বিয়ের প্রস্তাব কাকে দিবেন;কিভাবে দিবেন

বিয়ে মানুষের জীবনে নতুন এক অধ্যায়। অনেক নারী ও পুরুষ আছেন বিয়ের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিলেও যাকে ভালো লাগে তাকে প্রস্তাব দিতে সংকোচবোধ করেন। এর প্রধান কারন অযাচিত ভয়; যদি বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখান হয়!

বিয়ের প্রস্তাব দেয়া মূলত তখনই সহজ হবে যখন আপনি বিয়ের প্রস্তাব কাকে দিবেন এ বিষয়টি যাচাই করে নেন। আপনার যেমন জীবনসঙ্গিনীর বিষয়ে কিছু প্রত্যাশা রয়েছে তেমনি বিপরীত ব্যক্তির মনেও রয়েছে নিজস্ব কিছু চাহিদা ও পছন্দ।

যে বিষয়গুলো দেখে ব্যাক্তি কে বিয়ের প্রস্তাব দিবেনঃ

ব্যাক্তির শিক্ষাগত যোগ্যতা আপনার থেকে অনেক কম বা বেশী হবে এমন কারও কথা না ভাবাই ভালো।

যাকে বিয়ে করতে চাচ্ছেন, তার আর আপনার পেশা, সামাজিক অবস্থান, পারিবারিক কালচার, ভবিষ্যতে দুজন পেশাগত বিষয়ের দিকগুলো মানিয়ে নিতে পারবেন কি না। এ বিষয়টি অবশ্যই খেয়ালে রাখবেন।

দুই পরিবারের অবস্থা কতটুকু সামঞ্জস্যক তা দেখা উচিত।

আগে জানার চেষ্টা করুন তার ব্যক্তিত্ব আর আপনার ব্যক্তিত্বে মিল রয়েছে কিনা বা মিলিয়ে নেয়ার মত কিনা।

ব্যাক্তির সাথে আপনার বয়সের ব্যবধান কত।

যাকে বিয়ে করতে চাচ্ছেন সে মানসিক দিক থেকে বিয়ের জন্য প্রস্তুত আছে কি না জেনে নিন।

যাকে পছন্দ করছেন তাকে বিয়ের প্রস্তাব পাঠানোর আগে তার সাথে আলোচনা করে জেনে নিন, অথবা বিশ্বস্ত কাউকে দিয়ে তার মনস্তাত্ত্বিক অবস্থা বুঝার চেষ্টা করুন।

যেভাবে বিয়ের প্রস্তাব দিবেনঃ

সাক্ষাতের জন্য এমন একটি পরিবেশ বাছাই করুন অথবা তৈরি করুন যে পরিবেশে পছন্দের ব্যক্তি মানসিক ভাবে উৎফুল্ল থাকে।

সময় ও দিন নির্ধারণ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যেদিন আপনি ব্যক্তির সাথে দেখা করতে যাবেন সেদিনটি দুজনের ছুটির দিনটি বেঁছে নিন ও সময় বিবেচনা করে দেখা করুন, যেনো কোন তাড়াহুড়ো না থাকে।

আকর্ষণীয় উপহার দিতে পারেন অথবা সম্ভব হলে তার পছন্দ জেনে প্রিয় কিছু উপহার দিন।

তার সাথে এমন ভাবে আচরণ করুন যেন সে যতটুকু সময় আপনার সাথে থাকবে অবশ্যই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবে।

আপনি তাকে পছন্দ করেন, বিয়ের কথা ভাবছেন; এ কথাটি এক লাইনে না বলে তার সাথে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি উপস্থাপন করুন, আপনি তাকে কেন বিয়ে করতে চাচ্ছেন।

বিবাহবিডিতে যাদের প্রোফাইল আছে তারা তাদের পছন্দের বিষয়গুলোকে প্রধান্য দিয়ে মুহুর্তের মধ্যেই জীবনসঙ্গী খুঁজতে পারেন। এবং সরাসরি অথবা বিবাহবিডির এক্সিকিউটিভদের মাধ্যমে প্রোপোজাল পাঠাতে পারেন।

