কতটুকু ভালো সঙ্গী পেলে সন্তুষ্টি আসে পুরুষের!

ভালোর আসলে শেষ কোথায়; একজন পুরুষ কতটুকু ভালো সঙ্গী পেলে সন্তুষ্ট হবে তার কি কোন মানদন্ড আদৌ আছে? অথচ প্রত্যেক পরিবারে চাহিদা থাকে একজন ভালো মেয়ে, ভালো বৌ;  যদি ও ভালো বৌ বলতে মুলত যা বুঝায় তা হলো – ঐ পরিবেশে খাপ খাইয়ে চলতে পারার সক্ষমতা। এক্ষেত্রেও মেধার বিকল্প নেই; একজন মেধাবী বৌ তার ধৈর্য্য, মানসিক শক্তি, বুদ্ধিমত্তা ও দুরদর্শিতা দিয়ে একটি পরিবারের সদস্যদের আচার আচারন, আয় উন্নতি এমন কি ঐ পরিবারের সামাজিক অবস্থানটিও পরিবর্তন করতে পারেন। এজন্যই হইতো শত শত বছর ধরে প্রবাদ প্রবাদটি প্রচলিত “নদীর পানি ঘোলা ভালো, জাতের মেয়ে কালো ভাল”।

বিয়ে করার পর আপনি অন্য একটি পরিবারের অংশ হয়ে গিয়েছেন। স্বামী-স্ত্রী ছাড়াও এ পরিবারের রয়েছে আরও অনেক সদস্য। আর এসব মিলে সবার মন যোগানোর কথা চিন্তা করতে গেলে হয়তো আপনার মাথাটাই খারাপ হয়ে যাওয়ার যোগাড় হবে। তবে চিন্তা করবেন না, এ লেখায় থাকছে সহজ কয়েকটি উপায়  যার মাধ্যমে ভালো বৌ হবার চর্চাটা অন্তত আপনি করতে পারবেন।  বাস্তবে অতি সাধারণ মনে হলেও এসব উপায় হয়ে উঠতে পারে আপনার ভালো স্ত্রী হিসেবে নিজেকে তুলে ধরার অন্যতম পন্থা। এসব বিষয় পালন করলে নিজেকে আকর্ষণীয় ও অন্যদের কাছে অনুকরণীয় একজন যথার্থ স্ত্রী হিসেবে প্রকাশ করা সম্ভব হবে।

পজেটিভ হতে একটু সময় নিনঃ প্রত্যেক  মানুষ আলাদা আলাদা আচারনের অধিকারী,  একটি পরিবারের সবাই একরকম মানসিকতার হবে না। তাই নতুন সংসারে যাবার পর তাড়াহুড়া না করে কিছুদিন ধৈর্য্য সহকারে প্রত্যেকের আচার আচারন মানসিকতা খুব ক্লোজলী পর্যবেক্ষন করতে হবে। এ জন্য সবার সাথে কথা বলা; একসাথে খাবার খাওয়া, গল্প করা, শপিং এ যাওয়া, প্রতিবেশী / আত্মীয় বাড়ি বেড়াতে যাওয়া অন্যতম উপায়;  এবং পরিবারে সকল সদস্যের মানসিক অবস্থা বুঝে প্রত্যেকের ব্যাপারে আপনার নিজস্ব ষ্ট্রেটিজি সেট করতে। কথা বলার ক্ষেত্রে ও স্বামী কিংবা পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সার্ভিস/ সেবা ক্ষেত্রে ধৈর্য্য, সহনশীলতা ও দায়িত্বশীলতার পাশাপাশি কৌশলী হওয়ার বিকল্প নেই।

পরিবারের ঐতিহ্যবাহী রেসিপির সন্ধান করুন
অনেক পরিবারেই থাকতে পারে দীর্ঘদিন থেকে প্রচলিত ঐতিহ্যবাহী কোনো রেসিপি। দেখা যাবে আপনার সঙ্গী ছোটবেলায় তার মা বা দাদির কাছ থেকে এমন খাবার খেয়েছে, যা তার স্মৃতিতে রয়ে গেছে। এ ধরনের ঐতিহ্যবাহী খাবার তৈরির পদ্ধতি আয়ত্ব করুন এবং তা রান্না করুন। যদি সম্পূর্ণভাবে সে খাবারের মতো নাও হয়, তার পরও আপনি এ উদ্যোগের প্রশংসা পাবেন। আর এতে স্বামী ও পরিবারের সঙ্গে আপনার সম্পর্ক অনেক গাঢ় হবে।

