ব্যায়ামের সময়

আমরা আগের তুলনায় নিজেদের স্বাস্থ্য, সুস্থতা এবং সুন্দর ফিগারের বিষয়ে অনেক বেশি সচেতন। আমরা জানি সু-স্বাস্থ্যের জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করার কোনো বিকল্প নেই। তবে ব্যস্ততা আমাদের জীবনে এভাবে জড়িয়ে রয়েছে যে মাত্র একঘণ্টা সময় খুঁজে বের করাও কঠিন।

সকালে অফিসের জন্য অনেকেই ব্যায়াম করার সুযোগ পাই না। অফিস থেকে ফিরতে সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত। বাড়ি ফিরে আবার কত কাজ…ব্যায়াম করার সময় নেই। জানি এইতো বলবেন, কিন্তু সুস্থ থাকতে হলে কিছুটা সময় বের করতেই হবে।

কীভাবে? জেনে নিন:

কাল

অনেকে ঘুম থেকে উঠে বিছানায় বসেই ব্যায়াম শুরু করেন। তবে এসময় ভারী ব্যায়াম না করাই ভালো। কারণ এক্সারসাইজের জন্য শরীরে যথেষ্ট পরিমানে এনার্জি থাকা প্রয়োজন
সময়ের অভাব থাকলে ঘুম থেকে ওঠার আধ ঘণ্টা পর হালকা জগিং বা মর্নিং ওয়ার্ক করুন
ঘুম থেকে ওঠার পর ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে কয়েক ঘণ্টা পর ব্যায়াম করুন
মনে রাখবেন কখনোই খালি পেটে ব্যায়াম করা যাবে না

বিকেল

ব্যায়াম করার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত সময় হচ্ছে দুপুরের পর বিকেলে। মানে ঘুম থেকে ওঠার ৬ ঘণ্টা পর এবং ১২ ঘণ্টার মধ্যে
যাদের ভারী এক্সারসাইজের পরিকল্পনা রয়েছে তারা দিনের বেলার যেকোনো একটি সময় বেছে নিন
লাঞ্চ করার পর বসে না থেকে হালকা হাঁটুন।

সন্ধ্যা

বাড়ি ফেরার পথে কিছুটা পথ হেঁটেই অাসুন
হাঁটার সময় খেয়াল রাখবেন যেন ১০ মিনিটে ১ কিলোমিটার পথ যেতে পারেন
সন্ধ্যা বেলা এক্সারসাইজ করতে পারেন। কিন্তু সে ক্ষেত্রে অবশ্যই এক্সারসাইজ করার আগে রিল্যাক্স করুন। যাতে এক্সারসাইজ করার সময় ক্লান্ত ভাব না থাকে।
যোগব্যায়াম করার জন্য সন্ধ্যা সবচেয়ে উপযুক্ত সময়।
এসময় আপনি ট্রেডমিল বা সাইক্লিংও করতে পারেন

শারীরিক ক্ষমতা ও বয়স অনুযায়ী ব্যায়াম করবেন, ব্যাক পেইন বা শ্বাসকষ্ট থাকলে সব ধরনের ব্যায়াম করতে পারবেন না। তাই ব্যায়াম শুরু করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর, বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মতো খাবার এবং জীবন যাপনের সঠিক পদ্ধতিগুলোও মেনে চলুন।

এখন শীতে অনেকেই ব্যাডমিন্টন খেলছেন তাদের আলাদা করে ব্যায়াম না করলেও চলে। ভারী ব্যায়াম করতে হলে অবশ্যই অনেক সময় নিয়ে ওয়ার্ম আপ করে নিন। নিয়মিত ব্যায়াম করে সুস্থ থাকুন…

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর

বিবাহ ও পারিবারিক জীবনে দাম্পত্য সমস্যার কারণ ও ধরণ

বিবাহ হলো একটা জটিল বাস্তবতা।তাই দাম্পত্য জীবন একেবারে সম্পূর্ন সমস্যা ও সংকটমুক্ত নয়।দাম্পত্য জীবনের চলমান বাস্তবতা চোরের মত যে কোন সময় ইচ্ছা অনিচ্ছা সত্ত্বেও যে কোন সমস্যা প্রবেশ করতে পারে।সমাজবিজ্ঞানীদের মতে দাম্পত্য সমস্যা একটা স্বাভাবিক ব্যাপার।বিভিন্ন পরিস্থিতিতে বিভিন্ন রুপে এর আবির্ভাব ঘটে।দাম্পত্য সমস্যা মূলত সৃষ্টি হয় দুজনের প্রয়োজনের চাহিদা থেকে।অর্থাৎ একজনের ও প্রয়োজনের চাহিদার সাথে অন্যজনের প্রয়োজনের চাহিদার মধ্যে সংঘর্ষ।

