আলিঙ্গনের মানে

প্রেমের উষ্ণতা বোঝাতেই হোক বা বন্ধুত্বের গভীরতা…আলিঙ্গন বরাবরই বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। তাই, শুধুমাত্র দু’টি মানুষের শারীরিক ঘনিষ্ঠতার মধ্যেই এর গুরুত্বকে সীমিত রাখলে চলবে না! সম্পর্ক যাই হোক না কেন, পারস্পরিক বিশ্বাস, ভরসা, আত্মীয়তা—সবই ফুটে ওঠে এই বিশেষ কাজটির মাধ্যমে!

বিয়ার হাগ: একে অপরের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠতার পরিচায়ক এই আলিঙ্গনটি ‘ডেডলক হাগ’ বলেও পরিচিত। সাধারণত কাছের কোনও মানুষকে দূরে সরে না যাওয়ার আকুতি ফুটে ওঠে এর মধ্যে দিয়ে। সঙ্গীকে হারানোর ভয় বা এক ধরনের ইনসিকিউরিটিও থাকে কিছু ক্ষেত্রে। তবে সম্পর্ক মজবুত হলেও যে এরকম ঘনিষ্ঠ আলিঙ্গন করতে পারবেন না, এমনটা নয়!

পোলাইট হাগ: সাধারণত ঝগড়ার পরে বা কোনও কারণে সঙ্গী যদি আপনার সঙ্গে কমফর্টেবল বোধ না করেন, তাহলে এরকম আলিঙ্গন হতে পারে। এতে দু’জনের শরীরের মধ্যে কিছুটা জায়গা ফাঁকা থাকে, অর্থাৎ দু’জনে শারীরিকভাবে অতটাও ঘনিষ্ঠ হন না। আলিঙ্গনের সময় সঙ্গী যদি এরকম দায়সারা আচরণ করেন, তাহলে বুঝতে হবে তিনি খুব একটা আগ্রহী নন।

স্ট্যান্ড-স্টিল হাগ: সাধারণত এক্ষেত্রে, একজন সঙ্গী যতটা প্যাশনের সঙ্গে আলিঙ্গন করেন, উলটোদিকের মানুষটি ততটাই শীতল, শান্ত। তিনি আলিঙ্গনের জন্য হাতটুকুও তোলেন না! অর্থাৎ, পারস্পরিক আদানপ্রদানের বড্ড অভাব। এর কারণ অবশ্য বাইরে থেকে বোঝা দুর্বোধ্য। তবে আপনার সঙ্গী হয়তো এখনও বুঝে উঠতে পারছেন না যে পুরোপুরি সম্পর্কের মধ্যে থাকা উচিত কি না!

ইন্টিমেট হাগ: এর আক্ষরিক অর্থ নিশ্চয়ই আর আলাদা করে বলে দিতে হবে না! দু’জনেরই গভীর আবেগ আর আই কনট্যাক্ট এর প্রধান বৈশিষ্ট্য। শারীরিক ঘনিষ্ঠতার থেকেও এক্ষেত্রে চোখে চোখ রেখে ভালবাসা ব্যক্ত করা গুরুত্বপূর্ণ।

বাডি হাগ: সঙ্গীকে একপাশ থেকে আলিঙ্গন করলে বা কাঁধের এক দিক থেকে হাত রাখলে বোঝা যায় যে শুধুমাত্র রোম্যান্স নয়, বরং পারস্পরিক বিশ্বাস ও ভরসার জায়াগা আপনাদের মধ্যে রয়েছে। আর আপনারা একে অপরের ‘বেস্ট ফ্রেন্ড’ও বটে!

প্যাম্পারড হাগ: সঙ্গীর কপালে আলতো চুমু বা পিঠে হাত রাখা! মূলত আপনার কেয়ারিং স্বভাবেরই প্রতিফলন বলা চলে একে। সাধারণত বয়স্ক মানুষেরাও কম বয়সিদের স্নেহের বশে এরকমটা করে থাকেন।

ব্যাক হাগ: সঙ্গীকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরাই এরকম আলিঙ্গনের বৈশিষ্ট্য। এর মাধ্যমেও কিন্তু নিরাপত্তার আশ্বাস ব্যক্ত করা সম্ভব। দু’পক্ষের মধ্যে বোঝাপড়াও যে মজবুত, তাও বোঝা যায়।    

জাদুকর ভালোবাসা

কিছুদিন ধরেই কেমন যেন একঘেয়ে হয়ে গিয়েছে সম্পর্কটা। কোনো কিছুই আর ভালো লাগছে না ইদানিং। আর তাই কয়েক দিন ধরেই ভাবছেন কিভাবে ভালোবাসার সম্পর্কটাকে আরো ‘আনন্দময়’ করে তোলা যায়। দুজনের প্রেমের সম্পর্কটাকে আরো একটু সুন্দর করে তোলার জন্য এবং ভালোবাসা আরো বাড়িয়ে তোলার জন্য কি করা যায় তাই ভাবছেন এখন।