লিখে ফেলুন
স্বামীকে একটি প্রেমপত্র লিখে দেওয়ার ধারণা অনেকের কাছেই হাস্যকর বলে মনে হতে পারে। কিন্তু নিজের মনের কথা লিখে তা প্রকাশ করার মধ্যে যে আনন্দ আছে তার কোনো তুলনা হয় না। আর এর মাধ্যমে আপনাদের হৃদয়ের মিলও অনেক বাড়বে।

নিজেদের যত্ন নিন
বিয়ের পরই যে সবকিছুর শেষ, তেমন কোনো কথা নেই। স্বামী ও পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি আপনার নিজের শরীরের যত্ন নেওয়া অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ। এ ছাড়াও নিয়মিত চুলের পরিচর্যা, নখ ও দেহের পরিচর্যার মাধ্যমে শরীর ঠিকঠাক রাখার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এ ছাড়াও শারীরিক অনুশীলন ও স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই।

সমর্থন করুন
স্বামীর ভালো কাজে সমর্থন যোগানো উচিত স্ত্রীর। তার গুরুত্বপূর্ণ কাজ কিংবা মানসিকভাবে স্বস্তিকর বিষয়ে সাহায্য-সহযোগিতা করা যেতে পারে। তার যদি কোনো লুকানো প্রতিভা থাকে তবে তা বিকশিত হতে সাহায্য করুন। এসব বিষয়ে সে যদি প্রতিষ্ঠিত হয়ে ওঠে তাহলে তা আপনারই সাফল্য হিসেবে পরিগণিত হবে। তার কোনো শখ যদি আপনার নিজের আগ্রহের বিষয় নাও হয়, তার পরও তা হেলাফেলা করার প্রয়োজন নেই। কারণ কোন বিষয়ে তার প্রতিভার বিস্ফুরণ ঘটবে তা কেউ বলতে পারে না। হতে পারে গান গাওয়া, যন্ত্র সংগীত, আবৃত্তি, ছবি আঁকা, ধাঁধা কৌতুক বলা !

কাজ ভাগ করে নিন
অতীতের মতো এখন বাড়ির কাজ শুধু নারীরাই করে না। কর্মব্যস্ত জীবনে এখন উভয়কেই নিজের নিজের কাজ করতে হয়। এ কারণে নারীর বা পুরুষের কাজ বলে কোনো কাজ থাকছে না বাসায়। আর এ অবস্থায় আপনার স্বামীকে তার পছন্দমতো কিছু কাজ ঠিক করে দিন নিয়মিত করার জন্য। আপনিও করুন কিছু কাজ। অনেক নারীই বাড়ির সব কাজ একাই করতে চান। একই বিষয়ে পুরুষের করা কাজ তাদের মনমতো না হওয়ায় এ বিপত্তি বাধে। কিন্তু মনে রাখতে হবে, সবার কাজের ধরন একরকম নয়। তাই মনমতো না হলেও তাকে তার মতো কাজ করতে দিন। সব কাজ একা করলে তাতে অন্যের অংশগ্রহণ যেমন থাকে না, তেমনি তৈরি হতে পারে দূরত্ব।

খেলাধূলা আর হাসি
বড় মানুষ হলে যে কোনো খেলাধূলা করা যাবে না, এমন কোনো কথা নেই। গুরুগম্ভীর ভাব বাদ দিয়ে হালকা মেজাজে চলুন। মেতে উঠুন খেলা আর হাসিঠাট্টায়। এতে জীবন হয়ে উঠবে আনন্দে পরিপূর্ণ।

সারপ্রাইজ দিন
আপনার স্বামী যে শুধু সারপ্রাইজ দেবে এমন কোনো কথা নেই। তার বদলে আপনি নিজেও তাকে সারপ্রাইজ দিন। কোনো ছুটির দিনকে দারুণভাবে ব্যবহার করে কিংবা বিশেষ কোনো দিনে তাকে মজার উপহার দিয়ে চমকে দিন সবাইকে।