জাদুকর ভালোবাসা

কিছুদিন ধরেই কেমন যেন একঘেয়ে হয়ে গিয়েছে সম্পর্কটা। কোনো কিছুই আর ভালো লাগছে না ইদানিং। আর তাই কয়েক দিন ধরেই ভাবছেন কিভাবে ভালোবাসার সম্পর্কটাকে আরো ‘আনন্দময়’ করে তোলা যায়। দুজনের প্রেমের সম্পর্কটাকে আরো একটু সুন্দর করে তোলার জন্য এবং ভালোবাসা আরো বাড়িয়ে তোলার জন্য কি করা যায় তাই ভাবছেন এখন।

ভালোবাসার সম্পর্কটাকে ‘জাদুময়’ করে তোলা খুব কঠিন কোনো কাজ নয়। বেশ সহজ কিছু কাজের মাধ্যমেই দুজনের সম্পর্কটাকে করে তুলতে পারেন জাদুকরী।  যে কাজগুলো করতে আমরা ভুলে যাই, কখনো কখনো সেই ছোট্ট কাজগুলোই ভালোবাসাকে করে তোলে দারুণ আকর্ষণীয়। আসুন জেনে নেয়া যাক “জাদুকর ভালোবাসা” তৈরী করার কিছু কৌশল সম্পর্কে।

প্রতিদিন আলিঙ্গন
আলিঙ্গন ভালোবাসাকে করে তোলে ‘প্রাণবন্ত’।  প্রতিদিন আপনার সঙ্গীকে অন্তত একবার আলিঙ্গন করে রাখুন। অন্তত ১০ সেকেন্ড ভালোবাসার বন্ধনে জড়িয়ে রাখুন তাকে। এতে দুজনের মধ্যে বিশ্বাস বৃদ্ধি পাবে এবং ভালোবাসা হয়ে উঠবে ‘ম্যাজিক্যাল’।

সঙ্গীর জন্য সপ্তাহে  বিশেষ একটি দিন
সবারই কাজের ব্যস্ততা থাকে। কিন্তু তাই বলে ব্যস্ততার অজুহাত কি সঙ্গীকে দেয়া যায় সবসময়? প্রতিদিনই তো ব্যস্ততার অজুহাতে সঙ্গীর ফোন ধরা হয় না কিংবা দেখা করা হয় না। সপ্তাহের ছুটির দিনটি তো দেয়াই যায় সঙ্গীকে তাই না? যারা পুরো সপ্তাহ ব্যস্ত থাকেন তাঁরা সম্পর্ককে সুন্দর রাখতে চাইতে সপ্তাহে অন্তত একটি দিন সঙ্গীকে সময় দিন। সেই দিন দুজনে মিলে রোমান্টিক ডিনার করুন অথবা দূরে কোথাও ঘুরতে যান। তাহলে দুজনের সম্পর্ক হয়ে উঠবে ‘ম্যাজিক্যাল’।

ভালোবাসার কথা জানিয়ে দিন
আপনাদের সম্পর্ক যতই পুরান হোক সঙ্গীকে ভালোবাসার কথা জানাতে কখনই কার্পণ্য করা উচিত না। অনেকেই মনে করেন প্রেমের সম্পর্ক পুরনো হয়ে গেলে ‘ভালোবাসি’ কথাটা না বললেও চলে। কিন্তু নেই ধারণা ভুল। ভালোবাসার সম্পর্কে ‘ম্যাজিক’ ধরে রাখতে চাইতে চিরকালই সঙ্গীকে ভালোবাসার কথা জানানো উচিত।

সারপ্রাইজ দিন
সঙ্গীকে মাঝে মাঝেই সারপ্রাইজ দেয়া উচিত। সারপ্রাইজ শুধু বিশেষ দিনেই দিতে হবে এমন কোনো নিয়ম নেই। যে কোনো সময়েই হঠাৎ করে চমকে দিতে পারেন আপনার সঙ্গীকে। সেটা হতে পারে ছোট্ট কোনো উপহার, পছন্দের খাবার রান্না করা অথবা রোমান্টিক যে কোনো কিছু।

নিজেকে সাজিয়ে গুছিয়ে রাখুন
ভালোবাসার সম্পর্কের ‘ম্যাজিক’ অনেকটাই নির্ভর করে নিজেকে সাজিয়ে গুছিয়ে রাখার উপর। প্রেমের সম্পর্কের শুরুতে মানুষ নিজের প্রতি যতটা যত্নশীল থাকে ততটা অনেকদিনের পুরনো সম্পর্কে থাকে না। কাঙ্খিত মানুষটির সাথে সম্পর্ক হয়ে গিয়েছে বলে কি নিজেকে সাজিয়ে গুছিয়ে রাখার আর কোনো প্রয়োজন নেই? অবশ্যই আছে। সঙ্গীর জন্য নিজেকে সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে রাখুন। সঙ্গির পছন্দের আকর্ষণীয় সুগন্ধি ব্যবহার করুন সবসময়। তাহলে ভালোবাসার সম্পর্কটা থাকবে ‘ম্যাজিক্যাল’।

রাগ নিয়ন্ত্রণ করুন
আপনি যদি আপনার সম্পর্কটাকে ‘ম্যাজিক্যাল’ করতে চান তাহলে অবশ্যই নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। কারণ আপনার সব চেষ্টাই বৃথা হয়ে যাবে যদি হুট হাট আপনি রেগে যান এবং সঙ্গীর সাথে খারাপ ব্যবহার করে ফেলেন কখনো। তাই সব সময় চেষ্টা করুন নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণ করার।

নিজেকে প্রানবন্ত রাখুন
সম্পর্কের ক্ষেত্রে সব সময় চেষ্টা করুন প্রাণবন্ত থাকার। স্বতস্ফুর্ত ভালোবাসায় দুজনের সম্পর্কটা খুব সহজেই ‘ম্যাজিক্যাল’ হয়ে উঠবে। তাই সঙ্গীর সাথে কাটানো সময় গুলো যেন দুজনের হাসি, আড্ডায় প্রানবন্ত থাকে সেই চেষ্টা করুন। মাঝে মাঝে কিছু নির্দোষ পাগলামীও সম্পর্কে নিয়ে আসে ‘জাদু’।

সময় দিন সঙ্গীকে

নাগরিক জীবন।  নাভিশ্বাস দৌড়।  কর্মক্ষেত্র-পরিবার।  ব্যস্ততা।  একফুটো অবকাশের দেখা মেলা ভার।  নিত্য ব্যস্ততার এই সময়ে আলাদা করে সময় মেলে কী দুজনকে দেয়ার। আর এরই ফাকফোঁকরে দূরত্ব নামক শব্দটি জায়গা করে নেয় স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের মাঝে।  অনেকে হয়তো টেরই পান না দূরত্বের এই উপস্থিতি। তাই ঘোচাতে হবে এই দূরত্বটাকে।  সময় দিতে হবে দুজন দুজনকে।

নতুন মানুষ, নতুন পরিবেশ, নতুন অভ্যাস।  হাজার আলোর সম্ভাবনা আর আশা নিয়ে সুখ সাগরে ভাসতে ভাসতে মনটাকে মাঝেমধ্যেই হোঁচট খেতে হচ্ছে।  বিয়ের পরে প্রত্যেকটা মানুষের জীবনেই কিছুটা পরিবর্তন অবশ্যই আসে।  আগের সেই অদম্য উচ্ছল জীবনে কোথাও যেন একটু ইতস্তত ভাব ক্ষণিকের জন্য হলেও জেগে ওঠে।  সত্যি কথা হলো, বিয়ের আগে যেভাবে চলা যেত বিয়ের পর কী সেই একই গতিতে চলা সম্ভব? এখানে নতুন দায়িত্ববোধের একটা ব্যাপার আপনাআপনিই এসে জড়িয়ে যায়।  অনেকের মনেই ভাবনা থাকে—বিয়ের পরে মানিয়ে নিতে পারব তো? আমাকে মানিয়ে নিতে পারবে তো সে? কেমন হবে তার চালচলন? বিয়ের পরে আমার উপরে আমার কর্তৃত্ব ফলাবে না তো? এমন নানা ধরনের আশঙ্কাই মনের কোণে উঁকিঝুঁকি দেয় তখন। এসব সমস্যার একমাত্র সমাধান সঙ্গীকে সময় দেওয়া। সুখী দাম্পত্যজীবন চাইলে বিয়ের পরে সংসারজীবনে স্বামী-স্ত্রীর একে অপরকে পর্যাপ্ত সময় দেওয়া উচিত।

একটা ঘটনা বলা যাক।  মিতু আর নিলয়ের নতুন বিয়ে হয়েছে।  ভীষণ ব্যস্ত দম্পতি ওরা।  একজন কর্পোরেট অফিসের উচ্চ পদস্থ অফিসার।  আরেকজন ব্যবসা চালায়।  একজনের যখন কাজের অবসর মেলে আরেকজন তখন অফিসের কাজে বিদেশ সফরে ব্যস্ত থাকে।  মাঝে মাঝে সহকর্মীদেরই স্বামী বা স্ত্রীর থেকে বেশি আপন মনে হয় ওদের। ধীরে ধীরে দু’জনের মধ্যকার দূরত্বটা যেন বেড়েই চলেছে।

যেখানে মিতু-নিলয় দম্পতিদের মতো স্বামী বা স্ত্রীর একজন বা দু’জনই চাকরি করেন সেখানে দু’জনার ব্যস্ততা থাকবে, ব্যস্ততার মধ্যে একটা ফারাকও থাকবে।  ব্যস্ততাকে দাম্পত্যের নিত্যসঙ্গী ধরে নিয়েই নিজেদের জন্য সময় বের করার প্ল্যানিং করুন।  দাম্পত্য যদি আপনার প্রায়োরিটি হয় তাহলে আপনি সফল হবেনই।  মনে করে দেখুন তো বিয়ের আগের দিনগুলো কেন একে অপরকে ভালো লেগেছিল।  হয়তো তার উদার মন, খোলা হাসি ভালো লাগত।  সেই পুরোনো ভালোলাগাগুলোই ধরে রাখার চেষ্টা করুন কিংবা রিক্রিয়েট করুন। সপ্তাহান্তে দু’জনে চলে যান ভালোলাগে এমন কোনো জায়গায়। সঙ্গে বন্ধুবান্ধব কাউকে নেবেন না।  সংসারী আলাপ বাদ দিয়ে এদিন হবে শুধুই আড্ডা। স্বাভাবিকভাবেই পুরোনো কথা ঘুরেফিরে আসবে।  তখন ভালোলাগা মুহূর্তগুলো শেয়ার করতে ভুলবেন না।  স্বামী যখন ট্রাভেল করছেন তখন মাঝে মাঝে তার সঙ্গী হতে পারেন। পুরোটা না হোক কিছুটা সময় তো একসাথে কাটবে।  নিজের লম্বা ট্যুর থাকলে স্বামীকেও সাথে নিন।  সন্ধ্যেটা একটু স্পেশাল করে প্ল্যান করুন।  সুস্বাদু ডিনার, সুন্দর কোনো গিফট আর লং ড্রাইভ—সম্পর্কের সুতোটাকে আরও মজবুত করে তুলবে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, দাম্পত্য জীবনে কোয়ালিটি টাইম বা গুণগত সময়ের খুব প্রয়োজন।  তাহলে অনেক ব্যস্ততার মধ্যে পুরনো সেই দিনের মতো এখনও ভালোবাসার রেশ থাকে সম্পর্কে।  সম্পর্কে ভালোবাসা রাখতে দুজন দুজনকে দিতে হবে সময়।  করতে হবে শ্রদ্ধা।

একটুকু সময় নিজেদের

সারা সপ্তাহেই ব্যস্ততা। এর মধ্যেও দুজন দুজনের জন্য খানিকটা সময় রাখতেই পারেন।  অফিস থেকে ফেরার পথে স্বামী-স্ত্রী কোনো কফি শপে গিয়ে কফিতে চুমুক দিতে দিতে কিছু মুহূর্ত কাটাতে পারেন। তখন সংসারের হালচাল, সন্তানের ভবিষ্যৎ কিংবা অফিসের সমস্যাগুলো ছাপিয়ে নিজেদের জন্য একটু সময় দিন। গুণগত সময় মানেই পরিবারের জন্য একান্ত কিছু সময়, যে সময়টুকুতে সব ধরনের সমস্যা দূরে সরিয়ে শুধু ভালোবাসার আবেশে থাকবেন দুজন।

দূরত্ব বুঝতে হবে

অনেকে তো বুঝতেই পারেন না, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে। ফলাফলে কারো কারো ক্ষেত্রে দেখা যায় দাম্পত্যে তৃতীয় ব্যক্তির প্রবেশ কিংবা ভার্চুয়াল জগতের হাতছানি। এটি যেন না হয়। হাজারো কাজের মধ্যে একটি দিন বেছে নিন। সেই দিনে স্বামী-স্ত্রী বাইরে ঘুরতে যেতে পারেন। রাতে ক্যান্ডেল লাইট ডিনার করতে পারেন। অল্প আয়োজনে রিকশায়ও আইসক্রিম খেতে খেতে গল্প করতে পারেন।  ছুটির দিনে কোথাও বেড়াতে না গেলেও সঙ্গীর সঙ্গে বাড়িতে বসে সিনেমা দেখতে পারেন। বন্ধুদের বাড়িতে নিমন্ত্রণ করতে পারেন।

