দ্বিতীয় বিয়ে ও সুখী হওয়ার সম্ভাবনা!

বিয়ের পর সুখী সংসার জীবন গড়তে কে না চায়! তবে যে কোন কারনেই হোক প্রথম সংসারের ইতি ঘটে অনেকের জীবনে। সময় ও জীবন থেমে থাকেনা তবে খারাপ সময় অব্যাহত থাকে অনেকদিন, এর মধ্যে দিয়েই মানুষকে আবার বাঁচতে হয় নতুন করে। কেউ হয়তো নতুন ভাবনায় সঙ্গীহীন জীবনযাপন করেন আবার কেউ কেউ নতুন জীবনসঙ্গীর নিয়ে দাম্পত্যে জীবন শুরু করেন।

সম্প্রতি ‘হাফিংটন পোস্টে’র এক প্রতিবেদনে জানানো হয় –

দ্বিতীয় বিয়েতে নাকি সুখী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

যে সকল কারনে দ্বিতীয় বিয়েতে সুখী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছেঃ

স্বাভাবিকভাবে মানুষ পুরনো ভুল পুনরায় করেনা। তাই দ্বিতীয় বিয়েতে ব্যক্তিদের মধ্যে সংশোধন বিষয়টি তৈরি থাকে। যার ফলে দাম্পত্যে সম্পর্ক ভালো থাকে।

মানুষ সঙ্গ প্রিয় তবুও একই ছাদের নিচে নিত্য কলহ দাম্পত্যে সম্পর্কে বিচ্ছেদ ঘটায়। দীর্ঘ সময় মানুষ যখন নিঃসঙ্গ জীবন কাটায় তখন দ্বিতীয় সম্পর্কে কলহ বিষয়টি আসলেও তারা এড়িয়ে চলেন ফলে দাম্পত্যে সম্পর্কে শান্তি বিরাজ করে।

দীর্ঘকালীন সময়ের পুরনো অভিজ্ঞতার ফলে দ্বিতীয় বিয়েতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সমঝোতার বিষয়টি বেশ স্পষ্ট থাকে যার ফলে দ্বিতীয় দাম্পত্য জীবন সুখী হয়।

প্রথম দুর্ঘটনার স্বীকার হওয়ার পর দ্বিতীয় বার জীবনসঙ্গী বাছাইয়ে ব্যক্তিদের মধ্যে আবেগ বিষয়টি নিয়ন্ত্রনে থাকে। এক্ষেত্রে ব্যক্তিগণ যথেষ্ট সচেতন ও যাচাই করে জীবনসঙ্গী বেঁছে নেন। আর তাই তাদের মধ্যে আত্মীক সম্পর্ক শুরু থেকেই লক্ষ্য করা যায়।

অতীতে আস্থাহীনতায় সম্পর্ক কাটানো অভিজ্ঞতার ফলে দ্বিতীয় সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের প্রতি আনুগত্য থাকে তাই দাম্পত্য সম্পর্ক স্বাস্থ্যকর হয়।

বিয়ে প্রত্যেকটি মানুষের জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় যা কেউ অস্বীকার করতে পারবেনা। সমাজ, বিয়ে ও সংসার এ সকল বিষয় নিয়েই সভ্যতা টিকে আছে। বিয়ের পর অনেকের জীবনে ঝড়ঝাপটা আসে অতঃপর ডিভোর্স হয়। তাই বলে ব্যক্তির উচিত নিজের জীবনকে অবহেলা না করে সময় নিয়ে যাচাই করে জীবনসঙ্গী খুঁজে নতুন করে বেঁচে থাকা।

প্রবাদে আছে –

বিয়ে হচ্ছে বুদ্ধিমত্তার বিরুদ্ধে কল্পনার জয়। আর দ্বিতীয় বিয়ে হচ্ছে অভিজ্ঞতার বিপক্ষে আশাবাদের জয়।

কিছু পরামর্শ নিতে নেই এতে সম্পর্ক নাজুক হয়

দাম্পত্য সম্পর্ক সুখের হোক বা না হোক – সেই সম্পর্কের ভবিষ্যৎ কেমন হবে তা ঠিক করার দায়িত্ব একমাত্র আপনার। অনেক সময়ই সম্পর্কের নানা সমস্যায় আমরা পরামর্শ চাই কাছের বন্ধু বা আত্মীয়দের কাছে। কখনও কখনও সে সব পরামর্শে কাজ হয়, কখনও আবার হয় না।

