আদর্শ জীবনসঙ্গী বিষয়টি আসলে কি?

বিভিন্ন বই পুস্তকে, সিনেমার গল্পে  একটা বিষয় ঘুরে ঘুরে আসে, সেইটা হচ্ছে একজন  আদর্শ জীবন সঙ্গী বা সোলমেটের বিষয়টি। বেশীর ভাগ গল্পের কেন্দ্রে থাকে এই সোলমেট বা আদর্শ জীবন সঙ্গী, বাকী গল্পটা প্রবর্তিত হয় তাকে ঘিরে ,এই ধরনের কাহিনী বা গল্প দ্বারা আমরা বাস্তব জীবনে অনুপ্রাণিত হয়। আমাদের মধ্যে একটা ধারনার সৃষ্টি হয় যে, একদিন এক রাজকুমার আমাদের জীবনে আসবে,এসে পুরা জীবনটায় বদলে দেবে, জীবনটাকে পরিপূর্ণ করে তুলবে।

কিন্তু বাস্তবে কি এইটা সম্ভব?আসলেই কি একজন মানুষের পক্ষে সম্ভব অন্য আরেক জনের জীবনকে পরিপূর্ণ করে তোলা? এই ধারনাটি সম্পূর্ণ ঠিক না, কারন এতো বড় পৃথিবীতে বিশেষ একজন মানুষকে খুঁজে বের করা আসলেই অনেক কঠিন একটা কাজ।

তাহলে মনে প্রশ্ন আসতে পারে, আমরা কি ভালোবাসার মানুষের সন্ধান করা বন্ধ করে দিবো?

বিষয়টা আসলে এমন দাড়ায়, আমাদের যদি ধারনা থাকে যে আমাদের একজন সুনির্ধারিত জীবন সঙ্গী আছে তবে তাকে খুঁজে বের করার আগ্রহ বেড়ে যাবে। যদি বিশেষ কেউ না থাকে তবে ভালোবাসার অনুভূতি আর সাধারণ ভালো লাগার মধ্যে কোন তফাৎ থাকবে না। তখন মনে হবে যদি বিশেষ কেউ না থেকে থাকে তবে খুঁজে লাভটা কি?

আদর্শ জীবন সঙ্গী বা সোলমেট ছাড়া ভালোবাসা শব্দটি একে বারে অর্থহীন, যদিও বাস্তবের ভালোবাসা, কল্পনার জগৎ থেকে সম্পূর্ণ আলাদা কারন, বাস্তবে আমরা যাকে ভালোবেসে সম্পূর্ণ জীবনটা তার সাথে কাটাতে চায়, সেই সম্পর্কটা গড়ে তুলতে আমাদেরকে অনেক ভালো-খারাপ অবস্থার ভেতর দিয়ে যেতে হয়, করতে হয় অনেক সমঝোতা, দিতে হয় অনেক ত্যাগ। শুধু ব্যাক্তিটা কে খুঁজে পেলে হয় না।

বাস্তবমুখী ভালোবাসাঃ বয়স যখন কম থাকে তখন চোখে থাকে রঙ্গিন স্বপ্ন, তখন কাউকে ভালো লাগলে মনে হয় এই বুঝি আমার স্বপ্নের মানুষ, কিন্তু বাস্তবে সেটা না ও হতে পারে। সত্যিকারের ভালোবাসা ক্ষণস্থায়ী হয় না কিংবা কাউকে সাময়িক ভালোলাগা নয়। বাস্তবে সত্যিকারের ভালোবাসা হচ্ছে একে অন্যকে খেয়াল করা, বাহ্যিক সৌন্দর্য দ্বারা প্রভাবিত হয় না, সম্পর্ক যতোয় পুরানো হোক না কেন ভালোবাসার পরিমাণ একই রকম থেকে যায়, এরকমটা কেবল সত্যিকারের ভালোবাসায় হয়। দুই জন মানুষের একে অন্যের প্রতি প্রবল টান, এক সাথে থাকার ইচ্ছা ও প্রতিশ্রুতি, এগুলো সত্যিকারের ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ।

আদর্শ জীবন সঙ্গী বা সোলমেট আমাদের প্রত্যেকের জীবনের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, সত্যিকারের ভালোবাসার সার্থকতা যার সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।