ভরণপোষণের অধিকার

মিতুর বিয়ে হয়ে পেরিয়ে গেছে বছর তিনেক। বিয়ের পরপরই জানা গিয়েছিলো স্বামী মাদকাসক্ত। মাদকের গ্রাস থেকে স্বামীকে ফেরানোর অনেক চেষ্টা করেছে মিতু। লাভ হয় নি। এরইমধ্যে কোল জুড়ে এসেছে একটি সন্তান।

সন্তান জন্মানোর পর স্বামী মিতুকে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। কোনো ভরণপোষণ এমনকি একমাত্র সন্তানের জন্যও কোন টাকা পাঠায় না। মিতু লেখাপড়া তেমন একটা করে নি যে চাকরী করবে। আবার বাবার বাড়ির আর্থিক অবস্থাও ভালো নয়। নিজের এবং সন্তানের ভরণপোষণের জন্য এখন কী উপায় খুঁজবে সে? আইনে তার ভরণপোষণের অধিকার নিশ্চিত করা রয়েছে। মুসলিম আইনে আর্থিকভাবে স্বচ্ছল ব্যক্তিরা তাদের স্ত্রী, সন্তানসন্ততি, মা-বাবা, যারা আর্থিকভাবে অসমর্থ, তাদের ভরণপোষণ দিতে বাধ্য।

স্ত্রী স্বামীর কাছ থেকে বিয়ে বর্তমান থাকা অবস্থায় ভরণপোষণ পাওয়ার অধিকার লাভ করে। ছেলেসন্তান সাবালক না হওয়া পর্্যন্ত এবং মেয়ে সন্তান বিয়ে না হওয়া পয্যন্ত বাবার কাছ থেকে ভরণপোষণ লাভের দাবিদার। ছেলেসন্তান সাত বছর পয্যন্ত এবং মেয়ে সন্তান বিয়ে না হওয়া পয্যন্ত যদি মায়ের কাছে কিংবা মায়ের মা অর্থাৎ নানির কাছে থাকে, তবু বাবা তার ভরণপোষণ দিতে বাধ্য।

এছাড়া পঙ্গু, অক্ষম, পাগল এবং মানসিক ও শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী সাবালক সন্তানও বাবার কাছ থেকে ভরণপোষণ পাবে। তবে সন্তান যদি অন্যায়ভাবে বাবার সাথে থাকতে অস্বীকার করে কিংবা যে শিশু নিজস্ব সম্পত্তির আয় থেকে নিজের ভরণপোষণ করতে সক্ষম, তার ভরণপোষণ দিতে বাবাকে বাধ্য করা যাবে না। কিছু ক্ষেত্রে আলাদাভাবে বসবাস করলেও স্ত্রী স্বামীর কাছ থেকে ভরণপোষণ পাওয়ার অধিকার রাখেন। যেমন, স্ত্রীকে তাৎক্ষণিকভাবে দেনমোহর পরিশোধ না করলে, স্বামীর নিষ্ঠুরতার কারণে, স্বামী যদি অভ্যাসগতভাবে খারাপ ব্যাবহার করেন, দীর্ঘকাল স্ত্রীর কাছ থেকে স্বামী দূরে থাকলে ও অনুমতি ছাড়া স্বামী দ্বিতীয়বিয়ে করলে।

ভরণপোষণের পরিমাণ স্বামী-স্ত্রীর মর্যাদা ও আর্থিক সঙ্গতির উপর নির্ভর করে। অনেক সময় নিকাহনামায় লেখা থাকে ভরণপোষণ হিসেবে স্বামী কতোটাকা মাসিক দেবেন। সাধারণ অবস্থায় স্বামী তার নিজ গৃহেই স্ত্রীর খাদ্য, বস্ত্র ও বাসস্থান দিয়ে থাকে। আইনসঙ্গত বা যুক্তিযুক্ত কারণে যখন স্ত্রী আলাদা বসবাস করে, তখন স্বামী নগদ অর্থ দ্বারা ভরণপোষণ জোগাবে।

আইনসম্মত স্বামী যদি স্ত্রী ও সন্তানদের ভরণপোষণ না দেয়, তাহলে পারিবারিক আদালতে প্রতিকার চাওয়া যায়। ১৯৮৫ সালের পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশ অনুযায়ী এ অধিকার রয়েছে। সন্তান ও বৃদ্ধ মা-বাবাও আদালতের মাধ্যমে ভরণপোষণ পাওয়ার জন্য মামলা করতে পারেন।

এছাড়া ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইনের ৯ ধারা অনুযায়ী স্ত্রী খরপোশ দাবি করে স্বামীর বিরুদ্ধে চেয়ারম্যান বা মেয়রের কাছে আবেদন করতে পারেন। আবেদন পাওয়ার পর চেয়ারম্যান স্ত্রী ও স্বামী উভয়পক্ষের পছন্দমতো একজন করে প্রতিনিধি নিয়ে সালিস-পরিষদ গঠন করবেন। সালিস-পরিষদ স্ত্রীর দাবির যৌক্তিকতা যাচাই করে ভরণপোষণের পরিমাণ নির্ধারণ করে সিদ্ধান্ত এবং সেই মোতাবেক একটি প্রত্যয়নপত্র প্রদান করবে।

স্বামী স্ত্রী আলাদা থাকলে ভরণপোষণ

স্ত্রী যদি যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া স্বামীর কাছ থেকে আলাদা বসবাস করেন, তবে, স্বামী স্ত্রীকে ভরণপোষণ দিতে বাধ্য থাকবেন না। তবে, বিবাহিত থাকা অবস্থায় স্ত্রী আলাদাভাবে বসবাস করা স্বত্ত্বেও কয়েকটি ক্ষেত্রে ভরণপোষণ পেতে পারেন।

স্বামী যদি স্ত্রীর তাৎক্ষণিক দেনমোহরের দাবি অস্বীকার করেন; স্বামী বর্বর বার নিষ্ঠুর আচরণ করেন, স্ত্রী আলাদা বসবাস করেও ভরণপোষণ পাওয়ার অধিকারী হবেন। এছাড়া স্বামী আরেকটি বিয়ে করলে বার রক্ষিতা রাখলে স্ত্রী স্বামীর সাথে থাকতে অস্বীকৃতি জানাতে পারেন এবং তারপরও স্ত্রী স্বামীর কাছ থেকে ভরণপোষণ দাবি করার অধিকার রাখেন।

বিয়েবিচ্ছেদের পর ভরণপোষণ

বিয়েবিচ্ছেদের পরও কিছুদিন স্ত্রী ভরণপোষণ পাওয়ার অধিকারী হন। যেদিন থেকে বিচ্ছেদ কার্কর হয় সেদিন থেকে ৯০ দিন (এসময়কে ইদ্দত বলা হয়)পয্যন্ত স্ত্রী ভরণপোষণ পাওয়ার অধিকারী হন। {হেফজুর রহমান বনাম শামসুন্নাহার বেগম ৪ এমএলআর (অউ ) (১৯৯৯ )}

কোনো স্ত্রী তার স্বামীর কাছ থেকে মামলা দায়ের করার আগের সময়ের জন্য অথবা বিয়েবিচ্ছেদের আগে যে সময় স্বামী ভরণপোষণ দেয় নি সে সময়ের জন্যও ভরণপোষণ চাইতে পারেন। সিরাজুল ইসলাম বনাম হেলেনা বেগম (৪৮ উখজ )মামলায় আদালত বলেন, স্ত্রীর বকেয়া ভরণপোষণের বিষয়ে আদালতের ডিক্রি জারি করার বিচারিক ক্ষমতা আছে।

হিন্দু আইনে ভরণপোষণ

হিন্দু আইনে নিম্নলিখিত ব্যক্তিদের ভরণপোষণ পাওয়ার অধিকার রয়েছে:

একজন হিন্দুর কোন সম্পত্তি না থাকলেও সে তার নাবালক ছেলে, অবিবাহিত মেয়ে ও বাবা-মায়ের ভরণপোষণ করতে আইনত বাধ্য। দায়ভাগামতে, বাবা সাবালক ছেলেকে ভরণপোষণ করতে আইনত বাধ্য নন।

কর্তা যৌথ পরিবারের সকল পুরুষ, তাদের স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েদের ভরণপোষণে আইনত বাধ্য। একজন মৃত ব্যক্তি যাদের ভরণপোষণে বাধ্য ছিলো, মৃত ব্যক্তির উত্তরাধীকারীরাও মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি হতে তাদের ভরণপোষণ করতে আইনত বাধ্য।

বিয়ে না হওয়া পয্যন্ত বাবা তার কন্যা সন্তানের ভরণপোষণ দিতে বাধ্য। বাবার অবর্তমানে কন্যার ভরণপোষণ বাবার সম্পত্তি হতে চলতে থাকবে। অক্ষমতা বা অযোগ্যতা হেতু কেউ পৈতৃক সম্পত্তির অধিকার থেকে বঞ্চিত থাকলে তাকে ও তার পরিবারবর্গকে অক্ষম ব্যক্তির বাবা ও বাবার অবর্তমানে বাবার উত্তরাধীকারী যথাযোগ্য ভরণপোষণ দিতে বাধ্য।

১৯৪৬ সালের বিবাহিত হিন্দু নারীর পৃথক বাসস্থান ও ভরণপোষণ আইনের ১৮ ধারা অনুযায়ী, স্ত্রী অসতী না হলে বা অন্য ধর্ম গ্রহণের মাধ্যমে হিন্দু ধর্ম থেকে বহিস্কৃত না হলে সে তার জীবনকালে স্বামীর কাছ থেকে ভরণপোষণ পাওয়ার অধিকারী।

১৯৪৬ সালের বিবাহিতা হিন্দু নারীর পৃথক বাসস্থান ও ভরণপোষণ আইন অনুযায়ী, নিম্নোক্ত কারণ সমূহের উদ্ভব হলে একজন বিবাহিত নারী স্বামীর কাছ থেকে পৃথক থেকেও ভরণপোষণ পাওয়ার অধিকারী:

  • স্বামী যদি এমন কোন দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত থাকে যা সে তার স্ত্রীর কাছ থেকে পায় নি
  • স্বামী যদি স্ত্রীর প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ করে এবং নিষ্ঠুরতা যদি এমন পয্যায়ের হয় যে স্বামীগৃহে তার জীবনাশঙ্কার ভয় রয়েছে
  • স্বামী যদি স্ত্রীর অনুমতি ছাড়াই তাকে পরিত্যাগ করে
  • স্বামী যদি স্ত্রীর বর্তমানে পূনরায় বিয়ে করে
  • স্বামী যদি ধর্মান্তরিত হয়
  • স্বামী যদি ঘরেই কোন উপপত্নী রাখে অথবা অভ্যাসগতভাবে উপপত্নীর সাথে বসবাস করে
  • অন্যান্য যৌক্তিক কারণ

স্বামীর মৃত্যুকালীন পৃথক সম্পত্তি বা স্বামীর সহ-অংশীদারী সম্পত্তি থেকে একজন বিধবা স্ত্রী ভরণপোষণ পাওয়ার অধিকারী। স্বামীর মৃত্যুকালীন সময়ে পৃথক বসবাস করলেও তার এ অধিকার বজায় থাকে। অসৎ উদ্দেশ্য ব্যতীত স্বামীগৃহ ত্যাগ না করলে সে বকেয়া ভরণপোষণও পাওয়ার অধিকারী।

খ্রিষ্টান আইনে ভরণপোষণ

১৮৬৯ সালের ডিভোর্স অ্যাক্টের ৩৭ নং ধারা অনুযায়ী, স্ত্রী তার স্বামীর কাছ থেকে বিচ্ছেদের পর থেকে স্থায়ীভাবে ভরণপোষণ পেতে পারে। এছাড়া খ্রিষ্টান ধর্মে সন্তান ভরণপোষণের কথাও বলা হয়েছে। পারিবারিক আইন অনুযায়ী, স্ত্রী-সন্তানদের ভরণপোষণের দায়িত্ব স্বামী বা পিতার। বিয়ে বর্তমান থাকাকালীন অবস্থায় স্বামী তার স্ত্রীর ভরণপোষণ দেবেন। মা-বাবার সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পর সন্তানের ভরণপোষণের প্রশ্নটি আদালতের এখতেয়ারাধীন। সন্তানের কল্যাণের কথা চিন্তা করে, আর্থিক সামর্থের বিবেচনায় আদালত রায় দেবেন, কী পরিমাণ ভরণপোষণ সন্তানদের দেবেন। এই আইন অনুযায়ী, জেলা আদালত বা হাইকোর্ট বিভাগে মামলা করতে হয়।

উল্লেখ্য, অবহেলিত সন্তানরা ফৌজদারী দন্ডবিধির ৪৮৮ ধারার অধীনে ম্যাজিষ্ট্রেট কোর্টে পিতাকে ভরণপোষণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়ার জন্য মামলা করতে পারে। এক্ষেত্রে সব ধর্মের সন্তানেরা তা পারবে।

লিখেছেনঃ

লোকমান বিন নূর
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর

বিবাহবিডিতে চলছে T20 ভ্যালেন্টাইন অফার

বাংলাদেশী লিডিং ম্যাট্রিমনিয়াল ওয়েবপোর্টাল বিবাহবিডি ডট কম ভ্যালেন্টাইন ডে উপলক্ষ্যে  ডায়মন্ড ও পার্ল মেম্বারশীপে ২৫% ছাড় ঘোষনা করেছে। সেই সাথে যে সকল পাত্র/পাত্রী ১৬ মার্চ এর মধ্যে নিজেদের জীবন সঙ্গী বিবাহবিডি থেকে নিশ্চিত করবে তাদের মধ্যে প্রথম ৫ জোড়া জুটির জন্য বিবাহবিডির পক্ষ থেকে  রয়েছে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিতব্য  T20 বিশ্বকাপের টিকেট।

১ম ও ২য় জুটিকে ফাইনালের টিকেট, ৩য় ও ৪র্থ জুটিকে ভারত -পাকিস্থান ও ৫ম জুটিকে  উদ্ভোদনী ম্যাচের টিকেট প্রদান করা হবে। বিস্তারিত জানতে 24/7:  ০১৯২২১১৫৫৫৫ বিবাহবিডি ডট কমে রেজিষ্ট্রেশন করতে ক্লিক করুনঃ www.bibahabd.com

জীবনসঙ্গীকে যে কথা বলতেই হবে

দুটি মানুষের কথোপকথনের মাধ্যমেই একটি সম্পর্কের সূচনা হয়। এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই কেউ একজনকে জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নেন। জীবনভরই দুজনের মধ্যে চলে কথার বিনিময়। তবে কিছু কিছু কথা আছে যেগুলো নিয়ে নারীরা লুকোচুরি করেন। ওই কথাগুলো তিক্ত হলেও আপনার জীবনসঙ্গীকে বলতেই হবে।

টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে এমন সাতটি বিষয় সম্পর্কে বলা হয়েছে, যেগুলো আনন্দময় সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে বড় ভূমিকা রাখে।

এ মুহূর্তে শারীরিক সংসর্গ নয়
আপনি চাইছেন না, অথচ আপনার সঙ্গী আপনাকে খুব কাছে পেতে চাইছেন। তাঁর ইচ্ছার কাছে আত্মসমর্পণ করবেন না। আপনি শারীরিক সংসর্গে লিপ্ত হতে না চাইলে সঙ্গীকে সরাসরি না বলে দিন। আপনার অনিচ্ছার কথাটি জানাতে রাখঢাক করবেন না।

আপনার প্রত্যাশা
আপনার সম্পর্ক কোন দিকে মোড় নিচ্ছে, আপনি কি মনের মানুষের কাছ থেকে আরও বেশি কিছু চান? তাঁর সঙ্গটাকে কেমন অনুভব করছেন? এসব বিষয় অবশ্যই তাঁকে জানাতে হবে।

অন্য কাউকে ভালোবাসা
আপনি একজনের সঙ্গে চার বছর ধরে সংসার করছেন। এরই মধ্যে অন্য একজনকে আপনার মনে ধরেছে। কিন্তু এটি লুকিয়ে রাখবেন না। প্রথম মানুষটিকে জানিয়ে দিন। অন্যথায় আপনি একই সঙ্গে দুজন মানুষের সঙ্গে অন্যায় করবেন।

বেশি খরচ করে ফেলেছি
এখানে-সেখানে সামান্য অর্থ খরচের বিষয়টি না জানালেও চলে। তবে কখনো কখনো গয়না, সম্পত্তি বা অন্য কোনো খাতে বেশি অর্থ খরচ হয়ে যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে খরচের বিষয়টি প্রিয় মানুষটিকে জানিয়ে দেন।

মানসিকভাবে বিপর্যস্ত
আপনার জীবনসঙ্গীর চাচি বা খালা আপনার পোশাক-আশাক নিয়ে বিদ্রূপাত্মক মন্তব্য করেছেন কিংবা আপনার দেবরের প্রেমিকা বিষয়টি ফাঁস করে দিলেন। এমন বিষয় নিয়ে আপনি প্রিয়জনের সঙ্গে অবশ্যই কথা বলবেন। আপনি তাঁর কাছে জানতে চাইবেন কীভাবে উদ্ভূত পরিস্থিতি থেকে নিজেকে বাঁচানো যায়।

পছন্দ, অপছন্দ এবং আরও কিছু
আপনার পছন্দ-অপছন্দ, পছন্দের খাবার, অতীতের গভীর সম্পর্ক কোনো কিছু বর্তমান সঙ্গীর কাছে আড়াল করবেন না।

আমার জন্য কিছুটা সময়
কিছু সময় আছে, যখন আপনি একাকীই কাটাতে চান। এ বিষয়ে সঙ্গীকে স্পষ্ট করে বলে দিন। এতে করে ওই মুহূর্তে আপনি সংঘাত এড়াতে পারবেন। কিন্তু আপনার একান্ত মুহূর্ত সম্বন্ধে কাছের মানুষটি যদি না জানে, তবে হিতে বিপরীত হতে পারে। সুত্রঃ প্রথম আলো

তরুণী পাত্রী চাই!

বিয়ের মাধ্যমে জীবনসঙ্গী নির্বাচনের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ উভয়ই সাধারণ কিছু বিষয় বিবেচনায় আনে। সামাজিক অবস্থানের ভিন্নতার কারণে বিবেচনার বিষয়গুলোও আলাদা হয়। মেয়েদের কাছ থেকে একটি অভিযোগের সুর প্রায়ই শোনা যায়, একটি ছেলের চেহারা বা বয়স যেমনই হোক না কেন, সঙ্গী নির্বাচনের ক্ষেত্রে অনেকেরই প্রধান মাপকাঠি থাকে চেহারার সৌন্দর্য এবং অপেক্ষাকৃত অল্প বয়স। তবে এ ক্ষেত্রে শুধু ছেলেদেরই দোষ দিলে চলবে না।  অনেক ক্ষেত্রে মেয়েদেরও অর্থনৈতিক স্বাবলম্বন বা শিক্ষাগত যোগ্যতা যা-ই থাকুক না কেন, সঙ্গীর পেশাগত প্রতিষ্ঠা এবং আর্থিক নিরাপত্তার বিষয়টিই তারা প্রাধান্য দেয়।  কিন্তু প্রশ্ন আসে এসব বিবেচ্য বিষয়গুলো দাম্পত্যজীবনের একট দীর্ঘ পথ সুন্দরভাবে চলার জন্য কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ। যে মেয়েটি তার চমৎকার মানসিক গঠন, বুদ্ধিমত্তা ও বিবেচনাবোধের কারণে দারুণ একজন পথ চলার সঙ্গী হতে পারত, শুধু বাহ্যিক বৈশিষ্ট্যের কারণেই কি সে উপেক্ষিত হবে? অথবা যে ছেলেটির দৃঢ় আত্মপ্রত্যয়, অনুভূতিশীল মন এবং দায়িত্ববোধ একজন নারীকে একটি সুন্দর দাম্পত্যজীবন দিতে পারে। কিন্তু আর্থিক সচ্ছলতার বিবেচনায় সে কি এ ক্ষেত্রে কম বিবেচিত হবে?

