বিচ্ছেদের পর সময় নিন; ঘুরে দাঁড়ান

বাংলাদেশে দিন দিন বেড়েই চলছে ডিভোর্সের হার। ডিভোর্স হঠাৎ করে হয় না। ডিভোর্স একরাতে বা আচমকা দুর্ঘটনার ফল না। বহুবিধ কারনে ডিভোর্স হয়ে থাকে।

ডিভোর্স শুধু স্বামী বা স্ত্রীর আইনগত বিচ্ছেদ নয়। এর মাধ্যমে স্বামী-স্ত্রীর শারীরিক, মানসিক বিচ্ছেদ এবং সর্বোপরি সন্তানের সাথে তাদের সামগ্রিক সম্পর্কের টানা পড়ে।

ডিভোর্স যে দেয় এবং যাকে দেয়া হয় – দুজনের উপরই ভিন্ন মানসিক প্রভাব পড়ে। যে ডিভোর্স দেয় সে ভীতিবোধ, নির্ভার, দূরত্ববোধ, অসহিষ্ণুতা, বিরক্তিবোধ, সন্দেহ ও অনুশোচনায় ভোগে। আর যাকে ডিভোর্স দেয়া হয় সে হতবিহ্বল, প্রতারিত, আত্মনিয়ন্ত্রণহীন, নির্যাতিত, আত্মমর্যাদা হ্রাস, নিরাপত্তাহীনতা বোধ করে।

ধরুন, আপনি পুরনো বাসা ছেড়ে নতুন বাসায় উঠেছেন। নতুন বাসা আপনি কিভাবে সাজাবেন? অবশ্যই হুবহু পুরনো বাসার আদলে নয় বরং আপনি নতুন বাসায় উঠার সময় পুরনো কিছু জিনিস বাদ দিয়ে নতুন জিনিস কিনে ঘর সাজান বা সাজাবেন। ঠিক এভাবেই ডিভোর্সের পরবর্তী জীবনটা নতুন করে সাজান।

ডিভোর্সের পর করনীয়ঃ

আত্মবিশ্বাসী হন।

সমাজে মাথা উঁচু করে দাঁড়ান।

স্বাবলম্বী হন।

আপনাকে যে কেউ নেতিবাচক কথা বলবে আপনি সেগুলো এড়িয়ে চলুন।

নিজেকে সময় দিন।

সন্তানকে এমন ভাবে বড় করুন যেন তার বেড়ে ওঠায় নেতিবাচক প্রভাব না পরে।

পরিবার ও বন্ধুবান্ধবদের সাথে সময় কাটান।

পছন্দের কাজ করে সময় কাটান।

নিজেকে দোষ দেবেন না।

ডিভোর্স মানেই আপনার জীবন শেষ হয়ে যাওয়া নয়। আপনি চাইলে ডিভোর্সের পর আপনার জীবনে দ্বিতীয় সঙ্গীর কথা ভাবতেই পারেন, এ অধিকারটুকু আপনার আছে। তবে তাড়াহুড়ো করার কিছু নেই সময় নিন ও সম্পর্কে জড়ান তবে নতুন সঙ্গীকে সব কিছু জানিয়ে ।

বিয়ের আগে মানসিক প্রস্তুতি

বিয়ের বাস্তবতা উপলব্ধিঃ

বয়স ভেদে নুন্যতম ২০ বছরের জার্নি হয়তবা সারা জীবনের। তাই ভেবে চিন্তে পরিপক্ক সিদ্ধান্তে আসতে হবে আবেগে নয়। উল্লেখিত এ সময়টুকুতে আপনাকে সংসার, সন্তান পালনের দায়িত্বগুলো ধৈয্যের সাথে পালন করতে হবে । তাই ভেবে চিন্তে পরিপক্ক সিদ্ধান্তে আসতে হবে আবেগে নয়।

দায়িত্ববান হতে হবেঃ

স্বভাবের কোন নেতিবাচক দিক থাকলে সেগুলো সংশোধনের চেষ্টা করতে হবে। বিয়ের আগে পরস্পর নিজেদের সম্পর্কে খোলামেলা আলোচনা করে নিলে বিয়ের পর বোঝাপড়াটা সহজেই হয়ে যাবে।

বিয়ের আগে মানসিক প্রস্তুতি

মানিয়ে চলাঃ

দুজনকেই দুই পরিবারের সঙ্গে মানিয়ে চলার মানসিকতা থাকতে হবে এতে অনেক সমস্যা এড়িয়ে চলা সম্ভব। প্রত্যেক পরিবারের নিয়ম-কানুন, আচার-ব্যবহার ভিন্ন; তাই পরিবারিক বিষয়ে আলোচনা করে নিলে পরবর্তীতে নতুন সদস্যদের সঙ্গে মিলে মিশে চলতে সুবিধা হবে।

ধৈয্যশীল ও শ্রদ্ধাবোধঃ

ছোটখাটো বিষয় এড়িয়ে যাওয়ার ইতিবাচক মানুসিকতা রাখতে হবে। হয়ত নিজের আশানুরূপ অথবা স্বপ্নের মত সংসারে সব কিছু ঘটবে না; এ ক্ষেত্রে ধৈয্যশীল হতেই হবে। একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ থাকতে হবে।

আলোচনা ও বোঝাপড়া ভালোঃ

দাম্পত্য সম্পর্কে অমিল হবেই তাই যে কোন সমস্যায় খোলাখুলি আলোচনা করতে হবে। সম্পর্কের শুরুতে একে অপরকে বন্ধুর মত গ্রহন করতে হবে, কেবল নিজেদের চাহিদা বা প্রয়োজনে সংসার জীবন চিন্তা করলে হবে না।

আন্তরিকতা জরুরিঃ

একজন মানুষকে নতুন পরিবেশ মানিয়ে নিতে সহযোগিতা প্রয়োজন এক্ষেত্রে ছেলের ভূমিকা প্রধান। নতুন সদস্য, নিয়ম-কানুন, আচার-ব্যবহার বিষয়গুলো মানিয়ে চলা খুব সহজ কথা নয়। তাই নিজের পরিবার ছেড়ে মেয়েরা যখন নতুন পরিবারে আসে তখন নানান সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় এ পরিস্থিতিতে ছেলের উচিত মেয়ের সাথে আন্তরিক আচরণ করা ও মানিয়ে নেয়ার বিষয়ে সহযোগিতা করা।

উচ্চাকাঙ্ক্ষী হওয়া উচিত নয়ঃ

সবার মন-মানসিকতায় পরিবর্তন জরুরি। দুই পক্ষই একে অপরকে নিয়ে উচ্চাকাঙ্ক্ষী হবেন না। একটু সচেতন সহযোগিতা পরায়ন ও বোঝাপড়া ভালো হলে দাম্পত্য জীবন সুন্দর হতে বাধ্য।

সখি ভালোবাসা কারে কয়!

