পরকীয়া

বিয়ের পর দুই বছর পাড় হয়ে হয়েছে শাহেদ-প্রিয়ার, ভালোই চলছে সবকিছু। এরই মধ্যে সেদিন সকালে শাহেদের মোবেইল ফোনে বেশ কয়েকবার ফোন এলো অপরিচিত একটি নম্বর থেকে। প্রিয়া দেখলো শাহেদ ফোনটি রিসিভ করছে না। প্রিয়া ভাবলো হয়তো শাহেদের অফিসের কোনো ফোন…

সে প্রতিদিনের মতো শাহেদের বাইরে যাওয়ার জোগার করতে ব্যস্ত হয়ে গেল। সব ঠিকঠাক, হঠাৎ প্রিয়া লক্ষ্য করে সে যখন অন্য ঘরে থাকে তখন শাহেদ যেন কার সঙ্গে কথা বলে। তাকে দেখে দ্রুত ফোনটি কেটে দেয়, প্রিয়া জানতে চায় কার ফোন ছিল? উত্তর দিতে কেমন যেন গলা কেঁপে ওঠে শাহেদের। সে একবার বলে অফিসের ফোন তো আরেকবার বলে বন্ধুর। এটা বলে যখন বুঝতে পারে কিছু একটা লুকাচ্ছে এটা প্রিয়া বুঝতে পারছে, সে তখন রেগে যায়। আর তাকে অবিশ্বাস করা হচ্ছে বলে উল্টো প্রিয়াকেই বকা দেয়।

প্রিয়া শাহেদকে কখনো এই রূপে দেখেনি। এতো বিশ্বাস, ভালোবাসা, একসাথে অনেক কিছু করার স্বপ্ন সবই তাহলে মিথ্যা হতে চললো…তার সুখের সংসার এভাবে ভেঙ্গে যাবে? প্রিয়ার মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়েছে। তারপর প্রিয়া খোঁজ নিয়ে জানে বর্ষা নামের একটি মেয়ের সঙ্গে শাহেদ নিয়মিত ফোনে কথা বলে, মাঝে মাঝে দেখাও করে। এটা জানার পরে শাহেদ সম্পর্কে আর কিছু জানার মতো মানসিক অবস্থা প্রিয়ার ছিল না…

আমরা নিশ্চিন্তে আমাদের স্বামী, স্ত্রী, ভাইবোন আর সন্তানদের বিশ্বাস করি। আমরা দেখি নিয়মিত তারা কাজের জন্য বের হচ্ছে সময় মতো ফিরেও আসছে কিন্তু আসলে তারা অন্য রকম অসামাজিক কোনো কাজে জড়িয়ে পড়ছে কিনা তার কি খোঁজ রাখছি?

পরিবারের একজনের এধরনের পরকীয়ার সম্পর্ক ধ্বংস করে দিতে পারে ব্যক্তি এবং পারিবারিক বিশ্বাস আর শ্রদ্ধার সম্পর্ককে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, মিথ্যা মোহের বশবর্তী হয়ে পরকীয়ার মতো একটি সামাজিক ব্যাধিতে আক্রান্ত না হয়ে, বিবাহিত জীবনকে আরও সুন্দর এবং সুখী হতে যে বিষয়গুলোর আমাদের চর্চা করতে হবে:

সততা

সম্পর্কের ক্ষেত্রে মূল স্তম্ভ হচ্ছে সততা। প্রতিটি সম্পর্কের বিষয়ে সততা দেখাতে হবে। একজনকে অন্যজনের অনেক কাছে নিয়ে আসবে যখন সে বলতে পারবে,‘যাই হোক তুমি আমার সম্পর্কে সত্যটাই জানবে’।

ক্ষমা

একদিনে কোনো সম্পর্ক গড়ে ওঠে না। কোনো ভুল হলে প্রথমেই সম্পর্ক ভেঙ্গে দেওয়ার চিন্তা না করে সংশোধনের সুযোগ দিতে হবে।

বোঝাপড়া

স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে চমৎকার বোঝাপড়া থাকাটা খুব জরুরি।

বিশ্বাস

এমন কিছু কখনো করা যাবে না যাতে করে দুজের মধ্যে বিশ্বাস নষ্ট হয়ে যায়। শুধুমাত্র অবিশ্বাসই একটি সম্পর্ক ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।

সময় কাটানো

একসঙ্গে সময় কাটাতে আগ্রহী হতে হবে। দুজনের একান্ত সময়টুকু আনন্দময় করে তুলতে নতুন নতুন পরিকল্পনা করতে হবে।

বন্ধুত্ব

‘বিয়ের আগে আমরা খুব ভালো বন্ধু ছিলাম’। তো, বিয়ের পরে কী হলো? বিয়ের পর সম্পর্কটাকে আরও মজবুত করতে চাই দুজনের নিবিড় বন্ধুত্ব।

ধৈর্য

দাম্পত্য জীবনের পুরো সময়টাই হানিমুন মুডে থাকতে পারবো…এটা ভাবলে বড় ধরনের ধাক্কা খেতে হতে পারে। দুঃসময় আসতে পারে, এমন অবস্থায় ভেঙ্গে না পড়ে ধৈর্য ধরতে হবে।এক বিয়েতে বিশ্বাস এক সঙ্গীর সঙ্গেই সারাজীবন কাটানোর জন্য মনস্থির করতে হবে।

ভালোবাসা

সব সম্পর্কের মূলে থাকে ভালোবাসা। সঙ্গীর জন্য ভালোবাসা থাকতে হবে এবং সেই ভালোবাসার প্রকাশও করতে হবে।তবে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে এরকম অনেক বিষয় নিয়েই সন্দেহ দেখা দেয়, যেগুলোর হয়তো তেমন বাস্তব প্রমাণ নেই। তাই সন্দেহ করার আগে বিষয়টি নিয়ে সরাসরি কথা বলে বা খোঁজ নিয়ে নিশ্চিত হন।

