হিন্দু পাত্রপাত্রীর খোঁজ পেতে বিবাহবিডি

সম্ভ্রান্ত ও উচ্চ শিক্ষিত বাংলাদেশী হিন্দু পাত্রপাত্রীর খোঁজ পেতে বিবাহ বিডি’র রয়েছে সমৃদ্ধ ডাটাবেইজ।

পরিবারের প্রিয় সদস্যটির জন্য উপযুক্ত হিন্দু পাত্র পাত্রীর খোঁজ না পাওয়ায় কারনে
বিয়ের ব্যাপারে যদি সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগে থাকেন তবে আপনার জন্যই অনলাইন বেইজ ম্যাট্রিমনিয়াল সার্ভিস বিবাহ বিডি ডট কম

ঘরে বসেই হিন্দু পাত্র পাত্রীর খোঁজ অনলাইনে

চাহিদা অনুযায়ী হিন্দু পাত্র পাত্রীদের ছবি সহ বায়োডাটা দেখে পাত্র পাত্রী বা অভিভাবকের সাথে সরাসরি নিজেরাই যোগাযোগ করতে নিশ্চিন্তে প্রোফাইল করুন।

বিবাহবিডি ডট কম, দীর্ঘ ২০০৭ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশী পরিবারগুলোকে অনলাইন / অফলাইন সেবা নিশ্চিত করে আসছে।

হিন্দু ধর্মাবলম্বী পাত্রপাত্রীর খোঁজ
হিন্দুধর্মাবলম্বী পাত্রপাত্রী

যে ধরনের হিন্দু পাত্রপাত্রীর প্রোফাইল পাবেনঃ
১৮৪ টি প্রফেশন ক্যাটাগরীর, যেকোন শিক্ষাগত যোগ্যতার, যেকোন  গোত্র কিংবা কাষ্টের, হিন্দু পাত্রপাত্রীর খোঁজ পাওয়া যাবে –

ব্রাহ্মণ পাত্র পাত্রী । পদবীসমূহ নিম্নরুপঃ
ভট্ট/ভট্টাচার্য্য, মুখোপাধ্যায়/মুখার্জী, বন্দ্যোপাধ্যায়/ব্যানার্জী, গঙ্গোপাধ্যায়/গাঙ্গুলী, চট্টোপাধ্যায়/চ্যাটার্জী, উপাধ্যায়

গোস্বামী, চক্রবর্তী, লাহিড়ী, মিশ্র, মৈত্র, বাগচী, সান্যাল, ভাদুড়ী, ঘোষাল, তেওয়ারি/ত্রিবেদী, মৌলিক, কাঞ্জিলাল, শাস্ত্রী, আচার্য্য, শর্মা ।

বণিক পাত্র পাত্রী । পদবীসমূহ নিম্নরুপঃ
ধর, দ্ত্ত, মন্ডল/মণ্ডল, দে, শীল, নন্দী, মল্লিক, আঢ্য, কুন্ডু, পোদ্দার, বসাক, সাহা, বণিক, বড়াল, সেন, লাহা, রাহা

কায়স্থ  পাত্র পাত্রী । পদবীসমূহ নিম্নরুপঃ
দেব, চাকী, কর, মিত্র, নন্দী, দে, ধর, দত্ত, গুহ, পাইন, বসু/বোস, ঘোষ, বিশ্বাস, মণ্ডল/মন্ডল, উকিল, মল্লিক, পাল, ভঞ্জ, মজুমদার

সিংহ, চৌধুরী, সরকার, করণ, রায়, সুর, চন্দ, কুন্ডু, আইচ, দাস

মাহিষ্য পাত্র পাত্রী । পদবীসমূহ নিম্নরুপঃ
দাস, বিশ্বাস, মন্ডল/মণ্ডল, সিংহ, চৌধুরী, অধিকারী, গোস্বামী, কবিরাজ, ওঝা, উকিল, পুরকায়স্থ, তরফদার, আদক, সাঁতরা, ভৌমিক, প্রামাণিক

সরকার, রায়, মজুমদার, মল্লিক, মাইতি, জানা, বেরা, ধাড়া, গিরি, মান্না, দিন্দা, কারক, সামন্ত, হাজরা

ভূ-স্বামী পাত্র পাত্রী । পদবীসমূহ নিম্নরুপঃ
মুন্সী, মণ্ডল, চাকলাদার, তালুকদার, রায় বাহাদুর, চৌধুরী, ঠাকুর, প্রধান, মল্লিক, রায়চৌধুরী, দস্তিদার, খাস্তগীর, সরকার, বর্ধন, মহলানবীশ, মজুমদার, দেওয়ান

নমঃশূদ্র বা নমঃস্বেজ পাত্র পাত্রী। পদবীসমূহ নিম্নরুপঃ
ভক্ত, দাস, বাসফোর, মল্লবর্মণ, বর্মণ/বর্মা, মুচি/চর্মকার, ঘোষ, মোদক, শীল, দেববর্মা, হালদার, বিশ্বাস, রাজবংশী

পেশা হিসেবে পদবীঃ
কানুনগো, কারিগর, কর্মকার, ঘটক, গোঁসাই, পালাকার, নাগ (শাঁখারী), ভাঁড়, শোলাকার, মালাকার, ঘরামী, মিস্ত্রী, সূত্রধর/সুতার, পাঁটিকার