ভালোবাসা মানুষের মনের এক অদ্ভুত অনুভূতি। ভালোবাসার আরেক নাম কেউ কেউ প্রেম ও বলে থাকেন। যখন কেউ ভালোবাসা অনুভূতি অনুভব করে তার মনের উপর বিশেষ পরিবর্তন ঘটে। ভালোবাসা বা প্রেম একটি মানবিক আবেগ তবে যুগের সাথে ভালোবাসার ধরন ও বহিঃপ্রকাশের বেশ ভিন্নতা লক্ষ্য করা যায়।

ভালোবাসার প্রকৃত কোন সংজ্ঞা নেই তবে রয়েছে নানান বিতর্ক ও মতামত। পৃথিবীতে এমন কোনো কবি বা সাহিত্যিক নেই যিনি ভালোবাসা নিয়ে কিছু সৃষ্টি করেননি, কবি রফিক আজাদের মতে-

“ভালোবাসা মানে দু’জনের পাগলামি,পরস্পরকে হৃদয়ের কাছে টানা;ভালোবাসা মানে জীবনের ঝুঁকি নেয়া,বিরহ-বালুতে খালি পায়ে হাঁটাহাঁটি”

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও খুঁজেছেন ভালোবাসার প্রকৃত উত্তর তাই তো লিখেছিলেন –

‘তোমরা যে বল দিবস-রজনী, ভালোবাসা, ভালোবাসা, সখী ভালোবাসা কারে কয়? সে তো কেবলই যাতনা নয়।’

ভালোবাসা কাল্পনিক নির্মলেন্দু গুণের কবিতার মতোই-

‘হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে মন বাড়িয়ে ছুঁই’।

লেখক সমরেশ বসুর মতে – ভালবাসা। কী কঠিন! ভালবাসা, কী যে নিষ্ঠুর আর কী বিচিত্র তাঁর সংবেদ!

বাংলা সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ নারী-পুরুষের মনে গড়ে উঠা ভালোবাসা ও প্রেম নিয়ে অসংখ্য মতামত দিয়েছেন তার গল্প, উপন্যাস গুলোতে তার মতে –

“ভালোবাসাবাসির ব্যাপারটা হাততালির মতো। দুটা হাত লাগে। এক হাতে তালি বাজে না। অর্থাৎ একজনের ভালোবাসায় হয় না।

ভালোবাসা কি? এ অনুভূতি কেন হয় বা কেমন? এ প্রশ্ন জীবনে একবার হলেও মনে জাগেনি বা জানতে চায়নি এমন মানুষ পাওয়া সম্ভব নয়। শুধু কবি-সাহিত্যিকগন নয় মনোবিজ্ঞানীগন ও বিজ্ঞানীরাও গবেষণা করেছেন মানব মনের ভালোবাসা নামক অনুভূতি নিয়ে।

মনোবিজ্ঞানীদের মতে, একজন ব্যক্তি অন্য কারও প্রতি আকৃষ্ট হওয়ার ক্ষেত্রে মস্তিষ্ক মোট চার মিনিট ৯০ সেকেন্ড সময় নেয়। গবেষকরা এটাও দেখেছেন, মানুষের মস্তিষ্ক প্রেমে পড়ার ক্ষেত্রে ব্যক্তির কিছু বিষয় বিবেচনা করে। তার মধ্যে ৫৫ শতাংশ হলো তার অঙ্গভঙ্গি বা বাহ্যিক রূপ, ৩৮ শতাংশ কণ্ঠস্বর ও কথা বলার ভঙ্গি এবং মাত্র ৭ শতাংশ তাদের মূল বক্তব্য শোনে।

যুক্তরাষ্ট্রের রটার্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হেলেন ফিসার জানান -প্রেমের তিনটি স্তর রয়েছে। এই তিনটি স্তরের প্রতিটি স্তরই ভিন্ন ভিন্ন হরমোন ও রাসায়নিক পদার্থ দ্বারা পরিচালিত হয়।

স্তরগুলো হলো- ভালোবাসার ইচ্ছে, আকর্ষণ ও সংযুক্তি।

ভালোবাসা হলো পার্থিব জীবনের এক বিস্ময়কর অনুভূতি। যা আছে বলেই পৃথিবীটা এত সুন্দরতম ও টিকে আছে।

ভালোবাসার নির্দিষ্ট কোন সংজ্ঞা না থাকলেও রয়েছে কিছু বৈশিষ্ট্যঃ

ভালোবাসা কখনও পারফেক্ট হয় না। ভালোবাসা এমন এক অনুভূতি ভালো খারাপ সব জেনেও কারও সঙ্গ ভালো লাগা।

নিজের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ ভালো লাগা মানুষটিকে মনে করা।

ভালো লাগার মানুষটিকে না পেলে হয়তো জীবনের কোন অর্থ নেই এরকম অনুভূতি হবে।

বিপরীত স্বভাবের মানুষের প্রতি ভালোবাসা বা প্রেম জন্মাতে পারে।

ভালোবাসার অনুভূতি সৃষ্টিশীল তাই চিন্তা – চেতনার উন্মোচন ঘটতে পারে।

ভালোবাসার মানুষকে অন্য কারো সাথে ঘনিষ্ঠ হতে দেখলে ঈর্ষাবোধ সৃষ্টি হবে।

ভালো লাগার মানুষটিকে বার বার কল্পনা করা বা তার উপস্থিতি অনুভব করা।

মনে ভালোবাসা জন্মালে সহজাত ভাবে ব্যাক্তিকে আগের চেয়ে আরো বেশি আকর্ষণীয় এবং প্রফুল্ল দেখাবে।

ভালোবাসার মানুষটির সাথে বার বার দেখা করার বা কাছে যাওয়ার অজুহাত খোঁজা।

হয়তো কোন ব্যাক্তির মাঝে বিশেষ কোন মুগ্ধতা নেই তবুও প্রবল আকর্ষণ অনুভব করা।

ভালোবাসার উল্টো পিঠে যাতনা জেনেও ভালোবাসতে ইচ্ছে করা।

ভালোবাসা কোন সময় কেন্দ্রিক থাকেনা আবার ভালোবাসা একদিন এর জন্যও হয় না। প্রতিদিন একটু একটু করে বা দীর্ঘ সময় ধরে এটি বিরাজ করতে পারে।

যে কোন বিষয়কে পরোয়া না করে, চক্ষুলজ্জা ডিঙ্গিয়ে কাউকে নিয়ে হারিয়ে যাওয়ার যে প্রবল ইচ্ছা বা ভাবনা মনে জাগে তাই ভালোবাসা।

কারও প্রতি সহানুভূতি বা শ্রদ্ধাবোধও ভালোবাসার একটি অন্যতম লক্ষণ।

ভালোবাসার নেই কোন সংজ্ঞা, চিত্র বা পরিমাপ। কারও প্রতি আকৃষ্ট হয়ে মনের কনে প্রতি ক্ষণে ক্ষণে যে অনুভূতিগুলো নাড়া দেয় তাই ভালোবাসা। তবে শুধু ভালবাসলেই হয় না এ ভালোবাসা ধরে রাখতে পরিচর্চার প্রয়োজন।

কথায় আছে –

ভালোবাসার বাগানে সম্পর্কগুলো হলো এক একটি জীবন্ত গাছ আর সেই বাগানের মালী হিসেবে নিজেকে বসিয়ে দিয়ে গাছগুলোর পরিচর্যা করলেই ভালোবাসা সুগন্ধ ছড়াতে থাকবে আপনার চারপাশে। তাই ভালোবাসার যত্ন নিতে হয়। গাছে পানি না দিলে যেমন গাছটি মরে যায়, ভালোবাসার যত্ন না নিলে ভালোবাসাও মরে যায়!