আমরা কখনোই চাই না সুখের সংসার কোনো সন্দেহে ভেঙ্গে যাক। কিন্তু এটাও হওয়া উচিৎ নয় যে দিনের পর দিন একজনকে ঠকিয়ে অপরাধী পার পেয়ে যাবে।

সুত্রঃ বাংলা নিউজ ২৪ 

বিয়ের সাজে

বিয়ের সাজ পরিকল্পনার আগে একটা থিম ভেবে নিতে পারেন। আর তার সঙ্গে মিলিয়ে নিতে পারেন শাড়ি, গয়না ও অন্য অনুষঙ্গ। যেমন, কেউ হয়তো বেছে নিলেন আদি ঢঙের সাজ, আবার কেউ চান এর সঙ্গে আধুনিকতা।

তবে মূল ভাব যেমনই হোক বিয়ের সাজ-পোশাক—সবকিছুতে থাকা চাই সামঞ্জস্য। সাজ-পোশাকে চড়া নয়, বরং স্নিগ্ধ ভাব থাকা ভালো। মেকআপ আর পোশাকের চাকচিক্যে কনের আসল সৌন্দর্য যেন হারিয়ে না যায়।

লেখা: রুহিনা তাসকিন

কন্টাক্ট লেন্স

কন্টাক্ট লেন্স কি?

কন্টাক্ট লেন্স বলতে আমরা সাধারনত ডিসপোজেবল সফট কন্টাক্ট লেন্স কেই বুঝি। কেউ কেউ কন্টাক্ট লেন্স ইউজ করে ফ্যাশন এর জন্য। আবার কেউ কেউ চোখের প্রব্লেম এর জন্য। ফ্যাশনাবল লেন্স বলতে কালার লেন্স এর কথা বলা হচ্ছে। এটা মুহূর্তেই আপনার চোখের রং বদলে দিবে। আজ আপনার চোখ নীল সাগরের মত, তো কাল আবার হ্যাজেল এর মত। কিংবা পরশু ঘোলা ঘোলা।

আর অপ্টিকাল সমস্যার জন্য যে লেন্স ব্যবহার করা হয়, সেগুলাতে পাওয়ার থাকে। বাংলাদেশে চক্ষু সমস্যার জন্য ডাক্তারেরা সাধারনত স্বচ্ছ লেন্স দিয়ে থাকেন। কারন কালার পাওয়ার যুক্ত লেন্স বাংলাদেশে ভালো ব্র্যান্ড এর পাওয়া যায় না। আর সেগুলা ঠিক সফট আর থাকে না যা আপনার চোখের উপর স্ট্রেস ফেলে। ফলে চোখ গরম হয়ে যায় ২-৩ ঘণ্টা পর ই।

লেন্স পরতে যা যা লাগবেঃ

১– লেন্স (দুই চোখের জন্যই)
২– সল্যুশন (এটা একটা তরল যার মাঝে লেন্স ভিজিয়ে রাখতে হয়)
৩– লেন্স বক্স (বক্স এর মাঝে লেন্স সল্যুশন এ ভিজিয়ে রাখতে হয়)
লেন্স কেনার সময় ই এগুলা সব দিয়ে দেয়া হয়।

ডিসপোজেবল সফট কন্টাক্ট লেন্স এর ব্যাবহার বিধিঃ

লেন্স পরা খুব ই সোজা। প্যাকেট খলার পর লেন্স টি বাম হাতের তালুতে রাখুন। এবার, কিছুটা সল্যুশন ঐ লেন্স এর উপর নিন। ডান হাতের আঙ্গুল দিয়ে লেন্স টি পরিস্কার করুন। সতর্ক থাকবেন, লেন্স টি যেন ছিঁড়ে না যায়। এবার লেন্স টি ডান হাতের তর্জনী তে নিন এবার বান হাত দিয়ে টেনে চোখটিকে বড় করুন আর লেন্স টিকে ভিতরে বসিয়ে দিন ডান হাত দিয়ে। শেষ হলে কয়েকবার চোখ বন্ধ করুন আর খুলুন। এভাবে দুচোখেই লেন্স পরুন।

লেন্স পড়ার আগে অবশ্যই খেয়াল করতে হবে লেন্স টি সোজা আছে কিনা। লেন্স এর দুইটা পার্শ্ব। কোনটা সোজা কিভাবে বুঝবেন? প্রথমে লেন্স টিকে তরজনির উপর রাখুন।  কোনা গুলো যদি উঁচু হয়ে থাকে তাহলে লেন্স সোজা আছে। আর যদি একটু ঝুলে থাকে, তাহলে লেন্স উল্টা।

একটানা এক সপ্তাহের বেশি লেন্স বক্স এ ইউজ না করে ফেলে রাখলে, মাঝে মাঝে সল্যুশন পালটাতে হয়।অবশ্যই খেয়াল রাখবেন, ডান চোখের লেন্স ডান বক্স এ, আর বাম চোখের লেন্স বাম বক্স এ রাখতে হবে। লেন্স বক্স এর উপর বাম ডান লেখা থাকে সাধারনত। ডিসপোজেবল সফট কন্টাক্ট লেন্স সাধারনত সকালে পরতে হয় আবার রাতে খুলে রাখতে হয়। এভাবে প্রতিটি লেন্স ২ মাস পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়। এক প্যাকেট এ প্রতি চোখের ছয়টা করে লেন্স থাকে।

কোন ব্র্যান্ড এর লেন্স কিনবেনঃ

১. johnson and johnson (বাংলাদেশে যেগুলা পাওয়া যায়,তার মাঝে এটাই বেস্ট )
২. acuvue
৩.bausch + lomb
৪.biofinity
৫. dailies
৬. fresh look
৭. air optix
৮. igel
৯. aqua flexi
এছাড়াও আরও অনেক ব্র্যান্ড আছে। কিন্তু ডাক্তার আপনাকে johnson and johnson ই নিতে বলবে।