তবে কাজ হোক বা না হোক, পরিস্থিতির দায়িত্ব আপনাকেই নিতে হবে এবং নিজেই পথটা খুঁজে বের করতে হবে। এ সব ক্ষেত্রে বন্ধু বা আত্মীয়দের পরামর্শগুলোর ব্যাপারেও সাবধান থাকা দরকার।

স্বামীর সঙ্গে তর্ক কোরো নাঃ

কোনও মতেই এই পরামর্শে কান দেবেন না! তর্ক করলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হতে পারে ঠিকই, কিন্তু সেই ভয়ে চুপ করে থাকাটা কোনও কাজের কথা নয়। নৈর্ব্যক্তিক হয়ে বিষয়টা পর্যালোচনা করা এবং কোথায় আপনাদের দু’জনেরই ভুল হচ্ছে, সেটা খতিয়ে দেখা দরকার। যদি মনে হয় আপনাকে বিনা কারণে দোষী করা হচ্ছে, তা হলে চুপ করে না থেকে মুখ খুলুন। সম্পর্ক সফল করতে দু’জনেরই সক্রিয় ভূমিকা থাকা দরকার।

স্বামীকে পালটানোর চেষ্টা করোঃ

এটা আর একটা ভুল পরামর্শ। কোনও দুটো আঙুল যেমন একরকম হয় না, তেমনি দু’জন মানুষও একরকম হতে পারেন না। সেই পার্থক্যটা মেনে নিতে হবে। স্বামী বা পার্টনারকে যদি পালটাতে চেষ্টা করেন, সেটা হবে আপনার সবচেয়ে বড়ো ভুল। পরস্পরের ব্যক্তিস্বাতন্ত্রকে মেনে নিয়ে জীবনটা গড়ে তোলার চেষ্টা করুন।

সংসারের রাশ নিজের হাতে রাখোঃ

সম্পর্কের মূল কথা হল দু’জনের মধ্যে একটা ভারসাম্য বজায় রাখা। সব কিছুর রাশ নিজের হাতে রাখলে মাথায় অতিরিক্ত দায়িত্ব নিয়ে ফেলবেন, এবং তা থেকে এক সময় হতাশা আর ভুলবোঝাবুঝি তৈরি হবে যা যথেষ্টই এড়ানো সম্ভব। তাই সব দায়িত্ব নিজের উপর রাখবেন না, স্বামীর সঙ্গে ভাগ করে নিন।

স্বামীর ফোনের উপর নজর রাখোঃ

এরকম পরামর্শ শুনলে সেই পরামর্শদাতা ব্যক্তিকে এড়িয়ে চলাই ভালো। অপরের ফোন ঘাঁটা একইসঙ্গে অনৈতিক এবং অভদ্রতার চূড়ান্ত উদাহরণ। স্বামীর ব্যাপারে কোনও কারণে আপনার সন্দেহ তৈরি হতেই পারে, কিন্তু তার জন্য স্বামীর ফোন লুকিয়ে দেখতে যাবেন না। বরং সরাসরি স্বামীর সঙ্গে কথা বলুন।

দাম্পত্য সম্পর্কে দুজনের মনের যোগাযোগের পথটা হওয়া চাই মসৃণ। হঠাৎ করেই সঙ্গীর চেনা আচরণে অচেনা সুর, ছোটখাটো ভুলত্রুটিতে বড় চেহারা দাম্পত্যে অস্থিরতা বাড়িয়ে তুলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে তৃতীয় পক্ষের উপস্থিতিতে সম্পর্কে এমন সমস্যা সৃষ্টি হয়। দুজনের মনের যোগাযোগের পথ হতে হবে দূর্দান্ত;

পারস্পারিক বুঝাপড়া সমান্তরাল। তাই নিজেদের অকৃত্রিম সম্পর্ককে টিকিয়ে রাখতে দুজনেই যথেষ্ঠ সচেতন হোন।

ভালো সঙ্গী হতে হলে

‘অমরসঙ্গী’ হওয়ার তাগিদ দিলে হয়তো রোমান্টিকতার বাড়াবাড়িই হবে। তবে আরও একটু বেশি হলে ক্ষতি কী?… সফল ও ভালো জীবনসঙ্গী সবারই চাওয়া থাকে। ‘সঙ্গী রোমান্টিক হবে। আমার সব কথা বুঝবে। দারুণ সুন্দর সময় কাটাব।’ প্রত্যেকেই ভাবেন, তাঁর সঙ্গী তাঁকে ঘিরেই নতুন জীবন রচনা করবেন—জীবন কাটাবেন। তাঁর রাজ্যে তিনি একাই রাজত্ব করবেন। এখানে অন্য কেউ অপরের ভাবনায়, প্রকাশ্যে, ফেসবুক অথবা মোবাইলে কাজে-অকাজে ভাগ বসাবে না। দুজনের পারস্পরিক মুগ্ধতা যেন সারা জীবন থাকে।