বিচ্ছেদের কষ্ট দূর হবে যেভাবে

স্বাভাবিকভাবেই অতীত ভোলা সহজ নয় আবার ইচ্ছা শক্তি থাকলে স্বাভাবিকভাবেই অতীত ভোলা সম্ভব। অতীত ভুলবার অথবা কষ্ট দূর করার জন্য আমাদের উচিত নিজেদের একটি চক্রে আবদ্ধ করা, আর সে চক্রে আমাদের কিছু বিষয় সাজাতে হবে যা আমরা করবো নিজেকে ভালো রাখার জন্য –

নিজের আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করুন- জোর করে কোন সম্পর্ক টিকে রাখা যায় না। ভালোবাসা হারিয়ে গেলে অনেক সময় তা ছেড়ে দিতে হয় আটকে রাখতে হয় না, এ সত্য আপনাকে মেনে নিতে হবে। শুরুতে অনেক কষ্ট হলেও এটা ভাবুন যা হয়েছে তা ভালো কিছুর জন্যই হয়েছে। নিজের জীবনকে নতুনভাবে কল্পনা করুন। ভালো আছেন এরকম ভান বা অভিনয় করবেন না, আবেগ চাপা রাখলে আপনার মানুসিক চাপ বাড়বে তাই শোক করুন, কাদুন।

পুরনো স্মৃতি ভুলে নতুন স্মৃতি তৈরি করুন- পুরনো স্মৃতি ভুলে নতুন করে নিজেকে তৈরি করুন। কেননা, নিজেকে অতীতে আটকে রাখলে বর্তমান পরিস্থতি থেকে আপনি সহজে নিজেকে পরিত্রাণ করতে সক্ষম হবেন না। সাবেক প্রেমিক বা প্রেমিকার সাথে কোথাও ঘুরেছেন, ভাল সময়গুলো দীর্ঘকাল কাটিয়েছেন এমন পরিবেশগুলো ত্যাগ করুন ও নতুন জায়গাগুলোতে ঘুরে আসুন, নতুন পরিবেশে সময় কাটান। পরিবার ও ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের সহায়তা নিন, কান্না করুন, ক্রোধ প্রকাশ করুন, নিজকে হালকা করুন।

অতীত নিয়ে পড়ে থাকবেন না- কেন আমার সঙ্গে এমন হলো বা সম্পর্ক কেন টিকলো না? সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পর এরকম প্রশ্ন অনেকেরই মাথায় ঘোরে। এসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজা বন্ধ করুন। প্রাক্তনের দেয়া পুরোনো চিঠি-গিফট ফেলে দিন, ই-মেইল, মেসেজ, ছবি ইত্যাদি ডিলিট করুন। পরিচিত কারো কাছ থেকে প্রাক্তন সম্পর্কে খোঁজখবর নেবেন না। সে কেমন আছে, আপনাকে কি মনে করে বা সোশ্যাল মিডিয়াতে কি আবডেট দিচ্ছে তা স্টক করা থেকে বিরত থাকুন।

প্রতিশোধ নেবেন না- ক্ষমা করতে শিখুন। যদি মন থেকে ক্ষমা করতে নাও পারেন তবুও প্রতিশোধ নেবেন না বা নেওয়ার চেষ্টা করবেন না। বিশেষ করে রাগের মাথায় এমন কিছু করবেন না যাতে আপনার ব্যক্তিত্ব নষ্ট হয় অথবা আপনি কোনভাবে আইনের জটিলতার পরিস্থিতিতে পরেন।

প্রাক্তন সম্পর্কে কোন প্রকার মন্ত্যব্যে করবেন না- অনেকেই বিচ্ছেদের পর প্রাক্তনকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বাজে বা আবেগপ্রবণ কথা লিখতে থাকেন। তারা ভাবেন, এতে ওই ব্যক্তিটি হয়ত ফিরে আসবে অথবা অপদস্ত হচ্ছে। এই কাজটি ভুল। এতে আপনার দুর্বল ব্যক্তিত্বের প্রমান পায়। এটি একেবারেই করবেন না। খুব কষ্ট লাগলে ডায়েরিতে নিজের মনে যা আছে তা লিখুন এতে আপনি কিছুটা হলেও হালকা হবেন।

হয়তো ফিরে আসবে- প্রাক্তন ফিরে আসবে। কোন এক সময় হয়ত ফিরে পাবেন এরকম চিন্তা বা অযথা অপেক্ষা করে নিজের সময় নষ্ট করবেন না। পুনরায় সম্পর্ক ঠিক করার চেষ্টা করবেন না। নিজের আত্মসম্মান বজায় রাখুন। ভিক্ষার মত ভালোবাসা ফেরত চাইবেন না। এতে আপনিই ছোট হচ্ছেন তাই কষ্ট হলেও নিজেকে অন্তত ছোট করবেন না। নিজেকে ভালোবাসুন। আপনার ভালো লাগা কাজগুলো করুন যেমন- শপিং করা, কারও বাসায় ঘুরতে যাওয়া, মুভি দেখা, পরিবারের সাথে সময় কাটান, বাচ্চাদের সাথে সময় কাটান ইত্যাদি।

যোগাযোগ বন্ধ করুন- ‘বন্ধু’ হয়ে থাকব, এই চিন্তা করবেন না। বন্ধুত্ব থেকে প্রেম হতে পারে, কিন্তু প্রেম থেকে নেমে বন্ধুত্বে আসা সম্ভব নয়। তাই যথাসাধ্য অনুযায়ী দূরত্ব বজায় রাখুন। মুঠোফোন, ফেসবুক, ই-মেইল, হোয়াটস অ্যাপসহ সব ধরনের যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ করে দিন। হয়তো তীব্র ইচ্ছে হবে যোগাযোগ করার, সে বিষয়ে নিজের আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করুন। একাকীত্ব পূরণের জন্য পরিবারের সাথে সময় কাটান, ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের শরণাপন্ন হোন।

নিজেকে ব্যাস্ত রাখুন- বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিন যেমন – খেলাধুলা, বিতর্ক, পাবলিক স্পিকিং, লেখালেখি, স্টোরি টেইলিং, ইত্যাদি। এ ছাড়া বিভিন্ন সেমিনারে অংশ নিন, জাম্পিং, ছবি বা ক্যনভাস আঁকতে পারেন, সাইক্লিং, সুইমিং, সামাজিক কাজগুলতে অংশ নিতে পারেন, বই পরতে পারেন, রান্না শিখতে পারেন, ব্যবসায় অথবা চাকরিতে নিজে কে ব্যস্ত রাখতে পারেন। বাগান করতে পারেন, পছন্দের পোষা প্রাণী পালতে পারেন। গান শুনুন- তবে প্রাক্তন কে মনে করিয়ে দিতে পারে এমন গান নয় মন প্রফুল্ল করে এমন গান শুনতে হবে। মটিভেশনাল বা কমেডি মুভি, নাটক, কন্টেন্ট ভিডিও দেখতে পারেন।

