Relationship anxiety বা সম্পর্কের উদ্বেগ

সম্পর্কে জেলাসি

কোথা থেকে যেন উড়ে এসে জুড়ে বসেছে ঈর্ষা আপনাদের সম্পর্কের মাঝে। অনেক সময় অতি মাখোমাখো দাম্পত্যের মধ্যেও প্রায় ঘুণপোকার মতো হানা দেয় ঈর্ষাভাব। যা ক্রমশই সম্পর্কে তিক্ততা আনে। দু’জনের সম্পর্কে ঈর্ষার সমস্যা হলে কী করবেন? 

নতুন সম্পর্ক শুরু করার সময় দু’জনকেই কিছুটা ত্যাগ স্বীকার করতে হয়। দুটো মানুষ তো দু’রকম হবেনই। এক ছাদেক নীচে মানিয়ে থাকার প্রথম ধাপ অ্যাডজাস্টমেন্ট। কাউকে হয়তো একটু বেশি করতে হয়, কাউকে কম। কিন্তু সবচেয়ে কাছের মানুষটির কাছ থেকে সেই ত্যাগস্বীকারে মূল্য পাওয়া যায় না, উলটে সকলেই তাঁর সাফল্য, তাঁর কেরিয়ার নিয়েই প্রশংসায় মেতে ওঠেন তখন নিজের অজান্তেই সেই মানুষটার প্রতি বিদ্বেষ জন্মাতে পারে। আর থেকই আসে জেলাসি। আসলে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের নানা জটিলতার মধ্যে একটি অবশ্যই একে অপরকে হিংসা।

সঙ্গীর সাফল্য বা চরিত্রের কোনও একটি দিক সম্বন্ধে নেতিবাচক চিন্তা জমে জমেই এই হিংসার জন্ম। এতে মিশে থাকে কিছুটা বঞ্চনার দুঃখ এবং হয়ত কিছুটা অভিমানও। এই নেগেটিভ ইমোশন খুব দ্রুত তার কুপ্রভাব ছড়িয়ে দেয় শরীর-মনে এবং দাম্পত্য পরিণত হয় শুধুমাত্র এক মামুলি নিয়মরক্ষার খেলায়।

‘মানছি আমার স্বামী আমার থেকে অনেক বেশি কেরিয়ারিস্টিক, অনেক বেশি সফল। কিন্তু আমিও তো ফ্যামিলির জন্যে, বাচ্চার জন্যে অনেক ত্যাগস্বীকার করেছি। পড়াশোনায় ভাল হওয়া সত্ত্বেও কেরিয়ারে মন দিতে পারিনি। সত্যি কথা বলতে গেলে, আমার এফর্টের জন্যে আজ ও এত সফল, আমাদের মেয়ে পড়াশোনায় এত ভাল আর সংসার এত সহজে চলে। কিন্তু সবাই কেন ওর প্রোমোশন, ওর কেনা নতুন গাড়ি, ওর লাইফস্টাইল নিয়ে প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে ওঠে। মেয়েও তো বাবা বলতে অজ্ঞান। আমার পরিশ্রম, আমার খাটনি নিয়ে তো কেউ ভুলেও কোনও মন্তব্য করে না। মাঝে মাঝে মন হয়, সব ছেড়েছুড়ে চলে যাই, তাহলেই সব বুঝবে মজা!’ আচ্ছা আপনার কী মাঝে মাঝেই এরকম মনে হয়? আপনার সবচেয়ে কাছের প্রিয় মানুষটিকে অজান্তে হিংসা করেন না তো? আপনার মনের কোণে স্বামীর সাফল্য, জনপ্রিয়তা বা অন্য কোনও কারণবশত  বিদ্বেষ জমা হচ্ছে না তো?

• নিজের মনের মধ্যে একবার উঁকি দিয়ে দেখুন তো, সমস্যাটা সত্যি কোথায়। আপনার স্বামীর কি সত্যিই দোষ আছে না আপনার মনের কোনও জমে থাকা ক্ষোভ সম্পর্কটা জটিল করে তুলছে। অনেকসময় হেরে যাওয়া বা জনপ্রিয়তা হারাবার ভয় থেকেও জেলাসি জন্ম নেয়। নিজের কাছে সত্‌ থেকে  ভাবনাচিন্তা কাটাছেঁড়া করলেই কোনটা ঠিক, কোনটা ভুল সহজেই বুঝতে পারবেন।

• স্বামীর সাফল্য ভাগ করে নিন। ওঁর সাফল্যে যে আপনিও অংশীদার সেটা ভুলে যাবেন না। দুজনে মিলে একসঙ্গে এনজয় করুন।

• সিন ক্রিয়েট করবেন না। ছেলেমেয়ের সামনে তো নয়ই। স্বামী-স্ত্রী মধ্যে মতানৈক্য হওয়া স্বাভাবিক কিন্তু তাই নিয়ে কটূক্তি বা কাদা ছোড়াছুড়ি কুরুচির পরিচয়। এর আশ্রয় নিলে আপনি স্বামী এবং সন্তানের চোখে অনেকটাই ছোট হয়ে যাবেন।

• আপনার স্বামীর সঙ্গে একটা আউটিং অ্যারেঞ্জ করুন। বাচ্চাদের সঙ্গে না নেওয়াই ভাল। যেখানে আপনাদের প্রথম দেখা হয়েছিল, যেতে পারেন সেই জায়গায়। সাংসারিক চিন্তাভাবনা ভুলে গিয়ে আগের মতো দুজনে আড্ডা দিন। কথায় কথায় গল্পচ্ছলে নিজের মধ্যে চেপে রাখা কষ্টগুলো ওঁকে জানান। বুঝিয়ে বলুন আপনি ঠিক কীভাবে ওঁকে পেতে চান। ধীরে ধীরে আলোচনার মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে দূরত্বটা কমিয়ে আনার চেষ্টা করুন।

• নিজেকে আর একটু ব্যস্ত করে তুলুন। বাড়ির কাজকর্ম, ছেলেমেয়েদের তদারকি করা ছাড়াও যে বাইরে একটা বিশাল জগৎ আপনার জন্যে অপেক্ষা করে আছে, তার দিকে একটু চোখ ফেরান। পছন্দের কোনও হবি আবার নতুন করে শুরু করতে পারেন বা পার্ট টাইম চাকরিও নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করতে সাহায্য করবে। বাড়িতে বসে ছোটখাট হোম বেসড বিজ়নেস শুরু করতে পারেন। তাহলে মনের প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে আত্মবিশ্বাসও বাড়বে।

প্রকাশ করেছেন

Best Marriage Media Bangladesh

Best Marriage Media in Bangladesh | Bibahabd is the Leading Bangladeshi Matrimony website, Provides online and offline matchmaking service for marital relationship.