বিয়ে বাড়ির একাল সেকাল

‘হলুদ বাটো মেন্দি বাটো, বাটো ফুলের মৌ। বিয়ার সাজে সাজবে কন্যা নরম সরম বৌ’। আবার ‘এমন মজা হয় না গায়ে সোনার গয়না, বুবুমনির বিয়ে হবে বাজবে কত বাজনা……’

রাতভর এমন সব গান মাইকের শব্দে কানে এলে কাউকে বলে দিতো হত না এটা বিয়ে বাড়িতে বাজছে। সময়টা খুব বেশি আগের নয়, স্বাধীনতার অব্যবহিত পরেও বেশ কিছু দিন এমন রীতিই ছিল আমাদের দেশে। তখনকার দিনে বেশির ভাগ ছেলেমেয়েকে বিয়ে দেয়া হত খুব অল্প বয়সে। দশ থেকে বার বছরের মেয়ে ঘরে থাকলেই বাবা মা তাদের বিয়ের কথা ভাবা শুরু করে দিতেন। বাড়িতে ঘটকের আসা যাওয়া ছিল খুব অনিবার্য। মেয়েরাও এর মধ্যে মা-চাচির হাত ধরে শিখে নিত ঘরকন্নার বেশ কিছু কাজ। মাথার চুলে খাটি নারিকেল তেল মেখে কুচকুচে কালো করার প্রতিযোগীতা চলতো চাচাতো পাড়াতো বোনদের মাঝে।

বিয়ের ব্যাপারে ছেলেমেয়েদের আবার মত কিসের, বাবা-চাচারা ছিলেন যথেষ্ট। ছেলের হালের গরু আছে বেশ শক্ত পোক্ত, বিঘা কয়েক জমিও আছে। বাড়িতে গোলাভরা ধান, পুকুর, শীতে খেজুর গুড় হয়, শষ্যঘর ভর্তি সবসময়, বেশ কর্মঠ, লেখাপড়া শিখেছে যা তাতে দেশগায়ে চলতে তেমন সমস্যা নেই। এমন ছেলেই তো মুরুব্বিদের কাছে উপযুক্ত হতে যথেষ্ট। মেয়ের বেলায় যোগ্যতা দেখা হত না তা নয়। তার গায়ের রঙ, কাজের যোগ্যতা, মাথার চুল সবই দেখা হত। লেখাপড়া খুব বেশি হওয়ার কি দরকার তবে মুসলিম ঘরের হলে অবশ্যই আরবি পড়তে জানতে হবে, নামাজ কালামের অভ্যাস থাকাটাও জরুরি ছিল। ব্যাস, বাবামায়ের চোখে ছেলেমেয়ে তৈরি বিয়ের জন্য।

যুগে যুগে চলতি নিয়মের ব্যত্তয় ঘটেনি তা নয়। তখনও প্রেম করে পালিয়ে বিয়ে করা বা দুয়েকটি শিক্ষিত পরিবারে মেয়েদের শিক্ষিত করে বিয়ে দেয়ার রীতি ছিল। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই চাষী পরিবারে বাবা-মায়ের সিদ্ধান্তে ছেলে মেয়ের বিয়ে হতো।

তখনকার দিনে বিয়ের বিশেষ আনন্দের বিষয় ছিল মাইকে গান বাজানো। পাড়াপ্রতিবেশিরা বিয়ে উপলক্ষে আনন্দ ফুর্তিতে মেতে থাকতো স্বউদ্যোগে। খাবার দাবারের তেমন ঘটা তখন প্রচলিত ছিল না। তবে যে ঘরের ছেলে বা মেয়ে বিয়ে হত, তাদেরকে ঘর থেকে ধান, নারিকেল আর গুড় বের করে দিতে হত। পাড়ার ভাবি, চাচি আর বোনরা পালা করে গান গাইতো আর ঢেকিতে ধান ভানতো। ‘আজ ময়নার গায়ে হলুদ কাল ময়নার বিয়ে…..