নিজের প্রতি যত্ন নিন- বিচ্ছেদের পর অনেকেই অতীতের ভাবনায় নিজের প্রতি যত্ন নিতে ভুলে যায়। এ কঠিন সময়ে অনেকেই শারীরিক ও মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত হয়। ফলে কেউ কেউ আত্মহত্যার কথা ভেবে থাকেন অথবা শরাপন্ন হন। আবার অনেকের শরীর খারাপ বা অসুস্থ থাকে তাই অবশ্যই আপনার দেহ ও মনের আত্মার পরিচর্যা করুন । নিজের শরীর ও মনকে ভালো রাখতে জিমে অথবা বাসায় এক্সারসাইজ করুন, ইওগা করুন, কাউন্সিলিং করুন। রুপ চর্চা করুন। সকালে বা বিকালে হাঁটতে বের হন, যতদিন অতীত ভুলতে পারছেন না ততদিন কাউন্সিলিং বন্ধ করবেন না। অনেকে মাদকাসক্ত বা বাজে নেশায় চলে যায় এটা করা একেবারেই উচিত নয়। প্রয়োজন হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ঘুমের ওষুধ খেতে পারেন।

নিজেকে একা করে ফেলবেন না- নিজেকে সবার থেকে গুটিয়ে রাখবেন না কেননা একা থাকলে আপনাকে একাকীত্ব গ্রাস করবেই। এই সময় এমন কারও সঙ্গে কথা বলুন, যাকে নির্দ্বিধায় আপনি সমস্ত কথা খুলে বলতে পারবেন এবং সেও আপনার সমস্ত কথা গোপন রাখবে। এ সময়ে আপনাকে অনেকেই ইতিবাচক – নেতিবাচক কথা বলে থাকবে। অন্যের কথায় নিজেকে হীনমন্য না ভেবে নিজের ওপর আস্থা রাখুন। নিজের ভালো দিকগুলো ও সফলতাগুলো গড়ার চেষ্টা করুন। আদর্শ মানুষের সঙ্গ অবলম্বন করুন এবং আপনার শুভাকাঙ্ক্ষীর কাছে সময় কাটান।

জোর করে ভোলার চেষ্টা করবেন না- আপনি মাথায় এটা আনবেন না যে আমার তাকে ভুলে যেতেই হবে। প্রাক্তন কে ভুলে যেতে তার সাথে বাজে অভিজ্ঞতাটি মনে করুন। কাউকে ভোলার চেষ্টা করলে তাকে আরও বেশি মনে পড়ে। তাই কাউকে জোর করে ভুলতে চেষ্টা করবেন না।

অতীত থেকে শিক্ষা গ্রহন করুন- অতীত নিয়ে আফসোস না করে এটা আপনার জীবনের একটা শিক্ষণীয় অধ্যায় ভাবুন। নিজের আবেগকে নিয়ন্ত্রনে রেখে বাস্তবতা মেনে নিতে আপনি এখন শিখে গেছেন তাই আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করুন। সামনে কোন বাধা আসলে আপনি নিজেকে শক্ত রেখে সামনে এগিয়ে যেতে পারবেন এরকম আস্থা নিজের প্রতি তৈরি করুন দেখবেন আপনার সামনে এগিয়ে চলার পথ অনেকটা সহজ হয়ে যাবে।

সত্যি কি ভালোবাসতে শুরু করেছেন?

সম্পর্ক শুরুর প্রথম পর্যায়ে সাধারনত আমরা একটা গোলক ধাঁধার ভেতর থাকি। আমাদের মনটা কি চাইছে তা ঠিক বুঝে উঠতে পারিনা। নিজের অনুভূতিগুলো নিজের কাছেই অপরিচিত মনে হতে থাকে। আসলেই কি ভালোবাসা অনুভব করছেন নাকি শুধুই আকর্ষণ কাজ করছে, বিষয়টা অবশ্যই বুঝতে হবে তা না হলে ভুল সিদ্ধান্তের কারনে পরে কষ্ট পেতে হতে পারে। মনোবিজ্ঞানীরা ‘Focused on Heterosexual Relationships’ গবেষণার মাধ্যমে কিছু প্রশ্ন দাঁড় করিয়েছেন, যে প্রশ্নের উত্তর আপনাকে সাহায্য করবে আপনার মনের অনুভূতির সঠিক ব্যাখ্যা দিতে।

ইদানিং বিশেষ ধরনের মানুষিক চাপ অনুভব করছেন?

কারো সাথে নতুন সম্পর্কের শুরু করেছেন এতে যদি আপনার মানসিক চাপ বৃদ্ধি পেতে থাকে তবে ধরে নিতে হবে এই সম্পর্কটা ভালোবাসার সম্পর্কে রুপ নিতে পারে। কেননা চিকিৎসা বিজ্ঞানে উল্লেখ আছে মানুষ ভালোবাসলে তার স্ট্রেস হরমোন লেভেল বৃদ্ধি পায়। আপনি যদি বেশী চিন্তা করেন, বেশী অস্থির থাকেন বা একটু ঘোরে থাকেন তবে ধরে নিতে হবে আপনার স্ট্রেস হরমোন লেভেল বৃদ্ধি পেয়েছে, মানে আপনি ভালোবাসা অনুভব করছেন।

হঠাৎ নতুন কিছু করার চেষ্টা করছেন?

মানুষ যখন প্রেমে পড়ে তখন তার পছন্দের মানুষটির ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিয়ে সাধারণ চরিত্রের বাইরে নতুন ধরনের কিছু করার চেষ্টা করে। যেমন নতুন নতুন রেস্তরাঁতে নতুন ধরনের খাবার টেস্ট করা, ঘুরতে যাওয়া, তাকে মুগ্ধ করার বিভিন্ন প্রয়াসের পাশাপাশি বৈচিত্রতা আসে জীবন যাপনে ও চিন্তায় ।

সঙ্গী সম্পর্কে বেশী বেশী তথ্য সংগ্রহ করছেন?

আপনি যদি আপনার সঙ্গী সম্পর্কে অনেক বেশী কিছু জানার চেষ্টা করছেন তার মানে আপনি তার সাথে অনেক দূর যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন। এটাই ভালোবাসা।

“I Love You” বলতে মনে ইচ্ছা জাগলে?

মুখে ভালোবাসি কথাটা বলতে সবার জড়তা আসে। আর যখন বোধ করবেন আপনি এই “I Love You” কথাটা বলতে কোন জড়তা বোধ করছেন না, তাহলে আপনি ভালোবাসতে শুরু করেছেন। ‘Heterosexual’ গবেষণায় বলা হয়েছে ভালোবাসি কথাটা প্রথম বলতে পুরুষরা বেশী আগ্রহী হয়।

আপনার আবেগ কি খুব বেশী তীব্র হচ্ছে?

অস্থির মনের মানুষ গুলো কোন সম্পর্কে জড়ালে এইটা নিয়ে নিজেকে বার বার প্রশ্ন করে থাকে, নিশ্চিত হবার জন্য। যারা বেশী আবেগ প্রবণ তাদের জন্য ভালোবাসার আবেগ গুলো আলাদা করাটা বেশ কঠিন হয়ে যায়। এই ধরনের আবেগপ্রবণ মানুষরা ভালোবাসতে শুরু করলে তার আবেগ তাদের আবেগ তীব্র থেকে তীব্র হয়।

আপনি যার প্রতি দুর্বল তার কাছ থেকে আপনার অনুভূতি গুলো কি ফিরে পাচ্ছেন ?

