সব দম্পতিদের মাঝেই কিছু না কিছু সমস্যার সৃষ্টি হয় এবং খুব স্বাভাবিক নিয়মেই তা আবার সমাধানও হয়ে যায়। কিন্তু কিছু সমস্যা যখন প্রচন্ড তীব্রতায় পৌছে যায় তখন দাম্পত্ব্য ভেঙ্গে যাওয়ার উপক্রম হয়। এক্ষেত্রে ৯০ ভাগ বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য দায়ী মানুষের কিছু মানবীয় আচরণ। মূলত ৪ টি আচরণকে বিশেষ ভাবে দায়ী করা হয় আর সেগুলো হলো –
অভিযোগ করা: কিছু কিছু মানুষ আছে কারনে অকারনে তারা শুধু অভিযোগ করতে থাকে, এটা খুব খারাপ একটা স্বভাব। এই ধরনের আচরণের কারনে দাম্পত্য কলহ ক্রমশ বৃদ্ধি পায়, ঘটে বিবাহ বিচ্ছেদ। কোন বিষয়ে সম্পূর্ণ না জেনে কারো উপর সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়াটা একটি অন্যায়। বিচ্ছেদ এড়াতে না জেনে সঙ্গীকে কোনো অভিযোগ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
বদমেজাজ: মানসিক চাপের মুখে হয় মানুষ ভেঙ্গে পড়ে না হয় চড়ে ওঠে। যারা খুব সহজে তাদের আবেগ দ্বারা তাড়িৎ হয় তারা সহজে রেগে যায়। যে সব মানুষ খুব বেশী রেগে যায় বা কথায় কথায় রেগে যায়, তারা খুব সহজে যেকোন কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধা করেনা। আর বিবাহ বিচ্ছেদের মত সিদ্ধান্ত নেয়ার অন্যতম একটি কারন হচ্ছে বদমেজাজ। বিচ্ছেদ এড়াতে মেজাজ নিয়ন্ত্রনে রাখার বিশেষ প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। রাগ করে খুব দ্রুত কোন সিদ্ধান্তে যাওয়া যাবেনা, রাগের মাথায় গুরুত্বপূর্ন কোন সিদ্ধান্ত নেয়া কখনোই সঠিক না।
অযোগ্য মনে করা: প্রতিটা মানুষ ভিন্ন মানবীয় বৈশিষ্ট্য দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, দাম্পত্য জীবনে যদি এক সঙ্গী অন্য সঙ্গীকে তার অযোগ্য বলে মনে করেন তবে সে তার সঙ্গীকে অপমান করছে। এই ধরনের আচরনের কারনে সঙ্গীর মনে গভীর দাগ কাটে, খুব কষ্ট পেতে থাকে মনে মনে। কোন মানুষের উচিৎ না এরকম আচরণ করা, কারো মনে কষ্ট দেওয়া। এরকম আচরনের কারনে ভেঙ্গে যায় অনেক সংসার। বিচ্ছেদ এড়াতে আমাদের উচিৎ হবে আমাদের মন মানসিকতার উন্নয়ন করা। সঙ্গীকে তার প্রাপ্ত সঠিক মর্যাদা দেওয়া।
একাত্মতার অভাব: সুখি দাম্পত্যের পিছনে যে বিষয়টি বেশী কাজে লাগে, সেটি হচ্ছে এক মত হওয়া। যে সকল দম্পতিরা বেশীর ভাগ বিষয়ে একমত প্রকাশ করে তাদের মধ্যে সম্পর্কটা হয় চমৎকার। বিপরীত হলে সহজে ভেঙ্গে যায় সম্পর্ক। বিচ্ছেদ এড়াতে আমাদেরকে এই আচরণগুলো অবশ্যই গুরুত্ব দিতে হবে।
দাম্পত্য জীবনের সকল সিদ্ধান্ত গ্রহণে একাত্মতা আনতে হবে। বিচ্ছেদের হাজারো কারন হতে পারে তবে আচরণগত যে কারন গুলো রয়েছে সেগুলো আমরা নিজেরাই নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। সম্পর্কের বিষাক্ততা এড়াতে সবাইকে আচরণে নিয়ন্ত্রণ আনতে হবে। আপনি আপনার সম্পর্কটাকে কতটা গুরুত্ব দিচ্ছেন তা নির্ভর করে আপনার নিজের উপর। যত্ন করলে সম্পর্ক কখনো ভেঙ্গে যায় না। তাই আসুন আমরা আমাদের সম্পর্কে যত্নশীল হই। যার কোন বিকল্প নেই।