বিবাহবিডিতে আপনি আপনার পছন্দের প্রফেশন, পাত্র-পাত্রীর শিক্ষাগত যোগ্যতা, জেলা, আর্থিক অবস্থা, বৈবাহিক অবস্থা, বর্তমান অবস্থান, বর্ন, গোত্র, ধর্ম সহ ১৮ টি সার্চ ক্যাটাগরীর মাধ্যমে চাহিদা অনুযায়ী কাংখিত সঙ্গীকে সহজেই খুঁজতে সক্ষম হবেন।

তাছাড়া আপনার প্রদত্ত সঙ্গী বাছাইয়ের বিবরন (পার্টনার প্রেফারেন্স) এর সাথে মিলিয়ে বিবাহবিডি সার্চ ইঞ্জিন স্বয়ংক্রিয় ভাবে ডাটাবেইজের সেই সব প্রোফাইল খুঁজে আপনার সামনে এক নিমিষেই হাজির করে।

পছন্দের পার্থক্য

দু’জন আলাদা মানুষের মধ্যে যে পছন্দের পার্থক্য থাকবে এ তো স্বাভাবিক ব্যাপার। কিন্তু অনেক সময় এর থেকেই আসে মতবিরোধ। কিন্তু খেয়াল মতবিরোধ যেন ঝগড়ার আকার না নেয়।

সম্বন্ধ হোক বা অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ, নিজের সঙ্গী এবং নতুন জীবন নিয়ে সকলের মনেই একটা স্বপ্ন থাকে। তবে অনেকসয়মই মনের মিল হলেও দেখা য়ায় সঙ্গীর সঙ্গে নানা বিষয়ে পছন্দের পার্থক্য রয়েছে। বিয়ের দিন যত এগিয়ে আসে, নতুন জীবন শুরু করার আগে সঙ্গীকে নিয়ে কনফিউশন হওয়া অস্বাভাবিক নয়। বিশেষ করে দু’জনের মধ্যে যদি পছন্দ অপছন্দের পার্থক্যটা বেশি হয় তাহলে তা আরও বড় হয়ে দেখা দেয়।

সাব্বির আর ফারজানার গল্পটাই ধরুন না। বিয়েটা ঠিক হয়েছিল সম্বন্ধ করেই। তারপর দু’জনেই একবছর সময় চেয়ে নেয় মেলামেশা করার জন্য। দু’জনের পরিবারেরও সকলেই এই সম্পর্কে খুশি। কিন্তু একটা সমস্যা ফারজানাকে প্রায়ই ভাবিয়ে তোলে। সাব্বিরকে তাঁর এমনিতে খুবই পছন্দ। হ্যান্ডসাম চেহারা, ভাল চাকরি, সুন্দর পার্সোনলিটি। কিন্তু ফারজানার সঙ্গে তাঁর পছন্দের আকাশপাতাল তফাৎ। ফারজানার পছন্দ লেটেস্ট বলিউড মুভি। আবার সাব্বির ভালবাসে থিয়েটার, নাটক। ফারজানা কন্টিনেন্টাল ডিশ প্রেফার করে। সাব্বির আবার বাঙালি কিংবা মোগলাই খানা ছাড়া মুখেই তুলবে না। বিয়ের পর ফ্ল্যাট উত্তরা হবে নাকি বসুন্ধরা, সেখানেও মতবিরোধ। ফলে টুকটাক ঝামেলা লেগেই থাকে। যদিও ঝগড়া মিটেও যায়। কিন্তু রিয়ার প্রশ্ন, ছোটখাট সব বেশিরভাগ বিষয়ে যদি মতের অমিল হয়, তাহলে সারা জীবন একসঙ্গে কাটানো যে মুশকিল! এদিকে বিয়ের দিন ক্রমশ এগিয়ে আসছে।

•  আমাদের নিজস্ব চিন্তাভাবনা, মতামত নিয়েই গড়ে ওঠে আমাদের স্বতন্ত্র ব্যক্তিত্ব। এই ব্যক্তিত্বই আকর্ষণ করে অন্য ব্যক্তিত্বকে। আপনার প্রিয় মানুষটির স্বাতন্ত্রর জন্যেই তো তাকে ভালবাসেন। সেই নিজস্বতাকে বাদ দিয়ে মানুষটিকে তো কল্পনাই করা যায় না। সেইজন্যে যাঁকে ভালবাসেন তাঁর ভালমন্দ সব মিলিয়েই বাসুন। তবে তার মানে কিন্তু আপনার পছন্দ অপছন্দ বিসর্জন দেওয়া নয়। নিজেদের ব্যক্তিগত পছন্দের সূক্ষ্ম ভারসাম্য বজায় রাখা সম্পর্ক বজায় রাখার একটা প্রধান শর্ত। আপনার সঙ্গী যদি সেটা না বোঝেন, তা হলে একটু কৌশলী হওয়ার দায়িত্ব আপনার উপরেই বর্তাবে। তবে একটা মানুষকে বদলে ফেলার চেষ্টা করলে ভুল করবেন।

