নারী সঙ্গীকে উচ্ছল রাখতে পারে যে কথা গুলো বলবেন

ভালোবাসার সম্পর্ক গভীর করে তুলতে চাইলে একে অপরের খেয়াল খুশির ওপর অনেকটা লক্ষ্য রাখতে হয়। যারা বুদ্ধিমান তারা এই কাজটিই ভালোমতো করে থাকেন। একে অপরের পছন্দের প্রতি নজর রাখা, একে অপরের সাথে ভালো করে মানিয়ে চলা এই সবই ভালোবাসাকে গভীর করে তোলে। আরও একটি জিনিস রয়েছে যা অনেক বেশি মধুর করে তোলে, তা হলো মধুর কথাবার্তা। মুখের সামান্য মিষ্টি কথায় অনেকেরই মন অনেক ভালো হয়ে যায়। বিশেষ করে মেয়েদের। মেয়েরা এই জিনিসটি অনেক বেশি পছন্দ করেন।  

মেয়েরা চান তার প্রেমিক বা স্বামী তার প্রশংসা করুন, তার সাথে বসে কিছু কথা বলুন। আর সামান্য কিছু মিষ্টি মধুর কথাতেই অনেক বেশি খুশি হয়ে যান অনেক নারী। এসবের বাইরেও কিছু কিছু কথা রয়েছে যা নারীরা ভালোবাসার পুরুষটির কাছ থেকে শুনতে খুব পছন্দ করেন। তাদের কাছে এই কথাগুলোর মূল্য অনেক বেশি। পুরুষের মুখের এই কথাগুলোর মাধ্যমে নিজের গুরুত্বটা বুঝে নেন। চলুন তবে দেখে নেয়া যাক মেয়েরা তাঁর ভালোবাসার পুরুষের কাছ থেকে কোন কোন কথা শুনতে ভালোবাসেন।

তোমাকে অনেক সুন্দর দেখাচ্ছে: কম বেশি সব মেয়েরাই প্রশংসা শুনতে বেশ পছন্দ করেন। আর মেয়েরা এতো কষ্ট করে সাজগোজ এবং দারুণসব পোশাক-আশাক পরেন শুধুমাত্র তার পছন্দের মানুষটির কাছ থেকে একটু প্রশংসা শুনতে। এটা বাদে তাদের এতো সব কষ্ট করার কোনো কারণ নেই। তাই শুধুমাত্র ‘তোমাকে অনেক সুন্দর দেখাচ্ছে’ এই কথাটি মেয়েদের কাছে অনেক পছন্দের।

তুমি আমার জীবনের প্রথম নারী: যদিও এই কথাটি অনেকেই মিথ্যা বলে থাকেন এবং অনেক মেয়েই তা জানেন যে পুরুষটি মিথ্যা বলছে। তারপরও এই কথাটি শুনতে বেশীরভাগ মেয়েই পছন্দ করেন। অনেক মেয়েই এই কথাটি সত্য মিথ্যার ঊর্ধ্বে রেখে নিজেকে পছন্দের মানুষটির কাছে সকলের থেকে আলাদা ভাবতে থাকেন।

তুমি অনেক ভালো মা হতে পারবে: প্রতিটি মেয়েরই মনে মাঝে লুকোনো থাকে সুখী পরিবারের একটি চিত্র। যখন একটি ছেলে তাকে এই কথা বলেন তখন মেয়েরা নিজেকে অনেক বেশি আলাদা ধরণের গুণসম্পন্ন ভাবেন। ছেলেদের এই কথায় মেয়েরা ভাবেন তাদের গুণ সম্পর্কে তার প্রিয় মানুষটি বেশ ভালো করেই অবগত আছেন। এতে করে মেয়রা বোঝেন তার পছন্দের মানুষটি তাকে বেশ ভালোই বোঝেন। আর তাই মেয়েদের এই কথাটি শুনতে এতো ভালো লাগে।

এই সম্পর্কে তুমি কী মনে কর?: অনেক মেয়েই চান তার প্রিয় মানুষটি তার মতামতের গুরুত্ব দিন। হয়তো মেয়েটি আপনার মতামতকেই প্রাধান্য দেবেন কিন্তু আপনি যখন তার মতামত জানতে চাইবেন তখন সে মনে মনে অনেক খুশি হবেন। অনেক মেয়ের কাছেই এইটুকু অনেক বড় একটি ব্যাপার।

তুমি তো জানোই আমি কী ভাবি: অনেক সময় ছেলেরা হয়তো কিছু লুকোনোর জন্য এই কথাটি বলে থাকেন। কিন্তু এই কথাটির মূল্য মেয়েদের কাছে অনেক বেশি। যখন একটি ছেলে তার সঙ্গিনীকে বলেন ‘তুমি তো জানোই আমি কি ভাবি’ তখন মেয়েটি মনে মনে ভাবেন তার প্রিয় মানুষটি তাকে তার সাথে সব কিছু শেয়ার করেন বলেই এই কথাটি বলেন। এই কথাটি শুনলে অনেক মেয়েই খুশি হয়ে যান।

আমি তোমাকে অনেক বেশি ভালবাসি: অনেকেই আছেন যারা মনে করেন আমি তাকে ভালোবাসি এবং সে আমাকে ভালোবাসে তাই এর মাঝে প্রকাশ করার মতো কিছু নেই। কিন্তু মেয়েরা ভাবেন ঠিক তার উল্টোটা। মেয়েরা চান তার প্রিয় মানুষটি তাকে কতোটা ভালোবাসেন তা তিনি মুখে প্রকাশ করুন। ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি’ কথাটি মেয়েরা ছেলেদের মুখ থেকে শুনতে অনেক বেশি ভালোবাসেন।  সুত্রঃ সময়কণ্ঠস্বর

বিবাহবিডির ১০ বছরে পদার্পন

বাংলাদেশ, আমাদের এই বিশাল জনগোষ্টির দেশে প্রতিবছর যেমন বাড়ছে জনসংখ্যা তেমনি ব্যাস্ত হয়ে পড়ছে জনজীবন। আধুনিক জীবনে “সময়” হয়ে উঠেছে এক দূর্লভ বস্তু। সময়ের স্বল্পতা আমাদের মাঝে তৈরী করেছে যোগাযোগহীনতা, বাড়ছে অনিশ্চয়তা।  এদেশের ১৮ থেকে ৬০ বছরের সাড়ে আট কোটি মানুষের মাঝে প্রায় ৩ কোটি ৩৩ লক্ষ মানুষ বিবাহযোগ্য।  প্রতিদিন এই সংখ্যা বাড়ছে।  প্রাচীন যে পদ্ধতিতে এতদিন বিয়ের পাত্রপাত্রী নির্বাচন করা হতো ক্রমশই তা হয়ে পড়ছে জটিল, ব্যয়বহুল, সময় সাপেক্ষ এবং সর্বোপরি অনিরাপদ।

শুধু বাংলাদেশের নয় সমস্ত বিশ্বের বিবাহযোগ্য এই সাড়ে তিন কোটিরও বেশী বাংলাদেশীদের জীবন বৃত্তান্ত  একটি মাত্র ডাটাবেইজের আওতায় নিয়ে আশার স্বপ্ন নিয়ে ২০০৮ সালের পহেলা বৈশাখ প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশের সর্ব বৃহৎ ম্যাট্রিমনিয়াল ওয়েব পোর্টাল বিবাহবিডি ডট কম ।

প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ ১০ বছরে বিশ্বের ৭০ টি দেশের অর্ধ লক্ষের ও বেশী পরিবার গঠনের মূল ক্ষেত্র হিসাবে কাজ করেছে এই ম্যাট্রিমনিয়াল পোর্টাল বিবাহবিডি ডট কম; বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ম্যাট্রিমনিয়াল ওয়েব সার্ভিস বিবাহবিডি বিশ্বাস করে – All Marriages are made in haven .  প্রত্যেক মানুষের জন্যই রয়েছে একজন যোগ্য জীবনসঙ্গী, শুধু খুঁজে পেতে হয় সেই কাংখিত জীবন সঙ্গীটিকে।  বিবাহবিডি ডট কম তার সুবিশাল ডাটাবেইজে ধারন করে রেখেছে সাড়ে তিন লক্ষ্যের ও বেশী প্রার্থী।  নতুন জীবন শুরু করার এই পদক্ষেপে বিবাহবিডি আপনার সঙ্গী হতে পেরে অত্যন্ত গর্বিত।

বিবাহবিডি ডট কম সাপোর্ট টিম – ২০১৮

বিবাহবিডি জীবনসঙ্গী খোঁজার প্রাচীন ব্যয়বহুল ও সময় সাপেক্ষ কাজটিকে আধুনিক, নিরাপদ ও দ্রুত করার লক্ষ্যে অনলাইন প্লাটফর্ম ব্যবহার করে থাকে।  একজন আগ্রহী পাত্রপাত্রী বিবাহবিডির সাথে যুক্ত হন ফ্রী রেজিষ্ট্রেশনের মাধ্যমে।  এসময় বিবাহবিডির দক্ষ ও প্রশিক্ষিত কর্মীদের দ্বারা সরাসরি ফোন কলের মাধ্যমে প্রার্থীর তথ্যের সত্যতা ও নির্ভরযোগ্যতা যাচাই করা হয়।