কোয়ালিটি টাইম কথা

শুধু স্ত্রী একাই কোয়ালিটি টাইম নিয়ে ভাববেন, তা নয়। পারস্পরিক সম্পর্কের জন্য দুজনেরই সমানভাবে এগিয়ে আসতে হবে, বিশেষ করে স্বামীদের। তারা অনেক সময় মনে করেন, সব দায়িত্ব শুধু স্ত্রীদেরই। বিষয়টি তেমন হওয়া উচিত নয়। কেউ কেউ ভাবেন, দামি উপহার কিংবা কেনাকাটার টাকা দিয়ে দিলেই দায়িত্ব শেষ। বরং স্ত্রীকে হঠাৎ তার প্রিয় কোনো ফুল, বই বা ছোট্ট কিছু দিয়ে অবাক করে দিতে পারেন। ব্যস্ততার মধ্যেও যে তাকে মনে রেখেছেন, এতেই স্ত্রী খুশি হবেন। কাজ তো থাকবেই, তবুও অফিস থেকে ফিরে একসঙ্গে এক কাপ চা তো খাওয়াই যায়।

শ্রদ্ধা থাকুক পারস্পরিক

স্বামী-স্ত্রী সম্পর্কে শ্রদ্ধা! অবাক হতে পারেন। এটা তো শিক্ষক-ছাত্রের সম্পর্ক নয় রে বাবা।  কিন্তু মনে রাখতে হবে শ্রদ্ধাতে-ই শ্রাদ্ধ হয় না সম্পর্কের।  সঙ্গীকে সময় দিচ্ছেন, তার মনের চাওয়া-পাওয়াকে শ্রদ্ধা করেই তো ঘড়ির কাঁটার কাছ থেকে আপনার এই সময় ছিনিয়ে নেয়া।  তাই সবসময় শ্রদ্ধা থাকুক পারস্পরিক।

সম্পর্কটা থাক সতেজ
দম্পতি; হোক সে নতুন বা পুরোনো, সম্পর্ক হতে হবে সব সময়ই সতেজ।  স্নিগ্ধতায় ভরা।  মধুময়।  স্বামী কাজে ব্যস্ত।  দৈনিক আট ঘণ্টা অফিস শেষে বাসায় পৌঁছাতে আরও দেরি।  স্ত্রী সারা দিন বাসায় একা। টিভি দেখা, ম্যাগাজিন পড়া, ফোনে কিছুটা সময় কাটানো। তার পরও কিছু করার নেই।  সবাই ব্যস্ত।  এত ব্যস্ততার মধ্যে একাকিত্ব কাটানোর জন্য আপনি ফেসবুককে সঙ্গী করে নিলেন। ক্রমেই আপনার একাকিত্ব কেটে যেতে থাকল। স্ট্যাটাস দিচ্ছেন, চ্যাটিং করছেন, অন্যের স্ট্যাটাস ও ছবিতে লাইক করছেন, কমেন্টস করছেন—মনের ভাব বিনিময় হচ্ছে। বন্ধুত্ব গাঢ় হতে থাকল। এরপর সম্পর্ক শুধু ফেসবুকেই সীমাবদ্ধ থাকল না। ক্যাফে, শপিং মলে আড্ডাও চলে।  এখন স্বামীর অনুপস্থিতি নিয়ে অভিযোগ করেন না, কিন্তু একটা সময় যদি স্বামীর মনে খটকা লাগে বা নিজেই যদি আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে জিজ্ঞাসা করেন, তবে এই নতুন সম্পর্কের কী নাম দেবেন?
এ ধরনের সমস্যায় কি বৈবাহিক সম্পর্কে চিড় ধরবে আর নতুন সম্পর্ক অটল হয়ে থাকবে? অযথা সন্দেহের আবর্তে স্বামী-স্ত্রীর দূরত্ব কি বাড়তেই থাকবে?

দুজনে মিলে যা করতে পারেন
স্ত্রী যখন তাঁর বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে যেতে চান, তখন তাঁকে বাধা দেওয়ার কিছু নেই। এই স্বাধীনতা তাঁকে দিতে হবে। সবচেয়ে ভালো হয় স্বামী যদি একটু সময় বের করে স্ত্রীকে দেন। সময় অল্প হলেও আন্তরিকতা থাকলে বা কোয়ালিটি সময় দিলে স্ত্রীর মনে স্বামীকে নিয়ে আর খারাপ লাগা থাকবে না। কাজের ফাঁকে ছুটি নিয়ে কোথাও একবেলার জন্য ঘুরে আসতে পারেন। সব সময় যে কারণ ধরেই যেতে হবে এমন নয়, অকারণ পাগলামিতে অভিমানের বরফ গলে যায়।  আর ব্যস্ততার মাঝেও ফেসবুকে নিজেরা চ্যাটিং করতে পারেন।  নিজেদেরও সময় দিন। ঘরের মধ্যে নিত্যদিনের সংসারসঙ্গীর সঙ্গে সামাজিক মাধ্যমের খানিক সময়ের ভাববিনিময় আরও প্রাণময় করবে দুজনকে।

সচেতন থাকুন
নিজের মনের অগোচরে যদি কোনো নতুন ‘বিশেষ’ সম্পর্ক উঁকি দেয় বা দেওয়ার চেষ্টা করে, তাহলে প্রথমেই তা সামলে নিন। ফেসবুকসহ অন্য সব যোগাযোগমাধ্যমে নানা রকম প্রতারণা বাড়ছেই।   ফেসবুকে অনৈতিক নানা প্রস্তাবও পেতে পারেন বন্ধুদের কাছ থেকে। ইদানীং দেশেও এ চক্র সক্রিয়। মানবমনের আকাঙ্ক্ষা বড় বিচিত্র। মনে রাখতে হবে, এই চক্রগুলো সক্রিয় আমাদের নানা গোপন আকাঙ্ক্ষাকে ঘিরেই। এসব বিষয় সব সময় মাথায় রাখতে হবে।  স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের প্রতি সহনশীল ও আন্তরিক হতে হবে। পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও সহমর্মিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে । ক্ষণিকের ভুলে যেন সারা জীবন কষ্ট পোহাতে না হয়।  স্বামী-স্ত্রী পরস্পর খোলাখুলি আলাপ করতে পারেন।

যা কখনোই করবেন না
সংসার মধুময় বন্ধন। এ ধরনের ফেসবুক সম্পর্কের ক্ষেত্রে নির্মল বন্ধুত্বের সীমা কখনোই যেন অতিক্রম না করে।   জীবন চলার পথে পুরোনো কোনো ঘনিষ্ঠতম বন্ধুর সঙ্গে আবার আলাপ-পরিচয় হতেই পারে। এ নিয়ে আবেগের বাড়াবাড়িকে প্রশ্রয় দেবেন না। সহজভাবে নিন। ওই বন্ধুর কথা আপনার জীবনসঙ্গীকেও জানান। আড়াল করার দরকার নেই। বন্ধুকে বন্ধু হিসেবেই রাখুন।   ফেসবুক হোক আর ই-মেইলেই হোক, কোনো ধরনের বিব্রতকর অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হলে দ্রুত সঙ্গীকে জানান। দুজনে মিলে সিদ্ধান্ত নিন কী করবেন।
আপত্তিকর ছবিসংবলিত কোনো ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট এলে সেটা এড়িয়ে যান। এটাই সর্বোত্তম পথ।   যেসব একাউন্ট থেকে আপত্তিকর ছবি, বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য, সাম্প্রদায়িকতার বিষ ছড়ানো হয়, সেগুলো পরিহার করুন।

ট্রেডিশনাল ঘটক বনাম বিবাহবিডি ডট কম

একজন প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ ও নারীর জীবনে অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি সিদ্ধান্ত হচ্ছে ‘বিবাহ’ এবং দাম্পত্য জীবন নিয়ে প্রতিটি মানুষের থাকে বিভিন্ন রকম আশা ও স্বপ্ন। একটি বিয়ে শুধু দুজন ব্যক্তির মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং তৈরী করে দুটি পরিবারের মধ্যে সামাজিক বন্ধন। তাই একটি পরিবার সামাজিক ভাবে আরেকটি পরিবারের সাথে বন্ধন তৈরীর পূর্বে অনেক হিসেব নিকেশ করে থাকে।  এজন্য সঠিক ও যোগ্য পাত্র/পাত্রী নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রতিটি পরিবার নিজেদের চাহিদাকেই প্রাধান্য দিয়ে থাকে বারংবার, এক্ষেত্রে অতিরিক্ত আবেগ বা আপোসকামীতা বয়ে আনতে পারে দুটি জীবনে অসহনীয় যন্ত্রনা ।

পরিবারের কোন সদস্যের বিয়ের জন্য উপযুক্ত সঙ্গী নির্বাচনে আমরা সাধারনত সাহায্য নিয়ে থাকি নির্ভরযোগ্য কোন মাধ্যমের। কখনো তা নিকট আত্মীয়, কখনো প্রফেশনাল ঘটক, আবার কখনো প্রযুক্তি নির্ভর অনলাইন ম্যাট্রিমনিয়াল ওয়েব পোর্টালের।

প্রশ্ন হচ্ছে সম-সাময়িক বিবেচনায় ঘটক কিংবা ম্যাট্রিমনিয়াল ওয়েব পোর্টাল বিবাহবিডি ডট কমের মধ্যে কোনটি বেশী গ্রহন যোগ্য, আস্থাশীল এবং দ্রুততর? বিবাহবিডি উপস্থাপন করছে এমনই তুলনামূলক কিছু তথ্য যা আপনাদের প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে সহায়ক হবে।

আসুন দেখি একটি তুলনা মূলক পার্থক্য –

১।  নিবন্ধনঃ


ঘটক: একজন শহরের প্রফেশনাল ঘটকের কাছে পাত্র-পাত্রীর বায়োডাটা জমা দেয়ার সময় নিবন্ধন ফী হিসাবে প্রথমেই এককালীন ফী দিতে হয় যা ক্ষেত্র বিশেষে ৩ থেকে ১৫ হাজার পর্যন্ত হয়ে থাকে।

বিবাহবিডি ডট কম: বিবাহবিডি ডট কম মূলত পাত্র-পাত্রী খোঁজার ও সরাসরি নিজেরাই যোগাযোগ করার জন্য বিশেষ ভাবে তৈরি করা একটি অনলাইন বেইজ সার্চ ইঞ্জিন। এখানে রেজিষ্ট্রেশন সম্পূর্ন ফ্রী। যে কেউ বিশ্বের যেকোন প্রান্ত থেকে সহজেই ফ্রী রেজিষ্ট্রেশন করতে পারে। এক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা, প্রফেশন, প্রোফাইল ভ্যারিফিকেশন এর উপর ভিত্তি করে বিবাহবিডি একটি ইউজার গ্রেড নিশ্চিত করে তারপরই প্রোফাইল এক্টিভেট করে এবং ৩ দিনের ফ্রী ট্রায়াল মেম্বারশীপ প্রদান করে, যেনো ব্যবহারকারী লগিন করে পছন্দের প্রোফাইল গুলো দেখে সহজেই বাছাই করতে পারে।

২।  পছন্দ ও যোগাযোগঃ


ঘটক: এক জন ঘটকের কাছে নিবন্ধন পরবর্তীতে প্রতিবার পাত্র-পাত্রীর সন্ধান ও মুখোমুখি সাক্ষাতের জন্য আপনাকে গুনতে হবে ২ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত।  ফলে আপনি চাইলেও সময় ও অর্থের কথা ভেবে খুব বেশী যাচায় বাছাই করার সুযোগ পাবেন না।  এক্ষেত্রে আপনার পছন্দের ব্যাপারে ঘটকের উপরই নির্ভর করতে হবে।  নিত্যনতুন বায়োডাটা দেখতে ও নিজেরাই পাত্র-পাত্রী কিংবা অভিভাবকের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করার কোন সুযোগ ঘটকের কাছ থেকে পাওয়া যায় না।

বিবাহবিডি ডট কম: বিবাহবিডি পাত্র পাত্রীর মধ্যে কোন রকমের মধ্যস্থতা করে না। এখানে আপনি নিজেই ঘরে বসেই কম্পিউটারে/মোবাইলে বিবাহবিডির ডাটাবেইজের সর্বশেষ সংগ্রহিত/ এক্টিভেট করা প্রোফাইল গুলো দেখে পাত্র-পাত্রী কিংবা তাদের অভিভাবকের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারবেন। এজন্য বিবাহবিডিতে রয়েছে ৪ টি সহজলভ্য বিভিন্ন মেয়াদী মেম্বারশীপ প্যাকেজ। যার মাধ্যমে পাত্র-পাত্রীর পরিবার একে অন্যের সাথে তাৎক্ষনিক যোগাযোগ করতে পারে।

৩।  বায়োডাটা সংগ্রহ ও ব্যাপ্তিঃ


ঘটক: একজন ট্রেডিশনাল ঘটক নির্দিষ্ট একটি এলাকা/মহল্লার মধ্য সীমিত তথ্য নিয়ে তার পেশাগত দায়িত্ব পালন করে থাকে এবং অতি সনাতন পদ্ধতিতে।

বিবাহবিডি ডট কম:  বিবাহবিডি সম্পূর্ন অনলাইন ভিত্তিক সেবা নিশ্চিত করে। তাই বিশ্বের যেকোন দেশ ও দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে  পাত্র-পাত্রী বা অভিভাবকেরা প্রোফাইল দেখে নিজেরাই সরাসরি যোগাযোগ করতে পারে।  তাই এর ব্যাপ্তি বিশ্বব্যাপী এবং তা সমকালীন একটি আধুনিক সেবা।

৪।  বায়োডাটার তথ্য যাচাই ও সত্যতাঃ


ঘটক: প্রফেশনাল ঘটকের কাছে যে বায়োডাটা থাকে তা কতটুকু গ্রহনযোগ্য, তার সত্যতা নিয়ে আপনার সংশয় থাকতে পারে।  এবং একজন ঘটক কখনোই তার গ্রাহক প্রদত্ত বায়োডাটা গুলোর ভেরিফিকেশনের দায়িত্ব নেয় না।

