নৈতিক স্খলনে বাড়ছে বিবাহ বিচ্ছেদ

মনোরোগ চিকিৎসক মোহিত কামালের মতে, নৈতিক স্খলনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বিবাহবিচ্ছেদের ঘটনা। তাঁর মতে, প্রবাসীদের সঙ্গে স্ত্রীর বিয়ে বাড়ছে মূলত সন্দেহ-অবিশ্বাস থেকে। বিদেশে হাড়ভাঙা খাটুনির পর স্ত্রীর সঙ্গ পান না তাঁরা। এমনকি তাঁদের জীবনে অন্য কোনো বিনোদনও নেই। দেশে স্ত্রী কী করছে এই চিন্তায় অস্থির থাকেন তাঁরা। তার ওপর দেশ থেকে অনেক সময় বাবা-মা বা ভাইয়েরা তাঁর স্ত্রীর আচরণ সম্পর্কে নানা অভিযোগ করেন। এগুলো তাঁর মনকে বিষিয়ে দেয়।

স্ত্রীকে ফোন করে তাঁরা তখন কটুকাটব্য করতে থাকেন। এতে সম্পর্ক তিক্ত হয়ে পড়ে। তবে এ কথাও ঠিক, দীর্ঘকাল স্বামীর অনুপস্থিতিতে অনেকে বিবাহ- বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। এটা একটা জৈবিক কারণ। স্বামীর অনুপস্থিতিতে এই জৈবতাড়নাই তাঁকে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়তে প্ররোচিত করে। পোশাক-কর্মীদের মতো যাঁরা নিম্নআয়ের মহিলা, অনেক দরিদ্র পুরুষই তাঁদের বিয়ে করেন অর্থনৈতিক সুবিধা লাভের জন্য। অনেক সময় স্ত্রীর টাকায় নেশা করেন অনেকে, কেউ বা গোপনে অন্য নারীতে আসক্ত হয়ে পড়েন। এই মেয়েরা এখন অর্থনৈতিকভাবে কিছুটা হলেও স্বাবলম্বী। তাঁরা এ অন্যায় মুখ বুজে সহ্য করেন না। তাই বিবাহবিচ্ছেদ ঘটানোর মতো সিদ্ধান্ত নেন।

উচ্চবিত্ত পরিবারের ক্ষেত্রে দেখা যায় স্বামী ব্যবসা বা বড় চাকরি করেন। নিয়মিত মদ্য পান করাকে সোশ্যাল স্ট্যাটাসের অন্তর্ভুক্ত মনে করেন। মদ্যপ অবস্থায় স্ত্রীর ওপর শারীরিক-মানসিক নির্যাতন করেন। এ ছাড়া এ শ্রেণীর মেয়েদের মধ্যেও নানা হতাশা থেকে বিয়ে-বহির্ভূত সম্পর্ক স্থাপনের অনেক নজির আছে। সব মিলিয়ে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে চিড় ধরে, যার অনিবার্য ফল বিবাহবিচ্ছেদ।
মাদকাসক্তি ও যৌতুকের মতো সামাজিক ক্ষত সারানো গেলে বিবাহবিচ্ছেদ অনেকাংশে কমবে বলে মনে করেন মোহিত কামাল। তাঁর মতে সমাজে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। এ ছাড়া আর কোনো নিদান নেই।

মোহিত কামাল, মনোরোগ চিকিৎসক
সুত্রঃ প্রথম আলো 

আবার বিয়ে, বাচ্চা নিয়ে চিন্তা!

একা একা জীবন পার করা যায়। তবে একজন সঙ্গী থাকলে ক্লান্তি ভর করে না। তাই পুনরায় কোনো সম্পর্ক শুরু করার আগে চাই সন্তানের পূর্ণ সমর্থন।

বেশ কয়েক বছর আগে দ্বিতীয় বিয়ে করেন মাহফুজ। তার স্ত্রী মারা যাওয়ার সময় তাদের ছেলেটির বয়স ছিল ৪ বছর। পারিবারিক চাপে আবার বিয়েতে সম্মতি দেন। যিনি দ্বিতীয় স্ত্রী হয়ে আসেন তারও ছিল দ্বিতীয় বিয়ে। আগের ঘরে একটি মেয়ে আছে তার।

বাবার বিয়ের কথা অন্যদের মুখে শুনে মাহফুজের ছেলেটি তার কাছ থেকে দূরে সরে যেতে থাকে। তিনিও নিজের বিয়ের কথা সন্তানকে সরাসরি বলতে পারেননি।

মাহফুজ বলেন, “ভেবেছিলাম, ও তো ছোট, তেমন কোনো সমস্যা হবে না। সে সময় সবাই এমনটাই বলেছিল। তবে ছেলেটি কেমন চুপচাপ হয়ে গেল। আমার দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে বোঝাপড়া ভালো হল না তার। স্ত্রীও তার মেয়েটিকেই বেশি যত্ন করত। বড় হওয়ার পর ছেলেটি আমাকে ছেড়ে চলে যায়। ওকে আসলে বুঝতে পারিনি আমি। ওর অভিমান বুঝতে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল।”