এই লেখায় মূলত দাম্পত্য সমস্যার কারণ ও ধরণ গুলো উল্লেখ করা হলোঃ

কারণ গুলো হলো বাহক অর্থাৎ যার জন্য সমস্যাগুলো দাম্পত্য জীবনে আসে,আর ধরণ গুলো এর হাবভাব অর্থাৎ এর রকম ও গুরুত্ব হিসেবে এর প্রভাব।

ক) সমস্যার কারণঃ এটাকে আমরা সমস্যার agent বলতে পারি।অর্থাৎ যার বা যাদের দ্বারা এই সমস্যার সৃষ্টি বা কারণ। দাম্পত্য সমস্যার পিছনে ৩ রকমের agent রয়েছে। তাহলো- ১) ব্যক্তি নিজে  ২।বিবাহের মূল উপাদানে এবং ৩। বাইরের বা পারিপার্শ্বিক কারণ।

১) ব্যক্তি নিজে কারণঃ বিবাহ একজন পুরুষ এবং একজন নারীর দাম্পত্য বন্ধন। স্বামী স্ত্রী উভয়ে এক হলেও তারা নিজস্ব বৈশিষ্ঠে ও স্বতন্ত্র জীবনবোধ নিয়ে সমৃদ্ধ।এখানে ব্যক্তি হিসেবে স্বামী স্ত্রী নিজেরাই দাম্পত্য সমস্যার কারণ হতে পারে।

যেমন-স্বামী স্ত্রীর শারীরিক কারণঃ
শারীরিক দীর্ঘকালীন রোগ ব্যাধি,অসুস্থ্যতা, শারীরিক দূর্বলতা, শারীরিক অক্ষমতা, ছোঁয়াছে রোগ, মানসিক বিকারগ্রস্থতা, ট্রমাটীক, সাইকিক, নিয়োরটিক, সিজোফ্রেনিক ,এলকোহলিক, মানসিক ভারসাম্যহীনতা ইত্যাদি।

ব্যক্তিত্বঃ অন্তর্মূখী
যেমনঃ ঘরকোনা, চাপা স্বভাব, হীনমন্য, সন্দেহবাটিক, সংকীর্ণচেতা, নিঃসঙ্গ ও নিয়ন্ত্রণহীন আবেগ। আবার অন্যদিকে বহির্মূখী যেমন- অতিরিক্ত হৈহুল্লুর স্বভাব, সময় জ্ঞানের অভাব, বাইরে বাইরে সময় কাটানো, বন্ধু সার্কেল নিয়ে আড্ডা মারা, দায়িত্বজ্ঞান হীনতা ইত্যাদি।

দুর্বল ব্যক্তিত্বঃ পরনির্ভরশীলতা সিদ্ধান্তহীনতা, দায়িত্ব নেওয়ার অক্ষমতা, অন্যের কথায় কান দেওয়া, গোপনীয়তা রক্ষা না করার দুর্বলতা, মেরুদন্ডহীন হীনমণ্য, আস্থার অভাব, খুঁতখঁতে স্বভাব, নিজস্বতা রক্ষা করার দুর্বল মানসিকতা, সন্দেহপ্রবণ ইত্যাদি।

ব্যক্তিত্বের দ্বন্দ্বঃ আত্ন-অহমিকা, ব্যক্তিমর্যাদা ক্ষুন্ন করা, দমনীয় ভাব, নমনীয়তার অভাব, কতৃত্বপরায়ণতা, অতিরিক্ত মেজাজ ও আবেগ প্রবণতা, গ্রহণশীলতার অভাব, প্রবল আত্ন-মর্যাদা বোধ, স্বার্থপরতা, পেশী শক্তি প্রয়োগ প্রবণতা, অস্বচ্ছলতা, গোয়াতুর্মি ভাব, অনাস্থা আপোষহীন মানসিকতা, জেদ, জবাবদিহিতার ভাব, দোষ খোঁজার মানসিকতা ইত্যাদি।

২।বিবাহের মূল উপাদানঃ দুজন নর-নারীর পারস্পারিক সন্মতির বিনিময়ই বিবাহ।সন্মতির মধ্যে যে প্রতিশ্রুতি রয়েছে সেটাই বিবাহের মূল উপাদান।আর দাম্পত্য জীবনে বিবাহ প্রতিশ্রুতি এই উপাদানের অনুপস্থিতি এবং এর অভাবই দাম্পত্য সমস্যার কারণ।