এরপর চলতো সবাই মিলে বিয়ের পায়েস রান্না। কেউ লবণ চেখে দিতো, কেউ মিষ্টি, কেউবা জ্বাল দিতো। সবার হাতের স্পর্শে হয়ে উঠতো বড় হাড়ি ভর্তি পায়েস। কখনো তাতে লবণ বেশি বা কমও হতো, মিষ্টির বেলাতেও তাই। তবু এমন পায়েস যেন সবার আরাধ্য ছিল। খুশিতে একে অপরের ওপর লুটোপুটি চলতো অনায়াসে। এবার বিয়ের কনে বা বরের গোসলের পালা। সবার হাতে হলুদ ছোঁয়া আর আর বরণ নিয়ে গোসলের আয়োজন চলতো সকাল গড়িয়ে দুপুর পর্যন্ত। পাড়াপ্রতিবেশির কারো যেন বাড়িতে কাজের তাড়া নেই। বিয়েকে সামনে রেখে আনন্দ ফুর্তিতে মেতে থাকায় ছিল তাদের একমাত্র কাজ। বাড়ির কর্তাদেরও তেমন না থাকতো না।

এবার গোসলের পালা। পুকুর থেকে কলসিতে করে আনা জল উঠানটার ঠিক মাঝখানে সাজানো থাকতো। মাঝখানে বড় পিঁড়িতে বিয়ের বর বা কনে বসবে। ছেলেবুড়ো জড়ো হতো উঠোনের চারপাশ জুড়ে। সবাই উৎসুক নয়নে চেয়ে থাকতো গোসল করানো দেখতে। নতুন রঙিন কুলাতে সাজানো থাকতো দুর্বা ঘাস, ধান আর পান-সুপারি। এবার একে একে ভাবি, বড় বোন, মা-চাচিদের বরণ করার সুনিপুণ দক্ষতা প্রদর্শণের পালা। হাত নাচিয়ে নাচিয়ে, বিশেষ ভঙ্গিতে বিয়ের বর বা কনেকে বরণ করার অকৃত্রিম সে দৃশ্য সবার চোখে লেগে থাকার মতো।

বরণের আনুষ্ঠানিকতা শেষে বিয়ের বর বা কনেকে আপাদমস্তক সাবানের ফেনায় ঘষে মেজে পরিষ্কার করার আপ্রাণ চেষ্টা চলতো সবার মাঝে। আগের দিনে বেশির ভাগ বিয়ে হতো শীতের সময়। শীতে তুরতুরে বর বা কনের দাঁতে দাঁত ঠকঠকানির সে শব্দ কারো কান পর্যন্ত ঠিক মতো না পৌঁছলেও সবার মাঝে হাস্য রসিকতা চলতো খুব উৎসাহের সঙ্গে। এমনও কিছু কসরত কিছুক্ষণ চলার পর বিয়ের মধ্যমনিকে নিস্তার দেয়া হত নতুন কাপড়ে মুড়ে। শ্বশুর বাড়িতে থেকে আসতো গায়ে হলুদের সরঞ্জামাদি। সরঞ্জামাদি পাঠাতে হতো হবু বর বা কনেকেও। তবে পুরো বিষয়টা বেশ উপভোগের থাকতো মধ্যমনির কাছেও। কারণ এর আগে পাড়াপ্রতিবেশিদের আনন্দের বা আদিক্ষেতার বিষয়বস্তু হওয়ার এমন সুযোগ হয়তো কখনো জোটেনি।

