সঙ্গীর মন খারাপ

মনখারাপের কথা মুখ ফুটে বলে উঠতে পারেন না অনেকেই। ঠিক কী কারণে কেউ মানসিক চাপে ভুগঠেন, তা সবসময় বাইরে থেকে দেখেও বোঝা যায় না! যে মানুষটাকে সবসময় হাসিখুশি দেখেন, তিনিই হয়তো ভিতরে ভিতরে খুব ‘ডিস্টার্বড’, মনোকষ্টে ভুগছেন।

#ডিপ্রেশন’ বা #মেন্টাল_হেলথ নিয়ে এত কথার মাঝে আমরা সকলেই বলছি মনখুলে কথা বলার জন্য। কিন্তু সবার কাছে কি আর সব কথা বলা যায়! না সবাই সবকিছু বুঝে সমাধানের রাস্তা দেখাতে পারেন! তবে প্রফেশনাল হেল্প নেওয়ার আগে একবার যদি নিজের কাছের মানুষের কাছে মনের জানলা খুলে দেওয়া যায়, নিজেকে উজাড় করে দেওয়া যায়, তাহলে হয়তো অনেকটা কষ্টই লাঘব হবে।

অনেকে স্বভাবগতভাবেই নিজেকে খানিকটা গুটিয়ে রাখেন, ইন্ট্রোভার্ট থাকতে পছন্দ করেন। কেউ কেউ আবার বাইরের মানুষের সঙ্গে হাসিঠাট্টা করলেও মনের ভিতরের অনুভূতি-আবেগগুলোকে নিজের কাছেই রেখে দেন। আপনার স্বামী-স্ত্রী বা পার্টনারকে যেহেতু আপনি খুব কাছ থেকে দেখছেন, তাই তাঁর মনোজগতের হদিশ পাওয়ার চেষ্টা করুন। মনখারাপ চেপে রাখতে রাখতে তা একটা সময়ে ক্রনিক ডিপ্রেশনে পৌঁছে যায়। তখন সাইকলজিক্যাল সাহায্য নেওয়া ছাড়া উপায় থাকে না। ডিপ্রেশন হঠাৎ করে একদিনে তৈরি হয় না।

কিন্তু জমতে থাকা স্ট্রেস, অ্যাংজ়াইটি মনের মধ্যে পুষে রাখলে তা পরবর্তীকালে গুরুতর রূপ নিতে পারে। আর এব্যাপারে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন কাছের মানুষের সাহচর্য। লকডাউনে অনেকটা সময় একসঙ্গে কাটানোর সুযোগ পাচ্ছেন। এই সময়টুকু নিজেদের মধ্যে ঝগড়া না করে বরং একে অপরের পরিপূরক হয়ে উঠুন। একে অপরকে ভাঙার বদলে গড়ে তুলুন। জবস্ট্রেস থেকে ব্যক্তিগত সম্পর্ক, কোনও হঠাৎ আঘাত থেকে পুরনো ট্রমা…যে কোনও কিছুই তিনি যেন আপনার কাছে খোলাখুলি বলতে পারেন। তাঁর বন্ধু হয়ে ওঠা জরুরি। যাতে তিনি কোনওকিছু আপনার থেকে না লুকোন।

মনে রাখবেন, সঙ্গীর মন ভাল রাখতে তাঁর সঙ্গে আপনার কমফর্ট লেভেলটা ভাল হওয়া জরুরি। কমিউনিকেট করুন। অনেক কাপলই সারাদিন একসঙ্গে থাকলেও নিজের নিজের জগতে ব্যস্ত থাকেন! পাশে বসে থাকলেও মোবাইল-ল্যাপটপে ডুবে থাকেন। কথোপকথনের বড্ড অভাব। এমনটা মোটেও কাম্য নয়। তা সে সুস্থ সম্পর্কের জন্যই হোক বা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যই হোক! বিভিন্ন ছোটখাটো বিষয় নিয়েও আলোচনা করুন। তাঁর পছন্দমতো করে খানিকটা সময় কাটান।অনেকসময় কোনও ব্যক্তির ভাললাগার বিষয়গুলোর মধ্যেও তাঁর ব্যক্তিত্বের নানা দিক ফুটে ওঠে। যেমন কেউ হয়তো লেখালেখি করতে ভালবাসেন। তাঁর লেখার মধ্যে দিয়েও তাঁর মনের হদিশ পেতে পারেন। সবমিলিয়ে এত নেগেটিভিটির মধ্যেও পজ়িটিভ এনার্জি ধরে রাখার চেষ্টা করতে হবে আমাদেরই! #বিবাহবিডি #Bangladeshi Bride Groom #Bangladeshi Matrimonial Site #Matrimony Bangladesh.

