ডিভোর্স বিবাহ বিচ্ছেদ Divorce । গল্প

ডিভোর্সের ২৫ বছর পর নিজের প্রাক্তন স্বামীকে নিজের বৃদ্ধাশ্রমে দেখে চমকে গেলাম ।

কিছু বুঝতে পারছিনা। এতোবছর পর মানুষটাকে এভাবে দেখতে হবে তা একদম অকল্পনীয় ছিলো।লোকটা একপাশে গুটিসুটি মেরে বসে আছে। দেখতে বড্ড অসহায় লাগছে।

নিজের মধ্যে সংকোচ করছে তার সামনে যাবো কি যাবো না।অনেকটা জড়তা নিয়ে শেষ পর্যন্ত তার সামনে গিয়ে দাড়ালাম।সামনে দাঁড়ানোর পরও লোকটার কোনো ভাবের পরিবর্তন হলো না, বুঝতে অসুবিধা হলোনা, যে সামনে থাকা মানুষটা চোখে দেখতে পায় না।

২৭ বছর আগে পারিবারিকভাবে আমার সাথে বিয়ে হয়েছিলো সত্যজিৎ এর। বেশ ভালোই চলছিলো আমাদের সংসার।যৌথ হওয়াতে পুরো পরিবার একসাথে থাকতাম।শান্ত স্বভাবের হওয়াতে সবার সাথে আমার সম্পর্ক খুব ভালোই ছিলো।

আমাকে সবাই ভালোবাসতো। বিয়ের প্রায় দুই বছর অতিক্রম হওয়ার পরও যখন আমাদের সন্তান হচ্ছিল না তখন আমার শ্বশুর বাড়ির লোকজন আমাকে বিভিন্ন চাপ দিতে লাগলো।অবশেষে রিপোর্ট থেকে জানতে পারি, আমি কখনো মা হতে পারবেনা। এরপর শুরু হয় শ্বশুড় বাড়ির বিভিন্ন মানসিক যন্ত্রণা।

তবুও নিশ্চুপ ছিলাম কারণ আমার পাশে আমার ভালোবাসার মানুষ সত্যজিৎ ছিলো।কিন্তু সুখ নামক বস্তু হয়তো সবসময় সয় না।আমার ক্ষেত্রেও তার বিপরীত কিছু হলো না।পরিবারের চাপে সতজিৎ ও আমার থেকে দূরত্ব নিয়ে নিলো।তবুও নিজেকে মানাতাম যে মানুষটা মনের কষ্টে হয়তো এমন করছে।শ্বশুর বাড়িতে থাকাটা যখন অনেকটা যন্ত্রণাদায়ক হয়ে গেলো তখন ঠিক করলাম কিছুদিন বাপের বাড়িতে গিয়ে উঠবো এতে হয়তো পরিবেশ কিছুটা শান্ত হবে।

ডিভোর্স বাংলাদেশ

যেদিন রাতে সত্যজিৎ কে বাপের বাড়ির কথা জানালাম সেদিন রাতে তার কোনো উত্তর পেলামনা।কিন্তু আগেরকার সময়ে বাপের বাড়ি যাওয়ার কথা বল্লে তার মুখটা কালো হয়ে যেতো,এবারে তার মধ্যে তেমন পরিবর্তন হলোনা।বাপেরবড়ি যাওয়ার প্রায় তিনদিন বাদে একটা কুরিয়ার এলো যাতে লেখা আছে সত্যজিৎ এর বিয়ের কথা আর আমাদের ডিভোর্সের পেপার।

চিঠি আর ডিভোর্স পেপারটা হাতে নিয়েই আমার পুরো মাথা ফাঁকা হয়ে গেলো ।বুঝতে বাকি রইলো না পুরে বিষয়টা বহুদিন আগে থেকে পরিকল্পিত। শুধু আমার বের হওয়ার অপেক্ষায় ছিলো।

যার জন্য এতো কষ্ট আর অপমান সইয়ে ছিলাম সেই যখন পাশকেটে চলে গেলো তখন নিজেকে পুরো একা মনে হলো।ভাবলাম ঐ বাড়ি গিয়ে এ বিষয়ে প্রশ্ন করবো,প্রতিবাদ করবো কিন্তু মনে হলো যার জন্য ও বাড়িতে যাবো সেই তো আমাকে চায় না তাই গিয়ে লাভ কি!!!

ডিভোর্স পেপারে সাইন করে পাঠিয়ে দিলাম।ডিভোর্স পেপার পাঠানোর পর তার সাথে আর কখনো দেখা বা যোগাযোগ হয়নি কারণ আমি নিজেই সবটা বন্ধ করে দিয়েছিলাম।

ক্ষণে ক্ষণে মনে হতো আমার মতো নিঃসন্তান, স্বামী ত্যাগী মানুষের পৃথিবীতে না থাকা শ্রেয় কিন্তু একটা সময় বুঝতে পারলাম নিজের জন্য না হলেও অন্যের জন্য বাঁচতে হবে।নিজের মতো ভুক্তভোগী নারীদের জন্য বাঁচতে হবে।বাঁচতে হবে ওসব শিশুদের জন্য যারা পরিচয়হীন হয়ে বেঁচে আছে এ পৃথিবীতে। পেছনে ফেলে আসা মানুষগুলোর প্রতি কোনো অভিযোগ রইলোনা। ।

মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলাম,
সমাজের তাদের জন্য কাজ করবো যারা নিজেদের ত্রুটির জন্য পরিবার পরিজনের কাছে আঘাতপ্রাপ্ত।অতীতকে ভুলে, কঠোর পরিশ্রমে একদিন নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করলাম।স্থাপিত করলাম এতিমখানা, বৃদ্ধাশ্রম, বিধবা নারীদের জন্য বিভিন্ন কাজের ব্যবস্থা করেলাম।। আমার মতো যে সকল নারী এ সমাজে অবহেলিত, মানসিক আঘাতে জর্জরিত তাদের জন্য কিছু করতে পারাটাকে নিজের জন্য অনেক সৌভাগ্যের মনে হলো। অসুস্থ আর অস্বাভাবিক লাগছে সত্যজিৎ কে।

আমি নাহয় তার আপন ছিলাম না তাই আমাকে ছাড়তে তার হৃদয় কাঁপেনি তাহলে যারা তার আপন ছিলো তারা কেনো তাকে এখানে রেখে গেলো?? একজন সার্ভেন্টকে জিজ্ঞেস করলাম, ওনাকে এখানে কে এনেছে?

