বিয়ে নিয়ে ভয়?

কারও বিয়ের ছবি বা ভিডিও অথবা সিনেমা-নাটকে বিয়ের গল্প দেখলে অবচেতন মনে যে কেউ নিজের বিয়ের কল্পনা করে ফেলেন; স্বপ্ন বুনতে থাকেন। আবার বিয়ে নিয়ে অনেকের মাঝে ভয়ের অনুভূতিও কাজ করে এ বিষয়টি হয়তো অনেকেরই অজানা।

বিয়ে করতে ভয় পাওয়ার বিষয়টিকে একটি মানসিক রোগ হিসাবে সনাক্ত করা হয় যার নাম “গ্যামোফোবিয়া”। গ্রিক ভাষায় গ্যামো মানে বিয়ে আর ফোবিয়া মানে ভয়। বিয়ে ভীতি বিষয়টি আজকাল অনেক তরুন-তরুণীদের মাঝে ব্যাপক দেখা যাচ্ছে।

লক্ষণঃ

যাদের গ্যামোফোবিয়া হয় তারা সাধারণত সম্পর্কের ব্যাপারে বেশ উদাসীন থাকে, এসব নিয়ে সিরিয়াস কোনো কথা উঠলে এড়িয়ে যেতে চায়। এছাড়া, বিয়ে সংক্রান্ত যেকোনো আলোচনা তারা অপছন্দ করে। এমনকি বিয়ের আয়োজনেও তারা যেতে চায় না। বিয়ের ফর্মালিটিজকে তারা বেশ অপছন্দ করে। তারা সবসময়ই মনে করে সম্পর্কে জড়িয়ে যাওয়াটা হয়ত ভুল সিদ্ধান্ত হবে। এই সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগতে থাকাও গ্যামোফোবিয়ার একটি লক্ষণ।

প্রতিকারঃ

গ্যামোফোবিয়া হয়েছে কিনা এটি অনেকক্ষেত্রে বুঝার আগেই সম্পর্কগুলো নষ্ট হয়ে যায়। কমিটমেন্টে কারো অনীহা থাকলে তাকে যেভাবে তিরস্কার করা হয়, বিপরীতে সে আবার যে প্রতিক্রিয়া দেখায় এর ফলেই সম্পর্ক তিতকুটে হয়ে যায়। ফলে যে মানুষটা গ্যামোফোবিয়ায় ভুগছে সে আরো বেশি সম্পর্কের প্রতি বিরক্তিবোধ করে। আর যে গ্যামোফোবিয়া আক্রান্ত মানুষের সাথে সম্পর্ক নষ্ট করে ফেলেছে মাত্র সেও হয়ত গ্যামোফোবিয়ায় ভুগতে শুরু করবে একটা সময়।

কারনঃ

– ব্যাক্তি স্বাধীনতা হারানোর ভয়।

– দায়িত্ব নেয়ার ভয়। – সঙ্গীর থেকে প্রতারণা হবার ভয়।

– পারিবারিক কলহ হবে এ নিয়ে দুশ্চিন্তা।

– বিয়ের খরচ।

– বন্ধু মহল হারানোর ভয়।

– অনেকেই স্বাবলম্বী না হয়ে বিয়ে করতে চাইছেন না।

– অল্প বয়সে বিভিন্ন সম্পর্কজনিত জটিলতা।

– পরিবারের বা আশেপাশে কারও বিচ্ছেদ থেকে মনে জন্মানো নেতিবাচক ধারণা।

বিয়ে নিয়ে ভয়ের মাত্রা সবার এক নয়। তাই বিয়ে নিয়ে যাদের ভয়ের মাত্রা কম তাদের ক্ষেত্রে আশেপাশের নিকট আত্মীয়স্বজন বা বন্ধুবান্ধব বিয়ের ইতিবাচক বিষয়গুলো বোঝালে তারা স্বাভাবিকভাবে বিয়ে তে রাজি হবে। তবে যাদের ভয়ের মাত্রা বেশী তাদের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি আয়ত্তের মাঝে ফিরিয়ে আনতে এ রোগের জন্য ডাক্তার দেখাতেই পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ফোবিয়ার সবচেয়ে উপযোগী চিকিৎসা হচ্ছে হাইপোথেরাপি, সাইকোথেরাপি ও নিউরো-লিঙ্গুইস্টিক প্রোগ্রামিং।