এক্ষেত্রে মাল্টিপল ভেরিফিকেশনের জন্য গার্ডিয়ান ভেরিফিকেশন এবং এনআইডি, এডুকেশনাল কোয়ালিফিকেশন পেপার্স, জব আইডেন্টিটি ইত্যাদির ভেরিফিকেশনের পর পাত্রপাত্রীকে বিবাহবিডির নেটওয়ার্কের সাথে যুক্ত করা হয়।  এই ফ্রী রেজিষ্ট্রেশনের মাধ্যমে তিন দিনের ট্রায়াল পর্বে প্রার্থী বিবাহবিডির কার্যক্রম, সার্ভিস, ও নির্ভর যোগ্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারেন।  অতঃপর পাত্র পাত্রী নিজেই চাহিদা মত “ডায়মন্ড, পার্ল, রুবী ও অনিক্স” এই চারটি মেম্বারশীপের যেকোন একটি বেছে নিতে পারেন।

একজন মেম্বার তার জীবনসঙ্গী খুঁজতে বিবাহবিডির যাচাইকৃত প্রোফাইল ডাটাবেইজ থেকে জেলা, ধর্ম, পেশা, শিক্ষা, উচ্চতা, ও পারিবারিক তথ্য সহ ৩৫ টির ও বেশী আলাদা আলাদা সার্চ অপশনের মাধ্যমে কাংখিত সঙ্গীকে খুঁজতে পারেন।

ভিন্ন ধর্মালম্বী ও ক্ষুদ্র নৃ গোষ্টির সদস্যদের জন্য নিজ নিজ গোত্র, বর্ন এবং ভাষাভাষী সঙ্গী খুজতে রয়েছে ভিন্ন সার্চ ক্যাটাগরী।

যেহেতু বিবাহবিডির মাধ্যমে শুধু বাংলাদেশে বসবাসরত জনগোষ্টীই নয় বিশ্বের ৭০ টির ও অধিক দেশে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশীরাও যুক্ত তাই বিবাহবিডির কাষ্টমার সার্ভিস সেবা ও সাপোর্ট ব্যবস্থা ৩৬৫ দিন ২৪ ঘন্টা খোলা থাকে।

আপনি বিশ্বের যে স্থানেই অবস্থান করুন না কেন এসএমএস ও ইমেইল এর মাধ্যমে যেকোন আপডেট অথবা কোন আগ্রহী প্রার্থীর যোগাযোগের ইচ্ছা মূহুর্তেই আপনাকে জানিয়ে দেয়া হয়।  আধুনিক এই ব্যস্ত সময়ে বিবাহবিডির এই সাপোর্ট ব্যবস্থা নিরাপদ ও সহজ।

জীবনসঙ্গী খুঁজে পেতে সাহায্য করা ছাড়াও বিবাহবিডি ডট কম তার সম্মানিত সদস্যদের আরো কিছু বাড়তি সেবা প্রদান করে থাকে।  যার প্রথমটি হলো – “ফিজিক্যাল ইনকোয়ারি” যখন একজন মেম্বার ওপরজনকে উপযুক্ত মনে করেন এবং পরবর্তী পদক্ষেপে আরো তথ্যের মাধ্যমে নিশ্চিত হতে চান তখন বিবাহবিডি ডট কম তাদের অভিজ্ঞ টিমের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ ও সংগ্রহিত তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করনে সাহায্য করে থাকে।  বিবাহবিডি ডট কম বিশ্বাস করে শুধু তথ্য নয়, তথ্যের নির্ভরযোগ্যতাই  খুঁজে পেতে সাহায্য করে একজন সঠিক জীবন সঙ্গী।

দ্বিতীয় সেবা “লিগ্যাল সার্ভিস”।  বিবাহবিডি ডট কম প্রয়োজনবোধে তার নিজস্ব আইনজীবিদের মাধ্যমে আইনি পরামর্শ প্রদান করে থাকে।  ইমেগ্রেশন ইষ্যু, মিক্স ম্যারেইজ ও এডপশন ল এর মত বিষয় গুলোতে বিবাহবিডির আইনি সহায়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা রাখে।

কাউন্সিলিং এর মাধ্যমে ডিভোর্স, সেপারেটেড, সিংগেল মাদার, সিঙ্গেল ফাদার, বিধবা, বিপত্নীক, ও শারিরিক প্রতিবন্ধকতা আছে এমন সদস্যদের যথাযথ সেবা নিশ্চিত করতে বিবাহবিডির দক্ষ টিম বিশেষ সেবা প্রদান করে থাকে।

২০০৮ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত এই দীর্ঘ ১০ বছর চলার পথে বিবাহবিডি ডট কম সারা বিশ্বে প্রায় ৫০ হাজারেরও বেশী পরিবারকে সেবা দিতে পেরে গর্বিত।  কমিউনিটি সার্ভিসে বিশেষ অবদানের জন্য বিবাহবিডি ২০১৭ সালে বেসিস ন্যাশনাল আইসিটি এওয়ার্ড অর্জন করেছে।

 

বেসিস ন্যাশনাল আইসিটি অ্যাওয়ার্ড – ২০১৭ (community and inclusion ) গ্রহন করছেন বিবাহবিডি ডট কম এর সিইও জি,এম ফ্রেজার

বিবাহবিডি তার কার্যক্রমকে আরো বেগবান করতে ২০১৯ সালে প্রতিটি উপজেলায় এজেন্ট নিয়োগ, বিশ্বের ৭০ টির ও বেশী দেশে প্রতিনিধি তৈরী সহ দেশের সর্ববৃহৎ অনলাইন ভিত্তিক বিয়ে বাজার তৈরীর কার্যক্রম হাতে নিয়েছে।

আপনার ভবিষ্যত জীবনসঙ্গী খুঁজে পেতে নিশ্চিত, নিরাপদ ও আধুনিক প্রক্রিয়ার নাম বিবাহবিডি ডট কম।
বিবাহবিডি ডট কম ওয়েব পোর্টাল টি আজই ভিজিট করুন ও ফ্রী রেজিষ্ট্রেশনের মাধ্যেমে যুক্ত হোন আমাদের সাথে।  বিবাহবিডি ডট কম – রিয়েলাইজিং ড্রিমস!

#বিবাহবিডি ব্লগ  #বিবাহবিডি ফেইসবুক পেইজ

পুরুষের যে আচারন গুলোতে মুগ্ধ হয় নারীরা

নারী কিংবা পুরুষ যাই হোন না কেন উভয়ের বিশেষ কিছু গুণ থাকা একান্ত প্রয়োজন।  আপনার কাজে-কর্মের দক্ষতায় গুণে আপনি হতে পারেন অন্যদের চেয়ে আলাদা। তাই একজন মানুষ যদি অনেক গুণে গুণান্বিত হন তবে তিনি অনেক দূর এগিয়ে যাবেন।  বেশিরভাগ নারীরাই কিন্তু বুদ্ধিমতি হয়।  তারা পুরুষদের গুণ দেখেই সাধারণত প্রেম ও বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেয়।  নারীদের দেখে পুরুষেরা যেমন আকর্ষণ অনুভব করে, ঠিক তেমনি পুরুষদেরও কিছু আচরণ আছে যা দেখে নারীরা আকর্ষণ অনুভব করে।  আসুন জেনে নিই পুরুষদের যেসব গুণ নারীদের নজর কাড়ে।

ধৈর্যশীল
ধৈর্যশীল পুরুষদের বরাবরই পছন্দ করেন নারীরা।  নারীদের আকৃষ্ট করতে চাইলে আপনার প্রচুর ধৈর্য থাকতে হবে। কাছের মানুষের কাছে খোজ নিলেই জানতে পারবেন নারীরা সাধারণত যে সকল পুরুষদের পছন্দ করে তারা অনেক ধৈর্যশীল হয়।

মন খুলে হাসি
একজন পুরুষকে মন খুলে হাসতে জানতে হবে। বিশেষ করে তার রসবোধ থাকা খুবই জরুরি। বেরসিক পুরুষদের সব সময়ই অপছন্দ করে নারীরা। এছাড়া কীভাবে আপনি তাকে হাসাতে পারবেন এজন্য নারীরা অপক্ষোয় থাকেন।

অগ্রিম পরিকল্পনা
যেসব পুরুষেরা নির্দিষ্ট সময়ের আগেই পরিকল্পনা করতে পারে, তাদের নারীরা অনেকে বেশি পছন্দ করে। নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য পরিকল্পনা থাকাটা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। যারা আগে থেকেই পরিকল্পনা করে এবং সে অনুযায়ী কাজ করে, তাদেরকে মেয়েরা বেশি পছন্দ করে।

শারীরিক গঠন
একজন পুরুষের শারীরিক গঠন খুবই প্রয়োজন।  যারা নিজেকে ফিট রাখে না, তাদের নারীরা খুব একটা পাত্তা দেয় না। শারীরিক গঠন বা চেহারা সবই জন্মগত, কিন্তু এর পরিচর্যা আপনাকেই করতে হবে। তাই পছন্দের মেয়েটিকে জীবনসঙ্গী করতে চাইলে নিজের প্রতি যত্নশীল হন।

আত্মবিশ্বাসী হওয়া নারীদের কাছে প্রিয় হতে হলে আত্মবিশ্বাসী হওয়া খুবই জরুরি। কারণ নারীরা আত্মবিশ্বাসী পুরুষদের বেশি পছন্দ করে। সামান্য নার্ভাসনেস ভালোই লাগে; কিন্তু এটি যদি মাত্রাতিরিক্ত হয়, তাহলে নারীরা খুবই বিরক্ত হয়।

স্মার্ট হওয়া
একজন পুরু।ষকে অবশ্যই স্মার্ট হতে হবে। আপনার সঙ্গে সে অনেক জায়গায় যাবে, সেখানে যদি আপনি পরিপাটি না থাকেন, তাহলে সে বিরক্তিকর পরিস্থিতিতে পড়তে পারে।

