো হিসাব না করে সঙ্গীর ইতিবাচক দিক বের করুন। আর সেগুলোর প্রশংসা অব্যাহত রাখতে হবে।

ঝগড়া নয়, আলোচনায় যেকোনো সমস্যার সমাধান করতে হবে।

প্রেমের বিয়েতে:

প্রেমের সময় অনেক ক্ষেত্রে দুজনের পারিবারিক স্ট্যাটাস, পারিবারিক আবহ, তাদের নিজেদের মতামতের মূল্য কতখানি সেসব দিক অনেকটা অজানাই থেকে যায়, ভাবেন যে পরে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। আসলে বাস্তবতা ভিন্ন। বিয়ে মানেই হচ্ছে সামাজিকতা। সংসার মানেই একটি সামাজিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা। যে যার মাতব্বরি ফলানোর একটা জম্পেশ জায়গা ভেবে নড়েচড়ে বসেন। সংসার রাজনীতির ভালোমন্দ দেখভাল এড়িয়ে গেলে কেমন করে চলবে!

তাহলে উপায়—যখনই ভাবলেন বিয়ে করবেন! একটু ভেবে নিন।

দুজনই দুজনের পরিবারকে ভালোভাবে জানার চেষ্টা করুন।

দুজনই তাঁদের নিজেদের পরিবারে কতখানি প্রভাব রাখতে পারবেন তা পর্যালোচনা করুন।

পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ অবশ্যই থাকতে হবে। বিয়ের পর ‘পারবো না, পারলাম না’ বলতে যাতে না হয় সে রকম মানসিক প্রস্তুতি আগেই নেওয়া প্রয়োজন।

ভুল-বোঝাবুঝির শুরুতেই তা নিরসন করা উচিত ।

নিজেদের দোষত্রুটিগুলো ডায়েরিতে লিখে রাখতে পারেন। পরে ডায়েরি দেখে সেসব শোধরাতে হবে।

লেখেছেন: সুলতানা আলগিন, সহযোগী অধ্যাপক, মনোরোগবিদ্যা বিভাগ।

সুত্রঃ প্রথম আলো

বিয়ের প্রস্তাব কাকে দিবেন;কিভাবে দিবেন

বিয়ে মানুষের জীবনে নতুন এক অধ্যায়। অনেক নারী ও পুরুষ আছেন বিয়ের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিলেও যাকে ভালো লাগে তাকে প্রস্তাব দিতে সংকোচবোধ করেন। এর প্রধান কারন অযাচিত ভয়; যদি বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখান হয়!

বিয়ের প্রস্তাব দেয়া মূলত তখনই সহজ হবে যখন আপনি বিয়ের প্রস্তাব কাকে দিবেন এ বিষয়টি যাচাই করে নেন। আপনার যেমন জীবনসঙ্গিনীর বিষয়ে কিছু প্রত্যাশা রয়েছে তেমনি বিপরীত ব্যক্তির মনেও রয়েছে নিজস্ব কিছু চাহিদা ও পছন্দ।

যে বিষয়গুলো দেখে ব্যাক্তি কে বিয়ের প্রস্তাব দিবেনঃ

ব্যাক্তির শিক্ষাগত যোগ্যতা আপনার থেকে অনেক কম বা বেশী হবে এমন কারও কথা না ভাবাই ভালো।

যাকে বিয়ে করতে চাচ্ছেন, তার আর আপনার পেশা, সামাজিক অবস্থান, পারিবারিক কালচার, ভবিষ্যতে দুজন পেশাগত বিষয়ের দিকগুলো মানিয়ে নিতে পারবেন কি না। এ বিষয়টি অবশ্যই খেয়ালে রাখবেন।

দুই পরিবারের অবস্থা কতটুকু সামঞ্জস্যক তা দেখা উচিত।

আগে জানার চেষ্টা করুন তার ব্যক্তিত্ব আর আপনার ব্যক্তিত্বে মিল রয়েছে কিনা বা মিলিয়ে নেয়ার মত কিনা।

ব্যাক্তির সাথে আপনার বয়সের ব্যবধান কত।

যাকে বিয়ে করতে চাচ্ছেন সে মানসিক দিক থেকে বিয়ের জন্য প্রস্তুত আছে কি না জেনে নিন।