বাড়ৈ, হাজরা, হালদার, মাঝি, মালী, পাখাধরা, কার্য্যী, দেওরী, ওঝা, পটুয়া, পাটোয়ারি, ডাকুয়া, পাল, বৈদ্য, গুণ, পাজা, গদগদ,বালা জলদাস জলধর, বড়াল, সাহানী / সোহানী, বর, খাঁ, রং, সাউদ, গায়েন, ব্রজবাসী, মহন্ত

যেকোন বয়সের অবিবাহিত, ডিভোর্স, বিধবা, বিপত্নীক, বাংলাদেশের যেকোন জেলার অধিবাসী এবং বিশ্বের প্রায় ৮০ টি দেশে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশী হিন্দু ধর্মাবলম্বী পাত্রপাত্রীর সন্ধান পেতে লিংকে ক্লিক করুন।

তাছাড়াও বিবাহ বিডিতে রয়েছে কিছু ষ্পেশাল সার্চ ক্যাটাগরী যেমন
– ডিসেবেলীটিস সার্চ (শারীরিক বা স্বাস্থ্যগত প্রতিবন্ধকতা আছে এমন)
– সিঙ্গেল ফাদার / সিঙ্গেল মাদার  সার্চ
( ডিভোর্স কিংবা বিধবা/বিপত্নীক ও সন্তান আছে এমন )।

কেন বিবাহবিডিতে হিন্দু পাত্র/পাত্রী খুঁজবেনঃ
জীবন একটাই  আর একটি সুখী ও সুন্দর জীবনের জন্য চাই একজন সুন্দর মনের মানুষ। অসংখ্য প্রোফাইল দেখে সঠিক সিদ্ধান্তে পৌছাতে নিজেই বিবাহবিডিতে প্রোফাইল করুন

নিজেই খুঁজুন এবং নিজেরাই পাত্র/পাত্রী কিংবা তাদের অভিভাবকের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করুন।  এতে লোক জানাজানির ঝামেলা যেমন নেই তেমনি খরচ ও অনেক কম।

যারা দাম্পত্য জীবনে সেপারেটেড আছেন কিংবা ইতিমধ্যে ডিভোর্স নিয়েছেন, তাদের জন্য বিবাহবিডিতে রয়েছে –

ম্যারিটাল ষ্টেটাস সার্চ ও ইজি সার্চ  অপশন –
যেখানে খুব সহজেই ডিভোর্স, বিধবা/বিপত্নীক, সেপারেটেড সহ [সিংগেল ফাদার] , [সিংগেল মাদার] প্রোফাইল গুলো ক্যাটাগরী অনুযায়ি সুবিন্যস্ত রয়েছে।

আপনি যদি বিয়ের ব্যাপারে সিরিয়াস হয়ে থাকেন তবে রেজিষ্ট্রেশন করুন। 
অথবা বিস্তারিত জানতেঃ

বিবাহবিডি ডট কম
HOUSE # 02 (3rd Floor) BLOCK: G,
SOUTH BANASREE MAIN ROAD, DHAKA-1219

Hotline: +88 01922 115555, 88 01944 115555, 88 019 71 24 2242
Customer Care: + (88) 0961 22 11 555 Office: 02-4729-1212

Hindu Marriage Media in Bangladesh

Bibahabd is one of the Best Hindu marriage media in Bangladesh or Hindu Matrimony service provider.

Who provides online and offline matchmaking service to find a suitable partner / Bride Groom for marital relationship.

Log into Bibahabd The Best Hindu Marriage Media in Bangladesh for Hindu Never Married, Divorce, widowed Bride Groom.

You will find Barisal, Chittagong, Dhaka, Khulna, Mymensingh, Rajshahi, Rangpur, and Sylhet or NRB Hindu, Muslim, Buddhist, Christian Bride Groom for Arranged Marriage.

There are now more than 3,000 Hindu castes in all over the world, and an even greater number of sub-castes.

Here are six of the most significant:

Best Hindu marriage media in Bangladesh
Best Hindu marriage media in Bangladesh | Bangladesh Hindu Matrimony
  • Hindu Brahmins Bride Groom
    The highest of all the castes, and traditionally priests or teachers, Brahmins make up a small part of the population. The British colonial authorities gave Brahmins influential clerical jobs.
  • Hindu Kshatriyas Bride Groom
    Meaning “protector[s] of the gentle people,” Kshatriyas were traditionally the military class. They are now predominantly a land-owning caste and are diminished in power.
  • Hindu Vaishyas Bride Groom : A caste that is influential in trade, the Vaishyas were traditionally cattle-herders, agriculturalists, artisans and merchants. They are now associated with the middle-class and social advancement and make up around one fifth of Bangladeshis Hindu population.
  • Hindu Shudras Bride Groom : The lowest of the four ancient social classes, or Varnas -, the Shudras were considered so low as to be prohibited from the study of the “Vedas,” the earliest texts of sacred literature. Shudras are now considered to be a “scheduled caste” .
  • Hindu Adivasi Bride Groom : The term is used to refer to a collection of ethnic and tribal groups regarded as Bangladeshi’s aboriginal Hindu people. More than 95 per cent of Adivasis live in rural areas. Sixty-eight per cent do not reach high school.
  • Hindu Dalits Bride Groom : The word “Dalit,” derived from Sanskrit, means “ground,” “suppressed” or “crushed.” Considered the lowliest people of all the castes, Dalits are typically associated with Occupations regarded as ritually impure, such as those involving waste or carcasses.