আবার পারিবারিক সম্বন্ধ করে হওয়া বিয়ের ক্ষেত্রে বিয়ের পর এই ভালোবাসাবাসীর পর্বটা শুরু হয়। বিয়ের মূল লক্ষ্য যেটা থাকে সেটা হলো, মনের মধ্যে যে মিলনের আকাঙ্ক্ষা তার নান্দনিক বাস্তবায়নে নিজেকে প্রকাশ করা, রোমান্টিকতা। আর এসব ঘিরে রয়েছে সামাজিকতা। এসব নিয়েই তো বিয়ে।

মার্কিন লেখক মিগনন-ম্যাকফলিন যেমনটা বলেছেন, দায়িত্ব দু-তরফেরই। সম্পর্ক হবে এ রকম; একজীবনেই বারবার প্রেমে পড়া চাই একে অপরের। শুধু তো দায়িত্ববোধ না, পরস্পরের প্রতি মুগ্ধতা না থাকলে ভালো সঙ্গী হয়ে ওঠা দুষ্কর। আগে থেকে পরিচয় না থাকলে পারিবারিক সম্বন্ধ করা বিয়েতে আরেকটু কাঠখড় তো পোড়াতেই হয়। মার্কিন দুঁদে মঞ্চকর্মী রবার্ট ব্রল্টের কথাটাই বা বলি না কেন! সংসার রঙ্গমঞ্চে দুজনকে হতে হবে দুজনার। আর ভালোবাসার প্রশ্নে সারা পৃথিবীর বিরুদ্ধে দরকারে এককাট্টা হয়ে লড়াই।

রম্যলেখক রবার্ট কুইলেন বলেছেন, সুখী ও ভালো সম্পর্ক হলো—যুগলের দুজনই একে অপরের প্রতিÿআস্থাশীল, সহৃদয়, সদয় এবং সংবেদনশীল।

তাহলে কী করতে হবে?

বিয়েটা যদি হয় সম্বন্ধ করে:

দুজনের পছন্দ-অপছন্দ বিয়ের আগে আলোচনা করে নিলেই ভালো হয়।

কারও বিয়ের আগে প্রেম থাকতেই পারে। সে ব্যাপারটা দুজনেই দুজনের স্মৃতি থেকে ঝেড়ে ফেলতে পারবেন কি না, নিজেকে জিজ্ঞেস করুন। এই বোঝাপড়া যত আগে হবে ততই ভালো।

নিজের মতের বিরুদ্ধে বিয়ে করা উচিত নয়। এতে উভয়ের পরিবার ও নিজেদের মধ্যে ঝামেলা বাড়বে।

নারীদের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ যদি না থাকে; তা শোধরানোর মানসিকতা থাকতে হবে।

পারস্পরিক দুর্বলতাগুলো জানতে ও জানাতে পারলে ভালো। এ কারণে, যাতে সে ব্যাপারে আপনি ‘কেয়ারিং’ হতে পারেন। আপনার ওপর আপনার সঙ্গীর আস্থা যেন বাড়ে। অযথা সেসব বিষয় নিয়ে জীবনকে তিতকুটে বানানোর কোনো মানে নেই।

বিবাহিত জীবন টিভির সিরিয়াল— ডেইলি সোপ বা অপেরা নয়। গোপন গল্পগুলো জীবননাট্যের ক্লাইমেক্স বা জটিলতা বাড়ানোর জন্য মজুত রাখবেন না।

আপনার সঙ্গীর আগ্রহের দিকটায় নজর দিন। তাকে উৎসাহ দিন। দেখবেন সেও আপনার প্রতি তার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।

যেমন: পড়াশোনা করা, বছরে অন্তত একবার বেড়িয়ে আসা, কোনো সামাজিক সচেতনতামূলক কাজ করা, সিনেমা দেখা ইত্যাদি। আবার কেনাকাটাও হতে পারে। একদিন না হয় গেলেনই সঙ্গীর সঙ্গে।

শারীরিক ব্যাপারটি উপভোগ্য করে তুলুন। ব্যাপারটি নিয়ে লজ্জা না করে নিজেদের মধ্যে খোলাখুলি আলোচনা করা ভালো। প্রয়োজন হলে নিজেদের পরিতৃপ্তির জন্য চিকিৎসক-পরামর্শ, ইন্টারনেটের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।

অন্যের দোষ-খুঁতগুলো হিসাব না করে সঙ্গীর ইতিবাচক দিক বের করুন। আর সেগুলোর প্রশংসা অব্যাহত রাখতে হবে।