কোথায় পাওয়া যাবেঃ

আপনার চক্ষু বিশেষজ্ঞের কাছেই পাবেন। তবে দাম একটু বেশি লাগবে । নিজে কিনতে চাইলে নিচে্র যেকোনোটিতে যেতে পারেন।

১-আমেরিকান অপটিকসঃ ১২০/১, আউটার সারকুলার রোড, মগবাজার, ঢাকা। ফোনঃ- ৯৩৫৮৮৭৯।

২-আনিকা মনিকা অপটিকসঃ ল্যান্ড মার্ক সপিং সেন্টার; গূলশান-২,ঢাকা। ফোনঃ-৯৮৮৪০৪৪।

৩-বসুন্ধরা অপটিকসঃ লেভেল#৫; ব্লক-ডি; বসন্ধরা সিটি, ঢাকা। ফোনঃ-৮১২১৯৭৫।

বিয়ে নিয়ে আয়োজন

দেখে মনে হচ্ছিল, কারও বুঝি বিয়ে। ঢাকার গুলশানে একটি হোটেলের হলরুমের বাইরে শুধু ফুল আর ফুল। ফুলে মোড়া তোরণ, ফুলের ছোট থাম। একপাশে পালকি নিয়ে অপেক্ষমাণ বেহারা। হলঘরে পা বাড়িয়ে থমকে যেতে হলো আরেকবার। পাক্কা পাঁচটি বিয়ের মঞ্চ, কোনোটা কালো পর্দায় নীলচে তারার খই ফুটিয়েছে, কোনোটা রাজকীয় লালে মেখেছে সোনালি আবির। একপাশে ফুলের কুঞ্জ, আরেক পাশে ডানা মেলা প্রজাপতি। হঠাৎ দেখি, কনেরা এসে পড়েছে। আরে, সব দেখি লাক্স সুন্দরী! রাখি, সামিয়া, সামিহা, প্রসূন আর বিপাশা। ঘটনা কী? উত্তর মিলল পন্ডসের রঙিন ব্যানার দেখে। ওহ্, আয়োজন তা হলে শুধু কনেদের নিয়ে।১৭ অক্টোবর। বিয়ের মৌসুম সামনে রেখে শুরু হলো পন্ডসের আয়োজন ‘বিউটিফুল ব্রাইড’। পন্ডস এই অনুষ্ঠান শুরু করল বিউটি স্যালন ম্যাজিক মিরর-এর সহযোগিতায়। এক দিনের আয়োজনে আরও ছিল নিউ জড়োয়া হাউস, সানজানা আর ওয়েডিং ডায়েরির অংশগ্রহণ।

শুরু হতে চলল বিয়ের মৌসুম। শীতও এসে পড়ল বলে। এই তো সময় ত্বক আর নিজেকে নিয়ে ভাবার। ইউনিলিভার বাংলাদেশের বিপণন ব্যবস্থাপক মাহাতাব হোসেন বলেন, ‘বিয়ে মানেই রোমান্সের সেরা সময়। এ জন্য তো শুধু এক দিনের যত্ন হলেই হয় না। প্রয়োজন একটু বেশি সময়ের বিশেষ যত্ন। একই মতের কারণে ম্যাজিক মিররের মাধ্যমে আমাদের এই আয়োজন। উদ্দেশ্য একটাই, প্রত্যেক বাঙালি কনেকে সুন্দর করে তোলা।’

ম্যাজিক মিররের প্রধান মেকআপ শিল্পী ফারজানা হালিম হাই বলেন, এক দিনের মেকাপে সুন্দর কনে হওয়া যায় বটে, কিন্তু নিজেকে সুন্দর রাখতে প্রয়োজন ত্বক ও চুলের নিয়মিত যত্ন। কনে মানে নিজেকে রঙের আড়ালে ঢেকে ফেলা নয়, ছিমছাম মেকআপে নিজেকে ফুটিয়ে তোলাই আসল। সে জন্য একই রূপ বিশেষজ্ঞের সাহায্যে বিয়ের অন্তত এক মাস আগে থেকে প্রস্তুতি নেওয়া উচিত।

অনুষ্ঠানের বিয়ের মঞ্চ, ফুলসজ্জাসহ আয়োজনের ছবি তোলার দায়িত্বে থাকা ওয়েডিং ডায়েরির প্রধান প্রীত রেজা বলেন, একই আয়োজনে একই সমান্তরালে সবার হাঁটার লক্ষ্য একটাই। মানুষের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এ আয়োজনকে রঙিন করে তোলা। আর স্বপ্নপূরণের এই দিনের টুকরো টুকরো ছবি তুলে আনে ওয়েডিং ডায়েরিপাঠক, এই মৌসুমে আপনিও যদি এমন স্বপ্ন দেখেন, তা হলে প্রস্তুতি নিন এখন থেকেই।

-খাদিজা ফাল্গুনী

যুক্তরাজ্যে অবিবাহিত যুগলের সংখ্যা বাড়বে

২০৫০ সালের দিকে যুক্তরাজ্যে বিবাহিত যুগলের চেয়ে অবিবাহিত যুগলের সংখ্যা হবে বেশি। সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক খবরে আজ সোমবার এ কথা বলা হয়।যুক্তরাজ্যের সামাজিক ন্যায়বিচার কেন্দ্রের (সিজেএস) প্রতিবেদনে বলা হয়, কেবল মধ্য ও ধনিক শ্রেণীর পরিবারগুলোতে বিয়ের প্রবণতা বাড়ছে; কিন্তু স্বল্প আয়ের পরিবারগুলোতে বিয়ের প্রবণতা এখন ৫০ শতাংশের কম।

‘দ্য টেলিগ্রাফ’-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০৫০ সালের মধ্যে বিবাহিত যুগলের পরিবারের সংখ্যা হবে তুলনামূলকভাবে কম।সিজেএসের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, পরিবার গুলোর ভাঙনরোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হচ্ছে সরকার। ২০১০ সালে ডেভিড ক্যামেরনের নেতৃত্বে জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর এ ক্ষেত্রে অগ্রগতি ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

প্রতিবেদনে স্বীকার করা হয়, পরিবারের স্থায়িত্ব বাড়াতে সরকার বেশ কিছু চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছে; কিন্তু পরিবারের ভাঙনের পরিধি ও মূল্য এসবের তুলনায় অনেক বেশি।প্রতিবেদনে বলা হয়, জনকল্যাণ ও শিক্ষাব্যবস্থা সংস্কারের ক্ষেত্রে সরকার যেমন দ্রুত ও স্থায়ী ব্যবস্থা নিয়েছে, পরিবারগুলো শক্তিশালী করতে তেমন পরিষ্কার ও সমন্বিত কোনো পরিকল্পনা নেয়নি।

-Prothom alo

সঙ্গীকে সন্দেহ!