আপনি যদি একজন মেয়ে হয়ে থাকেন এবং ভালোবাসা অনুভব করে থাকেন, তবে আপনার অপর পক্ষের প্রতিক্রিয়া জানতে চেষ্টা করবেন। গবেষণায় দেখা গেছে মেয়েরা তাদের আবেগকে ছেলেদের তুলনাই বেশী নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে।

আপনি কি তার সাথে সময় কাটাতে খুব বেশী আগ্রহী?

ভালোবাসা অনুভবের শুরুর দিকে আমাদের মস্তিষ্কের dopamine অংশ প্রতিক্রিয়া করে। এই অংশকে ‘প্রতিদানের অংশ’ বলে । এই প্রতিক্রিয়ার ফলে বার বার ভালোলাগার মানুষটাকে দেখতে মন চায়, তার সাথে সময় কাটাতে আগ্রহ বোধ করে। ভালোবাসার সম্পর্কের সুচনা এভাবে হয়।

সুখ তৈরি করে নিতে হয়!

সুখী হতে চায় না এমন মানুষ পাওয়া কঠিন। মানুষের মধ্যে সুখী জীবন পাওয়ার প্রবল ইচ্ছা থাকলেও সুখটা কেউ তৈরি করে নিতে চায় না। বরং মানুষ সুখ কিনতে চায়।

মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, সুখ বৈষয়িক বা জাগতিক কোনো ব্যাপার নয়। সুখ বহুলাংশে মনস্তাত্ত্বিক ব্যাপার।

হার্ভার্ডের মনোবিজ্ঞানী ড্যান গিলবার্ট বলেন, তোমার সুখ তোমাকেই সংশ্লেষণ (Synthesize) করতে হবে। তোমার শরীরে মনস্তাত্ত্বিক একটি (ইমিউন সিস্টেম) রয়েছে যা তোমার পারিপার্শ্বিকতা বা তোমার বিশ্বকে জানতে ও বুঝতে সাহায্য করার মাধ্যমে তোমাকে সুখী করে তুলবে। নতুন কাপড়-চোপড় কেনা বা লটারির অগাধ টাকা অর্জন তোমার জীবনের সব দুঃখ দূর করে দিয়ে অনাবিল আনন্দ ও সুখ বয়ে আনবে, এ ধরনের কল্পনা মানুষের চিন্তাশক্তিকে ভুল পথে পরিচালিত করে।

যেভাবে সুখ তৈরি করবেনঃ

সুখের বিপরীতে আছে দুঃখ তাই আপনার জীবনে সুখ-দুঃখ দুটি পরিস্থিতিই আসবে এ সত্যি মেনে নিতে হবে।

প্রাপ্তির তালিকা করুন। আপনি কি কি পান নি সেটা নিয়ে হতাশাবোধ না করে কি কি পেয়েছেন তার হিসেব রাখুন।

নিজেকে ভালবাসুন। অন্য কাউকে নিজের জীবনের সুখের কারন ভাববেন না।

অন্যের জীবনের সাথে নিজের জীবনের তুলনা করবেন না। নিজের আবস্থান কে নিজে সম্মান করুন।

নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস রাখতে হবে। কাজে বা জীবনে ব্যর্থতা আসবেই তাই বলে আত্মবিশ্বাস হারালে চলবে না।

পর্যাপ্ত পরিমান ঘুমাতে হবে। অধ্যাপক স্যান্তোস বলেন- “এখানে চ্যালেঞ্জটা হলো, প্রতি রাতে অন্তত আট ঘণ্টা ঘুমানো এবং সেটা হতে হবে সপ্তাহের সাতটি রাতেই। এই সাধারণ বিষয়টি অর্জন করা অনেকের কাছে অনেক কঠিন বলে মনে হয়। বেশি ঘুমানোর ফলে বিষণ্ণতায় ভোগার সম্ভাবনা হ্রাস পায় এবং আপনার ভেতর ইতিবাচক মনোভাব তৈরি করে।”

গবেষণায় এসেছে, পানিশূন্যতা, পানির অভাব মানুষের মনের উপর প্রভাব ফেলে। মানুষকে বিষাদগ্রস্ত করে, মানুষের মনে অবসাদ তৈরি করে। বিশেষ করে এটা মহিলাদের ক্ষেত্রে বেশি ঘটে। তাই সুখ তৈরি করতে নিজের মনের অবস্থা ভালো রাখুন।

কথায় আছে স্বাস্থ্যই সকল ‘সুখের’ মূল তাই সুখ তৈরি করতে খাদ্যভাস মেইনটেইন করতে হবে, ধ্যান বা ইওগা করতে পারেন, সকাল-বিকাল হাটা বা ব্যায়াম করতে পারেন। -সর্বচ্চ সময়টা পরিবার কে দিন, কাজের ফাকে তাদের খোঁজ খবর রাখুন।

ভালো বন্ধু বা সঙ্গ বাছায়ে সতর্ক থাকুন।

মানুষের সাথে সম্পর্কের গুরুত্ব দিন ও সুসম্পর্ক ধরে রাখুন। প্রয়োজন হলে কাউকে এড়িয়ে চলুন কিন্ত সম্পর্ক খারাপ হবে এমন কিছু করবেন না।

ক্ষমা করতে শিখুন। আপনি যত বেশী ক্ষমা করতে পারবেন আপনি মানসিক দিক থেকে তত সুখী হতে পারবেন।

জীবনটা কে ব্যস্ত মহলের চাপে রাখবেন না। নিজের জন্য আলাদা করে সময় বের করে রাখুন এবং ঐ সময়ে আপনি কেবল তাই করবেন যা ঐ দিন ঐ সময় আপনার করতে ইচ্ছে হবে। দেখবেন নিজেকে অন্যরকম সুখী মনে হবে।

সবসময় ইতিবাচক চিন্তা করবেন এবং অন্যকে উপদেশ দিবেন। দেখবেন আপনার চিন্তা করা ও অন্যের মধ্যে চিন্তাচেতনা বাড়াতে আপনার অন্যরকম ভালো লাগবে। এটাও এক ধরনের সুখ।

সামাজিক যোগাযোগ কমিয়ে বাস্তব যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করুন কেননা ভার্চুয়াল পরিবেশ আপনাকে সমসাময়িক সুখ দিতে পারবে।

সামাজিক কাজগুলোতে অংশগ্রহন করুন। বেশী বেশী দান করুন। নিজেকে অন্যের মাঝে বিলীন করার মাঝেও সুখ রয়েছে।

অতিমাত্রায় ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাববেন না। বেশী বেশী ভবিষ্যৎ চিন্তা আপনার বর্তমান সময়ের সুখগুলো নষ্ট করে দেয় এবং হতাশা তৈরি করে।

নিয়মতান্ত্রিক জীবনযাপন ও নিজের প্রতি আস্থা রাখতে পারলে আপনি নিজেকে সুখী করতে পারবেন খুব সহজেই। আপনি সুখ যেমন কিনতে পারবেন না তেমনি কয়েকদিনে নিজেকে সুখী মানুষ হিসাবে গড়তেও পারবেন না। সুখবোধ কে নিজের ভিতরে ধীরে ধীরে গড়ে তুলতে হবে এবং কঠিন সময়ে নিজের মনোবলকে চাঙ্গা রাখতে হবে কেননা দুঃখ ছাড়া সুখ বোধ তৈরি করা সম্ভব নয়।