We at Bibahabd believe that marriages are made in heaven and we only intend in realizing those dreams. It is a site for the generation of today and the future.

হিন্দু বিবাহ নিবন্ধন বিধিমালা

হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের শাস্ত্রীয় বিয়ের দালিলিক প্রমাণ সুরক্ষার জন্য হিন্দু বিবাহ নিবন্ধনের বিধিমালা চূড়ান্ত করা হয়েছে। তবে এতে বিবাহ নিবন্ধনের বিষয়টি ঐচ্ছিক রাখা হয়েছে।

হিন্দু বিবাহ নিবন্ধনের আবেদন ও পদ্ধতি:
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের শাস্ত্রীয়ভাবে বিয়ের পর, বিয়ে যে স্থানে হবে, সেই এলাকার নিবন্ধকের কাছে নিবন্ধন করতে হবে। বর-কনে যৌথ স্বাক্ষর বা টিপসই দিয়ে নিবন্ধনের জন্য লিখিত আবেদন করবে। আবেদনের সঙ্গে বর-কনের পাসপোর্ট আকারের বা স্বামী-স্ত্রীর যৌথ ছবি সংযুক্ত করতে হবে। তবে হিন্দু বিবাহ নিবন্ধনের জন্য হিন্দু পুরুষের বয়স ২১ বছর এবং হিন্দু মেয়ের বয়স ১৮ বছর হতে হবে। অন্য কোন আইনে যাই থাকুক না কেন, ২১ বছরের কম বয়সী কোনো হিন্দু পুরুষ বা ১৮ বছরের কম বয়সী কোনো হিন্দু মেয়ে বিয়ে করলে তা নিবন্ধনযোগ্য হবে না। অতএব, আবেদনের সময় বয়স প্রমান করে এ-সংক্রান্ত কাগজপত্র সাথে রাখতে হবে।

নিবন্ধক কোনো আবেদন প্রত্যাখ্যান করলে আবেদনকারী প্রত্যাখ্যানের ৩০ দিনের মধ্যে জেলা রেজিস্ট্রারের কাছে আপিল করতে পারবেন। আপিল সম্পর্কে জেলা রেজিস্ট্রারের আদেশ চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।

হিন্দু বিবাহ নিবন্ধন ফি: বিধিমালা অনুযায়ী প্রতি বিয়েতে নিবন্ধন ফি লাগবে এক হাজার টাকা। এই ফি পরিশোধ করবে বরপক্ষ। বিয়ে-সংক্রান্ত নথির হুবহু নকল পাওয়ার জন্য ১০০ টাকা ফি দিতে হবে।

হিন্দু  বিবাহ রেজিস্ট্রেশন আইন জানতে ক্লিক করুন
http://bdlaws.minlaw.gov.bd/bangla_all_sections.php?id=1105

হিন্দু বিবাহ ও বিবাহ-বিচ্ছেদ: কিছু প্রশ্ন ও তার উত্তরঃ

সামাজিক নানা ধরণের সমস্যায় আমরা বিপর্যস্ত। এর মধ্যে বিবাহ সংক্রান্ত সমস্যা ও বিবাহ-বিচ্ছেদ সুস্থ সমাজ চেতনার পথে অন্যতম বাধা। প্রকৃত আইন না জানার জন্য অনেকেই এই সমস্যায় খুবই বিব্রত হয়ে পড়েন। এই বিভ্রান্তি দূর করতে হিন্দু বিবাহ ও বিবাহের বিচ্ছেদ নিয়ে কিছু আইনী পরামর্শ দেওয়ার চেষ্টা করলাম।

প্রশ্ন: হিন্দু বিবাহ আইন কবে পাশ হল?
উত্তর: ১৯৫৫ সালের মে মাসে এই আইন চালু হয় এবং সংশোধিত হয় ২০১২ ।

প্রশ্ন: সাধারণত এই আইন কাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য?
উত্তর: হিন্দু, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ, ব্রাহ্ম ও আর্য সমাজভুক্ত সম্প্রদায়ের মানুষের ক্ষেত্রে এই আইন প্রযোজ্য।

প্রশ্ন: হিন্দুমতে বিবাহ অনুষ্ঠানের কোনও অপরিহার্য অঙ্গ আছে কি?
উত্তর: বিবাহের জন্য প্রচলিত রীতিনীতি পালন করাটা আবশ্যক। সাধারণত হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী এই বিবাহের অনুষ্ঠান শুরু হয়; অগ্নিসাক্ষী রেখে সপ্তপদী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিবাহ শেষ হয়।

প্রশ্ন: হিন্দু বিবাহ আইন অনুযায়ী বিয়ের দুপক্ষকেই (পাত্র ও পাত্রী) কি হিন্দু হতে হয়?
উত্তর: হ্যাঁ, হিন্দু বিবাহ আইন অনুযায়ী উভয় পক্ষকেই, অর্থাত্ পাত্র ও পাত্রীকে অবশ্যই হিন্দু ধর্মাবলম্বী হতে হয়।