বিচ্ছেদ কিংবা মৃত্যু- প্রিয়জনকে হারিয়ে জীবন অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়ে। তবু থেমে থাকে না জীবন। চলে যায় অমোঘ নিয়মে। এ চলার পথেই হয়তো নতুন সঙ্গীর প্রয়োজন পড়ে। অনেকেই এ সময় সন্তানের কথা ভেবে সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগেন— সন্তান নাকি নিজের জীবন কোনটা প্রাধান্য দেবেন? বাবা অথবা মায়ের নতুন সঙ্গীকে সব সময় মেনে নিতে পারে না সন্তান।

এসব পরিস্থিতি অনেকটা এড়ানো সম্ভব, যদি শুরুতেই বিষয়টি সন্তানের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করা যায়। এক্ষেত্রে সন্তানের সিদ্ধান্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে। নাট্যব্যক্তিত্ব সারা যাকের বলেন, “মানুষের এসব সম্পর্কের জায়গা বেশ জটিল। মনোজগতে নানান ধরনের আলোড়ন চলতে থাকে। এ সমাজে বাবার আবার বিয়ে যদিও সন্তানদের কাছে নতুন কিছু নয়। তবে মায়ের দ্বিতীয় বিয়ে এখনও অপ্রত্যাশিতই। একজন মানুষ একা হয়তো তার জীবন পাড়ি দিতে পারে। তবে তার চলার পথে বন্ধু বা একজন সঙ্গী থাকলে ক্লান্তি ভর করে না।”

সমাজকেও এই বিষয়ে উদার হতে হবে। এটি মনে করা অন্যায় যে সঙ্গীবিহীন অবস্থায় মানুষকে থাকতে হবে। তবে মনে রাখতে হবে, স্ত্রী থাকা অবস্থায় বা তাকে না জানিয়ে বিয়ে করা দণ্ডনীয় অপরাধ।

স্ত্রীর মৃত্যু বা বিবাহ বিচ্ছেদের পর সন্তানকে না জানিয়ে হুট করে সংসারে নতুন সঙ্গী নিয়ে আসেন অনেকে। যা সন্তানের মনোজগতে প্রভাব ফেলে। আকস্মিক এ আঘাত সে মেনে নিতে পারে না। পারিবারিক সম্পর্কে টানাপড়েন শুরু হয়। এ ক্ষেত্রে মা-বাবা যদি আগেই সন্তানের সঙ্গে পুরো বিষয়টি নিয়ে খোলাখুলি আলোচনা করে নেন, তাহলে পরে সমস্যায় পড়তে হবে না।

অভিনয়শিল্পী রোকেয়া প্রাচী বলেন, “একটা ছোট শিশুরও মনস্তাত্বিক ব্যাখ্যা থাকে। তাই সন্তানকে বোঝাতে হবে, এ বিষয়ে সে-ই মূল সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী। তার ইচ্ছা-অনিচ্ছাই সব। নতুন সঙ্গী নিয়ে সংসার শুরুর সময়ই সন্তানকে সব বুঝিয়ে বলুন। তাকে পরিচয় করিয়ে দিন। সন্তানের সঙ্গে নতুন মানুষের বোঝাপড়া ভালো হলে বা বন্ধুত্ব গড়ে উঠলে সিদ্ধান্ত নিতে সহজ হবে।”

প্রাচী আরও বলেন, “মা-বাবার পুনরায় বিয়ের পর সন্তানকে পর্যাপ্ত সময় দেওয়া উচিত। আগের মতো পারিবারিক আবহ বজায় রাখতে হবে। নতুন বাড়িতে উঠলে সেখানে সন্তান যেন পুরানো পরিবেশ খুঁজে পায়, সেই ব্যবস্থা করতে হবে। হুট করেই তার আগের সব অভ্যাস পরিবর্তনের কথা বলা যাবে না। শিশুর হয়তো মা-বাবার সঙ্গে ঘুমানোর অভ্যাস। তাকে যদি আলাদা ঘরে থাকতে বলা হয়, তখন সে ভাববে, নতুন মানুষের কারণে তার সব হারাতে হচ্ছে।”

সন্তানের সীমাবদ্ধতা, পছন্দ-অপছন্দ— সব আগেই নতুন সঙ্গীকে জানিয়ে দিতে হবে। যদি দুই পক্ষেরই আগের ঘরের সন্তান থাকে, তাহলে যথেষ্ট সহনশীল হওয়া উচিত। কোনো ভেদাভেদ করা যাবে না। বাচ্চাদের মধ্যে কোনো ঝামেলা হলে তাদেরই সমাধান করতে দিন। এক্ষেত্রে বিয়ের আগেই দুই পক্ষের সন্তানের মধ্যে পরিচয় করিয়ে দেওয়া সবচেয়ে ভালো।

