সম্পর্ক নিয়ে কেন অসুখী হই আমরা!

সাধারনত প্রতিটি মানুষের মাঝেই হতাশা, রাগ, অভিমান, বিষণ্ণতা মোটকথা কোনো না কোনো মানসিক সমস্যা একটু-আধটু থাকেই। যাকে উদ্বেগ বা প্যাথলজিক্যাল অ্যাংজাইটি বলা হয়ে থাকে। কিন্তু যখন তা আমাদের নিয়ন্ত্রনের বাহিরে চলে যায় তখন সেটি আমাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ব্যাঘাত ঘটাতে শুরু করে। বিশেষত Relationship anxiety বা সম্পর্কের উদ্বেগ আমাদের জীবনে এতোটাই বাজেভাবে প্রভাব ফেলে যা আমাদের আশে-পাশে থাকা আপন মানুষগুলোর সাথে সম্পর্কের মধ্যে দূরত্ব বাড়িয়ে দেয়।

‘সম্পর্কের উদ্বেগ’ যার সাথে কম-বেশি প্রত্যেকটি মানুষ সংগ্রাম করে বেঁচে থাকে। এটি আপনার সম্পর্কের মাঝে ভালোবাসা বৃদ্ধির করার পরিবর্তে ভয়, সন্দেহ, ঈর্ষা, একঘেয়েমি ও নিরাপত্তাহীনতা বাড়িয়ে তোলে যা আপনার সুন্দর সম্পর্কটিকে দীর্ঘস্থায়ী হতে বাঁধা প্রদান করে।

আসুন দেখে নেয়া যাক যেসব কারণে আমরা অসুখী সম্পর্কের সম্মুখীন হই

অতিরিক্ত রাগ রাগ সাধারনত আবেগের একটি অংশ। যা প্রতিটি মানুষের মধ্যেই কম-বেশি বিদ্যমান। তবে এটি মানবজীবনে ইতিবাচক প্রভাবের চেয়ে নেতিবাচক প্রভাবই বেশি বিস্তার করে। কারণ, যখন একজন ব্যক্তি রেগে যায় তখন তার আপাদ-মস্তকে তাপের সৃষ্টি হয়। ফলে তার হিতাহিত জ্ঞান বলতে কিছু থাকে না। তখন সে নিজের প্রতি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে।

‘অতিরিক্ত রাগ’ যা আমাদের আপনজনদের সাথে সুন্দর সম্পর্কগুলোর মাঝে দূরত্ব সৃষ্টি করে। অল্পতেই রেগে যাওয়া এবং সেই রাগগুলোর দীর্ঘ স্থায়ীত্বকাল সম্পর্কগুলোর মধ্যে মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। রেগে গিয়ে অনেকেই অনেক অপ্রত্যাশিত সিদ্ধান্তও নিয়ে ফেলে যার ফল তাকে সারাটা জীবন ভোগ করতে হয়। অতিরিক্ত কোনো কিছুই ভালো না। কারণ এই অতিরিক্ত রাগই আমাদের মধুর সম্পর্কগুলোতে অসুখী হবার অন্যতম কারণ।

বিশ্বাসের ঘাটতি: একটি সম্পর্কের মূল স্তম্ভই হলো বিশ্বাস। একটি সম্পর্কের মাঝে বিশ্বাস যত দৃঢ়তর সে সম্পর্কটি তত শক্তিশালী হয়ে থাকে। ঠিক তেমনি বিশ্বাস বিহীন একটি সম্পর্ক বড্ড নড়বড়ে যা সম্পর্কগুলোর মাঝে বিশাল দূরত্বের সৃষ্টি করে। বিশ্বাস হচ্ছে সম্পর্কের খুঁটি। যার উপর ভর করে সম্পর্কগুলো চলতে থাকে বছরের পর বছর।

সাধারনত কারো সম্পর্কে অবিশ্বাসের বীজ বপন হয় তৃতীয় পক্ষের কোনো ব্যক্তি দ্বারা অথবা নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির কারণে। অবিশ্বাসের বীজ বপন হওয়া সম্পর্কগুলোর মাঝে সবসময় একধরনের দ্বন্দ্ব লেগেই থাকে যা ধীরে ধীরে সেই সম্পর্কের মাঝে ফাটল ধরিয়ে দেয়। এভাবে চলতে চলতে একটা সময় সম্পর্কগুলোর মধ্যে পুরোপুরি বিচ্ছেদ হয়ে যায়। আর এভাবেই সুন্দর সুন্দর সম্পর্কগুলো বিচ্ছেদের মাধ্যমে আমরা আমাদের জীবনকে অসুখী করে তুলি।