বিবাহবিডি ডট কম: বিবাহবিডি প্রোফাইল এক্টিভেট/সক্রিয় করার পূর্বে নিজস্ব কাষ্টমার সাপোর্ট টিম দ্বারা তা ভেরিফাই করে এবং পাত্র/পাত্রী ও অভিভাবকের সম্পৃক্ততা নিশ্চিত হওয়ার তারপরই একটি প্রোফাইল একটিভ করে।  এক্ষেত্রে প্রোফাইল ভেরিফিকেশনের  জন্য জাতীয় পরিচয় পত্র / জন্ম নিবন্ধন / একাডেমিক সার্টিফিকেট/ প্রবাসীদের জন্য ভিসা, পাসপোর্ট / ডিভোর্সদের জন্য ডিভোর্স সার্টিফিকেট যাচাই করন বিবাহবিডিতে বাধ্যতামূলক।

৫।  প্রোফাইল সার্চ ও ম্যাচমেকিং :


ঘটক: সাধারনত একজন ঘটক তার কাছে থাকা সীমিত বায়োডাটার মধ্যেই আপনার সঙ্গী খুঁজার জন্য আপনাকে বিভিন্ন ভাবে প্রভাবিত করে থাকে এবং এতে ক্ষেত্র বিশেষে ভুল সঙ্গী বাছায়ের সম্ভাবনা থাকে।

বিবাহবিডি ডট কমবিবাহবিডিতে আপনি আপনার পছন্দের প্রফেশন, পাত্র-পাত্রীর শিক্ষাগত যোগ্যতা, জেলা, আর্থিক অবস্থা, বৈবাহিক অবস্থা, বর্তমান অবস্থান, বর্ন, গোত্র, ধর্ম সহ ১৮ টি সার্চ ক্যাটাগরীর মাধ্যমে চাহিদা অনুযায়ী কাংখিত সংঙ্গীকে সহজেই খুঁজতে সক্ষম হবেন।  তাছাড়া আপনার প্রদত্ত সঙ্গী বাছাইয়ের বিবরন ( পার্টনার প্রেফারেন্স) এর সাথে মিলিয়ে বিবাহবিডি সার্চ ইঞ্জিন স্বয়ংক্রিয় ভাবে ডাটাবেইজের সেই সব প্রোফাইল খুঁজে আপনার সামনে এক নিমিষেই হাজির করে।

৬।   বিবাহ ঠিক হলে সার্ভিস চার্জঃ


ঘটক: একজন ঘটকের মাধ্যমে বিবাহ সম্পাদনের পর আপনাকে মোটা অংকের চুক্তি ভিত্তিক অর্থ প্রদান করতে হয়, যা ২০ হাজার থেকে কখনো লাখ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।

বিবাহবিডি ডট কম: বিবাহবিডি থেকে আপনি জীবন সঙ্গীখোঁজে পাবার পর বিবাহবিডি আপনার কাছে কখনোই কোন সার্ভিস চার্জ দাবি করবেনা। বরংচ বিবাহবিডিতে আপনার সাকসেস ষ্টোরী শেয়ার করলে বিবাহবিডিই অাপনাকে অভিনন্দন জানিয়ে আপনার ঠিকানায় গিফট পাঠাবে।

সম্মানিত পাঠক, আশাকরি আপনারা উপরোক্ত অালোচনা ও পার্থক্য গুলো থেকে সহজেই সঠিক বিষয়টি অনুধাবন করে নিজেরাই যথাযথ সিদ্ধান্তে উপনিত হতে সক্ষম হবেন।

পারিবারিক বিয়ে বনাম প্রেমের বিয়ে

দৃশ্য ১ঃ  রাত ৯ টা।  রুমা একা বসে অপেক্ষা করছে শাহেদের জন্য। এরই মধ্যে ৫ বার ফোন দেয়া হয়ে গেছে অথচ শাহেদ ফোন ধরেওনি বা কলব্যাক করেনি।  অথচ বিয়ের আগে শাহেদ এমন ছিল না।  টানা ৩ বছরের প্রেম তারপর বিয়ে। তখন তো প্রতি আধাঘন্টায় একবার ফোন করত।  বিয়ের পর সব কেমন যেন আলাদা।

দৃশ্য ২ঃ  রুপম এক বন্ধুর বাড়ীতে। অনেকদিন পর পুরনো বন্ধুরা সব এক সাথে হয়েছে। চুটিয়ে তাস খেলা হচ্ছে।  কিন্তু রুপম একটু বিরক্ত সাথীর ওপর। একটু পর পর কল দিয়ে যাচ্ছে। অথচ রুপম আগেই বলেছিল আজ বাসায় ফিরতে দেরী হবে, তারপরও ফোন দেয়ার কি মানে। বিয়ের আগে ৪ বছর যেমন করত এখন কি তেমন করার কোন মানে হয়। বন্ধুদের সাথে একটু শান্তিতে সময় কাটাতে দিবে না।

দৃশ্য ৩ঃ একবছর হল তিথির সংসার কিন্তু আজো সে কবির কে বুঝতে পারলো না। না ভালোবাসার বিয়ে না।  দুই পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে।  তিথি আগেই ঠিক করে রেখেছিল যে অনেক ত্যাগ করতে হবে, কিন্তু এই একবছরে সম্পর্ক এক ইঞ্চিও উন্নতি হয়নি। এখন ভাবে বিয়ের আগে প্রেম থাকা বা অন্তত পরিচয় থাকাটা খুব জরুরী।

দৃশ্য ৪ লিখলাম না কারন এটাই আলোচনার বিষয়।  কোন ধরনের বিয়ে ভালো, প্রেমের বিয়ে না পারিবারিক? এই প্রশ্নটা শুধু আমার না, বরং আরো অনেকের। রীতিমত বই লিখে ফেলা হয়েছে। বেশীর ভাগ মানুষ মনে করে (সারাবিশ্বের) যে প্রেম করে বিয়ে করাটা নিরাপদ। তাতে জেনে, শুনে, বুঝে একজনকে বিয়ে করা যায়।  কিন্তু লাখ টাকা দামের প্রশ্ন হলো তাহলে প্রেমের বিয়েতে বিচ্ছেদের হার পারিবারিক বিয়ের দশগুন বেশী কেন?

প্রেমেরবিয়ে ছেলে এবং মেয়ে পস্পরকে চেনা ও জানার অধিক সুযোগ এবং স্বাধীনতা দেয়। তারা পস্পরকে অনেকদিন ধরে জানে বোঝে, পস্পরের শক্তি এবং দুর্বলতা সমন্ধে নিশ্চিত হয় এবং তারপর তারা ঘর বাঁধার কথা ভাবে। তাই স্বাভাবিক ভাবে বিয়ের পরের জীবনে তারা এইভাবে চলতে পারে এবং যে কোন সমস্যা, বিপদে আপদে পাশে দাড়াতে পারে। পস্পরের পছন্দ অপছন্দ সমন্ধে জানা থাকায় সেভাবে মেনে চলতে কোন সমস্যা হয়না। তাই তারা খুব সহজেই মানিয়ে চলতে পারে। তাই বিবাহিত জীবন তাদের জন্য স্বর্গীয় প্রমানিত হয়। কিন্তু বাস্তব চিত্র পুরোই আলাদা।

পক্ষান্তরে, পারিবারিক বিয়ের প্রেক্ষাপট পুরো আলাদা।  ছেলে মেয়ে পস্পরকে ভালোভাবে চেনেনা জানেনা। তারা সব সময় দ্বিধার মধ্যে থাকে।  কারন, জানে না কার কোনটা ভালো লাগবে, কোনটা লাগবে না। কে কি পছন্দ করে আর কোনটা করে না। তাই একে অন্যকে সাহায্য সহযোগীতা করতে সমস্যা হওয়ার কথা।  বিবাহিত জীবন কাদের কাছে যন্ত্রণার আরেক নাম হওয়ার কথা। কিন্তু বাস্তব তা বলে না, অন্ততঃ পরিসংখ্যান।

এ বিষয়ে সমাজ বিজ্ঞানী, বিশেষজ্ঞ, কলামিস্ট সহ বহু লোক বহু কথা বলেছে এবং তাদের কথা গুলো আমার কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন মনে হয়েছে।  তাদের মতে সফল বিয়ের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন দুইটা বিষয় হল ত্যাগ এবং অভিযোজন ক্ষমতা। প্রেমের বিয়েতে পরস্পরের প্রতি পরস্পরের চাহিদা অত্যন্ত বেশী থাকে এবং চাহিদা ও প্রাপ্তির মধ্যে যে ব্যাপক দুরত্ব দেখা দেয় তা দূর করার সামর্থ্য তাদের থাকে না। যার পরিনতি সম্ভাব্য বিচ্ছেদে গড়ায়।  পক্ষান্তরে, পারিবারিক বিয়েতে চাহিদা সর্বনিম্নস্তরে থাকে যে কারনে অপ্রাপ্তির বেদনা সহসাই আসেনা। প্রেমের বিয়ে এবং পারিবারিক বিয়ের কিছু সম্ভাব্য বিশ্লেষন নিম্নরূপ।

ভালোবাসা কি? মস্তিস্কের নিউরনে কিছু রাসাযনিক বিক্রিয়া। প্রকৃতিকে তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে হবে, যার জন্য তার দরকার নতুন প্রাণ।  তাই যখনি মানব সম্প্রদায় সেই সক্ষমতা লাভ করে তার ভেতর সেই বিক্রিয়া শুরু হয়। তাই আমরা সিনেমার মত অপেক্ষা করতে শুরু করি সঠিক মানুষটির জন্য। কিন্তু জীবন সিনেমা নয় তাই মানুষটি সঠিক কিনা সহসাই বুঝতে পারিনা, কারন মস্তিস্কের সেই রাসায়নিক বিক্রিয়া।  আমার এই লেখার মূল উদ্দেশ্য পারিবারিক বিয়ের সাফল্যের রহস্য কারন তার মূলেই আছে প্রেমের বিয়ের ব্যর্থতার কারন।

পারিবারিক বিয়ের সপক্ষে ও বিপক্ষে কিছু কথাঃ

সপক্ষেঃ
১) আধুনিক পারিবারিক বিয়েতে সঠিক পাত্র খুজে বের করার জন্য সম্ভাব্য সকল বিষয় বিবেচনা করা হয়। ছেলে বা মেয়ে কি করে, ছেলে ও মেয়ের পরিবার, শিক্ষা, অর্থ, সামাজিক গ্রহনযোগ্যতা, চরিত্র ইত্যাদি ইত্যাদি। যার ফলে জুটির সফল হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।
২) যেকোন সমস্যা, বিপদে আপদে তারা পরিবারের পুরো সহযোগীতা পায়, যার ফলে সম্পরক সহজে ভেঙ্গে পড়েনা।
৩) ছেলে এবং মেয়ের পরিবারের ভেতর আর্থ-সামাজিক, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক মিল থাকার কারনে তাদের অভিযোজন করতে বা মানিয়ে নিতে সুবিধা হয়।
৪) এ ধরনের বিয়ে তখনি হয় যখন ছেলে ও মেয়ে বিয়ের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত থাকে।

বিপক্ষেঃ
১) জোর করে বিয়ে দেয়ার মতো দুর্ঘটনা ঘটে, যার পরিনতি ভয়ঙ্কর হয়।
২) অনেক ক্ষেত্রে ব্যবসায়িক বা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য বিয়ে দেয়া হয় যা অসুখী দাম্পত্য জীবনের সূত্রপাত ঘটায়।

যুক্তরাষ্ট্রে আয়োজনের বিয়েতে সাফল্যের হার ৯৫% যেখানে প্রেমের বিয়েতে যা ৪৫-৫০%।

পারিবারিক বিয়েতে কি মেয়েদের অসম্মান করা হয়?
হয়তো, তবে প্রেমের বিয়ের ক্ষেত্রে পশ্চিমা মেয়েদের যে পরিমান কষ্ট করতে হয় তার তুলনায় অনেক কম। কারন পশ্চিমা ছেলেরা মেয়ের শিক্ষা, গুন, যোগ্যতা কিছুই দেখে না।  শুধু দেখে মেয়ের ফিগার কেমন। পশ্চিমে তাই মোটা মেয়েদের বিয়ে হয়না।  মেয়েরা প্রচুর পরিশ্রম করে নিজেদের ফিগার ঠিক রাখার জন্য।  আমাদের সমাজে মেয়ের চোখ, নাক, দাঁত দেখে ঠিক ই কিন্তু এটাও ঠিক যে সেই সাথে মেয়ের গুন, শিক্ষা, পরিবার দেখেও বিয়ে হয়।  এখানে তা হয় না।  শরীর সব কথার শেষ কথা।  এখানে ছেলেরা মেয়েদের টীজ করে না ঠিক ই তবে তাদের শরীর নিয়ে খুব স্বাভাবিকভাবে কথা বলে যা আজো আমরা বলতে পারিনা।  কারন এটাই এখানে স্বাভাবিক।

পারিবারিক বিয়ে অনেক ক্ষেত্রেই মেয়েদের সম্মান, সামাজিক, অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। তবে পারিবারিক বিয়ে কখনোই সুখী বিবাহিত জীবনের নিশ্চয়তা প্রদান করেনা। তবে এটাই অত্যধিক সফল।