এই অভিনয়শিল্পী মতে, “বিয়ের দিনও কৌশলী হতে হবে। সন্তান যাতে মনে করে সেই-ই সবচেয়ে প্রাধান্য পাচ্ছে এবং সে একজন গুরুত্বপূর্ণ মানুষ। আসল কথা হল, সন্তান যারই হোক সে যেন বুঝতে পারে তার জীবনে নানান প্রাপ্তি যোগ হচ্ছে। বিনিময়ে কিছুই হারাতে হচ্ছে না। তাহলে পরিবারে সুখ-শান্তি থাকবে।”

সবচেয়ে বড় কথা হল, সবাইকে নিয়েই পরিবার। দ্বিতীয় বিয়ের পর স্বামী এবং স্ত্রী দুজনকেই সহনশীল হয়ে সংসার করতে হবে। আগের ঘরের সন্তান থাকলে তাকে সমান গুরুত্ব দিতে হবে। যত কারণই হোক, সুখি হওয়ার জন্যই মানুষ পুনরায় জীবন শুরু করে। আর পরিবারের সবাইকে নিয়েই সেটা সম্ভব।

ফিচারঃ বিডি নিউজ ২৪
ছবি : অপূর্ব খন্দকার

কীভাবে বুঝবেন বিয়ে টিকছে না?

বিশ্বে গত কয়েক বছরে বিবাহবিচ্ছেদের হার আতঙ্কজনকভাবে বেড়ে গেছে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় বিয়ের পর যত দিন গড়াতে থাকে পারস্পরিক সহমর্মিতা কিংবা আকর্ষণবোধ ধীরে ধীরে ফিকে হতে থাকে। স্বামী বা স্ত্রীর ছোটখাটো খুঁত আস্তে আস্তে বড় হয়ে দেখা দিতে থাকে। এক সময় দাম্পত্যের বন্ধনকে বোঝা মনে হয়। ভারমুক্তির জন্য তখন বিবাহবিচ্ছেদ ছাড়া আর উপায় থাকে না।
আপনার যদি মনে হয় স্বামী বা স্ত্রীর সঙ্গে আগের মতো আর আপনার তাল মিলছে না, সম্পর্কে তিক্ততা বেড়েই চলেছে; তাহলে ধরে নিতে পারেন আপনার দাম্পত্যজীবন ঝুঁকির মধ্যে। পরিস্থিতি ডিভোর্সের মতো বেদনাদায়ক পর্যায়ে গড়াতে পারে।
এ অবস্থায় আপনার বিয়েটা শেষ পর্যন্ত টিকবে কি না, তা বুঝতে নিচের সাধারণ লক্ষণগুলো আপনাকে সাহায্য করবে:

দুটি হৃদয় এখন আর আগের মতো অভিন্ন নয়
বিয়ে মানব-মানবীর হৃদয়ে এক অদৃশ্য বন্ধন তৈরি করে। স্বামী-স্ত্রীর দুই দেহে যেন এক প্রাণ। ভালোবাসার বন্ধন স্বামী-স্ত্রীকে দুঃখ-কষ্টে মানসিকভাবে এক করে রাখে। দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে একজন আরেকজনের ভাগ নেয়; বিশেষ করে, সংসারে সন্তান এলে এই পারস্পরিক দায়িত্বের ভাগাভাগির মানসিকতা বেড়ে যায়। কিন্তু আপনার যদি মনে হয় আগের মতো আর আপনি আপনার স্বামী বা স্ত্রীর প্রতি দায়িত্বশীলতা অনুভব করছেন না, সংসারের কোনো বিষয়ে একা একাই সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন; এমনকি ছুটির দিনে স্বামী বা স্ত্রীকে সময় না দিয়ে একাই বাইরে থেকে বেড়িয়ে আসছেন—তাহলেই বুঝবেন সম্পর্কে বড় ধরনের চিড় ধরেছে। আপনার দাম্পত্য বন্ধন হুমকির মুখে।

প্রতারণা
বর্তমানে যত ডিভোর্সের ঘটনা ঘটছে তার বেশির ভাগেরই মূল কারণ প্রতারণা। পুরোনো একটি প্রবাদ আছে: ‘বিশ্বাস হলো আয়নার মতো। আয়না একবার ভেঙে গেলে তা আপনি জোড়া লাগাতে পারেন, তাতে মুখও দেখতে পারেন। কিন্তু ভাঙা আয়নার ভাঙা দাগ থেকেই যাবে।’ কোনো স্ত্রী যদি স্বামীর সঙ্গে কিংবা কোনো স্বামী যদি তার স্ত্রীর সঙ্গে একবার প্রতারণা করে বা ঠকায়, তাহলে অবিশ্বাসের দাগ প্রতারিত স্বামী বা স্ত্রীর মনে স্থায়ীভাবে গেথে যায়। প্রতারিত স্বামী বা স্ত্রী সব সময় তার সঙ্গীকে সন্দেহের চোখে দেখতে থাকে। ভবিষ্যতে আবার প্রতারিত হওয়ার আশঙ্কা একপর্যায়ে তাকে ডিভোর্সের ফাইলে সই করতে বাধ্য করে।