ঝগড়া নয়, আলোচনায় যেকোনো সমস্যার সমাধান করতে হবে।

প্রেমের বিয়েতে:

প্রেমের সময় অনেক ক্ষেত্রে দুজনের পারিবারিক স্ট্যাটাস, পারিবারিক আবহ, তাদের নিজেদের মতামতের মূল্য কতখানি সেসব দিক অনেকটা অজানাই থেকে যায়, ভাবেন যে পরে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। আসলে বাস্তবতা ভিন্ন। বিয়ে মানেই হচ্ছে সামাজিকতা। সংসার মানেই একটি সামাজিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা। যে যার মাতব্বরি ফলানোর একটা জম্পেশ জায়গা ভেবে নড়েচড়ে বসেন। সংসার রাজনীতির ভালোমন্দ দেখভাল এড়িয়ে গেলে কেমন করে চলবে!

তাহলে উপায়—যখনই ভাবলেন বিয়ে করবেন! একটু ভেবে নিন।

দুজনই দুজনের পরিবারকে ভালোভাবে জানার চেষ্টা করুন।

দুজনই তাঁদের নিজেদের পরিবারে কতখানি প্রভাব রাখতে পারবেন তা পর্যালোচনা করুন।

পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ অবশ্যই থাকতে হবে। বিয়ের পর ‘পারবো না, পারলাম না’ বলতে যাতে না হয় সে রকম মানসিক প্রস্তুতি আগেই নেওয়া প্রয়োজন।

ভুল-বোঝাবুঝির শুরুতেই তা নিরসন করা উচিত ।

নিজেদের দোষত্রুটিগুলো ডায়েরিতে লিখে রাখতে পারেন। পরে ডায়েরি দেখে সেসব শোধরাতে হবে।

লেখেছেন: সুলতানা আলগিন, সহযোগী অধ্যাপক, মনোরোগবিদ্যা বিভাগ।

সুত্রঃ প্রথম আলো

সম্পর্কে প্রনয় আছে কিন্তু বন্ধুত্ব নেই; কি করবেন?

প্রণয় ও বন্ধুত্ব আলাদা দুটি শব্দ হলেও একটি সম্পর্কে এর দুটির উপস্থিতি এক সাথে থাকা খুব জরুরী। আপনার সঙ্গীকে আপনি ভালোবাসেন, তার সব দিক খেয়াল রাখছেন, একই ছাদের নিচে দুজন বাস করছেন, কিন্তু একে অপরের কাছে মন খুলে সব কথা বলছেন না বা বলতে পারেন না। এটি আপনাদের সম্পর্কের মাঝে জটিলতা আনতে পারে। স্বামী-স্ত্রী বন্ধুত্বের রূপ হয় অন্য রকম। তাই আপনাকে আগে বুঝতে হবে বন্ধুত্ব কার সাথে কি রকম হবে। পরিবারের সাথে বন্ধুত্ব, বন্ধুর সাথে বন্ধুত্ব আর স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের সাথে বন্ধুত্ব এক নয় কেননা সম্পর্ক গুলো আলাদা।

সম্পর্কে প্রনয় ও বন্ধুত্ব বজায় রাখতে যা করা উচিৎঃ

একে অপরের পছন্দ সম্পর্কে জানুন, অনেকটা আইস ব্রেকিং গেম এর মত একে অপরকে ব্যাক্তিগত ভালো লাগা খারাপ লাগা নিয়ে প্রশ্ন করুন।

দুজন ব্যাক্তির ভিন্ন ভিন্ন পছন্দ থাকতেই পারে এটাই স্বাভাবিক; এতে হতাশ হবার কিছু নেই। একে অন্যের পছন্দকে শ্রদ্ধা করুন, নিজের পছন্দকে অন্যের উপর চাপিয়ে দিবেন না।

স্বামী স্ত্রী’র নিজেদের ব্যাক্তিগত বিষয় গুলো অন্য কারও সাথে শেয়ার করবেন না।

নিজেদের ভালো মুহূর্ত গুলোর গল্প আপনার সঙ্গীকে মনে করিয়ে দিন।

আপনার অনেক স্মৃতি হয়ত আপনার সঙ্গী ভুলে যেতে পারেন তাই মনে করিয়ে দিতে আপনি ডায়েরি লিখতে পারেন, হতে পারে সেটি কবিতা কিংবা ছোট গল্প চাইলে আদি নিয়মের মত চিঠি লিখে বা চিরকুট লিখে তাকে উপহার দিতে পারেন।

