বিয়ের প্রস্তাব কাকে দিবেন;কিভাবে দিবেন

বিয়ে মানুষের জীবনে নতুন এক অধ্যায়। অনেক নারী ও পুরুষ আছেন বিয়ের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিলেও যাকে ভালো লাগে তাকে প্রস্তাব দিতে সংকোচবোধ করেন। এর প্রধান কারন অযাচিত ভয়; যদি বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখান হয়!

বিয়ের প্রস্তাব দেয়া মূলত তখনই সহজ হবে যখন আপনি বিয়ের প্রস্তাব কাকে দিবেন এ বিষয়টি যাচাই করে নেন। আপনার যেমন জীবনসঙ্গিনীর বিষয়ে কিছু প্রত্যাশা রয়েছে তেমনি বিপরীত ব্যক্তির মনেও রয়েছে নিজস্ব কিছু চাহিদা ও পছন্দ।

যে বিষয়গুলো দেখে ব্যাক্তি কে বিয়ের প্রস্তাব দিবেনঃ

ব্যাক্তির শিক্ষাগত যোগ্যতা আপনার থেকে অনেক কম বা বেশী হবে এমন কারও কথা না ভাবাই ভালো।

যাকে বিয়ে করতে চাচ্ছেন, তার আর আপনার পেশা, সামাজিক অবস্থান, পারিবারিক কালচার, ভবিষ্যতে দুজন পেশাগত বিষয়ের দিকগুলো মানিয়ে নিতে পারবেন কি না। এ বিষয়টি অবশ্যই খেয়ালে রাখবেন।

দুই পরিবারের অবস্থা কতটুকু সামঞ্জস্যক তা দেখা উচিত।

আগে জানার চেষ্টা করুন তার ব্যক্তিত্ব আর আপনার ব্যক্তিত্বে মিল রয়েছে কিনা বা মিলিয়ে নেয়ার মত কিনা।

ব্যাক্তির সাথে আপনার বয়সের ব্যবধান কত।

যাকে বিয়ে করতে চাচ্ছেন সে মানসিক দিক থেকে বিয়ের জন্য প্রস্তুত আছে কি না জেনে নিন।

যাকে পছন্দ করছেন তাকে বিয়ের প্রস্তাব পাঠানোর আগে তার সাথে আলোচনা করে জেনে নিন, অথবা বিশ্বস্ত কাউকে দিয়ে তার মনস্তাত্ত্বিক অবস্থা বুঝার চেষ্টা করুন।

যেভাবে বিয়ের প্রস্তাব দিবেনঃ

সাক্ষাতের জন্য এমন একটি পরিবেশ বাছাই করুন অথবা তৈরি করুন যে পরিবেশে পছন্দের ব্যক্তি মানসিক ভাবে উৎফুল্ল থাকে।

সময় ও দিন নির্ধারণ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যেদিন আপনি ব্যক্তির সাথে দেখা করতে যাবেন সেদিনটি দুজনের ছুটির দিনটি বেঁছে নিন ও সময় বিবেচনা করে দেখা করুন, যেনো কোন তাড়াহুড়ো না থাকে।

আকর্ষণীয় উপহার দিতে পারেন অথবা সম্ভব হলে তার পছন্দ জেনে প্রিয় কিছু উপহার দিন।

তার সাথে এমন ভাবে আচরণ করুন যেন সে যতটুকু সময় আপনার সাথে থাকবে অবশ্যই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবে।

আপনি তাকে পছন্দ করেন, বিয়ের কথা ভাবছেন; এ কথাটি এক লাইনে না বলে তার সাথে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি উপস্থাপন করুন, আপনি তাকে কেন বিয়ে করতে চাচ্ছেন।

বিবাহবিডিতে যাদের প্রোফাইল আছে তারা তাদের পছন্দের বিষয়গুলোকে প্রধান্য দিয়ে মুহুর্তের মধ্যেই জীবনসঙ্গী খুঁজতে পারেন। এবং সরাসরি অথবা বিবাহবিডির এক্সিকিউটিভদের মাধ্যমে প্রোপোজাল পাঠাতে পারেন।