যাকে পছন্দ করছেন তাকে বিয়ের প্রস্তাব পাঠানোর আগে তার সাথে আলোচনা করে জেনে নিন, অথবা বিশ্বস্ত কাউকে দিয়ে তার মনস্তাত্ত্বিক অবস্থা বুঝার চেষ্টা করুন।

যেভাবে বিয়ের প্রস্তাব দিবেনঃ

সাক্ষাতের জন্য এমন একটি পরিবেশ বাছাই করুন অথবা তৈরি করুন যে পরিবেশে পছন্দের ব্যক্তি মানসিক ভাবে উৎফুল্ল থাকে।

সময় ও দিন নির্ধারণ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যেদিন আপনি ব্যক্তির সাথে দেখা করতে যাবেন সেদিনটি দুজনের ছুটির দিনটি বেঁছে নিন ও সময় বিবেচনা করে দেখা করুন, যেনো কোন তাড়াহুড়ো না থাকে।

আকর্ষণীয় উপহার দিতে পারেন অথবা সম্ভব হলে তার পছন্দ জেনে প্রিয় কিছু উপহার দিন।

তার সাথে এমন ভাবে আচরণ করুন যেন সে যতটুকু সময় আপনার সাথে থাকবে অবশ্যই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবে।

আপনি তাকে পছন্দ করেন, বিয়ের কথা ভাবছেন; এ কথাটি এক লাইনে না বলে তার সাথে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি উপস্থাপন করুন, আপনি তাকে কেন বিয়ে করতে চাচ্ছেন।

বিবাহবিডিতে যাদের প্রোফাইল আছে তারা তাদের পছন্দের বিষয়গুলোকে প্রধান্য দিয়ে মুহুর্তের মধ্যেই জীবনসঙ্গী খুঁজতে পারেন। এবং সরাসরি অথবা বিবাহবিডির এক্সিকিউটিভদের মাধ্যমে প্রোপোজাল পাঠাতে পারেন।

বিবাহবিডিতে আপনি আপনার পছন্দের প্রফেশন, পাত্র-পাত্রীর শিক্ষাগত যোগ্যতা, জেলা, আর্থিক অবস্থা, বৈবাহিক অবস্থা, বর্তমান অবস্থান, বর্ন, গোত্র, ধর্ম সহ ১৮ টি সার্চ ক্যাটাগরীর মাধ্যমে চাহিদা অনুযায়ী কাংখিত সঙ্গীকে সহজেই খুঁজতে সক্ষম হবেন।

তাছাড়া আপনার প্রদত্ত সঙ্গী বাছাইয়ের বিবরন (পার্টনার প্রেফারেন্স) এর সাথে মিলিয়ে বিবাহবিডি সার্চ ইঞ্জিন স্বয়ংক্রিয় ভাবে ডাটাবেইজের সেই সব প্রোফাইল খুঁজে আপনার সামনে এক নিমিষেই হাজির করে।

প্রথম প্রেম কি সত্যি ভোলা যায় না!

প্রেম একটি মনস্তাত্ত্বিক চাহিদা ও আকর্ষণ। মানুষের মনে যে কোন বয়সে বিভিন্ন চাহিদা ও আকর্ষন জাগ্রত হয় যেমন- রুপ, গুণ, ব্যক্তিত্ব, কারও সঙ্গ ভালো লাগা ইত্যাদি।

প্রেম জীবনে একবার নয় বার বার আসতে পারে। আবার এ কথাও বহুল প্রচলিত যে প্রথম প্রেম কখনও ভোলা যায় না। প্রথম প্রেম কি সত্যি ভোলা যায় এ নিয়ে রয়েছে অসংখ্য বানী, বিতর্ক ও গবেষণা।