• যখনই কোনও পারিবারিক বা ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা ভাববেন, তখন একবার সঙ্গীর মতামত নিন। ওঁর মতামতকে গুরুত্ব দিন। এভাবে যদি আপনি ওঁর পছন্দ-অপছন্দকে মেনে চলেন। তা হলে উনিও আপনার মতামতকে গুরুত্ব দেবেন। ফলে নিজেদের মধ্যে অশান্তিও কমে যাবে।

•  নিজেকে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল ও আপডেটেড রাখার চেষ্টা করুন। তা হলে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় তার সপক্ষে যুক্তিটা ভাল করে সাজাতে পারবেন। প্রয়োজনীয় তথ্য থাকলে অন্যকে কনভিন্স করতে সুবিধে হবে।            

•  নিজের পছন্দ-অপছন্দ কখনও জোর করে আপনার সঙ্গীর উপর চাপাবেন না। ওঁকে নিজের বক্তব্য প্রকাশ করার স্বাধীনতা দিন। এরপর যদি উনি আপনার উপর কিছু চাপিয়ে দিতে যান, তা হলে নিজের উদারতার কথা মনে করিয়ে দিন।

•  খাওয়াদাওয়া, জামাকাপড়, বেড়াতে যাওয়া, এইসব সিদ্ধান্ত ,সবসময় নিন সঙ্গীর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে। তাহলে দুজনে মতামতই গুরুত্ব পাবে। একজন হুকুম করছেন, অন্যজন সেই হুকুম মেনে চলছেন, সিচুয়েশনটা যেন কখনই এরকম না হয়।

•  আপনার সঙ্গী যদি আপনাকে ডমিনেট করতে চেষ্টা করেন, তাহলে তাঁর সঙ্গে তর্কাতর্কিতে না গিয়ে একটা ছোটখাট চুক্তি করে নিন। একে অন্যের কথা মেনে চলা এবং নিজের স্বাধীন মতামতের মিশেল দিয়ে তৈরি করুন আপনাদের চুক্তির শর্ত। পুরো ব্যাপারটা সিরিয়াস পর্যায়ে টেনে না গিয়ে, একটা মজার আবহে রাখুন। এতে কাজ বেশি হবে। 

প্রথম দেখা, প্রথম কথা

যাঁর সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছেন, তাঁকে কোনওদিন দেখেননি! কিছুই জানেন না তাঁর ব্যাপারে। মনের মধ্যে চাপা উত্তেজনা বশে রেখে বরং উপভোগ করুন মুহূর্তগুলোকে।  গল্পগুজবের ফাঁকে চিনে নিন পরস্পরকে। এটাই ব্লাইন্ড ডেট-এর সার্থকতা সেখানেই।

সম্পূর্ণ অচেনা-অজানা একজন মানুষের সঙ্গে সাক্ষাৎ।  অবশ্য এ আবার যে-সে সাক্ষাৎ নয়, একেবারে ব্লাইন্ড ডেট! তবে ব্লাইন্ড ডেট-এর সঙ্গে আর পাঁচটা ডেট-এর তফাৎ হল, এক্ষেত্রে আপনি উলটোদিকের মানুষটির ব্যাপারে কিছুই জানেন না।  মনের মধ্যে এক ধরনের চাপা উৎকণ্ঠা আর উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণ করাই দায়! সাধারণত, বন্ধুবান্ধব বা পরিচিতরাই আয়োজন করেন এ ধরনের ডেট।  তবে, ডেটিংয়ে পৌঁছে আপনার অনুভূতি কীরকম হবে, সে নিশ্চয়তা কেউই দিতে পারবেন না! তা বলে কি ব্লাইন্ড ডেটে যাবেন না? অন্তত একবার তো এরকম অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতেই পারেন। শুধু মাথায় রাখুন কয়েকটি বিষয়:

  • কোনও প্রত্যাশা নিয়ে যাবেন না। যদি ভাবেন আপনার স্বপ্নের মানুষটিকে আপনি খুঁজে পাবেন, তাহলে আশাহত হতে পারেন।  আপনার প্রিন্স চার্মিংয়ের কথা ভেবেছেন আর বাস্তবের মানুষটি একেবারে আলাদা হতে পারে।
  • কথাবার্তার শুরুতেই উলটোদিকের মানুষটার সম্পর্কে কোনও ধারণা তৈরি করে ফেলবেন না। কারও ব্যাপারে সম্যক ধারণা তৈরি করতে একটা ব্লাইন্ড ডেট মোটেও যথেষ্ট নয়। তবে গল্পগুজবের মাধ্যমে একটা প্রাথমিক ধারণা তৈরি হয়েই যাবে।  তার ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত নিন ভবিষ্যতে আবার এই লোকটির
  • সঙ্গে দেখা করবেন কি না। মনে রাখবেন, প্রত্যেকটা মানুষের মধ্যেই কিছু না কিছু ইন্টারেস্টিং এলিমেন্ট থাকে। সেই ছোট ছোট দিকগুলো উপভোগ করার চেষ্টা করুন।
  •  যদি মনে হয় একেবারে ভুল লোকের সঙ্গে ডেটিং করে দিনটাই মাটি হয়ে গেল, তাহলেও আফশোস করবেন না। খাওয়াদাওয়া, ড্রিংক উপভোগ করুন।  আগে থেকেই ঠিক করে নিন কোনও নতুন রেস্তরাঁয় যাবেন, কোনও নতুন ডিশ ট্রাই করবেন।  যদি খুব বোরিং লাগে, তাহলে সংক্ষিপ্ত কথায় সেরে ফেলুন।
  • একেকজন মানুষের ব্যক্তিত্ব একেক রকমের।  হতেই পারে যে উলটোদিকের মানুষটির সঙ্গে
  • প্রেম সম্ভব নয়। কিন্তু তিনি অন্য নানা বিষয়ে বেশ খোঁজখবর রাখেন। তাহলে সেই বিষয়ে নিজেকে সমৃদ্ধ করে তোলার সুযোগটা হারাবেন না যেন।  বন্ধুত্ব রাখা যেতেই পারে।
  •  অতিরিক্ত খাবার গ্রহন করে ফেলবেন না। আর সেন্স অফ হিউমার বজায় রাখা দু’পক্ষের জন্যই জরুরি।

কোর্টশিপে যা করবেন না

দীর্ঘদিনের প্রেমপর্বই হোক বা দেখেশুনে অ্যারেঞ্জড ম্যারেজ – চার হাত এক হওয়ার আগে কোর্টশিপের এই সময়টা সকলের জন্যই বিশেষ গুরুত্বের। যে মানুষটার সঙ্গে সারাজীবন থাকবেন বলে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে চলেছেন তাঁকে একবার পরখ করে নেবেন না!

অবশ্য লাভ ম্যারেজের ক্ষেত্রে সঙ্গীকে চেনার প্রক্রিয়াটা অনেকদিনের। রোজই তাঁকে একটু একটু করে নতুন করে আবিষ্কার করার সময়-সুযোগও বেশি। দেখেশুনে বিয়ের ক্ষেত্রে কিন্তু এতটাও বিলাসিতার জায়গা থাকে না। বরং, সম্পূর্ণ অচেনা-অজানা একজনের সঙ্গে একছাদের তলায় দীর্ঘজীবন কাটানোর আগে কম্প্যাটিবিলিটি মিলিয়ে দেখে নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে বই কী! তবে কোর্টশিপে দু’টো মানুষ কীভাবে নিজেদের মতো করে সময় কাটাবেন, সেটা একান্তই তাঁদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। তবে কোর্টশিপের সময়টায় কী কী করবেন না, সেদিকেও একটু খেয়াল রাখা জরুরি।

  • যদিও আপনি আপনার বাগদত্তার সঙ্গে নিরিবিলিতে যতটা সম্ভব বেশি সময় কাটাতে চাইবেন, কিন্তু কখনওই যেন তিনি হাঁফিয়ে না ওঠেন। সম্পর্কের প্রাথমিক শর্তই হল একে অপরকে স্পেস দেওয়া। আপনার নানা প্রশ্নের উত্তর তিনি দেবেন অবশ্যই, কিন্তু প্রথমেই নানা অবাঞ্ছিত প্রশ্ন করে ফেললে দমবন্ধকর পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। ফলে, উলটোদিকের মানুষটি নিজের ভবিষ্যত সম্পর্কে আন্দাজ করে ফেলতে পারবেন! আর সেই ভবিষ্যত মোটেও সুখকর হবে না!
     