সন্দেহ একটা কঠিন এবং ভয়ংকর অসুখ—সুখী এবং স্বাভাবিক জীবনকে বিনষ্ট করার ছোট্ট একটা মহাষৌধ, সন্দেহ মনে একবার ঝেঁকে বসলে পারিবারিক জীবন তছনছ হয়ে যায়,শেষ পর্যন্ত ছাড়াছাড়ি অব্দি গড়িয়েও যায়-রায়হান আর তনিমার বিয়ের বয়স প্রায় পাঁচ বছর। প্রেমের বিয়ে, সুখেই কাটছিল দিন। একদিন রাতে পড়ার ঘরে বসে ফোনে কথা বলছে রায়হান। তনিমা ঢুকতেই তাড়াহুড়ো করে ফোন রেখে দিল। কিছুটা অপ্রস্তুত। তনিমা জিজ্ঞেস করল, কার সঙ্গে কথা হচ্ছিল? রায়হানের শুকনো জবাব, এই তো এক বন্ধুর সঙ্গে। তনিমা মোবাইল ফোনটা কেড়ে নিয়ে ডায়াল লিস্ট দেখে বুঝল, অপর প্রান্তের মানুষটা রায়হানের বিশ্ববিদ্যালয়জীবনের এক সহপাঠিনী। তার সঙ্গে রায়হানের হয়তো সম্পর্ক তৈরি হতে পারত। সেই পুরোনো ঈর্ষার মেঘ সন্দেহের বৃষ্টি ঝরাল তনিমার হূদয়ে। এ ঘটনার জের ধরে শুরু হলো নিত্য কলহ, মান-অভিমান। সুখী দম্পতির ঘরে অসুখি বাতাস।বিষয়টির সমাপ্তি টানতে রায়হান-তনিমা দুজনকেই সেবার মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে যেতে হয়েছিল। তাঁর নিবিড় পরামর্শে শেষ পর্যন্ত সুখ ফিরেছিল দুজনের সংসারে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক রওশন জাহান বললেন, ‘দাম্পত্যে কিছুদিন গড়ানোর পর এ রকম ছোটখাটো খটোমটো লাগতেই পারে। কিন্তু দুজন মিলে কীভাবে সেসব সামাল দেওয়া যাচ্ছে, সেটাই আসল।’ তাঁর মতে, রায়হান যদি তনিমার কাছে খুলে বলত, কার সঙ্গে কথা বলছে, তা হলেই আর জটিলতার সূত্রপাত হতো না। তনিমার মধ্যে হয়তো কিছুটা ঈর্ষা জাগত, কিন্তু তা আকাশকুসুম কল্পনায় গিয়ে ঠেকত না।

রওশন জাহান বললেন, ‘দিনে দিনে আমাদের জীবনযাত্রা জটিল হয়ে উঠছে, সেই সঙ্গে দাম্পত্যের ক্ষেত্রে এ ধরনের সমস্যাও বাড়ছে।’ সুখশান্তি আর বোঝাপড়া ঠিক রাখতে তিনি কিছু পরামর্শও দিলেন:

