Single Mother Bangladesh

সিঙ্গেল মাদার ও কিছু ক্রাইসিস

এমন অনেক মা আছেন, যারা সিঙ্গেল মাদার হিসেবে সন্তানকে পালন করেন। তারা কেউ বিধবা, কেউ বা ডিভোর্সি। তবু সন্তানকে বড় করার জন্য তাদের একাই হয়ে উঠতে হয় সন্তানের বাবা-মা দুই-ই। এইখানে মায়ের দায়িত্ব সরু দড়ির ওপর দিয়ে চলার মতোই কঠিন। বাবার মতো কঠিন হয়ে শাসন করতে হয়, মায়ের মতো স্নেহ দিয়ে আবার সে দুঃখ ভুলিয়ে দিতে হয়। বাবার মতো বাইরের দুনিয়া থেকে সন্তানকে আড়াল করতে হয়। আবার মায়ের মতো পরিবারের ভেতরের প্রয়োজনীয় শিক্ষা দিতে হয়, যাতে সন্তানের পরিবার চালনার এবং পরিবারের একজন হয়ে ওঠার দায়িত্ববোধ তৈরি হয়।

এই বিশেষ ধরনের সম্পর্কে নানা রকম সংকটই তৈরি হতে পারে। যেমন, কেবলমাত্র মায়ের সঙ্গেই বড় হয়ে ওঠার ফলে পরবর্তীকালে দুজনের মধ্যে কোনো তৃতীয় ব্যক্তি এলে অনেক সময়ই সন্তান সহ্য করতে পারে না। মা তার একাকিত্ব ভোলার জন্য কারো সাথে ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠতেই পারেন। কখনো দ্বিতীয়বার বিয়ে করার জন্য সঙ্গী হিসেবে কোনো পুরুষকে নির্বাচন করতেই পারেন।

সেক্ষেত্রে সন্তান তার ওপর অভিমানী হয়ে উঠতে পারে। সে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে পারে। আবার দেখা যায়, ক্রাইসিসটা শুরু হয় সম্পূর্ণ উলটো দিক থেকেও। হয়তো সন্তানই বড় হওয়ার পর যৌবনের স্বাভাবিক ধর্মে কারো সাথে ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠলো, এক্ষেত্রে মা সহ্য করতে পারেন না সে মানুষটিকে। তার মনে হতে থাকে সন্তান আর তার রইলো না। কখনো মা-সন্তান পরস্পর এতটাই ওতপ্রোত হয়ে ওঠেন যে, দুজনের কাছেই সম্পর্কটা শ্বাসরোধকারী হয়ে ওঠে।

সম্পর্কে ‘ব্রিদিং স্পেস’ হারিয়ে যায়। আবার সন্তানকে পক্ষিমাতার মতো ডানায় আড়াল করতে অভ্যস্ত মা কখনো কখনো খেয়াল করে না, ছোট্ট সন্তানটি কখন বড় গেছে! এবার তাকে কিছুটা স্বাধীনতা দেয়া উচিত, তার চাহিদা ও মতামতকে আর ছোট বলে উপেক্ষা করা উচিত নয়। কখনো আবার ঘর ও বাইরের দায়িত্ব দুটোই একা হাতে সামলাতে গিয়ে সন্তানকে একটু বেশিই প্রশ্রয় দিয়ে ফেলেন সিঙ্গেল মাদার কিংবা সন্তানের মনোজগতের নানা পরিবর্তনের দিকে তেমন খেয়াল রাখতে পারেন না। অর্থাত্‍ রাশ বেশি আলগা অথবা বেশি কঠিন হয়ে পড়ার দুরকম ভয়ই থেকে যায় সিঙ্গেল মাদারদের ক্ষেত্রে।

কী করবেন

– ছোটবেলা থেকেই সন্তানকে আপনার একাকিত্ব, সংগ্রাম এবং আত্মত্যাগ বুঝতে দিন ভালো করে। দেখবেন সে ধীরে ধীরে সহমর্মী হয়ে উঠবে। – খেয়াল রাখবেন আপনার আর ওর সম্পর্কে যেন অকারণ কুয়াশা বা ভুল বোঝাবুঝি না তৈরি হয়।

– সন্তানকে শুধু শাসন বা শুধুই প্রশ্রয় দেবেন না। আচরণে একটা ভারসাম্য রাখুন।

– প্রথম থেকেই চেষ্টা করুন সন্তানের সাথে বন্ধুত্ব তৈরি করার।

– সন্তানকে স্নেহমমতায় ঘিরে নিরাপদে রাখুন, তবে নির্ভরশীল বা মুখাপেক্ষী করে রাখবেন না। ওর যেন স্বাধীন চিন্তা, মতামত ও সত্‍সাহস গড়ে ওঠে। পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে সে যেন ভয় না পায়।

– আপনার প্রতিটি আচরণের যুক্তি ও উদ্দেশ্য যেন সন্তান বুঝতে পারে এবং সেটাকে সম্মান করতে পারে।

– মনে রাখবেন, সন্তান আপনার হলেও সে আপনার পুতুল নয়। সম্পূর্ণ আলাদা একজন মানুষ। 

তথ্যসূত্র: তাহমিনা জামান, শিশু বর্ধন ও পারিবারিক সম্পর্ক, ২০০৯ | priyo.com

প্রকাশ করেছেন

Best Marriage Media Bangladesh

Best Marriage Media in Bangladesh | Bibahabd is the Leading Bangladeshi Matrimony website, Provides online and offline matchmaking service for marital relationship.