  • সঙ্গীর ব্যাপারে পাহাড়প্রমাণ প্রত্যাশা রাখবেন না। আবার আপনিও নিজে থেকে এমন কোনও কথা দিয়ে বসবেন না যা পরে পূরণ করতে না পারেন। শুধু সাময়িকভাবে ভাল থাকার জন্য এমন কোনও কমিটমেন্ট করবেন না যা মিথ্যে। সত্যি কথা বলুন। এর মাধ্যমেই পারস্পরিক বিশ্বাস অর্জন করতে পারবেন।
     
  • কোর্টশিপের সময়ে অযথা নিজের অতীত নিয়ে ঘাঁটবেন না। সঙ্গীর অতীত সম্পর্ক নিয়েও বেশি জলঘোলা করার প্রয়োজন নেই। তার মানে এই নয় যে একে অপরের কাছে অতীত সম্পর্ক লুকোবেন। এতে পরে আরও জটিলতা হতে পারে। কিন্তু একে অপরের প্রতি এই বিশ্বাসটা থাকা প্রয়োজন যে অতীতের কোনও রেশ আপনাদের বর্তমান সম্পর্কে পড়বে না। সংবেদনশীল মানসিকতা নিয়ে এগোন। উলটোদিকের মানুষটার কথাও শুনুন। শুধু নিজেই একতরফা বলে যাবেন না।
     
  • শর্তসাপেক্ষে সম্পর্কে রাজি হবেন না। বিয়ের পর চাকরি ছাড়তে হবে বা সঙ্গীর পছন্দসই জীবনযাপন করতে হবে—এরকম শর্ত মেনে নিলে বিয়ের পর সমস্যা হতে পারে। এগুলো সঙ্গীর ডমিনেন্ট মানসিকতার পরিচায়ক। আজ কেরিয়ার নিয়ে কোনও শর্ত চাপিয়ে দিলে আগামী দিনে উনি আপনার ব্যক্তিগত জীবন, পছন্দ-অপছন্দও নিয়ন্ত্রণ করতে চাইবেন।
     
  • ভান করবেন না। ধরুন, আপনার স্কাইডাইভিং পছন্দ নয়। আপনি তা খোলাখুলি জানিয়ে দিন। আপনি রান্না করতে না জানলেও লুকোনোর কিছু নেই। নিজের স্বকীয়তাকে লুকিয়ে রাখবেন না। সুত্রঃ সানন্দা

ট্রেডিশনাল ঘটক বনাম বিবাহবিডি ডট কম

একজন প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ ও নারীর জীবনে অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি সিদ্ধান্ত হচ্ছে ‘বিবাহ’ এবং দাম্পত্য জীবন নিয়ে প্রতিটি মানুষের থাকে বিভিন্ন রকম আশা ও স্বপ্ন। একটি বিয়ে শুধু দুজন ব্যক্তির মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং তৈরী করে দুটি পরিবারের মধ্যে সামাজিক বন্ধন। তাই একটি পরিবার সামাজিক ভাবে আরেকটি পরিবারের সাথে বন্ধন তৈরীর পূর্বে অনেক হিসেব নিকেশ করে থাকে।  এজন্য সঠিক ও যোগ্য পাত্র/পাত্রী নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রতিটি পরিবার নিজেদের চাহিদাকেই প্রাধান্য দিয়ে থাকে বারংবার, এক্ষেত্রে অতিরিক্ত আবেগ বা আপোসকামীতা বয়ে আনতে পারে দুটি জীবনে অসহনীয় যন্ত্রনা ।

পরিবারের কোন সদস্যের বিয়ের জন্য উপযুক্ত সঙ্গী নির্বাচনে আমরা সাধারনত সাহায্য নিয়ে থাকি নির্ভরযোগ্য কোন মাধ্যমের। কখনো তা নিকট আত্মীয়, কখনো প্রফেশনাল ঘটক, আবার কখনো প্রযুক্তি নির্ভর অনলাইন ম্যাট্রিমনিয়াল ওয়েব পোর্টালের।

