পুরুষ আর আবেগ! বিষয়দু’টোকে অনেকেই ঠিক মেলাতে পারেন না। বেশিরভাগ পুরুষই আবেগের বহিঃপ্রকাশে অস্বস্তিবোধ করেন। সিনেমার পরদায় অবশ্য নায়কদের আমরা মেলোড্রামাটিক দৃশ্যে দেখে থাকি। তবে বাস্তবে সেই দৃশ্য অনেক পুরুষই পছন্দ করেন না। আর তাঁদের স্ত্রীদেরও এ ব্যাপারে অনুযোগ রয়েছে।
শুধু যে পুরুষদের মধ্যে আবেগের অভাবই তাঁদের অনুযোগের বিষয়, তা নয়! পুরুষরা যৌনমিলনের সময়ে আবেগতাড়িত হন না—এটাও অনেক স্ত্রীরাই অভিযোগ করে থাকেন। তবে পুরুষরা আবার পালটা প্রশ্ন করেন এই বলে যে সঙ্গীর সঙ্গে মিলিত হওয়াটাই এক ধরনের আবেগ। এটাই কি যথেষ্ট নয়! সকলের আগে ভেবে দেখা প্রয়োজন যে আবেগপ্রবণতা আসলে কী। মোটের উপর যে কোনও কাজে প্যাশনের অভাব, উৎসাহ না দেখানোকেই আবেগের অনুপস্থিতি বলে ধরি আমরা। মিলনের সময় শীতল প্রতিক্রিয়াও ঠিক তাই।
তবে পুরুষ ও মহিলা উভয় পক্ষেরই কয়েকটি জিনিস মাথায় রাখা প্রয়োজন। অনেক পুরুষই আছেন যাঁরা মিলনের সময়ে নিজের দুর্বলতা ঢাকার উপায় হিসেবে শীতল ব্যবহার করেন। আবার অনেক পুরুষ ভাবেন আবেগপ্রবণ হওয়াটা আদৌ পুরুষালি গুণ নয়। তাই মিলনের সময়ে বেশি আবেগে ভেসে যাওয়ার পক্ষপাতি নন তাঁরা।
আমাদের সমাজে ছোটবেলা থেকেই ছেলেদের সেখানো হয় চোখের জল না ফেলতে। কোনও পুরুষ কান্নাকাটি করলে তা অনেকসময় হাসির খোরাক হয়ে দাঁড়ায়। তাই, অনেক পুরুষই তাঁদের অনুভূতি, মুড, সেন্টিমেন্ট ইত্যাদিকে চেপে রাখেন। ধীরে ধীরে এটাই তাঁদের অভ্যেসে দাঁড়িয়ে যায়।
মিলনের সময়েও মহিলাদের মতো নিজেকে অতটা মেলে ধরতে পারেন না অনেক পুরুষই। পুরুষদের দোষ দেওয়ার আগে মহিলাদের এই বিষয়টি ভেবে দেখা প্রয়োজন। সাধারণত, অনেক পুরুষই সেক্সুয়াল কমিটমেন্ট চট করে করতে চান না। অর্থাৎ, একটি কমিটেড সম্পর্কে না থাকলে নিজেকে উজাড় করে দিয়ে মিলিত হতে চান না। পেড সেক্স অবশ্যই এর ব্যতিক্রম। কিন্তু অনেকের কাছেই যৌনমিলন হল আবেগের চরম বহিঃপ্রকাশ। অনেক মহিলাই এটা বুঝতে পারেন না।
স্ত্রীরা চাইতেই পারেন যে তাঁদের স্বামীরা আবেগপ্রবণ হবেন—এতে দোষের কিছু নেই। তবে সকলেই যে একরকম হবেন তা তো নয়। ধৈর্য ধরুন। স্বামীর সঙ্গে কথা বলুন। ধীর ধীরে তিনিও আপনার প্রতি ইমোশনাল হবেন।
আপনার স্ত্রী যদি আপনার থেকে আরও বেশি আবেগ প্রত্যাশা করেন, তাহলে নিজেকে একটু বদলানোর চেষ্টা করে দেখুন না। এতে কিন্তু আপনার পৌরুষ চলে যাবে না! আবার স্ত্রীরাও একটু চেষ্টা করে দেখুন না, স্বামীরা যদি নিজের মতো থাকেন, তাহলে সম্পর্কে খুব একটা সমস্যা হবে না।
যে যেমন তাঁকে সেরকম থাকতে দিলেই সবচেয়ে ভাল। দু’জনেই একটু মানিয়ে নিতে পারলে সুস্থ সম্পর্কে আর কীই বা চাই!