প্রশ্ন: হিন্দু মতে বিবাহের জন্য রেজিস্ট্রি (Registry) করা কি অবশ্যই প্রয়োজন?
উত্তর: না, রেজিস্ট্রি না হলেও বিবাহ অসিদ্ধ হয় না। তবে রেজিস্ট্রেশনটা হয়ে থাকলে পরে অনেক ক্ষেত্রে তা কাজে লাগে। যেমন, ভারতবর্ষের বাইরে স্বামী-স্ত্রী সম্পর্ক স্থাপনের জন্য রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেটের দরকার হয়। হিন্দুমতে বিবাহটি রেজিস্ট্রি করার উদ্দেশ্য হল, হিন্দুমতে যে বিবাহটা হয়েছে – তা পরে প্রমাণ করার জন্য নথিভুক্ত করা।

প্রশ্ন: যখন দুপক্ষই হিন্দু-ধর্মাবলম্বী হয়, সেক্ষেত্রে অন্য কোনও আইন অনুযায়ী কি বিবাহ সম্ভব?
উত্তর: স্পেশাল ম্যারেজ এক্ট অনুযায়ী এই বিবাহ হতে পারে। আবার হিন্দুমতে বিবাহটা স্পেশাল ম্যারেজ এক্টের আইনে রেজিস্ট্রি করা যেতে পারে। তবে এই স্পেশাল ম্যারেজ এক্টে বিবাহ করতে হলে বিবাহের অন্তত ২ মাস আগে লাইসেন্স প্রাপ্ত বিবাহ-রেজিস্ট্রারের কাছে নির্দিষ্ট একটি ফর্ম ভর্তি করে আবেদনপত্র সহ সেটি জমা করতে হয়।

প্রশ্ন: হিন্দুমতে বিবাহ করতে বয়সের কি কিছু বিধি নিষেধ আছে?
উত্তর: হ্যাঁ, এই আইনে সুস্পষ্ট ভাবে বলা আছে যে, পুরুষদের ক্ষেত্রে বিবাহযোগ্য বয়স হল একুশ (২১) বছর এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে আঠারো (১৮) বছর। যেহেতু এই বয়সে পুরুষ ও মহিলা সাবালক ও সাবালিকা হয়ে যাচ্ছেন, তাই বিবাহের জন্য ওঁদের বাবা-মা বা অভিভাবকদের অনুমতির কোনও প্রয়োজন নেই।

প্রশ্ন: হিন্দুমতে বিবাহের পরে যদি স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে মতের মিল না হয়, কিংবা একসঙ্গে তাঁদের পক্ষে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস করা সম্ভব না হয়, সেক্ষেত্রে আইনত তাঁরা কি করতে পারেন?
উত্তর: যদি এমন হয় যে, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মতের মিল হচ্ছে না বা নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়ার অসুবিধা হচ্ছে, সেক্ষেত্রে তাঁরা জুডিশিয়াল সেপারেশনের জন্য আদালতের কাছে আবেদন করতে পারেন। আদালত ওঁদের এই আবেদন যথোপযুক্ত ও যুক্তিসংগত মনে করলে, বিবাহ-বিচ্ছেদ না করেও আদালতের মাধ্যমে দুপক্ষের আলাদা হয়ে থাকার বিধান আছে। অনেক সময়ে দেখা যায় যে, দু-পক্ষ আলাদা থাকার ফলে নিজেদের ভুলত্রুটিগুলো বুঝতে পেরে আবার একসাথে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কিন্তু যদি দেখা যায় যে, এক বছর আলাদা থাকা সত্বেও স্বামী-স্ত্রীর মতপার্থক্য কমছে না ও তার মীমাংসার কোনও সম্ভাবনা নেই, সে ক্ষেত্রে যে-কোনও পক্ষ আদালতের কাছে বিবাহ-বিচ্ছেদের (ডিভোর্স) জন্য আবেদন করতে পারেন।

প্রশ্ন: জুডিশিয়াল সেপারেশন হয়ে যাবার পর কি কোনও পক্ষ আবার বিবাহ করতে পারেন?
উত্তর: জুডিশিয়াল সেপারেশন চলাকালীন কেউ বিবাহ করতে পারেন না, কারণ আইনের চোখে তখনও তাঁরা স্বামী ও স্ত্রী। সেপারেশন হবার পর এক বছরের মধ্যেও যদি দুপক্ষের মিল না হয়, তাহলে আদালতের কাছে বিবাহ-বিচ্ছেদের (ডিভোর্স) জন্য আবেদন করা যায়। আদালত তা মঞ্জুর করলে, তার পর বিবাহ করার কোনও বাধা থাকে না।

প্রশ্ন: আইনের ভাষায় অসিদ্ধ বিবাহ বলতে কি বোঝায়?
উত্তর : যে সব বিবাহ আইনানুযায়ী হয় নি, তাই অসিদ্ধ। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে, যদি পাত্র বা পাত্রীর মধ্যে কেউ বিবাহিত হন এবং তাঁর স্বামী বা স্ত্রী জীবিত অবস্থায় থাকেন, তাহলে তার নতুন বিবাহটা অসিদ্ধ বলে গণ্য করা হবে। আরেকটা উদাহরণ, সম্পর্কের বিচারে পাত্র ও পাত্রী যদি সপিণ্ড হন বা অন্য কোনও নিষিদ্ধ সম্পর্কের (প্রহিবিটেড রিলেশনশিপ) আওতায় পরেন, তাহলে সেই বিয়ে অসিদ্ধ বলে গণ্য করা হবে।