এবার মধ্যমনিকে গোসল করিয়ে পায়েস খাইয়ে রেহাই। তারপর শুরু হত উপস্থিত দর্শকদের মাঝে কাদা আর রঙ মাখামাখি খেলা। গোসল চলাকালেই হয়তো অনেকের গালে, মুখে, মাথায় রঙের বৃষ্টি নেমেছে, কিন্তু টের পায়নি। গায়ে হলুদের পায়েস, গুড়ের জিলাপি, বাতাসা, খই মুড়কি খেয়ে শুরু হত মধুর প্রতিশোধের পালা। কে কাকে কতটুকু উঠানের কাদাজলে চুবাতে পারে, কতটুকু রঙ মাখাতে পারে। এরই মাঝে কেউ তো তৈরি সঙ সেজে। উদ্ভট সাজে উপস্থিত হতেন সবার মাঝে। মুলত সবাইকে নির্মল বিনোদন দেয়া ছিল তাদের উদ্দেশ্য। এর বিনিময়ে সবার কাছ থেকে দু-চার টাকা আদায় করে নেয়াও লক্ষ্য থাকতো। পরে অবশ্য সেটা দিয়ে বনভোজন হতো। হাসাহাসি লুটোপুটি কোনো তাল ছাড়াই পাড়ার নারীদের নাচ ছিল গায়ে হলুদের প্রধান আকর্ষণ। সবার আনন্দ উন্মাদনা দেখে বোঝার উপায় থাকতো না একই পরিবার ভুক্ত নাকি আলাদা পরিবারের সদস্য এরা। এভাবে চলতো বিয়ের দিন পর্যন্ত। কারো বিয়েতে সপ্তাহ জুড়ে গায়ে হলুদ চলতো, তবে তিনদিনের কম হত না।

এবার বিয়ের দিনের পালা। এর আগেই বিয়ের বর বা কনের হাতে মেহেদি পরাতে গিয়ে নিজেদের হাত রাঙিয়ে নিতে ভুলতো না তরুণ-তরুণীরা। তখনকার দিনে বেশির ভাগ বিয়েই পাশের গ্রাম বা পাশের পাড়াতেই হতো। গরুর গাড়ি হতো বাহন। একটু দুরে হলে বড় একটা বাসই যথেষ্ট। এগুলো জরি, ফুল, রঙিন কাগজ, দেবদারু পাতা দিয়ে দিয়ে সাজানো থাকতো আগে থেকেই। সারাদিনের কাজ শেষে বরযাত্রীরা পায়ে হেঁটে, কেউ গরুর গাড়িতে, কেউ সাজানো রিকশায় করে যাত্রা দিতেন বিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে। মেয়ের বাড়িতেও চলতো সাজ সাজ রব। কলাগাছ আর দেবদারু গাছের পাতা দিয়ে সুসজ্জিত বর বরণের তোরণ। ফিতে দিয়ে তোরণ আটকে দেয়া হত। তবে বিয়ের গেটে বাহাজ(বর পক্ষের সঙ্গে কনে পক্ষের কথা কাটাকাটি) হবে না তা কি করে হয়? এটা থাকতো বিয়ে বাড়ির অন্যতম আকর্ষণ। বর পক্ষকে গেট দিয়ে ঢুকতে হলে কনে পক্ষের কাছে টাকা পরিশোধ করতে হবে। সেখানে বাহাজের জন্য উপস্থিত থাকতো শ্যালক শ্যালিকা গোছের লোকজন। আবার কথার মাঝে কিছু ইংরেজি শব্দ ব্যবহার করার জন্য তথাকথিত জেন্টলম্যান ভাড়া করা হতো। উভয় পক্ষেরই এমন মধুর প্রতিযোগীতার জন্য প্রস্তুতি থাকতো। মেয়ে পক্ষের দাবি থাকতো ছেলে পক্ষের পরিশোধের লক্ষ্যের থেকেও অনেক বেশি। এমন সময় উভয় পক্ষের লেনাদেনার একটা হিসেব এবং তর্ক গিয়ে গড়াতো সেই জেন্টলম্যানদের ওপর। সবাই শুধু এ ওর মুখ চাইতো আর নিজের পক্ষকে উৎসাহ দিয়ে যেত। এটা ছিল হাস্য রসিকতার অন্যতম একটি পর্ব। কারণ গ্রামের অধিকাংশ লোকই তাদের ঝগড়ার মানে বুঝতো না। শুধু বুঝতো ঝগড়াতে জিততে হবে।

অনেকক্ষণ এভাবে চলার পর একটা মিমাংসা পৌঁছনো যেত। তারপর বরকে সরবত খাইয়ে, তাকে দিয়ে ফিতা কাটিয়ে সোজা তার জন্য করা আসনে বসানো হতো। বিয়ের কার্যক্রম মোটামুটি প্রায় শেষের দিক। বিয়ে পড়ানোর পর উপস্থিত সবাইকে শুকুর মিঠাই খাওয়ানো হতো। কোনো কোনো বিয়ের কাজ অবশ্য মসজিদে করা হতো, কোনো বিয়ে হতো বাড়ির সামনে থাকা খানকাহ বা বৈঠক ঘরে। অথবা প্যান্ডেল করে বরের জন্য করা বিশেষ আসনেও বিয়ের কাজ করা হত।