দাম্পত্য জীবনের টানপোড়ন

একজন মেয়ের স্বামীর ভালবাসা পাওয়ার সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে তার পরিবারকে আপন করে নেয়া।  হাতেগুনা দু’একজন ছাড়া মোটামুটি সব মেয়েই এটা বুঝে। তাই বিয়ের পর সাধারণত খুব কম মেয়েই স্বামীর মা-বাবা কে পর ভাবে।  বিয়ে কেন্দ্রিক পারিবারিক সমস্যাগুলো যা চোখে পরে তার মধ্যে একটা মূল সমস্যা হল, স্বামীর পরিবারকে স্ত্রীর আপন করে না নেওয়া।  কিন্তু অনেক সময় ব্যাপারটির উল্টোটাও ঘটে। আমরা ছেলের পরিবারের সদস্যরাই অনেক সময় তাদেরকে পর ভাবতে বাধ্য করি।  উঠতে বসতে, পদে পদে ভুল ধরে, দোষ বের করে তাদের এমনভাবে অপদস্থ করি যে আমাদের প্রতি তাদের শ্রদ্ধার বোধটুকুও আর অবশিষ্ট থাকে না।

দেরি করে বাসায় ফেরা স্বামীকে কে রাতে সময় দেওয়ার পর সকালে উঠেই সবার জন্য রাস্তা রেডি করতে বা ঘুম থেকে উঠতে আধা ঘণ্টা বিলম্ব হলেই মহারাণী খেতাব দিয়ে খোঁটা দেওয়া, মেয়ের বাড়ির লোকদের নিয়ে কটু কথা বল- এগুলো হরহামেশাই আমরা করি।  আবার স্বামীর কাছে বেয়াদব বউ, অকর্মা বউ ইত্যাদি বলে এমনভাবে তার কান ভারী করে দেই যে বউয়ের প্রতি তার আগ্রহই নষ্ট হয়ে যায়।   এটার ধারাবাহিকতাও খুব খারাপ।  এর ফলে দাম্পত্য জীবনে টানপোড়ন সৃষ্টি হয়। এমনকি বাহিরের নারীদের প্রতি পর্যন্ত তখন আসক্ত হয়।

একজনকে অপদস্থ করতে গিয়ে, ছোট করতে গিয়ে নিজের পরিবারের সদস্য হয়ে আমরা নিজেরাই আরেকজন সদস্যের জীবন এভাবে নষ্ট করি।  একজন মানুষ যে জায়গাতেই থাক না কেন, সে সব সময় একজন ভরসার মানুষ খুঁজে পেতে চায়। একজন মেয়ের ক্ষেত্রে বিয়ের আগে সেই ভরসার জায়গা হয় তার বাবা, আর বিয়ের পর হয় স্বামী।  কিন্তু কোন কারণে যদি সেই ভরসার জায়গাটাও নষ্ট হয়ে যায়, তার মত হতভাগ্য আর কারো হয় না।

আমাদের পুরুষদের জীবন অনেক কঠিন। সব কিছু ম্যানেজ করে চলতে হয়। সন্তান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করতে হয়, স্বামী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করতে হয়।  দুটো দায়িত্ব ভিন্ন হলেও গুরুত্ব একই। মাকে কখনো বউয়ের সাথে আর বউকে কখনো মা’র সাথে তুলনা করতে হয় না। এই জিনিসটা অনেকেই করে। যখনই তুলনা করা শুরু হয়, তখন থেকেই অশান্তি শুরু হয়।

মা-বাবার প্রতি আমাদের দায়িত্বটা জন্মগত। এটা অবশ্যই পালন করতে হবে, নতুবা এর জন্য পরকালে কঠিন জবাবদিহি করতে হবে। মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের জান্নাত।  স্ত্রীর প্রতি দায়িত্ব হল অর্পিত, যা আমরা নিজেরাই নিজের উপর চাপিয়ে নেই। যে মেয়েকে নিজের ইচ্ছেয় ঘরে আনা হয়, তার দায়িত্বও যদি সঠিকভাবে না পালন করা হয়, তাহলে এর জন্যও আমাদের জবাবদিহি করতে হবে।

বিয়ের পর একজন মেয়ের পরম সাহসই হল তার স্বামী।  স্বামীই হল একজন মেয়ের গর্ব, পৃথিবীর সবচেয়ে আপনজন, তার পরম ভরসার জায়গা।  সেই ভরসাটুকু বজায় রাখাও আমাদের দায়িত্ব।   Source- Dr. Taraki Hasan Mehed

এক তরফা প্রেম নেশার মত, বিচ্ছেদের থেকেও যন্ত্রণাদায়ক!

আপনাকে ভালোবাসে না, অথচ আপনি তাকে মন-প্রাণ উজার করে ভালোবাসেন। হ্যা, এটা কে একতরফা ভালোবাসা বলে। কিন্তু তার ভালোবাসা পাবেন এই আশায় কতদিন আপনি একা একা অপেক্ষা করবেন?

বুকের সীমাহীন ভালোবাসার মূল্যায়ন না পেয়ে হাজারো প্রকৃত প্রেমিক প্রেমিকার হৃদয় ভাঙার গল্প রয়েছে। কিন্তু সেই কাঙ্খিত মানুষটি যদি একটু গুরুত্ব দিত তা হলে কত জীবনই না বদলে যেত। এ অভাবেই থেকে যায় একটি হৃদয়ের প্রতি অপর একটি হৃদয়ের একতরফা ভালোবাসা।  চাইলেও কাঙ্খিত ব্যক্তিকে ভুলে যাওয়া যায় না। সত্যি বলতে সম্ভব হয় না। কী করেই বা সম্ভব, মনের মন্দির তো তার ফিরে আশার প্রদীপ জ্বেলে অপেক্ষায় থাকে।  আর সেজন্যই একটি মানুষের হাজারো অবহেলা সয়েও তবুও তার জন্য অপেক্ষা করা।  কিন্তু এভাবে কতদিন অপেক্ষা করা যায়?

প্রথমেই বলা হয়েছে একতরফা প্রেম/ভালোবাসা কাকে বলে। তবে এধরণের প্রেমে পড়া কী উচিত বা এমনটা হলে কীভাবে নিজেকে নিজের জায়গায় ফিরিয়ে আনা যায়? এপ্রশ্ন অগুণিত মানুষের।

একতরফা প্রেমে কী কখনো হৃদয় ভাঙে?
এমন প্রশ্ন প্রসঙ্গে ভারতের মনোবিজ্ঞানী ও সম্পর্ক-বিশেষজ্ঞ প্রিতি সাইনি জানিয়েছেন, মূলত হৃদয় ভাঙা বলতে সেটাই বুঝায় যেখানে দু পক্ষের স্বীকৃতিতে প্রেম হয়েছিল। কিন্তু কোনো কারণে তা চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছায় না। আবার একতরফা ভালোবাসাতেও এটা সত্য। এখানে তো একজনের ক্ষেত্রে অবশ্যই। যেখানে আপনার অনুভূতি ছিল কিন্তু তা প্রকাশ পায়নি বা প্রকাশ পেলেও স্বীকৃতি পায়নি। কখনো কখনো এই একতরফা ভালোবাসার অনিশ্চয়তার জন্যই কষ্টের কারণ বেড়ে যায়।  হয়তো কাঙ্খিত ব্যক্তি এক সময়ে ভালোবাসা বুঝতে পারবে, স্বীকৃতি দিবে- এ আশা মন থেকে দূর করা উচিত।  যে কারণে হৃদয় ভাঙার কারণ প্রত্যাখান নয়।  আর স্বীকৃতি না পাওয়াটা হতাশায় থেকে যায়।

সময় প্রয়োজন:
যে আপনাকে ভালোবাসে না তাকে ভালোবাসা এক প্রকার আসক্তি বা নেশার মত। যেখানে আপনার ভালোবাসার কোনো স্বীকৃতি নেই সেখানে প্রত্যাখান হওয়ারও সম্ভাবনা নেই। অযথাই কল্পনা করে তাকে নিয়ে স্বপ্ন না দেখা উত্তম। এতে করে কষ্টের কারণ বেড়ে যায়। ভুল মানুষকে নিয়ে স্বপ্ন দেখার অ্যভাস পরিহার করার জন্য এখনি দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হন, যদি আপনিও একতরফা ভালোবাসায় আসক্ত হয়ে থাকেন। কিছুটা সময় প্রয়োজন হবে, হোক। তবুও ভালো।

যেভাবে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে:
মনোবিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন পরিস্থিতিতে বাস্তবতাকে মেনে নিতে হবে।  তাও সম্ভব না হলে সব সময় নিজেকে ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করতে হবে। ফলে ভুল করেও সেই মানুষটির কথা আর মনে পড়বে না।  কষ্টের কারণও বাড়বে না। আর যদি বাস্তবতা মেনে নিতে পারেন তাহলে উত্তম হয়। বাস্তবতায় কখনো কোনো আবেগ পৌঁছাতে পারে না। এখানে শুধুই বিবেকবোধ কাজ করে। খুব সহজেই নিজেকে মুক্ত করে সফলতার নতুন পথে পরিচালিত করা যায়।

কী করবেন যখন দাম্পত্য জীবনে স্বামী বা স্ত্রী উদাসীন

বাইরে থেকে দেখলে সব ঠিক আছে।  সংসার, সন্তান, পরিবার, ভালোবাসা সবকিছুকেই অন্যরা মনে করছে পরিপাটি। কিন্তু বেডরুমের দরজার ওপাশে স্বামী বা স্ত্রী কেউ একজন হয়ে পড়ছেন উদাসীন। আগের সেই ভালোবাসা নেই, আন্তরিকতা নেই, যৌন সম্পর্ক নেই, পরস্পরের সাথে সেই আবেগীয় বিনিময় নেই, কেবল রোবটের মত চলছে যেন জীবনটা। এমন অবস্থায় কী করবেন আপনি?