প্রশ্ন: সপিণ্ড ও নিষিদ্ধ সম্বন্ধ সম্পর্কে সংক্ষেপে কিছু বলুন।
উত্তর : নিষিদ্ধ সম্পর্ক বলতে বোঝায় মামা, পিসি, বিমাতা, ঠাকুমা, ইত্যাদি। এই রকমের আত্মীয়দের মধ্যে যদি বিবাহ হয়, তাহলে তা অসিদ্ধ হবে। সপিণ্ডর সাধারণ অর্থ হল যেক্ষেত্রে দুজনে একই পূর্ব-পুরুষকে পিণ্ড দান করেন। তবে ঠিক কারা সপিণ্ড সম্পর্কের মধ্যে পড়েন আইনে সেটি পরিষ্কার ভাবে উল্লেখিত হয়েছে।

প্রশ্ন: বিবাহ-বিচ্ছেদের কতদিন পরে আবার বিবাহ করা যায়?
উত্তর :সাধারণভাবে বিবাহ-বিচ্ছেদ মঞ্জুর হবার পর আপীল দায়ের করার সময় পেরিয়ে গেলেই যে কোনও পক্ষ আবার বিবাহ করতে পারেন।

প্রশ্ন: স্বামী এবং স্ত্রীর মধ্যে বিবাহ-বিচ্ছেদ হয়ে গেলে কি তাঁরা আবার নতুন করে বিয়ে করে স্বামী-স্ত্রী হতে পারেন?
উত্তর : হ্যাঁ, পারেন।

প্রশ্ন: বিবাহ বিচ্ছেদের পর মহিলারা বা সন্তানরা কি স্বামীর পদবী ব্যবহার করতে পারেন?
উত্তর : বিবাহ-বিচ্ছেদকারিণী মহিলা চাইলে তাঁর বাবার পদবী ব্যবহার করতে পারেন। মহিলার সন্তানরা তাদের বাবার পদবী ব্যবহার করতে পারবে।

প্রশ্ন: যদি কোনও স্বামী বিবাহ বিচ্ছেদ চান, সেক্ষেত্রে তিনি কি তাঁর স্ত্রীর ভরণপোষণ করতে বা তাঁকে খোরপোষ দিতে বাধ্য?
উত্তর : স্ত্রীর নিজস্ব রোজগার না থাকলে, আদালতে আবেদন করে তিনি খোরপোষ পেতে পারেন। কিন্তু স্ত্রীর পর্যাপ্ত পরিমানে নিজস্ব রোজাগার থাকলে কিংবা তিনি আইনের চোখে দুশ্চরিত্রা বলে প্রমাণিত হলে, স্বামী ভরণপোষণ দিতে বাধ্য হবেন না। একই আইন পুরুষ ও নারী উভয়ের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। অর্থাত্, স্বামীর রোজগার না থাকলে, তিনি তাঁর রোজগেরে স্ত্রীর কাছ থেকে ভরণপোষণের জন্য আদালতে আবেদন করতে পারেন।

প্রশ্ন: স্বামী ও স্ত্রীর যদি শিশু সন্তান এবং সাবালক সন্তান থাকে, সেক্ষেত্রে বিবাহ-বিচ্ছেদের পর সন্তানরা কার কাছে থাকবে?
উত্তর : বাচ্চারা বাবা অথবা মা – যে-কোনও একজনের কাছে থাকতে পারে। এ ব্যাপারে দু-পক্ষের মধ্যে যদি মতান্তর হয়, তাহলে আদালত এই ব্যাপারে রায় দেবে। আইনের বিধানে সাধারণত ছয় বছর পর্যন্ত বাচ্চারা মায়ের কাছে থাকতে পারে। কিন্তু ক্ষেত্রবিশেষে শিশু-সন্তানদের রক্ষণাবেক্ষণের ভার বাবাকেও দেওয়া হয়। ক্ষেত্রবিশেষ বলতে মায়ের পুনর্বিবাহ-ঘটিত সমস্যা বা তাঁর চরিত্রহীনতা, অথবা মাতৃগৃহের পরিবেশ শিশুদের জন্য অনুপযুক্ত বিবেচিত হওয়া, ইত্যাদি, বোঝাচ্ছে।

প্রশ্ন: যাদি সন্তানরা মায়ের কাছে থাকেন, সেক্ষেত্রে বাবা কি বাচ্চাদের ভরণপোষণের জন্য টাকা দিতে বাধ্য? দিতে হলে, কতদিন পর্যন্ত তিনি তা দেবেন?
উত্তর : হ্যাঁ, বাবা সন্তানদের জন্য খরচ দিতে বাধ্য। সাধারণত ছেলেদের ক্ষেত্রে এই ভরণপোষণ চলবে তারা সাবালক না হওয়া পর্যন্ত। মেয়েদের ক্ষেত্রে তাদের বিবাহ না হওয়া পর্যন্ত।

