প্রথম দেখা, প্রথম কথা

যাঁর সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছেন, তাঁকে কোনওদিন দেখেননি! কিছুই জানেন না তাঁর ব্যাপারে। মনের মধ্যে চাপা উত্তেজনা বশে রেখে বরং উপভোগ করুন মুহূর্তগুলোকে।  গল্পগুজবের ফাঁকে চিনে নিন পরস্পরকে। এটাই ব্লাইন্ড ডেট-এর সার্থকতা সেখানেই।

সম্পূর্ণ অচেনা-অজানা একজন মানুষের সঙ্গে সাক্ষাৎ।  অবশ্য এ আবার যে-সে সাক্ষাৎ নয়, একেবারে ব্লাইন্ড ডেট! তবে ব্লাইন্ড ডেট-এর সঙ্গে আর পাঁচটা ডেট-এর তফাৎ হল, এক্ষেত্রে আপনি উলটোদিকের মানুষটির ব্যাপারে কিছুই জানেন না।  মনের মধ্যে এক ধরনের চাপা উৎকণ্ঠা আর উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণ করাই দায়! সাধারণত, বন্ধুবান্ধব বা পরিচিতরাই আয়োজন করেন এ ধরনের ডেট।  তবে, ডেটিংয়ে পৌঁছে আপনার অনুভূতি কীরকম হবে, সে নিশ্চয়তা কেউই দিতে পারবেন না! তা বলে কি ব্লাইন্ড ডেটে যাবেন না? অন্তত একবার তো এরকম অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতেই পারেন। শুধু মাথায় রাখুন কয়েকটি বিষয়:

  • কোনও প্রত্যাশা নিয়ে যাবেন না। যদি ভাবেন আপনার স্বপ্নের মানুষটিকে আপনি খুঁজে পাবেন, তাহলে আশাহত হতে পারেন।  আপনার প্রিন্স চার্মিংয়ের কথা ভেবেছেন আর বাস্তবের মানুষটি একেবারে আলাদা হতে পারে।
  • কথাবার্তার শুরুতেই উলটোদিকের মানুষটার সম্পর্কে কোনও ধারণা তৈরি করে ফেলবেন না। কারও ব্যাপারে সম্যক ধারণা তৈরি করতে একটা ব্লাইন্ড ডেট মোটেও যথেষ্ট নয়। তবে গল্পগুজবের মাধ্যমে একটা প্রাথমিক ধারণা তৈরি হয়েই যাবে।  তার ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত নিন ভবিষ্যতে আবার এই লোকটির
  • সঙ্গে দেখা করবেন কি না। মনে রাখবেন, প্রত্যেকটা মানুষের মধ্যেই কিছু না কিছু ইন্টারেস্টিং এলিমেন্ট থাকে। সেই ছোট ছোট দিকগুলো উপভোগ করার চেষ্টা করুন।
  •  যদি মনে হয় একেবারে ভুল লোকের সঙ্গে ডেটিং করে দিনটাই মাটি হয়ে গেল, তাহলেও আফশোস করবেন না। খাওয়াদাওয়া, ড্রিংক উপভোগ করুন।  আগে থেকেই ঠিক করে নিন কোনও নতুন রেস্তরাঁয় যাবেন, কোনও নতুন ডিশ ট্রাই করবেন।  যদি খুব বোরিং লাগে, তাহলে সংক্ষিপ্ত কথায় সেরে ফেলুন।
  • একেকজন মানুষের ব্যক্তিত্ব একেক রকমের।  হতেই পারে যে উলটোদিকের মানুষটির সঙ্গে
  • প্রেম সম্ভব নয়। কিন্তু তিনি অন্য নানা বিষয়ে বেশ খোঁজখবর রাখেন। তাহলে সেই বিষয়ে নিজেকে সমৃদ্ধ করে তোলার সুযোগটা হারাবেন না যেন।  বন্ধুত্ব রাখা যেতেই পারে।
  •  অতিরিক্ত খাবার গ্রহন করে ফেলবেন না। আর সেন্স অফ হিউমার বজায় রাখা দু’পক্ষের জন্যই জরুরি।

এক তরফা প্রেম নেশার মত, বিচ্ছেদের থেকেও যন্ত্রণাদায়ক!

আপনাকে ভালোবাসে না, অথচ আপনি তাকে মন-প্রাণ উজার করে ভালোবাসেন। হ্যা, এটা কে একতরফা ভালোবাসা বলে। কিন্তু তার ভালোবাসা পাবেন এই আশায় কতদিন আপনি একা একা অপেক্ষা করবেন?