উত্তরে সে জানায়, সন্তানরা সবাই বিদেশ থাকে কেউ দায়িত্ব নিতে চায় না তাই আশ্রমে রেখে গিয়েছে।দীর্ঘশ্বাস ফেল্লাম আর মনে মনে চিন্তা করলাম, একসময় নিঃসন্তান হওয়ায় সত্যজিৎ আমাকে ছেড়েছিলো আর আজ সে সন্তানরাই তাকে বৃদ্ধাশ্রমে ছেড়ে গেলো।এটাই হয়তো প্রকৃতির খেলা!

এই সম্পর্ক আমাদের জন্য ভালো হবে না

সম্পর্কটা দীর্ঘদিনের। বন্ধু, পরিবার সবাই জানে আপনাদের প্রেমের কথা। ধীরে ধীরে টের পাচ্ছেন সম্পর্কটার ছন্দ আগের মতো নেই। কোথায় যেন সুর কেটে গেছে। আলোচনার মাধ্যমেই হয়তো সিদ্ধান্ত নিলেন এই সম্পর্ক থেকে বের হয়ে আসার…

প্রেমে পড়তে নিষেধ নেই। ভালোবাসা কোনো কিছু মানে না। মানমর্যাদা, সামাজিকতার বিধিনিষেধ পেরিয়ে প্রেমের জয়জয়কার। জয়ধ্বনি তুলতে তুলতে হঠাৎ যদি প্রেমের ফোলানো বেলুনটি আলপিনের খোঁচায় চুপসে যায়, তখন কী হবে! প্রেমের এত সুর আর এত গান যদি ভালো না লাগে তখন কী করা? ভালো লাগা মানে হচ্ছে, রাস্তা থেকে পছন্দ হলে সেই ফুলটি ছিঁড়ে নেওয়া! শুকিয়ে গেলে বা গন্ধ চলে গেলে তা ছুড়ে ফেলা! আর ভালোবাসা হচ্ছে ফুলগাছটির পরিচর্যা করা। প্রেম থাকবে সারা জীবন। তাই এর সঠিক পরিচর্যা করা প্রয়োজন জীবনভর। একে টিকিয়ে রাখতে চাইলে চাই উভয় পক্ষের সমঝোতা। যত ঝড়ঝাপটা আসুক না কেন, কেউ তাতে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারবে না। অস্থিরতা, লোভ, লাভক্ষতির হিসাবনিকাশ করলে প্রেম থাকে না।

অনার কিলিং প্রথা আমাদের দেশে চালু নয়। কিন্তু সে রকম পারিবারিক, সামাজিক টানাপোড়েন কিন্তু অস্বীকার করা যায় না। ঝাঁজ ও ঝকমারিও বেশ রয়েছে।

একজন ১৮-১৯ বছর বয়সী মেয়ে এল। সঙ্গে তার মা। মেয়েটি রাগে মরে যেতে চাইছে। কারণ, ওর সহপাঠীর সঙ্গে এক বছর ধরে সম্পর্ক চলছিল। এটা জানার পর থেকে ছেলেটির মা ওকে ফোনে বিভিন্নভাবে তাঁর ছেলে থেকে দূরে থাকতে বলছিলেন। মেয়েটি যত দূর পারে এড়িয়ে যাচ্ছিল। একপর্যায়ে মেয়েটি ভদ্রমহিলাকে জানায়, তার মাদকাসক্ত ছেলেটিই পিছু ছাড়ছে না। তখন ছেলেটির মা তাকে যা নয় তা বলে। টিনএজ মেয়েটি গালাগাল ও নোংরা কথার উত্তর দিতে পারেনি। এখন সে অপমানের জ্বালা সইতে পারছে না।

আগে ভাবলে পরে পস্তাতে হবে না
* প্রেমে যে পড়েছেন তার গন্তব্য কী? ‘টাইম পাস’ না সারা জীবনের জন্য গাঁটছড়া বাঁধার ইচ্ছা।
* যে সময় দুজন একসঙ্গে কাটালেন, এই সময়ে দুজনার মতের মিল-অমিল কতখানি মেপে নিন।
* একজনের পছন্দ-অপছন্দ অন্যজনের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার প্রবণতা কতখানি। বুঝে নিন।
* প্রেমে পড়লেই তো চলে না। এর পেছনে খরচও আছে। খরচ চালানো বড় একটা ব্যাপার বটে। মেয়েটি ভাবে, ছেলেটি সব সময় কিছু না কিছু খাওয়াবে, যাতায়াতের খরচ বহন করবে। কিন্তু ছেলেটি যদি ছাত্র হয়, তবে তাকে মা-বাবার পকেট কেটেই চলতে হয়।

* আবার এমনও দেখা গেছে, মেয়েটি ছেলেটির টিউশন ফি থেকে শুরু করে বাদাম খাওয়ার খরচ পর্যন্ত দিচ্ছে। আর জন্মদিন, ভালোবাসা দিবস, বন্ধু দিবস, প্রথম দেখার দিন—কত কিছুই না তালিকায় আছে। প্রেমে শত ঝকমারি। খরচের ক্ষেত্রে কার হাতখোলা, কে কৃপণ, কে প্রতারণার আশ্রয় নিচ্ছে; কে কতখানি বন্ধুবৎসল বুঝতে হবে।

* সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরস্পরের পরিবারের সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা থাকা প্রয়োজন।
* পেশাজীবন নিয়ে কে কী ভাবছেন, তা দুজনের কাছে পরিষ্কার থাকা উচিত।
* প্রেমের মধুর দিনগুলোয় সজাগ থাকাই ভালো। গড্ডলিকায় ভেসে যাওয়া চলবে না।
* আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করে বাস্তবতাকে মেনে নিতে মানসিক প্রস্তুতি যেন থাকে।
* ভুলেও ফাঁদে পড়া চলবে না। সুখের মুহূর্তগুলো ভাগাভাগি করুন। কিন্তু একান্ত মুহূর্তগুলো দাম্পত্য জীবনের জন্য রাখাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।