বিবাহ বিচ্ছেদের কারন সমূহঃ
বিবাহ পরবর্তী জীবনে যে পরিবর্তন আসে না সহজে মানুষ মেনে নিতে পারেনা। কারন প্রেমের সময় মানুষের ভেতর যে আবেগ কাজ করে তা আস্তে আস্তে কেটে যেতে শুরু করে এবং বাস্তবতার নিরীখে পরস্পরকে বিচার করতে শুরু করে যা তাদের আগের নিরীক্ষার সাথে মেলেনা। শারীরিক ভালোবাসা বাস্তবের প্রয়োজনের কাছে পরাজিত হতে শুরু করে।  তাছাড়া বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় মানুষ দুটি ভিন্ন ভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক পটভূমির, যা তাদের অভিযোজন করতে বেশ কষ্ট হয়।  প্রেমের ক্ষেত্রে মানুষ বিশ্বাস করে যে তাদের ভালোবাসা যেকোন পাহাড় পাড়ি দিতে পারবে কিন্তু বাস্তবে তারা পস্পরকে নতুন করে চিনতে শুরু করে এবং প্রত্যাশা এবং প্রাপ্তির বিশাল ঘাটতি তাদের দ্রুত মাটিতে নেমে আস্তে বাধ্য করে।

কিন্তু পারিবারিক বিয়েতে আভিযোজন করতে সুবিধা হয় কারন তারা প্রায় এক ই পরিবেশে মানুষ, তাছাড়া তাদের ভেতর পরস্পরকে চেনার এবং জানার যে প্রয়োজন কাজ করে তা তাদের ত্যাগ এবং অতিরিক্ত আকাংক্ষার ঘুড়িতে লাগাম দেয়। তারা পস্পরের ভুল ত্রুটি গুলোকে স্বাভাবিক ভাবে নিতে পারে। বিয়ের আগে ও পরের তুলনায় যেতে পারে না।

কিছু কারন:
১. বিয়ের আগের এবং পরের জীবনে যে পার্থ্যক্য তার সাথে মানিয়ে নিতে না পারা।
২. প্রেমের বিয়েতে ছেলে এবং মেয়ের প্রায় সমবয়সী হয়। তাদের মানসিক বয়স সমান হয়না। তাই অনেক ক্ষেতে দেখা যায় ছেলেটি বিয়ের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত নয়।
৩. প্রেমের বিয়েতে যৌনতা বড় ভূমিকা রাখে। দেখা যায় তারা এই প্রযোজন পূরনে দ্রুত বিয়ে করে ফেলে যখন তারা সংসার করার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত নয়।
৪. ভিন্ন সামাজিক পরিবেশের মানুষ তখন অন্যের পরিবেশে অসচ্ছন্দ বোধ করা শুরু করে। ফলে পরিবারের সাথে দূরত্ব সৃ্টি হয় যার পরিনতিতে নিসঙ্গতা এবং দাম্পত্য জীবনে দূরত্ব।
৫. সঙ্গীকে ধোঁকা দেয়া বিবাহ বিচ্ছেদের অন্যতম প্রধান কারন। স্বামী বা স্ত্রীর বাইরে মানুষের একাধিক মানসিক বা শারীরিক সম্পরক থাকতে পারে। আমাদের দেশে এ ব্যাপারে কোন পরিসংখ্যান নেই, তারমানে আমরা এমন না তা ভাবার কোন কারন নেই। যারা এ ব্যাপারে পরিসংখ্যান আছে তা শুনলে বেশ ভয় পাবার কথা। আমেরিকার ৯০% মানুষ পরকীয়া প্রেমে বিশ্বাসী যাদের মধ্যে ৩৭% পুরুষ এবং ২২% মেয়ে তাদের সঙ্গীকে ধোঁকা দেয়। যুক্তরাজ্য এবং কানাডার পরিসংখ্যান প্রায় এক ই।

উপমহাদেশে বিবাহবিচ্ছেদ বৃদ্বির কারন সমূহঃ
আমাদের উপমহাদেশে বিবাহ বিচ্ছেদের হার কত বেড়েছে তা ঠিক বলতে পারব না তবে গত দশকের চেয়ে তা প্রায় ৯% বেড়েছে। কারন গুলো মোটামুটিঃ
১. বিবাহবিচ্ছেদের সামাজিক গ্রহন যোগ্যতা বৃদ্ধিঃ আমাদের সমাজে বিবাহ বিচ্ছেদ কে এখন স্বাবাভিক ভাগে গ্রহন করতে শুরু করেছে, তাই আগে যারা শুধু সমাজের কথা চিন্তা করে কষ্টকর জীবন টিকিয়ে রাখতো তারা তা না করে ভেঙ্গে দিচ্ছে যা আমাদের সমাজ ব্যবস্থার উন্নতি একটি ভালো লক্ষন।
২. মেয়েদের অর্থনৈতিক স্বাধীনতাঃ মেয়েদের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে, যে কারনে তারা অসুখী দাম্পত্য জীবন টিকিয়ে রাখতে উৎসাহী নয়।
৩. নিসঙ্গতাঃ যৌথ পরিবার ব্যবস্থা ভেঙ্গে পরায় মানুষ এখন অনেক বেশী নিসঙ্গ আর বর্তমান অর্থনৈতিক ব্যবস্থার সাথে তাল মিলিয়ে চলতে তাদের পস্পরকে সময় দিতে ব্যর্থতা।  যার পরিনতি বিবাহ বিচ্ছেদ।
৪. বিয়ের ব্যাপারে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনঃ বিয়ের ব্যাপারে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে যার ফলে বিয়ে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজনীয় উদ্যো্গ নিতে অনেকেই অনুৎসাহী।
৫. কর্মজীবি স্বামী-স্ত্রীঃ স্বামী স্ত্রী উভয়েই কাজ করার কারনে তারা পস্পরকে সময় দিতে পারে না, তাছাড়া সংসারের কাজের দায়িত্ব ভাগাভাগিতে অনীহা।  অফিসের কাজের ব্যাপক চাপ যা প্রভাব দাম্পত্য জীবনে যার পরিনতি ঝগড়া, কলহ এবং বিচ্ছেদ।
৬. পেশাগত প্রতিদ্বন্দীতাঃ পেশাগত প্রতিদ্বন্দীতা বিবাহ বিচ্ছেদের বড় কারন যেটা মূলতঃ শহর এলাকায় দেখা যায়। তবে সবচেয়ে প্রকট পশ্চিমে। ছেলেরা সাধারনত তাদের চেয়ে বেশী আয় করে এমন মেয়ের সাথে সংসার করতে সাচ্ছন্দ্য বোধ করে না এবং মেয়েরা তাদের চেয়ে নিম্ন আয় করে এমন ছেলেকে স্বামী হিসেবে সম্মান করতে পারে না। যার কারনে বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে উচ্চ আয়ের মেয়েরা সারাজীবন সংসার করতে পারে না।

সারা বিশ্বে বিবাহ বিচ্ছেদের হার ঃ
MAP:
Divorce Rates Around The World  By Pamela Engel, May 25, 2014
বিজনেস ইন্সাইডার ডট কম এর প্রতিবেদন

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ডিভোর্সের কারনঃ

বিবাহবিডি ডট কম, সম্প্রতি “বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিবাহ বিচ্ছেদের কারণ নির্নয়” শিরোনামে প্রশ্ন ভিত্তিক একটি জরিপ পরিচালনা করে।  এতে অংশ গ্রহন করেন ৪১২ জন।  যার মধ্যে ছিলেন দাম্পত্য জীবনে বিচ্ছ্যেদ নেয়া ১০৪ জন ব্যাক্তি।   উক্ত জরিপের তথ্য থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, বিচ্ছেদের হার সবচেয়ে বেশী বিভাগীয় ও জেলা শহরে বসবাসকারীদের মাঝে যা যথাক্রমে বিভাগীয় শহরে ৪৯.০৩ % ও জেলা শহরে ৩৫.৫% ।

এবং উচ্চ শিক্ষিত নাগরিকদের মাঝেই বিচ্ছেদের প্রবনতা উল্লেখযোগ্য হারে বেশী – যা উচ্চতর ডিগ্রী ৪৯.৪২%, স্নাতক / সম্মান / সমসমান ৩৬.৫৮% , উচ্চ মাধ্যমিক বা সম সমান ৯.২% ।  জরিপে অংশগ্রহনকারীদের মধ্যে ৫৮.৬৫% চাকুরীজীবি ও ২০.১৯% ব্যবসায়ী তাছাড়াও  ৪.৮১% প্রবাসে কর্মরত রয়েছেন।  যাদের অর্থনৈতিক অবস্থা মধ্যবিত্ত ৭২.১২ %,  নিম্ন মধ্যবিত্ত ১৭.৩% , উচ্চ বিত্ত ৪.৮% ও নিম্ন বিত্ত ৭.৭৬% ।

জরিপে অংশগ্রহনকারী (৪১.৪% যৌথ পরিবার, ৫৯% একক পরিবার থেকে আসা ) ডিভোর্স ব্যাক্তিদের প্রশ্ন করা হয় কিভাবে তাদের সংগীর সাথে পরিচয়ের সুত্রপাত (বিয়ের সম্মন্ধ) হয়েছিলো।  এর মধ্যে,  ৩০.৭৬% এর পরিচয় হয় নিকট আত্মীয়দের মাধ্যমে, ২৫ % এর পরিচয় হয় ট্রেডিশনাল ঘটকের সাহায্যে, ও ৪৩.৩% প্রেম ঘটিত পরিচয় ও অনলাইন ম্যাট্রিমনি বা স্যোশাল মিডিয়ায় পরিচয় হয় মাত্র ১.৯২% ।

অংশগ্রহন কারী ৪৬% মনে করেন সঙ্গীর সাথে বয়সের পার্থ্যক্য ৫ বছরের কম হওয়া ভাল আর ৩১% মনে করেন সঙ্গীর সাথে বয়সের পার্থ্যক্য ১০ বছরের বেশী হওয়া উচিত নয়।  তবে বেশীর ভাগ অংশগ্রহন কারীই মনে করেন, অতিরিক্ত বয়সের পার্থ্যক্য বিবাহ বিচ্ছেদের অন্যতম কারন নয়।

জরীপে অংশগ্রহনকারীদের প্রশ্ন করা হয় – কোন বিষয় গুলো আপনার সাথে ঘটলে আপনি একেবারেই সহ্য করবেন না, প্রয়োজনে বিচ্ছেদ চাইতে পারেন এর প্রতি উত্তরে উঠে আসে প্রধান ৮ টি বিষয়

১) পরকীয়া ২) ক্রমাগত ভুল বুঝাবুঝি ও দুরত্ব বৃদ্ধি ৩) সংসারে কাজ কর্মে তীব্র অনিহা, সঙ্গীকে যথাযথ মূল্যায়ন না করা ৪) আসক্তি (মাদক / নারী / পরপুরুষ / জুয়া) ৫) মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন ৬) সঙ্গীর প্রতি অতিরিক্ত সন্দেহ প্রবনতা ৭) স্বামী বা স্ত্রীর পরিবার হতে দুর্ব্যবহার বা অবমূল্যায়ন ৮) সঙ্গীর একঘেয়ে স্বভাব বা একক কর্তৃত্ব পরায়নতা।   তাছাড়াও সন্তান ধারনে অক্ষমতা বা সন্তান ধারনে সঙ্গীর দ্বিমত পোষণ, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম / ভারতীয় টিভি সিরিয়াল বা বিদেশী সংস্কৃতির অতিরিক্ত প্রভাব বা আসক্তির মত বিয়য়গুলোও জরিপে উঠে আসে।

জরীপে অংশগ্রহনকারীদের কাছে সর্বশেষ জানতে চাওয়া হয় কোন ৫টি বিষয় বিচ্ছেদ এড়াতে পারে বলে আপনি মনে করেন? এর মধ্যে ৫ টি বিষয় ক্রমান্বয়ে যে বিষয় গুলো ঊঠে আসে –

১) একে অপরকে সম্মান করা ২) সঙ্গীর সাথে বিশ্বস্ত থাকা ৩) আপস করার মানসিকতা ৪) সঙ্গীর সাথে মিথ্যাচার না করা ৫) সঙ্গীকে কখনো অবজ্ঞা বা অবহেলা না করা।


