গোপন কথা কাকে বলবেন, আর কাকে বলবেন না

একসঙ্গে বাস করলে কারো না কারো সাথে বন্ধুত্ব করতেই হয়।  আর বন্ধুত্বের প্রথম শর্ত বিশ্বাস।  কিন্তু সেই বিশ্বাসের মর্যাদা কি সবাই দেয়? তাই বলে কী কাউকে বিশ্বাস করবেন না?  কিন্তু কাউকে না কাউকে তো বিশ্বাস করতেই হয়।  বিশ্বাস করে ভাগাভাগি করে নিতে হয় নিজের কিছু একান্ত গোপন কথা।  এ কারণেই কাউকে না কাউকে খুঁজেন নিজের মনের কথা বলার জন্য।  কিন্তু আজকাল কাউকে বিশ্বাস করে কোনাে কথা বলা মানেই যেচে বিপদ ডেকে আনা।

আজকাল মানুষ অনেক বেশি স্বার্থপর ও আত্মকেন্দ্রিক।  সকলেই যেন আরেকজনের দোষ-ত্রুটি আর দুর্বলতা খুঁজে বেড়ান।  আর তাই কারো সাথে নিজের গোপন কথা ভাগাভাগি করার ক্ষেত্রে একটু সাবধান থাকাটাই শ্রেয়।  অন্তত ছয়টি শর্ত মনে রেখে গোপন কথা বলুন।

এক— প্রথমেই চেষ্টা করুন গোপন কথাটা কেবল নিজের কাছেই রাখার।  কেননা একটা কথা মনে রাখবেন, যে কথা আপনি নিজে গোপন রাখতে পারেন না। সে কথা অন্যের কাছে বলে গোপন রাখতে বললে তিনি তা করবেন কীভাবে। তাই নিজের গোপন কথা চাইলে আপনার নোটবুকেও লিখে রাখতে পারেন।

দুই— কিন্তু একান্তই যদি কাউকে গোপন কথা বলতেই হয়, তাহলে খুব আপন কাউকে বলুন।  যে আপনার কাছের মানুষ।  খুব কাছের মানুষ।  যাকে আপনি বিশ্বাস করেন। যার সাথে আপনার মতের বেশ মিল এবং ঝগড়া হওয়ার আশঙ্কা খুবই কম।  যেন আপনার সাথে ঝগড়া হলে আপনার গোপন কথা ফাঁস করে না দেয়।  যত আপন মানুষই হোক, সম্পর্ক কখনো না কখনো বদলে যেতেই পারে।  তাই এমন কাউকে বেছে নিন, যিনি কখনো আপনার দুর্বলতার সুযোগ নেন নি বা নেবেন না।

তিন— আপনার কি এমন কোন আপনজন বা বন্ধু আছে, যে আপনার সুখ-দুঃখের সাথী। বিপদের সময় পাশে থাকেন, কখনো আপনার প্রতি যার ভালোবাসায় কোনো খাদ দেখতে পান নি, তার ওপরে আস্থা রাখুন।  কারণ বিপদেই প্রকৃত বন্ধুর পরিচয়।  সুখের পায়রা টাইপের বন্ধুকে কখনো নিজের গোপন কথা বলবেন না ।

চার— একটু খেয়াল করে দেখুন, যাকে বিশ্বাস করে নিজের গোপন কথা বলতে চাচ্ছেন, তিনি মানুষটা কেমন? তিনি কি অন্যের গোপন কথা এসে আপনাকে বলেন? আর বলেন তোমাকেই বললাম আর কাউকে বলো না।  তাহলে জেনে রাখুন, এই মানুষটি আপনার গোপন কথাও আরেকজনকে বলে বেড়াবে। এবং একই কথা বলবে। আর তাই, যত আপনই হোক না কেন এমন চরিত্রের মানুষকে নিজের ব্যক্তিগত কথা ভুলেও কখনই বলবেন না।  এরা খুব ভয়ঙ্কর। এদের কাজই অন্যের কথা শোনা ও সবাইকে বলে বেড়ানো। এদের থেকে সাবধান।

পাঁচ— এমন কাউকে নিজের গোপন কথা জানাবেন না, যার সাথে আপনার কোনো না কোনো স্বার্থ জড়িত।  স্বার্থে কখনো আঘাত লাগলে তিনি যেই হোক না কেন সেই তথ্য আপনার বিরুদ্ধে ব্যবহার করবেন।

ছয়— কখনো কারো ওপর রাগ বা অভিমান করে এমন কিছু বলে বসবেন না, যেটা পরে আপনার জন্য বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।  রাগের মাথায় কারো সাথে নিজের গোপন প্রসঙ্গ আলোচনা না করাই ভালো।  কারণ রাগের মাথায় আমরা এমন অনেক কিছু বলে ফেলি যেটা হয়তো পুরোপুরি সঠিক নয়।