* সেলফি নিষেধ নয়। সুন্দর প্রেমের মুহূর্ত স্মৃতিছবির ফ্রেমে থাকুক—সেটা সবার কাম্য। কিন্তু সেই ফ্রেমে আপত্তিকর যেকোনো সম্পর্ক একদম এড়িয়ে চলা উচিত।
* ক্ষণিকের আবেগের জোয়ারে ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের নানা ছবি সৃষ্টি হয়ে যায়। কিন্তু ব্ল্যাকমেলিংয়ের শিকার হতে পারেন—এমন আশঙ্কা মনে রাখতেই হবে।

* ভিডিও বা ফটো ব্ল্যাকমেলিং এখন মহামারি আকার ধারণ করেছে। সাবধানতা কাম্য। কোনোভাবেই নিরাপদ ও সহজ স্বাভাবিক প্রেম-বন্ধুতার বেশি চাওয়া পাওয়ায় জড়ানো ঠিক নয়।
* ডেটিংয়ের নামে অচেনা কোনো জায়গা, হোটেল, বন্ধুর বাসা নিরাপদ নয়।
* জীবন থেকে পলায়ন প্রেম নয়; প্রেমে পড়ে দূরে কোথাও কোনো হারিয়ে যাওয়া বা পালিয়ে যাওয়া ঠিক নয়।

* প্রেমে পড়াকে দুর্ঘটনা ভাবলে চলবে না। ভুল প্রেম থেকে ফিরে আসার সাবধানতা থাকতে হবে। আপসে মুক্তির বা বিচ্ছেদের পথ যেন খোলা থাকে।
* প্রেমের আবেগে পরিবারকে ভুললে চলবে না; বরং বিষয়টি নিয়ে সামাজিক, পারিবারিক মোড়কে সমাধানের উদ্যোগ থাকলে সেটা রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করবে।
* সারা জীবনের জন্য দুর্গতি ও কান্না কি না—প্রেমের পর্বে মনে রাখা চাই।
* প্রেম ছেলেখেলা বা টাইম পাস নয়। প্রেম হলো একটি সম্ভাবনাময় সুখের সংসারের ভিত্তি।

কীভাবে সরে আসবেন
মনোরোগবিদেরা এমন সমস্যার কাউন্সেলিংয়ে যে বিষয়ে গুরুত্ব দেন, তা হলো হুট করে রাগারাগির বশে; মাথা গরম করে সম্পর্ক ভাঙতে নেই। সেটা প্রচুর পার্শ্ব সমস্যার সৃষ্টি করে।
* দুয়ে দুয়ে চার না হলে মুশকিল। সময়ের এক ফোঁড় অসময়ের দশ ফোঁড়। অযথা ঝগড়া করে লোক হাসিয়ে সময় নষ্ট করে লাভ নেই।

* সম্পর্কের ক্ষেত্রে যে সমস্যাগুলো অনুভব করছেন, তা মনের মধ্যে পুষে রেখে বা চাপা দিয়ে কোনো লাভ নেই। এতে দুজনার সুসম্পর্কের মুহূর্তগুলো হারিয়ে যাবে। তিক্ততার সম্পর্ক বাসা বাঁধবে। সময় থাকতে নিজেদের নাখোশ মনোভাব নিজেদের মধ্যে আলোচনা করুন।
* দোষারোপের ভঙ্গিতে নয়। শান্ত ভঙ্গিতে আলাপচারিতাই কাম্য। কেন সরে আসা—তার ব্যাখ্যা ও যুক্তি মাথায় সাজিয়ে সমঝোতামূলক বিচ্ছেদ উত্তম।
* বলতে না পারলে কষ্ট হলে ধীরে ধীরে সম্পর্কের মাধ্যম যেমন ফোন, ফেসবুক থেকে নিজেদের সরিয়ে নিন।

* সরে আসার পর্বে বিশ্বস্ত বন্ধুবান্ধব; সহানুভূতিশীল নিকটাত্মীয়দের পরামর্শ নেওয়া ভালো। তাদের এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত করা যেতে পারে। সেটা নানা অনাকাঙ্ক্ষিত উত্তেজনা ও বিপদকে প্রশমন করবে।
* কার কী ভুল, তা নিয়ে উত্তেজনা, উগ্রতা ও রাগ পরিহার করে আত্মোপলব্ধি ও আত্মমূল্যায়নের সঠিকতা নির্ণয় বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

* কোনো ধরনের অপরাধমূলক প্রতারণা ও ব্ল্যাকমেলিংয়ের আশঙ্কা থাকলে সেটা নিয়ে অতি গোপনীয়তার চেয়ে আইনি সুরক্ষা চিন্তা করা যেতে পারে।
আগে-পিছে দেখে চল, কাঁটা ফুটবে পায়ে; চোরকাঁটা হলে পরে তারে তোলা যায়; কিন্তু প্রেমের কাঁটা দুধারী তলোয়ার—কেবল প্রেমকেই বিষায় না, জীবনকেও বিষিয়ে তুলতে পারে। তাই আগাম সাবধানতাই সর্বাত্মক কাম্য।

তারপরও প্রেম কি বাধ মানে?
আড়ালে-আবডালে প্রেম নিয়ে চলে অভিভাবকদের নানা সমীকরণ। ছেলে-মেয়ে একে অপরকে শর্তহীন পছন্দ করলেও উভয় পক্ষের গুরুজন পরস্পরের বিত্তবৈভবের দিকে নজর রাখেন। ছেলের বাড়ির তরফ থেকে উচ্চশিক্ষিত মেয়ে খুব কাম্য নয়।