আর্থিকভাবে অসচ্ছলতা: আমরা যতই বলে থাকিনা কেন; ‘ভা্লোবাসার কাছে অর্থ মূল্যহীন’ কিন্তু বাস্তবতা ঠিক সেরকম নয়। ক্ষেত্র বিশেষ ভালোবাসা, অর্থ এবং ভালোবাসা ও অর্থ উভয়ই সম্পর্কগুলোর মাঝে পার্থক্য গড়ে তুলতে পারে। মানবজীবনে ভালোবাসা যেমন অপরিহার্য একটি জিনিস ঠিক তেমনি বেঁচে থাকতে হলে অর্থের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।

বর্তমান সময়ে অর্থ ব্যতীত যেখানে এক কদম আগানো প্রায় অসম্ভব সেখানে অর্থ ব্যতীত ভালোবাসার মানুষগুলোর সাথে জীবন পাড়ি দেওয়া শুধুই স্বপ্ন। এই অর্থ যেমন প্রায় সকল সমস্যার সমাধান দিতে পারে ঠিক তার বিপরীত এই অর্থের অসচ্ছলতা একটি সম্পর্কের মাঝে শত সমস্যার সৃষ্টি করে। আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে সৃষ্ট বিভিন্ন সমস্যাগুলো ধীরে ধীরে সম্পর্কের মধ্যে ফাটল ধরিয়ে দেয়। বর্তমান সময়টা এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে যে অর্থ না থাকলে খুব আপন মানুষগুলোও দূরে সরে যায়। এতে সম্পর্কগুলোর মাঝে সুখ নামক জিনিসটা উধাও হয়ে যায়।

সম্পর্কের প্রতি অযত্নবান: যে সম্পর্ক যতবেশি যত্নবান সে সম্পর্ক ততবেশি দৃঢ়। একটি ভালো সম্পর্ক কখনোই একদিনে গড়ে উঠে না। তিলে তিলে যত্নসহকারে সম্পর্কগুলোকে ভালোবাসায় পরিণত করতে হয়। প্রতিটিক্ষেত্রে এই সম্পর্কগুলোকে যথাযথ যত্ন ও ভালোবাসার সহিত আগলে না রাখলে একদিন সে সম্পর্কগুলোর মাঝেও মরিচা ধরা শুরু করে।

প্রিয় মানুষগুলো আপনার কাছ হতে অনেক কিছুই আশা করে। তারা চায় আপনি তাদের প্রতি একটু যত্নবান হোন, তাদের চাওয়া-পাওয়াগুলোকে গুরুত্ব দিন। মোটকথা, যেকোনো জিনিসের যত্ন না নিলে যেমন তা অকেজো হয়ে যায় ঠিক তেমনই কোনো সম্পর্কের যদি যত্ন না নেওয়া হলে সেই সম্পর্কটিও আস্থাহীন হয়ে পড়ে। জীবন থেকে হারিয়ে যায় সুখ নামক জিনিসটি।

সম্পর্কের প্রতি শ্রদ্ধাহীন : প্রতিটি সম্পর্কই অত্যন্ত শ্রদ্ধা ও সম্মানের। শ্রদ্ধা ও সম্মানে পরিপূর্ণ সম্পর্কগুলো অত্যন্ত সুন্দর ও সুখময় হয়ে উঠে। এবং সময়ের সাথে সাথে সম্পর্কগুলো আরও পরিপক্বতা লাভ করে। এমনকি সম্পর্কগুলো অটুট থাকে জীবনাবসান অবধি।

কিন্তু কিছু মানুষ তাদের সম্পর্কগুলোকে সম্মান করে না বা করতে জানে না। অহমিকা, অবিশ্বাস ও শ্রদ্ধাহীনতায় সম্পর্কগুলো বরং অশান্তির খোরাকে পরিণত হয়। একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাহীন সম্পর্কগুলোও খুব বেশি স্থায়ী হয় না। জীবনযুদ্ধের মাঝপথে এসে থমকে দাঁড়ায়। যেখান থেকে নতুন করে সুখ খুঁজে নেবার আর কোনো পথ থাকে না।