বিবাহবিডি ডট কম এর জরিপ তথ্যঃ

বিবরন সকল অংশগ্রহনকারী  (৪১২ জন) ডিভোর্স গ্রহনকারী (১০৪ জন)
অংশগ্রহন কারী পুরুষ – ৭৬.৫%
নারী-  ২৩.৫%
পুরুষ – ৭৮.৪৫%
নারী-  ২১.৫৫%
অংশগ্রহনকারীদের বয়স ১৮-২৪ বছর = ৬.২%
২৫-৩৫ বছর = ৬৪.৯%
৩৬-৫৫ / এর অধিক =  ২৮.৯%
১৮-২৪ বছর = ৩৮.৪৬%
২৫-৩৫ বছর = ৫২.৮৮%
৩৬-৫৫ / এর অধিক =  ৮.৬৫%
অংশগ্রহনকারীদের অবস্থান ৬১.৫ % বিভাগীয় শহরে
২৩.২% জেলা শহরে
১১.৮% উপজেলা শহরে
৩.৫% ইউনিয়ন / গ্রামে
৪৯.০৩ % বিভাগীয় শহরে
৩৫.৫% জেলা শহরে
১৩.৪৬% উপজেলা শহরে
১.৯২% ইউনিয়ন / গ্রামে
অংশগ্রহনকারীদের
শিক্ষাগত যোগ্যতা
৪৪.৩% উচ্চতর ডিগ্রী
৪১.৯% স্নাতক / সম্মান / সমসমান
৯.৯% উচ্চ মাধ্যমিক সম সমান
৩.৯% উচ্চ মাধ্যমিক এর নীচে
৪৯.৪২% উচ্চতর ডিগ্রী
৩৬.৫৮% স্নাতক / সম্মান / সমসমান
৯.২% উচ্চ মাধ্যমিক সম সমান
৪.৮% উচ্চ মাধ্যমিক এর নীচে
অংশগ্রহনকারীদের
বৈবাহিক অবস্থা
৫০.৪ % বিবাহিত
২২% অবিবাহিত
২৫.৭% ডিভোর্স
১.৯% বিধবা / বিপত্নীক
১০০% ডিভোর্স
অংশগ্রহনকারীদের
পেশা
৫৯.২% চাকুরীজীবি
১৬.৬% ব্যবসায়ী
১৩.১% বেকার ( নারী)
৮.৬% অধ্যয়নরত
২.৬% প্রবাসে কর্মরত
৫৮.৬৫% চাকুরীজীবি
২০.১৯% ব্যবসায়ী
১৫.৩৮% বেকার
০.৯৬% অধ্যয়নরত
৪.৮১% প্রবাসে কর্মরত
অংশগ্রহনকারীদের
পরিবারের ধরন
৬৫.৪% একক পরিবার
৩৪.৬% যৌথ পরিবার
৪১.৪% যৌথ পরিবার
৫৯% একক পরিবার
অংশগ্রহনকারীদের
আর্থিক অবস্থা
৭৩.৭ % মধ্য বিত্ত
২০.৬% নিম্ন মধ্যবিত্ত
৪.৬% উচ্চ বিত্ত
১.১% নিম্ন বিত্ত
৭২.১২ % মধ্য বিত্ত
১৭.৩% নিম্ন মধ্যবিত্ত
৪.৮% উচ্চ বিত্ত
৭.৭৬% নিম্ন বিত্ত
আপনি কি মনে করেন আর্থিক অসচ্ছলতা  বিবাহবিচ্ছেদের একটি কারন ৬০.৮% এ প্রশ্নে একমত নয়
৩৯.২% মনে করেন আর্থিক অসচ্ছলতা বিবাহবিচ্ছেদের একটি কারন হতে পারে
৫৮.৮% এ প্রশ্নে একমত নয়
৪১.২% মনে করেন আর্থিক অসচ্ছলতা বিবাহবিচ্ছেদের একটি কারন হতে পারে
জীবন সংগীর সাথে পরিচয়ের সুত্রপাত নিকট আত্মীয়দের মাধ্যমে ২৭.১%
ঘটকের সাহায্যে ১৩.৭ %
প্রেম ঘটিত ৩৭.৪%
অনলাইনে পরিচয়ঃ ৩.৪%
অবিবাহিত / প্রযোজ্য নয় ১৮.৪%
নিকট আত্মীয়দের মাধ্যমে ৩০.৭৬%
ঘটকের সাহায্যে ২৫ %
প্রেম ঘটিত ৪৩.৩%
অনলাইনে পরিচয়ঃ ১.৯২%
জরীপে অংশগ্রহনকারীদের প্রশ্ন করা হয় – কোন বিষয় গুলো আপনার সাথে ঘটলে আপনি একেবারেই সহ্য করবেন না , প্রয়োজনে বিচ্ছেদ চাইতে পারেন। এর উত্তরে যে ৮ টি বিষয়  উঠে আসে (ক্রমানুসারে)
১) পরকীয়া
২) ক্রমাগত ভুল বুঝাবুঝি ও দুরত্ব বৃদ্ধি
৩) সংসারে কাজ কর্মে তীব্র অনিহা, সঙ্গীকে যথাযথ মূল্যায়ন না করা
৪) আসক্তি (মাদক / নারী / পরপুরুষ / জুয়া)
৫) মানসিক ও শারিরিক নির্যাতন
৬) সঙ্গীর প্রতি অতিরিক্ত সন্দেহ
৭) স্বামী বা স্ত্রীর পরিবার হতে দূর্ব্যবহার / অবমূল্যায়ন
৮)সঙ্গীর একঘেয়ে স্বভাব বা একক কর্তৃত্ব পরায়নতা
এর উত্তরে যে ৮ টি বিষয় উঠে আসে (ক্রমানুসারে)
১) পরকীয়া
২) ক্রমাগত ভুল বুঝাবুঝি ও দুরত্ব বৃদ্ধি
৩) সংসারে কাজ কর্মে তীব্র অনিহা, সঙ্গীকে যথাযথ মূল্যায়ন না করা
৪) আসক্তি (মাদক / নারী / পরপুরুষ / জুয়া)
৫) মানসিক ও শারিরিক নির্যাতন
৬) সঙ্গীর প্রতি অতিরিক্ত সন্দেহ
৭) স্বামী বা স্ত্রীর পরিবার হতে দূর্ব্যবহার / অবমূল্যায়ন
৮)সঙ্গীর একঘেয়ে স্বভাব বা একক কর্তৃত্ব পরায়নতা
সঙ্গীর সাথে অতিরিক্ত বয়সের পার্থক্য বিচ্ছেদের কোন কারন হতে পারে ১৫.৩%  হ্যাঁ, মনে করি
৫৬.৯% না মনে করিনা
২৭.৮% অতিরিক্ত বয়সের পার্থক্য বিচ্ছ্যেদের কারন হতেও পারে
২৪.৩%  হ্যাঁ, মনে করি
৫৩.৯% না মনে করিনা
১৭.৮% অতিরিক্ত বয়সের পার্থক্য বিচ্ছ্যেদের কারন হতেও পারে
আপনার মতে সঙ্গীর সাথে বয়সের পার্থক্য কেমন হওয়া ভালো ২ বছরের বেশী নয় – ৭.৬%
৫ বছরের কম – ৫২.১%
১০ বছরের বেশী নয় – ৩৫.৫%
সমবয়সী হলে ভাল মনে করি – ৪.৬%
২ বছরের বেশী নয় – ৮.৬৫%
৫ বছরের কম – ৪৬%
১০ বছরের বেশী নয় – ৩১%
সমবয়সী হলে ভাল মনে করি-  ১৪%
আপনি কি মনে করেন – সন্তান ধারনে সঙ্গীর দ্বিমত পোষণ কি দাম্পত্য কলহের একটি কারন, যা বিচ্ছেদ পর্যন্ত পৌছাতে পারে? হ্যাঁ, মনে করি ৫১.৭%
না, মনে করি না ৪৮.৩%
হ্যাঁ, মনে করি ৫৮.২%
না, মনে করি না ৪১.৮%
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ভারতীয় টিভি সিরিয়াল বা বিদেশী সংস্কৃতির অতিরিক্ত প্রভাব বা আসক্তি কি দাম্পত্য অশান্তি – ক্ষেত্র বিশেষে বিচ্ছেদের কারন হতে পারে? হ্যাঁ, হতে পারে ৭৪.২%
না, মনে করি না ২৫.৮%
হ্যাঁ, হতে পারে ৬২.৯%
না, মনে করি না ৩৭.১%
কোন ৫টি বিষয় বিচ্ছেদ এড়াতে পারে বলে আপনি আপনি মনে করেন? উত্তর গুলো ক্রমানুসারেঃ
একে অপরকে সম্মান করা
সঙ্গীর সাথে বিশ্বস্ত থাকা
আপস করার মানসিকতা
সঙ্গীর সাথে মিথ্যাচার না করা
সঙ্গীকে কখনো অবজ্ঞা না করা
উত্তর গুলো ক্রমানুসারেঃ
একে অপরকে সম্মান করা
সঙ্গীর সাথে বিশ্বস্ত থাকা
আপস করার মানসিকতা
সঙ্গীর সাথে মিথ্যাচার না করা
সঙ্গীকে কখনো অবজ্ঞা না করা

কোনটি ভালো?
এটা নির্ভর করে প্রতিটা মানুষের নিজস্বতার ওপর।  যে যেটা বিশ্বাস করে তার সেটা করাই ভালো।  তবে প্রেম করে বিয়ে না করলে আমি সুখী হবনা বা পরিবারের মতে বিয়ে করলেই সুখী হব এমনটা ভাবা ঠিক না।

সমাজ বিজ্ঞানীরা বলেন, যে মানুষের জীবন সঙ্গী বেছে নিতে হলে একটু ভেবে চিন্তে নেয়ায় ভালো।  শুধু আবেগের বশে কিছু করা ঠিক না। আমি সব কিছু মেনে নিতে পারব, কিন্তু বিয়েতে আমি ই সব কিছু না। কারন সঙ্গীর ব্যাপারে নিশ্চিত হতে হবে যা এতো সহজ না।
আয়োজনের বিয়েতে মূলত দুটো পরিবার এক হয়, পক্ষান্তরে প্রেমের বিয়েতে দুজন্ মানুষ। আমাদের আমরা দুজন শুনতে যতই রোমান্টিক শোনাক না কেন বাস্তবে পরিনতি খুব কম ক্ষেত্রেই ভালো হয়। কারন প্রেম আর সংসার এই দুই পুরো ভিন্ন বিষয়। কারন তখন মাথার উপর থাকে দায়িত্বের বিশাল বোঝা।

অসফল বিয়ের ক্ষেত্রে নারী বা পুরুষ নয়, সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয় তাদের সন্তানেরা। এ ক্ষেত্রে তারা যদি বিচ্ছেদ ঘটায় বা না ঘটায় যেতাই করুক তাদের সন্তানদের এর কুফল ভোগ করতে হয়। বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে তাদের সন্তানেরা মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে, আত্মবিশ্বাসহীন হয়ে পড়ে, কিংবা বিয়ের ব্যাপারে তাদের মনোভাব ক্ষতিগ্রস্থ হয়। পূর্ব বা পশ্চিম উভয় ক্ষেত্রেই এটা সঠিক। আমরা প্রগতিগতভাবে অনেক এগিয়ে গেছি কিন্তু এ ক্ষেত্রে আমরা দিন দিন পিছিয়ে পড়ছি। তাই বিয়ের ব্যাপারে আমাদের আরো বেশী সচেতন হওয়া প্রয়োজন।  নিরেট আবেগ বা শুধুই স্বার্থের কারনে বিয়ের মতো সিদ্ধান্ত নেয়ে উচিত না। কারন যখন আমরা বুঝতে শুরু করি ততদিনে অনেক বেশী দেরী হয়ে যায়।

তথ্য সুত্রঃ উইকিপিডিয়া, বিজনেস ইন্সাইডার, ও বিভিন্ন ব্লগ

বাংলাদেশে ৪৩% প্রেমের বিয়েই সুখের হয় না গড়ায় বিচ্ছেদ পর্যন্ত

বিবাহবিডি ডট কম, সম্প্রতি “বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিবাহ বিচ্ছেদের কারণ নির্নয়” শিরোনামে প্রশ্ন ভিত্তিক একটি জরিপ পরিচালনা করে।  এতে অংশ গ্রহন করেন ৪১২ জন।  যার মধ্যে ছিলেন দাম্পত্য জীবনে বিচ্ছ্যেদ নেয়া ১০৪ জন ব্যাক্তি।   উক্ত জরিপের তথ্য থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, বিচ্ছেদের হার সবচেয়ে বেশী বিভাগীয় ও জেলা শহরে বসবাসকারীদের মাঝে যা যথাক্রমে বিভাগীয় শহরে ৪৯.০৩ % ও জেলা শহরে ৩৫.৫% ।

এবং উচ্চ শিক্ষিত নাগরিকদের মাঝেই বিচ্ছেদের প্রবনতা উল্লেখযোগ্য হারে বেশী – যা উচ্চতর ডিগ্রী ৪৯.৪২%, স্নাতক / সম্মান / সমসমান ৩৬.৫৮% , উচ্চ মাধ্যমিক বা সম সমান ৯.২% ।  জরিপে অংশগ্রহনকারীদের মধ্যে ৫৮.৬৫% চাকুরীজীবি ও ২০.১৯% ব্যবসায়ী তাছাড়াও  ৪.৮১% প্রবাসে কর্মরত রয়েছেন।  যাদের অর্থনৈতিক অবস্থা মধ্যবিত্ত ৭২.১২ %,  নিম্ন মধ্যবিত্ত ১৭.৩% , উচ্চ বিত্ত ৪.৮% ও নিম্ন বিত্ত ৭.৭৬% ।

জরিপে অংশগ্রহনকারী (৪১.৪% যৌথ পরিবার, ৫৯% একক পরিবার থেকে আসা ) ডিভোর্স ব্যাক্তিদের প্রশ্ন করা হয় কিভাবে তাদের সংগীর সাথে পরিচয়ের সুত্রপাত (বিয়ের সম্মন্ধ) হয়েছিলো।  এর মধ্যে,  ৩০.৭৬% এর পরিচয় হয় নিকট আত্মীয়দের মাধ্যমে, ২৫ % এর পরিচয় হয় ট্রেডিশনাল ঘটকের সাহায্যে, ও ৪৩.৩% প্রেম ঘটিত পরিচয় ও অনলাইন ম্যাট্রিমনি বা স্যোশাল মিডিয়ায় পরিচয় হয় মাত্র ১.৯২% ।

অংশগ্রহন কারী ৪৬% মনে করেন সঙ্গীর সাথে বয়সের পার্থ্যক্য ৫ বছরের কম হওয়া ভাল আর ৩১% মনে করেন সঙ্গীর সাথে বয়সের পার্থ্যক্য ১০ বছরের বেশী হওয়া উচিত নয়।  তবে বেশীর ভাগ অংশগ্রহন কারীই মনে করেন, অতিরিক্ত বয়সের পার্থ্যক্য বিবাহ বিচ্ছেদের অন্যতম কারন নয়।

জরীপে অংশগ্রহনকারীদের প্রশ্ন করা হয় – কোন বিষয় গুলো আপনার সাথে ঘটলে আপনি একেবারেই সহ্য করবেন না, প্রয়োজনে বিচ্ছেদ চাইতে পারেন এর প্রতি উত্তরে উঠে আসে প্রধান ৮ টি বিষয়