যেমন- ভালবাসার অভাব, বিশ্বাস ও বিশ্বস্ততার অভাব, যৌনাচার,বহুগামিতা, দৈহিক যৌন সম্পর্কে অক্ষমতা, পুরুষত্বহীনতা, সমকামিতা, যৌনবিকৃতি, পাশবিকতা, যৌন মিলনের অনিহা এবং এড়িয়ে চলা, সন্তান দানে অক্ষমতা, দায়িত্বজ্ঞানহীন ভবঘুরে, ভুল সঙ্গী নির্বাচন।

৩।পারিপার্শ্বিক কারণঃ এখানে বাইরের কোন শক্তি বা তৃতীয় কোন শক্তি বা পক্ষ পারিপার্শ্বিক কোন এজেন্ট দাম্পত্য সমস্যার কারণ হয়ে আসে।এর মধ্যে পিতা, মাতা, ভাই বোন, শশুর শাশুড়ি, দেবর ননদ, ননাশ, কোন মিথ্যা গুজব, অন্যের পক্ষপাতিত্য মনোভাব, অন্যের অতিরিক্ত আবেগ সোহাগ, ঈর্ষা প্রতিহিংসা, মদ-নেশা। অর্থনৈতিক অস্বচ্ছলতা, বেকারত্ব চাকুরী পেশা, অসৎ ব্যবসা, মোবাইল, ফেসবুক, বন্ধুত্বের সম্পর্ক, অসততা, অতীত টেনে আনা রকমারি, বশ করা চাকুরীর তাগিদে দূরে অবস্থান।

খ) সমস্যার ধরণঃ

এই দাম্পত্য সমস্যার যে কারণগুলো রয়েছে এইগুলোর আবার গুরুত্বের মাপকাঠিতে তিন রকম এর পর্যায় বা ধরণ রয়েছে।

এই গুলো হলো –
ক।মৌলিক সমস্যা, ২।অ-মৌলিক সমস্যা ও ৩।অযৌক্তিক বা বিরক্তিকর সমস্যা।

১।মৌলিক সমস্যাঃ বিবাহের যে মূল ভিত্তি এবং দাম্পত্য সম্পর্কে (Basic Problem) যে মূলশক্তি এবং নীতি তার মধ্যে যে দুর্বলতা এবং অভাবই হলো এই মৌলিক সমস্যা।আর যখন এই মূলভিত্তি এবং শক্তি দুর্বলতা প্রকটভাবে দাম্পত্য সম্পর্কে সক্রিয় হয়ে ওঠে তখন দাম্পত্য জীবনটাকে ভয়ানক অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিতে পারে।তখন সেটা দাম্পত্য জীবন টিকিয়ে রাখার জন্য বড় হুমকিস্বরুপ হয়ে দাঁড়ায়।বিবাহের মূল হলো পারস্পারিক ভালোবাসা, বিশ্বস্ততা, একতা ও সম্পূর্ণ আত্ন-দান।পরস্পরের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং মর্যাদাদানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকা পারস্পারিক দাম্পতিক দায়িত্বশীলতায় স্বচ্ছলতা এবং সর্বোচ্চ নিশ্চয়তা দান।

এক্ষেত্রে স্বামী স্ত্রীর পারস্পারিক ভালোবাসার অভাব,অবিশ্বস্ততা, পর-পুরুষ পর নারীতে আসক্তি,সম্পর্কে বহুগামিতা,ব্যভিচার,শারিরিক দুর্বলতা অক্ষমতা,শারীরিক যৌন সম্পর্ক গড়তে ব্যর্থতা এবং অনীহা, যৌন বিকৃতি এবং সমকামিতা, একেবারেই ভুল সঙ্গী নির্বাচন, মানসিক বিকার গ্রস্থতা, ব্যক্তিত্বে দুর্বলতা, পরনির্ভরশীলতা, সন্দেহবাতিকতা এবং দায়িত্ব কর্তব্যে উদাসীনতা এবং অবহেলা, প্রতারণা, অসততা, নেশাসক্তি।

২।অ-মৌলিক সমস্যাঃ এটা মূলে কোন সমস্যা নয় যা দাম্পত্য সম্পর্ক নষ্ট করে দেওয়া বা শেষ করে দিতে পারে তবে এটা প্রতিদিনের সম্পর্কের মধ্যে অশান্তি অস্থিরতা এবং উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে যায়।