জীবনসঙ্গী খুঁজছেন? জেনে নিন কিছু তথ্য

নিজের পছন্দ হোক কিংবা পরিবারের পছন্দ –

বিয়ের ক্ষেত্রে তাড়াহুড়া করবেন না মোটেই। বিয়ে কোনো ছেলে খেলা নয়, আজীবনের বন্ধন। তাই জীবনসঙ্গী এমন একজন মানুষ হতে হবে, যার সাথে আপনার ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়া গুলো মেলে।

সকলেই তো আর প্রেম করে বিয়ে করেন না। অনেকেরই বিয়ে হয় পারিবারিকভাবে, যাকে আমরা “অ্যারেঞ্জড ম্যারেজ” বলি। শুনতে খুব সহজ মনে হলেও বিষয়টা আসলে খুব একটা সহজ নয়। অনেকেই হয়তো বিয়ে করার কথা ভাবছেন, কিন্তু পছন্দের সঙ্গী কিভাবে খুঁজবেন বুঝতে পারেন না। আবার খুঁজে পেলেও আপনার সাথে মনের মিল হবে কিনা তা নিয়েও আছে দ্বিধা-দ্বন্দ।

জীবনসঙ্গী খোঁজাটা যেন এক বিশাল পরীক্ষা। “অ্যারেঞ্জড ম্যারেজ” এর জন্য সঠিক জীবন সঙ্গী খুঁজে পেতে কিছু বিশেষ প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে চেষ্টা করাই ভালো। পরিকল্পিতভাবে এগিয়ে গেলে খুব বেশি কাঠ-খড় পোড়ানো ছাড়াই মিলবে মনের মানুষের দেখা। আসুন তাহলে জেনে নেয়া যাক জীবনসঙ্গী খোঁজার ধাপ গুলো।

নিজের পছন্দ চুড়ান্ত করুনঃ

আপনি কেমন সঙ্গী চাইছেন কেমন হবে সঙ্গীর পারিবারিক অবস্থা, দেশের বাড়ি, শিক্ষাগত যোগ্যতা, চাকরী সব মিলিয়ে যেমন সঙ্গী আপনার পছন্দ সেটা মনে মনে ঠিক করে ফেলুন। নিজের পছন্দের সাথে সবসময়েই পরিবারের পছন্দের সামঞ্জস্য রাখুন। তাহলে বিয়ের পরে মানিয়ে নিতে সুবিধা হবে।

বয়সের পার্থক্য ও পেশাঃ

যাকে জীবনসঙ্গী বানাবেন ভাবছেন তার সাথে বয়সের পার্থক্য যেন খুব বেশী না হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন। সেই সাথে সঙ্গীর আয় বা পেশার দিকটি অবশ্যই মূল্যায়ন করতে হবে কেননা জীবন চালাতে অর্থনৈতিক নিরাপত্তা জরুরী।

পারিবারিক ও আঞ্চলিক সংস্কৃতিঃ

পারিবারিক ও আঞ্চলিক সংস্কৃতির বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা বিয়ে মানে দুজন ব্যাক্তি নয় বরং দুটি পরিবারের মধ্যে সম্পর্ক। যদি দুটি পারিবারের মধ্যে কালচারগত বিষয়ে সামঞ্জস্যতা থাকে তবে নতুন পরিবারে গিয়ে সহজেই মানিয়ে নেয়া যায়।

ব্যক্তির আচরণঃ

যাকে জীবনসঙ্গী বানাবেন ভাবছেন শুধু তার গুনের প্রশংসা বা সৌন্দর্য না দেখে তার আচরনের প্রতিও খেয়াল রাখুন। আপনি একজন ব্যক্তির সাথে কিছুক্ষণ কথা বললেই বুজতে পারবেন তার আচরণগত কোন সমস্যা আছে কিনা বা তার কোন অভ্যাস যা আপনার পছন্দ নাও হতে পারে।

দায়িত্ববান ও কর্মক্ষমঃ

একটি নতুন সংসার শুরু করতে নারী-পুরুষ দুজনের ভূমিকা প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে একজন দায়িত্ববান ও কর্মঠ হবেন আরেকজন উদাসীন তা হলে সংসার শুরু হবে অশান্তি দিয়ে। তাই জীবনসঙ্গী বাছাইয়ে এ গুনাবলি গুলো আছে কিনা যাচাই করে নিন।

শারীরিক বিষয়ঃ

যাকে বিয়ে করবেন তার শারীরিক গঠন আপনার সাথে মানায় কি না খেয়াল রাখুন। ব্যক্তি স্বাস্থ্যগত দিক থেকে ঠিক আছে কিনা যাচাই করে নিন।

মানসিক প্রস্তুতিঃ

যাকে বিয়ে করতে চাচ্ছেন সে কি বিয়ের জন্য মানসিকভাবে তৈরি কিনা তা বোঝার চেষ্টা করুন। যদি সে বিয়ের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকে তাহলে ভাবতে পারেন।