ভালোমন্দ বোঝাপড়া নিজেদের মধ্যে সমঝোতা করে নিবেন পরিবারকে বা বন্ধুবান্ধব দিয়ে নিজের স্ত্রী বা স্বামী কে বোঝাতে যাবেন না।

দুজন ব্যাক্তির উচিৎ একে অপরকে জানা এবং প্রতিদিন জানতে চাওয়া। নিজেদের বারংবার জানতে চাওয়ার মাঝে গড়ে উঠবে বন্ধুত্ব আর যেটা থাকা চাই সেটা হল – বন্ধুত্বের শ্রদ্ধাবোধ।

দাম্পত্ব্য সম্পর্কে ক্ষমতার ভারসাম্য

সম্পর্কের গুরুত্ব যার কাছে কম তার হাতেই বেশি ক্ষমতা চলে আসে। এই সমস্যার সমাধান লুকিয়ে আছে একে অপরের প্রতি বিশ্বাসেই।

সম্পর্কের মধ্যে ‘ক্ষমতা’ শব্দটাকে টেনে আনতে আমরা কেউই পছন্দ করি না। একটা সুস্থ সম্পর্কে থাকবে একে অপরের সঙ্গে সহযোগিতা এবং সব কিছু ভাগ করে নেওয়ার আশ্বাস। কিন্তু সহযোগিতা এবং শেয়ার, এই দুটো করতেই তো দু’জন মানুষকে লাগে। দু’জনের মধ্যে একজন যদি সেটা না করতে চায়?

আসলে সম্পর্কের গুরুত্ব যার কাছে কম তার হাতেই বেশি ক্ষমতা চলে আসে। অন্যজন যতই ভালবাসাকে বেশি প্রাধান্য দিক। ডিনারের প্ল্যান থেকে আরও গুরুত্বপূর্ণ কোনও বিষয়, সবই যদি একজনের সিদ্ধান্ত মতো চলে তাহলে মুশকিল! অন্যজনের অসম্মতির যেন কোনও অর্থই নেই! এর ফল?

সিদ্ধান্ত নেওয়ার জায়গাটা শুধুমাত্র একজনের দখলে থেকে যায়। হয়তো না চাইতেই সে অন্য জনের কাছে এই বার্তা পৌঁছে দিচ্ছে, যে তার মতামতের কোনও গুরুত্ব বা প্রয়োজনীয়তা নেই।

সম্পর্ককে ধরে রাখতে এই সমস্যার সমাধান কিন্তু করতে হবে ধৈর্য্য ধরে। কীভাবে?

  • প্রথমত যেটা করতে পারেন তা হল পার্টনারের এই স্বভাব মেনে নেওয়া। তার সিদ্ধান্তগুলোই মেনে চলা। এতে সাময়িকভাবে সমস্যার সমাধান হয়তো হবে, পাওয়া যাবে কিছুটা সহযোগিতার আশ্বাস। তবে দীর্ঘদিন এইভাবে চলা নিশ্চয়ই সম্ভব নয়। ধৈর্য্যের বাঁধ ভাঙবেই। নিজেকে গুরুত্বহীন করে রাখতে কেউ কত দিন পারে?
  • দ্বিতীয়, সহযোগিতা পাওয়ার জন্য লড়াই করা। এতে কিন্তু দুটো ফল হতে পারে। আপনার পার্টনার যদি নিজের ভুল বুঝতে পারেন, তাহলে তো সমাধানও আপনারা পেয়ে গেলেন। কিন্তু তিনি যদি ভাবেন যে আপনি অকারণে ঝগড়া করছেন? তাহলেও কিন্তু বেশি আঘাত পাবেন আপনিই।
  • এতেও সমাধান না হলে স্পষ্ট করে অন্যজনকে বলে দিন যে তিনি আপনার পাশে না থাকলেও আপনি নিজের কাজ নিজে করতে সক্ষম। আসা করা যায় এতে আপনার পার্টনার নিজের ভুল বুঝবেন। তবে আপনি নিজে যদি এই সম্পর্কের উপর খুব বেশি মানসিকভাবে নির্ভরশীল হয়ে থাকেন তাহলে হয়তো এই কাজটা আপনি নিজেই করে উঠতে পারবেন না।

তবে কি কোনও সমাধান সত্যিই নেই এই সমস্যার? আছে। আর সেটা লুকিয়ে আছে আপনাদের দু’জনের ভিতরেই। একে অপরের প্রতি বিশ্বাসে।