.দুজনের মধ্যেই ছাড় দেওয়ার মানসিকতা থাকা দরকার। দরকার নিজেকে সংবরণ করতে পারার ক্ষমতা।
পরস্পরের মতামত, যুক্তিগুলো মন দিয়ে শোনা বা প্রাধান্য দেওয়ার অভ্যাসও থাকা চাই। যে বিষয়ে কথা হচ্ছে, সে বিষয়েই থাকুন। অন্য বিষয় টেনে এনে তিক্ততার জন্ম দেবেন না।
 রাগকে ‘না’ বলুন। রাগ থেকেই দাম্পত্যের যত জটিলতার সৃষ্টি হয়। আর তুচ্ছ বিষয় থেকে জন্ম নেয় বড় কোনো বিপর্যয়।
একটি বেসরকারি হাসপাতালের মনোরোগ বিভাগের পরামর্শক নাদিরা সুলতানা বলছিলেন দাম্পত্যের বিবিধ সমস্যা নিয়ে। ব্যক্তিত্বের সংঘাত, পছন্দ বা দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য (সন্তানের ভালোমন্দ বিষয়ে, বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে মেলামেশা বা সন্দেহ), ক্যারিয়ার নিয়ে সমস্যা (কোনো একজন হয়তো অতিরিক্ত উচ্চাভিলাষী), জীবনের অতিরিক্ত চাহিদা, অর্থনৈতিক সংকট ইত্যাদি সমস্যা নিয়েই তাঁর কাছে আসেন বেশির ভাগ দম্পতি। এ ক্ষেত্রে পরামর্শগুলো হয় এমন:
 কথাবার্তা বা মেলামেশায় উদারতা বজায় রাখা
 সঙ্গীর প্রতি বিশ্বাস ও আস্থা বজায় রাখা
 সঙ্গীর প্রতি অভিযোগের আঙুল তোলার আগে নিজের সীমাবদ্ধতা বা দোষত্রুটিগুলো মূল্যায়ন করা, নিজেকে কোথায় কতটা পাল্টানো দরকার তা বুঝতে শেখা
 ছোটখাটো সমস্যাকে বড় করে না দেখ
 দুজন মানুষের মধ্যে মতপার্থক্য থাকবেই, তবে সেসব অমিলের মধ্যেই খুঁজতে হবে মিলগুলো, উপভোগ করতে হবে জীবনের নানা চড়াই-উৎরাই।
হাজারটা প্রতিবন্ধকতা দাম্পত্যে আসতেই পারে। কিন্তু একটু চেষ্টা করলেই এই সমস্যাগুলো মিটিয়ে ফেলা সম্ভব। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কটা নির্ভর করে চর্চার ওপর। তাই কিছু জিনিসের চর্চা করলে দাম্পত্যে বিবাদ এড়িয়ে চলা সম্ভব।
 সঙ্গীকে ভালোবাসার কথা বলুন কারণে-অকারণে। এই বিষয়টি কিন্তু তার মন ছুঁয়ে যেতে বাধ্য। সেই সঙ্গে ছোট্ট স্পর্শও হতে পারে হাজারটা কঠিন শব্দের বিকল্প। আমাদের দেশে এর চল নেই। প্রকাশ্যে আমরা সন্তানকেও আদর করতে সংকোচ করি, সেখানে সঙ্গী তো দূরের কথা। ধরুন, হাত ধরে রাস্তা পার হলেন। অফিসে যাওয়ার সময় কপালে একটা ছোট্ট চুমু…। এই স্পর্শে অন্য কিছু নয় বরং সম্পর্কের গভীরতা বেড়ে যায় কয়েক গুণ।
 ছোটখাটো মিথ্যে কথা বললে এমন কিছু দোষ নেই, যদি দাম্পত্যজীবনে সুখ থাকে। স্বামী একটা শাড়ি নিয়ে এসেছেন, সেটা খুব বেশি পছন্দ না হলেও তাঁকে বলুন ভালো লেগেছে। স্ত্রী খুব আগ্রহ নিয়ে রান্না করেছেন, খেতে বেশি ভালো না লাগলেও প্রশংসা করুন। এতে কোনো ক্ষতি নেই বরং দাম্পত্যে এমন ব্যবহার প্রয়োজনীয়।
 কোনো একটা কিছু মনের মধ্যে চেপে নিয়ে বসে থাকার দরকার কী? বরং খুলে বলুন। আলোচনা করুন। স্পষ্টবাদী হয়ে উঠুন। স্পষ্ট করে বলুন। বোঝান কী চান। কী সমস্যা। দেখবেন সমাধান হাতের কাছেই আছে।
 আজকাল সবাই অনেক ব্যস্ত। কথা বলার অবকাশই নেই। আর এ থেকেই শুরু হয় ভুল বোঝাবুঝি। সময় বের করুন কথা বলার, নিজেকে ব্যক্ত করার। প্রয়োজনে ঘরের বাইরে চলে যান। রোজকার তেল-নুনের হিসাব বাদ দিয়ে কী বই পড়লেন, কোন সিনেমাটা দেখা যায়, তা নিয়েই আলোচনা করুন।
 ঝগড়া হবেই—এমনটা সবাই বলে থাকেন। যদি হয়, তবে সে ক্ষেত্রেও মাথা ঠান্ডা রাখুন। পরে পরিস্থিতি ঠান্ডা হলে বুঝিয়ে বলুন, প্রতিবাদ করুন।
কিন্তু একদমই চুপ করে যাবেন না। অনেকে চুপ করে যান। একেবারেই। পরেও কোনো কথা বলেন না। সেটা কিন্তু বিরাট ভুল। মনে রাখতে হবে, এ রকম চুপ করে যাওয়া যেমন ঠিক না, তেমনি নিজেদের সমস্যায় তৃতীয় ব্যক্তির (মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ছাড়া) হস্তক্ষেপ যেন না হয়। কখনোই সম্পর্কের তিক্ততা অন্যের সামনে প্রকাশ করবেন না।
 কোনো বন্ধুর জন্য দাম্পত্যে সমস্যা বাড়াবেন না। বন্ধু ও জীবনসঙ্গী দুজনের স্থান ভিন্ন। এই বিষয়টি নিজেও মনে রাখবেন এবং সঙ্গীকেও বুঝিয়ে দেবেন।
 সঙ্গীকে বিশ্বাস করাই সম্পর্কের ভিত। একে অপরের বিষয়ে জানাটাও জরুরি।
তাই কী করছেন-না করছেন, পরস্পরকে জানান। এতে বিশ্বাস বাড়বে। না হলে নির্ভেজাল ঘটনাকেও জটিল মনে হবে।

-ফারহানা আলম

বিয়ে – অতনু বর্মণ

রবি ঠাকুর প্রিয়নাথ সেনকে নিজের বিয়ের নেমন্তন্ন জানিয়ে যে চিঠি লিখেছিলেন তার মাথায় লিখিত ছিল – ‘আশার ছলনে ভুলি কি ফল লভিনু হায়’। বিয়ে এমনই এক লঘু রসের সংস্কৃতির জন্ম দিয়েছে বাঙালি মানসে। খ্যাতিমান থেকে অখ্যাত সকলের কাছেই বিয়ে এক অনিবার্য রসিকতা। আমার এক বন্ধু বলেছিলেন – ‘ভাই হে আর যাই কর, বিয়ে কর না’। বন্ধুকে বলেছিলাম, ‘নিজে তাহলে বিয়ে করলে কেন’? উত্তরে বন্ধুবর কাঁচুমাঁচু মুখে বলেছিলেন – ‘আর করব না’।