কনেপক্ষ যথা সম্ভব চেষ্টা করতেন বর পক্ষকে মন ভরে খাওয়াতে। বরের খাওয়া শেষে আবার হতো শ্যালিকাদের বায়না। বরের খাবার খাওয়া শেষে হাত ধুয়ে দিতে হবে তাদের। কারণ এর পেছনে দুলাভাইয়ের কাছ থেকে আবার কিছু পাওনা আদায় করার অজুহাত। বরের সঙ্গে থাকা বড় ভাই বা দুলাভাইয়ের হাতও ধুয়ে দেয়া হতো। এবার তাদের সঙ্গে আরেক চোট কথা কাটাকাটি। কিছুটা লেনদেন, পরে মুক্তি। লেনদেনে সন্তুষ্ট না হলে বরের সঙ্গে থাকা দুলাভাই বা বন্ধুদের জুতা সেরে রাখার রীতিটাও বেশ মজার হয়ে উঠতো সবার কাছে।

এরপর চাঁদবদন দেখার পালা। কনেকে সাধ্য মতো নৈপূণ্য দিয়ে সাজিয়েছেন ছোট বোন বা বান্ধবী গোছের অন্য মেয়েরা। কিন্তু বিপত্তি বাধতো নতুন বউয়ের ঘরে প্রবেশের পথে। সেখানে উপস্থিত হতেন কনের দাদি বা ভাবি শ্রেণির অলসের। সে দরজার মুখে অদ্ভুত এক সাজে পড়েই থাকতো। তাকে নাকি কোনো কথা বললেই কানে যায় না। শুধু টাকার কথা বললেই শুনতে পেত। বরপক্ষও দারুণ তামাশা করতো কিছুক্ষণ। টাকা দিতে চাইতো না। কতো রকম টালবাহানা। তবু কোনো কথায় অলসের কানে ঢুকতো না। এদিকে আবার কনের ঘরে তালা দিয়ে চাবিও থাকতো সেই অলসের হাতে। ফলে শেষমেষ তাকে টাকা দিলে কনের ঘরের দ্বার উন্মোচন হতো। এতোটা পথ ঝক্কি ঝামেলা পাড়ি দেয়া যা দেখার অপেক্ষায়, তা অবশ্যই চাঁদবদন।

নতুন বিয়ে হওয়া বর কনেকে একটি ওড়না দিয়ে ঢেকে দিতেন ভাবি বা বোন শ্রেণি। তাদের হাতে দেয়া হত আয়না। সেই আয়নাতেই বর-কনে দুজনের প্রথম দেখা। লজ্জায় হয়তো ঠিকমতো মুখ দুটো স্পষ্ট হতো না। তবে যা দেখতেন তা অবশ্যই হৃদয়ের গভীরে দাগ কেটে যেত। একটা বিমূর্ত ছাপ পড়ে যেত স্থায়ীভাবে। আশেপাশের হাজার কথার ঝলকানি, হাসাহাসি, রসিকতা কোনো কিছুই সেই মুহূর্তকে টলানো দায়।

এরপর আসতো সমর্পণের পালা। উপস্থিত আত্মীয় স্বজন মুরুব্বি সবার সামনে মেয়ের বাবা বা অভিভাবক ছেলের হাতে মেয়েকে তুলে দিতে। কথাগুলো সাধারণত এমন হতো- ‘আমার মেয়ে তোমার হাতে তুলে দিলাম, আজ থেকে ওর সব দায়িত্ব তোমার, তুমি তাকে দেখে শুনে রেখ’। বরও কথায় সায় দিতো।