একটি সফল দাম্পত্য সম্পর্ক মূলত পারস্পরিক আকর্ষণ, ভালোবাসা ও বন্ধুত্বের দৃঢ় ভিত্তিতে গড়ে ওঠে। তবে সম্পর্কের প্রথম দিকে পরস্পরের প্রতি আগ্রহ তৈরিতে এবং কাছে আসতে এই আকর্ষণের গুরুত্ব একেবারে উপেক্ষা করা যায়না। অপরিচিত দুজন নর-নারীর মধ্যে তাদের বাহ্যিক ও আনুষঙ্গিক বৈশিষ্ট্য (যেমন—সৌন্দর্য, বয়স, বাচনভঙ্গি, এমনকি আর্থিক অবস্থান, ক্ষমতা ইত্যাদি) আকর্ষণ তৈরির ক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে প্রয়োজনীয় হতে পারে। কিন্তু দাম্পত্য সম্পর্কের প্রতিদিনের জীবনে এবং দীর্ঘ পথ চলায় এই আকর্ষণ ক্রমেই ফিরে হয়ে আসে। শেষ পর্যন্ত ভালোবাসার মায়া এবং নিবিড় বন্ধুত্ব একটি আনন্দময় সম্পর্কের অন্যতম নির্ধারক হয়ে ওঠে। ফলে প্রথম দিকে যেসব গুরুত্বপূর্ণ ছিল, সেগুলো ম্লান হয়ে পরস্পরের মানসিক গঠনে মিল, দুজনের চিন্তা ও অনুভূতি বুঝতে পারা, মানসিক চাহিদা পূরণ করা ইত্যাদিই মুখ্য হয়ে ওঠে এবং তাদের ভালোবাসা ও বন্ধুত্বের ভিত মজবুত হয়।

অনেক ক্ষেত্রে একটি প্রশ্ন আসে, বয়সের কতটুকু ব্যবধান একটি সফল সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রয়োজন? মনোবিজ্ঞানে এর কোনো সুনির্দিষ্ট সীমারেখা নেই। মানসিক গঠনে মিল ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ থাকলে শুধু বয়স বা অন্য কিছুর ব্যবধান বাধা হয়ে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা কম।তবে সম্পূর্ণ অপরিচিত নারী-পুরুষ যখন একটি বিয়ের মাধ্যমে যুক্ত হয়, তখন অনেক ক্ষেত্রে বয়সের অতিরিক্ত ব্যবধান বড় হয়ে দেখা দিতে পারে।এটাও দেখা যায়, অনেক সময় ছেলেদের বয়স যথেষ্ট বেশি হলে পাত্রী হিসেবে কম বয়সের মেয়েদেরই প্রাধান্য দেওয়া হয়। যদিও ইদানীং অনেক ছেলের মধ্যেই এ ধরনের মনোভাবের পরিবর্তন দেখা যায়।দাম্পত্যজীবন নারী-পুরুষের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এ নতুন জীবনে তার সঙ্গীটি কেমন হবে এবং কীভাবে মানিয়ে নেবে তার ওপর অনেকাংশেই নির্ভর করছে তাদের ভালো থাকা, মন্দ থাকা। সুতরাং, প্রথাগত ভাবনা থেকে কিছুটা বেরিয়ে এসে সজীব মানসিক গঠন, জীবন সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গির মিল, ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্যের প্রতি আরও জোর দেওয়া প্রয়োজন। এ জন্য জীবনসঙ্গী নির্বাচনের সময় শুধু বাহ্যিক ও আনুষঙ্গিক বৈশিষ্ট্যের প্রতি মনোযোগী না হয়ে তার ভাবনাচিন্তা, রুচি ইত্যাদি জানার চেষ্টা জরুরি।

  • কম বয়স প্রাধান্য দেওয়ার নানা মনস্তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা থাকতে পারে।  যেমন: জৈবিক আকর্ষণ বিবেচনায় রেখে। সেখানে মানসিক আকর্ষণের বিষয়টি সম্পূর্ণ উপেক্ষিত হয়।
  • সন্তান ধারণের বিষয় মাথায় রেখে।
  • অল্প বয়সের মেয়েদের সঙ্গে পরিবার ও নিজের ব্যক্তিত্বের সংঘাত কম হওয়ার প্রত্যাশায়।
  • সম্পর্কের মধ্যে নিজের আধিপত্য ও নিয়ন্ত্রণ রাখার ইচ্ছা।
  • পারিবারিক চাপ।
  • সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রভাব।


এসব বিবেচনা এলেও তা কতটুকু গ্রহণযোগ্য ও সফল দাম্পত্য সম্পর্কের সহায়ক সেটি প্রশ্নবিদ্ধ। অনেক সময়ই বয়সের ব্যবধান বেশি হলে হিতে বিপরীত হয়ে যায়।  যেমন –

  • পুরুষেরা তাদের বেশি বয়স নিয়ে হীনম্মন্যতায় ভুগতে পারে।
  • বয়সের সঙ্গে আমাদের মানসিক গঠন ও মানসিক চাহিদা-সম্পর্কিত বলে অনেক ক্ষেত্রে ভিন্নতা থাকার সম্ভাবনা বেশি থাকে। যার ফলে মানসিক দূরত্ব তৈরি হতে পারে। পরস্পরের প্রতি আকর্ষণের ক্ষেত্রে প্রভাব পড়তে পারে।
  •  বেশি বয়স অনেকের মধ্যে সম্পর্কজনিত নিরাপত্তাহীনতা বোধ তৈরি করতে পারে। যা থেকে স্ত্রীর প্রতি অহেতুক সন্দেহ, অধিক নিয়ন্ত্রণ করার প্রবণতা এবং দাম্পত্য অশান্তি দানা বাঁধতে পারে।
  • ক্ষেত্রবিশেষে কম বয়সের মেয়েদের মানসিক গঠন অপরিপক্ব থাকে। ফলে দাম্পত্যজীবনের নতুনত্ব ও শ্বশুরবাড়ির ভিন্ন পরিবেশের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিয়ে সমস্যা হতে পারে।

লেখক: মেখলা সরকার
সহকারী অধ্যাপক, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, মানসিক রোগবিশেষজ্ঞ
সুত্রঃ নকশা

পারিবারিকভাবে আয়োজিত বিয়ে এবং এরপর…

সিঁড়ি দিয়ে উঠতে উঠতে মনে হচ্ছে বাসায় আমার জন্য যে পরীক্ষা অপেক্ষা করছে সেই পরীক্ষার কোন প্রশ্নের উত্তরই আমি জানি না। কারণ এইমাত্র পারিবারিকভাবে ঠিক করা এক পাত্রের সাথে আলাপ করে এলাম আর অবজেকটিভ পরীক্ষার মত এখনই ওই পাত্রের প্রাপ্ত নম্বর আমাকে আমার পরিবারের কাছে বলতে হবে। যার উত্তর আমার জানা নেই। আপন মনে এসব ভাবতে ভাবতেই শীলা পৌঁছে গেল দরজার কাছে, কিন্তু বেল আর বাজাতে পারছিল না আসন্ন পরীক্ষার ভয়ে। এ ধরনের অস্বস্তিকর অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হয় বহু মেয়েকেই তার জীবনে এবং সে সময় তার পাশে দাঁড়াবার কেউ থাকে না। জীবনের সবচেয়ে বড় সিদ্ধান্তের সামনে এসে অসহায়ের মত একাকী দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।

এখনও প্রেমের বিয়ের পাশাপাশি পারিবারিকভাবেও প্রচুর নারীর বিয়ে ঠিক করা হয়। কিন্তু এ ধরনের ক্ষেত্রে একজন পাত্র ও পাত্রীর মধ্যকার দূরত্ব রয়ে যায়, একে অপরকে না বুঝে জীবনসঙ্গী হিসেবে মেনে নেন যা ভবিষ্যত্ জীবনের ক্ষেত্রে কখনও কখনও বেশ বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়। পারিবারিকভাবে বিয়ে ঠিক করার জন্য শহরে শহরে বহু ঘটক রয়েছে বা পত্রিকা খুললেই পাত্র চাই বা পাত্রী চাই এমন অনেক বিজ্ঞাপন আমাদের চোখে পড়ে। অনেক সময় দেখা যায়, বিয়ে সংঘটনের জন্য ঘটকরা দুই পক্ষেরই বহু তথ্য একে অপরের কাছ থেকে লুকিয়ে রাখে যা পরে প্রকাশিত হলে পারিবারিক দ্বন্দ্বের বড় কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যেমন বিয়ের আগে পাত্র বা পাত্রীর কারও সাথে কোন ধরনের প্রেমের সম্পর্ক, নানা ধরনের সমস্যা বা অসুস্থতা এসব। ঘটকালিকে ব্যবসা পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ায় এ ধরনের সমস্যা বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আগে আত্মীয়স্বজন বা বন্ধু-বান্ধবই ঘটকালির কাজটি করতেন। কিন্তু এখন কখনও কখনও সম্পূর্ণ অজানা দুই ভিন্ন পরিবারের মধ্যেও বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপিত হয় বাণিজ্যিকভাবে ঘটকালির মধ্য দিয়ে; যেমনটি শুনছিলাম মোনার কাছে।