নরম-শরম গোবেচারা কি না, সেটা বড় কাঙ্ক্ষিত। গাত্রবর্ণ নিয়েও উৎকণ্ঠার শেষ নেই। মেয়ের বাবা-মায়ের তরফে প্রতিষ্ঠিত ছেলে; একনামে চেনে এমন পরিবারই পছন্দ। যখন এই চাওয়াপাওয়াগুলো গোলমেলে হয়, তখনই সামাজিক, পারিবারিক আপত্তির বাজনা বেশি বাজা শুরু হয়।

এত সমস্যা জানার পরেও প্রেমে পড়তে বা করতে মনে মনে সবাই আগ্রহী। প্রেমের রসায়ন প্রথম যৌবনের ঘূর্ণিঝড়। এর ঝাপটা কমবেশি সব প্রাণকেই করে আলোড়িত ও শিহরিত। দিল্লিকা লাড্ডুর মতো।

স্নাতক (সম্মান) তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। প্রথম বর্ষ থেকেই প্রেম। মেয়েটি অপেক্ষাকৃত ভালো ছাত্রী। প্রেম বলে কথা। দখল দেখভাল কম নয়। ছেলেটি ক্রমেই মেয়ের চলাফেরা, কার সঙ্গে কথা বলবে কি বলবে না তাতে বাধা দেওয়া শুরু করে। ক্যাম্পাসে সবাই মিলে ছেলেমেয়ে একসঙ্গে আড্ডা দিচ্ছে, তা মানতে নারাজ প্রেমিকটি। যখন-তখন রাতে ওর মোবাইল ফোনে মিসড কল বা কল দিয়ে চেক করে, মেয়েটির ফোন ব্যস্ত কি না। ব্যস্ত থাকলে ওর বন্ধুদের সামনে বকাঝকা শুরু করে। মেয়েটির বান্ধবীরা ওকে এই সম্পর্ক থেকে সরে আসতে বলেছিল। তারপরও অন্যায় আচরণগুলো সে মেনে নিয়েছিল। একদিন সবার সামনে ওকে ছেলেটি কথায় কথায় চড় মেরে বসে। পুষে রাখা দীর্ঘদিনের রাগ চাপতে না পেরে মেয়েটিও সজোরে চড় মেরে দেয়। শোধবোধ। পেছনে না তাকিয়ে ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে আসে সে। তারপর লেখাপড়ায় বেশ বিরতি। ছেলেটি ভয়ভীতি দেখায়—ভয়ংকর কোনো কাণ্ড করবে। হেনস্তা, অপমান করবে বন্ধুদের নিয়ে। উড়োচিঠি দেয়। অন্তরঙ্গ কিছু ছবি, ভিডিও ক্লিপস ফাঁস করার ব্ল্যাকমেলিং করতে শুরু করে।

এমন গল্প আমাদের যাপিত জীবনে কমবেশি চারপাশে সব জায়গায় ঘটছে। মহানগর থেকে মফস্বলের ছোট শহরে।

লিখেছেনঃ সুলতানা আলগিন, সহযোগী অধ্যাপক, মনোরোগ বিদ্যা বিভাগ,
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা

সম্পর্ক ভেঙে যাওয়া মানে জীবন শেষ নয়

ভালোবাসায় ভরা ছোট্ট একটা ঘরের স্বপ্ন কে না দেখে। কেউ হয়তো তার সঙ্গীর হাতে হাত রেখে সারা জীবন একসাথে চলার স্বপ্ন দেখে।কিন্তু সেই ভালোবাসার মানুষটি কিছুক্ষণের জন্য দূরে গেলে আমাদের পৃথিবীতে নেমে আসে অন্ধকার, সেখানে যদি ভালোবাসার মানুষটি সম্পর্কচ্ছেদ করে চলে যান তাহলে মানসিকভাবে ভেঙে পরাটা খুব স্বাভাবিক।ভালোবাসার মানুষটির সাথে বিচ্ছেদ যেনো জীবনটাকে থমকে দেয়।

কিন্তু ভেঙে পড়ে সারাজীবন তো আর থাকা যায় না।তাই আমাদের নিজেদেরকেই সামলে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে সামনে। নতুন ভাবে উঠে দাঁড়াতে হবে, ভুলে যেতে হবে পুরোনো ফেলে আসা স্মৃতি।এক্ষেত্রে প্রেম ও দাম্পত্য সম্পর্কে ভেঙে গেলে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে যা করবেন-

নিজেকে দোষারোপ করবেন না: একটা সম্পর্ক অনেকগুলো কারণেই ভেঙে যেতে পারে। অনেকদিনের সম্পর্ক অনেক গুরুতর কারণে অথবা অনেক ছোট কারণেও ভেঙে যেতে পারে। হতে পারে সেক্ষেত্রে দুই পক্ষের বোঝাপড়ার সমস্যা ছিল, অথবা যোগাযোগের ঘাটতি ছিল। কিন্তু কখনো ভুলেও নিজেকে সম্পর্ক ভাঙার জন্যে মনে মনে দোষারোপ করবেন না।

নিজেকে সময় দিন: সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পর সাধারণত আমরা যে জিনিসটি করি, তা হলো খুব বেশি অস্থির হয়ে পড়ি, একটি সম্পর্ক ভাঙার হতাশা থেকে বের হতে না হতেই আরেকটা সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ি। একটি ভাঙা সম্পর্ক থেকে কিন্তু আমরা শিখতে পারি পরবর্তীতে আমাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে কী করণীয় বা কী বর্জনীয় হবে। তাই বিচ্ছেদের পর নিজেকে সময় দিন, নিজেকে আরও একটু ভালোবাসতে চেষ্টা করুন।  হুটহাট করে নতুন আরেকটি সম্পর্কে নিজেকে জড়িয়ে অবস্থা আরও জটিল করে তুলবেন না।

নিজের যত্ন নিন:  খেতে ইচ্ছে করবে না, ঘুম হবে না- এগুলো এ সময় খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। কিন্তু এই হতাশা থেকে বের হয়ে আসতে গেলে আপনাকে নিজের প্রতি আরও বেশি যত্নবান হয়ে উঠতে হবে। পরিমিত পুষ্টিকর খাবার খান, তাজা ফলমূল খান। ঘুমাতে চেষ্টা করুন আর অবশ্যই ব্যায়াম করুন। শরীর চনমনে থাকলে মন ভালো হতে সময় লাগবে না।