দুজনের দুই রকমের ভাবনা
বিয়ের পর সাধারণত স্বামী-স্ত্রী দুজনের ভাবনা ও ভবিষ্যত্ পরিকল্পনা অভিন্ন থাকে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই অভিন্ন ভাবনা ভিন্ন হয়ে যেতে পারে। ধরুন, আপনি ঠিক করলেন স্ত্রী-সন্তান নিয়ে উন্নত বিশ্বের কোনো একটি দেশে স্থায়ীভাবে চলে যাবেন। উন্নত জীবনযাপন করবেন। কিন্তু দেখা গেল আপনার স্ত্রী দেশেই ভালো কিছু করার কোনো পরিকল্পনা করে বসে আছেন। এ নিয়ে মনকষাকষি হলে বুঝবেন আপনাদের অভিন্ন ভাবনার জগিট অদৃশ্য আত্মকেন্দ্রিকতার ঘুণে নষ্ট করে ফেলেছে। বুঝবেন আপনাদের পারস্পরিক রোমাঞ্চকর ভাববিনিময়ে ঘাটতি রয়েছে। সর্বোচ্চ ছাড় দিয়ে এই ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব না হলে বিবাহবিচ্ছেদ অবশ্যম্ভাব

পরস্পরকে বোঝার চেষ্টার অভাব
পরস্পরের মধ্যে ভাবনাবিনিময় জোরালো দাম্পত্য সম্পর্কের পূর্বশর্ত। আপনি যদি আপনার স্বামী বা স্ত্রীর সঙ্গে নিজের ভাবনা শেয়ার না করেন, তাঁর সঙ্গে সারাক্ষণ নিরস-নিরুত্তাপ কথাবার্তা বলেন; সংসারের তেল নুন ডালের আলাপ-আলোচনাতেই দিন-রাত পার করেন, তাহলে বুঝবেন সম্পর্কে দূরত্ব বেড়েছে। একঘেয়েমি সাংসারিক আলোচনায় এক সময় হাঁপিয়ে উঠবেন, যা ডিভোর্সের মতো পরিণতি বয়ে আনতে পারে।

সুস্থ যৌন সম্পর্কের ঘাটতি
বিয়ের পরপর যৌন সংসর্গে স্বামী-স্ত্রীর যে আগ্রহ থাকে, সময়ের সঙ্গে সেই আগ্রহে ভাটা পড়া খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু যদি দেখেন যথেষ্ট তারুণ্য ও শারীরিক সক্ষমতা থাকার পরও আপনি আপনার স্বামী বা স্ত্রীর সংসর্গে অনীহা বোধ করছেন, তাহলে বুঝবেন সংসার ভাঙনের পথে। বাস্তবতা হলো স্বামী-স্ত্রীর স্বাভাবিক বন্ধন টিকিয়ে রাখার প্রধান শর্তই হল সুস্থ ও স্বাভাবিক যৌন সম্পর্ক।

অর্থকড়িও কাল হতে পারে
ধরুন স্বামী বা স্ত্রীর সঙ্গে আপনার সম্পর্ক শীতল হয়ে উঠেছে। এ অবস্থায় আপনার স্বামী বা স্ত্রী যদি আপনার উপার্জন, সঞ্চয়, বিনিয়োগ, ঋণ ইত্যাদি নিয়ে হঠাত্ করে বেশি আগ্রহী হয়ে ওঠেন, তাহলে সেটাকে খারাপ লক্ষণ হিসেবে মনে করা যেতে পারে। ডিভোর্সের পর আপনার স্বামী বা স্ত্রী আপনার সম্পদের কতটুকু হিস্যা পাবেন, তা হিসাব-নিকাশ করার জন্যই এমনটা করছেন বলে ধরে নেওয়া যেতে পারে। মনে রাখবেন, বিয়ের সময় আর্থিক বিষয়টি ততটা বড় হয়ে সামনে না এলেও ডিভোর্সের সময় কোনো পক্ষই ছাড় দেয় না। কড়ায়-গন্ডায় নিজের হিস্যা বুঝে নেয় (অবশ্য এ ধরনের মানসিকতা পশ্চিমাদের মধ্যে প্রকট থাকলেও আমাদের দেশের মানুষের মধ্যে ততটা নেই)।

আগের চেয়ে ঝগড়াপ্রবণ হয়ে ওঠা
দাম্পত্যজীবনে ভুলবোঝাবুঝি ও ঝগড়া হবেই। তবে স্বাভাবিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে এই ঝগড়া খুবই ক্ষণস্থায়ী। প্রচণ্ড ঝগড়ার পর দিনের শেষে স্বামী বা স্ত্রীর কানে ফিসফিস করে একটা ‘ম্যাজিক ওয়ার্ড’ উচ্চারণ করলেই সব রাগ এক মুহূর্তে পানি। কিন্তু যদি দেখেন আপনি আপনার স্বামী বা স্ত্রীর সঙ্গে সারাক্ষণই রূঢ় ভাষায় কথা বলছেন। দুজনই খিটমিটে আচরণ করছেন এবং তার জন্য অনুশোচনাবোধ করছেন না। এ অবস্থায় বুঝবেন সম্পর্কের স্থায়িত্ব নিয়ে ভাবার সময় এসে গেছে।