সম্পর্কের প্রতি অবহেলা: অবহেলা অত্যন্ত নিগৃহীত একটি জিনিস। কোনো ব্যক্তিই কারো অবহেলার পাত্র হতে চায় না। যে অবহেলিত হয় সে নিজেও হাজারো চেষ্টা চালিয়ে যায় তার ভালোবাসার মানুষটির কাছ থেকে অবহেলার পরিবর্তে একটু ভালোবাসা পেতে। অথচ অধিকাংশক্ষেত্রেই সময়ের সাথে সাথে ভালোবাসা পাবার চেয়ে অবহেলিত হবার পরিমাণটা আরো বেড়ে যায়।

সবকিছু সহ্য করা যায় কিন্তু ভালোবাসার মানুষগুলোর কাছ থেকে অবহেলা জিনিসটা সহ্য করা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য। অবহেলিত হতে হতে তা যখন মানুষটির ধৈর্যের সীমা অতিক্রম করে ফেলে তখন সে শত কষ্ট হলেও সে পথ হতে মুক্তি পেতে চায়। কিন্তু তারপরও একটু ভালোবাসা পাবার জন্য প্রিয় মানুষটির শত অবহেলা উপেক্ষা করেও পথ চেয়ে থাকে। দিনশেষে একরাশ অবহেলা, হতাশা ও ব্যর্থতা নিয়েই বেঁচে থাকতে হয় মানুষটিকে।

অহংকার: অহংকার বা অহমিকা মানুষের অস্বাভাবিক, বিকৃত ও জঘন্যতম একটি স্বভাব। অহংকার শুধুমাত্র একজন ব্যক্তির ব্যক্তিত্বের পতনের মূল কারণই নয়, এই অহংকার একটি সুন্দর সম্পর্ক পতনেরও অন্যতম কারণ।

একজন অহংকারী ব্যক্তি নিজেকে সবসময়ই বড় মনে করে থাকে। এবং তার পাশে থাকা মানুষটিকে সবসময় তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে থাকে। এতে করে একটি সম্পর্কের সাথে সম্পৃক্ত মানুষগুলোর মনে ঐ অহংকারী ব্যক্তির প্রতি একপ্রকার ঘৃনার জন্ম নেয়। যা তাদের মধ্যে বেশ দূরত্ব সৃষ্টি করে দেয়। বয়ে আনে অশান্তি। পতন হয় হাজারো যত্নে গড়ে তোলা একটি সুখী সম্পর্কের।

আপনজনদের সময় না দেওয়া: ব্যস্ততম জীবনের মাঝেও প্রতিটি মানুষ চায় তার প্রিয়জনদের সাথে কিছুটা সময় কাটাতে। আপনজনদের সাথে কাটানো সময়গুলো সবসময়ই মধুর হয়ে থাকে। তাদের সাথে কাটানো স্মৃতিগুলো সম্পর্কের গভীরতা আরো বাড়িয়ে দেয়। নিজেদের মধ্যে অপ্রকাশিত ভালোবাসাগুলো ফুটে উঠে খুব সহজেই।

কিন্তু বাস্তবতা কিছু মানুষকে সবসময়ই তার ভালোবাসার মানুষগুলো থেকে অনেকটা দূরে সরিয়ে রাখে। বাস্তবতার সাথে হেরে যাওয়া মানুষগুলো সবসময় এক ধরনের অপূর্ণতায় ভুগে। যদিও অনেকেই ইচ্ছাকৃতভাবে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখে। তবে যাই হোকনা কেন; ভালোবাসায় আপন মানুষগুলো যখন তাদের প্রিয় মানুষটির কাছ হতে প্রাপ্য সময় না পায় তখন তাদের মাঝেও সবসময় একধরনের বিষণ্ণতা বিরাজ করে।

সকলের মতামতকে প্রাধান্য না দেওয়া : যখন আপনি কারো সাথে একটি সম্পর্ক গড়ে তুলবেন তখন আপনাকে তার মতামতকে অবশ্যই প্রাধান্য দিতে হবে। একতরফাভাবে যেরকম একটি সম্পর্ক গড়ে উঠে না ঠিক তেমনই একতরফাভাবে কখনোই কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহন করা ঠিক না। সেক্ষেত্রে সম্পর্কগুলোর সাথে যুক্ত প্রতিটি ব্যক্তির মতামত মন দিয়ে শোনা এবং তাদের মতামতকে যথাসাধ্য প্রাধান্য দেওয়া অপরিহার্য।