১) পরকীয়া ২) ক্রমাগত ভুল বুঝাবুঝি ও দুরত্ব বৃদ্ধি ৩) সংসারে কাজ কর্মে তীব্র অনিহা, সঙ্গীকে যথাযথ মূল্যায়ন না করা ৪) আসক্তি (মাদক / নারী / পরপুরুষ / জুয়া) ৫) মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন ৬) সঙ্গীর প্রতি অতিরিক্ত সন্দেহ প্রবনতা ৭) স্বামী বা স্ত্রীর পরিবার হতে দুর্ব্যবহার বা অবমূল্যায়ন ৮) সঙ্গীর একঘেয়ে স্বভাব বা একক কর্তৃত্ব পরায়নতা।   তাছাড়াও সন্তান ধারনে অক্ষমতা বা সন্তান ধারনে সঙ্গীর দ্বিমত পোষণ, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম / ভারতীয় টিভি সিরিয়াল বা বিদেশী সংস্কৃতির অতিরিক্ত প্রভাব বা আসক্তির মত বিয়য়গুলোও জরিপে উঠে আসে।

জরীপে অংশগ্রহনকারীদের কাছে সর্বশেষ জানতে চাওয়া হয় কোন ৫টি বিষয় বিচ্ছেদ এড়াতে পারে বলে আপনি মনে করেন? এর মধ্যে ৫ টি বিষয় ক্রমান্বয়ে যে বিষয় গুলো ঊঠে আসে –

১) একে অপরকে সম্মান করা ২) সঙ্গীর সাথে বিশ্বস্ত থাকা ৩) আপস করার মানসিকতা ৪) সঙ্গীর সাথে মিথ্যাচার না করা ৫) সঙ্গীকে কখনো অবজ্ঞা বা অবহেলা না করা।


বিবাহবিডি ডট কম এর জরিপ তথ্যঃ

বিবরন সকল অংশগ্রহনকারী  (৪১২ জন) ডিভোর্স গ্রহনকারী (১০৪ জন)
অংশগ্রহন কারী পুরুষ – ৭৬.৫%
নারী-  ২৩.৫%
পুরুষ – ৭৮.৪৫%
নারী-  ২১.৫৫%
অংশগ্রহনকারীদের বয়স ১৮-২৪ বছর = ৬.২%
২৫-৩৫ বছর = ৬৪.৯%
৩৬-৫৫ / এর অধিক =  ২৮.৯%
১৮-২৪ বছর = ৩৮.৪৬%
২৫-৩৫ বছর = ৫২.৮৮%
৩৬-৫৫ / এর অধিক =  ৮.৬৫%
অংশগ্রহনকারীদের অবস্থান ৬১.৫ % বিভাগীয় শহরে
২৩.২% জেলা শহরে
১১.৮% উপজেলা শহরে
৩.৫% ইউনিয়ন / গ্রামে
৪৯.০৩ % বিভাগীয় শহরে
৩৫.৫% জেলা শহরে
১৩.৪৬% উপজেলা শহরে
১.৯২% ইউনিয়ন / গ্রামে
অংশগ্রহনকারীদের
শিক্ষাগত যোগ্যতা
৪৪.৩% উচ্চতর ডিগ্রী
৪১.৯% স্নাতক / সম্মান / সমসমান
৯.৯% উচ্চ মাধ্যমিক সম সমান
৩.৯% উচ্চ মাধ্যমিক এর নীচে
৪৯.৪২% উচ্চতর ডিগ্রী
৩৬.৫৮% স্নাতক / সম্মান / সমসমান
৯.২% উচ্চ মাধ্যমিক সম সমান
৪.৮% উচ্চ মাধ্যমিক এর নীচে
অংশগ্রহনকারীদের
বৈবাহিক অবস্থা
৫০.৪ % বিবাহিত
২২% অবিবাহিত
২৫.৭% ডিভোর্স
১.৯% বিধবা / বিপত্নীক
১০০% ডিভোর্স
অংশগ্রহনকারীদের
পেশা
৫৯.২% চাকুরীজীবি
১৬.৬% ব্যবসায়ী
১৩.১% বেকার ( নারী)
৮.৬% অধ্যয়নরত
২.৬% প্রবাসে কর্মরত
৫৮.৬৫% চাকুরীজীবি
২০.১৯% ব্যবসায়ী
১৫.৩৮% বেকার
০.৯৬% অধ্যয়নরত
৪.৮১% প্রবাসে কর্মরত
অংশগ্রহনকারীদের
পরিবারের ধরন
৬৫.৪% একক পরিবার
৩৪.৬% যৌথ পরিবার
৪১.৪% যৌথ পরিবার
৫৯% একক পরিবার
অংশগ্রহনকারীদের
আর্থিক অবস্থা
৭৩.৭ % মধ্য বিত্ত
২০.৬% নিম্ন মধ্যবিত্ত
৪.৬% উচ্চ বিত্ত
১.১% নিম্ন বিত্ত
৭২.১২ % মধ্য বিত্ত
১৭.৩% নিম্ন মধ্যবিত্ত
৪.৮% উচ্চ বিত্ত
৭.৭৬% নিম্ন বিত্ত
আপনি কি মনে করেন আর্থিক অসচ্ছলতা  বিবাহবিচ্ছেদের একটি কারন ৬০.৮% এ প্রশ্নে একমত নয়
৩৯.২% মনে করেন আর্থিক অসচ্ছলতা বিবাহবিচ্ছেদের একটি কারন হতে পারে
৫৮.৮% এ প্রশ্নে একমত নয়
৪১.২% মনে করেন আর্থিক অসচ্ছলতা বিবাহবিচ্ছেদের একটি কারন হতে পারে
জীবন সংগীর সাথে পরিচয়ের সুত্রপাত নিকট আত্মীয়দের মাধ্যমে ২৭.১%
ঘটকের সাহায্যে ১৩.৭ %
প্রেম ঘটিত ৩৭.৪%
অনলাইনে পরিচয়ঃ ৩.৪%
অবিবাহিত / প্রযোজ্য নয় ১৮.৪%
নিকট আত্মীয়দের মাধ্যমে ৩০.৭৬%
ঘটকের সাহায্যে ২৫ %
প্রেম ঘটিত ৪৩.৩%
অনলাইনে পরিচয়ঃ ১.৯২%
জরীপে অংশগ্রহনকারীদের প্রশ্ন করা হয় – কোন বিষয় গুলো আপনার সাথে ঘটলে আপনি একেবারেই সহ্য করবেন না , প্রয়োজনে বিচ্ছেদ চাইতে পারেন। এর উত্তরে যে ৮ টি বিষয়  উঠে আসে (ক্রমানুসারে)
১) পরকীয়া
২) ক্রমাগত ভুল বুঝাবুঝি ও দুরত্ব বৃদ্ধি
৩) সংসারে কাজ কর্মে তীব্র অনিহা, সঙ্গীকে যথাযথ মূল্যায়ন না করা
৪) আসক্তি (মাদক / নারী / পরপুরুষ / জুয়া)
৫) মানসিক ও শারিরিক নির্যাতন
৬) সঙ্গীর প্রতি অতিরিক্ত সন্দেহ
৭) স্বামী বা স্ত্রীর পরিবার হতে দূর্ব্যবহার / অবমূল্যায়ন
৮)সঙ্গীর একঘেয়ে স্বভাব বা একক কর্তৃত্ব পরায়নতা
এর উত্তরে যে ৮ টি বিষয় উঠে আসে (ক্রমানুসারে)
১) পরকীয়া
২) ক্রমাগত ভুল বুঝাবুঝি ও দুরত্ব বৃদ্ধি
৩) সংসারে কাজ কর্মে তীব্র অনিহা, সঙ্গীকে যথাযথ মূল্যায়ন না করা
৪) আসক্তি (মাদক / নারী / পরপুরুষ / জুয়া)
৫) মানসিক ও শারিরিক নির্যাতন
৬) সঙ্গীর প্রতি অতিরিক্ত সন্দেহ
৭) স্বামী বা স্ত্রীর পরিবার হতে দূর্ব্যবহার / অবমূল্যায়ন
৮)সঙ্গীর একঘেয়ে স্বভাব বা একক কর্তৃত্ব পরায়নতা
সঙ্গীর সাথে অতিরিক্ত বয়সের পার্থক্য বিচ্ছেদের কোন কারন হতে পারে ১৫.৩%  হ্যাঁ, মনে করি
৫৬.৯% না মনে করিনা
২৭.৮% অতিরিক্ত বয়সের পার্থক্য বিচ্ছ্যেদের কারন হতেও পারে
২৪.৩%  হ্যাঁ, মনে করি
৫৩.৯% না মনে করিনা
১৭.৮% অতিরিক্ত বয়সের পার্থক্য বিচ্ছ্যেদের কারন হতেও পারে
আপনার মতে সঙ্গীর সাথে বয়সের পার্থক্য কেমন হওয়া ভালো ২ বছরের বেশী নয় – ৭.৬%
৫ বছরের কম – ৫২.১%
১০ বছরের বেশী নয় – ৩৫.৫%
সমবয়সী হলে ভাল মনে করি – ৪.৬%
২ বছরের বেশী নয় – ৮.৬৫%
৫ বছরের কম – ৪৬%
১০ বছরের বেশী নয় – ৩১%
সমবয়সী হলে ভাল মনে করি-  ১৪%
আপনি কি মনে করেন – সন্তান ধারনে সঙ্গীর দ্বিমত পোষণ কি দাম্পত্য কলহের একটি কারন, যা বিচ্ছেদ পর্যন্ত পৌছাতে পারে? হ্যাঁ, মনে করি ৫১.৭%
না, মনে করি না ৪৮.৩%
হ্যাঁ, মনে করি ৫৮.২%
না, মনে করি না ৪১.৮%
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ভারতীয় টিভি সিরিয়াল বা বিদেশী সংস্কৃতির অতিরিক্ত প্রভাব বা আসক্তি কি দাম্পত্য অশান্তি – ক্ষেত্র বিশেষে বিচ্ছেদের কারন হতে পারে? হ্যাঁ, হতে পারে ৭৪.২%
না, মনে করি না ২৫.৮%
হ্যাঁ, হতে পারে ৬২.৯%
না, মনে করি না ৩৭.১%
কোন ৫টি বিষয় বিচ্ছেদ এড়াতে পারে বলে আপনি আপনি মনে করেন? উত্তর গুলো ক্রমানুসারেঃ
একে অপরকে সম্মান করা
সঙ্গীর সাথে বিশ্বস্ত থাকা
আপস করার মানসিকতা
সঙ্গীর সাথে মিথ্যাচার না করা
সঙ্গীকে কখনো অবজ্ঞা না করা
উত্তর গুলো ক্রমানুসারেঃ
একে অপরকে সম্মান করা
সঙ্গীর সাথে বিশ্বস্ত থাকা
আপস করার মানসিকতা
সঙ্গীর সাথে মিথ্যাচার না করা
সঙ্গীকে কখনো অবজ্ঞা না করা

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিবাহ বিচ্ছেদের কারণ গুলো কি? – জরিপ

বিবাহিত জীবনে অনাকাংখিত বিচ্ছেদ হতেই পারে, অনেক ক্ষেত্রে বিচ্ছেদ ডেকে আনে ভয়াবহ মানসিক বিপর্যয় আবার অনেক ক্ষেত্রে বিচ্ছেদেই মিলে মুক্তি। বিগত কয়েক বছর ধরে আমাদের দেশে বিবাহ বিচ্ছেদের পরিমান অনেকাংশেই বেড়েছে যা সাম্প্রতিক বিভিন্ন গবেষনায় উঠে এসেছে।

বিবাহবিডি ডট কম এ ২০১৪ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৬ হাজার ডিভোর্স পাত্র/পাত্রী রেজিষ্ট্রেশন করেছেন আমরা শুধু মাত্র ডিভোর্স পাত্র/পাত্রীদের কাছে চলমান এই জরিপের মাধ্যমে জানতে চাইবো সম্ভ্যাব্য কি কি কারনে তারা ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সম্মানিত পাঠক, এই ইউজার জরিপের মাধ্যমে আপনারাও আপনাদের সুচিন্তিত ব্যাক্তিগত মতামত দিতে পারেন যা সামগ্রিক ভাবে একটি সামাজিক সমস্যার সমাধানে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারে।


জরিপে অংশ গ্রহন করতে ক্লিক করুন


সাম্প্রতিক কিছু গবেষনায় জানা গেছে অধিকাংশ ডিভোর্সের ঘটনা ঘটছে মেয়েদের পক্ষ থেকে, যা শতকরা ৬৬ ভাগ। ডিভোর্সের ঘটনা বেশি ঘটছে উচ্চবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারে।  ঢাকা সিটি করপোরেশনের হিসাব অনুযায়ী ২০১৪ সালে রাজধানীতে ডিভোর্সের ঘটনা ঘটেছে ৮২১৪ দম্পতির। এর আগে ২০১২ সালে ৭৬৭২ দম্পতির মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটেছে।  ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসেই ৬১০ দম্পতির বিচ্ছেদ হয়েছে। তার মধ্যে ৪২৬ ডিভোর্সই হয়েছে স্ত্রী কর্তৃক।  ঢাকা সিটি করপোরেশনের উত্তরের গুলশান, বনানী, মহাখালী, বাড্ডা, মগবাজার, রামপুরা নিয়ে অঞ্চল-৩ এই এলাকায় ২০১৫ সালে ৫৯৮ দম্পতির মধ্যে ডিভোর্স হয়েছে।  এর মধ্যে স্বামী ডিভোর্স দেয় ২৩৫ এবং স্ত্রী দেয় ৩৬৩টি। রাজধানী সূত্রাপুর, বংশাল, নবাবপুর, কাপ্তান বাজার, নাজিরাবাজার ও লালবাগের অর্ধেক নিয়ে গঠিত ঢাকা সিটি করপোরেশন দক্ষিণের অঞ্চল-৪ এই এলাকায় ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে আক্টোবর পযর্ন্ত ২৫৮ দম্পতির মধ্যে ডিভোর্স হয়েছে। এর মধ্যে স্ত্রীর পক্ষ থেকে ১৭৩ এবং ৮৫টি ডিভোর্স হয়েছে স্বামীর পক্ষ থেকে।  তার আগের বছর একই এলাকায় ২৯১ দম্পতির মধ্যে ডিভোর্স হয়েছে।  এর মধ্যে ১৮৪টি ডিভোর্স হয়েছে স্ত্রীর পক্ষ থেকে।  (সুত্রঃ দেশীয় পত্রিকার খবর)