১)  প্রথমেই আপনাকে বোঝার চেষ্টা করতে হবে যে জীবন সঙ্গী এমন আচরণ কেন করছেন? একেক দম্পতির ক্ষেত্রে একেকটি কারণ থাকতে পারে, তবে কারণ অবশ্যই থাকে। তবে মূল কারণ হচ্ছে দাম্পত্য একঘেয়ে বা বোঝা মনে হওয়া কিংবা কোন কিছু নিয়ে বিরাট মনোমালিন্যের কারণে এই দূরত্ব সৃষ্টি হওয়া।

২) মনোমালিন্যই যদি কারণ হয়ে থাকে, তবে আপনি নিজে থেকেই চেষ্টা করুন মিটিয়ে ফেলতে। যা হবার তা হয়ে গিয়েছে, সেটা নিয়ে এভাবে আঁকড়ে ধরে বসে থাকলে হবে না।  হয়তো আপনার স্বামী বা স্ত্রী সেটা আঁকড়ে ধরে বসে আছেন, এখন আপনিও একই কাজ করলে মুশকিল।

৩) দাম্পত্য একঘেয়ে হয়ে পড়াটা খুবই স্বাভাবিক একটি সমস্যা। একইসাথে কয়েক বছর কেটে যাবার পর প্রত্যেকটি মানুষের কাছেই সংসার জীবন ভীষণ বোরিং মনে হতে শুরু করে। পরস্পরকে পেয়ে যাওয়ার পর শুরু হয় জীবনের হাজারো বাস্তবতার চাপ, আর সেগুলোর ভিড়ে হারিয়ে যান আপনাদের আবেগ ও অনুভব। তবে দাম্পত্যে একঘেয়েমি থেকেই কিন্তু জন্ম নেয় পরকীয়া ও বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক। তাই এক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন। নিজের সঙ্গীকে ঘিরে রাখুন ভালোবাসায়।

৪) আপনাদের ঝিমিয়ে পড়া সম্পর্কে আবারও রোমান্স ফিরিয়ে আনতে নতুন কিছু করুন।  নিজের লুক বদলে ফেলা থেকে শুরু করতে পারেন।  বিয়ের পর প্রায় সবাই-ই নিজের খেয়াল রাখা ছেড়ে দেন।  মুটিয়ে যান, সৌন্দর্য হারিয়ে ফেলেন, নিজের স্টাইল বা ফ্যাশন সেন্স মেইনটেইন করেন না অনেকেই। এই ব্যাপারটি যে কত বড় ভুল, এটা কেউ বোঝেন না। নিজের প্রিয় মানুষটির চোখে সুন্দর থাকাটাই তো সবচাইতে জরুরী, তাই না? আপনার নতুন লুক সঙ্গীর আগ্রহ ফিরিয়ে আনবেই।  নারী ও পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই এটা প্রযোজ্য।  হয়ে উঠুন ফিট ও স্মার্ট, ফিরে পাবেন নিজের আকর্ষণ।

৫) এমন কিছু কাজ করুন যেগুলো আগে কখনো করতেন না।  দুজনে মিলেই করুন। কিংবা করুন তারুণ্যের সেই ছেলে মানুষী। যৌন জীবনেও থ্রিল ফিরিয়ে আনতে করতে পারেন নানান রকম অ্যাডভেঞ্চার, স্বাদ নিন নতুন নতুন যৌন আচরণের।  এতে দাম্পত্যে ফিরে আসবে নতুনত্ব।  সম্পর্কে নতুন আনন্দ যোগ হলে যৌন জীবনও ফিরে পাবে গতি।

৬) সঙ্গী যৌন শীতলতা দেখালে তাঁকে বুঝুন। এটা বোঝার চেষ্টা করুন যে তিনি কেন শীতলতা দেখাচ্ছেন। কাজের চাপে তিনি কি মারাত্মক ক্লান্ত থাকেন সারাদিন, স্ট্রেস আছে ভীষণ বা কিছু নিয়ে অশান্তি কিংবা শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন? কারণগুলো খুঁজে বের করে সেগুলোর সমাধান করতে চেষ্টা করুন। ভালোবাসা ফিরে আসলে যৌন সম্পর্কও স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

৭) সঙ্গী মূল্য দিক বা না দিক, তাঁকে প্রতিনিয়ত নানান ভাবে বোঝান যে আপনি তাঁকে কত ভালোবাসেন।  মাঝে মাঝে বলেও ফেলুন।  আপনার ভালোবাসার প্রকাশ যেন তাঁকে ঘিরে থাকে সারাক্ষণ।  দেখবেন, সঙ্গীর উদাসীনতা দূর হয়ে যাবেই। তিনি উদাসীন বলে আপনি কখনো গাল ফুলিয়ে থাকবেন না।

৮) তাঁর পছন্দের কাজগুলো তাঁর জন্য করুন, জীবনে একটা শান্তির আবহাওয়া ধরে রাখতে চেষ্টা করুন, সঙ্গীর কাজ ভাগ করে নিয়ে তাঁকে একটু আরাম দিন। যখন তিনি রিল্যাক্স করার সুযোগ পাবেন, তখন আপনাকে ভালোবাসারও সুযোগ পাবেন। একই সাথে ঘরদোরের সাজসজ্জাও বদলে ফেলুন। মনের ওপরে ভালো প্রভাব ফেলে।

৯) নিজেদের একান্ত নিরিবিলি সময় কোন ভাবেই বিসর্জন দেবেন না। সকাল কিংবা বিকালে নিরিবিলি এক কাপ চা, এক সাথে টিভি বা মুভি দেখা, নিয়ম করে বেড়াতে যাওয়া, এক সঙ্গে পছন্দের কিছু করা ইত্যাদি কাজগুলো যে দাম্পত্যে আনন্দ ধরে রাখতে কত কার্যকর আপনি কল্পনাই করতে পারবেন না। দাম্পত্য শীতল হয়ে গেলে কেবল দুজনে দূরে কোথাও একটা লম্বা সময় বেড়াতে যাওয়া খুবই কাজে দেয়।

১১) সময়ের সাথে দাম্পত্যের ধরণ বদলে যায় আর এটাই স্বাভাবিক।  সঙ্গী একটু দূরে সরে গিয়েছেন বলেই যে তিনি যে আপনাকে ভালোবাসে না কিংবা পরকীয়ায় জড়িয়েছেন, এমন ভাবনা বাদ দিন।  চেষ্টা করুন সম্পর্কটিকে ফিরে পাবার, আরেকবার নতুন করে প্রেমে ফেলের চেষ্টা করুন তাঁকে।  প্রয়োজনে কাউন্সিলরের সাহায্যও নিতে পারেন।  সূত্র: প্রিয় লাইফ

যে কৌশলে সঙ্গীর মনের ওপর দখল রাখবেন!

সম্পর্ক সুন্দর ও দীর্ঘমেয়াদী করার জন্য, সঙ্গীর মনের ওপরে চিরকাল আপনার দখল বজায় রাখার জন্য প্রয়োজন দুজনের মধ্যে মানসিক যোগাযোগটাকে ভালো করা। আর মানসিক যোগাযোগ ভালো করতে হলে দুজনকেই হতে হবে সচেষ্টা।  আসুন জেনে নেয়া যাক ছোট্ট সেই কাজগুলো সম্পর্কে, যেগুলো সঙ্গীর মনকে চিরকাল রাখবে আপনারই!

মন দিয়ে সঙ্গীর কথা শুনুন
সঙ্গীর সাথে মানসিক যোগাযোগ বাড়িয়ে তোলার জন্য সঙ্গীর কথা মন দিয়ে শুনুন। আপনার সঙ্গী যখন আপনার সাথে গল্প করে কিংবা খুব আগ্রহ নিয়ে কোনো কথা বলতে আসে তখন তার কথা গুলো আগ্রহ নিয়ে শুনতে চেষ্টা করুন। আপনি যদি তার কথা শুনতে আগ্রহ প্রকাশ না করেন তাহলে সে মনঃক্ষুণ্ণ হবে এবং পরবর্তিতে আপনার সাথে মন খুলে কথা বলতে চাইবে না। ফলে আপনার সাথে তার মানসিক যোগাযোগ সৃষ্টি হবে।

সারাদিনের কথা জিজ্ঞেস করুন
দিনের শেষে আপনার সঙ্গীকে তার সারাদিনের কথা জিজ্ঞাসা করুন। দিনটি কেমন কেটেছে, কী করেছে সে সারাদিন, কী খেয়েছে ইত্যাদি বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করুন। তাহলে আপনার সঙ্গী বুঝতে পারবে যে আপনি তার ব্যাপারে আগ্রহী এবং যথেষ্ট যত্নশীল। একই সঙ্গে নিজেদের প্রাত্যহিক সুবিধা অসুবিধা গুলোর কথা আলাপ আলোচনার মাধ্যমে মানসিক যোগাযোগটা আরো ভালো হবে।

সর্বজান্তা ভাব দেখাবেন না
আপনার সঙ্গী যখন আপনাকে কিছু বলে তখন সর্বজান্তা ভাব দেখাবেন না। এমন অনেক কিছুই আছে যা আপনি জানেন। সেই বিষয়টি যদি আপনার সঙ্গী খুব আগ্রহ নিয়ে আপনাকে বলতে চায় তাহলে আপনিও আগ্রহ নিয়েই শুনুন। সব সময়েই ‘জানি’ বলে সঙ্গীর কথা বলার আগ্রহ কমিয়ে দেবেন না। সর্বজান্তা ভাব দেখালে আপনার সাথে তার মানসিক দূরত্বটা আরো বেড়ে যাবে।