যুক্তরাষ্ট্রের মনোবিজ্ঞানী জেফারসন সিঙ্গার বলেন-

অধিকাংশ মানুষের ১৫-২৬ বছর বয়সের মধ্যে মস্তিষ্কে মেমোরি বাম্প বা আকস্মিক স্মৃতির একটি বিষয় থাকে। আকস্মিক স্মৃতির বিষয়টি যাদের থাকে তারা বেশি স্মৃতিকাতর বা স্মৃতি রোমন্থন করেন। এই স্মৃতি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ইতিবাচক স্মৃতি হয়। এ কারণেই ১৫-২৬ বছর বয়সের সময় প্রথমবারের মতো অভিজ্ঞতা নেওয়া জিনিস স্মৃতিতে ফিরে আসে। আর তা মনের পর্দায় ভেসে ওঠে বারবার।

কারও কারও ক্ষেত্রে প্রথম প্রেম ভোলা যায় না আবার কারও কারও ক্ষেত্রে প্রথম প্রেম ভোলা সম্ভব। যারা বলেন ভোলা যায় না তাদের মতে, অধিকাংশ মানুষই আবেগ কন্ট্রোলে রেখে ভুলে থাকার অভিনয় করে। প্রথম প্রেম বিষয়ে লেখক সাহিত্যিক দেরও রয়েছে অসংখ্য বানী।

তোমারে যে চাহিয়াছে ভুলে একদিন, সে জানে তোমারে ভোলা কি কঠিন

– কাজী নজরুল ইসলাম।

হুমায়ূন আজাদের মতে,

দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম প্রেম বলে কিছু নেই। মানুষ যখন প্রেমে পরে তখন প্রতিটি প্রেমই প্রথম প্রেম।

মানুষের জীবনে প্রেম কখন, কিভাবে, কার সাথে ঘটবে কেউ তা জানে না। তেমনি কারও জীবনে প্রথম প্রেম টিকতে পারে আবার নাও পারে। অবশ্যই মানুষের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ভিন্ন তাই কারও প্রথম প্রেম মধুর হতে পারে আবার কারও ক্ষেত্রে পরবর্তী কোন প্রেম।

তবে প্রথম প্রেম ভুলে থাকা সম্ভব কেননা মানুষ প্রেমে পরে মানসিক আকর্ষণ বা চাহিদা থেকে আর তা যে কোন সময় বা বয়সে হতে পারে।

প্রথম প্রেম সম্পর্কে ধারনাঃ

কিছু মানুষ মনে গেঁথেই রেখেছে প্রথম প্রেম ভোলা যায় না অথচ মানুষ যুক্তি দিয়ে চিন্তা করেনা এ কথা সবার জন্য প্রযোজ্য কিনা।

মানুষের বয়সের সাথে চাহিদার পরিবর্তন ঘটে তাই মানুষ কয়েকবার প্রেমে পরে। মানুষ মূলত মনে রাখে প্রেমের মধুর বা তিক্ত মুহূর্তগুলো আর ভুলে যায় ব্যাক্তি কে। যেমন আপনি নিজেই ভেবে দেখুন, আপনার প্রাক্তন দেখেতে কেমন ছিল তা স্পষ্ট আপনার চোখে যতটুকু ধরা পরে এর চেয়ে স্পষ্ট আপনি দেখতে পাবেন তার সাথে কাটানো আনন্দ মুহূর্ত গুলো। কারন সময়টা ছিল আপনার বয়সের চাহিদা।

আবার দেখুন, যে এখন আপনার জীবনসঙ্গী সে যখন আপনার প্রেমিকা ছিল সে প্রেমের সময় তার সাথে কাটানো মুহূর্ত, তার ছোঁয়া আপনার কাছে যেমনটা ভালো লাগতো এখন তার অনুভূতি গুলো কিন্ত ভিন্ন শুধু ব্যক্তি এক। কারন আপনাদের বয়সের সাথে চাহিদা এখন ভিন্ন।

মানুষ স্মৃতিচারন করতে ভালোবাসে আর তাই আনন্দের স্মৃতি মনে করে আনন্দিত হয় আর কষ্টের স্মৃতি মনে করে হতাশা হয়। আর তাই অনেকেই এ বিষয়কে প্রথম প্রেম মানেই ভোলা যায় না তে আটকে আছে।

প্রেমে পড়ার বিষয়ে পশ্চিম বাংলার সাহিত্যিক বুদ্ধদেব গুহ লিখেছেন- “ভালবাসা হচ্ছে তীরের মত। তীর থেকে বেরিয়ে গেলে সে বেরিয়েই যায়। তীর তার লক্ষ্য বস্তকে বিঁধতে পারবে কি পারবে না – সেটা সেই তীরন্দাজের কপাল। কিন্তু ভালবাসা তো আর পোষা কুকুর নয় যে, তু তু করে ডাকলেই আবার ফিরে আসবে।

প্রথম সাক্ষাতেই মেয়েদের যে বিষয় গুলো লক্ষ্য করে ছেলেরা!