বিবাহবিডিতে আপনি আপনার পছন্দের প্রফেশন, পাত্র-পাত্রীর শিক্ষাগত যোগ্যতা, জেলা, আর্থিক অবস্থা, বৈবাহিক অবস্থা, বর্তমান অবস্থান, বর্ন, গোত্র, ধর্ম সহ ১৮ টি সার্চ ক্যাটাগরীর মাধ্যমে চাহিদা অনুযায়ী কাংখিত সঙ্গীকে সহজেই খুঁজতে সক্ষম হবেন।

তাছাড়া আপনার প্রদত্ত সঙ্গী বাছাইয়ের বিবরন (পার্টনার প্রেফারেন্স) এর সাথে মিলিয়ে বিবাহবিডি সার্চ ইঞ্জিন স্বয়ংক্রিয় ভাবে ডাটাবেইজের সেই সব প্রোফাইল খুঁজে আপনার সামনে এক নিমিষেই হাজির করে।

সঙ্গীর সন্তানই প্রায়োরিটি

যাঁকে মনে ধরেছে, তিনি হয়তো কারওর মা কিংবা বাবা। তা বলে প্রেমে বাধা কোথায়! প্রেমিক বা প্রেমিকার সন্তান থাকলেও দিব্যি সম্পর্ক তৈরি করতে পারেন। শুধু সন্তানকে প্রায়োরিটি দেওয়া জরুরি।

কে ভবিষ্যতের সঙ্গী হিসেবে ভেবে নিয়েছেন, হতেই পারে তিনি একটা সময়ে বিবাহিত ছিলেন! আর তিনি হয়তো এক বা দুই সন্তানের মা কিংবা বাবা।কিন্তু এসবে কি আর প্রেম আটকায়! যাঁকে মনে ধরেছে, তাঁর সঙ্গে দেখা করতে ইচ্ছে করবে, সেটা স্বাভাবিক। আর সেই ইচ্ছের সৌজন্যেই নিয়মিত ডেটিং। কফিশপে, রেস্তরাঁয়, লং ড্রাইভে…সঙ্গী সেই বিশেষ বন্ধুটি। কিন্তুটি তাঁর সন্তানকে তো অগ্রাহ্য করলে চলবে না! তিনিও তা চাইবেন না। হ্যাঁ, নিজেরা কিছুটা সময়ে একান্তে কাটাতেই পারেন। 

কিন্তু একই সঙ্গে জরুরি হল হবু সঙ্গীর সন্তানকে আপন করে নেওয়া। সন্তান-সহ কাউকে ডেট করার আগে কয়েকটা বিষয় মাথায় রাখা প্রয়োজন। আপনি হয়তো আগ্রহী তাঁর ছেলে বা মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে! তবে উত্তেজনায় খুব তাড়াহুড়ো করে ফেলবেন না। আগে নিজেকে মানসিক ভাবে প্রস্তুত করুন। সাধারণত, এই পর্যায়ে এসে ক্যাজ়ুয়াল ডেটিংয়ের ইচ্ছে আপনার সঙ্গী প্রকাশ করবেন না।তিনি যদি আপনাকে জীবনসঙ্গী নির্বাচন করবেন বলে ভাবেন, তা হলে আপনারও প্রয়োজন নিজেকে মানসিক ভাবে প্রস্তুত করে তোলা। শুধুমাত্র প্রেমিক বা স্বামী নয়, সম্পর্কের অব্যবহিত পর থেকেই আপনাকে বাবা-মা বা কেয়ারগিভারের দায়িত্ব সামলাতে হবে। 

আগে নিজেকে জিজ্ঞেস করুন, সেই দায়িত্ব নিতে আপনি তৈরি তো! বাচ্চাটির সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে তোলা জরুরি। একজন নতুন মানুষকে সে তার জীবনে জায়গা করে দিতে চলেছে—এর প্রতিক্রিয়া এক একটি বাচ্চার এক একরকম। তাই, ওর মনোজগৎটা বোঝা একান্ত দরকার। ডেটিংয়ের জায়গা নির্বাচনের ক্ষেত্রেও সন্তানকে প্রায়োরিটি দিতে হবে। কোনও কিড-ফ্রেন্ডলি কাফে বা পার্কে যেতে পারেন। ডেটিংয়ের যাবতীয় পরিকল্পনা শেষ মুহূর্তে বাতিলও হতে পারে! সৌজন্যে সন্তানের শরীর খারাপ বা পরীক্ষার চাপ। সেরকম পরিস্থিতির জন্যও তৈরি থাকতে হবে। সঙ্গীকে ভালবাসার অর্থ এখানে তাঁর ছেলেমেয়েকেও সমান ভাবে ভালবাসা। আর এটি সচেতন সিদ্ধান্তের মাধ্যমেই সম্ভব। উনি যদি তাঁর প্রাক্তন স্বামী বা স্ত্রীর সঙ্গে সন্তানের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কারণে যোগাযোগ রাখেন, তা হলে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবেন না। 