একা থাকবেন না: এই সময়টাতে আপনি যত বেশি একা থাকবেন, আপনার জন্যে সময়গুলো ততবেশি কষ্টদায়ক হয়ে উঠবে। তাই এই সময়গুলোতে একা না থেকে বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে বের হোন। বন্ধুদেরকে না পেলে পরিবারের মানুষদের সঙ্গে সময় বের করে বেরিয়ে পড়ুন।

ভ্রমণ করুন, নতুন বন্ধু তৈরি করুন:  মনের ভার কমাতে এবং মাথা একদম পরিষ্কার করে ফেলতে ভ্রমণ সবসময়ই অনেক বেশি উপকারী। বন্ধুদের সঙ্গে শুধু কাছে-কূলে নয়, প্ল্যানিং করে নতুন কোনো জায়গায় ভ্রমণ করতে বেড়িয়ে পড়ুন। নতুন পরিবেশ, নতুন স্থান, নতুন মানুষ- আপনার মনের পুরাতন স্মৃতিগুলোকে হালকা করে দিতে সাহায্য করবে অনেকটাই।

নেতিবাচক চিন্তা বাদ দিন: সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পর অনেক সময় বেঁচে থাকাও অর্থহীন মনে হতে থাকে। অনেকে আত্মহত্যার মতো আত্মবিধ্বংসী চিন্তা পর্যন্ত করতে শুরু করি। আপনাকে এই নেতিবাচক চিন্তার পুরোপুরি বিপরীতে যেতে হবে, প্রমাণ করতে হবে আপনি এতোটা দুর্বল, এতোটা ঠুনকো নন।

ইতিবাচক মনোভাব সম্পন্ন মানুষদের সাথে সময় কাটান: একটা সম্পর্ক ভেঙে গেলে একজন মানুষ মানসিকভাবে নিতান্তই ভেঙে পড়েন, এখন এই অবস্থার মধ্যে যদি আশেপাশের মানুষগুলো প্রতিনিয়ত চোখে আঙুল দিয়ে সবটা বার বার সামনে নিয়ে আসে অথবা কটু কথা বলতে থাকে, তাহলে ভাঙা মন আবার জোড়া লাগা সত্যিই অসম্ভব। চারপাশে ইতিবাচক ও সহায়ক মানসিকতা সম্পন্ন মানুষ থাকলে আপনি খুব দ্রুতই আবার নিজের উপর আস্থা ফিরে পাবেন।

অতীত কে অতীতেই থাকতে দিন:  যদি সত্যিই চেয়ে থাকেন অতীতের গ্লানি থেকে বের হয়ে আসবেন, তাহলে বারবার সেই অতীতেই ফিরে যাবেন না। শুধু চেষ্টা করুন অতীতের ভাঙা সম্পর্কটিকে একটি শিক্ষা হিসেবে নিতে, পাথেয় হিসেবে নয়।

দায়িত্ব নিতে শিখুন: যা হওয়ার তা তো হয়েই গিয়েছে, এবার নিজেকে বা ভালোবাসার মানুষটিকে দোষারোপ করে হা-হুতাশে জীবন অতিবাহিত না করে পরিবার, বন্ধু বা কাছের মানুষগুলোর ভালো থাকার জন্য ছোটখাটো দায়িত্ব নিন। যখন দেখবেন সামান্য কিছুতেই আপনি কারো মুখে হাসি ফোটাতে পারছেন তখন আর সব অপ্রাপ্তি এবং কষ্টগুলো ম্লান হতে থাকবে।

যা করতে ভালো লাগে তা-ই করুন: ভাঙা মন নিয়ে কোনো কিছুতে মনোনিবেশ করা অনেক কঠিন। কিন্তু সম্পর্ক ভাঙার হতাশা থেকে বের হয়ে এসে জীবনকে নতুনভাবে উপভোগ করতে চাইলে আপনাকে এসব কিছুর উপর আগ্রহ ফিরিয়ে আনতে হবে। আপনার যা মন চায়, যেভাবে আপনি নিজেকে আবার প্রাণোচ্ছল করে তুলতে সক্ষম বলে মনে হয়; সেটাই করুন। সহজ কথায়, নিজেকে ব্যস্ত রাখুন, দেখবেন হতাশা কাটতে শুরু করছে।

একটি সম্পর্ক ভেঙে যাওয়া মানে জীবনের শেষ নয়, বরং নতুন করে আবার সবকিছু শুরু হওয়া। কিছুটা সময় নিয়ে নিজেকে আবার প্রস্তুত করুন, সমস্ত খারাপ চিন্তা-ভাবনার বিপরীতে গিয়ে নিজেকে প্রমাণ করুন। আপনার মধ্যে কী কী গুণ রয়েছে সেগুলোকে কাজে লাগান। কমপক্ষে এই সময় নিজের মনের কথাগুলো শুনুন, যদি মনে হয় ভেঙে যাওয়া সম্পর্কে আপনারও কিছু ভুল ছিল, তাহলে সেটা শুধরে নিতে চেষ্টা করুন। তবে ভুলেও সারাজীবনের জন্য নিজেকে অপরাধী করে রাখবেন না নিজের কাছে। এই মানুষই ভুল করে, আবার মানুষই নিজেকে শুধরে নেয়।  সংকলিত,সূত্র :নতুন সময়, রোয়ার মিডিয়া, দৈনিক আমাদের সময়

বাংলাদেশে ৪৩% প্রেমের বিয়েই সুখের হয় না গড়ায় বিচ্ছেদ পর্যন্ত

বিবাহবিডি ডট কম, সম্প্রতি “বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিবাহ বিচ্ছেদের কারণ নির্নয়” শিরোনামে প্রশ্ন ভিত্তিক একটি জরিপ পরিচালনা করে।  এতে অংশ গ্রহন করেন ৪১২ জন।  যার মধ্যে ছিলেন দাম্পত্য জীবনে বিচ্ছ্যেদ নেয়া ১০৪ জন ব্যাক্তি।   উক্ত জরিপের তথ্য থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, বিচ্ছেদের হার সবচেয়ে বেশী বিভাগীয় ও জেলা শহরে বসবাসকারীদের মাঝে যা যথাক্রমে বিভাগীয় শহরে ৪৯.০৩ % ও জেলা শহরে ৩৫.৫% ।