হঠাৎ পরিচয় হলো একজন পুরুষের সাথে। বেশ কিছুক্ষন কথাবার্তাও হলো। বেশ আন্তরিক মানুষ বলেই মনে হলো তাকে প্রথম পরিচয়ে। মনে মনে মানুষটি সম্পর্কে অনেক কিছু ভেবে নিলেন আপনি। আচ্ছা, আপনারও কি জানতে ইচ্ছে করছে সেই মানুষটি আপনার মাঝে কী দেখলো? এমন কৌতুহল হতেই পারে আর সবসময় হয়, তাই না?

পুরুষরা নারীর মাঝে প্রথম দেখায় কী কী বিষয় লক্ষ্য করে তা নিয়ে অনেক তর্ক বিতর্ক আছে। তবে কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া বেশিরভাগ পুরুষের দৃষ্টিভঙ্গি সাধারণত একই রকম হয়। আসুন জেনে নেয়া যাক পুরুষরা প্রথম দেখায় নারীর মাঝে লক্ষ্য করেন এমন ৭টি বিষয় সম্পর্কে।

৭) পোশাক:প্রথম সাক্ষাতে নারীর পোশাকের দিকে খেয়াল করে কম বেশি সব পুরুষ। কেমন পোশাক পড়েছে, কি রঙ, রুচিশীল নাকি বেমানান ইত্যাদি বিষয়গুলো খেলা করে পুরুষরা নারীর সাথে প্রথম দেখায়। এমনকি পোষাকের সাথে ব্যাগ ও জুতা ম্যাচিং করে পড়েছে কিনা সেটাও তাদের চোখ এড়ায় না।

৬) রসবোধ:বলা হয়ে থাকে যে নারীরা পুরুষের মাঝে রসবোধের উপস্থিতি পছন্দ করে। এক্ষেত্রে পুরুষরাও কিন্তু পিছিয়ে নেই। পুরুষরাও নারীদের মাঝে রসবোধের উপস্থিতি খুবই পছন্দ করে। প্রথম বার কথা বলার সময়েই তারা এই বিষয়টি নারীদের মাঝে খোঁজে এবং বেশ আগ্রহ সহকারে লক্ষ্য করে। তাদের রসিকতাকে নারীরা কিভাবে গ্রহণ করছে সেই বিষয়টিও তারা লক্ষ্য করে।

৫) কন্ঠস্বর ও কথা বলার ভঙ্গি:একজন নারীর সাথে প্রথম পরিচয়ের সময় পুরুষরা নারীর কন্ঠস্বর ও কথা বলার ভঙ্গি খেয়াল করে। সুন্দর মিষ্টি কন্ঠ ও স্পষ্ট সুন্দর উচ্চারনের নারীরা পুরুষদের মনোযোগ আকর্ষন করে ও ভালো লাগার অনুভূতি তৈরী করে।

৪) বুদ্ধিমত্তা:প্রথম দর্শনেই কথা বলার সময় নারীর বুদ্ধিমতার বিষয়টি বেশ মনোযোগ সহকারেই খেয়াল করে পুরুষরা। কথা বার্তা বলার সময় উপস্থিত বুদ্ধিও নজর কাড়ে তাদের। উপস্থিত বুদ্ধি সম্পন্ন নারীদেরকে পুরুষরা বেশ পছন্দ করে এবং তাদের প্রতি তীব্র আকর্ষন বোধ করে।