সুত্রঃ প্রথম আলো

ভরণপোষণ পাওয়া আপনার অধিকার

তিথির (ছদ্মনাম) বিয়ে হয়েছে প্রায় তিন বছর। এর মধ্যে কোলজুড়ে এসেছে একটি সন্তান। বিয়ের পরই জানা গিয়েছিল স্বামী মাদকাসক্ত। এ থেকে বের করে আনার চেষ্টাও কম করেনি তিথি। কিন্তু কিছুতেই কিছু হয়নি। সন্তান জন্মানোর পর স্বামী তিথিকে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেন। তিথিকে দেন না কোনো ভরণপোষণ, এমনকি একমাত্র সন্তানের জন্যও কোনো টাকা পাঠান না। তিথি লেখাপড়া তেমন একটা করেননি যে চাকরি করবেন, আবার বাবার বাড়ির আর্থিক অবস্থাও ভালো নয়। এখন কীভাবে তিথি আদায় করবেন নিজের আর সন্তানের ভরণপোষণ। তিথি হয়তো জানেন না, আইন তাঁর ভরণপোষণের অধিকার নিশ্চিত করেছে। মুসলিম আইনে আর্থিকভাবে সচ্ছল ব্যক্তিরা তাঁদের স্ত্রী, সন্তানসন্ততি, মা-বাবা, যাঁরা আর্থিকভাবে অসমর্থ, তাঁদের ভরণপোষণ দিতে বাধ্য।

ভরণপোষণ কারা পাবেন
স্ত্রী স্বামীর কাছ থেকে বিয়ে বর্তমান থাকা অবস্থায় ভরণপোষণ পাওয়ার অধিকার লাভ করেন। ছেলেসন্তান সাবালক না হওয়া পর্যন্ত এবং মেয়েসন্তান বিয়ে না হওয়া পর্যন্ত বাবার কাছ থেকে ভরণপোষণ লাভ করার অধিকারী। ছেলেসন্তান সাত বছর পর্যন্ত এবং মেয়েসন্তান বিয়ে না হওয়া পর্যন্ত যদি মায়ের কাছে কিংবা মায়ের মা, অর্থাৎ নানির কাছে থাকে, তবু বাবা তার ভরণপোষণ দিতে বাধ্য।

এ ছাড়া পঙ্গু, অক্ষম, পাগল এবং মানসিক ও শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী সাবালক সন্তানও বাবার কাছে ভরণপোষণ পাবে। তবে সন্তান যদি অন্যায়ভাবে বাবার সঙ্গে থাকতে অস্বীকার করে কিংবা যে শিশু তার নিজস্ব সম্পত্তির আয় থেকে নিজের ভরণপোষণ করতে সক্ষম, সে শিশুর ভরণপোষণ দিতে বাবাকে বাধ্য করা যাবে না। কিছু কিছু ক্ষেত্রে আলাদাভাবে বসবাস করলেও স্ত্রী স্বামীর কাছে ভরণপোষণ পাওয়ার অধিকার রাখেন। যেমন ১. স্ত্রীকে তাৎক্ষণিক দেনমোহর পরিশোধ না করলে ২. স্বামীর নিষ্ঠুরতার কারণে ৩. স্বামী যদি অভ্যাসগতভাবে খারাপ ব্যবহার করেন ৪. দীর্ঘকাল স্ত্রীর কাছ থেকে স্বামী দূরে থাকলে ৫. অনুমতি ছাড়া স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করলে।

পরিমাণ
ভরণপোষণের পরিমাণ স্বামী-স্ত্রীর সামাজিক মর্যাদা ও আর্থিক সংগতির ওপর নির্ভর করে। অনেক সময় নিকাহনামায় উল্লেখ থাকে, স্বামী মাসিক কত টাকা ভরণপোষণ হিসেবে দেবেন। সাধারণ অবস্থায় স্বামী তাঁর নিজ গৃহেই স্ত্রী বা স্ত্রীদের খাদ্য, বস্ত্র ও বাসস্থান দিয়ে থাকেন। আইনসংগত বা যুক্তিযুক্ত কারণে যখন স্ত্রী আলাদা বসবাস করেন, তখন স্বামী নগদ অর্থ দ্বারা ভরণপোষণ জোগাবেন।

তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী কেবল ইদ্দতকালীন ভরণপোষণ পাবেন। অর্থাৎ, তালাক কার্যকর হওয়ার পর স্ত্রী মাত্র তিন মাসের জন্য ভরণপোষণ পাবেন। তবে স্বামীর মৃত্যুর পর স্ত্রীকে যে ইদ্দত পালন করতে হয়, সেই সময়ের জন্য স্ত্রী কোনো ভরণপোষণ পাবেন না। গর্ভবতী থাকলে সন্তান প্রসব না হওয়া পর্যন্ত যেহেতু তালাক কার্যকর হয় না, তাই সন্তান প্রসব হওয়া পর্যন্ত স্ত্রীকে ভরণপোষণ দিতে হবে।