আমরা এই জরিপের মাধ্যমে আপনার সুচিন্তিত ব্যাক্তিগত মতামত চাইছি যা সামগ্রিক ভাবে একটি সামাজিক সমস্যার সমাধানে গুরুত্বপূর্ন অবদান রাখতে পারে।  এই জরিপে আপনার সম্পূর্ন গোপনীয়তা বজায় থাকবে।  আমরা আপনার সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছি।

নিবেদক
ইফফাত আরা ইসলাম ও শারমিন সুলতানা
এক্সিকিউটিভ – বিবাহবিডি ডট কম
ফোনঃ +88 09612211555

বিবাহবিডি ডট কম দিচ্ছে ফ্রী ১ মাস পাত্র/পাত্রী খুঁজার সুযোগ

ম্যাট্রিমনিয়াল সার্ভিস Bibahabd.com বিশ্বব্যাপী উচ্চ শিক্ষিত ও প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশী পাত্র/পাত্রী খুঁজার অন্যতম জনপ্রিয় ওয়েব সাইট।  বিগত ৮ বছর ধরে আমরা পাত্রপাত্রী খুঁজ ও সরাসরি একে অন্যের সাথে যোগাযোগ করার সুবর্ণ সুযোগটি দিয়ে আসছি। আমাদের রয়েছে বৃহৎ  একটি ভেরিফাইড ডাটাবেইজ।  যেকোন বিবাহযোগ্য পাত্রপাত্রী অনলাইনে ফ্রী রেজিষ্ট্রেশন করে নিজেদের প্রফেশন ও শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী অসংখ্য প্রোফাইল থেকে পছন্দের পাত্রপাত্রী অথবা তাদের অভিভাবকের সাথে নিজেরাই সরাসরি যোগাযোগ করতে পারে।

২৫ শে আগষ্ট থেকে আমরা সকল নতুন ইউজারদের জন্য ১ মাসের সম্পূর্ন ফ্রী ব্রাউজিং এক্সেস ঘোষনা করছি, সে সুযোগ পেতে একজন ইউজার কে তার প্রোফাইল ভেরীফিকেশনের সময় অবশ্যই যেকোন একটির (NID/ Passport/ জন্ম নিবন্ধন/ একাডেমিক সার্টিফিকেট) স্কেন কপি দিলেই কেবল সেই সুযোগটি মিলবে।

আর এ সুযোগটি চলবে ২৫ শে আগষ্ট থেকে ২৫ শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ।  বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন www.bibahabd.com অথবা কল করুনঃ ০১৯২২১১৫৫৫৫

মধ্যবয়স সংকটের না সম্ভাবনার?

জামিল সাহেবের বয়স ৫২ বছর। ইদানীং তাঁর মেজাজটা একটু খিটখিটে হয়ে উঠছে। একমাত্র ছেলে বিদেশে থাকে। কদিন আগে বাবাকে হারিয়েছেন। নিজেকে তাঁর বড্ড একা একা লাগে। মাঝে মাঝেই ভাবেন, ‘যদি আগের দিনগুলো আবার ফিরে পাওয়া যেত’ কিংবা ‘অফিসের সহকর্মীদের চেয়ে কীভাবে আরও এগিয়ে থাকা যায়’ ইত্যাদি। রাতে তাঁর ঘুম আসে না। বিছানায় শুয়ে ভাবেন, এ জীবনে তাঁর কিছুই পাওয়া হলো না, কিছুই করা হলো না। স্ত্রীর সঙ্গে প্রতিদিন কথা-কাটাকাটি লেগেই আছে, ফলে অন্তরঙ্গ সময় কাটানো হয়েই ওঠে না। শরীরটাও যেন দুর্বল লাগে।

জামিল সাহেবের এই বয়সটাকে বলা যায় মধ্যবয়স। বিশ্বজুড়ে মানুষের গড় আয়ু বেড়ে যাওয়ায় ৪৫ থেকে ৬০-এই সময়টুকুকে মধ্যবয়স বলা হয়। এই সময় পুরুষ ও নারী উভয়ের জীবনে একধরনের পরিবর্তন ঘটতে থাকে। হরমোন ও বয়সজনিত কারণে কিছু শারীরিক পরিবর্তন ঘটে, আবার পারিপার্শ্বিক কারণে মানসিকতারও পরিবর্তন ঘটতে থাকে। মার্কিন মনস্তত্ত্ববিদ এলিয়ট জ্যাক ১৯৬৫ সালে প্রথম তাঁর লেখায় ‘মিডলাইফ ক্রাইসিস’-এর উল্লেখ করেন। নারী-পুরুষ উভয়ের জীবনেই এই বয়সটিতে একধরনের টানাপোড়েন শুরু হতে পারে। তবে সবার জীবনে কিন্তু এই বয়সে সংকটকাল আসে না। নারীর জীবনে একটু আগে আসে, আর পুরুষের জীবনে খানিকটা পরে। সংকটের প্রকরণও নারী-পুরুষভেদে আলাদা। এক গবেষণায় দেখা গিয়েছিল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মধ্যবয়সীদের মধ্যে প্রায় ২৫ শতাংশ মিডলাইফ ক্রাইসিসে ভোগেন। এ বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক আছে বিস্তর। সম্প্রতি কানাডার ইউনিভার্সিটি অব আলবার্টার এক গবেষণায় বলা হয়, মিডলাইফ ক্রাইসিস বলে আলাদা কিছু নেই। তবে বেশির ভাগ গবেষণায় মিডলাইফ ক্রাইসিস বা মধ্যবয়সের সংকট তৈরি হয় বলে মত দেওয়া হয়েছে।

নারীর জীবনে এই সময়টাতে সংকটের একটা বড় অংশজুড়ে থাকে তাঁর শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তন, হরমোনের তারতম্য, দেহে বয়সের চিহ্ন। কখনো বাড়তি হিসেবে যোগ হয় উৎকণ্ঠা আর বিষণ্নতা। পুরুষদের ক্ষেত্রে মধ্যবয়সের সংকটের মাত্রা খানিকটা ভিন্ন। এ সময় তিনি তাঁর কর্মক্ষেত্র, সাফল্য-ব্যর্থতা, অপরের সঙ্গে তুলনা এবং যৌনজীবন নিয়ে সংকটে পড়ে যান। মনস্তত্ত্ববিদ হ্যারল্ড কোহেন তাঁর ‘দ্য মেল মিডলাইফ ক্রাইসিস’ প্রবন্ধে উল্লেখ করেন যে জীবন এক নিরন্তর বোঝা। আর এই বোঝা বহনের মাঝপথে এসে কেউ কেউ হাঁপিয়ে পড়েন। সেটাই মিডলাইফ ক্রাইসিস। এই সময় অনেক কাজের কথা মনে পড়ে, যা করা হয়ে ওঠেনি, অনেক অপ্রাপ্তির কথা মনে পড়ে, যা পাওয়া হয়নি। অনেক গোপনীয়তা মনকে পীড়া দেয়, অনেক সুপ্ত বাসনা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে।

মধ্যবয়সের সংকটের লক্ষণ কী কী

* সহকর্মী-বন্ধুদের চেয়ে নিজেকে ব্যর্থ ভাবা।
* হঠাৎ তীব্রভাবে কোনো কিছু পেতে চাওয়া; যেমন-বাড়ি নেই, যেভাবেই হোক বাড়ি করতে হবে; গাড়ি নেই, যেভাবেই হোক গাড়ি কিনতে হবে।
* একাকিত্ব দূর করার চেষ্টা করা, বিকল্প কিছু নেতিবাচক পথ বেছে নেওয়া; যেমন-নেশা করা, বিপরীত লিঙ্গের তৃতীয় কারও সঙ্গে অন্তরঙ্গ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়া।
* তারুণ্য ফিরে পাওয়ার জোর তাগিদ অনুভব করা, হতাশা ব্যক্ত করা।
* নিজের জীবন ও জীবনযাত্রার গুণে-মানে সব সময় অসন্তুষ্টি প্রকাশ করা।
* স্বামী-স্ত্রীর দাম্পত্য জীবন ও ভালোবাসায় ফাটল ধরা।
* সন্তানদের প্রতি অতি খবরদারি বা একেবারেই উদাসীন হয়ে যাওয়া।
* কারণে-অকারণে আশপাশের মানুষকে সন্দেহ করা।
* অতিরিক্ত কেনাকাটা করা।
* আশপাশের সবকিছুর প্রতি বিরক্ত হওয়া, একঘেয়েমি বোধ করা।
* অসামঞ্জস্যপূর্ণ অ্যাডভেঞ্চারে জড়িয়ে পড়া।

মিডলাইফ ক্রাইসিস বলে আদতে কিছু আছে কি নেই, সে নিয়ে যতই তর্ক থাকুক; মোদ্দাকথা হচ্ছে, এই সময়টাতে ভালো থাকতে হবে। শরীরে এবং মনে-সব দিক দিয়েই। আর মধ্যবয়সে ভালো থাকার জন্য যা যা করতে হবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, তা হচ্ছে—

সবার আগে শরীরের যত্ন
মধ্যবয়সটি হচ্ছে হৃদ্‌রোগ, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপসহ নানাবিধ রোগ তৈরির বয়স। তাই সুষম খাদ্য গ্রহণ, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার মাধ্যমে এই বয়সে নিজের শরীরটিকে রাখতে হবে নীরোগ।

মনের যত্নও জরুরি
এই বয়সে নিজেকে একা ভাবার কোনো কারণ নেই। পরিবারের পাশাপাশি বন্ধুবান্ধব, সহকর্মীদের সঙ্গে সময় কাটাতে হবে। মন ভালো রাখতে বেড়াতে যেতে হবে, গান শুনতে হবে, চলচ্চিত্র দেখতে পারেন; এমনকি অংশ নিতে পারেন সমাজসেবামূলক কোনো কাজে।

দাম্পত্য সম্পর্ককে স্বাস্থ্যকর রাখুন
হঠাৎ কোনো মোহে পড়ে বা অ্যাডভেঞ্চারের বশে কারও সঙ্গে এমন কোনো সম্পর্ক গড়ে তুলবেন না, যা আপনার দাম্পত্য সম্পর্কে ফাটল ধরায়। আবার অযথা আপনার জীবনসঙ্গী বা সঙ্গিনীকে সন্দেহও করবেন না। কোনো সমস্যা মনে করলে খোলামনে পরস্পর আলাপ করুন। দাম্পত্য সম্পর্ক স্বাস্থ্যকর রাখতে নিয়মিত শারীরিক সম্পর্ক বজায় রাখুন। কোনো অসুবিধা বোধ করলে লজ্জা না পেয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

সন্তানের দিকে নজর দিন
কেবল নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত থাকলেই হবে না, সন্তানের দেখভালও আপনার অন্যতম দায়িত্ব। সন্তানের ক্যারিয়ার, তার সমস্যা ইত্যাদি বিষয়ে যথেষ্ট সময় দিন।

কর্মক্ষেত্রকে উজ্জ্বল রাখুন
আপনার কাজের জায়গাটিকে ভালোবাসুন। কী পেয়েছেন, তার হিসাব না করে কী অবদান রেখেছেন, তা মিলিয়ে নিন। দেখবেন, আপনার সফলতার পাল্লাই ভারী। আর যদি না পাওয়ার হিসাব করতে বসেন, সহকর্মীদের সঙ্গে নিজের তুলনা করেন, তবে হতাশায় পড়ে যাবেন।

আর্থিক ব্যবস্থাপনা
আয়-ব্যয়ের হিসাব করুন। প্রয়োজনে সঞ্চয় করতে থাকুন। ভবিষ্যতের যেকোনো প্রয়োজন; যেমন-চিকিৎসা, সন্তানের শিক্ষা, বিয়ে ইত্যাদি বিষয়ে আর্থিক প্রস্তুতি নিন।

আত্মিক ও সামাজিক বিষয়ে মনোযোগী হোন
নিজের আত্মার তৃপ্তির জন্য নৈতিকভাবে জীবনযাপন করুন। নিজ নিজ ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলুন। সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ নিন।

নেতিবাচক পথ পরিহার করুন
নেশায় আসক্ত হয়ে যাওয়া, অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়া থেকে বিরত থাকুন। যদি মনে করেন এমন কোনো সম্পর্কে জড়িয়ে যাচ্ছেন, তবে আপনার স্বামী বা স্ত্রীর সঙ্গেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি কী ভাবলেন, সেটা না ভেবে আপনি কীভাবে এই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে পারবেন, সেটা নিয়ে আলোচনা করুন। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিন।