একটি সম্পর্কে যখন দু’জন দু’জনকে বিশ্বাস করেন তখন কোথাও না কোথাও এই বিশ্বাসটাও থাকে যে তাঁরা একে অপরকে ছেড়ে যাবেন না। দু’জনের উপরেই প্রভাব ফেলবে এমন কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে একজন অন্যজনের ছোট-ছোট প্রয়োজন এবং ইচ্ছেগুলোকেও গুরুত্ব দেবে, থাকে এই বিশ্বাসও।

মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক তো শুধু ‘ক্ষমতা’য় সীমাবদ্ধ নয়। বন্ধুত্ব, ভালবাসা, সম্মান এই সবের কাছেই হেরে যাবে ক্ষমতার লড়াই।


বিয়ের প্রস্তুতিঃ বর-কনের আচরণ ও কিছু সতর্কতা

বিয়ের আগের ও পরের আচরণ বর-কনের পরবর্তী জীবনে প্রভাব বিস্তার করে। তাই দুজনই সতর্ক থাকুন।  ভেবেচিন্তে একে অপরের সঙ্গে আচরণ করুন।  কী করবেন আর করবেন না, জানাচ্ছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ও ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট তানজির আহমেদ তুষার –

বিয়ের পর প্রায়ই স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে নানা রকম কষ্ট, যন্ত্রণা কিংবা অসন্তুষ্টি দেখা যায়।  অথচ একটু সচেতন হলেই অশান্তি দূর করে সাংসারিক জীবনে বসন্তের রং ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব।   বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে খুব সাধারণ কিন্তু অতি প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো একটু জেনে নেওয়া যাক।

বিয়ের আগে: বিয়ের আগে পাত্র-পাত্রীরা ছোটবেলা থেকে মনের মাধুরী মিশিয়ে তৈরি করে রাখা আদর্শ বা পারফেক্ট পাত্র বা পাত্রী খুঁজতে থাকে। জেনে রাখা দরকার যে পৃথিবীর কেউই পারফেক্ট নয়। এ ক্ষেত্রে নিজেদের অবস্থানের কথা মাথায় রেখে প্রত্যাশার একটা ন্যূনতম মান নির্ধারণ করে পাত্র-পাত্রী খোঁজা ভালো। পাত্র-পাত্রী খোঁজার সময় তাদের ব্যক্তিত্ব, পেশাগত কাজের ধরন, পারিবারিক সংস্কৃতি ও রীতিনীতি জানা প্রয়োজন।

দেখতে যাওয়া: বিয়ের আগে পাত্র-পাত্রীকে দেখাটা গুরুত্বপূর্ণ। পাত্র-পাত্রীর নিজেদেরও পরিচিত হয়ে নেওয়াটা দরকার। কিন্তু বারবার দেখতে এলে তার মধ্যে হতাশা তৈরি হয়। বিয়ের পরও এর নেতিবাচক প্রভাব দেখা যেতে পারে। ছবি দেখে ও খোঁজখবর নিয়ে পছন্দ হলে কোনো রেস্টুরেন্ট বা মার্কেটে পাত্রীর সঙ্গে অনানুষ্ঠানিকভাবে দেখা করুন এবং স্বাভাবিক সামাজিক কথাবার্তা বলে একে অপরকে বোঝার চেষ্টা করুন। সব দিক থেকে পছন্দ হলেই শুধু আনুষ্ঠানিকভাবে পাত্র-পাত্রীর বাসায় যাওয়া উচিত। পাত্র বা পাত্রীকে দেখতে গিয়ে এমন কোনো প্রশ্ন বা মন্তব্য করবেন না, যা তার জন্য অপমানজনক।  কোনো তথ্য জানতে হলে কৌশলী হোন।

বিয়ে ঠিক হলে: বিয়ে ঠিক হলে পাত্র-পাত্রী নিজেদের একটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করে নিতে পারলে ভালো। একই সঙ্গে উভয় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে অন্তত ফোনে হলেও কথা বলে সম্পর্কগুলো সহজ করে নেওয়া যেতে পারে। এ সময় সততার সঙ্গে তথ্যর আদান-প্রদান করা উচিত। বিয়ের আগে পাত্র-পাত্রী তার ভাবী স্ত্রী বা স্বামীকে একজন আদর্শ স্ত্রী বা স্বামী হিসেবে কল্পনা করতে পছন্দ করে। শ্বশুর-শাশুড়িসহ সবাই তাকে আদর করবে, সবার সঙ্গে সুন্দর সম্পর্ক থাকবে। মনে রাখতে হবে, আদর্শ ও বাস্তবতার মধ্যে অবশ্যই পার্থক্য থাকবে। কারণ কেউই সব দিক থেকে আদর্শ নয়। অন্যদিকে তাদের মধ্যে কিছু আশঙ্কাও কাজ করতে থাকে। মেয়েদের মধ্যে শ্বশুরবাড়ির লোকজন কেমন হবে, তাদের সঙ্গে মানাতে পারবে কি না, স্বামী তাকে বুঝবে কি না, এ ছাড়া তার প্রিয় পরিবেশ ছেড়ে যেতে হবে—এটার একটা কষ্ট তার মধ্যে দানা বাঁধতে থাকে। বিয়ের আগে ও পরে পাত্র-পাত্রীর একে অপরের আশঙ্কাগুলো বুঝে তাকে আশ্বস্ত ও সহায়তা করা উচিত।