একজন ঘটকের সাথে মোনার (ছদ্মনাম) বিয়ের জন্য যোগাযোগ করা হয়েছিল। তাদের মাধ্যমেই আতিকের সাথে ওর পরিচয়। ওদের প্রথম দেখা হয় টি.এস.সিতে। আতিকের বাবা, মা বা পরিবারের কাউকেই চিনত না মোনার পরিবার। যখন দেখা করতে যায় মোনার মনে হচ্ছিল সারা জীবন অবিবাহিত থাকাও এর চেয়ে ভাল। মোনা বলে, প্রথম দিনে ভাইবা পরীক্ষা দিলাম। আমার পছন্দ- অপছন্দ, রান্না-বান্না পারা না পারা, আগের জীবন, ভবিষ্যত্ পরিকল্পনা ইত্যাদি নানাকিছু। আমি একটু চাপা স্বভাব আর পরিবেশ খুব অস্বস্তিজনক হওয়ায় তার কাছ থেকে কিছুই উদ্ধার করতে পারলাম না। তাই প্রথম দিন শেষে দেখা হওয়া সত্ত্বেও আতিকের ব্যাপারে আমার জ্ঞান ঘটকের দেয়া বায়োডাটা পর্যন্তই রয়ে গেল, যদিও ওর আমার সম্পর্কে জ্ঞান অনেক বাড়ল। বাসায় এসে চাপ যে, মাস্টার্সের রেজাল্ট দিয়ে দিয়েছে এখনই বিয়ে করতে হবে, তাই দেরি না করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বাসার সবাই এ বিয়েতে একমত যেন এক বোঝা থেকে মুক্তি। বাবার তাই এক কথা, এত বোঝাবুঝির কিছু নেই বিয়ে কর। মনে হল জুয়া খেলছি জীবন নিয়ে। পরিবেশের চাপে পড়ে রাজি হলাম। পরে জানলাম সিগারেট, নেশা, আগে ক্লাসমেটের সাথে প্রেমের সম্পর্ক এসব নানা তথ্য। যার কিছুই বিয়ের আগে আমার জানা ছিল না। ঘটক বলেছিল এসব কোন সমস্যাই নেই, যার সবই মিথ্যা। মানুষকে সরল মনে বিশ্বাস করে ভুল করেছিলাম। তাই সেই ভুলকে সাজা হিসেবে মেনে নিয়েই জীবন চালিয়ে যাচ্ছি।

তাই পারিবারিকভাবে আয়োজিত বিয়ের ক্ষেত্রে এক পরিবারের অন্য পরিবার সম্পর্কে কিছু হলেও জানা থাকলে ভাল। নইলে নিজেদের খোঁজ নেয়ার চেষ্টা করতে হবে, শুধু বাণিজ্যিক কোন সংগঠনকে বিশ্বাস করা উচিত না। যেহেতু একজন মেয়েকে তার সারাজীবন কাটাতে হবে তাই তাকে বিয়ের জন্য মানসিক প্রস্তুতি নেবার এবং নিজের জীবনের সিদ্ধান্ত নিজে নেবার স্বাধীনতা দিতে হবে। এক্ষেত্রে পারিবারিকভাবে কোনরূপ প্রভাবিত করার চেষ্টা করা উচিত নয়। কেননা প্রত্যেকের জীবন প্রত্যেকের। অনেক সময় নিজের পছন্দসই ছেলে বা মেয়েকে পাবার জন্য নিজেকে অপরের কাছে পরিবর্তিত করে পরিবেশন করে থাকে বা পছন্দ-অপছন্দের ব্যাপারে একে অপরকে ভুল তথ্য দিয়ে থাকে। যা পরস্পরের সম্পর্কে ভুল ধারণা তৈরি করে। নিজে যেরকম সে রূপকে অপরের সামনে তুলে ধরতে হবে, কেননা এক সময় না এক সময় সত্য প্রকাশ পাবেই। যা সম্পর্ক ভাঙ্গা গড়ার কারণ হয়ে দাঁড়াবে।

পারিবারিকভাবে আয়োজিত বিয়ের ক্ষেত্রে নতুন বাসা, নতুন পরিবারের সাথে খাপ খাওয়ানোর পাশাপাশি সম্পূর্ণ অচেনা নতুন একজনকে জীবনসঙ্গী হিসেবে মেনে নিতে হয়। বছরের পর বছর বাবা- মায়ের সাথে থেকে যে স্বভাব গড়ে উঠেছে শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে রাতারাতি তা বদলানো সম্ভব নয়। আবার দুটি পরিবার কখনই এক হতে পারে না। তাই বাবার বাড়ির মত শ্বশুরবাড়িও একইরকম হবে, সব মিলে যাবে এমন কল্পনাও করা অর্থহীন। বাস্তব অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে তাই বুঝে চিন্তা করে নতুন পরিবেশে নিজেকে মানিয়ে নেয়ার মন-মানসিকতা তৈরি করে নিতে হবে। জীবনসঙ্গী নির্ধারণে শুধু সে নয় তার পরিবারকেও বুঝতে হবে। কেননা বিয়ের পর শুধু তাকে নয় তার পরিবারকেও আপন করে নিতে হবে। মেয়েটির অবস্থা বিবেচনা করে শ্বশুরবাড়ির পক্ষ থেকেও এক্ষেত্রে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে।

লিখেছেনঃ সামিহা সুলতানা অনন্যা
সুত্রঃ ইত্তেফাক 

হু হু করে বয়স বেড়ে যাচ্ছে মনের মত জীবন সঙ্গী পেয়েছেন কি?

আপনি কি আপনার পরিবারের কোন সদস্যের জন্য ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, ব্যাংকার অথবা পছন্দের কোন প্রফেশনের  পাত্র/পাত্রী খুঁজছেন? তাহলে  নিশ্চিন্তে লগ ইন করুন বাংলাদেশের লিডিং ম্যাট্রিমিনিয়াল পোর্টাল  বিবাহবিডি ডট কম এ,  ২০০৯ সাল থেকে বিবাহবিডির সেবা নিয়েছে ১০,০০০ এর বেশী উচ্চ শিক্ষিত পরিবার।

বিবাহবিডি (বিবাহবিডি ডট কম) আপনার শতভাগ সেবা নিশ্চিত করতে  ২৪ ঘন্টা ৭ দিনই  প্রস্তুত আছে। এ সেবাটি সম্পূর্ন অনলাইন বেইজ  এবং  ১০০ ভাগ সেলফ সার্ভিস। ঘরে বসেই অনলাইনে রেজিষ্ট্রেশন করে নিজের মত করে প্রফেশন, এডুকেশন ব্যাকগ্রাউন্ড অনুযায়ী প্রতিষ্ঠিত পাত্র/পাত্রীর প্রোফাইল গুলো দেখে সহজেই বাচাই করে সরাসরি পাত্র/পাত্রী বা তার অভিভাবকের সাথে  নিজেই যোগাযোগ করতে পারবেন এবং তা অতি দ্রুত সময়ের মধ্যেই।

তাছাড়াও বিবাহবিডিতে আপনার অথবা  আপনার পরিবারের সদস্যের প্রোফাইলটি দেখে আপনাদের চাহিদা অনুযায়ী পাত্র/পাত্রী বা তাদের অভিভাবকেরাও সরাসরি আপনার সাথে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারবে।

আপনি কেন  বিবাহবিডিতে পাত্র/পাত্রী খুঁজবেন ?

  • বিবাহবিডি সম্পূর্ন একটি সেলফ সার্ভিস। যেখানে পাত্র/পাত্রী কিংবা অভিভাবকেরা অনলাইনে ফ্রী রেজিষ্ট্রেশন করে ৩ দিনের ট্রায়াল মেম্বারশীপ নিয়ে, নিজেরাই পাত্রপাত্রীর প্রোফাইল দেখে বাছাই করেন এবং পরবর্তীতে পছন্দের পাত্র/পাত্রী কিংবা তাদের অভিভাবকের সাথে নিজেরাই সরাসরি যোগাযোগ করে থাকেন।
  • প্রফেশন অনুযায়ী, অবিবাহিত,  ডিভোর্স, বিধবা/বিপত্নীক  পাত্র/পাত্রী খুঁজতে
  • প্রবাসী প্রতিষ্ঠিত পাত্র/পাত্রী খুঁজতে
  • বাংলাদেশের যে কোন জেলার প্রতিষ্ঠিত পাত্র/পাত্রী খুঁজতে

বিবাহবিডিতে আসা প্রোফাইল গুলো যাচাই হয় কিভাবে?

  • বিবাহবিডি ডট কম এ আছে (২৪/৭ দিন) এক্সপার্ট কাষ্টমার সাপোর্ট টিম। একটি প্রোফাইল আসার সাথে সাথেই আমাদের কাষ্টমার সাপোর্ট প্রোফাইলটিকে  বেশ কিছু পন্থায় যাচাই করে থাকে এবং পাত্র-পাত্রী ও অভিভাবকের সাথে সরাসরি ফোনে কথা বলে তার প্রদত্ত প্রত্যেকটি তথ্য সম্পূর্ন নিশ্চিত হয়ে তারপরই একটি প্রোফাইল এক্টিভ করে।

বিবাহবিডিতে প্রোফাইল প্রোফাইল করতে কি কি যোগ্যতা প্রয়োজন?