৩) উচ্ছলতা:হাসিখুশি নারীদের প্রতি পুরুষদের আকর্ষন চিরন্তন। আর এই চিরন্তন আকর্ষনের কারণে প্রথম দর্শনেই পুরুষরা নারীদের হাসি খেয়াল করে। একজন নারীর সাথে প্রথম পরিচয়ে তারা সেই নারীর হাসি কেমন, সে কী মন খুলে হাসে কিনা কিংবা মেয়েটি হাসিখুশি নাকি গম্ভীর ইত্যাদি বিষয়গুলো লক্ষ্য করে।

২) চোখ,হাসি ও চুল:সুন্দর টানা টানা চোখ সব পুরুষই পছন্দ করে। আর তাই নারীর সাথে প্রথম দর্শনে কথা বলার সময় পুরুষরা শরীরের পরেই চোখের দিকে লক্ষ্য করে। চোখ সুন্দর হলে অপলক সেই চোখের দিকে তাকিয়ে থেকে কথা বলে তারা। এছাড়া চোখের চাহনিও খেয়াল করে সর্বক্ষণ। হাসির সৌন্দর্যটাও বেশ মনোযোগ দিয়েই দেখে পুরুষেরা। নারীর চুলের প্রতিও পুরুষদের আগ্রহ অপরিসীম। আর তাই একজন নারীর সাথে প্রথম পরিচয়ে তারা সেই নারীর চুল ও চুলের স্টাইল লক্ষ্য করে। সুন্দর চুল ও হেয়ার কাটের নারীদের প্রতি তারা বেশি আকর্ষনবোধ করে।

১) দৈহিক সৌন্দর্য:নারীর সাথে প্রথম দর্শনে পুরুষরা চেহারার বদলে নারীর দৈহিক সৌন্দর্য ও গঠন লক্ষ্য করে সবার আগে। সুন্দর ফিগারের অধিকারিণীদের প্রতি পুরুষদের আকর্ষণ থাকে বরাবরই বেশি। এক্ষেত্রে তাদের দৃষ্টি প্রথমেই যায় নারীর বক্ষের দিকে। এছাড়াও তারা কোমর, নিতম্ব ও পা দেখে । বিভিন্ন গবেষনার জরিপে এই তথ্য পাওয়া গিয়েছে যে নারীর সাথে প্রথম দেখায় পুরুষরা তাদের স্তন, কোমর ও পা খেয়াল করে সবার আগে। সুন্দর ও অপেক্ষাকৃত লম্বা পায়ের অধিকারিণীদের প্রতি পুরুষদের আকর্ষন বেশি থাকে সবসময়। যদিও এই বিষয়টি অনেক পুরুষই স্বীকার করতে চায় না কারণ মনের অজান্তেই তারা কাজটি করে।

সফলতা ও দাম্পত্যে অবহেলা

জীবনে ক্যারিয়ার সফলতা কে না চায়। দাম্পত্যে জীবন থাকুক মধুময় এ নিয়ে স্বাভাবিকভাবে সবারই থাকে প্রত্যাশা। অনেকের ক্ষেত্রে ক্যারিয়ারে সফলতা যখন দাম্পত্যে জীবনের দরজায় এসে কড়া নাড়ে তখন ব্যাক্তির অগোচরে দাম্পত্যে জীবন অবহেলিত হতে থাকে। সপ্তাহের অধিকাংশ সময় অফিসে কাটানোর ফলে কাজের প্রভাব সহজেই ব্যক্তিগত জীবনে পড়তে পারে। প্রায়ই এরকম হতে থাকলে সংসারে স্বামী-স্ত্রী দুজনের মধ্যেই মানসিক চাপ তৈরি হয় এমনকি ক্ষতিগ্রস্ত হয় দাম্পত্য জীবন।

যেভাবে বুঝবেন আপনার সফলতার আড়ালে দাম্পত্যে সম্পর্ক অবহেলিত হচ্ছেঃ

– অফিস শেষ তবুও বাসায় অফিসের কাজ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পরা বা ছুটির দিনগুলতেও ঘরে বসে অফিসের কাজে ব্যাস্ত থাকা।

– স্ত্রী, সন্তান বা পরিবারের সাথে সময় কাটাচ্ছেন কিন্ত মন পরে আছে অফিসের কাজের দিকে অথবা বার বার উদাসীন হয়ে যাচ্ছেন।