সব কিছুতে নিজের মতামত চাপিয়ে দেবেন না
আপনার সঙ্গীর উপর আপনার অবশ্যই কিছু অধিকার আছে। কিন্তু তাই বলে তার সব ব্যাপারেই আপনার নাক গলানো ঠিক হবে না। প্রতিটি মানুষেরই ব্যক্তিগত জীবনও নিজস্ব কিছু মতামত থাকে। তাই আপনার সঙ্গীর কোনো ব্যাপারে জোর করে নিজের মতামত চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করবেন না।

দোষারোপ করবেন না
মানুষ মাত্রই ভুল হতে পারে। হতে পারে নানান দোষ। কিন্তু একটি ভুলে হয়ে গেলে সঙ্গীকে কখনো দোষারোপ করবেন না। সেই ভুল শুধরে নিতে তাঁর পাশে দাঁড়ান। তাঁকে বুঝিয়ে বলুন যে কাজটি ঠিক হয়নি। “তুমি এটা কেন করলে?” – এমন বাক্য না বলে বলুন। “এটা করা ঠিক হয়নি।  সুত্রঃ বিজনেস আওয়ার

সুখ কাকে বলে

যদি কেউ আপনাকে সুখ কাকে বলে এমন প্রশ্ন করেন তাহলে আপনি নিশ্চয় নানা ধরনের উত্তর দিতে পারেন। 

যেমন সুখ হল মায়ের যত্ন, সুখ হল শিশুর হাসিমুখ । সুখ হল সবুজ রঙের জীবনযাত্রা, সুখ হল পাহাড়ী পথ, সুখ হল মুঠোভরা আশা, সুখ হল ফুল ভরা মাঠ, সুখ হল বন্ধুদের আন্তরিকতা আর যত্ন, সুখ হল নীরবে কাউকে ভালবাসার উপলব্ধি।  সুখ হল নিজের প্রেমিক-প্রেমিকার মিলনের আনন্দ । 

সুখ হল বিশ্বে নিজের জীবনসংগীর উপস্থিতি, সুখ সম্বন্ধে প্রতিটি লোকের ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভংগী আছে ।

ওয়াং জুনসিয়া, চীনের একজন বিখ্যাত দূরপাল্লার দৌড়বিদ।  তিনি চীনদেশে বা বিশ্বে বহু বার প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন । তিনি নিজের সুখী জীবন সম্পর্কে বলেছেন, নিজের ছেলের সংগে থাকা সবচেয়ে সুখের ব্যাপার। একদিন ওয়াং জুনসিয়া নিজের বাড়ির উঠানে দুবছর বয়সের ছেলের জন্যে দোলনা বানাছিলেন । তিনি জায়গা বেছে নিয়েছেন এবং দড়ি নিয়ে গাছে উঠেছেন ।

দোলনা বানানোর কাজ শেষ হওয়ার মুহুর্তে তার ছেলে অনেক কষ্ট করে গাছে উঠার চেষ্টা করছিল, ওয়াংজুনসিয়া দেখে ছেলেকে বলেন, দোলনা বানানো হয়েছে, মা এখনি নামছি, তুমি উঠো না, বিপদজ্জনক । ঠিক এই সময়ে ছেলে তার পা ধরেছে, গাছে উঠার চেষ্টা ছেড়ে দিল এবং চীত্কার করে বলল, মা আমি তোমাকে রক্ষা করতে এসেছি । এই সময়ে ওয়াং জুনসিয়ার দু-চোখ-ভরা জল । তবে তা দুঃখের নয়, আনন্দাশ্রু ।

ওয়াং চি, চীনের একজন বিখ্যাত চলচ্চিত্র ও টিভি-শিল্পী । তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কয়েক বছর কাটিয়েছেন।  অভিনয়ের জন্যে তিনি দেশে ফিরে এলেন ।

তিনি বলেছেন, আমার এই বয়সে আমার কাছে সবচেয়ে সুখীব্যাপার হল নিজের সন্তানের সুষ্ঠু-বড় হওয়া চাক্ষুষ করা, তাদের আনন্দ উপভোগ করা, তাদের সুখ অনুভব করা।  যখন বাচ্চারা ইস্কুল থেকে পড়াশোনার ফলাফল হাতে নিয়ে বাসায় ফিরে উচ্চস্বরে আমাকে বলে, মা আমি আবারও প্রথম স্থান অধিকার করেছি। তখন আমি সংগে সংগে তাকে কোলে নিয়ে তার গালে চুমো খাই এবং তার সংগে তার আনন্দ উপভোগ করি ।

চিনলি, এক নামকরা কম্পানির কর্মচারী। তিনি বলেছেন, অনেক বছর আগে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে গিয়েছিলেন ।যখন বাবামাকে দেখতে স্বদেশে ফিরে আসেন তখন বাবামা তার জন্যে যে ব্যস্ত হয়ে পড়েন, তা দেখা তার কাছে সবচেয়ে সুখী ব্যাপার ।

বিশেষ করে প্রতিদিন সকালে যখন তিনি ঘুম থেকে জেগে উঠেন তখন দেখতে পারেন যে, মা রান্না ঘরে নাস্তা বানাছেন, আর বাবা বারান্দায় ফুলের টবসাজাছেন, এই সময়ে তিনি যেন আবার মাধ্যমিক স্কুলে পড়ার সময়ে ফিরে এসেছেন, যেন বাবামার কাছে থাকার সেই আনন্দের বাল্যবয়সে ফিরে গেছেন ।

চেন স্যুলান একজন বিখ্যাত গায়িকা, তার কন্ধে গাওয়া “একবার যেতে দেয়না আমার ছোট সোনার গায়” গানটি শ্রোতাদের সমাদর পেয়েছে । সুখী জীবন সম্পর্কে তিনি বলেছেন, গান গাওয়া আমার সারা জীবনের সবচেয়ে আনন্দের ব্যাপার ।

একবার, তার ব্যক্তিগত সংগিতানুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর অনেক দর্শক ও শ্রোতা তাকে ঘিরে তার স্বাক্ষর চেয়েছিলেন । তার চৌদ্দ বছর বয়সের ছেলে তার পাশে দাড়িয়ে গর্বিত কন্ঠে অন্যদের বলছিল, “তিনি আমার মা”। ছেলের কথা শুনে খুশীতে চেন স্যুলানের দুচোখের জল গড়িয়ে পড়তে থাকে ।

সুখ মানে আরও বেশি জিনিস পাওয়া নয়, সুখ হল, যে জিনিস পাওয়া গেছে তা উপভোদ করতে শেখা, এক কথায়, সুখের অর্থ যাই হোক না কেন, এটা বলা যায় যে, তা প্রতিটি মানুষের জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এবং প্রতিটি লোকের জীবনযাত্রার গুনগতমান যাচাইয়ের মানদন্ড। প্রিয় বন্ধু, আপনার দৃষ্টিতে সুখের অর্থ কি?

আসুন  দেখি উইকিপিডিয়ার তথ্য অনুসারে সুখ কাকে বলে –

সুখ একটি মানবিক অনুভুতি।  সুখ মনের একটি অবস্থা বা অনুভূতি যা ভালোবাসা, তৃপ্তি, আনন্দ বা উচ্ছ্বাস দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।  জৈবিক, মানসিক, মনস্তাত্ত্বিক, দর্শনভিত্তিক এবং ধার্মিক দিক থেকে সুখের সংজ্ঞা নির্ধারণ এবং এর উৎস নির্ণয়ের প্রচেষ্টা সাধিত হয়েছে।  

সঠিকভাবে সুখ পরিমাপ করা অত্যন্ত কঠিন।  গবেষকেরা একটি কৌশল উদ্ভাবন করেছেন যা দিয়ে সুখের পরিমাপ কিছুটা হলেও করা সম্ভব।  মনোবিজ্ঞান বিশেষজ্ঞরা তাত্ত্বিক মডেলের ভিত্তিতে সুখ পরিমাপ করে থাকেন।  এই মডেলে সুখকে ইতিবাচক কর্ম ও আবেগ সমূহের সমষ্টি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।  এছাড়া এক্ষেত্রে তিনটি বিশেষ অবস্থাকেও বিবেচনা করা হয়: আনন্দ, অঙ্গীকার এবং অর্থ।

গবেষকগণ কিছু বৈশিষ্ট্য শনাক্ত করেছেন যেগুলো সুখের সাথে পারস্পরিকভাবে সম্পর্কযুক্ত: বিভিন্ন সামাজিক সম্পর্ক, বহির্মুখী বা অন্তর্মুখী অবস্থা, বৈবাহিক অবস্থা, স্বাস্থ্য, গণতান্ত্রিক স্বাধীনতা, আশাবাদ, ধর্মীয় সম্পৃক্ততা, আয় এবং অন্যান্য সুখী মানুষের সাথে নৈকট্য।

সুখ পুরোপুরি বহিরাগত বিষয় নয় এমনকি মুহূর্তের আনন্দ থেকেও তা প্রাপ্ত হয় না । প্রকৃতপক্ষে, প্রচলিত ধারণায় সুখ দ্রুতগামী বলা সত্ত্বেও গবেষণায় প্রমাণিত হয় যে সময়ের সাথে সাথে সুখ স্থিতিশীল হয় । সুখ আংশিকভাবে জিনগত ।

যমজ গবেষণা করে প্রাপ্ত তথ্য থেকে বুঝা যাচ্ছে যে, মানুষের সুখ স্তরের ৫০ শতাংশ জিনগতভাবে নির্ধারিত হয়, ১০ শতাংশ জীবনের চলমান পরিস্থিতি এবং অবস্থা দ্বারা প্রভাবিত হয় এবং অবশিষ্ট ৪০ শতাংশ সুখ আত্মনিয়ন্ত্রণের বিষয়।

