শয়নকালীন কিছু অভ্যাস দাম্পত্যে প্রশান্তি নিশ্চিত করে

আপনার শোবার ঘরের পরিবেশ আপনারই বদভ্যাসে আচ্ছন্ন নয় তো? কিছু বদঅভ্যাস থাকে যা গুরুত্ব না দেয়ার ফলে এ অভ্যাসগুলো দ্বারা সম্পর্কের তিক্ততা বাড়ে।

যুক্তরাষ্ট্রের অস্ট্রিনের মনোবিজ্ঞানী লি ল্যান্ড বলেন- দুজন মানুষ যদি শূন্যতা অনুভব করেন, তখন পারস্পরিক খেয়াল রাখা ও ভালোবাসার ক্ষেত্রে কম সাড়া দেন। নিঃসন্দেহে বলা যায়, কম ঘুম হলে মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা ও সম্পর্কে চিড় ধরতে দেখা যায়।

ঘুমের প্রয়োজনীয়তার কথা মাথায় রেখে বিশেষজ্ঞরা বলেন-

বিছানায় যাওয়ার আগের অভ্যাসগুলো দাম্পত্য সম্পর্কে প্রভাব ফেলে। তাই দাম্পত্যে সুখী হতে চাইলে আপনার প্রাক-শয়নকালীণে যে কাজ গুলো করবেন না-

তাই দাম্পত্যে সুখী হতে চাইলে আপনার প্রাক-শয়নকালীণে যে কাজ গুলো করবেন না-

কেবল নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকবেন নাঃ

বর্তমানে যে চিত্রটি সবচেয়ে বেশী দম্পতীদের শোবার ঘরে দেখা যায় তা হল নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকা। যেমন- ইন্টারনেট ব্রাউজিং, অফিসের কাজ, বই পড়া বা নিজের পছন্দের অনুষ্ঠান দেখা নিয়ে ব্যস্ত থাকা ইত্যাদি।

যোগাযোগ হবে খোলামেলাঃ

একই ছাদের নিচে যার সাথে থাকছেন তাকে বলার মত অজস্র কথা তৈরি হয় প্রতিদিনই কিন্তু আপনি তার সাথে খোলামেলা আলোচনা করছেন তো? সারাদিন ব্যস্ততার পর ক্লান্তি থাকা অথবা ইন্টারনেটে নিজেকে ব্যস্ত রাখার ফলে স্বামী-স্ত্রী নিজেদের মধ্যে কথোপকথন প্রয়োজনের তুলনায় কম বলছেন। তাই আপনাদের মধ্যে খোলামেলা আলোচনার সুযোগ কমছে ও পরস্পরকে কম জানছেন যা আপনাদের সম্পর্ক নড়বড় অবস্থানে নিচ্ছে।

বিশেষজ্ঞ উইন্টার্স বলেন- দাম্পত্য জীবনে পিলোটক বা ঘনিষ্ঠ আলাপ যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। দুজনের মধ্যে আলোচনার সবচেয়ে নিরাপদ জায়গা। উষ্ণতা আর স্নেহে ভরা ওই সময়টুকু পরবর্তী দিনের মেজাজ ঠিক করে দেয়। সম্পর্কের স্থায়িত্ব বাড়ায়।

যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক বিষয়ে বিশেষজ্ঞ সুজান উইন্টারের মতে- দাম্পত্যে আদর-সোহাগের মাধ্যমে বন্ধন তৈরি হয়। বেডরুমের অভ্যাসগুলো ভালো হলে দুজনের অন্তরঙ্গতা বাড়ে। এটি সুখী দাম্পত্যের লক্ষণ। এই রোমান্টিক সম্পর্ককে অবহেলা করলে ধীরে ধীরে সম্পর্কের বাঁধন আলগা হতে শুরু করে।

দুজন একই সময় ঘুমাতে যাবেনঃ

একই সাথে ঘুমাতে যাওয়ার ফলে পরস্পরের মধ্যে আবেগজনিত সম্পর্ক বাড়ে যা দাম্পত্যে জীবণ মধুর রাখে।

থেরাপিস্ট জ্যানি ইনগ্রাম বলেছেন- আপনার সময়সূচী যদি একই সাথে মিলে যায় তবে একই সময়ে বা তার চারপাশে বিছানায় যাওয়ার অভ্যাস করুন। প্রায়শই টিভি বা ইন্টারনেটের কারণে দম্পতিরা আলাদা সময়ে বিছানায় যাওয়ার রীতিতে পড়ে যান।

শোবার ঘরের পরিবেশ সুন্দর রাখুনঃ

আপনার শোবার ঘরের পরিবেশ আপনাদের মনের উপর প্রভাব ফেলে এটি আপনাদের দাম্পত্যে সম্পর্কেও ভূমিকা রাখে। অবাক হচ্ছেন তাই তো? শোবার ঘরের পরিবেশ যদি অগোছালো থাকে তখন কিন্তু মন মেজাজে মন্দা কাজ করে আবার সুন্দর পরিবেশ মনকে প্রফুল্লও রাখে। তাই ঘুমাতে যাওয়ার আগে অবশ্যই আপনার ঘরের পরিবেশ সুন্দর ও গোছালো রাখুন।

আলাদা ঘুমানো বিষয়টি এড়িয়ে চলুনঃ

সম-সাময়িক দূরত্ব বা রাগ-অভিমান সঙ্গীর প্রতি ভালোবাসা বাড়ায়। কিন্তু দীর্ঘকালীন সঙ্গীর থেকে আলাদা ঘুমানো দাম্পত্যে সম্পর্কে হিতের বিপরীতে কাজ করে।

মনোবিজ্ঞানী র‍্যাচেল সুসম্যান বলেন- দুজন আলাদা সময় ঘুমাতে যাওয়া ইতিবাচক হতে পারে। কারণ, প্রত্যেকে আলাদা সময় পায় এবং ভালো ঘুমাতে পারেন। তবে খেয়াল রাখতে হবে, এই পৃথক থাকার বিষয়টি যেন দুজনের মধ্যে দূরুত্ব না বাড়ায়।

ঘুমাতে যাওয়ার পূর্বে ঝগড়া থেকে বিরত থাকুনঃ

ঘুমাতে যাওয়ার পূর্বে ঝগড়া হবে এরকম আলোচনায় কেউ যাবেন না। ঘুমাতে যাওয়ার আগে মন শান্ত থাকবে এরকম কিছু করুন। ঝগড়া বা অভিমান হতে পারে এরকম বিষয়ের আলোচনার জন্য আলাদা সময় নির্ধারণ করুন।

কার্ট স্মিথ মনে করিয়ে দেন যে- বিছানায় যাওয়ার আগে অবশ্যই ঝগড়া করা যাবে না। ঝগড়া কখনো সমাধানের পথ দেখায় না। তার উপর রাগ নিয়ে যখন ঘুমাতে যাবেন তখন আপনার চোখে ঘুম আসবে না এবং পরের দিন খুব বাজে কাটবে। যা আপনাদের সম্পর্কের জন্য মোটেও ভালো হবে না।