কৈশোর বা বয়ঃসন্ধির মতো মধ্যবয়সও একটি বিশেষ সময়, যখন মানুষ নিজেকে আগের চেয়ে আলাদা করে চিনতে শেখে। এই সময়টাকে যতই সংকটের কাল বা ক্রাইসিস বলা হোক না কেন, যদি নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে চলা যায়, তবে মধ্যবয়স থেকেই শুরু হতে পারে জীবনের নতুন টার্নিং পয়েন্ট। উজ্জ্বলতা আর উচ্ছলতায় ভরিয়ে তুলতে পারেন নিজেকে। পরিবার আর কর্মক্ষেত্রে হয়ে উঠতে পারেন সবার প্রিয় অনুসরণযোগ্য একজন। তাই মধ্যবয়সকে সংকটের বয়স বলা ঠিক নয়, জীবনকে ইতিবাচকভাবে দেখুন, মধ্যবয়সকে গড়ে তুলুন সম্ভাবনার সময় হিসেবে।

কেন এই সংকট:

শারীরিক পরিবর্তন
শরীরে আগের মতো তেজস্বিতা থাকে না। হরমোনের পরিবর্তন ঘটে। পুরুষের ক্ষেত্রে কারও কারও যৌনক্ষমতা বা চাহিদা কমতে থাকে।

কর্মক্ষেত্রের চাপ
কর্মক্ষেত্রে এই বয়সে বেশির ভাগ পুরুষ তাঁর ক্যারিয়ারের মধ্যগগনে অবস্থান করেন। নিজের সবচেয়ে সেরাটাই তিনি দিতে চান। কিন্তু সফলতার পাশাপাশি ব্যর্থতা তাঁকে কখনো হতাশ করে তোলে।

সময়েরচাপ
এই বয়সে মানুষ মনে করে তার সময় বুঝি ফুরিয়ে আসছে, যা কিছু করার তাড়াতাড়ি করে ফেলতে হবে। ফলে সে নিজের মধ্যে একধরনের চাপ অনুভব করে।

বাবা-মাকে হারানো
অনেক ক্ষেত্রেই মধ্যবয়সীদের মা-বাবা মৃত্যুবরণ করেন। ফলে তাঁর মধ্যে একধরনের শূন্যতা তৈরি হয়।

সন্তানেরা দূরে চলে যায়
কখনো পড়ালেখা বা বিয়ে ইত্যাদি কারণে সন্তানেরা দূরে চলে যায়। ফলে শূন্যতা আরও বাড়ে।

দাম্পত্যসংকট
স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দাম্পত্যসংকট হতে পারে। তৃতীয় কারও অনুপ্রবেশ দাম্পত্য সম্পর্ককে সংকটাপন্ন করে তোলে।

লিখেছেনঃ আহমেদ হেলাল
প্রকাশঃ  প্রথম আলো জুলাই ১৩, ২০১৬

বিয়ে নিয়ে প্রতারণা! – আইন অধিকার

বিয়ে নিয়েও প্রতারণার ঘটনা ঘটতে দেখা যায়।  অনেক সময় দুজন ছেলেমেয়ে নিজেদের ইচ্ছায় বিয়ে করেন।  বিয়ের কথা পরিবারের কাউকে জানান না।  কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই ছেলে বা মেয়ে বিয়ের কথা গোপন রেখে অন্য কোথাও পরিবারের ইচ্ছা অনুযায়ী বিয়ে করে ফেলেন। আবার দেখা যায় দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক কোনো কারণে ভেঙে গেলে কোনো পক্ষ ভুয়া কাবিননামা তৈরি করে স্বামী বা স্ত্রী হিসেবে দাবি করতে থাকে। আবার এমনও দেখা যায় আদৌ বিয়ে হয়নি অথচ বিয়ে হয়েছে, এ বলে মিথ্যা প্রমাণ দেখিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মতো সংসার করতে থাকেন। মেয়েটিকে আর ভালো না লাগলে কিংবা মেয়েটি গর্ভবতী হয়ে পড়লে ছেলেটি বিয়ে অস্বীকার করতে থাকে। এ ধরনের ঘটনাগুলোই বিয়ে-সংক্রান্ত অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়।  বিয়ে নিয়ে যদি প্রতারণা বা অন্য কোনো অপরাধ ঘটে তাহলে এর কি কোনো প্রতিকার পাওয়ার সুযোগ আছে? অবশ্যই আছে। দণ্ডবিধি আইনে বিয়ে-সংক্রান্ত অপরাধের কঠিন শাস্তির বিধান করা হয়েছে।

যে শাস্তি রয়েছেঃ 
দণ্ডবিধির ৪৯৩ ধারা থেকে ৪৯৬ ধারা পর্যন্ত বিয়ে-সংক্রান্ত বিভিন্ন অপরাধের শাস্তির বিধান আছে, যার অধিকাংশ অপরাধই জামিন অযোগ্য।   ধারা ৪৯৩ অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি যদি কোনো নারীকে প্রতারণামূলকভাবে আইনসম্মত বিবাহিত বলে বিশ্বাস করান, কিন্তু আদৌ ওই বিয়ে আইনসম্মতভাবে না হয় এবং ওই নারীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেন, তবে অপরাধী ১০ বছর পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। ৪৯৪ ধারায় উল্লেখ আছে, যদি কোনো ব্যক্তি এক স্বামী বা এক স্ত্রী জীবিত থাকা সত্ত্বেও পুনরায় বিয়ে করেন, তাহলে দায়ী ব্যক্তি সাত বছর পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন এবং অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হবেন।

৪৯৫ ধারা অনুযায়ী, যদি কোনো ব্যক্তি দ্বিতীয় বা পরবর্তী বিয়ে করার সময় প্রথম বা আগের বিয়ের তথ্য গোপন রাখেন, তা যদি দ্বিতীয় বিবাহিত ব্যক্তি জানতে পারেন, তাহলে অপরাধী ১০ বছর পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন এবং অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হবেন। ৪৯৬ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি আইনসম্মত বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা ব্যতীত প্রতারণামূলকভাবে বিয়ে সম্পন্ন করেন, তাহলে অপরাধী সাত বছর পর্যন্ত সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এ ছাড়া কোনো মুসলমান ব্যক্তি ১ম স্ত্রী থাকলে সালিসি পরিষদের অনুমতি ছাড়া এবং প্রথম স্ত্রীর অনুমতি ছাড়া আরেকটি বিয়ে করেন, তিনি ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশের ৬ (৫) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করবেন। অভিযোগে দোষী প্রমাণিত হলে ব্যক্তিকে এক বছর পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা উভয় দণ্ড হতে পারে।

কোথায় কীভাবে আইনের আশ্রয় নিতে হবেঃ 
বিয়ে-সংক্রান্ত অপরাধের জন্য অভিযোগ থানা বা আদালতে গিয়ে চাওয়া যাবে। থানায় এজাহার হিসেবে মামলা দায়ের করতে হবে। যদি মামলা না নিতে চায় তাহলে সরাসরি জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে গিয়ে সরাসরি মামলা দায়ের করা যাবে। কেউ কেউ থানায় না গিয়ে সরাসরি আদালতে মামলা করে থাকেন। এতে কোনো সমস্যা নেই। আদালতে মামলা করার সময় যথাযথ প্রমাণসহ অভিযোগের স্পষ্ট বর্ণনা দিতে হবে এবং সাক্ষীদের নাম-ঠিকানাও দিতে হবে। আদালত অভিযোগকারীর জবানবন্দি গ্রহণ করে যেকোনো আদেশ দিতে পারেন। অনেক সময় অভিযোগ আমলে না নিয়ে প্রাথমিক তদন্তের জন্য নির্দেশ দিতে পারেন। কেউ যদি স্বামী বা স্ত্রীর পরিচয়ে নিজেদের অন্তরঙ্গ ছবি ফেসবুক বা অন্য কোনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করে অথচ আদৌ কোনো বিয়ে সম্পন্ন হয়নি তাহলে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে মামলা করার সুযোগ আছে এবং এ মামলা থানায় করতে হবে। এ ছাড়া ভুয়া কাবিননামা তৈরি করলে জালিয়াতির অভিযোগও আনা যাবে।

যে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবেঃ 
বিয়ে যেভাবেই সম্পন্ন হোক না কেন কাবিননামা কিংবা বিয়ের সব দলিল নিজের কাছে রাখা উচিত। কাবিননামার ওপর কাজির সিল স্বাক্ষর আছে কি না যাচাই করে নিতে হবে এবং কোন কাজির মাধ্যমে বিয়েটি সম্পন্ন হলো তার সঙ্গে যোগাযোগ করে সত্যতা যাচাই করে নেওয়া ভালো। মুসলিম বিয়ে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক। এটা স্বামী-স্ত্রী দুজনকেই মনে রাখতে হবে। বর্তমানে হিন্দু বিয়ের নিবন্ধনও ঐচ্ছিক করা হয়েছে। বিয়ের হলফনামা করা থাকলে তাও সংগ্রহে রাখতে হবে।

লেখক: তানজিম আল ইসলাম | আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট
সুত্রঃ প্রথম আলো, জুন ০৮, ২০১৬

প্রিয়জনের অভিমান ভাঙাবেন যেভাবে

মান-অভিমান থাকে সব সম্পর্কেই। প্রত্যাশা এবং প্রাপ্তি না মিললেই আমাদের মন খারাপ হয়। আর আবেগের সম্পর্কে এই মন খারাপের সাথে মেশে ভালবাসার নানান হিসেব-নিকেশ। তখন ছোট্ট একটা বিষয়ে অভিমানের শুরু হলেও তা আর ছোট থাকে না। তাই প্রিয় সম্পর্কের অভিমান ভাঙানো অনেক সময়ই কঠিন কাজ হয়ে দাঁড়ায়। কী করবেন তখন? মানুষটিকে কষ্ট পেতে তো দেওয়া যাবে না! আসুন জেনে নিই, বিশেষজ্ঞরা কী বলেন-

জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইফ সাইন্স স্কুলের এসিস্ট্যান্ট প্রফেসর সৌমিয়া প্রসাদ বলেন, আপনার প্রিয়জন হয়ত আপনার জন্য অনেক বিশেষ কিছু। তার জন্য আপনি সব করতে পারেন। কিন্তু তবুও একজন মানুষকে সব সময় সন্তুষ্ট রাখা কিন্তু সম্ভব নয়।

ই-বুক লেখিকা জুডি কোল বলেন, অনেক সময় সত্য কথা থেকেও ঝগড়ার উদ্ভব হতে পারে। আপনি হয়ত বললেন, ‘তুমি অনেক মোটা হয়ে গেছ’ বা ‘তোমার রান্না আজ ভাল হয় নি’। এ থেকেও বড় ঝগড়া হতে পারে।

তাই ঝগড়া নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে লাভ নেই। বরং কৌশল হিসেবে মেনে চলুন এই বিষয়গুলো-

বিষয় বদলাতে দেবেন না
প্রায়ই দেখা যায় ঝগড়া বা মান অভিমানে এক বিষয় থেকে কথা পরিবর্তন হতে হতে অন্য বিষয়ে চলে যায়। ছোট একটা কথা থেকে শুরু হয়েছিল, কিন্তু পুরাতন অনেক কথা যোগ হতে হতে সেটা বিশাল আকার ধারণ করে। তাই কোনভাবেই বিষয়টি বদলাতে দেবেন না। কথা বলার সময় সাবধানে থাকুন, যাতে অপরপক্ষ কোনভাবেই আপনার কথাকে কেন্দ্র করে আরও রেগে না যায়!

পাল্টা অভিযোগ করবেন না
ঝগড়া করার সময় আমাদের নিজেদের বাঁচানোর সবচেয়ে সাধারণ এবং পছন্দের উপায় হল পাল্টা দোষারোপ করে বেড়িয়ে পড়া। “তুমি কি কর? তুমি যখন কর আমার কেমন লাগে!” ইত্যাদি কথা বলে আমরা নিজেদের হয়ত সুরক্ষিত করি কিন্তু বিপদে ফেলে দিই সম্পর্কটাকে। নিজের অন্যায়টুকু মেনে নিন। অন্যায় না হলে বুঝিয়ে বলুন।

অহংকার ত্যাগ করুন
আমরা অনেক সময় অহংকারে নিজের ভুল দেখতে পাই না। প্রিয় মানুষটি কষ্ট পাচ্ছে দেখেও আমরা রাগ ছাড়তে পারি না। অভিমানকে গুরুত্ব দিই না। আপনার প্রিয়জন যখন অনেক সময় যাবত রেগে আছে, কষ্ট পাচ্ছে এবং আপনি কোনভাবেই বুঝতে পারছেন না কেন এই রাগ, পাল্টা আপনিও রেগে যাচ্ছেন, তখন একটু থামুন। ভাবুন। নিজের আচরণ খতিয়ে দেখুন। নিরপেক্ষ হয়ে বোঝার চেষ্টা করুন, ভুল আপনার নয় তো!

সময় দিন
অনেক ক্ষেত্রে সময়ই হয় শ্রেষ্ঠ সমাধান। সাথে সাথে আপনি রাগ ভাঙ্গাতে গেলে আপনার প্রিয়জন্য বুঝতে নাও চাইতে পারেন। ধাতস্থ হতে হয়ত একটু সময় চাই তার। তাকে একটু স্থির হতে দিন। হয়ত নিজেই সে বুঝতে পারবে আপনার কোন দোষ নেই। অথবা মাথা ঠান্ডা হলে আপনার কথা গ্রহণ করা সহজ হবে তার পক্ষে।

সরি বলুন
ভালবাসার মানুষকে সরি বললে কেউ ছোট হয়ে যায় না। প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে ক্ষমা চান। এরপর বিস্তারিত কথায় যান। অতিরিক্ত সরি আপনার আত্মসম্মানকে খাট করতে পারে। কিন্তু প্রয়োজন অনুযায়ী সরি বলা অনেক সময় সম্পর্ককে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচিয়ে দেয়।