প্রশ্ন হচ্ছে সম-সাময়িক বিবেচনায় ঘটক কিংবা ম্যাট্রিমনিয়াল ওয়েব পোর্টাল বিবাহবিডি ডট কমের মধ্যে কোনটি বেশী গ্রহন যোগ্য, আস্থাশীল এবং দ্রুততর? বিবাহবিডি উপস্থাপন করছে এমনই তুলনামূলক কিছু তথ্য যা আপনাদের প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে সহায়ক হবে।

আসুন দেখি একটি তুলনা মূলক পার্থক্য –

১।  নিবন্ধনঃ


ঘটক: একজন শহরের প্রফেশনাল ঘটকের কাছে পাত্র-পাত্রীর বায়োডাটা জমা দেয়ার সময় নিবন্ধন ফী হিসাবে প্রথমেই এককালীন ফী দিতে হয় যা ক্ষেত্র বিশেষে ৩ থেকে ১৫ হাজার পর্যন্ত হয়ে থাকে।

বিবাহবিডি ডট কম: বিবাহবিডি ডট কম মূলত পাত্র-পাত্রী খোঁজার ও সরাসরি নিজেরাই যোগাযোগ করার জন্য বিশেষ ভাবে তৈরি করা একটি অনলাইন বেইজ সার্চ ইঞ্জিন। এখানে রেজিষ্ট্রেশন সম্পূর্ন ফ্রী। যে কেউ বিশ্বের যেকোন প্রান্ত থেকে সহজেই ফ্রী রেজিষ্ট্রেশন করতে পারে। এক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা, প্রফেশন, প্রোফাইল ভ্যারিফিকেশন এর উপর ভিত্তি করে বিবাহবিডি একটি ইউজার গ্রেড নিশ্চিত করে তারপরই প্রোফাইল এক্টিভেট করে এবং ৩ দিনের ফ্রী ট্রায়াল মেম্বারশীপ প্রদান করে, যেনো ব্যবহারকারী লগিন করে পছন্দের প্রোফাইল গুলো দেখে সহজেই বাছাই করতে পারে।

২।  পছন্দ ও যোগাযোগঃ


ঘটক: এক জন ঘটকের কাছে নিবন্ধন পরবর্তীতে প্রতিবার পাত্র-পাত্রীর সন্ধান ও মুখোমুখি সাক্ষাতের জন্য আপনাকে গুনতে হবে ২ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত।  ফলে আপনি চাইলেও সময় ও অর্থের কথা ভেবে খুব বেশী যাচায় বাছাই করার সুযোগ পাবেন না।  এক্ষেত্রে আপনার পছন্দের ব্যাপারে ঘটকের উপরই নির্ভর করতে হবে।  নিত্যনতুন বায়োডাটা দেখতে ও নিজেরাই পাত্র-পাত্রী কিংবা অভিভাবকের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করার কোন সুযোগ ঘটকের কাছ থেকে পাওয়া যায় না।

বিবাহবিডি ডট কম: বিবাহবিডি পাত্র পাত্রীর মধ্যে কোন রকমের মধ্যস্থতা করে না। এখানে আপনি নিজেই ঘরে বসেই কম্পিউটারে/মোবাইলে বিবাহবিডির ডাটাবেইজের সর্বশেষ সংগ্রহিত/ এক্টিভেট করা প্রোফাইল গুলো দেখে পাত্র-পাত্রী কিংবা তাদের অভিভাবকের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারবেন। এজন্য বিবাহবিডিতে রয়েছে ৪ টি সহজলভ্য বিভিন্ন মেয়াদী মেম্বারশীপ প্যাকেজ। যার মাধ্যমে পাত্র-পাত্রীর পরিবার একে অন্যের সাথে তাৎক্ষনিক যোগাযোগ করতে পারে।

৩।  বায়োডাটা সংগ্রহ ও ব্যাপ্তিঃ


ঘটক: একজন ট্রেডিশনাল ঘটক নির্দিষ্ট একটি এলাকা/মহল্লার মধ্য সীমিত তথ্য নিয়ে তার পেশাগত দায়িত্ব পালন করে থাকে এবং অতি সনাতন পদ্ধতিতে।