আদালতে যাওয়ার আছে অধিকার
আইনসম্মত স্বামী যদি স্ত্রী ও সন্তানদের ভরণপোষণ না দেন, তাহলে পারিবারিক আদালতে প্রতিকার চাওয়া যায়। ১৯৮৫ সালের পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশ অনুযায়ী এ অধিকার রয়েছে। সন্তান ও বৃদ্ধ মা-বাবাও আদালতের মাধ্যমে ভরণপোষণ পাওয়ার জন্য মামলা করতে পারেন।

চেয়ারম্যান বা মেয়রের কাছেও আবেদন করা যায়
স্ত্রী খোরপোশ দাবি করে স্বামীর বিরুদ্ধে চেয়ারম্যানের বা মেয়রের কাছে আবেদন করতে পারবেন। আবেদন পাওয়ার পর চেয়ারম্যান বা মেয়র স্ত্রী ও স্বামী উভয় পক্ষের পছন্দমতো একজন করে প্রতিনিধি নিয়ে সালিসি পরিষদ গঠন করবেন। সালিসি পরিষদ স্ত্রীর দাবির যৌক্তিকতা যাচাই করে ভরণপোষণের পরিমাণ নির্ধারণ করে সিদ্ধান্ত দেবে এবং সেই মোতাবেক একটি প্রত্যয়নপত্র প্রদান করবে।


লেখক: তানজিম আল ইসলাম , আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট
প্রথম আলো থেকে সংগ্রহীত

কাংখিত সার্চ রিজাল্ট পেতে

সম্মানিত ইউজার আপনি বিবাহবিডি ডট কম ব্লগে অবস্থান করছেন।   আপনি সরাসরি বিবাহবিডি ডট কম এ লগিন করতে এই লিংকে ক্লিক করুন।  

তাছাড়াঃ-
প্রফেশন অনুযায়ী পাত্র/ পাত্রী খুজতে ক্লিক করুন
শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী পাত্র/পাত্রী খুজতে


ডিভোর্স সেপারেটেড বিধবা কিংবা বিপত্নীক খুজতে ক্লিক করুন
প্রবাসী পাত্র/পাত্রী খুজতে ক্লিক করুন

সন্দেহের ভূত…

সন্দেহের ভূত অনেকের মাথাতেই চেপে বসে। দাম্পত্যেই সাধারণত বেশি দেখা যায় এমন পরিস্থিতি। কখনো স্বামী, কখনো স্ত্রী মনে করেন যে তাঁর সঙ্গীর অন্য কারও সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। যদিও তা বাস্তবে সত্য নয়। এই সন্দেহপ্রবণতাকে বলা হয় মরবিড জেলাসি, যার আরেকটি পোশাকি নাম ওথেলো সিনড্রোম। শেক্সপিয়ারের নাটকের চরিত্র ওথেলো এই সন্দেহের ভূতের কবলে পড়ে তাঁর স্ত্রী ডেসডিমোনাকে হত্যা করেছিলেন।

ভ্রান্ত বিশ্বাস, খুঁতখুঁতে মনোভাব থেকে এ সমস্যা হয়ে থাকে অনেকের। এই সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তির স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড ব্যাহত হয়। সাধারণত ব্যক্তিত্বের ধরন, পারিপার্শ্বিকতার প্রভাব, আর্থিক অসংগতি, নিজের যৌন দুর্বলতা, আত্মবিশ্বাসের অভাব, মাদকে আসক্তি, মানসিক রোগ ইত্যাদি কারণে সন্দেহপ্রবণ হয়ে ওঠে ব্যক্তি। সন্দেহের কারণে অতি উৎকণ্ঠা, বিষণ্নতা, খুঁতখুঁতে বা মারমুখী আচরণ, ঘুমের সমস্যাও দেখা যায়। সন্দেহ দিনের পর দিন চলতে থাকলে দাম্পত্য সম্পর্কে ফাটল দেখা যায়, পারিবারিক সম্প্রীতি নষ্ট হয়। সবচেয়ে ভয়াবহ হলো সন্দেহের বশবর্তী হয়ে সন্দেহভাজনকে হত্যা, সন্তান হত্যা, গুরুতর আঘাত বা আত্মহত্যার মতো ঘটনাও ঘটতে পারে।

সন্দেহের বিষয়টি যখন বড় আকার ধারণ করে, তখন সেটাকে বলা হয় প্যারানয়েড ডিলিউশন। যাঁর মধ্যে এ সমস্যা থাকে, তিনি তাঁর সঙ্গীকে অবিশ্বাস করেন, বিশ্বাস করেন আশপাশের সবাই তাঁর ক্ষতি করতে চায়, কখনো মনে করতে পারেন তাঁর কাছের মানুষেরা তাঁর খাবারে বিষ মিশিয়ে দিচ্ছে ইত্যাদি। অপর দিকে ওথেলো সিনড্রোমের ক্ষেত্রে সন্দেহটি খুবই সুনির্দিষ্ট, সঙ্গীর অন্য কারও সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে—এই ভ্রান্ত বিশ্বাসের মধ্যেই সন্দেহ সীমাবদ্ধ।