প্রশ্ন: বিবাহ-বিচ্ছেদের মামলা কি কি কারণে করা যায়?
উত্তর: অনেক কারণেই বিবাহ-বিচ্ছেদের জন্য মামলা করা যায়। যেমন, শারীরিক বা মানসিক নির্যাতনের দুর্ব্যবহার অভিযোগ থাকলে, অথবা দুবছরের বেশি অন্য পক্ষ কর্তৃক পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকলে, বিবাহ-বিচ্ছেদের জন্য মামলা আনা যেতে পারে। তবে এ দুটি ছাড়াও আরও অনেক কারণের ভিত্তিতে বিবাহ-বিচ্ছেদের মামলা আনা যেতে পারে।

প্রশ্ন: বিবাহ-বিচ্ছেদ মামলা কোন আদালতে আনা যায়?
উত্তর: বিবাহ-বিচ্ছেদের সংক্রান্ত মামলা ডিস্ট্রিক্ট জজ-এর কাছে দায়ের করা যায়। বর্তমানে পারিবারিক আদালতে এই ধরণের মামলা দায়ের করতে হয়।

প্রশ্ন: মিউচিয়াল কনসেণ্ট বলতে কি বোঝায়?
উত্তর : যখন স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে মতের এতো অমিল যে, তাঁদের পক্ষে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে একসঙ্গে বসবাস করা সম্ভব হচ্ছে না, তখন দুজনে মিলিত ভাবে আদালতের কাছে আবেদন করতে পারেন বিবাহ-বিচ্ছেদের জন্য। তবে বিবাহের এক বছরের মধ্যে এই আবেদন করা যায় না।

হিন্দু বিবাহ রেজিষ্টারঃ
দেশের প্রত্যেকটি উপজেলা / থানায় সরকার একজন করে হিন্দু বিবাহ রেজিষ্টার নিযুক্ত করেছেন।  যাদের তথ্য জেলা প্রশাসকের ওয়েব সাইটে রাখা হচ্ছে।  
22

কেমন জীবনসঙ্গী খুঁজবেন?

বিয়ে মানুষের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। নতুন জীবন শুরু করতে জীবনসঙ্গীর কিছু দিক অবশ্যই যাচাই করে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত এবং তাড়াহুড়া একেবারেই না। আসুন দেখি কোন দিক গুলো অবশ্যই বিবেচনায় আনতে হবে।

শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ

জীবনসঙ্গী খুঁজার ক্ষেত্রে অবশ্যই ব্যক্তির শিক্ষাগত যোগ্যতা আপনার কাছাকাছি বা সমপরিমাণ কিনা বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে নিবেন। অতিরিক্ত শিক্ষাগত যোগ্যতা বা কম শিক্ষা এরকম কাউকে নিয়ে ভাবেন না।

বয়সের পার্থক্যঃ

যাকে জীবনসঙ্গী বানাবেন ভাবছেন তার বয়সের সাথে আপনার বয়সের দূরত্ব কম বা বেশী না হয় এ বিষয়টি খেয়াল রাখবেন। পারিবারিক মতামতঃ যারা পারিবারিকভাবে বিয়ের জন্য জীবনসঙ্গী খুঁজছেন তারা পরিবারের মতামত বুঝে সিদ্ধান্ত নিন এতে করে পরিবারের সাথে আপনার জীবনসঙ্গীর সম্পর্ক ভালো থাকবে।

পেশাঃ

জীবনসঙ্গী বাছাইয়ে ব্যক্তির আর আপনার পেশা কি তা দেখে নিন। ভবিষ্যতে দুজন পেশাগত বিষয়ের দিকগুলো মানিয়ে নিতে পারবেন কি না এ বিষয়টি অবশ্যই খেয়ালে রাখবেন।

পারিবারিক কালচার ও আর্থিক অবস্থাঃ

পারিবারিক কালচার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দুই পরিবারেরে মধ্যে সম্পর্কের আন্তরিকতা বাড়ে বা থাকে, যদি পারিবারিক কালচারগত বিষয়ে সামঞ্জ্যসতা থাকে। দুই পরিবারের পারিবারিক আর্থিক অবস্থার সামঞ্জস্য কতটুকু এ বিষয়টি দেখুন।

ব্যক্তির আচরণঃ

যাকে জীবনসঙ্গী বানাবেন ভাবছেন শুধু তার গুনের প্রশংসা বা সৌন্দর্য না দেখে তার আচরনের প্রতিও খেয়াল রাখুন। আপনি একজন ব্যক্তির সাথে কিছুক্ষণ কথা বললেই বুজতে পারবেন তার আচরণগত কোন সমস্যা আছে কিনা বা তার কোন অভ্যাস যা আপনার পরে পছন্দ নাও হতে পারে।

দায়িত্ববান ও কর্মক্ষমঃ

একটি নতুন সংসার শুরু করতে নারী-পুরুষ দুজনের ভূমিকা প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে একজন দায়িত্ববান ও কর্মিক হবেন আরেকজন উদাসীন তা হলে সংসার শুরু হবে অশান্তি দিয়ে। তাই জীবনসঙ্গী বাছাইয়ে এ গুনাবলি আছে কিনা যাচাই করে নিন।

শারীরিক বিষয়ঃ

যাকে বিয়ে করবেন তার শারীরিক গঠন আপনার সাথে মানায় কি না খেয়াল রাখুন। ব্যক্তি স্বাস্থ্যগত দিক থেকে ঠিক আছে কিনা যাচাই করে নিন।