কথাটা বলতে গিয়ে হৃদয় বিগলিত কান্নায় ভিজে যেত বাবার চোখ। সঙ্গে মায়ের কান্নাও যোগ হতো। এবার পাড়াপ্রতিবেশি আর মেয়ের কান্নার রোল। এটাও যেন একটা রীতির মধ্যে পড়তো। মজার ব্যাপার হলো- কোনো মেয়ের যদি কান্না না পেত, তাকে অনেক কথা শুনতে হতো পরবর্তীতে। আবার অনেক ভাবি বা চাচিরা বিয়ের কনেকে কান্নার ধরণ আগে থেকেই শিখিয়ে রাখতেন। কেমন কান্না সর্বজন উপযোগী সেটাও বলে রাখা হত। তারপর বাবার বাড়ি থেকে বিদায় নিত কনেসহ বরযাত্রী। অনেক সময় বিয়ে বাড়িতে রাত্রি যাপন করে পরের দিন সকালেও বিদায় নিতেন। তবে বিয়ের যত রীতি ছিল তা সম্পন্ন হতেই রাত পোহাতো। এদিকে বরের বাড়িতে বাঁশের মাথায় তুলে দেয়া মাইকে গান বেজে চলেছে অবিরাম। মালকা বানুর দেশেরে, বিয়ের বাদ্য আইজ্যা বাজেরে. মালকার বিয়ে হইবো, মনু মিঞার সাথেরে….।

আধুনিকতার ছোঁয়া লাগা কোনো ছোট ভাই যদি মাইকের অপারেটর হয়ে থাকে তবে তার হাতে বাজতো লতা, আশা, হেমন্ত, মান্নার কালজয়ী গানগুলোও। নিশিরাত বাঁকা চাঁদ আকাশে, চুপি চুপি বাঁশি বাজে বাতাসে…। গানের কথাগুলো আস্তে আস্তে স্পষ্ট হতো বাড়িতে ফিরে আসা বরযাত্রীর কাছে। গরুর গাড়িতে গুটিসুটি হয়ে বসে থাকা বউটার মনেও কিছু একটা দোল খেয়ে যেত এমন সুরমুর্ছনা।

এটা খুব বেশিদিন আগের চিত্র নয়। দিন বদলেছে কিছুটা। আমাদের সেই গ্রাম বাংলা আজো আছে। বিয়ের রীতি এখনো আছে অনেক। কিন্তু পরিবর্তন এসেছে অনেকটা। ব্যস্ততার এইদিনে আমরা হারিয়েছি নির্মল আনন্দ পাওয়ার অভ্যাস। হাতে গোনা সামান্য ছুটি থাকায় বিয়ের বাড়িতে মন ঠিকমতো বসে না। আপন কারো ছাড়া বিয়েতে যোগদানও হয়না অনেকের। তাছাড়া অনুষ্ঠানে থেকেও হয়তো অফিসের জরুরি ফোনে থাকতে হয় ব্যস্ত। আমরা সবকিছু ইন্সট্যান্ট পাওয়ার অভ্যাস বজায় রাখতে গিয়ে বিয়ে বাড়ির গেট ধরা হয় না। মুরুব্বিরা আগেই সব লেনাদেনা ফয়সালা করে রাখেন। পার্লার গুলো সাজিয়ে রাখে কনেকে। তাই আর শ্যালিকাদের দুলাভাইয়ের কাছ থেকে পাওনা আদায়ের অজুহাতটা মজবুত থাকে না। এখনকার বিয়েতে রাতভর মাইকে গান বেজে সবার মনকে দোলায়িত করে না। বাইরে থেকে এটা কিসের অনুষ্ঠান তা বিয়ের দিনও টের পাওয়া যায় না। তরুণ তরুণীরা খুব শখ করে যদি বিয়ের আগের সন্ধ্যায় দুয়েক ঘণ্টা গান বাজায় তবু তা ডিজে সং বা হিট হট হিন্দি বা ইংলিশ। কিছুটা শারীরিক কসরত করার পর সবাই ঝিমিয়ে যায়। আগের সেই সুরমুর্ছনা সপ্তাহ জুড়ে কারো মনে দোলা দিয়ে যায় না। মাত্র কটা দিনের ব্যবধানে আমাদের এই পরিবর্তন, আর কিছুদিন পর আমাদের এসব ঐতিহ্যবাহী আনন্দগুলো কোথায় গিয়ে ঠেকবে কে জানে? সুত্রঃ প্রবাসের খবর