যেমন-মদ-নেশা, শারীরিক মানসিক নির্যাতন, সবকিছুতে সামান্য কিছুতে উত্তেজনা-রাগারাগি, অধৈর্য ও তর্কাতর্কি, দুর্বল ব্যক্তিত্ব, গুজবে বিশ্বাস করা, সময় সমর্থন না দেওয়া, টাকা পয়সা বেতনভাতার অস্বচ্ছতা, পেশাগত গোপনীয়তা, মিথহ্যাচার, তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ ও বাড়াবাড়ি, অভাব-অর্থ সংকট ও বেকারত্ব, যৌন সম্পর্কে স্বার্থপরতা এবং অবিবেক হওয়া,স্বামী বিদেশে থেকে স্ত্রী সন্তান্দের জন্য টাকা না পাঠানো, স্বামী স্ত্রীর কাজ ও মর্যাদার লড়াই, ব্যক্তিত্বের সংঘাত দ্বন্দ্ব, অসামাজিক কার্যকলাপ, অর্থনৈতিক জীবন ও ব্যবসা।

৩।বিরক্তিকর সমস্যাঃ

এই সমস্যা সচরাচর দাম্পত্য জীবনে সম্পর্কে এবং পরিবারে একটু না একটু লেগেই থাকে বা স্বামী স্ত্রীর উভয়ের অসচেতনতার জন্য বা ইচ্ছাকৃত হয়ে থাকে।এইগুলি হলো বিরক্তিকর সমস্যা যা সয়ে যায়, আবার সময় সময় মাথা গরম করে আবার অবান্তর জ্বালান্তর সৃষ্টি করে।

যেমন- ছোট ছোট বিষয়ে খুঁত ধরা, পরস্পরকে appreciate না করা, সময়মত কিছু না করা, সময় না দেওয়া, পক্ষাবলম্বন করা, যার যার বাবা মার পক্ষে কথা বলা, ঠিক সময়ে ঘরে না ফেরা, একে অন্যের সমন্ধে এবং তাদের পরিবার নিয়ে খোঁচা মেরে কথা বলা, সময়মত বাজার না করা, মোবাইলে লুকিয়ে বা এড়িয়ে কথা বলা, দাম্পত্য যৌন সম্পর্কে পরস্পরকে না বোঝা, মিথ্যা কথা বলা, কাজের সঠিক মূল্যায়ন না করা, পরস্পরের কাজের খোঁজ খবর না রাখা, অসুস্থতায় খেয়াল না করা, পরস্পরের যত্নে খেয়ালে ঘাটতি, সংসারের প্রয়োজনে বেখেয়ালীপনা, নেশায় বদ অভ্যাস, জেদ,কথা ও আচরনে রুক্ষতা,পরস্পর কথা বন্ধ করে দেওয়া, রান্না-বান্নার ব্যাপারে বিরুপ মন্তব্য করা, পরস্পর চাহিদা পূরনে খেয়ালীপনা এবং অনীহা,গুজবে কান দিয়ে ভুল বুঝা,অতীত টেনে আনা, স্বামী স্ত্রির কথা অন্যকে বলে দেয়া, কোন ঘটানা লুকানোর চেষ্টা,সন্তান না হওয়ার ব্যাপারে পরস্পরকে দোষারোপ করা, প্রয়োজনে ডাক্তারের কাছে না যাওয়া, বৌ শাশুড়ি ও শুশুরের মধ্যে আন্তরিকভাবে গ্রহন না করার জের, অহেতুক সন্দেহ, কোন কিছু চাওয়া পাওয়ার অধৈর্য হওয়া,অতিরিক্ত পীড়াপীড়ি, অন্যেরটা দেখে তুলনা করা, সংসার স্রোতে নতুনত্বের অভাব, বিনোদনের অভাব, সংসারে অভাব, গায়ে হাত তোলা, পারিবারিক কড়াকড়ি নিয়ম, অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রন করা, অবহেলার কারণে এই সব বিরক্তিকর সমস্যাগুলি বড় আকার ধারণ করতে পারে।

আবার অন্যদিকে উভয়ের সচেতনতা, প্রয়োজনীয় আন্তরিক পদক্ষেপ এবং পারস্পরিক ক্ষমা,সহনশীলতার মধ্য দিয়ে অনেক মৌলিক গুরুতর সমস্যারও শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ উন্মুক্ত করতে পারে।