এবং উচ্চ শিক্ষিত নাগরিকদের মাঝেই বিচ্ছেদের প্রবনতা উল্লেখযোগ্য হারে বেশী – যা উচ্চতর ডিগ্রী ৪৯.৪২%, স্নাতক / সম্মান / সমসমান ৩৬.৫৮% , উচ্চ মাধ্যমিক বা সম সমান ৯.২% ।  জরিপে অংশগ্রহনকারীদের মধ্যে ৫৮.৬৫% চাকুরীজীবি ও ২০.১৯% ব্যবসায়ী তাছাড়াও  ৪.৮১% প্রবাসে কর্মরত রয়েছেন।  যাদের অর্থনৈতিক অবস্থা মধ্যবিত্ত ৭২.১২ %,  নিম্ন মধ্যবিত্ত ১৭.৩% , উচ্চ বিত্ত ৪.৮% ও নিম্ন বিত্ত ৭.৭৬% ।

জরিপে অংশগ্রহনকারী (৪১.৪% যৌথ পরিবার, ৫৯% একক পরিবার থেকে আসা ) ডিভোর্স ব্যাক্তিদের প্রশ্ন করা হয় কিভাবে তাদের সংগীর সাথে পরিচয়ের সুত্রপাত (বিয়ের সম্মন্ধ) হয়েছিলো।  এর মধ্যে,  ৩০.৭৬% এর পরিচয় হয় নিকট আত্মীয়দের মাধ্যমে, ২৫ % এর পরিচয় হয় ট্রেডিশনাল ঘটকের সাহায্যে, ও ৪৩.৩% প্রেম ঘটিত পরিচয় ও অনলাইন ম্যাট্রিমনি বা স্যোশাল মিডিয়ায় পরিচয় হয় মাত্র ১.৯২% ।

অংশগ্রহন কারী ৪৬% মনে করেন সঙ্গীর সাথে বয়সের পার্থ্যক্য ৫ বছরের কম হওয়া ভাল আর ৩১% মনে করেন সঙ্গীর সাথে বয়সের পার্থ্যক্য ১০ বছরের বেশী হওয়া উচিত নয়।  তবে বেশীর ভাগ অংশগ্রহন কারীই মনে করেন, অতিরিক্ত বয়সের পার্থ্যক্য বিবাহ বিচ্ছেদের অন্যতম কারন নয়।

জরীপে অংশগ্রহনকারীদের প্রশ্ন করা হয় – কোন বিষয় গুলো আপনার সাথে ঘটলে আপনি একেবারেই সহ্য করবেন না, প্রয়োজনে বিচ্ছেদ চাইতে পারেন এর প্রতি উত্তরে উঠে আসে প্রধান ৮ টি বিষয়

১) পরকীয়া ২) ক্রমাগত ভুল বুঝাবুঝি ও দুরত্ব বৃদ্ধি ৩) সংসারে কাজ কর্মে তীব্র অনিহা, সঙ্গীকে যথাযথ মূল্যায়ন না করা ৪) আসক্তি (মাদক / নারী / পরপুরুষ / জুয়া) ৫) মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন ৬) সঙ্গীর প্রতি অতিরিক্ত সন্দেহ প্রবনতা ৭) স্বামী বা স্ত্রীর পরিবার হতে দুর্ব্যবহার বা অবমূল্যায়ন ৮) সঙ্গীর একঘেয়ে স্বভাব বা একক কর্তৃত্ব পরায়নতা।   তাছাড়াও সন্তান ধারনে অক্ষমতা বা সন্তান ধারনে সঙ্গীর দ্বিমত পোষণ, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম / ভারতীয় টিভি সিরিয়াল বা বিদেশী সংস্কৃতির অতিরিক্ত প্রভাব বা আসক্তির মত বিয়য়গুলোও জরিপে উঠে আসে।

জরীপে অংশগ্রহনকারীদের কাছে সর্বশেষ জানতে চাওয়া হয় কোন ৫টি বিষয় বিচ্ছেদ এড়াতে পারে বলে আপনি মনে করেন? এর মধ্যে ৫ টি বিষয় ক্রমান্বয়ে যে বিষয় গুলো ঊঠে আসে –

১) একে অপরকে সম্মান করা ২) সঙ্গীর সাথে বিশ্বস্ত থাকা ৩) আপস করার মানসিকতা ৪) সঙ্গীর সাথে মিথ্যাচার না করা ৫) সঙ্গীকে কখনো অবজ্ঞা বা অবহেলা না করা।