মানসিক প্রস্তুতিঃ

যাকে বিয়ে করতে চাচ্ছেন সে কি বিয়ের জন্য মানসিকভাবে তৈরি কিনা তা বোঝার চেষ্টা করুন। যদি সে বিয়ের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকে তাহলে ভাবতে পারেন।

জীবনসঙ্গী খুঁজার ক্ষেত্রে গুণবতী,সুন্দরী বা ছেলের অবস্থান বিষয়গুলো যাচাই করা ছাড়াও অনেক বিষয় রয়েছে যা আমরা দেখা প্রয়োজন মনে করি না। ফলে বিয়ের পর সংসারের অধ্যায় শুরু হয় ঝামেলা দিয়ে। তাই জীবনসঙ্গী খোঁজার ক্ষেত্রে অবশ্যই এ বিষয়গুলো প্রত্যেকের খেয়াল রাখা উচিত।

শর্ত : বিয়ের পর বউ চাকরি করতে পারবে না

বিয়ের জন্য পাত্রী খোঁজা হচ্ছে। আধুনিক প্রতিষ্ঠিত ছেলেটি চান ভালো মেয়ে, সুন্দর, বনেদি পরিবার ও শিক্ষিত। আর মেয়েটি যদি মেধাবী হন, তা হলে তো ষোলোকলা পূর্ণ। তবে শর্ত একটি, বিয়ের পর বাড়ির বউ চাকরি করতে পারবে না। আধুনিকতার মুখোশের আড়ালে এমন সংকীর্ণতা অনেক পাত্র ও তাঁর পরিবারের মধ্যে দেখা যায়। কর্মক্ষেত্রে নিজের যোগ্যতায় সফল মেয়েটি অনেক সময় চাকরি ছাড়তে বাধ্য হন। পরিবারের কথা ভেবে অনাকাঙ্ক্ষিত অশান্তি এড়াতে এমন সিদ্ধান্ত মেয়েরা নেন। বিয়ের পর স্বামী চান না বলে চাকরি ছেড়ে দিয়ে ঘরে বসে থাকেন অনেকেই। স্বামী বা শ্বশুরবাড়িকে খুশি করলেও নিজের ভেতরে গুমরে কেঁদে মরেন তাঁরা। নারীর ক্ষমতায়ন, আধুনিকতা ও ব্যক্তিস্বাধীনতার কথা কপচানো অনেক পুরুষই বাস্তবে কর্মজীবী স্ত্রী পছন্দ করেন না।

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত অরিনের বিয়ের কথা চলছে। একজনের সঙ্গে বিয়ের পাকা কথা হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিয়েটা হয়নি। রুচিশীল শিক্ষিত ছেলেটিকে অরিনের ভালো লেগেছিল। কিন্তু বিয়ের তারিখ চূড়ান্ত করার আগে ছেলেটি শর্ত দিয়ে বসলেন—বিয়ের আগেই অরিনকে চাকরি ছেড়ে দিতে হবে। কেননা, তাঁর বউ চাকরি করলে লোকে নাকি ভাববে, ভরণ-পোষণ দিতে পারছেন না। এমন হাস্যকর যুক্তি মেনে না নিতে পারায় বিয়েটা শেষ পর্যন্ত ভেঙে গেল। এ বিয়ে ভেঙে যাওয়ায় নাকি এখন অনেক বিয়ের কথাই বেশি দূর এগোচ্ছে না। হতাশ হয়ে অরিনের মা-বাবা মনে করেন, এই সামান্য শর্ত মানলে কী এমন ক্ষতি হতো!বিয়ের পর চাকরি ও সংসার কি একসঙ্গে সামলাতে পারবে? সন্তান হলে তাকে কাজের লোকের কাছে বড় হতে হবে। সারা দিন কাজ শেষে বউ বাড়ি ফিরবে। তখন পরিবারকে সময় দিতে চাইবে না। আর চাকরি করলে বউ বশে থাকে না। নিজের স্ত্রী চাকরি করার বিপক্ষে এসব যুক্তি দিয়েছেন বেশ কয়েকজন ছেলে। তাঁদের কেউ কেউ মনে করেন, ভালো মেয়েরা চাকরি করেন না।

ছেলেদের এসব যুক্তির সঙ্গে মেয়েরা কি একমত? ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন হুমায়রা (ছদ্মনাম)। তিনি বলেন, ‘বিয়ের পর আমি চাকরি ছেড়ে দেব। আমার সন্তান একা বড় হবে, এটি চাই না। এতে আমার ব্যক্তিস্বাধীনতা থাকবে না কিংবা ব্যক্তিত্বে প্রভাব পড়বে, এমনটি মনে করি না। সুন্দরভাবে সংসার করাও একটি শিল্প।’

তা হলে এত দূর পড়াশোনা করার কোনো মূল্যই থাকবে না! বিয়ে নামের সামাজিক বন্ধন স্বপ্ন পূরণে বাধা দেবে, এটি মানতে পারেন না নৌশিন। তিনি মনে করেন, ভালো বোঝাপড়া থাকলে সংসার ও চাকরি—দুটোই সামলানো সম্ভব। এখানে স্বামী-স্ত্রী দুজনকেই ছাড় দিতে হবে। পরস্পরকে সহনশীল হলে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। আর যে ছেলে কোনো মেয়ের স্বপ্ন ও কাজকে শ্রদ্ধা না করবে, তিনি স্বামী হিসেবে কতটা ভালো হবেন, এ নিয়ে সন্দেহ থেকেই যায়। হুমায়রা আর নৌশিনের বাইরেও আছেন অনেকে। তাঁদের মতে, পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আর সেটা নিতে হবে মেয়েটিকেই। মেয়েটি যদি সবকিছু ঠিকঠাক সামলাতে পারে তা হলে সমস্যা কিসের!