এ্যাক্রোনিম পিইআরএমএ সুখের সাথে সম্পর্কযুক্ত পাঁচটি বিষয়কে সংক্ষেপ করে:

১. আনন্দ (সুস্বাদু খাদ্য, উষ্ণ বাথ, ইত্যাদি), ২. যোগদান (বা প্রবাহ, একটি উপভোগ্য কার্যকলাপ যা এখনো চ্যালেঞ্জিং পর্যায়ে আছে), ৩. সম্পর্ক (সামাজিক সম্পর্ককে সুখের অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য নির্দেশক বলা যায় ), ৪. অর্থ (একটি অনুভূতির খোঁজ করা বা বড় কিছুর সাথে সম্পর্কিত), এবং ৫. অর্জন (বাস্তব লক্ষ্য উপলব্ধি করা)

এবং বিশেষ করে পিতা-মাতার সাথে সম্পর্কযুক্ত ভালোবাসার ক্ষমতা এবং পারষ্পরিক সংযুক্তি যা মানুষের জীবনে সুখের একটি দৃঢ় অবস্থার কথা বলে ।

মস্তিষ্কের বামদিকের প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্সের উচ্চ কার্যকলাপের দিকে লক্ষ্য করে বুঝা যায় যে এই অংশটির সাথে মানুষের সুখানুভূতির আন্তঃসম্পর্ক আছে ।

এটি যুক্তিযুক্ত করা হয়েছে যে টাকার মাধ্যমে কার্যকরভাবে সুখ কিনতে পারা যায়না যদি না একে সুনির্দিষ্ট উপায়ে ব্যবহার করা হয় । ” এটি ছাড়াও ব্যক্তিদের পর্যাপ্ত পরিমাণ অর্থ আছে যার মাধ্যমে তারা সহজেই খাবার কিনতে পারে, নতুন কাপড় পরিধান এবং ঘর বাড়ি বানাতে পারে”

– এমনকি অনেক লোকের বেশি অর্থ আছে যা তাদের সামান্য সুখী করতে পারে ।
“অন্যদের জন্য অর্থ ব্যয় করে সত্যিই আমরা অনেক সুখ অনুভব করি কিন্তু নিজেদের জন্য ব্যয় করলে ততটা করিনা “।

ধর্ম কীভাবে সুখের সাথে সম্পর্কযুক্ত তা নিয়ে কিছু গবেষণা করা হয়েছে । সাধারণ সম্পর্ক অস্পষ্ট, কিন্তু ধর্মের মধ্যে মানুষকে বেশি সুখী দেখা যায় ।  PERMA এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ, ধর্ম নিজের চেয়ে আরও ব্যাপক অর্থবোধক এবং সংযোগের অনুভূতি প্রদান করতে পারে ।

ধর্ম মানুষকে সাম্প্রদায়িক সদস্যপদ দিতে পারে যা সাধারণ সম্পর্ক থেকেও বেশি শক্তিশালী । অন্য একটি উপাদান এর কথা বলা যায় যা রীতির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ।

মাসলো চাহিদার অনুক্রমের একটি পিরামিড অঙ্কন করেছেন যা মানবিক চাহিদা, মানসিক এবং শারীরিক মাত্রার চিত্র তুলে ধরে । যখন একজন মানুষ পিরামিডের ধাপে উঠবে, সে আত্মতৃপ্তির চূড়ান্ত পর্যায় পৌঁছবে। 

প্রয়োজন পূরণের রুটিনের বাহিরে, Maslow অসাধারণ অভিজ্ঞতার মুহূর্তের কথা বলেছেন যা চূড়ান্ত অভিজ্ঞতা হিসাবে পরিচিত । তাছাড়া প্রেমের গভীর মুহূর্ত, বোঝা, সুখ, বা পরমানন্দ যার ফলে একজন ব্যক্তি অনুভব করে আরও পুরো, জীবিত, স্বয়ংসম্পূর্ণ, এবং নিজেকে বিশ্বের একটি অংশ হিসেবে অনুভব করে । এটি মিহালি সি্স্কসজেন্টমিহালি প্রবাহ ধারণার অনুরূপ।  স্ব-সংকল্প তত্ত্ব তিনটি চাহিদার সাথে সম্পর্কিত: দক্ষতা, স্বায়ত্তশাসন এবং সংশ্লিষ্টতা।

আরো ব্যাপক অর্থে সুখের খোঁজ করতে হলে আপনাকে এই লিংকে যেতে হবে। 

ভালোবাসা দিবস! জানা অজানা কিছু কথা

“ভালবাসা” সম্ভবত পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্লভ আর আকাঙ্খিত একটি আবেদন। ঠিক কবে ভালবাসার উৎপত্তি তা জানা সম্ভব না হলেও এতটুকু ভেবে নেয়া যায়যে এর ইতিহাস বিবর্তনের চেয়েও আদিম ও পুরোনো। প্রাণীজগতের অন্যান্য সব প্রাণের মাঝে ভালবাসা পরিলক্ষিত হলেও মানুষ যেভাবে একে জীবন ও প্রেরণার অনুষঙ্গ করেছে তা আর কেউ পারেনি।

ভালবাসা নামের এই অজানা অদেখা আর চাপা কষ্টের সেই অব্যাক্ত অনুভুতিকে মহিমান্বিত করতেই নাকি প্রতি বছরের একটি বিশেষ দিনকে ঘোষণা করা হয়েছে ‘ভ্যালেন্টাইন্স ডে’ যার বাংলায় মানে দাঁড়ায় ভালবাসা দিবস। পাশ্চাত্যের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী দিনটি ১৪ ফেব্রুয়ারি, মানে ঠিক ফাল্গুনের ২য় দিনটিতে।

আমার মতো অনেকেই বলে অত ভালবাসা দিবসের প্রয়োজন কি? প্রতিটি দিন হোক ভালবাসা দিবস। একটু খোঁজ নিলেই দেখা যাবে, এরও এক পুরোনো ইতিহাস আছে?কেন এই ‘ভ্যালেন্টাইন্স ডে’ ? আর কবে থেকেই এই দিবসের এর শুরু ? কেই বা ছিলেন ভ্যালেন্টাইন ? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে পেতে হলে ইতিহাসের পথে পেছনে হাঁটতে হবে কয়েক শতাব্দী। ভালবাসা দিবসকে কেন্দ্র করে অনেক গল্পই প্রচলিত আছে। আজ ভালবাসা দিবসের সবচেয়ে প্রচলিত দুটো গল্পের সঙ্গে সবাইকে পরিচয় করিয়ে দেব।

প্রথম গল্পটি হলো, সেন্ট বা সন্তো ভ্যালেন্টাইন নামের এক রোমান ক্যাথলিক ধর্মযাজক ছিলেন৷ তিনি ধর্মযাজক হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ছিলেন চিকিৎসকও৷ সে সময় রোমানদের সম্রাট ছিলেন দ্বিতীয় ক্লডিয়াস৷ হয়েছে কি, বিশ্বজয়ী রোমানরা একের পর এক রাষ্ট্র জয় করে চলেছে৷ আর যুদ্ধের জন্য প্রয়োজন শক্তিশালী সেনাবাহিনী৷ কিন্তু, সমস্যা দাঁড়ায় তরুণীদের নিয়ে৷ তারা যে কিছুতেই তাদের পছন্দের পুরুষটিকে যুদ্ধে পাঠাতে চায় না৷ তখন সম্রাট ক্লডিয়াস মনে করলেন, পুরুষরা বিয়ে না করলেই বোধ হয় যুদ্ধে যেতে রাজি হবে৷ ভাবনাটার বাস্তবায়ন করলেন তিনি। বিয়ে নিষিদ্ধ করলেন সম্রাট৷ কিন্তু ভালবাসার তাড়নায় ছুটে চলা তারুণ্যকে কি আর আইন করে বেধে রাখা যায়? এগিয়ে এলেন সেন্ট বা সন্তো ভ্যালেন্টাইন৷ তিনি নিজে সকল প্রেমে আবদ্ধ তরুণ -তরুনীদের এক করার ব্যবস্থা করলেন, বিয়ে দিলেন সবাইকে। কিন্তু সেই প্রথা বেশি দিন তার ধারা বজায় রাখতে পারলো না৷ ধরা পড়লেন ভ্যালেন্টাইন৷ তাঁকে বন্দী করা হলো৷ কিন্তু, তখন নতুন করে আরেকটা সমস্যা দেখা দিল৷ তার অনেকে ভক্তরাই ভ্যালেন্টাইন’কে দেখতে কারাগারে যেতেন৷ দিয়ে আসতেন তাদের অনুরাগের চিহ্ন হিসেবে অনেক ধরনের ফুলের শুভেচ্ছা৷ তাদের মধ্যে একটি অন্ধ মেয়েও ছিল৷ শোনা যায়, সেন্ট ভ্যালেন্টাইন তার অন্ধত্ব দূর করেন৷ শুধু যে তার দৃষ্টি ফিরিয়ে দিয়েছিলেন তাই নয়, সঙ্গে মেয়েটির প্রেমে আবদ্ধ হয়ে ধর্মযাজকের আইন ভেঙে তাকে বিয়েও করে জীবনসঙ্গী করেন তিনি৷ কিন্তু তারপর? এমন একটা খবর রাজার কানে পৌঁছোতেই তিনি ভ্যালেন্টাইনের মৃত্যুদন্ডের আদেশ দেন৷ ফাঁসির মঞ্চে যাওয়ার আগে, প্রিয়াকে লেখা ভ্যালেন্টাইনের শেষ চিঠিতে ছিল – ‘লাভ ফ্রম ইউর ভ্যালেন্টাইন’৷ আর সেই দিনটিও ছিল ১৪ই ফেব্রুয়ারি৷ ৪৯৬ খ্রিস্টাব্দে পোপ গেলাসিয়াস প্রথম এই দিনটিকে ‘ভ্যালেন্টাইন ডে’ হিসেবে ঘোষণা করেন৷ ১৭০০ শতাব্দীতে দিনটিকে জনপ্রিয়ভাবে পালন শুরু করে ব্রিটেন৷ শুরু হয় হাতে লেখা কার্ড অথবা উপহার বিনিময়৷ এরপর ১৮৪০ সালে বাণিজ্যিকভাবে প্রথম ‘ভালবাসা দিবস’-এর উপহার তৈরি শুরু করেন এস্থার এ হাওল্যান্ড৷ উল্লেখ্য, পৃথিবীর সবচেয়ে পুরনো ‘ভ্যালেন্টাইন কার্ড’-টি সংরক্ষিত আছে লন্ডনের ব্রিটিশ মিউজিয়ামে৷

