লাভ বম্বিং

সঙ্গীর কাছ থেকে মনোযোগ পেতে কে না ভালবাসেন! ভাবুন তো, প্রেমের শুরুর দিকেই যদি কেউ রোজ আপনাকে দামি দামি উপহার দিয়ে মন ভোলান তাহলে আপনার কাছেও সম্পর্কটা বড্ড রঙিন ঠেকবে এটাই স্বাভাবিক। হিরের নেকলেস, দামি রেস্তরাঁয় খাওয়ানো, লং ড্রাইভে নিয়ে যাওয়া ইত্যাদি যতরকমের উপায় আছে আপনাকে ইমপ্রেস করার তার মোটামুটি সবক’টাই করে ফেলেছেন আপনার সঙ্গী। আপনিও প্রথম দিন থেকেই তাঁর ব্যবহারে মুগ্ধ। তবে ধীরে ধীরে সম্পর্কের আসল খোলসটা উপলব্ধি করতে শুরু করেন আপনি। প্রাথমিক বিমুগ্ধতা কাটিয়ে তখন উন্মোচিত হয় সম্পর্কের তিক্ত রূপ। ডেটিংয়ের দুনিয়ায় এই নতুন ট্রেন্ডের নাম হল লাভ বম্বিং!

প্রথমদিকে আপনার মন জুগিয়ে চলে আপনার বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করাই হয়তো আপনার সঙ্গীর উদ্দেশ্য। একেবারে আপনার মনের মতো হয়ে উঠতে ঠিক যেমন যেমন আচরণ করা দরকার, তিনি সেগুলোই করছেন। সবসময়ই আপনার কাছাকাছি, পাশাপাশি থাকছেন। আপনার ছোটবড় সব বিষয়ে বড্ড বেশি মনোযোগ দিচ্ছেন। আবার খরচ করে দামি উপহার দিতেও দ্বিধা করছেন না। আর সবকিছুই এত দ্রুত ঘটছে যে আপনি উলটোদিকের মানুষটাকে পরখ করে দেখার অবকাশটুকুও পাচ্ছেন না। আর ক্রমেই তাঁর উপর বাড়ছে আপনার নির্ভরশীলতা।

‘পারফেক্ট পার্টনার’ পেয়ে গেছেন ভেবে আপনিও নিজের শরীর-মন উজাড় করে দিচ্ছেন। এই পর্যন্ত ঠিকঠাক চললেও, কিছুদিনের মধ্যেই হয়তো আপনার সঙ্গী আপনার এই অত্যধিক নির্ভরশীলতা ও আবেগের সুযোগ নেবেন। অনেকক্ষেত্রেই অনেকে উলটোদিকের মানুষটিকে সচেতনভাবেই ‘লাভ বম্বড’ করেন।

প্রাথমিক ভালবাসার পর্ব পেরিয়ে গেলে তখন তাঁরা আর আগের সঙ্গীর প্রতি অনুরক্ত থাকেন না। অনেকে তো আবার সম্পর্কের কোনও অস্তিত্বই স্বীকার করেন না! আগে থেকে তা বোঝা খুবই মুশকিল। কিন্তু যখন বুঝতে পারলেন তখন হয়তো আপনি এতটাই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন যে তখন আপনার জায়গা কোনও মনোবিদের চেম্বারে! ডেটিংয়ের মূল উদ্দেশ্য একে অপরকে আরও ভালভাবে চেনা। কিন্তু সেই ডেটিং পিরিয়ডেই যদি পার্টনারের কিছু কিছু আচরণে সন্দেহ হয়, তাহলে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।

প্রথমদিকে ভালবাসার ভান করলেও যদি দেখেন দিনে দিনে তিনি আপনার জীবনের উপর নিয়ন্ত্রণ আনতে চাইছেন, তাঁর ইচ্ছেটাকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন বেশি তাহলে সতর্ক হোন।যদি আপনার পার্টনার সারাদিনই আপনাকে প্রেম নিবেদন করতে থাকেন, আপনার সম্পর্কে সবসময়ই খুব ভাল ভাল কথা বলেন বা দামি উপহার দেন, তাহলেও একটু ভেবে দেখুন।প্রথম প্রথম আপনার মন জুগিয়ে চললেও কিছুদিন পরেই আপনার কাছ থেকে নানারকম সাহায্য বা অনুরূপ ব্যবহার তিনি প্রত্যাশা করতে পারেন। না দিলে অনেকসময় অশান্তিও হয়। লাভ বম্বাররা আপনাকে আর্থিকভাবে ক্ষতিও করতে পারে।

আবার একইসঙ্গে সায়কলজিকাল অ্যবিউজ়ও এর একটা বড় দিক। আপনি পরিবারের লোক বা বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটালে তা অনেক লাভ বম্বারেরই পছন্দ হয় না। এই পজ়েসিভনেস যদিও প্রায়শই নকল হয়!আজকের যুগে অনেকেই ডেটিংয়ের নামে নিছকই টাইমপাস করতে চায়। দীর্ঘকালীনসম্পর্ক বা বিয়ের কথা ভাবেই না। তাই, প্রথম থেকেই পার্টনারকে চেনার চেষ্টা করুন। তাঁর আবেগ, তাঁর বিশ্বাসযোগ্যতা ইত্যাদি সময় নিয়ে যাচাই করুন।