সন্দেহের ভূত তাড়াতে:

দাম্পত্য সম্পর্কের মধ্যে সাধারণ ভুল-বোঝাবুঝি বা সন্দেহ তৈরি হলে বিষয়টিকে বড় হতে না দিয়ে শুরুতেই তা নিয়ে একে অপরের সঙ্গে আলোচনা করুন।
আপনার সন্দেহটি সঠিক কি না, তা বারবার যাচাই করে দেখুন।
সুস্পষ্ট প্রমাণ ছাড়া সঙ্গীকে দোষী সাব্যস্ত করবেন না, সন্দেহের ঘটনাটি তাঁর দিক থেকেও দেখুন।
সন্তানদের এই বিষয়ে জড়াবেন না।
গোপনে নজরদারি এড়িয়ে চলুন, গোয়েন্দার ভূমিকায় না থেকে বন্ধুর ভূমিকায় বিষয়টি জানার চেষ্টা করুন।
অধীনের কর্মচারী, কাজের লোক, গাড়িচালক বা নিরাপত্তাকর্মীদের কাছ থেকে এ বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করবেন না।
আপনাদের সম্পর্কে ফাটল ধরাতে তৃতীয় কেউ ষড়যন্ত্র করছে কি না, তা যাচাই করুন।
আপনি নিজে সন্দেহের শিকার হলে, সাময়িক সমাধানের জন্য মিথ্যা বলবেন না।
হঠকারী আচরণ এড়িয়ে চলুন।যদি মনে হয়, এটি সাধারণ ভুল-বোঝাবুঝির চেয়ে কিছু বেশি বা দুজনের কারও মধ্যে কোনো মানসিক সমস্যা রয়েছে, তবে দেরি না করে দ্রুত মানসিক রোগবিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

আহমেদ হেলাল (প্রথম আলো)

বিয়ের পর মধুচন্দ্রিমায়

বিয়ে যেন মহাযজ্ঞ। কাজের কোনো শেষ নেই। বিয়ের দিন ধার্য হওয়ার পর থেকে শুরু হয় ধকল। তা যেন গিয়ে শেষ হয় বিয়ের দিনে। বিয়ের পর সবার নিস্তার মিললেও নবদম্পতির নিস্তার নেই। প্রেমের বিয়েই হোক কিংবা সম্বন্ধের বিয়েই হোক, বিয়ে নিয়ে বাড়তি একটা মানসিক চাপ থাকে বর-কনে দুজনেরই। আর কনেকে যেহেতু নতুন একটি পরিবারে যেতে হয়, ফলে তাঁর চাপের পরিমাণ বরের থেকে বেশি থাকে। এই চাপমুক্ত হতে আর দুজনের একান্তে কিছু সময় কাটানোর জন্য মধুচন্দ্রিমায় যাওয়া যেতে পারে।

তিন বছর চুটিয়ে প্রেম করেছেন অভি-সাবরিনা। এরপর বিয়ের পিঁড়িতে বসেছেন। এই দম্পতি বিয়ের পরই ছুটে গেছেন কক্সবাজারে। তাঁরা বলেন, বিয়ের আগের কয়েকটি দিন ছিল অন্য রকম। একদিকে বিয়ের আনন্দ, অন্যদিকে এত বড় আয়োজনের বিশাল চাপ। সব মিলিয়ে অস্থিরতার মধ্যেই ছিলাম। সংসার-জীবনে প্রবেশ করার আগে সব অস্থিরতা ও চাপ দূর করতেই কক্সবাজারে যাওয়া। এখন মনে হয়, ভালো একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।

বিয়ের পর নতুন পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার আগে স্বামী-স্ত্রীর বোঝাপড়া হওয়া সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আর এই বোঝাপড়ার প্রাথমিক দিকটি উন্মোচন করে মধুচন্দ্রিমা। প্রেমের বিয়েতে আগে থেকেই চেনাজানার সুযোগ থাকে। কিন্তু পারিবারিকভাবে সম্মত বিয়ের ক্ষেত্রে এই সুযোগ মেলে না। মিললেও সেটি যথেষ্ট নয়। আর আমাদের দেশে নতুন পরিবেশে নবদম্পতি নিজেদের মতো করে সময় কাটানোর সুযোগ কম পান।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক দিলরুবা আফরোজ এ বিষয়ে বলেন, ‘আমাদের দেশের পারিবারিক কাঠামোতে বিয়ের পর একজন নারীকে নতুন পরিবারের সঙ্গে যুক্ত হতে হয়। ফলে নতুন পরিবেশে খাপ খাওয়ানোর আগে মেয়েটি একান্তে কয়েকটা দিন স্বামীর সঙ্গে কাটালে তাঁর মানসিক প্রশান্তি আসবে। বিয়ের পর স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক বোঝাপড়া, নিজেদের পছন্দ-অপছন্দ জানার জন্য মধুচন্দ্রিমা বেশ কাজের।’