যদি কোনও কারণে নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হয়, সেক্ষেত্রে সঙ্গীর সঙ্গে আলাদা করে কথা বলুন, সন্তানের সামনে নয়।সন্তানের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো আপনার সঙ্গী ও তাঁর প্রাক্তন নিতেই পারেন। কিন্তু প্রাক্তনের সঙ্গে তিনি ঠিক কতটা সম্পর্ক রাখবেন, সে ব্যাপারে পারস্পরিক সিদ্ধান্তে আসা চাই। সুত্রঃ সানন্দা

অমিল গুলো মেনে নিন – সুখে থাকুন

তাকে বোঝার চেষ্টা না করাটাই হল প্রধান বাধা। ভালবাসা চান কিন্তু তার মন, মেজাজ, রুচি কেমন সেদিকে খেয়াল রাখছেন না, এমন হলে মিল হবে না। মিলন ত দূরে! খেয়াল রাখার কাজটা মানুষ সাধারণত অভ্যাসবশে করে। অভ্যাসবশে সবটা খেয়াল করতে পারলে সেটা খুব চমৎকার, কিন্তু অভ্যাসবশে সবটা খেয়াল করা নতুন নতুন মোটেও সম্ভব না।

বিশেষ মনোযোগ আবশ্যক। কারণ নতুন নতুন সে তার মনের কথা, সব কথা গড়গড় করে আপনাকে বলে দেবে না। হয়ত একটা শব্দ বলল, তাও এমনভাবে বলল যে তা আপনার মনে কোনো দাগ কাটল না। একটু পরেই ভুলে গেলেন। এমন হলে বিপদ আছে।

যা বলছে তা গভীরভাবে মন দিয়ে উপলব্ধি করুন। সমস্যা বোঝার চেষ্টা ও ভাল লাগার বিষয়-আশয় জানার চেষ্টা থাকবে। তারপর সমস্যা সমাধানের পদক্ষেপ ও ভাল লাগায় পানি ঢালা, সার দেওয়া, ভালবাসার চারা লাগানোর কাজটা! প্রক্রিয়া লম্বাই বটে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সবাই লম্বা সময় দেয়ও বটে, কিন্তু প্রায়ই একপক্ষ মোটেও ধৈর্য ধরতে চায় না! এখানে যথেষ্ট গোল বাধে।

তার মনের কথা, সমস্যার কথা বোঝার উপায় কী?

প্রয়োজনে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে বের করতে হবে! নয়ত বলবে কেন? আপনি তার কে যে আপনাকে গড়গড় করে সব বলে দেবে?

বোঝার জন্য যথেষ্ট সময় দরকার। আগ্রহ থাকবে পুরোপুরি। তবে এগোতে হবে একটু করে। তাড়াহুড়ো করলে ফল ধরার সম্ভাবনা কম।

জানতে হবে বোঝাপড়ার সীমানা।

সে যতটুকু চায় ততটুকু বোঝার চেষ্টা করা ভাল। এমনকি সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হয়ে গেলেও মনে রাখা ভাল সে কতটুকু আপনাকে বলতে চায়। যা বলতে চায় না তার জন্য চাপাচাপি ভাল না।

ভালবাসা মানে সবকিছু শেয়ার করা?

এ ব্যাপারে সবাই এক মত না। সুতরাং তার একান্ত কিছু বিষয় তার মধ্যেই থাকতে দেওয়া ভাল। আপনি বরং আরো ঘনিষ্ঠ, আরো বিশ্বস্ত হওয়ার চেষ্টা করুন। তাহলে একদিন হয়ত সব বলে দেবে। প্রতিটা মানুষই দেহে ও মনে আলাদা। তাহলে আপনি তার সঙ্গে শতভাগ মিল চান কোন আক্কেলে? সে আমাকে এটা বলল না, সে কেন এটা করল—এসব নিয়ে দুঃখ-মনস্তাপ না করাই ভাল। বরং কিছু অমিল মেনে নিতে পারলেই সুখের সম্ভাবনা বেশি।