কিন্তু যখন আপনি সেই সম্পর্কের সাথে সম্পৃক্ত কোনো কাজে তার মতামতকে প্রাধান্য না দিয়ে নিজের ইচ্ছে মতো সম্পন্ন করার চেষ্টা করবেন তখন সে নিজেকে মূল্যহীন মনে করবে। এমনকি এভাবে চলতে চলতে একটা সময় তা সম্পর্কের মাঝে মারাত্মকভাবে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

দিন শেষে জীবনযুদ্ধে তারাই বিজয়ী যারা শত ব্যস্ততা, ব্যর্থতা, ও অপূর্ণতা দূরে সরিয়ে রেখে আপনজনদের নিয়ে সুখে জীবনযাপন করছে। সুখ-দুঃখ মিলিয়েই জীবন। সকল বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে আপন মানুষগুলোকে ভালোবেসে ভালো রাখাটাই সবচেয়ে বড় সার্থকতা। সবশেষে, ভালো থাকুন এবং ভালো রাখুন আপনার আপনজনদের।

দেরিতে বিয়ে হলে যেসব মানসিক সমস্যায় ভোগেন নারীরা

একটি নির্দিষ্ট বয়সের মাঝে বিয়ে না হলে বেশিরভাগ নারীই কিছু না কিছু মানসিক সমস্যায় ভুগতে শুরু করেন। এমনকি যারা ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন নারী, তাদের মাঝেও লক্ষ্য করা যায় কিছু কিছু ব্যাপার। কারো কারো মাঝে প্রায়সই কাজ করে অতিরিক্ত ঈর্ষা, সামাজিক চাপ, কখনও ভীষন একাকীত্ব। সব মিলিয়ে অনেকেই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। জেনে নিন এমন কিছু সমস্যা সম্পর্কে, যেগুলো তৈরি হয় বিয়ে দেরিতে হলে। সমস্যাগুলি চিহ্নিত করা গেলে সেটা থেকে বের হয়ে আসাও সহজ।