স্ত্রীর প্রতি আগ্রহ কমে যাওয়াঃ

কাজের চাপে আপনি হয়ত ভুলে যাচ্ছেন আপনার জন্য কেউ দিন শেষে অপেক্ষা করছে, ফোন বা ম্যাসেজ এর মাধ্যমে আপনার খবর নিচ্ছে কিন্তু আপনি তার প্রতিউত্তর দেয়ার বিষয়ে বিরক্ত বোধ করছেন। অথবা কাজের ক্লান্তিতে আপনার সঙ্গী কে সময় দিতে আপনার ভালো লাগছেনা। পরের দিন অফিস যেতে হবে সে উদ্দশ্যে আপনি ঘুমিয়ে পড়ছেন।

সন্তানের প্রতি বিরক্তবোধঃ

আপনার সন্তানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আপনাকে প্রয়োজন কিন্তু আপনি সময় দিতে পারছেন না, তার কোন প্রয়োজনে আপনার সঙ্গ চাচ্ছে কিন্তু আপনি কাজের চাপে বার বার আপনার স্ত্রী বা পরিবারের কারও উপর দায়িত্ব দিয়ে দিচ্ছেন।

জীবনসঙ্গীর আচরণঃ

অফিস প্রসঙ্গে কথা বলার সময় যদি আপনার সঙ্গী আপনার চোখের দিকে না তাকায়, কাজে ব্যস্ততা দেখায় বা কথায় অন্য প্রসঙ্গে চলে যায় তাহলে বুঝবেন আপনি কাজ কে অতিমাত্রায় প্রাধান্য দিচ্ছেন।

ঘন ঘন ঝগড়াঃ

স্ত্রী কিছু আনতে বলছে বা করতে বলছে আপনি ভুলে যাচ্ছেন, সংসারের কাজের দায়িত্ব নিতে বিরক্ত হচ্ছেন। অথবা আপনার স্ত্রী আপনার কাছে সময় চাচ্ছে কিন্তু দিতে পারছেন না এ নিয়ে বারবার ঝগড়া হচ্ছে।

খাবারে অনীহাঃ

কাজের চাপে আপনি অফিসে খাবার খেতে ভুলে যান অথবা অফিস ও বাসায় দুই জায়গায়ই আপনি কাজের চাপে তুলনামুলক কম খাচ্ছেন এতে কিন্তু আপনি শারীরিক দিক থেকেও দুর্বল হয়ে যাচ্ছেন। লক্ষ্য করুন এতে আপনার দাম্পত্যে জীবনে মানসিক ও শারীরিক দিক থেকে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

পারিবারিক অনুষ্ঠানগুলতে অনুপস্থিত থাকাঃ

পারিবারিক অনুষ্ঠান বা দাওয়াতে উপস্থিত থাকা মানে অযথা সময় নষ্ট মনে হচ্ছে। আপনার বিবাহবার্ষিকী, স্ত্রীর বা সন্তানের জন্মদিন ভুলে যেতে পারেন বা এ অনুষ্ঠানগুলতে উপস্থিত হতে দেরি লাগা।

ঘন ঘন অফিসের গল্প বলাঃ

আপনি হয়ত নিজেও খেয়াল করছেন না বা মনের অগোচরে আপনি বাড়িতে স্ত্রী বা পরিবারের সাথে অফিসের গল্প বেশী বলছেন। অথবা কথায় কথায় অফিসের উদাহরণ টানছেন।

সামাজিকতা রক্ষায় অনীহাঃ

সামাজিক কর্মকাণ্ডগুলতে অংশ নিতে ইচ্ছে না হওয়া। সামাজিক বিষয়গুলো আপনার বিরক্ত লাগছে ফলে আপনার স্ত্রী-সন্তান অনেক বিষয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে আর এ নিয়ে আপনার স্ত্রীর সাথে ঝগড়া লেগে থাকা।