বুকের সীমাহীন ভালোবাসার মূল্যায়ন না পেয়ে হাজারো প্রকৃত প্রেমিক প্রেমিকার হৃদয় ভাঙার গল্প রয়েছে। কিন্তু সেই কাঙ্খিত মানুষটি যদি একটু গুরুত্ব দিত তা হলে কত জীবনই না বদলে যেত। এ অভাবেই থেকে যায় একটি হৃদয়ের প্রতি অপর একটি হৃদয়ের একতরফা ভালোবাসা।  চাইলেও কাঙ্খিত ব্যক্তিকে ভুলে যাওয়া যায় না। সত্যি বলতে সম্ভব হয় না। কী করেই বা সম্ভব, মনের মন্দির তো তার ফিরে আশার প্রদীপ জ্বেলে অপেক্ষায় থাকে।  আর সেজন্যই একটি মানুষের হাজারো অবহেলা সয়েও তবুও তার জন্য অপেক্ষা করা।  কিন্তু এভাবে কতদিন অপেক্ষা করা যায়?

প্রথমেই বলা হয়েছে একতরফা প্রেম/ভালোবাসা কাকে বলে। তবে এধরণের প্রেমে পড়া কী উচিত বা এমনটা হলে কীভাবে নিজেকে নিজের জায়গায় ফিরিয়ে আনা যায়? এপ্রশ্ন অগুণিত মানুষের।

একতরফা প্রেমে কী কখনো হৃদয় ভাঙে?
এমন প্রশ্ন প্রসঙ্গে ভারতের মনোবিজ্ঞানী ও সম্পর্ক-বিশেষজ্ঞ প্রিতি সাইনি জানিয়েছেন, মূলত হৃদয় ভাঙা বলতে সেটাই বুঝায় যেখানে দু পক্ষের স্বীকৃতিতে প্রেম হয়েছিল। কিন্তু কোনো কারণে তা চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছায় না। আবার একতরফা ভালোবাসাতেও এটা সত্য। এখানে তো একজনের ক্ষেত্রে অবশ্যই। যেখানে আপনার অনুভূতি ছিল কিন্তু তা প্রকাশ পায়নি বা প্রকাশ পেলেও স্বীকৃতি পায়নি। কখনো কখনো এই একতরফা ভালোবাসার অনিশ্চয়তার জন্যই কষ্টের কারণ বেড়ে যায়।  হয়তো কাঙ্খিত ব্যক্তি এক সময়ে ভালোবাসা বুঝতে পারবে, স্বীকৃতি দিবে- এ আশা মন থেকে দূর করা উচিত।  যে কারণে হৃদয় ভাঙার কারণ প্রত্যাখান নয়।  আর স্বীকৃতি না পাওয়াটা হতাশায় থেকে যায়।

সময় প্রয়োজন:
যে আপনাকে ভালোবাসে না তাকে ভালোবাসা এক প্রকার আসক্তি বা নেশার মত। যেখানে আপনার ভালোবাসার কোনো স্বীকৃতি নেই সেখানে প্রত্যাখান হওয়ারও সম্ভাবনা নেই। অযথাই কল্পনা করে তাকে নিয়ে স্বপ্ন না দেখা উত্তম। এতে করে কষ্টের কারণ বেড়ে যায়। ভুল মানুষকে নিয়ে স্বপ্ন দেখার অ্যভাস পরিহার করার জন্য এখনি দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হন, যদি আপনিও একতরফা ভালোবাসায় আসক্ত হয়ে থাকেন। কিছুটা সময় প্রয়োজন হবে, হোক। তবুও ভালো।

যেভাবে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে:
মনোবিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন পরিস্থিতিতে বাস্তবতাকে মেনে নিতে হবে।  তাও সম্ভব না হলে সব সময় নিজেকে ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করতে হবে। ফলে ভুল করেও সেই মানুষটির কথা আর মনে পড়বে না।  কষ্টের কারণও বাড়বে না। আর যদি বাস্তবতা মেনে নিতে পারেন তাহলে উত্তম হয়। বাস্তবতায় কখনো কোনো আবেগ পৌঁছাতে পারে না। এখানে শুধুই বিবেকবোধ কাজ করে। খুব সহজেই নিজেকে মুক্ত করে সফলতার নতুন পথে পরিচালিত করা যায়।