ডঃ ফাদার মিন্টু এল, পালমা

নিঃসঙ্গ জীবন বয়ে আনে হতাশা

বর্তমান কর্মব্যস্ত পৃথিবীতে যারা একাকী বসবাস করেন তাদের হতাশায় ভোগার আশঙ্কা প্রায় ৮০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যায় বলে জানিয়েছেন ফিনিশ গবেষকরা। গবেষণায় বলা হয়, নিঃসঙ্গ নারীদের জন্য বাসস্থানের পরিবেশ এবং পুরুষদের ক্ষেত্রে সামাজিক আনুকূল্যের অভাব ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। জরিপে দেখা যায়, গত তিন দশক ধরে পশ্চিমা দেশগুলোতে একা বসবাসকারীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে প্রতি তিনটি বাড়ির মধ্যে একটি বাড়িতে বসবাসকারী পরিবারের সদস্যসংখ্যা মাত্র একজন। একা বসবাসকারীদের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করার জন্য কোনো না কোনো ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলেছে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে সক্রিয় একটি সংস্থা। জনস্বাস্থ্য বিষয়ক জার্নাল ‘বায়োমেড সেন্ট্রাল’ এ প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয় বলে শুক্রবার জানিয়েছে বিবিসি।

এ গবেষণায় ফিনল্যান্ডের ৩ হাজার ৪ শ’ ৭১ জন হতাশাগ্রস্ত মানুষের মানসিক মন্দা রোধে ওষুধ ব্যবহারের প্রবণতা পর্যবেক্ষণ করা হয়। এদের মধ্যে ১ হাজার ৬শ’ ৯৫ জন পুরুষ ও ১ হাজার ৭শ’ ৭৬ জন নারী। তাদের জীবনযাপন সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করার পর দেখা যায়, ২০০০ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত পরিবারের সঙ্গে বসবাসকারীদের তুলনায় একা বসবাসকারীদের মধ্যে হতাশাগ্রস্ত হওয়ার প্রবণতা বেশি।

গবেষক দলের প্রধান ড. লরা পুলক্কি-রাবাক বলেন, এ ধরনের গবেষণাগুলোতে সাধারণত ঝুঁকিগুলো খুব পরিষ্কারভাবে প্রকাশ পায় না। এমনকি এদের মধ্যে কতজন মানসিক স্বাস্থ্যসেবার বাইরে আছে তাও পরিষ্কার নয়। তবে পরিবারের সঙ্গে বসবাসকারীদের জন্য বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলোচনা করার সুযোগ থাকায় তারা মানসিক ও সামাজিক সহযোগিতা পায় বলে তাদের মধ্যে হতাশাগ্রস্ত হওয়ার প্রবণতা কম দেখা দেয়। আর আলোচনা না করতে পারার কারণেই বেশি হতাশায় ভোগেন একা বসবাসকারীরা।

সুত্রঃ- দৈনিক ইত্তেফাক

ঢাকা শহরের কমিউনিটি সেন্টার গুলোর বর্তমান ভাড়া

রোজার পরপরই যারা বিবাহ করতে যাচ্ছেন তাদের জন্যে ঢাকা শহরের কমিউনিটি সেন্টার বা পার্টি সেন্টারগুলোর বর্তমান বাজারমূল্য এই লেখাটিতে দেবার চেষ্টা করেছি। কমিউনিটি সেন্টারের ভাড়া, ডেকোরেশন, খাওয়ার খরচের হিসাব -এ সবকিছুই পেয়ে যাবেন এখানে। বাজার ঘুরে সংগৃহীত এ লেখাটিতে যেসকল মূল্য প্রদান করা হলো, তা বিবাহের মৌসুম অর্থাৎ, নভেম্বর-জানুয়ারির জন্যে প্রযোজ্য নয়। অর্থাৎ, বিবাহের মৌসুমে কমিউনিটি সেন্টারগুলোর ভাড়া ১০-২০ হাজার টাকা বেড়ে যায়। কাজেই যারা বিবাহের প্ল্যান করছেন, তারা ডেট ফাইনাল করে অনতিবিলম্বে কমিউনিটি সেন্টার পছন্দ করে বুকিং দিয়ে ফেলুন। এই পর্বে ঢাকা শহরের নামীদামী কিছু কমিউনিটি সেন্টারের ভাড়া সংক্রান্ত তথ্য দেওয়া হলো। পরবর্তী পর্বে ঢাকা শহরের বাকী কমিউনিটি সেন্টার এবং অন্যান্য শহরের কমিউনিটি সেন্টারগুলোর ভাড়ার বিবরণও দেওয়া হবে।