আরেকটি গল্প : এই গল্পটির সঙ্গে আগের গল্পের মিলও আছে খানিকটা। খ্রীষ্ট ধর্মের শুরুর দিকে ‘ভ্যালেন্তিনাস’ নামধারী একাধিক সন্তের বা সেন্টের কথা ইতিহানে জানা যায়, আর এই গল্পটি ঘিরে আছে প্রকান্ড অনিশ্চয়তা। তবে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য তথ্যমতে ‘ভ্যালেন্টাইন্স ডে’ এর উৎপত্তি রোমান সন্ত ‘ভ্যালেন্তিনাস’ এর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে । খৃষ্টীয় তৃতীয় শতকের মাঝামাঝি ক্লদিয়াস গোথিকাস নামে একজন রোমান সাম্রাজ্যের সম্রাট ছিলেন। সে সময়ে তার অনুমতি ছাড়াই খ্রিস্টান যুগলের বিয়ে আয়োজন করা এবং সহায়তা করার অপরাধে সন্ত ভ্যালেন্তিনাসকে আটক করা হয়। এরপর সম্রাটের নির্দেশে রোম নগরীর ফ্লামিনিয়ান গেট’ এর বাইরে শিরচ্ছেদ করে তাকে হত্যা করা হয় । পরবর্তীতে চতুর্দশ শতাব্দীতে ইংরেজী সাহিত্যের জনক জিওফ্রি চোচার ‘দি পার্লামেন্ট অব বার্ডস’ কবিতায় ‘ভ্যালেন্টাইন্স ডে’ এর কথা তুলে ধরেন । এছাড়াও আরও কিছু সাহিত্যের পাতায় এই ভালবাসা দিবস নামের বিশেষ দিনটির খোঁজ পাওয়া যায় । এর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে উইলিয়াম শেক্সপিয়ার রচিত বিখ্যাত ট্র্যাজেডি ‘হেমলেট’ । প্রথমদিকে ভালবাসার উদযাপনের দিনটি সীমাবদ্ধ ছিল ইংল্যান্ডের রাজকীয় পরিবার এবং অভিজাত সমাজে ।

উনবিংশ শতাব্দীতে এই দিনটি সার্বজনীন উৎসব হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। শুরু হয় ভালবাসার মানুষকে ফুল, গ্রিটিংস কার্ড, চকলেট, অলংকারসহ নানা উপহার দেয়া ও একান্তে সময় কাটানোর রীতি। বিংশ শতাব্দীতে ভালবাসা দিবস পৌঁছে যায় মানুষের হৃদয়ে গভীরে, ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বব্যাপী । বিভিন্ন দেশে এ নিয়ে নানা বৈচিত্র লক্ষণীয়। চীনে ভালবাসা দিবসকে বলা হয় ‘কিক্সি ফেস্টিভাল’ যেটি উদযাপিত হয় চন্দ্রপঞ্জিকার সপ্তম মাসের সপ্তম দিনে, ফিনল্যান্ডে এর নাম ‘ইস্তাভানপাইভা’ যার অর্থ ‘বন্ধুত্বের দিন’, ল্যাটিন আমেরিকাতেও এই দিবস উদযাপিত হয় বন্ধুত্ব ও ভালবাসার দিন হিসেবে। তাছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, স্পেন, পর্তুগাল, গ্রীস, জাপান সহ বিভিন্ন দেশে ভিন্ন নামে দিনটি উদযাপিত হয়। পাশ্চাত্য সংস্কৃতির অনুকরুনণে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান সহ সব দেশেই বাড়ছে দিনটির কদর। বিশেষত তরুণ সমাজে দিনটির মূল্য রীতিমত চোখে পড়ার মত। যদিও ভালবাসা নিয়ে মানব মস্তিষ্কে কিছু সমীকরুনণ আর হৃদয়ের গহনে কিভাবে তার উৎপত্তি হয়,- এখনো নির্ণয় করা বিজ্ঞানীদের জন্য সম্ভবপর হয়নি। শোনা যায়, পৃথিবী থেকে যত সত্যিকারের প্রেমিক প্রেমিকা মারা যায় তাদের ভালবাসা নাকি জমা থাকে সুর্যের কাছে,তাইতো সুর্যের রং লাল। ভোরের সুর্যোদয় ভালবাসার মানুষের মনে রং ছড়ায়। তাইতো বিশ্বের সব প্রেমিক ভোরের সুর্যের ছড়িয়ে দেয়া আলোর কাছ থেকে দীর্ঘ নিশ্বাসে ভালবাসা সংগ্রহ করে। প্রকৃতি থেকে নেয়া এ ভালবাসা বিলায় সারাদিন একে অন্যের মাঝে। যদিও এই মিথের উৎপত্তি কোথা থেকে আমার তা জানা নেই।

সবাইকে ভালবাসা দিবসের শুভেচ্ছা।  বছরের প্রতিটি দিনেই সেন্ট বা সন্তো ভ্যালেন্টাইনের সেই রাঙ্গা ভালবাসা ছড়িয়ে পড়ুক সবার মনে।

সুত্রঃ ইশিক্ষন ডট কম

বিয়ের প্রস্তুতিঃ বর-কনের আচরণ ও কিছু সতর্কতা

বিয়ের আগের ও পরের আচরণ বর-কনের পরবর্তী জীবনে প্রভাব বিস্তার করে। তাই দুজনই সতর্ক থাকুন।  ভেবেচিন্তে একে অপরের সঙ্গে আচরণ করুন।  কী করবেন আর করবেন না, জানাচ্ছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ও ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট তানজির আহমেদ তুষার –

বিয়ের পর প্রায়ই স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে নানা রকম কষ্ট, যন্ত্রণা কিংবা অসন্তুষ্টি দেখা যায়।  অথচ একটু সচেতন হলেই অশান্তি দূর করে সাংসারিক জীবনে বসন্তের রং ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব।   বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে খুব সাধারণ কিন্তু অতি প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো একটু জেনে নেওয়া যাক।

বিয়ের আগে: বিয়ের আগে পাত্র-পাত্রীরা ছোটবেলা থেকে মনের মাধুরী মিশিয়ে তৈরি করে রাখা আদর্শ বা পারফেক্ট পাত্র বা পাত্রী খুঁজতে থাকে। জেনে রাখা দরকার যে পৃথিবীর কেউই পারফেক্ট নয়। এ ক্ষেত্রে নিজেদের অবস্থানের কথা মাথায় রেখে প্রত্যাশার একটা ন্যূনতম মান নির্ধারণ করে পাত্র-পাত্রী খোঁজা ভালো। পাত্র-পাত্রী খোঁজার সময় তাদের ব্যক্তিত্ব, পেশাগত কাজের ধরন, পারিবারিক সংস্কৃতি ও রীতিনীতি জানা প্রয়োজন।

দেখতে যাওয়া: বিয়ের আগে পাত্র-পাত্রীকে দেখাটা গুরুত্বপূর্ণ। পাত্র-পাত্রীর নিজেদেরও পরিচিত হয়ে নেওয়াটা দরকার। কিন্তু বারবার দেখতে এলে তার মধ্যে হতাশা তৈরি হয়। বিয়ের পরও এর নেতিবাচক প্রভাব দেখা যেতে পারে। ছবি দেখে ও খোঁজখবর নিয়ে পছন্দ হলে কোনো রেস্টুরেন্ট বা মার্কেটে পাত্রীর সঙ্গে অনানুষ্ঠানিকভাবে দেখা করুন এবং স্বাভাবিক সামাজিক কথাবার্তা বলে একে অপরকে বোঝার চেষ্টা করুন। সব দিক থেকে পছন্দ হলেই শুধু আনুষ্ঠানিকভাবে পাত্র-পাত্রীর বাসায় যাওয়া উচিত। পাত্র বা পাত্রীকে দেখতে গিয়ে এমন কোনো প্রশ্ন বা মন্তব্য করবেন না, যা তার জন্য অপমানজনক।  কোনো তথ্য জানতে হলে কৌশলী হোন।