বিবাহবিডি ডট কম:  বিবাহবিডি সম্পূর্ন অনলাইন ভিত্তিক সেবা নিশ্চিত করে। তাই বিশ্বের যেকোন দেশ ও দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে  পাত্র-পাত্রী বা অভিভাবকেরা প্রোফাইল দেখে নিজেরাই সরাসরি যোগাযোগ করতে পারে।  তাই এর ব্যাপ্তি বিশ্বব্যাপী এবং তা সমকালীন একটি আধুনিক সেবা।

৪।  বায়োডাটার তথ্য যাচাই ও সত্যতাঃ


ঘটক: প্রফেশনাল ঘটকের কাছে যে বায়োডাটা থাকে তা কতটুকু গ্রহনযোগ্য, তার সত্যতা নিয়ে আপনার সংশয় থাকতে পারে।  এবং একজন ঘটক কখনোই তার গ্রাহক প্রদত্ত বায়োডাটা গুলোর ভেরিফিকেশনের দায়িত্ব নেয় না।

বিবাহবিডি ডট কম: বিবাহবিডি প্রোফাইল এক্টিভেট/সক্রিয় করার পূর্বে নিজস্ব কাষ্টমার সাপোর্ট টিম দ্বারা তা ভেরিফাই করে এবং পাত্র/পাত্রী ও অভিভাবকের সম্পৃক্ততা নিশ্চিত হওয়ার তারপরই একটি প্রোফাইল একটিভ করে।  এক্ষেত্রে প্রোফাইল ভেরিফিকেশনের  জন্য জাতীয় পরিচয় পত্র / জন্ম নিবন্ধন / একাডেমিক সার্টিফিকেট/ প্রবাসীদের জন্য ভিসা, পাসপোর্ট / ডিভোর্সদের জন্য ডিভোর্স সার্টিফিকেট যাচাই করন বিবাহবিডিতে বাধ্যতামূলক।

৫।  প্রোফাইল সার্চ ও ম্যাচমেকিং :


ঘটক: সাধারনত একজন ঘটক তার কাছে থাকা সীমিত বায়োডাটার মধ্যেই আপনার সঙ্গী খুঁজার জন্য আপনাকে বিভিন্ন ভাবে প্রভাবিত করে থাকে এবং এতে ক্ষেত্র বিশেষে ভুল সঙ্গী বাছায়ের সম্ভাবনা থাকে।

বিবাহবিডি ডট কমবিবাহবিডিতে আপনি আপনার পছন্দের প্রফেশন, পাত্র-পাত্রীর শিক্ষাগত যোগ্যতা, জেলা, আর্থিক অবস্থা, বৈবাহিক অবস্থা, বর্তমান অবস্থান, বর্ন, গোত্র, ধর্ম সহ ১৮ টি সার্চ ক্যাটাগরীর মাধ্যমে চাহিদা অনুযায়ী কাংখিত সংঙ্গীকে সহজেই খুঁজতে সক্ষম হবেন।  তাছাড়া আপনার প্রদত্ত সঙ্গী বাছাইয়ের বিবরন ( পার্টনার প্রেফারেন্স) এর সাথে মিলিয়ে বিবাহবিডি সার্চ ইঞ্জিন স্বয়ংক্রিয় ভাবে ডাটাবেইজের সেই সব প্রোফাইল খুঁজে আপনার সামনে এক নিমিষেই হাজির করে।

৬।   বিবাহ ঠিক হলে সার্ভিস চার্জঃ


ঘটক: একজন ঘটকের মাধ্যমে বিবাহ সম্পাদনের পর আপনাকে মোটা অংকের চুক্তি ভিত্তিক অর্থ প্রদান করতে হয়, যা ২০ হাজার থেকে কখনো লাখ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।

বিবাহবিডি ডট কম: বিবাহবিডি থেকে আপনি জীবন সঙ্গীখোঁজে পাবার পর বিবাহবিডি আপনার কাছে কখনোই কোন সার্ভিস চার্জ দাবি করবেনা। বরংচ বিবাহবিডিতে আপনার সাকসেস ষ্টোরী শেয়ার করলে বিবাহবিডিই অাপনাকে অভিনন্দন জানিয়ে আপনার ঠিকানায় গিফট পাঠাবে।

সম্মানিত পাঠক, আশাকরি আপনারা উপরোক্ত অালোচনা ও পার্থক্য গুলো থেকে সহজেই সঠিক বিষয়টি অনুধাবন করে নিজেরাই যথাযথ সিদ্ধান্তে উপনিত হতে সক্ষম হবেন।