দাশুরায় সেই কবে গান বেঁধেছিলেন – ‘সংসার রাঙা ফলে ভুলিও না আর। মিছে মায়া ভুমণ্ডলে অসার অপার’। ছেলেবেলায় সংস্কৃত পণ্ডিত জিজ্ঞেস করেছিলেন উদ্বাহন শব্দটির অর্থ কি? কিছু না ভেবেই বলেছিলাম – গলায় দড়ি। উদ্বন্ধন শব্দটির সঙ্গে হয়তো মিল পেয়েছিলাম। পরে অবশ্য জেনেছি উদ্বাহন মানে বিয়ে। এইরকমই আর একটি শব্দ আছে – পাত্রসাৎ। শব্দটিকে আমার আত্মসাৎ শব্দের যমজ ভাই বলে মনে হয়। বরং পাণিপীড়ন শব্দটিকেই যথেষ্ট অর্থবহ মনে হতে পারে বিয়ের সার্থক প্রতিশব্দ হিসাবে। অবশ্য পীড়ন শব্দটি আছে বলেই। তবু বিয়ের ফুল ফোটে। প্রজাপতির নির্বন্ধে সনির্বন্ধ অনুরোধ জানায় মোক্ষম ভুক্তভোগী ছেলে-মেয়ের বাপ। এসো, তোমরা খেয়ে-দেয়ে এই নবদম্পতির ভবিতব্যটিকে পোক্ত করে যাও। মালাবদল হয়, কোন কোন সম্প্রদায়ে মালার বদলে কণ্ঠিবদল। তারা বরং অনেক প্র্যাকটিক্যাল। ফুলকে দিয়ে মিথ্যা কথা বলানোর বদলে তারা শুকনো কাঠিকে সে দায়িত্ব দিয়ে থাকেন। গাঁটছড়া বাঁধা হয়। শুরু হয় গাঁটে গাঁটে বহনের যন্ত্রণা। ঘর বাঁধে মিঞা আর জরু।

আগে বাঙালি জীবনে বিয়ের অনুষঙ্গ ছিল ঘটক বিজড়িত। ঘটকালি ছিল বড় মজাদার পেশা। সেইসব ঘটকরা চিরকালই বাংলা সাহিত্যে কমিক চরিত্রের ভূমিকা পালন করে এসেছেন। মুকুন্দর চণ্ডীমঙ্গল থেকে এই সেদিন পর্যন্ত ঘটক ছিল সাহিত্যের অনিবার্য চরিত্র। তাঁরা আর নেই। ফাঁসুড়েদের আর প্রয়োজন হয় না, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কয়েদিরা স্বয়ং জাটিঙ্গার পাখির মতো বিবাহানলে ঝাঁপ দেয়। ঘটকের মতো কত শব্দই যে বাতিল হয়ে গেল ও যাচ্ছে বাঙালির জীবন থেকে। পাকা কথা, পাটিপত্র, আশীর্বাদ, যোটক বিচার, আইবুড়োভাত, ননদ পুঁটুলি ইত্যাদি শব্দ ধীরে ধীরে আরও অপরিচিত হবে নতুন প্রজন্মের কাছে। বাঙালির বিবাহকেন্দ্রিক সংস্কৃতি পরিবর্তমান। নতুন নতুন শব্দাগমন কয়েক দশকের মধ্যে জায়গা দখল করেছে। যথা – ক্যাটারার, পার্লার, বিউটিশিয়ান, রেজিস্টার, ডেকোরেটর, লাইটম্যান, ম্যাট্রিমনি ডট কম ইত্যাদি ইত্যাদি। নামবদল হয়েছে ঠিকই, কিন্তু মালাবদলটি একই আছে। ফলত এ সেই ‘ফুটা পাত্রে জল ঢালা দিবারাত্রে। বৃথা চেষ্টা তেষ্টা ‍মেটাবার’।

তবুও বিয়ে নিয়ে বাঙালির ইয়ের অন্ত নেই। প্রেম করে বিয়ে নাকি বিয়ে করে প্রেম – এই উত্তরটি জানার জন্য প্রাণ হাঁকুপাঁকু করে। যদিও দুটোই প্রায় সমান সমান। আমাদের প্রাণকেষ্টবাবু যেমন বলেছিলেন – ‘তুমি দিব্যি ছিলে, একটা সাপ এসে তোমাকে ছোবল দিল – এটা হল সম্বন্ধ করে বিয়ে, আর সাপটা দিব্যি ছিল, তুমি তার লেজে পা দিয়ে ছোবল খেলে – এটা হল প্রেম করে বিয়ে। যেভাবেই কর না কেন, করেছ তো বাপু বিয়েই’।

বাঙালি জানে এককথায় বিয়ে হয় না। অন্তত সম্বন্ধ করে বিয়ে তো নয়ই। কাগজে বিজ্ঞাপন দিয়ে অথবা বিজ্ঞাপন দেখে প্রথমে লিস্ট বানানও। চিঠি অথবা ফোনাফুনি। তারপর দেখাদেখি। পছন্দ হলে পাড়া-প্রতিবেশীর কাছে হবু কনে বা বরের চাল-চলন নিয়ে চিরুনি-তদন্ত। ইদানীং আবার এর পরে হবু পাত্র-পাত্রীর একটু-আধটু ঘোরাঘুরিও যুক্ত হয়েছে। একে অপরকে চিনে নাও, জেনে-বুঝে নাও বাপু তারপর সিদ্ধান্ত নিও। পরে কিচাইন হলে যেন বাপ-মা’কে শাপশাপান্ত না করতে পারে তার যথোপযুক্ত প্রিকশান নেওয়া। সব দিক দেখেশুনে বিয়ে তো হয় কিন্তু তাতেই কি সব সমস্যা মেটে, বরং সমস্যা বাড়ে। আমার এক লেখক বন্ধু বলেছিলেন – ‘তুমি তোমার বউকে কতটা ভালবাস, তার ওপর বিবাহিত জীবনের সুখ-শান্তি নির্ভর করে না, তুমি যাদেরকে বিয়ে করলে না, নির্ভর করে তাদের পরবর্তী পদক্ষেপের ওপর’। কত ধুমধামের বিয়ে যে শেষ পর্যন্ত ৪৯৮ ঘাটের জল খেয়ে হাজতে ঢোকে তার কোনও পরিসীমা নেই।