তাহলে আসুন, জেনে নেই কিছু কমিউনিটি সেন্টারের বর্তমান ভাড়া:
১. হিলটাউন কমিউনিটি সেন্টার: ২৩/৪, খিলজী রোড (মিরপুর রোডের উপরে), শ্যামলী, ঢাকা-১২০৭। ফোন: ৯১১৮১২৬, ০১৫৫২৩০৪২২৮। মূল্য: ৩০০ লোকের জন্যে ভাড়া ২৬,০০০ টাকা, ৬০০ লোকের জন্যে ভাড়া ৩০,০০০ টাকা। যেহেতু জায়গা কম, তাই হলুদ বা ছোট অনুষ্ঠানের জন্যে এই কমিউনিটি সেন্টারটি উপযোগী।

২. পার্টি প্যালেস কমিউনিটি সেন্টার: ২৩/৫, শ্যামলী, মিরপুর রোড, ঢাকা-১২০৭। ফোন: ৯১২৩২৯৬। এটি রোজার পর ভেঙ্গে ফেলা হবে বলে শুনেছি।

৩. অঙ্গন কমিউনিটি সেন্টার: ৮/৯, আওরঙ্গজেব রোড, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭। ফোন: ৮১৫৩৫৮৭, ০১৭১০০৯৬৯৭৭, ০১৯২৩১৯৮৬৮৮। ভ্যাটসহ ভাড়া ৩২,০০০ টাকা। খাবার+বাবুর্চি+ফুলের ডেকোরেশন -এসব কিছু নিজের খরচ। এই কমিউনিটি সেন্টারটি অপোকৃত ছোট। তাই সর্বোচ্চ ৫০০-৬০০ মানুষের জন্যে এটি ভাড়া করা যেতে পারে।

৪. নিউ প্রিয়াংকা কমিউনিটি সেন্টার: ২/৯, স্যার সৈয়দ রোড, আসাদগেট, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭। ফোন: ৯১১৪২৮৮, ৮১২১২৮৬, ০১৭১১০২৬৯১৫। প্রতি ১০০০ গেস্টের জন্যে হল ভাড়া (ডেকোরেশনসহ) ৭০,০০০ টাকা। প্রতি ৫০০ গেস্টের জন্যে হল ভাড়া (ডেকোরেশনসহ) ৬০,০০০ টাকা। খাবার+বাবুর্চি ভাড়া -এসব কিছু নিজের খরচ। প্রতি ১০০০ অথবা প্রতি ৫০০ গেস্টের বেশি গেস্ট এলে সেক্ষেত্রে প্রতি ১০০ জনের জন্যে ৩০০০ টাকা করে ভাড়া প্রদান করতে হবে। এছাড়া ১০০০ গেস্টের খাবার ভ্যাট বাবদ ৫০০০ টাকা সরকারকে প্রদান করতে হবে।

৫. সূচনা কমিউনিটি সেন্টার: রিং রোড, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭ (কৃষি মার্কেট সংলগ্ন), ১৫/১২, ব্লক-এফ, টিক্কাপাড়া, মোহাম্মদপর, ঢাকা-১২০৭। ফোন: ০১৯১১৩৯২৫৮৪, ০১৬৭০১০৯২৭২। প্রতি ১০০০ জন গেস্টের জন্যে হল ভাড়া, ডেকোরেটর, লাইটিং, বেয়ারা, জেনারেটর, এসি -এসব সহ মূল্য ৪৬,৭৫০ টাকা। খাবার ও ভ্যাটের টাকা আলাদা। প্রতি ১০০০ জন গেস্টের বেশি গেস্ট এলে সেক্ষেত্রে প্রতি ১০০ জনের জন্যে ৩০০০ টাকা করে ভাড়া প্রদান করতে হবে।

৬. বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক কনফারেন্স সেন্টার: বুকিং ইনফরমেশন আগারগাঁও, শেরেবাংলানগর, ঢাকা, ফোন: ৮৮০২-৯১০০০২৩, ৮৮০২-৯১০০০১৪-৫, ৮৮০২-৯১০০০১৭
৭. সামারাই কনভেনশন সেন্টার: ২৩/জি/৭, পান্থপথ (বসুন্ধরা সিটি মার্কেটের বিপরীতে)। ফোন: ৮৬২২৫০৯, ০১৭২৭৬৯৯৩৭৪, ০১৭১৫৯৫৫৩১৮, ০১৭২৭৩৪৬৮৭৭, ৭১২০৭৩৪, ০১৭১৩০৪৬০৬৬। প্রতি ১০০০ গেস্টের জন্যে হল ভাড়া ৫০,০০০ টাকা, ডেকোরেটর ভাড়া ৫০,০০০ টাকা, লাইটিং এবং সাউন্ড বাবদ ভাড়া ৪০০০ টাকা, গ্যাস এবং ওয়াসা বাবদ ভাড়া ৫০০০ টাকা। মোট ১,১৩,০০০ টাকা। ফুড ভ্যাট ১৫%। ফুল সাজানো এবং ডেকোরেশনের জন্য আলাদা ভাড়া প্রযোজ্য।