প্রায় ১০ বছর হতে চলল রুবিনা খান-গাজী বিজয় আহমেদের দাম্পত্যজীবন। প্রেমের বিয়ে হলেও দুজনেই পারস্পরিক বোঝাপড়ার জন্য বিয়ের পরপরই ঘুরতে যাওয়াকে গুরুত্ব দেন। বিয়ের পর নিজেকে প্রকাশ করার জন্য মধুচন্দ্রিমার বিকল্প নেই বলে মনে করেন তাঁরা। তাই তো এখন সময় পেলেই এই দম্পতি নিজেদের আরও বুঝতে ঘুরতে যান।ভাবনাচিন্তা বাদ দিয়ে সামর্থ্য থাকলে বিয়ের পর চলে যান মধুচন্দ্রিমায়। পরস্পরের পছন্দ, ভালো লাগা, কে কতটা ঘুমকাতুরে, কার কী ধরনের খাবার পছন্দ—সব মিলিয়ে পারস্পরিক মনের ভাব আদান-প্রদানের জন্য মধুচন্দ্রিমার বিকল্প নেই। তবে বেরিয়ে পড়ার আগে আবহাওয়া আর বাজেট বিবেচনা করে কোন জায়গায় যাবেন, তা আলোচনা করে নিন। আর যাঁরা মধুচন্দ্রিমায় যেতে পারেননি, তাঁদেরও মন খারাপের কিছু নেই। ইচ্ছা থাকলে এখনই সঙ্গীকে নিয়ে বেরিয়ে পড়ুন।

-জাহিদ হোসাইন খান

চার্চ

১৮৭২ সালের খ্রিস্টান ম্যারেজ এ্যাক্ট অনুযায়ী খ্রিস্টানদের বিয়ে সম্পাদিত হয়। খ্রিস্টান বিয়ে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান এবং একটি পবিত্র চুক্তি।
খ্রিস্টান বিয়ে লিখিত মাধ্যমে সম্পাদিত হয় এবং রেজিষ্ট্রি বাধ্যতামূলকভাবে করতে হয়।খ্রিস্টান বিয়ের ক্ষেত্রে যিনি বিয়ে সম্পাদন করবেন তিনিই বিয়ে রেজিস্ট্রেশন করবেন। খ্রিস্টান বিয়ে রেজিস্ট্রেশনের প্রয়োজনীয় ধাপগুলো হলো:

১)  বিয়ের পাত্র-পাত্রীর পুরো নাম ও ডাক নাম এবং পেশা বা অবস্থা
২)  পাত্র-পাত্রীর আবাসস্থল ও বাসস্থানের ঠিকানা
৩)  পাত্র-পাত্রী কতদিন ধরে ঐ এলাকায় বসবাস করছে তার প্রমাণ পত্র
৪) বিয়ে সম্পাদনের চার্চ বা অন্যকোন স্থান
নোটিশ প্রাপ্তির পর চার্চের ধর্মযাজক নোটিশটি খোলা জায়গায় লাগিয়ে দেবেন। যাতে নোটিশটি সকলের নজরে আসে। এভাবে নোটিশ কয়েক সপ্তাহ ঝোলানো থাকবে যাতে কারো কোনো আপত্তি থাকলে তিনি যেন আপত্তি করতে পারেন। যদি কোন আপত্তি না পান তাহলে চার্চ প্রধান বিয়ের পক্ষগণের নিকট থেকে একটি ঘোষণা গ্রহণ করবেন।
এই ঘোষণাটি বিয়ের পক্ষগণ ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজির হয়ে দিবেন যাতে থাকবে-

১) বিয়ের পাত্র-পাত্রীর মধ্যে জানামতে এমন কোন ঘনিষ্ট আত্মীয়তা বা রক্তের সম্পর্ক নেই যাতে তাদের বিয়েতে আইনসম্মত বাধা আছে।
২)বিবাহের পাত্র-পাত্রী দুজনেই আইন অনুযায়ী সাবালক।

এই ঘোষণা সম্পন্ন হওয়ার কমপক্ষে ৪ দিন পর চার্চের ধর্মযাজক বিয়ের আবেদনকারীকে একটি সার্টিফিকেট প্রদান করবেন।সার্টিফিকেট জারির ২ মাসের মধ্যে বিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
ঢাকার কিছু চার্চ এ্রর  তথ্য নিচে তুলে ধরা হলঃ

১) ঢাকা  ইন্টারন্যশনল  খ্রিস্টান চার্চ ( গুলশান-২)
২) মিরপুর ব্যপ্তিস্ট চার্চ। (সেনপারা, ঢাকা-১২১৬)
৩) ঢাকা চার্চ অব খ্রীস্ট সোসাইটি (ইন্দিরা রোড,ফার্ম গেট,তেজগাঁও ঢাকা।)