  • বিবাহবিডি ডট কম ছেলেদের  ক্ষেত্রে  শিক্ষাগত যোগ্যতা নূন্যতম ব্যাচেলর ডিগ্রী সহ চাকুরীজীবি কিংবা ব্যবসায় প্রতিষ্ঠিত।
  • ডিভোর্স/ বিধবা কিংবা অবিবাহিত মেয়েদের ক্ষেত্রে নূন্যতম শিক্ষাগত যোগ্যতা ইন্টারমিডিয়েট।

৩ দিন ফ্রী মেম্বারশীপের মেয়াদ কালীন সময়ে আপনি বিবাহবিডির সবগুলো প্রোফাইল দেখে পছন্দের প্রোফাইল গুলোকে (শর্টলিষ্ট/ ফেভারিট) করে নিতে পারবেন ।

কিভাবে পছন্দের কারো সাথে যোগাযোগ করবেন ?
বিবাহবিডি ডট কমের  রয়েছে  ৪ টি প্যাকেজ । অনিক্স, রুবী, পার্ল, ডায়ামন্ড। এই চারটি প্যাকেজের যে কোন একটি কিনে আপনি পছন্দের যে কারো সাথে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারবেন ।  

কোন প্যাকেজের কি কি সুবিধা ?
প্যাকেজ অনুযায়ী আপনি সয়ংক্রিয় ভাবে যোগাযোগের তথ্য পাবেনঃ

অনিক্স মেম্বারশীপ – মেয়াদ ৪৫ দিন – পছন্দের ৩ জনের সাথে যোগাযোগের তথ্য
রুবী মেম্বারশীপ – মেয়াদ ৯০ দিন  – পছন্দের ১০ জনের সাথে যোগাযোগের তথ্য
পার্ল মেম্বারশীপ – মেয়াদ ১৮০ দিন – পছন্দের ২৫ জনের সাথে যোগাযোগের তথ্য
ডায়ামন্ড মেম্বারশীপ – মেয়াদ ১৮০ দিন – পছন্দের ৪০ জনের সাথে যোগাযোগের তথ্য

যোগাযোগের তথ্যঃ  
পাত্র/পাত্রী ও অভিভাবকের ফোন নাম্বার, ইমেইল আইডি,  বর্তমান ঠিকানা ও স্থায়ী ঠিকানা।

 ** আপনি প্রাইভেসী ফিচার অন করে আপনার যোগাযোগের তথ্য লুকিয়ে রাখতে পারবেন। আপনি না চাইলে কোন ইউজার আপনার সাথে যোগাযোগ করতে পারবে না। 

বিবাহবিডির মুড অফ পেমেন্ট কি? কিভাবে সার্ভিস কেনা যায় ।

  • আপনার যদি ইন্টারনেশনাল পেমেন্ট গেটওয়ে পেপল এর কার্ড কিংবা একাউন্ট থেকে থাকে অথবা
  • বিশ্বের যেকোন দেশ থেকে আপনার  ভিসা, মাষ্টার কার্ড দিয়ে আপনি  অনলাইনেই সার্ভিস কিনতে সক্ষম ।
  • বাংলাদেশের ডাচবাংলা ব্যাংক ও ব্র্যাক ব্যাংকের ডেবিট কার্ড ও ক্রেডিট কার্ড দিয়ে অনলাইনেই সার্ভিস কেনা যায়।
  • আমাদের ৩ টি অনলাইন ব্যাংক একাউন্ট আছে সে গুলোতে সরাসরি ডিপোজিট করে আপনি সার্ভিস কিনতে  পারবেন –  ব্যাংক গুলো – ১)  ডাচ বাংলা ব্যাংক  ২) ব্র্যাক ব্যাংক  ৩) ব্যাংক এশিয়া

বিবাহবিডির বিগত দিনের কার্যক্রমঃ
BIBAHABD CEO @ ATN NEWS Young Nite :

TEAM LEADER @ SATV Web Intro

BIBAHABD UK Coordinator
@ বাংলাদেশ – ইউকে  যৌথ ই-কমার্স ফেয়ার – ২০১৩, গ্লুচেষ্টার মিলিনিয়াম হোটেল, লন্ডন
আয়োজকঃ গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, আইসিইটি মন্ত্রনালয় ও কম্পিউটার জগত


ডিসি, ঢাকা ও তথ্য মন্ত্রনালয় আয়োজিত ডিজিটাল ইনোভেশন ফেয়ার – ২০১৩,
পাব্লিক লাইব্রেরী চত্তর, শাহবাগ – ঢাকা
 

ডিজিটাল ইনোভেশন ফেয়ার – ২০১৩, বাঁ থেকে –
CEO BIBAHABD, DC – DHAKA,  Information Secretary – N.I Khan

7-9 Feb, 2013 পাব্লিক লাইব্রেরী প্রঙ্গনে : ই-বাণিজ্য মেলায় BIBAHABD.COM এর ষ্টল ।

বেসিস সফট এক্সপো ২০১২, বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক  সম্মেলন কেন্দ্র, ঢাকা

 

বেসিস সফট এক্সপো ২০০৯, বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র, ঢাকা

বিভিন্ন সময় আমাদের নিউজ কভারেজ এর স্ক্রীন শর্ট দেখতে ক্লিক করুনঃ এইখানে 

বিবাহবিডি ডট কমে রেজিষ্ট্রেশন করে ফ্রী ৩ দিন ট্রায়াল মেম্বারশীপের জন্য
নীচের ছবিতে ক্লিক করুনঃ

ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, ব্যাংকার কিংবা প্রবাসী পাত্রপাত্রী খুঁজতে

বিবাহযোগ্য ছেলে মেয়ে ; চিন্তিত অভিভাবক।  পাত্র পাত্রীর খোঁজে চলে ফিসফিস গোচরে অগোচরে।  আত্মীয় পরিজন কিংবা পরিচিতদের মধ্যে চলে পাত্র পাত্রীর খুঁজার পালা। পাত্র পাত্রীর খুঁজ পেলেই চলে – ঢাক ঢোল পিটিয়ে পাত্র পাত্রীর দেখার আয়োজন, কোন কারনে যদি সমন্ধ ভেচতে যায় তখন যেন প্রতিবেশীরও আগ্রহ বেড়ে যায় অনেকগুন আর অস্থির অভিভাবকের প্রত্যহ জীবনে যোগ হয় আরো একটি দীর্ঘশ্বাস।

 

বর্তমান তথ্য প্রযুক্তির যুগে ট্রেডিশনাল এই পাত্র পাত্রীর দেখার সিষ্টেম মোটেও সুখের নয় আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত ছেলে মেয়েদের জন্য। আর তাই শিক্ষিত অনেক পরিবারের ছেলে মেয়েরাই এখন লগিন করছে বিবাহবিডি ডট কমে

কেন বিবাহবিডিতে পাত্র/পাত্রী খুঁজবেনঃ
আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী ও পছন্দের প্রফেশনের অসংখ্য পাত্র/পাত্রী থেকে নিজের পছন্দের পাত্র/পাত্রী খুঁজার অধিকার অবশ্যই আপনার আছে। তো কেন মুখ বুঁজে বসে থাকবেন? জীবন একটায় আর একটি সুখী জীবনের জন্য চাই একজন সুন্দর মানুষ। তাই নিজেই বিবাহবিডিতে প্রোফাইল করুন, নিজেই খুঁজুন এবং নিজেরাই পাত্র/ পাত্রী কিংবা তার অভিভাবকের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করুন। এতে লোক জানাজানি ঝামেলা যেমন নেই তেমনি খরচ ও কম।

বিস্তারিত জানতেঃ ০১৯২২ ১১ ৫৫৫৫  এ কল করুন ২৪/৭

নিচের এই স্ক্রীন শর্ট থেকে দেখে নিন বিবাহবিডিতে কোন প্রফেশনের কত জন পাত্র/পাত্রী আছে যারা কিনা হয়তো আপনার মতই একজনের অপেক্ষায় দিন গুনছে। সরাসরি লিংকে যেতে ক্লিক করুন।
যে সকল শিক্ষিত ছেলে মেয়ারা ভূল সঙ্গী নির্বাচন করে ইতি মধ্যে সেপারেটেড কিংবা ডিভোর্স নিয়েছেন, ঠিক তাদের মতই অনেক ছেলে মেয়ে ও আবার নতুন করে সুখী হতে বিবাহবিডিতে প্রোফাইল করেছেন আপনি চাইলেই তাদের প্রোফাইল দেখেও সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন।

স্কীন শর্ট দেখুন ডিভোর্স/ সেপারেটেড কতজন ছেলে আপনার মতই একজনের অপেক্ষায় আছে
কিভাবে বিবাহবিডিতে রেজিষ্ট্রেশন করবেন –
আপনি যদি বিয়ের ব্যাপারে সিরিয়াস হয়ে থাকেন তবে নীচের লিংকে ক্লিক করে ফ্রী রেজিষ্ট্রেশন করুন

বিস্তারিত জানতেঃ ০১৯২২ ১১ ৫৫৫৫  এ কল করুন ২৪/৭

কোন কারনে রেজিষ্ট্রেশন করতে সমস্যায় পড়লে বিবাহবিডির কাষ্টমার সাপোর্ট আপনাকে ২৪/৭ দিনই হেল্প করার জন্য প্রস্তুত আছে আপনি ফোনে (০১৯২২ ১১ ৫৫৫৫) তাদের সাহায্য নিতে পারেন।

আপনার রেজিষ্ট্রেশন টি শেষ হয়ে গেলে বিবাহবিডির একজন কাষ্টমার সাপোর্ট এক্সিকিউটিভ আপনাকে ফোন করে আপনার রেজিষ্ট্রেশনের প্রদত্ত তথ্য গুলো ফোনে রিভিও করে আপনাকে ৩ দিনের জন্য বিবাহবিডিতে ফ্রী এক্সেস দিবে ও বিবাহবিডির সার্ভিস সম্পর্কে পূর্নাঙ্গ ধারনা দিবে। ৩ দিনের ফ্রী ট্রায়াল মেম্বারশীপে আপনি আপনার ইচ্ছা অনুযায়ী সব প্রোফাইল দেখে পছন্দের প্রোফাইল গুলোকে বাছাই করতে পারবেন। এবং পরবর্তীতে মেম্বারশীপ নিয়ে পাত্র কিংবা তার অভিভাবকের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারবেন।