ঈর্ষা স্বাভাবিক; তবে ভালোবাসা থেকে জন্মানো ঈর্ষা একটি রোগ

ঈর্ষা মানুষের মনের এক ধরনের অনুভূতি। তবে দাম্পত্য জীবনে ঈর্ষা অনুভূতি বরাবরই নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর যত দম্পতি ম্যারেজ থেরাপিস্টের শরণাপন্ন হন, তাদের এক তৃতীয়াংশই যান “ঈর্ষা” থেকে উদ্ভুত সমস্যা নিয়ে।

মূলত ভালোবাসা বা অধিকার সম্পর্ক থেকে এ ঈর্ষার সৃষ্টি হয় তবে ভালোবাসা থেকে জন্মানো এ ঈর্ষা কে গবেষকরা এক ধরনের রোগ বলে মনে করেন। তারা রোগটির নাম দিয়েছেন ‘ওথেলো সিনড্রম`।

নারীদের তুলনায় পুরুষেরা এ রোগে বেশী ভুগে থাকেন।দাম্পত্য সম্পর্কে যদি প্রতিযোগিতা দেখা দেয় তখন সম্পর্কে ঈর্ষার উৎপত্তি হয়।

যেমন- স্বামীর তুলনায় স্ত্রীর ভালো বেতনের চাকরী, স্ত্রীর সাফল্য, অথবা স্বামী বেকার থাকলে তখন সে পুরুষ হীনম্মন্যতায় ভুগেন। এক্ষেত্রে ৮০ শতাংশ পুরুষই ভাবেন যে তাদের স্ত্রী সংসারে নিজের আর্থিক ক্ষমতা দেখাতে চাইছে।

তৃতীয় ব্যাক্তি আগমনের ফলেও দাম্পত্য জীবনে ঈর্ষার সৃষ্টি হয়। নারী পুরুষ উভয়ই এ রোগে ভুগে থাকেন। এক্ষেত্রে নারী বা পুরুষ সঙ্গীকে হারানোর ভয় অনুভব করে থাকেন।

যৌন বিশেষজ্ঞ ও লেখক পলা হলের মতে, ভালবাসার ক্ষেত্রে অল্প মাপের ঈর্ষা ধনাত্মক শক্তি (positive force) হিসেবে কাজ করে। এটি আবেগকে বেগ দেয় এবং যৌন মিলনকে কামময় করে দাম্পত্য সম্পর্ককে জিইয়ে রাখে। কিন্তু উচ্চমাত্রার ঈর্ষা ঠিক এর বিপরীত। অযৌক্তিক ঈর্ষা থেকে জন্ম নেয় রাগ, বিতৃষ্ণা, বিশ্বাসহীনতা, প্রতিহিংসা,প্রতিশোধপরায়ণতা, ডিপ্রেশন, এবং সর্বোপরি দাম্পত্য কলহ। ঈর্ষা থেকে উদ্ভুত দাম্পত্য কলহ সময়ের সাথে বাড়ে বৈ কমে না এবং চুড়ান্ত পরিণতি রুপ নেয় বিবাহ বিচ্ছেদের ।

ভালোবাসার পরিচর্চা

ভালোবাসা হৃদয়ের একটি অনুভূতি। ভালোবাসা মানে দূরে থেকেও কাছে থাকার অনুভব করা। কখনও কখনও সময়ের কোন ঠাসায় পরে ভালোবাসার রুপের পরিবর্তন ঘটে। মনে সংকোচ জাগে ভালোবাসার মানুষটি বোধ হয় আর আগের মত নেই বা ভালোবাসছে না। তাই প্রয়োজন ভালোবাসার পরিচর্চার। সঙ্গীর কাছে থেকেও যদি মনে হয় মানুষটি দূরে। তাহলে কিছু বিষয়ে সতর্ক হবেন যে আপনাদের মধ্যে ঘটছে কি না।

যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখবেনঃ

ছোটখাটো ভুল গুলোতে কেউ কাউকে ছাড় দিতে না পারা। আগে হয়ত দুজন মানিয়ে নিতেন কিন্তু এখন আর ইচ্ছে হয় না।

অহেতুক ঝগড়া। কারনে অকারনে দুজনার বার বার ঝগড়া হওয়া।

কটু কথা বলা অর্থাৎ শ্রদ্ধাবোধ কমে যাওয়া। হয়ত দুজন দুজনার ইচ্ছে কে আগে যেমন প্রাধান্য দিতেন এখন তা আপনি বা আপনার সঙ্গী করছেন না।

সঙ্গীর ভালো লাগা কিছু করতে আপনারও ভালো লাগতো বা তার জন্য শপিং করতে ভালো লাগতো। এখন আর সে অনুভূতিগুলো কাজ না করা।

ব্যাস্ততায় তার সঙ্গ বা কথা আপনার বিরক্ত লাগে। অথবা আপনার সঙ্গী ব্যাস্ততা কে আপনার চেয়ে প্রাধান্য দিচ্ছে।

দুজন কোথাও ঘুরতে বের হলেন কিন্তু আপনার বা আপনার সঙ্গীর মন উদাসীন থাকছে।

আগের মত বোঝাপড়া হচ্ছে না। মনে হচ্ছে আপনার সব বিষয়ে সে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ করছে অথবা আপনি করছেন।

সঙ্গীর সাথে সময় কাটাতে গিয়ে যদি আপনার মনে হয়, কোন কাজের পিছনে সময় দিলে ভালো হতো অথবা সঙ্গী কাজকে আপনার চেয়ে প্রাধান্য দিচ্ছে।

যদি আপনার সাথে অন্যের রুপ বা গুনের তুলনা করতে থাকে অথবা আপনার মনে তার থেকে অন্যের রুপ বা গুন ভালো লাগতে থাকে।

ছোট বা বড় যে দোষ হোক যদি সঙ্গীর মানসিক বা শারীরিক শাস্তি দেয়ার মন-মানসিকতা বার বার কাজ করে। উপরিউক্ত বিষয়গুলো যদি আপনাদের মধ্যে ঘটতে থাকে তাহলে আপনাদের ভালোবাসার পরিচর্চার প্রয়োজন।

যেভাবে পরিচর্চা করবেনঃ

সঙ্গীর সাথে খোলামেলা আলোচনা করে নিন যে আপনাদের সম্পর্কে পরিবর্তন ঘটছে ও ভালোবাসার পরিচর্চা করা দরকার।

সঙ্গীর সাথে আগের চেয়েও বেশী সময় কাটান।

ব্যাস্ততা কে এড়িয়ে চলুন সঙ্গী কে নয়।

নতুন পরিবেশে অথবা নিজেদের পছন্দের জায়গায় ঘুরে আসুন।

সারপ্রাইজ কিছু করতে পারেন যেমন- গিফট দিতে পারেন, ঘরের ডেকরেশন পরিবর্তন করতে পারেন, সঙ্গীর পছন্দের খাবার রান্না করতে পারেন, এক সাথে সিনেমা দেখতে পারেন, শপিং করতে পারেন ইত্যাদি।