৮. সোহাগ কমিউনিটি সেন্টার ১, ২ এবং ৩: ৯১, নিউ ইস্কাটন রোড, ঢাকা-১২১৭। ফোন: ৯৩৩৪০৬৮, ৮৩৫১২৯১। হল ১ এবং ২ এর ক্ষেত্রে প্রতি ১০০০ জন গেস্টের জন্য হল ভাড়া+ডেকোরেটর বিল+খাদ্যের উপর ভ্যাট বাবদ ৭৭,৮০০ টাকা দিতে হবে। আর প্রতি ৫০০ জন গেস্টের জন্যে উপরিউক্ত খাতে ৫৫,৪০০ টাকা প্রযোজ্য। হল -৩ টি ছোট, যেখানে সর্বোচ্চ ৬০০ মানুষ ধরে।

৯. স্পেকট্রা কনভেনশন সেন্টার:
যোগাযোগের জন্য এখানে ক্লিক করুন

বিয়ের গাড়ি-ভাড়া

বিয়ের দৃশ্য কল্পনা করতে গেলে আমাদের মনের মানস পটে ভেসে ওঠে একটি পালকির চিত্র। ছয়জন বেহারা কাঁধে করে বয়ে নিয়ে যাচ্ছেন পালকিটি। আর পেছনে পায়ে হেঁটে হেঁটে যাচ্ছেন বরযাত্রীরা। এটা অনেক পুরোনো গ্রামবাংলার বরযাত্রার চিত্র। কিন্তু এখন সময় পাল্টেছে। পাল্টেছে যাতায়াতের মাধ্যমও। সময়ের পটপরিবর্তনের ফলে আধুনিকায়নের ছোঁয়া লেগেছে মানব জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে। এখন বরযাত্রা হয় গাড়িতে করে। এমনকি হেলিকপ্টারে করে যাওয়াও কল্পনাতীত নয়। বিয়েতে যাতায়াতের জন্য কী ধরনের গাড়ি ব্যবহূত হয় এবং তার খরচ ও খোঁজখবরের বিস্তারিত জানাতেই এই আয়োজন-

প্রাইভেটকারঃ
সাধারণত বরকে বহনের জন্য প্রাইভেটকারই বহুল প্রচলিত। যারা ভাড়ার প্রাইভেট কার ব্যবহার করতে চান, তাদের জন্য টয়োটার নর্মাল প্রাইভেটকারগুলোই সহজলভ্য। সাধারণমানের এই প্রাইভেটকারগুলোর ভাড়া প্রতিদিন পনের’শ থেকে দুই হাজার টাকার মধ্যে। তবে, যাদের আর্থিক সচ্ছলতা বেশি তারা অনেকেই একটু বিলাসবহুল গাড়ি ব্যবহার করতে চান।

বিলাসবহুল গাড়িগুলোর ভিতরে ঢাকা শহরে ভাড়া পাওয়া যায় মার্সিডিস বেঞ্চ, মিৎসুবিসি ল্যান্সার জিএল এক্স, টয়োটা করোলা জিএক্স ইত্যাদি এই গাড়িগুলোর ভাড়া প্রতি ১০ ঘন্টার জন্য ১০ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকার মধ্যে এ ছাড়া জিপ গাড়ির ভেতরে পাওয়া যায় টয়োটা প্রাডো, হ্যারিয়ার, পাজেরো ইত্যাদি। এই গাড়িগুলোর ভাড়া পড়বে প্রতি ১০ ঘন্টায় ১৫ হাজার টাকা।

বিলাসবহুল গাড়িগুলো ভাড়া পাওয়া যায় ‘হাটজ’-এ। ফোন : ৯৮৮৪৩১১, ৮৮১৩২৪২, ০১৯১৩২২২২৯।