করনীয় কিঃ

অফিসের কাজ অফিসেই করুন কাজের চাপ যত বেশী হোক।

ছুটির দিনগুলোতে স্ত্রী-সন্তান কে সময় দিন, ঘুরতে নিয়ে যান, তারা যেভাবে সময় কাটাতে চায় সেভাবে তাদের সাথে উপভোগ করুন।

খাবার সময়মত ও প্রয়োজন মত খাবেন। দাম্পত্যে জীবনে আপনার শারীরিক সুস্থতা অনেক জরুরী।

স্ত্রী কে তার চাহিদামত সময় দিন এতে দাম্পত্যে জীবন অনেক মধুময় হবে।

হয়ত বিশেষ দিন গুলো আপনার মনে থাকবে না। তবে বিশেষ দিনগুলো তে আপনার স্ত্রী, সন্তানদের সাথে পুরোটা দিন কাটানোর চেষ্টা করুন।

অফিসের গল্প স্ত্রীর সাথে বেশী বলবেন না। এতে আপনার প্রতি তার সন্দেহও আসতে পারে তাই চেষ্টা করুন অফিস কে অফিসের জায়গায় রাখতে আর ব্যাক্তিগত বিষয়গুলো স্ত্রীর সাথে শেয়ার করতে।

অফিস থেকে বাড়িতে ফেরার পর আপনার সঙ্গিনীর আচরণে লক্ষ্য করুন। আপনার উপর তার কোন রাগ বা কষ্ট আছে কি না। যদি এরকম কিছু মনে হয় তবে তার সাথে খোলামেলা আলোচনা করুন।

কাজকে দাম্পত্যে জীবনে বিশ্বস্ততার সাথে পরিচালনা করুন যেন আপনার ব্যস্ততা কে আপনার সঙ্গিনী সন্দেহ না করেন।

সন্তানের প্রতি মনোযোগী হন। সন্তানের প্রতিষ্ঠানে আপনাকে দরকার হলে অবশ্যই উপস্থিত থাকার চেষ্টা করুন। এছাড়া আপনাকে তার কখন কোথায় প্রয়োজন বা সে আপনাকে চাচ্ছে এ বিষয়গুলতে মনোযোগ দিন। এতে আপনার দাম্পত্যে ঝগড়া বা মনোমালিন্য অনেকটা কম হবে।

অফিসে কাজের খুব চাপ, এ দিকে আপনার সঙ্গী কে সময় দিতে পারছেন না। বাসায় ফেরার পথে উপহার বা ফুল নিয়ে যান এতে আপনার সঙ্গিনীর রাগ ঘুচে যাবে।

কাজের চাপে সন্তান কে সময় দেয়া হচ্ছে না, বাড়িতে ফেরার সময় খেলনা বা তার পছন্দের কিছু উপহার নিয়ে যান।

কাজ মানেই ব্যস্ততা এদিকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আপনার সঙ্গীর সাথে ফোনে বা ম্যসেজে কথা বলতে হবে বিষয়টা তা না, সময় করে কয়েক মিনিটে কিন্তু তার খোঁজ নেয়াই যায়। এ ছোট-খাটো বিষয়গুলো দাম্পত্যে সম্পর্ক আপনার অজান্তেই স্বাস্থ্যকর করে তুলবে।

সামাজিক কর্মকাণ্ড গুলতে অংশ নিন। যদি আপনি সামাজিক কাজগুলো করতে না পারেন ফলে পারিবারিক সম্পর্কেও এক সময় অসামাজিক হয়ে যাবেন। তাই দাম্পত্যে জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে আপনি যখন সামাজিকতা বিষয়গুলো রক্ষা করবেন।

দাম্পত্য জীবনে বেশীরভাগ ঝগড়া বা মনোমালিন্য হয়ে থাকে সঙ্গীর কাজের ব্যস্ততার ফলে। আবার ক্যারিয়ারে সফলতা কেও ফেলে দেয়া যাবে না। তাই প্রয়োজন এ দুয়ের মধ্যে সমতা রক্ষা। আর এই সমতা রক্ষার জন্য প্রয়োজন নিজেকে ছুটি দেয়া।