সঙ্গীর ভালোলাগা বিষয়গুলো প্রাধন্য দিন। তখন সেও আপনার ভালো লাগার বিষয়ে পুনরায় আগ্রহী হয়ে উঠবে।

হয়ত আপনার সঙ্গীর কোন বিষয় আপনার ভালো লাগছে না একেবারেই চুপ থাকুন তবুও কটু কথা বা তাকে ছোট করে কোন কথা বলবেন না।

সঙ্গীর ভুলের জন্য ক্ষমা করুন। কোনোভাবেই মানসিক বা শারীরিক নির্যাতন করবেন না।

আমাদের যেমন নিজেদের শারীরিক ও মানসিক চর্চার দরকার হয় ও আমরা করে থাকি। তেমনি দাম্পত্য জীবনে ভালোবাসার পরিচর্চা করা অবশ্যই প্রয়োজন। ভালোবাসা ঠিক রঙ বদলায় না রঙ বদলায় সময় আর আমাদের উচিৎ নিজেদের সমঝোতায় এসে ভালোবাসার পরিচর্চা করা।

সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার দায়িত্ব কার?

ভালোলাগা থেকেই একটি সম্পর্কের শুরু, যার রেশ টেনে যায় ভালোবাসায়, আর সমাপ্তি বিয়ে পর্যন্ত। কিন্তু এই স্বর্গতুল্য সম্পর্ককে টিকিয়ে বা আগলে রাখার দায়ভার কার – নারী না পুরুষের? উত্তরটি সহজ- দু’জনেরই। কিন্তু কৌশলগত দিক থেকে এই দায়িত্ব-কর্তব্য ও বোঝাপড়াগুলো দু’জনের জন্য ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে।

দায়িত্ব নিন দু’জনেইঃ একটি কথা উভয়েরই মনে রাখা উচিত, একতরফা আর যাই হোক সম্পর্ক হয় না। আমরা প্রায়ই ভুল করি, রিলেশনশিপ টিকিয়ে রাখা ও ভাঙনের সমস্ত দায়িত্ব ও সম্ভাবনা একটি পক্ষের ওপর ছেড়ে দিই। পুরুষেরা নারীদের আর নারীরা পুরুষদের দোষারোপ করেন। আপনিই ভাবুন, একটি সম্পর্ক কী করে একটি পক্ষ সামলে নেবেন? বাকি যিনি থাকবেন তার কোনো রেসপনসিবিলিটি, সেনসিবিলিটি ও যত্নের প্রয়োজন নেই? যদি না-ই থাকে, তাহলে তা সম্পর্ক নয়। সম্পর্কটা দাড়িপাল্লার মতো, যার দু’টো দিক সমান ভার নিলেই ভারসাম্য বজায় থাকে।

নিজেকে দিয়ে বিচার করুনঃ আপনি কর্মজীবী, আপনার সঙ্গীও তাই। কর্মক্ষেত্র ছাড়াও আপনাদের উভয়েরই পরিবার, বন্ধু ও অন্যান্য সামাজিক কিছু সম্পর্ক রয়েছে। দু’জনের দিক থেকেই এ বিষয়গুলোকে ছাড় দিন। লক্ষ্য করুন, আপনার আচরণে আপনার সঙ্গী এসব সম্পর্ক সহজভাবে সচল রাখতে বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছেন কিনা। যদি তিনি আপনাকে এ বিষয়ে ছাড় দিতে পারেন তাহলে আপনিও দিন। যদি আপনি তাকে চাপে রাখেন, তার স্বাভাবিক জীবনযাপনে বাধার কারণ হন, তাহলে একটা সময় পর আপনার সহজ বিষয়গুলোকেও আপনার সঙ্গীর কাছে কঠিন হয়ে ঠেকবে। তৈরি হবে তুলনাবোধ। তার মনে হবে- তিনি আপনাকে ছাড় দিচ্ছেন, তবে আপনি কেন নন?

যোগাযোগ রাখুনঃ নারী-পুরুষ দু’জনেরই ব্যস্ততা রয়েছে। একটা কথা জানেন কি- বিশ্বের সবচেয়ে ব্যস্ততম মানুষটিও সবচেয়ে বেশি সম্পর্কযুক্ত থাকার ক্ষমতা রাখেন। শুধু চাই ইচ্ছেটা। কাজের ফাঁকে ফাঁকে দু’একটা ফোন করে খোঁজখবর নিন- তিনি কেমন আছেন, খেয়েছেন কিনা। আদতে একদম সময় নেই বলে কিছু নেই, ভুলে যাওয়াটা ভিন্ন বিষয়।

মনোযোগ দিন, বাধা নয়ঃ প্রিয় মানুষের প্রতি মনোযোগ মানেই এই নয়, তার দিকে সর্বক্ষণ নজর রাখতে হবে, তাকেই সারাক্ষণ ভাবতে হবে। তবে খেয়াল রাখা জরুরি। হতে পারে আপনার সঙ্গী আপনার প্রতি একটু বেশিই যত্নশীল, স্নেহপরায়ণ বা অবসেসড। কিন্তু এতে আপনি বিরক্ত। একটু ভেবে দেখুন তো- তিনি আপনাকে ভালোবাসেন বলেই আপনাকে নিয়ে ভাবেন, এতে বিরক্তি প্রকাশের কিছু নেই। হ্যা, যদি তার এই যত্নশীলতা আপনার স্বাভাবিক চলাফেরাকে বাধাগ্রস্ত করে তবে সেক্ষেত্রে ভিন্ন কথা। ব্যাপারটি আপনার সঙ্গীকে ঠাণ্ডা মাথায় বুঝিয়ে বলুন। সুন্দরভাবে বললে বা বোঝালে সবই সম্ভব।

ভালোবাসার প্রকাশঃ নারী হোন বা পুরুষ, ভালোবাসার প্রকাশ করাটা খুব জরুরি। কথায় কথায় ভালোবাসি বলতে হবে তা নয় কিন্তু। আপনার কাজ ও আচার-আচরণে যেনো সেটা প্রকাশ পায় আপনার সঙ্গীর কাছে।