জীবনসঙ্গী খুঁজার ক্ষেত্রে গুণবতী, সুন্দরী বা ছেলের অবস্থান যাচাই করা ছাড়াও অনেক বিষয় রয়েছে যা আমরা দেখা প্রয়োজন মনে করি না। ফলে বিয়ের পর সংসারের অধ্যায় শুরু হয় ঝামেলা দিয়ে। তাই জীবনসঙ্গী খোঁজার ক্ষেত্রে অবশ্যই এ বিষয়গুলো প্রত্যেকের খেয়াল রাখা উচিত।

যে কৌশলে সঙ্গীর মনের ওপর দখল রাখবেন!

সম্পর্ক সুন্দর ও দীর্ঘমেয়াদী করার জন্য, সঙ্গীর মনের ওপরে চিরকাল আপনার দখল বজায় রাখার জন্য প্রয়োজন দুজনের মধ্যে মানসিক যোগাযোগটাকে ভালো করা। আর মানসিক যোগাযোগ ভালো করতে হলে দুজনকেই হতে হবে সচেষ্টা।  আসুন জেনে নেয়া যাক ছোট্ট সেই কাজগুলো সম্পর্কে, যেগুলো সঙ্গীর মনকে চিরকাল রাখবে আপনারই!

মন দিয়ে সঙ্গীর কথা শুনুন
সঙ্গীর সাথে মানসিক যোগাযোগ বাড়িয়ে তোলার জন্য সঙ্গীর কথা মন দিয়ে শুনুন। আপনার সঙ্গী যখন আপনার সাথে গল্প করে কিংবা খুব আগ্রহ নিয়ে কোনো কথা বলতে আসে তখন তার কথা গুলো আগ্রহ নিয়ে শুনতে চেষ্টা করুন। আপনি যদি তার কথা শুনতে আগ্রহ প্রকাশ না করেন তাহলে সে মনঃক্ষুণ্ণ হবে এবং পরবর্তিতে আপনার সাথে মন খুলে কথা বলতে চাইবে না। ফলে আপনার সাথে তার মানসিক যোগাযোগ সৃষ্টি হবে।

সারাদিনের কথা জিজ্ঞেস করুন
দিনের শেষে আপনার সঙ্গীকে তার সারাদিনের কথা জিজ্ঞাসা করুন। দিনটি কেমন কেটেছে, কী করেছে সে সারাদিন, কী খেয়েছে ইত্যাদি বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করুন। তাহলে আপনার সঙ্গী বুঝতে পারবে যে আপনি তার ব্যাপারে আগ্রহী এবং যথেষ্ট যত্নশীল। একই সঙ্গে নিজেদের প্রাত্যহিক সুবিধা অসুবিধা গুলোর কথা আলাপ আলোচনার মাধ্যমে মানসিক যোগাযোগটা আরো ভালো হবে।

সর্বজান্তা ভাব দেখাবেন না
আপনার সঙ্গী যখন আপনাকে কিছু বলে তখন সর্বজান্তা ভাব দেখাবেন না। এমন অনেক কিছুই আছে যা আপনি জানেন। সেই বিষয়টি যদি আপনার সঙ্গী খুব আগ্রহ নিয়ে আপনাকে বলতে চায় তাহলে আপনিও আগ্রহ নিয়েই শুনুন। সব সময়েই ‘জানি’ বলে সঙ্গীর কথা বলার আগ্রহ কমিয়ে দেবেন না। সর্বজান্তা ভাব দেখালে আপনার সাথে তার মানসিক দূরত্বটা আরো বেড়ে যাবে।

সব কিছুতে নিজের মতামত চাপিয়ে দেবেন না
আপনার সঙ্গীর উপর আপনার অবশ্যই কিছু অধিকার আছে। কিন্তু তাই বলে তার সব ব্যাপারেই আপনার নাক গলানো ঠিক হবে না। প্রতিটি মানুষেরই ব্যক্তিগত জীবনও নিজস্ব কিছু মতামত থাকে। তাই আপনার সঙ্গীর কোনো ব্যাপারে জোর করে নিজের মতামত চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করবেন না।

দোষারোপ করবেন না
মানুষ মাত্রই ভুল হতে পারে। হতে পারে নানান দোষ। কিন্তু একটি ভুলে হয়ে গেলে সঙ্গীকে কখনো দোষারোপ করবেন না। সেই ভুল শুধরে নিতে তাঁর পাশে দাঁড়ান। তাঁকে বুঝিয়ে বলুন যে কাজটি ঠিক হয়নি। “তুমি এটা কেন করলে?” – এমন বাক্য না বলে বলুন। “এটা করা ঠিক হয়নি।  সুত্রঃ বিজনেস আওয়ার