বিস্তারিত জানতে ফোন করুন বিবাহবিডি ২৪/৭ কাষ্টমার সাপোর্ট : ০১৯২২ ১১ ৫৫৫৫

বিয়ের পর মধুচন্দ্রিমায়

বিয়ে যেন মহাযজ্ঞ। কাজের কোনো শেষ নেই। বিয়ের দিন ধার্য হওয়ার পর থেকে শুরু হয় ধকল। তা যেন গিয়ে শেষ হয় বিয়ের দিনে। বিয়ের পর সবার নিস্তার মিললেও নবদম্পতির নিস্তার নেই। প্রেমের বিয়েই হোক কিংবা সম্বন্ধের বিয়েই হোক, বিয়ে নিয়ে বাড়তি একটা মানসিক চাপ থাকে বর-কনে দুজনেরই। আর কনেকে যেহেতু নতুন একটি পরিবারে যেতে হয়, ফলে তাঁর চাপের পরিমাণ বরের থেকে বেশি থাকে। এই চাপমুক্ত হতে আর দুজনের একান্তে কিছু সময় কাটানোর জন্য মধুচন্দ্রিমায় যাওয়া যেতে পারে।

তিন বছর চুটিয়ে প্রেম করেছেন অভি-সাবরিনা। এরপর বিয়ের পিঁড়িতে বসেছেন। এই দম্পতি বিয়ের পরই ছুটে গেছেন কক্সবাজারে। তাঁরা বলেন, বিয়ের আগের কয়েকটি দিন ছিল অন্য রকম। একদিকে বিয়ের আনন্দ, অন্যদিকে এত বড় আয়োজনের বিশাল চাপ। সব মিলিয়ে অস্থিরতার মধ্যেই ছিলাম। সংসার-জীবনে প্রবেশ করার আগে সব অস্থিরতা ও চাপ দূর করতেই কক্সবাজারে যাওয়া। এখন মনে হয়, ভালো একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।

বিয়ের পর নতুন পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার আগে স্বামী-স্ত্রীর বোঝাপড়া হওয়া সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আর এই বোঝাপড়ার প্রাথমিক দিকটি উন্মোচন করে মধুচন্দ্রিমা। প্রেমের বিয়েতে আগে থেকেই চেনাজানার সুযোগ থাকে। কিন্তু পারিবারিকভাবে সম্মত বিয়ের ক্ষেত্রে এই সুযোগ মেলে না। মিললেও সেটি যথেষ্ট নয়। আর আমাদের দেশে নতুন পরিবেশে নবদম্পতি নিজেদের মতো করে সময় কাটানোর সুযোগ কম পান।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক দিলরুবা আফরোজ এ বিষয়ে বলেন, ‘আমাদের দেশের পারিবারিক কাঠামোতে বিয়ের পর একজন নারীকে নতুন পরিবারের সঙ্গে যুক্ত হতে হয়। ফলে নতুন পরিবেশে খাপ খাওয়ানোর আগে মেয়েটি একান্তে কয়েকটা দিন স্বামীর সঙ্গে কাটালে তাঁর মানসিক প্রশান্তি আসবে। বিয়ের পর স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক বোঝাপড়া, নিজেদের পছন্দ-অপছন্দ জানার জন্য মধুচন্দ্রিমা বেশ কাজের।’

প্রায় ১০ বছর হতে চলল রুবিনা খান-গাজী বিজয় আহমেদের দাম্পত্যজীবন। প্রেমের বিয়ে হলেও দুজনেই পারস্পরিক বোঝাপড়ার জন্য বিয়ের পরপরই ঘুরতে যাওয়াকে গুরুত্ব দেন। বিয়ের পর নিজেকে প্রকাশ করার জন্য মধুচন্দ্রিমার বিকল্প নেই বলে মনে করেন তাঁরা। তাই তো এখন সময় পেলেই এই দম্পতি নিজেদের আরও বুঝতে ঘুরতে যান।ভাবনাচিন্তা বাদ দিয়ে সামর্থ্য থাকলে বিয়ের পর চলে যান মধুচন্দ্রিমায়। পরস্পরের পছন্দ, ভালো লাগা, কে কতটা ঘুমকাতুরে, কার কী ধরনের খাবার পছন্দ—সব মিলিয়ে পারস্পরিক মনের ভাব আদান-প্রদানের জন্য মধুচন্দ্রিমার বিকল্প নেই। তবে বেরিয়ে পড়ার আগে আবহাওয়া আর বাজেট বিবেচনা করে কোন জায়গায় যাবেন, তা আলোচনা করে নিন। আর যাঁরা মধুচন্দ্রিমায় যেতে পারেননি, তাঁদেরও মন খারাপের কিছু নেই। ইচ্ছা থাকলে এখনই সঙ্গীকে নিয়ে বেরিয়ে পড়ুন।

-জাহিদ হোসাইন খান

চার্চ

১৮৭২ সালের খ্রিস্টান ম্যারেজ এ্যাক্ট অনুযায়ী খ্রিস্টানদের বিয়ে সম্পাদিত হয়। খ্রিস্টান বিয়ে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান এবং একটি পবিত্র চুক্তি।
খ্রিস্টান বিয়ে লিখিত মাধ্যমে সম্পাদিত হয় এবং রেজিষ্ট্রি বাধ্যতামূলকভাবে করতে হয়।খ্রিস্টান বিয়ের ক্ষেত্রে যিনি বিয়ে সম্পাদন করবেন তিনিই বিয়ে রেজিস্ট্রেশন করবেন। খ্রিস্টান বিয়ে রেজিস্ট্রেশনের প্রয়োজনীয় ধাপগুলো হলো:

১)  বিয়ের পাত্র-পাত্রীর পুরো নাম ও ডাক নাম এবং পেশা বা অবস্থা
২)  পাত্র-পাত্রীর আবাসস্থল ও বাসস্থানের ঠিকানা
৩)  পাত্র-পাত্রী কতদিন ধরে ঐ এলাকায় বসবাস করছে তার প্রমাণ পত্র
৪) বিয়ে সম্পাদনের চার্চ বা অন্যকোন স্থান
নোটিশ প্রাপ্তির পর চার্চের ধর্মযাজক নোটিশটি খোলা জায়গায় লাগিয়ে দেবেন। যাতে নোটিশটি সকলের নজরে আসে। এভাবে নোটিশ কয়েক সপ্তাহ ঝোলানো থাকবে যাতে কারো কোনো আপত্তি থাকলে তিনি যেন আপত্তি করতে পারেন। যদি কোন আপত্তি না পান তাহলে চার্চ প্রধান বিয়ের পক্ষগণের নিকট থেকে একটি ঘোষণা গ্রহণ করবেন।
এই ঘোষণাটি বিয়ের পক্ষগণ ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজির হয়ে দিবেন যাতে থাকবে-

১) বিয়ের পাত্র-পাত্রীর মধ্যে জানামতে এমন কোন ঘনিষ্ট আত্মীয়তা বা রক্তের সম্পর্ক নেই যাতে তাদের বিয়েতে আইনসম্মত বাধা আছে।
২)বিবাহের পাত্র-পাত্রী দুজনেই আইন অনুযায়ী সাবালক।

এই ঘোষণা সম্পন্ন হওয়ার কমপক্ষে ৪ দিন পর চার্চের ধর্মযাজক বিয়ের আবেদনকারীকে একটি সার্টিফিকেট প্রদান করবেন।সার্টিফিকেট জারির ২ মাসের মধ্যে বিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
ঢাকার কিছু চার্চ এ্রর  তথ্য নিচে তুলে ধরা হলঃ

১) ঢাকা  ইন্টারন্যশনল  খ্রিস্টান চার্চ ( গুলশান-২)
২) মিরপুর ব্যপ্তিস্ট চার্চ। (সেনপারা, ঢাকা-১২১৬)
৩) ঢাকা চার্চ অব খ্রীস্ট সোসাইটি (ইন্দিরা রোড,ফার্ম গেট,তেজগাঁও ঢাকা।)

বিশেষ বিবাহ আইনের অধীন বিয়ে

বিশেষ বিবাহ আইনের অধীন বিয়ে করতে চাইলে পাত্র ও পাত্রীকে একজন আইনজীবীর শরণাপন্ন হতে হবে৷ আইনজীবীর তত্ত্বাবধানে প্রস্তুতকৃত হলফনামায় পাত্র-পাত্রী স্বাক্ষর দানের পর ওই হলফনামা নোটারি পাবলিক কর্তৃক নোটরাইজড করতে হবে ৷ হলফনামায় অবশ্যই ‘বিশেষ বিবাহ আইনের অধীন বিয়ে’ শব্দগুচ্ছ লিখতে হবে ৷ অতঃপর সরকার অনুমোদিত বিশেষ বিবাহ রেজিস্ট্রারের কাছে নির্ধারিত ফরম পূরণপূর্বক ৩ জন সাক্ষীর উপস্থিতিতে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে হয় ৷ উল্লেখ্য, বিশেষ বিবাহ আইনে বিয়ের ক্ষেত্রে যৌতুক প্রথা এবং আমন্ত্রিত অতিথিদের খাওয়া-দাওয়ার বাহুল্যতা নেই ৷

বিশেষ বিবাহ আইন : ১৮৭২ সালের বিশেষ বিবাহ আইনানুসারে যেসব ব্যক্তি খ্রিস্টান, ইহুদি, হিন্দু, মুসলিম, পার্সি, বৌদ্ধ, শিখ বা জৈন ধর্ম গ্রহণ করেননি, তাদের জন্য বিয়ের একটি ধরন নির্ধারণ করা এবং যেসব বিয়ের বৈধতা সম্পর্কে সন্দেহের অবকাশ রয়েছে, সেসব সুনির্দিষ্ট বিয়ের বৈধতা প্রদান করা সমীচীন ৷ বিশেষ বিবাহ আইনে বিয়ে অনুষ্ঠানের শর্তাবলী বিশেষ বিবাহ আইনের ২ ধারা মোতাবেক বিয়ে অনুষ্ঠানের শর্তাবলী নিম্নরূপ-