ভয় নয় আশ্রয় হোনঃ সঙ্গীর কাছে আপনার প্রতিমূর্তি কী বা কেমন তা নিয়ে ভেবেছেন কখনও? তিনি কি আপনাকে ভয় পান নাকি আশ্রয় ভাবেন? আপনার কথা বা আচরণ কি তার ভয়ের কারণ? সম্পর্কে ভয় দূরত্ব সৃষ্টি করে। বর্তমান সময়ে রিলেশনশিপে স্ট্যাবিলিটির চেয়ে ব্রেক-আপের সংজ্ঞা বেশি স্পষ্ট। এসময়ের অনেক প্রেমিক যুগলদের কাছেই সম্পর্কের যেকোনো সমস্যার একমাত্র সমাধান হচ্ছে ব্রেক-আপ। আপনি কি আপনার সঙ্গীর যেকোনো ভুল, আচরণ বা ঘটনার কারণেই ব্রেক-আপের হুমকি তার দিকে ছুঁড়ে দিচ্ছেন বা তিনি দিচ্ছেন আপনাকে? যদি নিজেদের মধ্যে সমস্যা থাকে তাহলে সেটা নিজেরাই মিটিয়ে নিন। হোক একটু ঝগড়া, কথা কাটাকাটি, মান-অভিমান। সময় নিন, আপনাআপনিই সব ঠিক হয়ে যাবে। যদি ভালোবাসা সত্যিই থাকে, তবে মিটে যাবে সব। একসঙ্গে থাকবেন এটা যদি লক্ষ্য হয় তবে এসব ঝগড়া, পছন্দ-অপছন্দ নিয়ে কথা কাটাকাটির একসময় অবসান হয়ে যাবে। এটা নিশ্চিত। আর যদি এটা মাথায় থাকে যে, যেকোনো বিষয় নিয়ে লাগলেই ছেড়ে দেবেন বা ছেড়ে যাবেন তাহলে নিশ্চিত কোনোদিনও এসব সমস্যার সমাধান হবে না। কারণ মনে আশঙ্কা থাকবেই যে পাশের মানুষটি ছেড়ে যাবে একদিন।

অযথা দোষারোপ করবেন নাঃ কোনো নির্দিষ্ট ঘটনা নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে দোষারোপ করবেন না। ভুল সবারই হয়, ক্ষমা করুন। আর যদি আপনার ভুলের জন্য সে আপনাকে দোষারোপ করে তাহলে ক্ষমা চেয়ে নিন। সম্পর্কটাই যদি মূখ্য হয়, তবে ক্ষমা চাইতে বা করতে ক্ষতি কী। তবে এখানেও কথা আছে- আপনি কী চান সম্পর্কটা নিয়ে? যদি নিতান্ত ওই ব্যক্তিটিকেই আর সহ্য না হয় বা ভালোলাগা কেটে যায় অথবা নতুন কোনো সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তাহলে ভিন্ন বিষয়। সেক্ষেত্রে নতুন সম্পর্ককে আমন্ত্রণ জানানোর খাতিরে বর্তমান সঙ্গীর সঙ্গে নেতিবাচক আচরণ বা তাকে অহেতুক দোষারোপ না করে সরাসরি বলে দিন সত্যটা। অযথা সম্পর্কের সমস্ত অসময়ের দোষ তার কাঁধে চাপাবেন না।

সুখী হওয়াই মূখ্য, ভাঙন নয়ঃ অ‍াপনার সম্পর্কের মূলমন্ত্র কী? চিরদিন সুখী হয়ে একসঙ্গে বাঁচা নাকি ভাঙনের ভয়ে একে অপরের থেকে গা বাঁচিয়ে কোনোভাবে সম্পর্ক বয়ে চলা? কোনো বিষয় নিয়ে বিবাদ হলেই ব্রেক-আপের কথা মাথায় আনবেন না, নিতান্তই যদি বাধ্য না হোন। কথায় কথায় ব্রেক-আপের ভয় দেখাবেন না, এতে স্বাভাবিক আস্থা ও বিশ্বাসের অবক্ষয় হয়, যা সম্পর্ককে ঢিলে করে দেয়। ব্রেক-আপের ভয়কে সামনে রেখে কোনো সম্পর্ক সুস্থভাবে বেড়ে উঠতে পারে না। একে অপরকে বোঝান- আপনারা একসঙ্গে থাকবেন বলেই একই পথে চলছেন, তাই নিজেদের সব সমস্যাগুলোকে নিজেদেরই সামলে উঠতে হবে। ব্রেক-আপ করলে হয়তো একটি সম্পর্কের অবসান হবে, কিন্তু আদতে কি সুখী হওয়া সম্ভব?

নারী-পুরুষ উভয়েরই স্বাধীনতাবোধ রয়েছে। স্বাধীন চিন্তা ও নিজের একটি স্বতন্ত্র জগত রয়েছে প্রতিটি মানুষেরই। ভালোবাসার সম্পর্ক এমনই হওয়া উচিত যা পরস্পরের স্বাধীনতা, মূল্যবোধ ও সম্মানের স্থানগুলোকে অক্ষত ও সুরক্ষিত রাখবে।

সম্পর্কে প্রনয় আছে কিন্তু বন্ধুত্ব নেই; কি করবেন?

প্রণয় ও বন্ধুত্ব আলাদা দুটি শব্দ হলেও একটি সম্পর্কে এর দুটির উপস্থিতি এক সাথে থাকা খুব জরুরী। আপনার সঙ্গীকে আপনি ভালোবাসেন, তার সব দিক খেয়াল রাখছেন, একই ছাদের নিচে দুজন বাস করছেন, কিন্তু একে অপরের কাছে মন খুলে সব কথা বলছেন না বা বলতে পারেন না। এটি আপনাদের সম্পর্কের মাঝে জটিলতা আনতে পারে। স্বামী-স্ত্রী বন্ধুত্বের রূপ হয় অন্য রকম। তাই আপনাকে আগে বুঝতে হবে বন্ধুত্ব কার সাথে কি রকম হবে। পরিবারের সাথে বন্ধুত্ব, বন্ধুর সাথে বন্ধুত্ব আর স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের সাথে বন্ধুত্ব এক নয় কেননা সম্পর্ক গুলো আলাদা।

সম্পর্কে প্রনয় ও বন্ধুত্ব বজায় রাখতে যা করা উচিৎঃ

একে অপরের পছন্দ সম্পর্কে জানুন, অনেকটা আইস ব্রেকিং গেম এর মত একে অপরকে ব্যাক্তিগত ভালো লাগা খারাপ লাগা নিয়ে প্রশ্ন করুন।

দুজন ব্যাক্তির ভিন্ন ভিন্ন পছন্দ থাকতেই পারে এটাই স্বাভাবিক; এতে হতাশ হবার কিছু নেই। একে অন্যের পছন্দকে শ্রদ্ধা করুন, নিজের পছন্দকে অন্যের উপর চাপিয়ে দিবেন না।

স্বামী স্ত্রী’র নিজেদের ব্যাক্তিগত বিষয় গুলো অন্য কারও সাথে শেয়ার করবেন না।

নিজেদের ভালো মুহূর্ত গুলোর গল্প আপনার সঙ্গীকে মনে করিয়ে দিন।

আপনার অনেক স্মৃতি হয়ত আপনার সঙ্গী ভুলে যেতে পারেন তাই মনে করিয়ে দিতে আপনি ডায়েরি লিখতে পারেন, হতে পারে সেটি কবিতা কিংবা ছোট গল্প চাইলে আদি নিয়মের মত চিঠি লিখে বা চিরকুট লিখে তাকে উপহার দিতে পারেন।

ভালোমন্দ বোঝাপড়া নিজেদের মধ্যে সমঝোতা করে নিবেন পরিবারকে বা বন্ধুবান্ধব দিয়ে নিজের স্ত্রী বা স্বামী কে বোঝাতে যাবেন না।

দুজন ব্যাক্তির উচিৎ একে অপরকে জানা এবং প্রতিদিন জানতে চাওয়া। নিজেদের বারংবার জানতে চাওয়ার মাঝে গড়ে উঠবে বন্ধুত্ব আর যেটা থাকা চাই সেটা হল – বন্ধুত্বের শ্রদ্ধাবোধ।