ভালোবাসা নাকি ভালো অভিনয়

প্রেম নিবেদন নিয়ে যখন কেউ কাছে আসে তখন “সম্পর্ক টাকে মুখ্য না ভেবে প্রেম নিবেদনের ভঙ্গিমাতে মুগ্ধ হয়ে মেয়েরা অনেক সময় প্রেমের দুয়ারে পা বাড়িয়ে থাকে। আর এ মুগ্ধকর ভঙ্গিমাতে মেয়েরা ডুবে থাকতে চায় সবসময় যার ফলে প্রেমটায় কি ভালোবাসা বিরাজ করছে নাকি ভালো অভিনয় তা বুঝে উঠতে পারে না অনেকেই।

ছেলে অথবা মেয়ে ; সম্পর্ক তৈরি করা চাই সময় নিয়ে, আস্তে আস্তে যাচাই করে। যে সম্পর্ক যতটা সময় নিয়ে শুরু হবে, তার টিকে থাকার সম্ভাবনাও ততটাই বেশি। সম্পর্কের শুরুতে নতুন প্রেম সবার কাছেই মধুর মনে হয় তবে খেয়াল রাখবেন আবেগে মুগ্ধ হয়ে অতি তাড়াতাড়ি সম্পর্ক জড়াচ্ছেন নাতো? অথবা আপনার সঙ্গী আপনার সাথে ভালো অভিনয় করছে না তো?

কোন সম্পর্কে জড়ানোর আগে কিছু বিষয়ে অবশ্যই আপনাকে সতর্ক থাকতে হবে-

প্রথম প্রথম আপনার মন জুগিয়ে চললেও কিছুদিন পরেই খেয়াল করলেন আপনার সঙ্গী আপনার জীবনের উপর নিয়ন্ত্রণ করতে চাচ্ছেন, তাঁর ইচ্ছেটাকে প্রাধান্য দিতে বাধ্য হচ্ছেন, যদি এমন হতে থাকে তাহলে দ্রুত সতর্ক হোন।

আপনার সঙ্গী সব সময় আপনার ইচ্ছার থেকে তার নিজের ইচ্ছাগুলোকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে কিনা যাচাই করুন ।

যদি আপনার সঙ্গী সারাদিনই আপনার সম্পর্কে খুব ভাল ভাল কথা বলেন বা দামি দামি উপহার দেন, তাহলে একটু ভেবে দেখুন তার আসল উদ্দেশ্য কি।

ঘন ঘন ঘুরতে নিয়ে যাওয়া, রেস্তরায় খাওয়ানো এসবের মোহে ডুবে থাকবেন না যাচাই করুন আপনার বিশ্বাসকে কতটা মুল্য দিচ্ছে।

আপনার সঙ্গীর অনেক বন্ধুবান্ধব থাকতেই পারে কিন্তু আপনি তার কাছে বিশেষ কেউ একজন হয়ে উঠতে পেরেছেন কিনা যাচাই করুন। যদি এ অনুভূতি না আসে তাহলে সতর্ক হন।

আপনার স্বপ্ন বা সাফল্য কে সম্মান করছে তো? যদি আপনার সাফল্যে সহায়তা করতে নাও পারে তবুও আপনার সাফল্যতে সম্মান প্রকাশ করবে।যদি সে সম্মানবোধটুকু না থাকে তাহলে তার বিষয়ে আবারও ভাবুন।

বর্তমান যুগে অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রিলেশনশীপ ষ্টেটাস আপডেট করা অথবা নিছক টাইমপাস করার জন্য সম্পর্ক করে থাকে। দীর্ঘকালীন সম্পর্ক বা বিয়ের ব্যাপারে সিরিয়াস হন না। তাই, প্রথম থেকেই দৃঢ় ভাবে আপনার সঙ্গীকে চেনার চেষ্টা করুন – তার আবেগ, বিশ্বাসযোগ্যতা, মনস্তত্ব, আপনার প্রতি তার মূল্যবোধ ও সম্মানের বহিঃপ্রকাশ সম্পর্কে ভালোভাবে নিশ্চিত হয়ে তারপরই সম্পর্কে জড়ান। এতে ভবিষ্যত হতাশা কিংবা মানসিক যন্ত্রণা থেকে নিশ্চিত নিরাপদ থাকবেন।