আসলে বিয়ে হল অনেকটা তিন-পায়ে দৌড়ের সমগোত্রীয়। বাঁধা পা দু’টো একসঙ্গে আগে ফেলতে হয়। এক ছন্দে দৌড়তে পারলে দিব্যি দৌড়বে, কোনও ঝামেলা নেই। যে যার মতো দৌড়তে গেলেই হুমড়ি খাবে দু’জনেই। সুতরাং হয় নিয়ম মেনে পা ফেলে ছোটো, নয়তো দড়িটা খুলে ফেলে যে যার নিজের পথে হাঁটো। অবশ্য আজকাল বিয়ে না করেও একসঙ্গে থাকা যায়, যার পোশাকি নাম লিভ টুগেদার। সে কাসুন্দি অন্য একদিন ঘাঁটা যাবে, আপাতত দেখুন আজকের ডাকে কোনও বিয়ের চিঠি এল কি না। মানুষ বংশ রক্ষার জন্য বিয়ে করে কিন্তু নেমন্তন্ন রক্ষার জন্য যে বাঁশটা দেয় সেটা আগে সামলান। নিদেনপক্ষে ৫০০ টাকার নিচে কি গিফ্ট দেওয়া যায়!

টুইটারে বিয়ে!

বন এখন প্রযুক্তি নির্ভর। তাহলে বিয়েটাই বা কেন আটকে থাকবে সেকেলে পদ্ধতিতে। তাই প্রযুক্তিকে ব্যবহার করেই আইপ্যাডে টুইটের মাধ্যমে বিয়ে করেছেন তুরস্কের ইস্তাম্বুল নগরীর এক যুগল।   দুজনের হাতে দুই আইপ্যাড। বিয়ের সাজে পাশাপাশি বসে আছে বর আর কনে। এরপর আইপ্যাডে বিয়ের প্রতিশ্র“তি বাক্যে টুইট করে বিয়ের কাজটি সেরে নিয়েছেন তারা। এটিই বিশ্বে টুইটারে প্রথম বিয়ে বলে ধারণা করা হচ্ছে।   আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর এ বিয়ের বর হচ্ছেন ইস্তাম্বুলের উসকুদার এলাকার জেনগিজান জেনিক ও কনে জানদাল চেলিক। বর জেলিক একটি সংবাদভিত্তিক ওয়েবসাইটের স্যোসাল মিডিয়া এডিটর বলে জানিয়েছে তুরস্কের দৈনিক ‘মিল্লিয়েত ’।

আর সাধারণত স্থানীয় ধর্ম গুরুরাই বিয়ে পরিচালনা করে থাকেন। কিন্তু এ বিয়েতে এক্ষেত্রেও ছিল ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। তাদের বিয়ে পরিচালনা করেছেন উসকুদারের মেয়র মুস্তফা কারা। কারা তাদের টুইট করে জিজ্ঞাসা করেন তারা কি নিজেদের আইনগতভাবে স্বামী ও স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করতে চায়? তারপর ‘আমি রাজি’ এই বলে পাল্টা টুইট করে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা পালন করেন জেনিক ও চেলিক। এরপর চেলিকের হাতে বিয়ের সনদ তুলে দিয়ে নবদম্পতিকে আশীর্বাদ করেন মেয়র।  ইস্তাম্বুলের একটি হোটেলে সোমবার অনুষ্ঠিত এ বিয়েতে হাজার হাজার অতিথি উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত সবাই এলসিডি মনিটরে বিয়ের আনুষ্ঠানিতা উপভোগ করেন। সুত্রঃ বিডি নিউজ ২৪

ক্যানসারের দাওয়াই বিয়ে!

ক্যানসার মরণব্যাধি হিসেবেই পরিচিত। ব্যয়বহুল চিকিত্সা আর নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের মধ্য দিয়েই কাটাতে হয় ক্যানসার-আক্রান্ত ব্যক্তিকে। তবে ক্যানসার মোকাবিলায় নতুন একটি জাদুকরী ওষুধের সন্ধান দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। ম্যারিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষকের মতে, বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়া, ক্যানসার মোকাবিলায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। ক্যানসার-আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে বিবাহিতদের দীর্ঘদিন বাঁচার সম্ভাবনা অবিবাহিতদের তুলনায় অনেক বেড়ে যায় বলে জানিয়েছেন এই গবেষকেরা।

২০০০ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্ত ১৬৮ জন রোগীর ওপর এই গবেষণা চালানো হয়। এর মাধ্যমে দেখা গেছে, যাঁরা বিবাহিত, তাঁদের এক-তৃতীয়াংশ অবিবাহিতদের তুলনায় প্রায় তিন বছর বেশি বাঁচেন। ক্যানসার-আক্রান্ত রোগীদের দীর্ঘদিন বাঁচার জন্য প্রয়োজন নিয়মমাফিক জীবনযাপন, পর্যাপ্ত চিকিত্সা-ব্যবস্থা ও প্রয়োজনীয় যত্ন।
ম্যারিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এই গবেষকদের মতে, এটাই ব্যাখ্যা করে বিবাহ কীভাবে ক্যানসার মোকাবিলায় কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। গবেষণা দলের প্রধান এলিজাবেথ নিকোলাস বলেছেন, ‘বৈবাহিক অবস্থা ক্যানসার মোকাবিলায় একটি গুরুত্বপূর্ণ স্বাধীন প্রভাবক হিসেবে কাজ করে। কেন এমনটা হয়, সেটা স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করা কঠিন। কিন্তু আমাদের গবেষণা থেকে দেখা গেছে, সামাজিক সহায়তা ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীদের চিকিত্সার ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা বিশ্বাস করি, যে রোগীরা ভালো সামাজিক যত্নআত্তি পাবেন, তাঁরা ক্যানসার মোকাবিলা করে বেশি দিন বেঁচে থাকতে পারবেন।’