বিয়ের দিন কনেকে ঠাট্টা নয়: বিয়ের দিন ঠাট্টা বা ঠকানোর বিষয়টি পুরনো প্রচলন। ঠকানোর বিষয়টি অন্যদের ওপর তেমন প্রভাব বিস্তার না করলেও কনের ওপর অনেক প্রভাব ফেলে। কনে অনেক মানসিক চাপ, আশঙ্কার মধ্যে থাকে এবং তাকেই নতুন পরিবেশে যেতে হয়। এ কারণে তার মনের অবস্থা নাজুক থাকে। তাই সামান্য পিনের খোঁচা বুলেটের চেয়েও বেশি ব্যথিত করে। এটার প্রভাব মেয়েটির মনের অজান্তেই দীর্ঘদিন থেকে যায়। এ জন্য বিয়ের দিন প্রথম দেখাটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। নতুন বউয়ের সঙ্গে ঠাট্টা না করে সহমর্মিতার সঙ্গে কথা বললে তার সঙ্গে ইতিবাচক সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

বিয়ের পর:  বিয়ের পর স্ত্রী স্বামীকে আরো বেশি করে অনুভব করে এবং স্বামীও তার মতো করে প্রচণ্ড আবেগ দিয়ে তার সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষা করুক—এটা প্রত্যাশা করে। অনেকে এই আবেগকে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি মনে করে বিরক্ত হয়। অন্যদিকে সামাজিক কারণেই স্বামীকে অনেক দায়িত্ব নিতে হয়—স্ত্রীকে সম্মানজনক অবস্থায় রাখতে হবে, সন্তানদের ভবিষ্যৎ তৈরি করতে হবে ইত্যাদি। ফলে স্ত্রী মনে করে, স্বামী তাকে আর আগের মতো ভালোবাসে না। এ সময় সন্দেহের সুপ্ত বীজ উপ্ত হয়ে যেতে পারে। কিন্তু ছেলেটি যে মেয়েটিকে ভালোবাসে না তা নয়, কিন্তু তা প্রকাশ করতে পারে না অথবা প্রকাশ করার প্রয়োজন অনুভব করে না। হয়তো স্ত্রী-সন্তানদের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত করার জন্যই সে দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। এ সময় স্বামীর উচিত স্ত্রীর আবেগকে বোঝার চেষ্টা করা এবং স্ত্রীকে যথাসম্ভব সময় দেওয়া। একই সঙ্গে স্ত্রীরও বোঝা উচিত স্বামীর ব্যস্ততার অর্থ ভালোবাসা কমে যাওয়া নয়, এই পরিশ্রমের উদ্দেশ্য তাদের ভালো রাখার প্রচেষ্টা।

নবদম্পতি ও যৌথ পরিবার: যৌথ পরিবারে অনেক সময় দম্পতিরা একান্তে সময় কাটানো বা একটু কাছাকাছি আসতে কুণ্ঠা বোধ করে। ফলে তাদের মানসিক চাহিদা পূর্ণ হয় না। বরং এক ধরনের অস্বস্তি তৈরি হয়। স্বামী হয়তো বাইরে গিয়ে অস্বস্তি কিছুটা কমিয়ে ফেলতে পারে, কিন্তু স্ত্রীর মধ্যে দিনে দিনে অস্বস্তিটা জমাট বাঁধতে থাকে। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে এই অস্বস্তি সংযুক্ত হয়ে যায়। ফলে মেয়েটির মনের অজান্তেই পরিবারের সদস্যদের প্রতি বিরক্তিবোধ তৈরি হতে থাকে। একান্ত সময়গুলোতে যাতে সে অবাধে সারা দিনের আবেগ প্রকাশ করতে পারে, সেই সুযোগ দিতে হবে। তার আবেগের প্রতি অতিপ্রতিক্রিয়াশীলতা দেখানোর প্রয়োজন নেই, বরং তার আবেগকে স্বীকৃতি দিতে হবে। যৌথ পরিবারের অন্য সদস্যদের উচিত নবদম্পতিকে কিছুটা সময় একান্তে কাটানোর সুযোগ দেওয়া। মেয়েটি যাতে এই পরিবারের একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হয়ে উঠতে পারে, এ বিষয়ে তাকে সহায়তা করা।