বিবাহবিডি ডট কম এর জরিপ তথ্যঃ

বিবরন সকল অংশগ্রহনকারী  (৪১২ জন) ডিভোর্স গ্রহনকারী (১০৪ জন)
অংশগ্রহন কারী পুরুষ – ৭৬.৫%
নারী-  ২৩.৫%
পুরুষ – ৭৮.৪৫%
নারী-  ২১.৫৫%
অংশগ্রহনকারীদের বয়স ১৮-২৪ বছর = ৬.২%
২৫-৩৫ বছর = ৬৪.৯%
৩৬-৫৫ / এর অধিক =  ২৮.৯%
১৮-২৪ বছর = ৩৮.৪৬%
২৫-৩৫ বছর = ৫২.৮৮%
৩৬-৫৫ / এর অধিক =  ৮.৬৫%
অংশগ্রহনকারীদের অবস্থান ৬১.৫ % বিভাগীয় শহরে
২৩.২% জেলা শহরে
১১.৮% উপজেলা শহরে
৩.৫% ইউনিয়ন / গ্রামে
৪৯.০৩ % বিভাগীয় শহরে
৩৫.৫% জেলা শহরে
১৩.৪৬% উপজেলা শহরে
১.৯২% ইউনিয়ন / গ্রামে
অংশগ্রহনকারীদের
শিক্ষাগত যোগ্যতা
৪৪.৩% উচ্চতর ডিগ্রী
৪১.৯% স্নাতক / সম্মান / সমসমান
৯.৯% উচ্চ মাধ্যমিক সম সমান
৩.৯% উচ্চ মাধ্যমিক এর নীচে
৪৯.৪২% উচ্চতর ডিগ্রী
৩৬.৫৮% স্নাতক / সম্মান / সমসমান
৯.২% উচ্চ মাধ্যমিক সম সমান
৪.৮% উচ্চ মাধ্যমিক এর নীচে
অংশগ্রহনকারীদের
বৈবাহিক অবস্থা
৫০.৪ % বিবাহিত
২২% অবিবাহিত
২৫.৭% ডিভোর্স
১.৯% বিধবা / বিপত্নীক
১০০% ডিভোর্স
অংশগ্রহনকারীদের
পেশা
৫৯.২% চাকুরীজীবি
১৬.৬% ব্যবসায়ী
১৩.১% বেকার ( নারী)
৮.৬% অধ্যয়নরত
২.৬% প্রবাসে কর্মরত
৫৮.৬৫% চাকুরীজীবি
২০.১৯% ব্যবসায়ী
১৫.৩৮% বেকার
০.৯৬% অধ্যয়নরত
৪.৮১% প্রবাসে কর্মরত
অংশগ্রহনকারীদের
পরিবারের ধরন
৬৫.৪% একক পরিবার
৩৪.৬% যৌথ পরিবার
৪১.৪% যৌথ পরিবার
৫৯% একক পরিবার
অংশগ্রহনকারীদের
আর্থিক অবস্থা
৭৩.৭ % মধ্য বিত্ত
২০.৬% নিম্ন মধ্যবিত্ত
৪.৬% উচ্চ বিত্ত
১.১% নিম্ন বিত্ত
৭২.১২ % মধ্য বিত্ত
১৭.৩% নিম্ন মধ্যবিত্ত
৪.৮% উচ্চ বিত্ত
৭.৭৬% নিম্ন বিত্ত
আপনি কি মনে করেন আর্থিক অসচ্ছলতা  বিবাহবিচ্ছেদের একটি কারন ৬০.৮% এ প্রশ্নে একমত নয়
৩৯.২% মনে করেন আর্থিক অসচ্ছলতা বিবাহবিচ্ছেদের একটি কারন হতে পারে
৫৮.৮% এ প্রশ্নে একমত নয়
৪১.২% মনে করেন আর্থিক অসচ্ছলতা বিবাহবিচ্ছেদের একটি কারন হতে পারে
জীবন সংগীর সাথে পরিচয়ের সুত্রপাত নিকট আত্মীয়দের মাধ্যমে ২৭.১%
ঘটকের সাহায্যে ১৩.৭ %
প্রেম ঘটিত ৩৭.৪%
অনলাইনে পরিচয়ঃ ৩.৪%
অবিবাহিত / প্রযোজ্য নয় ১৮.৪%
নিকট আত্মীয়দের মাধ্যমে ৩০.৭৬%
ঘটকের সাহায্যে ২৫ %
প্রেম ঘটিত ৪৩.৩%
অনলাইনে পরিচয়ঃ ১.৯২%
জরীপে অংশগ্রহনকারীদের প্রশ্ন করা হয় – কোন বিষয় গুলো আপনার সাথে ঘটলে আপনি একেবারেই সহ্য করবেন না , প্রয়োজনে বিচ্ছেদ চাইতে পারেন। এর উত্তরে যে ৮ টি বিষয়  উঠে আসে (ক্রমানুসারে)
১) পরকীয়া
২) ক্রমাগত ভুল বুঝাবুঝি ও দুরত্ব বৃদ্ধি
৩) সংসারে কাজ কর্মে তীব্র অনিহা, সঙ্গীকে যথাযথ মূল্যায়ন না করা
৪) আসক্তি (মাদক / নারী / পরপুরুষ / জুয়া)
৫) মানসিক ও শারিরিক নির্যাতন
৬) সঙ্গীর প্রতি অতিরিক্ত সন্দেহ
৭) স্বামী বা স্ত্রীর পরিবার হতে দূর্ব্যবহার / অবমূল্যায়ন
৮)সঙ্গীর একঘেয়ে স্বভাব বা একক কর্তৃত্ব পরায়নতা
এর উত্তরে যে ৮ টি বিষয় উঠে আসে (ক্রমানুসারে)
১) পরকীয়া
২) ক্রমাগত ভুল বুঝাবুঝি ও দুরত্ব বৃদ্ধি
৩) সংসারে কাজ কর্মে তীব্র অনিহা, সঙ্গীকে যথাযথ মূল্যায়ন না করা
৪) আসক্তি (মাদক / নারী / পরপুরুষ / জুয়া)
৫) মানসিক ও শারিরিক নির্যাতন
৬) সঙ্গীর প্রতি অতিরিক্ত সন্দেহ
৭) স্বামী বা স্ত্রীর পরিবার হতে দূর্ব্যবহার / অবমূল্যায়ন
৮)সঙ্গীর একঘেয়ে স্বভাব বা একক কর্তৃত্ব পরায়নতা
সঙ্গীর সাথে অতিরিক্ত বয়সের পার্থক্য বিচ্ছেদের কোন কারন হতে পারে ১৫.৩%  হ্যাঁ, মনে করি
৫৬.৯% না মনে করিনা
২৭.৮% অতিরিক্ত বয়সের পার্থক্য বিচ্ছ্যেদের কারন হতেও পারে
২৪.৩%  হ্যাঁ, মনে করি
৫৩.৯% না মনে করিনা
১৭.৮% অতিরিক্ত বয়সের পার্থক্য বিচ্ছ্যেদের কারন হতেও পারে
আপনার মতে সঙ্গীর সাথে বয়সের পার্থক্য কেমন হওয়া ভালো ২ বছরের বেশী নয় – ৭.৬%
৫ বছরের কম – ৫২.১%
১০ বছরের বেশী নয় – ৩৫.৫%
সমবয়সী হলে ভাল মনে করি – ৪.৬%
২ বছরের বেশী নয় – ৮.৬৫%
৫ বছরের কম – ৪৬%
১০ বছরের বেশী নয় – ৩১%
সমবয়সী হলে ভাল মনে করি-  ১৪%
আপনি কি মনে করেন – সন্তান ধারনে সঙ্গীর দ্বিমত পোষণ কি দাম্পত্য কলহের একটি কারন, যা বিচ্ছেদ পর্যন্ত পৌছাতে পারে? হ্যাঁ, মনে করি ৫১.৭%
না, মনে করি না ৪৮.৩%
হ্যাঁ, মনে করি ৫৮.২%
না, মনে করি না ৪১.৮%
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ভারতীয় টিভি সিরিয়াল বা বিদেশী সংস্কৃতির অতিরিক্ত প্রভাব বা আসক্তি কি দাম্পত্য অশান্তি – ক্ষেত্র বিশেষে বিচ্ছেদের কারন হতে পারে? হ্যাঁ, হতে পারে ৭৪.২%
না, মনে করি না ২৫.৮%
হ্যাঁ, হতে পারে ৬২.৯%
না, মনে করি না ৩৭.১%
কোন ৫টি বিষয় বিচ্ছেদ এড়াতে পারে বলে আপনি আপনি মনে করেন? উত্তর গুলো ক্রমানুসারেঃ
একে অপরকে সম্মান করা
সঙ্গীর সাথে বিশ্বস্ত থাকা
আপস করার মানসিকতা
সঙ্গীর সাথে মিথ্যাচার না করা
সঙ্গীকে কখনো অবজ্ঞা না করা
উত্তর গুলো ক্রমানুসারেঃ
একে অপরকে সম্মান করা
সঙ্গীর সাথে বিশ্বস্ত থাকা
আপস করার মানসিকতা
সঙ্গীর সাথে মিথ্যাচার না করা
সঙ্গীকে কখনো অবজ্ঞা না করা