ক্যানসার মোকাবিলার জন্য নতুন ওষুধ খুঁজে বের করার পাশাপাশি সামাজিক সহযোগিতা কীভাবে এই মরণব্যাধি মোকাবিলায় কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে, সেই বিষয়ে গবেষণা হওয়াও জরুরি বলে মনে করেন নিকোলাস। এএনআই।

ঠোঁটের পরিচর্যা

ঠোঁট হবে আকর্ষণীয়, এটাই সবার কাম্য। কিন্তু ঠোঁট শুষ্ক হয়ে যাওয়ায় চামড়া ওঠা, ফাটাভাব ও কালচে হওয়া খুবই নিয়মিত সমস্যা। ঠোঁট মিউকাস মেমব্রেন দ্বারা আবৃত। ঠোঁটের ত্বক খুবই নরম ও সেনসেটিভ। ঠোঁটে কোনও তেলগ্রন্থি’ থাকে না। তাই বাইরের আবহাওয়া থেকে নিজেকে রক্ষা করা ঠোঁটের জন্য বেশ কঠিন। ঠাণ্ডা-গরম, সূর্যরশ্মি, দূষণ সবই ঠোঁটের জন্য ক্ষতিকর। এছাড়া ঠোঁট কামড়ানো বা জিভ দিয়ে ঠোঁট বারবার ভেজানোও ক্ষতিকর।

অপ্রয়োজনীয় প্রসাধন:
অপ্রয়োজনীয় প্রসাধন ঠোঁটকে শুষ্ক করে তোলে। সাময়িক সৌন্দর্যের জন্য প্রয়োজনীয় প্রসাধন ব্যবহার করবেন না।

টুথপেস্ট:
টুথপেস্ট আমাদের ঠোঁটের সংস্পর্শে আসে দু’বেলা। তাই যথাযথ টুথপেস্ট ব্যবহার না করলে ঠোঁটের ক্ষতি হতে পারে।

লিপস্টিক:
লিপস্টিকের কারণে ঠোঁটে অ্যালার্জি ও ঠোঁটের ক্ষতি হতে পারে। তাই আপনার ঠোঁটে যে কোম্পানির লিপস্টিক কোনও প্রতিক্রিয়া করবে না, সেটাই ব্যবহার করুন। প্রয়োজনে দামী কোম্পানির লিপস্টিক ব্যবহার করা ভালো।

লিপ বাম ও চ্যাপস্টিক:
ফাটা ঠোঁটের জন্য লিপ বাম ও চ্যাপস্টিক প্রয়োজন। এটা ঠোঁট কোমল ও মসৃণ করে। তবে অতি সুগন্ধিযুক্ত ও রসযুক্ত চ্যাপস্টিক ব্যবহার না করাই ভালো।

সাবান:
ঠোঁটের ত্বক সংবেদনশীল বলেই ঠোঁটে সাবান দেবেন না। চোখের চারপাশ এবং ঠোঁটে সাবান ব্যবহার করলে ক্ষতি হয়।

ধুমপান:
ধুমপান ঠোঁটের ত্বকের ক্ষতি করে ও কালচেভাব আনে।

ভিটামিন বি এর অভাব:
ভিটামিন বি এর অভাবে ঠোঁট ফেটে যেতে পারে ও ঠোঁটের কোণে ঘা হতে পারে। পুষ্টিকর খাবার খাওয়া প্রয়োজন।

ত্বকের অসুখ:
ত্বকের অসুখ যেমন একজিমা, অ্যালার্জি ইত্যাদির কারণেও ঠোঁটের ক্ষতি হতে পারে। এতে চিকিৎসার প্রয়োজন।

শুষ্ক ঠোঁটের যত্ন:
ঠোঁট শুষ্ক হওয়ার আগেই তা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। ইমোলিয়েন্ট, পেট্রোলিয়াম জেলি, কোল্ডক্রিম ইত্যাদি ঠোঁটে ব্যবহার করা প্রয়োজন।
– যথাযথ লিপস্টিকও কিন্তু ঠোঁটের শুষ্কতা প্রতিরোধ করে। তবে এক্ষেত্রে লিপস্টিকের উপাদান সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে। ভিটামিনসমৃদ্ধ ও অয়েলবেসড লিপস্টিক ঠোঁটের জন্য ভালো। তবে লিপস্টিক ব্যবহারে ঠোঁটের ক্ষতি হলে সঙ্গে সঙ্গে তা ব্যবহার বন্ধ রাখুন।
– প্রয়োজনে যে টুথপেস্ট ব্যবহার করছেন তা বদলে ফেলুন। লক্ষ্য রাখবেন, সাদা রঙের টুথপেস্ট সাধারণত ভালো হয় ঠোঁটের জন্য।
– সাবান ও ফেসওয়াশ ঠোঁটে লাগাবেন না।
– সিগারেট খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
– পেট্রোলিয়াম জেলি বা ভেসলিন ব্যবহার করুন। যতক্ষণ বাড়িতে থাকবেন ঠোঁটে ভেসলিন লাগাবেন। এছাড়া সূর্যমুখী তেল ঠোঁটের জন্য খুব ভালো। এটা দিনে কয়েকবার ব্যবহার করতে পারেন। রাতে ভেসলিন লাগাতে ভুলবেন না।
– ঠোঁট বারবার জিভ দিয়ে ভেজাবেন না বা ঠোঁট কামড়াবেন না।
– ঠোঁটের মেকআপ ওঠাবার জন্য তুলোয় ভেসলিন লাগিয়ে আলতো ঘসে তুলবেন। কখনও লিপস্টিক লাগানো অবস্থায় ঘুমাতে যাবেন না।
– ভিটামিন, প্রচুর সবুজ শাক-সবজি ও ফল খাবেন।
– বিশেষ সমস্যা হলে অবশ্যই ত্বক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেবেন

তথ্যঃ স্বাস্থ্য বাংলা