ভালোবাসার সম্পর্কটাকে ‘জাদুময়’ করে তোলা খুব কঠিন কোনো কাজ নয়। বেশ সহজ কিছু কাজের মাধ্যমেই দুজনের সম্পর্কটাকে করে তুলতে পারেন জাদুকরী।  যে কাজগুলো করতে আমরা ভুলে যাই, কখনো কখনো সেই ছোট্ট কাজগুলোই ভালোবাসাকে করে তোলে দারুণ আকর্ষণীয়। আসুন জেনে নেয়া যাক “জাদুকর ভালোবাসা” তৈরী করার কিছু কৌশল সম্পর্কে।

প্রতিদিন আলিঙ্গন
আলিঙ্গন ভালোবাসাকে করে তোলে ‘প্রাণবন্ত’।  প্রতিদিন আপনার সঙ্গীকে অন্তত একবার আলিঙ্গন করে রাখুন। অন্তত ১০ সেকেন্ড ভালোবাসার বন্ধনে জড়িয়ে রাখুন তাকে। এতে দুজনের মধ্যে বিশ্বাস বৃদ্ধি পাবে এবং ভালোবাসা হয়ে উঠবে ‘ম্যাজিক্যাল’।

সঙ্গীর জন্য সপ্তাহে  বিশেষ একটি দিন
সবারই কাজের ব্যস্ততা থাকে। কিন্তু তাই বলে ব্যস্ততার অজুহাত কি সঙ্গীকে দেয়া যায় সবসময়? প্রতিদিনই তো ব্যস্ততার অজুহাতে সঙ্গীর ফোন ধরা হয় না কিংবা দেখা করা হয় না। সপ্তাহের ছুটির দিনটি তো দেয়াই যায় সঙ্গীকে তাই না? যারা পুরো সপ্তাহ ব্যস্ত থাকেন তাঁরা সম্পর্ককে সুন্দর রাখতে চাইতে সপ্তাহে অন্তত একটি দিন সঙ্গীকে সময় দিন। সেই দিন দুজনে মিলে রোমান্টিক ডিনার করুন অথবা দূরে কোথাও ঘুরতে যান। তাহলে দুজনের সম্পর্ক হয়ে উঠবে ‘ম্যাজিক্যাল’।

ভালোবাসার কথা জানিয়ে দিন
আপনাদের সম্পর্ক যতই পুরান হোক সঙ্গীকে ভালোবাসার কথা জানাতে কখনই কার্পণ্য করা উচিত না। অনেকেই মনে করেন প্রেমের সম্পর্ক পুরনো হয়ে গেলে ‘ভালোবাসি’ কথাটা না বললেও চলে। কিন্তু নেই ধারণা ভুল। ভালোবাসার সম্পর্কে ‘ম্যাজিক’ ধরে রাখতে চাইতে চিরকালই সঙ্গীকে ভালোবাসার কথা জানানো উচিত।

সারপ্রাইজ দিন
সঙ্গীকে মাঝে মাঝেই সারপ্রাইজ দেয়া উচিত। সারপ্রাইজ শুধু বিশেষ দিনেই দিতে হবে এমন কোনো নিয়ম নেই। যে কোনো সময়েই হঠাৎ করে চমকে দিতে পারেন আপনার সঙ্গীকে। সেটা হতে পারে ছোট্ট কোনো উপহার, পছন্দের খাবার রান্না করা অথবা রোমান্টিক যে কোনো কিছু।

নিজেকে সাজিয়ে গুছিয়ে রাখুন
ভালোবাসার সম্পর্কের ‘ম্যাজিক’ অনেকটাই নির্ভর করে নিজেকে সাজিয়ে গুছিয়ে রাখার উপর। প্রেমের সম্পর্কের শুরুতে মানুষ নিজের প্রতি যতটা যত্নশীল থাকে ততটা অনেকদিনের পুরনো সম্পর্কে থাকে না। কাঙ্খিত মানুষটির সাথে সম্পর্ক হয়ে গিয়েছে বলে কি নিজেকে সাজিয়ে গুছিয়ে রাখার আর কোনো প্রয়োজন নেই? অবশ্যই আছে। সঙ্গীর জন্য নিজেকে সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে রাখুন। সঙ্গির পছন্দের আকর্ষণীয় সুগন্ধি ব্যবহার করুন সবসময়। তাহলে ভালোবাসার সম্পর্কটা থাকবে ‘ম্যাজিক্যাল’।

রাগ নিয়ন্ত্রণ করুন
আপনি যদি আপনার সম্পর্কটাকে ‘ম্যাজিক্যাল’ করতে চান তাহলে অবশ্যই নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। কারণ আপনার সব চেষ্টাই বৃথা হয়ে যাবে যদি হুট হাট আপনি রেগে যান এবং সঙ্গীর সাথে খারাপ ব্যবহার করে ফেলেন কখনো। তাই সব সময় চেষ্টা করুন নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণ করার।

নিজেকে প্রানবন্ত রাখুন
সম্পর্কের ক্ষেত্রে সব সময় চেষ্টা করুন প্রাণবন্ত থাকার। স্বতস্ফুর্ত ভালোবাসায় দুজনের সম্পর্কটা খুব সহজেই ‘ম্যাজিক্যাল’ হয়ে উঠবে। তাই সঙ্গীর সাথে কাটানো সময় গুলো যেন দুজনের হাসি, আড্ডায় প্রানবন্ত থাকে সেই চেষ্টা করুন। মাঝে মাঝে কিছু নির্দোষ পাগলামীও সম্পর্কে নিয়ে আসে ‘জাদু’।