বিয়ে ঠিক হলে: বিয়ে ঠিক হলে পাত্র-পাত্রী নিজেদের একটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করে নিতে পারলে ভালো। একই সঙ্গে উভয় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে অন্তত ফোনে হলেও কথা বলে সম্পর্কগুলো সহজ করে নেওয়া যেতে পারে। এ সময় সততার সঙ্গে তথ্যর আদান-প্রদান করা উচিত। বিয়ের আগে পাত্র-পাত্রী তার ভাবী স্ত্রী বা স্বামীকে একজন আদর্শ স্ত্রী বা স্বামী হিসেবে কল্পনা করতে পছন্দ করে। শ্বশুর-শাশুড়িসহ সবাই তাকে আদর করবে, সবার সঙ্গে সুন্দর সম্পর্ক থাকবে। মনে রাখতে হবে, আদর্শ ও বাস্তবতার মধ্যে অবশ্যই পার্থক্য থাকবে। কারণ কেউই সব দিক থেকে আদর্শ নয়। অন্যদিকে তাদের মধ্যে কিছু আশঙ্কাও কাজ করতে থাকে। মেয়েদের মধ্যে শ্বশুরবাড়ির লোকজন কেমন হবে, তাদের সঙ্গে মানাতে পারবে কি না, স্বামী তাকে বুঝবে কি না, এ ছাড়া তার প্রিয় পরিবেশ ছেড়ে যেতে হবে—এটার একটা কষ্ট তার মধ্যে দানা বাঁধতে থাকে। বিয়ের আগে ও পরে পাত্র-পাত্রীর একে অপরের আশঙ্কাগুলো বুঝে তাকে আশ্বস্ত ও সহায়তা করা উচিত।

বিয়ের দিন কনেকে ঠাট্টা নয়: বিয়ের দিন ঠাট্টা বা ঠকানোর বিষয়টি পুরনো প্রচলন। ঠকানোর বিষয়টি অন্যদের ওপর তেমন প্রভাব বিস্তার না করলেও কনের ওপর অনেক প্রভাব ফেলে। কনে অনেক মানসিক চাপ, আশঙ্কার মধ্যে থাকে এবং তাকেই নতুন পরিবেশে যেতে হয়। এ কারণে তার মনের অবস্থা নাজুক থাকে। তাই সামান্য পিনের খোঁচা বুলেটের চেয়েও বেশি ব্যথিত করে। এটার প্রভাব মেয়েটির মনের অজান্তেই দীর্ঘদিন থেকে যায়। এ জন্য বিয়ের দিন প্রথম দেখাটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। নতুন বউয়ের সঙ্গে ঠাট্টা না করে সহমর্মিতার সঙ্গে কথা বললে তার সঙ্গে ইতিবাচক সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

বিয়ের পর:  বিয়ের পর স্ত্রী স্বামীকে আরো বেশি করে অনুভব করে এবং স্বামীও তার মতো করে প্রচণ্ড আবেগ দিয়ে তার সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষা করুক—এটা প্রত্যাশা করে। অনেকে এই আবেগকে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি মনে করে বিরক্ত হয়। অন্যদিকে সামাজিক কারণেই স্বামীকে অনেক দায়িত্ব নিতে হয়—স্ত্রীকে সম্মানজনক অবস্থায় রাখতে হবে, সন্তানদের ভবিষ্যৎ তৈরি করতে হবে ইত্যাদি। ফলে স্ত্রী মনে করে, স্বামী তাকে আর আগের মতো ভালোবাসে না। এ সময় সন্দেহের সুপ্ত বীজ উপ্ত হয়ে যেতে পারে। কিন্তু ছেলেটি যে মেয়েটিকে ভালোবাসে না তা নয়, কিন্তু তা প্রকাশ করতে পারে না অথবা প্রকাশ করার প্রয়োজন অনুভব করে না। হয়তো স্ত্রী-সন্তানদের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত করার জন্যই সে দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। এ সময় স্বামীর উচিত স্ত্রীর আবেগকে বোঝার চেষ্টা করা এবং স্ত্রীকে যথাসম্ভব সময় দেওয়া। একই সঙ্গে স্ত্রীরও বোঝা উচিত স্বামীর ব্যস্ততার অর্থ ভালোবাসা কমে যাওয়া নয়, এই পরিশ্রমের উদ্দেশ্য তাদের ভালো রাখার প্রচেষ্টা।

নবদম্পতি ও যৌথ পরিবার: যৌথ পরিবারে অনেক সময় দম্পতিরা একান্তে সময় কাটানো বা একটু কাছাকাছি আসতে কুণ্ঠা বোধ করে। ফলে তাদের মানসিক চাহিদা পূর্ণ হয় না। বরং এক ধরনের অস্বস্তি তৈরি হয়। স্বামী হয়তো বাইরে গিয়ে অস্বস্তি কিছুটা কমিয়ে ফেলতে পারে, কিন্তু স্ত্রীর মধ্যে দিনে দিনে অস্বস্তিটা জমাট বাঁধতে থাকে। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে এই অস্বস্তি সংযুক্ত হয়ে যায়। ফলে মেয়েটির মনের অজান্তেই পরিবারের সদস্যদের প্রতি বিরক্তিবোধ তৈরি হতে থাকে। একান্ত সময়গুলোতে যাতে সে অবাধে সারা দিনের আবেগ প্রকাশ করতে পারে, সেই সুযোগ দিতে হবে। তার আবেগের প্রতি অতিপ্রতিক্রিয়াশীলতা দেখানোর প্রয়োজন নেই, বরং তার আবেগকে স্বীকৃতি দিতে হবে। যৌথ পরিবারের অন্য সদস্যদের উচিত নবদম্পতিকে কিছুটা সময় একান্তে কাটানোর সুযোগ দেওয়া। মেয়েটি যাতে এই পরিবারের একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হয়ে উঠতে পারে, এ বিষয়ে তাকে সহায়তা করা।

স্ত্রী ও পরিবারের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা: বিয়ের পর ছেলেটিকে যে শক্ত কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে হয় তা হচ্ছে স্ত্রী ও পরিবারের অন্য সদস্য, বিশেষত মায়ের মধ্যে ব্যালান্স করা। ছেলেটির জন্য মা ও স্ত্রী তার দুই হাতের মতো; কোনোটিই তার বেশি আপন বা পর নয়। একইভাবে সে মা ও স্ত্রী উভয়েরই ভালোবাসার পাত্র, দুজনই তার কাছ থেকে যথেষ্ট মনোযোগ প্রত্যাশা করে, যা খুবই স্বাভাবিক। তাই ছেলেটিকে এ ক্ষেত্রে বিচক্ষণতার সঙ্গে অ্যাডজাস্ট করতে হবে। মনোযোগ দিয়ে তাদের কথা শুনতে হবে এবং কাউকে কষ্ট না দিয়ে বিষয়টি মোকাবিলা করতে হবে।

জীবনধারার পরিবর্তন: বিয়ের পর ছেলে ও মেয়ে উভয়কেই তার লাইফস্টাইল পরিবর্তন করতে হয়। বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে সময় দেওয়া কমে যায় এবং খাওয়া, ঘুমসহ জীবনের নানা উপাদান নতুন মানুষের সঙ্গে তাল মিলিয়ে করতে হয়। এ ক্ষেত্রে উভয়কেই কিছুটা ছাড় দিতে হবে। খরচের হাত কিছুটা সীমিত করতে হয়। তবে মনে রাখা দরকার, হঠাৎ করে লাইফস্টাইল পরিবর্তন করা কঠিন। এ জন্য তাকে কিছুটা সময় দেওয়া উচিত এবং উন্নতি হলে উৎসাহিত করা উচিত।

বিয়ের পর ভালো সম্পর্ক রাখতে করণীয়:
♦ মনে রাখুন, বিয়ে হলেই অবধারিতভাবে ভালোবাসা থাকবে তা নয়। ভালোবাসা তৈরি ও রক্ষার জন্য সব সময় স্বামী ও স্ত্রী দুজনকেই ভূমিকা রাখতে হয়।
♦ নতুন জীবনের সঙ্গে আপনার লাইফস্টাইলটা অ্যাডজাস্ট করে নিন।  যেকোনো সম্পর্কই ছাড় প্রত্যাশা করে।
♦ স্বামী-স্ত্রী দুজনে মিলে আনন্দদায়ক কিছু করুন; যেমন—দূরে বেড়াতে যাওয়া, একসঙ্গে হাঁটা, মার্কেটে যাওয়া। আপনার কোনটাতে ভালো লাগবে তা আপনার সঙ্গীকে বলুন এবং তারটিকেও গুরুত্ব দিন।
♦ সঙ্গীর ভালো কাজের সত্যিকারের প্রশংসা করুন।
♦ মাঝে মাঝে উপহার দিন, সারপ্রাইজ দিন এবং সৃজনশীল কিছু করুন, যাতে আপনার স্বামী বা স্ত্রীর প্রতি যত্ন ও ভালোবাসা প্রকাশিত হয়।
♦ মনের মধ্যে কষ্ট বা ভালো লাগা তৈরি হলে তা ইতিবাচকভাবে প্রকাশ করুন এবং সঙ্গী প্রকাশ করলে তার স্বীকৃতি দিন। রাগ সঠিকভাবে প্রকাশ করুন। স্বামী-স্ত্রী একে অপরকে পছন্দনীয় কোনো নামে ডাকুন।
♦ পরিবারে কোনো সমস্যা তৈরি হলে খোলামেলা আলোচনা করে সমাধান করুন। পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো দুজনে মিলে আলোচনা করে নিন।
♦ উভয় পরিবারকে শ্রদ্ধা করুন এবং পরস্পরকে খোঁচা মেরে কথা বলা এড়িয়ে চলুন।
♦ নিশ্চিত প্রমাণ ছাড়া একে অপরকে সন্দেহ করা এড়িয়ে চলুন। অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতাগুলো বারবার মনে করিয়ে দেওয়া থেকে বিরত থাকুন। পরস্পরের সঙ্গে অঙ্গীকারগুলো রক্ষা করুন এবং তাল মিলিয়ে চলার চেষ্টা করুন।  সুত্রঃ কুমিল্লার কাগজ