স্ত্রী ও পরিবারের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা: বিয়ের পর ছেলেটিকে যে শক্ত কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে হয় তা হচ্ছে স্ত্রী ও পরিবারের অন্য সদস্য, বিশেষত মায়ের মধ্যে ব্যালান্স করা। ছেলেটির জন্য মা ও স্ত্রী তার দুই হাতের মতো; কোনোটিই তার বেশি আপন বা পর নয়। একইভাবে সে মা ও স্ত্রী উভয়েরই ভালোবাসার পাত্র, দুজনই তার কাছ থেকে যথেষ্ট মনোযোগ প্রত্যাশা করে, যা খুবই স্বাভাবিক। তাই ছেলেটিকে এ ক্ষেত্রে বিচক্ষণতার সঙ্গে অ্যাডজাস্ট করতে হবে। মনোযোগ দিয়ে তাদের কথা শুনতে হবে এবং কাউকে কষ্ট না দিয়ে বিষয়টি মোকাবিলা করতে হবে।

জীবনধারার পরিবর্তন: বিয়ের পর ছেলে ও মেয়ে উভয়কেই তার লাইফস্টাইল পরিবর্তন করতে হয়। বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে সময় দেওয়া কমে যায় এবং খাওয়া, ঘুমসহ জীবনের নানা উপাদান নতুন মানুষের সঙ্গে তাল মিলিয়ে করতে হয়। এ ক্ষেত্রে উভয়কেই কিছুটা ছাড় দিতে হবে। খরচের হাত কিছুটা সীমিত করতে হয়। তবে মনে রাখা দরকার, হঠাৎ করে লাইফস্টাইল পরিবর্তন করা কঠিন। এ জন্য তাকে কিছুটা সময় দেওয়া উচিত এবং উন্নতি হলে উৎসাহিত করা উচিত।

বিয়ের পর ভালো সম্পর্ক রাখতে করণীয়:
♦ মনে রাখুন, বিয়ে হলেই অবধারিতভাবে ভালোবাসা থাকবে তা নয়। ভালোবাসা তৈরি ও রক্ষার জন্য সব সময় স্বামী ও স্ত্রী দুজনকেই ভূমিকা রাখতে হয়।
♦ নতুন জীবনের সঙ্গে আপনার লাইফস্টাইলটা অ্যাডজাস্ট করে নিন।  যেকোনো সম্পর্কই ছাড় প্রত্যাশা করে।
♦ স্বামী-স্ত্রী দুজনে মিলে আনন্দদায়ক কিছু করুন; যেমন—দূরে বেড়াতে যাওয়া, একসঙ্গে হাঁটা, মার্কেটে যাওয়া। আপনার কোনটাতে ভালো লাগবে তা আপনার সঙ্গীকে বলুন এবং তারটিকেও গুরুত্ব দিন।
♦ সঙ্গীর ভালো কাজের সত্যিকারের প্রশংসা করুন।
♦ মাঝে মাঝে উপহার দিন, সারপ্রাইজ দিন এবং সৃজনশীল কিছু করুন, যাতে আপনার স্বামী বা স্ত্রীর প্রতি যত্ন ও ভালোবাসা প্রকাশিত হয়।
♦ মনের মধ্যে কষ্ট বা ভালো লাগা তৈরি হলে তা ইতিবাচকভাবে প্রকাশ করুন এবং সঙ্গী প্রকাশ করলে তার স্বীকৃতি দিন। রাগ সঠিকভাবে প্রকাশ করুন। স্বামী-স্ত্রী একে অপরকে পছন্দনীয় কোনো নামে ডাকুন।
♦ পরিবারে কোনো সমস্যা তৈরি হলে খোলামেলা আলোচনা করে সমাধান করুন। পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো দুজনে মিলে আলোচনা করে নিন।
♦ উভয় পরিবারকে শ্রদ্ধা করুন এবং পরস্পরকে খোঁচা মেরে কথা বলা এড়িয়ে চলুন।
♦ নিশ্চিত প্রমাণ ছাড়া একে অপরকে সন্দেহ করা এড়িয়ে চলুন। অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতাগুলো বারবার মনে করিয়ে দেওয়া থেকে বিরত থাকুন। পরস্পরের সঙ্গে অঙ্গীকারগুলো রক্ষা করুন এবং তাল মিলিয়ে চলার চেষ্টা করুন।  সুত্রঃ কুমিল্লার কাগজ