তবে বিয়েতে সবচেয়ে বেশি ব্যবহূত হয় মাইক্রোবাস। অধিক আসন থাকায় এবং সহজলভ্য হওয়ায় মাইক্রোবাসগুলো বেশি জনপ্রিয়। এবং মাইক্রোবাসগুলোর সুবিধা হচ্ছে খুব সাধারণভাবে এগুলো ব্যবহার করা যায়।  ঢাকার মধ্যে এবং ঢাকার বাইরে মাইক্রোবাসের ভাড়ার পরিবর্তন হয়। নয় সিটের মাইক্রোবাসগুলো ঢাকার মধ্যে ভাড়া ২ থেকে ৩ হাজার টাকার মধ্যে। আর ঢাকার বাইরে ভাড়া ৪ হাজার টাকা। ১২ সিটের মাইক্রোবাসের ভাড়া ২ হাজার টাকা থেকে ৩ হাজার টাকার মধ্যে। এ ছাড়া টয়োটা নোয়া ও ভক্সির ভাড়া ঢাকার মধ্যে প্রতি ১০ ঘন্টায় ৩ হাজার টাকা এবং ঢাকার বাইরে সাড়ে ৩ হাজার টাকা থেকে ৪ হাজার টাকা। এই গাড়িগুলো সাধারণত ৯ সিটের হয়ে থাকে।

রেন্ট-এ কারঃ

 

সেতু-রেন্ট-এ কার : ৯১৪২৬৪৪, ৮১৩০৭৪৬, ০১৮১৯২৮০০৮০
সোহাগ রেন্ট-এ কার : ০১৭১১৫৬৮৮৭৪, ৮১১৯৮১২১
মর্ডান রেন্ট-এ কার : ৮১৫৮৫৩০, ০১৭১৫০৫০৬৯৯, ০১৭১৩২৬১৬১৯
ভিআইপি রেন্ট-এ কার : ০১৭১৫১২৪১২৬, ০১৭২০২৭৭৭৯৯
সৌখিন রেন্ট-এ কার : ৯১৪৪৩৯৮, ০১৭১১৫২৮৪৫৩।

জেনে রাখুনঃ
যেহেতু সময় হিসাবে গাড়ি ভাড়া দেওয়া হয় সেহেতু কতক্ষণের জন্য গাড়ি ভাড়া নিবেন সেই ব্যাপারে পুরোপুরি নিশ্চিত হয়ে নিন। গাড়ি ভাড়া করতে হলে কমপক্ষে দু’দিন আগে বুকিং দেওয়া উচিত। গাড়ির জন্য আনুষঙ্গিক খরচ যেমন- টোল, পার্কিং চার্জ ইত্যাদি নিজেকেই বহন করতে হবে। জ্বালানি খরচ যিনি গাড়ি ভাড়া নেন, তার নিজেকেই বহন করতে হয়। (তবে অনেক সময় প্যাকেজ চুক্তিতেও গাড়ি ভাড়া নেয়া হয়। সেক্ষেত্রে আনুষঙ্গিক কোনো খরচ যিনি ভাড়া করেন তাকে বহন করতে হয় না।)  গাড়ি প্রতিষ্ঠানের এবং চালকের সম্বন্ধে বিস্তারিত তথ্য আগেই জেনে নিন। এবং তাদের ফোন নম্বর রেখে দেওয়াটাও জরুরি।  বিয়েতে ব্যবহারের সময় গাড়ি সাজানোসহ নানা কারণে গাড়ি নোংরা হতে পারে। তাই গাড়ির ড্রাইভারকে দু’তিন’শ টাকা টিপস দিন গাড়ি পরিষ্কার করার জন্য।

 ব্যতিক্রমী ভাবনা ::
অনেকে নিজের বরযাত্রাকে একটু ব্যতিক্রমী করতে ঘোড়ার গাড়ি বা টমটম ব্যবহার করেন। পুরান ঢাকায় ঘোড়ার গাড়ি ভাড়া পাওয়া যায়। ঘোড়ার গাড়ির ভাড়া প্রতিদিনের জন্য ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা।

কোথায় পাওয়া যাবে:
ভাই ভাই টমটম : ০১৭১২৫৭১৫৬৩, ০১৭২২৪৭১০৭৫।
নানানাতি টমটম : ০১৭১৫৯৬৭৩৩২।

বিয়ে

বিশেষ বিবাহ আইনের অধীন বিয়ে করতে চাইলে পাত্র ও পাত্রীকে একজন আইনজীবীর শরণাপন্ন হতে হবে ৷ আইনজীবীর তত্ত্বাবধানে প্রস্তুতকৃত হলফনামায় পাত্র-পাত্রী স্বাক্ষর দানের পর ওই হলফনামা নোটারি পাবলিক কর্তৃক নোটরাইজড করতে হবে ৷ হলফনামায় অবশ্যই ‘বিশেষ বিবাহ আইনের অধীন বিয়ে’ শব্দগুচ্ছ লিখতে হবে ৷ অতঃপর সরকার অনুমোদিত বিশেষ বিবাহ রেজিস্ট্রারের কাছে নির্ধারিত ফরম পূরণপূর্বক