একাকীত্ব থেকে বিষণ্ণ হয়ে যাওয়া : সমবয়সী সকল বোন বা বান্ধবীদের বিয়ে হয়ে গেছে, আর স্বভাবতই বিয়ের পর সকলেই নিজের পৃথিবী নিয়ে একটু বেশিই ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। এক্ষেত্রে যার বিয়ে হয়নি, তিনি হয়ে পড়েন একলা। প্রিয় বোন বা বান্ধবীদের খুব একটা কাছে পান না, কাটানো হয় না ভালো সময়। সবমিলিয়ে বিষণ্ণ হয়ে পড়েন, আর সেই বিষণ্ণতা থেকেই মনের মাঝে জন্ম নেয় হতাশা ও শূন্যতা। আর এই বোধ থেকে বের হয়ে আসার সেরা উপায় হচ্ছে নতুন বন্ধু-বান্ধব তৈরি করা, যার কাছে আপনার জন্য পর্যাপ্ত সময় আছে।
নিজেকে অযোগ্য মনে করা : সমবয়সী সকলে নিজের জীবন সঙ্গী পেয়ে গেছেন, আপনি হয়তো বারবার চেষ্টা করেও পারছেন না। হয়তো প্রেম সফল হয়নি কিংবা পরিবার থেকে চেষ্টা করেও ফল হচ্ছে না। বিশেষ করে আমাদের দেশে পাত্রী দেখাবার প্রক্রিয়াটা খুব অপমানজনক। এক্ষেত্রে প্রত্যাখ্যাত হবার পর নিজেকে অনেকেই অযোগ্য মনে করতে শুরু করেন। এত অযোগ্য যে, কোনো ছেলেরই তাকে পছন্দ হচ্ছে না। এমনটা ভাবা মানে অকারণেই নিজেকে ছোট করা। মনে রাখবেন, কোনো পুরুষের আপনাকে পছন্দ হয়নি মানেই আপনি অযোগ্য নন। এটা নিয়ে কষ্ট পাবার কিছু নেই। সম্ভব হলে ঘটা করে পাত্রী দেখার আয়োজনটা এড়িয়ে যান, অনেকটাই স্বস্তি পাবেন।
খুব কাছের বোন বা বান্ধবীর প্রতিও ঈর্ষা হওয়া: এটাও খুব সাধারণ একটা আবেগ। আমরা মানুষ, এমনটা হতেই পারে আমাদের সাথে। খুব কাছের বোন বা বান্ধবীটি হয়তো এখন আর আপনাকে সেভাবে সময় দিতে পারেন না, নিজের সংসার নিয়েই ব্যস্ত ও সুখী। এমন অবস্থায় ঈর্ষার একটা বোধ খোঁচা দিতেই পারে আপনাকে। এক্ষেত্রে নিজেকে বিষয়টা বোঝান। প্রথমত এটা ভাবুন যে তার জীবনে মোটেও আপনার গুরুত্ব কমেনি। আর দ্বিতীয়ত, একদিন আপনারও এমন চমৎকার একজন জীবনসঙ্গী হবে, তাই মন খারাপের কিছুই নেই।
বিয়ে করার জন্য তাড়াহুড়া করতে গিয়ে নিজেকে হাস্যকর করে ফেলা : অনেক নারীই এই কাজটি করে ফেলেন নিজের অজান্তেই। আর তা হল, একটি বিয়ে করার জন্য “ডেস্পারেট” হয়ে যান। ক্রমাগত সামাজিক ও পারিবারিক চাপ থেকে এটা হয়। মনের মাঝে ক্রমাগত ঘুরতে থাকে যে “বয়স পার হয়ে যাচ্ছে”! আর এই পার হয়ে যাওয়া বয়সকে টেক্কা দিতে একজন জীবনসঙ্গীর জন্য আকুল হয়ে ওঠেন অনেকেই। বারবার ঘটকের কাছে যাওয়া, অফিসে বা পরিচিত মহলে নিজেকে পাত্রী হিসাবে উপস্থাপন ইত্যাদি করতে গিয়ে নিজেকে হাসি ও করুণার পাত্রে পরিণত করে ফেলেন তারা। আপনিও কি এমন করছেন? তাহলে জেনে রাখুন, এসব করে কেবল সামাজিক মর্যাদাতেই খাটো হচ্ছেন আপনি। এসবে তেমন কোনো ফল নেই।
চাপের মুখে ভুল মানুষকে বেছে নেওয়া : ক্রমাগত পারিবারিক ও সামাজিক চাপের কারণে অনেক নারীই ভুল মানুষটিকে বেছে নেন বিয়ের জন্য। ব্যাপারটা এমন হয়ে দাঁড়ায় যে, যাকে সামনে পেলাম, তাকেই বিয়ে করে ফেললাম। কিংবা যে রাজি হল, তাকে পছন্দ না হলেও বিবাহের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে যাওয়া। অনেকেই এই ব্যাপারটিকে ভালোবাসা ভেবে নিজেকে শান্তনাও দিতে চান। আবার অনেকে পরিবারকে খুশি করার জন্য নিজেকে রীতিমত চাপ দিয়ে বিয়েতে রাজি করায়। এই ভুলটি কখনও করবেন না। একটাই জীবন এবং এই জীবনে একটি ভুল বিয়ে আপনার অশান্তি কমাবে না বরং বাড়বে।
আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলা : যে সমাজে একজন মেয়ের সফলতা বা বিফলতা নির্ভর করে তার স্বামী ও সংসারের স্ট্যাটাসের ওপরে এবং সঠিক সময়ে বিয়ে না হলে মেয়েটি হয়ে ওঠে সকলের চক্ষুশূল, সেই সমাজে বিয়েতে দেরি হলে আত্মবিশ্বাস হারিয়ে যাওয়াই স্বাভাবিক। যখন ক্রমাগত নিজের কাছের মানুষেরাই বলতে থাকে যে “তুমি এত অযোগ্য যে পাত্র জোটে না”, তখন অনেক নারীই নিজের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলেন আর ক্রমশ গুটিয়ে নিতে থাকেন জীবন থেকে। ভুলেও এই কাজটি করবেন না। জীবন আপনার। আর আপনার জীবনে মাথা উঁচু করে আপনাকেই বাঁচতে হবে।