ভিনাস্ট্রাফোবিয়া – সুন্দরী নারীতে ভয়

মিস্টার জাবের, একটি বড় কোম্পানিতে কর্মরত। চাকরীর সুবাদে অসংখ্য মানুষের সাথে কথা বলা, ওঠা-বসা থাকলেও শুধুমাত্র সুন্দরী নারীর সামনে গেলে বেশ ইতস্ততবোধ করেন। তার সামনে কোন সুন্দরী নারী থাকলে কথা বলতে গেলে তার মুখ শুকিয়ে যায় বা কথা এলোমেলো হয়ে যায়।

পছন্দের মানুষটিকে বারবার কাছে পেয়েও কখনোই মনের কথা বলতে পারেননি, অনেক প্রস্তুতির পরও ফুলের তোড়া ফেরত নিয়ে এসেছেন। এমনকি বিয়ের জন্য পাত্রী দেখতে গিয়েও একই সমস্যা পাত্রীর সামনে তার হাত-পা কাঁপতে থাকে অথবা স্নায়ুগতি কমে যায়। এ বিষয়ে চিকিৎসকের শরাপন্ন হলে জানা যায় যে, জাবের সাহেব ভিনাস্ট্রাফোবিয়া রোগে আক্রান্ত।

ফোবিয়া মানে হল ভয় আর ভিনাস্ট্রাফোবিয়া হল সুন্দরী নারীদের প্রতি ভয়। এ ফোবিয়ার নামকরণ করা হয়েছে রোমান দেবী ভেনাস থেকে তবে খুব অল্প সংখ্যক পুরুষ এ রোগে আক্রান্ত হয়।

কারনঃ

– পূর্বে সুন্দরী মেয়ের সাথে কোন খারাপ অভিজ্ঞতার ফলে। যেমন- যেকোন কারনে হৃদয়ভঙ্গ হওয়া, জনসম্মুখে অপমানিত হওয়া, বিবাহ বা প্রেমের বিচ্ছেদ ইত্যাদি।

– জেনেটিক বা বংশগত কারণে।

– পারিবারিকভাবে বেড়ে উঠার পরিবেশগত কারনে।

– ছোটবেলায় সুন্দরী শিক্ষকের কড়া শাসনের অভিজ্ঞতার ফলে সবাইকে কঠোর মনে হতে পারে।

লক্ষণঃ

সুন্দরী নারীর প্রতি স্বাভাবিক ভাবে সবারই এক আলাদা আকর্ষণ কাজ করে। দূর থেকে সুন্দরী নারী কে দেখতে ভালো লাগলেও কাছে গেলে ভয় পান অনেক পুরুষই। ব্যাপারটি অদ্ভুত হলেও সত্যি যে অনেক পুরুষ সুন্দরী নারীদের প্রচণ্ড ভয় পান।

– সুন্দরী নারীকে দেখলে অতিরিক্ত ঘামতে থাকা।

– তাদের সামনে নিঃশ্বাস নিতে সমস্যা হওয়া।

– হার্ট বিট অনিয়মিত হওয়া।

– কথা বলার সময় মুখ শুকিয়ে যাওয়া বা কথা এলোমেলো হতে থাকা।

– সুন্দরী নারীর সঙ্গে কথা বলার সময় দৌড়ে পালানোর চেষ্টা অথবা চোখে মুখে অনীহাবোধ ফুটে ওঠা। – তাদের পাশে বসলে অথবা কথা বলার সময় হাত পা কাঁপা।

– সুন্দরী মেয়েদের থেকে সর্বদা দূরে থাকার চেষ্টা করা।

– স্নায়ুগতি কমে যাওয়া।

করণীয়ঃ

– মনোরোগ বিশেষজ্ঞের নিকট থেকে বিভিন্ন থেরাপি নেয়া যেতে পারে। যেমনঃ টকিং থেরাপি, এক্সপোজার থেরাপি।

– চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবন করলে এই ফোবিয়া থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

স্পেনের ভ্যালেন্সিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের মতে- কিছু সংখ্যক পুরুষ সুন্দরী নারীর পাশে পাঁচ মিনিট বসলেই নাকি পুরুষের মধ্যে মানসিক চাপ বৃদ্ধি পায়৷ যা শরীরে কোর্ট্রিসল নামক বিশেষ হরমোনের প্রবাহ বাড়িয়ে দেয় আর বিপত্তি সেখানেই৷ এই হরমোনের বাড়তি প্রবাহ আবার হৃদযন্ত্রের নানা রোগের জন্য দায়ী৷

আমাদের প্রত্যহ পাঠকদের মধ্যে নিশ্চয় হয়তো এমন কেউ নেই যদি থেকে থাকেন অবশ্যই বিয়ের আগে দ্রুত একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হবেন। সবার জন্য শুভ কামনা রইলো।