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিবাহ বিচ্ছেদের কারণ গুলো কি? – জরিপ

বিবাহিত জীবনে অনাকাংখিত বিচ্ছেদ হতেই পারে, অনেক ক্ষেত্রে বিচ্ছেদ ডেকে আনে ভয়াবহ মানসিক বিপর্যয় আবার অনেক ক্ষেত্রে বিচ্ছেদেই মিলে মুক্তি। বিগত কয়েক বছর ধরে আমাদের দেশে বিবাহ বিচ্ছেদের পরিমান অনেকাংশেই বেড়েছে যা সাম্প্রতিক বিভিন্ন গবেষনায় উঠে এসেছে।

বিবাহবিডি ডট কম এ ২০১৪ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৬ হাজার ডিভোর্স পাত্র/পাত্রী রেজিষ্ট্রেশন করেছেন আমরা শুধু মাত্র ডিভোর্স পাত্র/পাত্রীদের কাছে চলমান এই জরিপের মাধ্যমে জানতে চাইবো সম্ভ্যাব্য কি কি কারনে তারা ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সম্মানিত পাঠক, এই ইউজার জরিপের মাধ্যমে আপনারাও আপনাদের সুচিন্তিত ব্যাক্তিগত মতামত দিতে পারেন যা সামগ্রিক ভাবে একটি সামাজিক সমস্যার সমাধানে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারে।


জরিপে অংশ গ্রহন করতে ক্লিক করুন


সাম্প্রতিক কিছু গবেষনায় জানা গেছে অধিকাংশ ডিভোর্সের ঘটনা ঘটছে মেয়েদের পক্ষ থেকে, যা শতকরা ৬৬ ভাগ। ডিভোর্সের ঘটনা বেশি ঘটছে উচ্চবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারে।  ঢাকা সিটি করপোরেশনের হিসাব অনুযায়ী ২০১৪ সালে রাজধানীতে ডিভোর্সের ঘটনা ঘটেছে ৮২১৪ দম্পতির। এর আগে ২০১২ সালে ৭৬৭২ দম্পতির মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটেছে।  ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসেই ৬১০ দম্পতির বিচ্ছেদ হয়েছে। তার মধ্যে ৪২৬ ডিভোর্সই হয়েছে স্ত্রী কর্তৃক।  ঢাকা সিটি করপোরেশনের উত্তরের গুলশান, বনানী, মহাখালী, বাড্ডা, মগবাজার, রামপুরা নিয়ে অঞ্চল-৩ এই এলাকায় ২০১৫ সালে ৫৯৮ দম্পতির মধ্যে ডিভোর্স হয়েছে।  এর মধ্যে স্বামী ডিভোর্স দেয় ২৩৫ এবং স্ত্রী দেয় ৩৬৩টি। রাজধানী সূত্রাপুর, বংশাল, নবাবপুর, কাপ্তান বাজার, নাজিরাবাজার ও লালবাগের অর্ধেক নিয়ে গঠিত ঢাকা সিটি করপোরেশন দক্ষিণের অঞ্চল-৪ এই এলাকায় ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে আক্টোবর পযর্ন্ত ২৫৮ দম্পতির মধ্যে ডিভোর্স হয়েছে। এর মধ্যে স্ত্রীর পক্ষ থেকে ১৭৩ এবং ৮৫টি ডিভোর্স হয়েছে স্বামীর পক্ষ থেকে।  তার আগের বছর একই এলাকায় ২৯১ দম্পতির মধ্যে ডিভোর্স হয়েছে।  এর মধ্যে ১৮৪টি ডিভোর্স হয়েছে স্ত্রীর পক্ষ থেকে।  (সুত্রঃ দেশীয় পত্রিকার খবর)

আমরা এই জরিপের মাধ্যমে আপনার সুচিন্তিত ব্যাক্তিগত মতামত চাইছি যা সামগ্রিক ভাবে একটি সামাজিক সমস্যার সমাধানে গুরুত্বপূর্ন অবদান রাখতে পারে।  এই জরিপে আপনার সম্পূর্ন গোপনীয়তা বজায় থাকবে।  আমরা আপনার সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছি।

নিবেদক
ইফফাত আরা ইসলাম ও শারমিন সুলতানা
এক্সিকিউটিভ – বিবাহবিডি ডট কম
ফোনঃ +88 09612211555