(ক) বিয়ের সময় বিয়ের পক্ষগণের মধ্যে কারোই কোনও জীবিত স্বামী বা স্ত্রী থাকতে পারবে না
(খ) গ্রেগরিয়ান পঞ্জিকা অনুসারে পুরুষ ব্যক্তির বয়স ১৮ বছর এবং মহিলার বয়স ১৪ বছর পূর্ণ হতে হবে,
(গ) পক্ষগণ রক্ত সম্পর্কে বা বৈবাহিক সম্পর্কে সম্পর্কযুক্ত হতে পারবেন না, যাতে তাদের একজনের ওপর প্রযোজ্য আইন দ্বারা ওই বিবাহ অবৈধ হতে পারে৷

বিয়ে যেভাবে সম্পন্ন করতে হবে বিশেষ বিবাহ আইনের ১১ ধারা মোতাবেক বিয়ে সম্পন্ন করতে হবে রেজিস্ট্রার এবং ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষরদানকারী তিনজন সাক্ষীর সম্মুখে৷ উল্লেখ্য, পক্ষগণকে রেজিস্ট্রার ও সাক্ষীগণের উপস্থিতিততে বলতে হবে ‘আমরা পরস্পর পরস্পরকে আইনসঙ্গত স্ত্রী অথবা স্বামী হিসেবে গ্রহণ করলাম ৷’   ১১ ধারার বিধানাবলী বাধ্যতামূলক করা হয়েছে [১৮ ডিএলআর (১৯৬৬) পাতা ৫০৯] ৷সহ-উত্তরাধিকারিত্বের ওপর কতিপয় বিয়ের ফলাফল হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ বা জৈন ধর্মাবলম্বী কোনও যৌথ পরিবারের কোনও সদস্যের এ আইন মোতাবেক বিয়ে হলে অনুরূপ পরিবার থেকে তার বন্ধন ছিন্ন হয়েছে বলে গণ্য হবে (২২ ধারানুসারে) ৷ বাংলাদেশে বিশেষ বিবাহ আইন বাংলাদেশের কোনও মুসলিম, খ্রিস্টান, ইহুদি, পার্সি, বৌদ্ধ, শিখ বা জৈন নন বা তাদের একজন যে কোনও এটি বা অন্য ধর্মে বিশ্বাসী তাদের মধ্যে বিয়ের ব্যবস্থা করতে হলে বিশেষ বিবাহ আইনের অধীন উপযুক্ত নিয়মাবলী অনুসরণ করা বাধ্যতামূলক ৷

এক্ষেত্রে একজন আইনজীবী কর্তৃক হলফনামা সম্পাদনের পর ওই হলফনামা নোটারাইজড করে বিশেষ বিবাহ রেজিস্ট্রারের উপস্থিতিতে সমুদয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে হবে৷

ব্রাহ্ম সমাজের সিদ্ধান্ত : ব্রাহ্ম সমাজভুক্ত ব্যক্তিরা হিন্দু কিনা, তারা হিন্দু না হলে তাদের বিবাহরীতি পদ্ধতি কিভাবে হিন্দুমতে সম্পন্ন হবে ৷ যদি তাই হয় তাহলে ব্রাহ্ম সন্তানরা কোন আইনে উত্তরাধিকারের অধিকার পাবেন? এসব প্রশ্নের সমাধানকল্পে এগিয়ে আসেন ব্রাহ্ম সমাজের প্রতিষ্ঠাতা কেশবচন্দ্র সেন ৷ তিনি ঘোষণা দেন, সর্বধর্ম সমন্বয়ক হিসেবে যে কোনও ধর্মের লোক ব্রাহ্ম সমাজের সদস্য হতে পারেন ৷ সেক্ষেত্রে কোনও মুসলিম কিংবা খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বী যদি ব্রাহ্মের দীক্ষা নেন, তাহলে কোন বিধিতে তাদের বিবাহকার্য সম্পন্ন হবে ৷ এসব সমস্যার আইনগত সমাধানের জন্য কেশবচন্দ্র সেন উদ্যোগী হন ৷ ১৮৬৭ সালের ২০ অক্টোবর ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্ম সমাজের এক অধিবেশনে তিনি ব্রাহ্ম বিবাহ বিধিবদ্ধ করার উত্কৃষ্ট উপায় নির্ধারণের জন্য ব্রাহ্মদের কাছে আবেদন জানান, ১৯৬৮ সালে সিভিল ম্যারেজ বিল উত্থাপন করলে সরকার সমর্থিত এ বিলে বলা হয়, ‘যদি কোনো ব্যক্তি হিন্দু অথবা মুসলমান অথবা ভারতবর্ষে প্রচলিত অন্য কোনও ধর্মাশ্রিত হয়ে সেই ধর্ম অবিশ্বাস করেন এবং সেই ব্যক্তি ওই ধর্ম প্রকাশ্যরূপে পরিত্যাগ না করে ওই ধর্মের বিবাহ পদ্ধতি অনুসারে বিবাহ করেন, তাহলে সেই বিবাহ আদালতে বৈধ বলে গণ্য হবে ৷’ কিন্তু এ ব্যাপা তত্কালীন সমাজে প্রবল মতবিরোধ দেখা দেয় ৷ ফলে এ আইন বিধিবদ্ধ না হয়ে পুনর্বিবেচনার জন্য পর্যালোচনা কমিটিতে পাঠানো হয় ৷

পর্যালোচনা কমিটি দীর্ঘ ২ বছর নানা দিক বিবেচনা করে ‘ব্রাহ্ম ম্যারেজ অ্যাক্ট’ প্রণয়রে সুপারিশ করে৷ অবশেষে নানা যুক্তিতর্ক, বাদানুবাদ ও শঙ্কা আশঙ্কার পর ১৮৭২ সালে ব্রাহ্ম বিবাহ বিধি সিভিল ম্যারেজ অ্যাক্ট নামে পাস হয় ৷ ব্রাহ্ম সমাজের বৈশিষ্ট্য হল- সাবালক পাত্র-পাত্রীরা ব্রাহ্ম সমাজ মন্দিরে উপস্থিত হয়ে স্ব স্ব ধর্মে বহাল থেকে ব্রাহ্ম রীতিতে সিভিল ম্যারেজ অ্যাক্টে বিবাহ করতে পারেন ৷ মন্দিরের আচার্য বিবাহে পৌরহিত্য করলেও তা রেজিিস্ট্র করে থাকেন সিভিল ম্যারেজ রেজিস্ট্রার ৷ ওই রেজিস্ট্রার বাংলাদেশ ব্রাহ্ম সমাজ ও আইনগতভাবে নিয়োগকৃত হতে হবে ৷ ব্রাহ্ম বিবাহে সংস্কৃতের পরিবর্তে বাংলায় মন্ত্রোচ্চারণ করতে হয় ৷ বিবাহ শেষে উপস্থিত অতিথিরা প্রার্থনা সভায় অংশ নেন এবং ব্রাহ্ম সংগীত গেয়ে বর-কনের মঙ্গল কামনা করেন ৷ এই প্রকার বিয়েতে যৌতুক প্রথা ও অতিথি আপ্যায়নের বাহুল্য নেই ৷

জানা যায়, ১২৮১ বঙ্গাব্দের বৈশাখে ব্রাহ্ম সমাজভুক্ত মুসলিম যুবক জালালউদ্দিন মিয়া ব্রাহ্ম বিবাহরীতিতে প্যারী বিবিকে বিয়ে করে সর্বত্র হৈচৈ ফেলে দেন ৷ ঢাকার ঐতিহাসিক সদরঘাট ও কোতোয়ালি থানার উত্তরে এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা কলেজিয়েট হাইস্কুল সংলগ্ন পাটুয়াটুলী রোডের ২-৪ লয়াল স্ট্রিটে বালাদেশ ব্রাহ্ম সমাজ কার্যালয়ে দেশের একমাত্র সিভিল ম্যারেজ রেজিস্ট্রার রেভারেন্ড প্রাণেশ সমাদ্দার বিশেষ বিবাহ আইনের অধীন বিয়ের কার্যক্রম সম্পন্ন করেন৷

সিভিল ম্যারেজ রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব পালনকারী প্রায় ৮৪ বছর বয়সী প্রাণেশ সমাদ্দার জানান, পাত্র-পাত্রীর পরস্পরের ধর্মীয় বিশ্বাস পৃথক হলে তারা যদি স্ব স্ব ধর্ম পালন করে বিয়ে করতে চায় তবে বিশেষ বিবাহ আইনের অধীন বিয়ে কার্য সম্পন্ন করতে হবে ৷ এ জন্য ৫০০০ টাকা এবং ৩ জন সাক্ষীর প্রয়োজন৷ বিশেষ বিবাহ রেজিস্ট্রার প্রাণেশ সমাদ্দারের চেম্বার সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামের মেয়ে ফাল্গুনী বড়ুয়া এবং যাত্রাবাড়ীর শহীদ হোসেন রোডের (হালে কর্ণফুলী গার্ডেন সিটি) মোস্তফা ভূইয়ার ছেলে মঞ্জুরুল প্রায় দুই মাস আগে বিশেষ বিবাহ আইনের অধীন বিয়ের সিঁড়িতে বসে ৷ ফাল্গুনী আর মঞ্জুরুলের মতো অনেকেই এভাবে যে যার ধর্ম বিশ্বাস ও ধর্মীয় মূল্যবোধ ঠিক রেখে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হচ্ছে ৷

প্রাণেশ সমাদ্দার জানান, প্রতিবছর ৮/১০টি বিয়ে পড়ান তিনি ৷ দু’জনার ধর্ম দুটি হলেও সারাজীবন একত্রে জীবনসঙ্গী হিসেবে বসবাস করার জন্য বিশেষ বিবাহ আইনের অধীন বিয়ে করার বিকল্প নেই৷

বিশেষ বিবাহ আইনের অধীন বিয়ে করার সুযোগ আছে বলে স্বধর্মের উপযুক্ত পাত্র-পাত্রীকে বিয়ে না করে ভিন্ন ধর্মে বিশ্বাসীদের বিয়ে করার মানসিকতাকে এড়িয়ে চলার উদাত্ত আহ্বান জানাই ৷ বিশেষ বিবাহ আইনটি যুগোপযোগী করে সংশোধন করা দরকার ৷ তাছাড়া ম্যারেজ রেজিস্ট্রার নিয়োগ এবং কার্যকর পদ্ধতিতে বিয়ে সম্পন্ন করার বিষয়গুলো আরও সহজ ও স্বচ্ছ হওয়া দরকার ৷ আমাদের বিশ্বাস সরকার বিষয়গুলো নিয়ে ভাববে৷


বিশেষ বিবাহ আইন
খন্দকার মুজাহিদুল হক | তারিখ: ৩১-০১-২০১০ | প্রথম আলো 


বাংলাদেশে বিশেষ বিবাহ অনুষ্ঠিত হয় ‘বিশেষ বিবাহ আইন, ১৮৭২’ অনুযায়ী। কিন্তু এ বিয়ে কাদের জন্য প্রযোজ্য, বিয়ে অনুষ্ঠানের শর্তাবলি কী, সম্পাদনের পদ্ধতি কী, কার দ্বারা এ বিয়ে সম্পাদন হবে, এ বিয়ের ফলে জন্ম নেওয়া সন্তান কোন ধর্মের পরিচয়ে বড় হবে, এ বিয়ের স্বামী বা স্ত্রী কোন ধর্ম অনুসরণ করবেন, এ বিয়ের ফলে উত্তরাধিকার কে কতটুকু ভোগ করতে পারবেন প্রভৃতি বিষয় অনেকের কাছেই অস্পষ্ট।

যেসব ব্যক্তি মুসলিম, হিন্দু, খ্রিষ্টান, ইহুদি, পার্সি, বৌদ্ধ, শিখ বা জৈন ধর্ম গ্রহণ করেননি, তাঁদের মধ্যে এ বিয়ে হতে পারে। এ ছাড়া যেসব ব্যক্তি হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ বা জৈন ধর্ম গ্রহণ করেছেন, এ আইন দ্বারা তাঁদের জন্য বিয়ের বিকল্প একটি ধরন নির্ধারণ করা হয়েছে। আরও উল্লেখ করা প্রয়োজন, যেসব বিয়ের বৈধতা সম্পর্কে সন্দেহের অবকাশ রয়েছে, সেসব সুনির্দিষ্ট বিয়ের বৈধতা দেওয়া হয়েছে এ আইন দ্বারা।

‘বিশেষ বিবাহের ক্ষেত্রে ধর্ম ত্যাগ করা অত্যাবশ্যক। দুই পক্ষই ধর্ম ত্যাগ না করলে বিয়েটি বাতিল বলে গণ্য হবে। এ আইনের বিধানে যেকোনো ধরনের মিথ্যা বর্ণনা দেওয়া শাস্তিযোগ্য অপরাধ।  আবেদনকারী যদি বাস্তবে ধর্ম ত্যাগ না করে থাকেন, সে ক্ষেত্রে ধার্য হয়েছে—তিনি মিথ্যা বর্ণনা দিয়েছেন।’ [(১৯৬৬) ১৮ ডিএলআর ৫০৯]

বাংলাদেশে মুসলিম কোনো ব্যক্তি ইচ্ছা করলে অন্য ধর্মের কোনো ব্যক্তিকে মুসলিম আইন অনুযায়ীই বিয়ে করতে পারেন।  যদি অন্য পক্ষ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন তবে কোনো সমস্যাই নেই, অর্থাত্ বিয়েটি ‘বৈধ বিয়ে’। আর যদি অন্য পক্ষ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ নাও করেন, তবু মুসলিম পারিবারিক আইন অনুযায়ী বিয়ে করা যাবে। তবে এ ক্ষেত্রে বিয়েটি ‘অনিয়মিত’ হবে।  খ্রিষ্ট ধর্মের ক্ষেত্রেও কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।  অন্য পক্ষ খ্রিষ্ট ধর্ম গ্রহণ করলে কোনো সমস্যাই নেই। তবে অন্য পক্ষ খ্রিষ্ট ধর্ম গ্রহণ না করলে খ্রিষ্টান পারিবারিক আইন অনুযায়ী বিয়েটি ‘অনিয়মিত’ বিয়ে হবে।

বিয়ে সম্পাদনের ইচ্ছা পোষণ করলে দুই পক্ষের কোনো একজনকে অবশ্যই নিবন্ধক বরাবর লিখিত নোটিশ দিতে হবে। যে জেলার নিবন্ধক বরাবর নোটিশ প্রদান করবেন, নোটিশ প্রদানকারীকে অবশ্যই নোটিশ দেওয়ার কমপক্ষে ১৪ দিন আগে থেকে সেখানে বসবাস করতে হবে। নিবন্ধককে অবশ্যই ওই জেলার হতে হবে, যে জেলায় দুই পক্ষের অন্তত কোনো একজন নোটিশ দেওয়ার কমপক্ষে ১৪ আগে থেকে বসবাস করছেন।

বিয়ের প্রত্যয়নপত্র: বিয়ে সম্পাদনের পর নিবন্ধক ‘বিবাহ প্রত্যয়ন বই’য়ে প্রত্যয়নপত্র অন্তর্ভুক্ত করবেন, যা নির্ধারিত একটি ফরম। এবং এটি উভয় পক্ষ ও তিনজন সাক্ষী কর্তৃক স্বাক্ষরিত হবে।

নিবন্ধক সরকার-নির্ধারিত ফরমে ‘বিবাহ প্রত্যয়ন বই’য়ে লিপিবদ্ধ সব অন্তর্ভুক্তির অনুলিপি তাঁর জেলার ‘জন্ম, মৃত্যু ও বিয়ের রেজিস্ট্রার জেনারেল’-এর কাছে পাঠাবেন।

জন্মগ্রহণকারী সন্তানের বিবাহ: এ আইনের অধীনে বিয়ের ফলে জন্মগ্রহণকারী সন্তান যদি এ আইনের অধীনেই বিয়ের ইচ্ছা পোষণ করেন, তবে তাঁর পিতা বিয়ের ক্ষেত্রে যে আইনে রক্ত-সম্পর্কীয় ও বৈবাহিক সম্পর্কীয় বাধার সম্মুখীন ছিলেন, সে আইন এবং এ আইনের ২ ধারা তাঁর ওপর প্রযোজ্য হবে। এ আইনের কোনো কিছুই এ আইনের অধীনে বিয়ের ফলে জন্মগ্রহণকারী সন্তানের অন্য কোনো আইনে সম্পাদিত বিয়ের বৈধতা ক্ষুণ্ন করবে না।

মিথ্যা বর্ণনা-সংবলিত ঘোষণার প্রত্যয়নপত্র স্বাক্ষরের শাস্তি: এ আইন দ্বারা নির্দেশিত কোনো ঘোষণা বা প্রত্যয়নপত্র তৈরি করেন, স্বাক্ষর করেন বা সত্যায়ন করেন, যা মিথ্যা বর্ণনা, এবং তিনি জানেন ও বিশ্বাস করেন মিথ্যা বলে, বা সত্য বলে বিশ্বাস করেন না, এমন কোনো ব্যক্তি দণ্ডবিধির ১৯৯ ধারায় অপরাধী বলে বিবেচিত হবেন। সহ-উত্তরাধিকারিত্বের ওপর ফলাফল: হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ ও জৈন ধর্মে বিশ্বাসী কোনো পরিবারের কোনো সদস্যের এ আইনে বিয়ে হলে তিনি ওই পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন বলে গণ্য হবেন।

উত্তরাধিকারের অধিকার: হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ ও জৈন ধর্মে বিশ্বাসী কোনো ব্যক্তি এ আইনে বিয়ে করলে, ‘জাতিগত অসামর্থ্যতা দূরীকরণ আইন, ১৮৫০’ প্রযোজ্য হয় এমন ব্যক্তির মতো তাঁরও সম্পত্তির উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে একই অধিকার থাকবে এবং তিনি একই রকম অসামর্থ্যতার অধীন হবেন। তবে শর্ত হচ্ছে, এ ধারার কোনো কিছুই ওই ব্যক্তিকে ধর্মীয় পদ বা চাকরির, বা কোনো ধর্মীয় বা দাতব্য ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনার কোনো অধিকার প্রদান করবে না।

সম্পত্তির উত্তরাধিকার: হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ ও জৈন ধর্মে বিশ্বাসী কোনো ব্যক্তি, যিনি এ আইনের অধীন বিয়ে করেছেন, তাঁর সম্পত্তির, এবং এ বিয়ের ফলে জাত সন্তানের সম্পত্তির উত্তরাধিকার ‘উত্তরাধিকার আইন, ১৯২৫’  অনুযায়ী নিয়ন্ত্রিত হবে। ওই দুই ব্যক্তির মধ্যে এ বিয়ে হতে পারে, যাঁদের কেউই মুসলিম, হিন্দু, খ্রিষ্টান, ইহুদি, পার্সি, বৌদ্ধ, শিখ বা জৈন ধর্মে বিশ্বাস করেন না। কিংবা ওই দুই ব্যক্তির মধ্যে এ বিয়ে হতে পারে, যাঁদের প্রত্যেকেই এর একটি বা অন্য ধর্মে বিশ্বাস করেন— হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ বা জৈন। এ ছাড়া যেসব ব্যক্তি হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ বা জৈন ধর্মে বিশ্বাসী, এ আইন দ্বারা তাঁদের জন্য বিয়ের বিকল্প একটি ধরন নির্ধারণ করা হয়েছে। আরও উল্লেখ করা প্রয়োজন, যেসব বিয়ের বৈধতা সম্পর্কে সন্দেহের অবকাশ রয়েছে, সেসব সুনির্দিষ্ট বিয়ের বৈধতা দেওয়া হয়েছে এ আইন দ্বারা।