অনেক সময় মেয়ের অভিভাবকেরাও চান, এই সামান্য ছাড় দিলে কী হয়? চাকরির জন্য সংসার টিকবে না, এটি তাঁরা মেনে নিতে পারেন না। ফলে মেয়ের মতামত গুরুত্ব পায় না তাঁদের কাছে। ব্যতিক্রমও আছেন কেউ কেউ। সরকারি কর্মকর্তা নজরুল ইসলামের তিন মেয়েই কর্মজীবী। বড় দুই মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। ছোট মেয়ের বিয়ের কথা চলছে। তিনি ভাবতেও পারেন না, তাঁর মেয়েরা কখনো চাকরি ছেড়ে দেবেন। নজরুল ইসলাম বলেন, ‘মা-বাবা পাশে থাকলে মেয়েরা সব পারে। আমার তিন মেয়ে চাকরি করে। এটি কত বড় গর্বের, তা বোঝানো যাবে না। পাত্রপক্ষ কিছু বলার আগেই বড় দুই মেয়ের বিয়ের সময় আমি উল্টো শর্ত দিয়েছিলাম, বিয়ের পর মেয়েকে চাকরি করতে দিতে হবে।’

অভিভাবকদের বুঝতে হবে, মেয়ে স্বাবলম্বী হলে ভবিষ্যতে যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সামলাতে পারবেন। হতেই পারে বিয়ের পর স্বামীকে কোনো কারণে সাহায্য করতে হলো। তার চেয়ে বড় কথা, দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী ঘরে বসে না থেকে কাজ করলে পরিবার থেকে দেশ—সবার জন্যই ভালো। এ ক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে হবে ছেলেদেরই। চাকরিজীবী স্ত্রীকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করতে হবে। শুধু মুখে মুখে আধুনিক না হয়ে কাজেও দেখাতে হবে।

রাতারাতি সবার মানসিকতার পরিবর্তন হবে, এমনটা আশা করা ঠিক নয়। সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের পাশাপাশি সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটের পরিবর্তনও জরুরি। নারীর ক্ষমতায়ন জোরদার করতে হলে রাষ্ট্রকে এগিয়ে আসতে হবে। মনে করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম। তাঁর সঙ্গে একমত বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু। তিনি জানান, ছেলেদের এই মনোভাব নারীর জন্য ইতিবাচক নয়; বরং বিবাহিত জীবনেও অনেকখানি ঝুঁকি রয়ে যায়।বন্ধুত্ব থেকে বিয়ে হলেও অনেক সময় মেয়েদের এসব সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সামাজিক নিরাপত্তাহীনতাবোধ অন্যতম একটি কারণ। বিয়ের পর সন্তানের মা হওয়ার পর বাড়িতে কোনো লোক না থাকলে, অফিসে শিশু দিবাযত্নকেন্দ্র না থাকলে তখন সাধারণভাবে মাকেই চাকরি ছাড়ার কথা বলে সবাই।ফলে এ ধরনের পরিস্থিতি যেন তৈরি না হয়, সেই পরিবেশ বাড়ির সদস্যদের বা প্রতিষ্ঠানকে দিতে হবে।

-তৌহিদা শিরোপা

পাত্র বাছাইয়ে নারীদের যেমন পুরুষ পছন্দ

একজন মানুষের গুণাগুণ মাপার শর্টকাট কোন যন্ত্র নেই । সৎ ও আদর্শবান মানুষ হতে হলে কী কী গুণাবলী থাকা দরকার এ বিষয়ে হাজারো মন্তব্য পাওয়া যাবে। তারপর যখন আরো একটু বিস্তারিত ভাবে জানতে চাইবেন যে, একজন পুরুষের মধ্যে কী কী গুণাবলী থাকা উচিৎ; সেখানেও নানান মন্তব্য পাওয়া যাবে। একজন পুরুষ যেমন একজন সুন্দরী, শিক্ষিত ও ব্যক্তিত্ববান নারী পছন্দ করেন।  তেমনি একজন নারীও চান তার সঙ্গীটি সৎ, ব্যক্তিত্ববান এবং বিশ্বস্ত হবেন।

পৃথিবীতে সমস্ত গুণাবলীর ভাণ্ডার নিয়ে কোনো পুরুষই জন্মায়নি।  সবদিক থেকে গুণাবলীসম্পন্ন পুরুষ সঙ্গী মেলা ভার। কিছু মৌলিক জিনিস আছে যেগুলো নারী-পুরুষের চাওয়ার মধ্যে তেমন কোনো পার্থক্য নেই। তবে পাওয়ার মধ্যে অনেক অনেক পার্থক্য আছে।  সবার দৃষ্টিভঙ্গি কিন্তু এক নয়। আপনার চোখে যা সুন্দর অন্যের চোখে তা তেমন সুন্দর নাও হতে পারে।  নারীর পছন্দ, অপছন্দ চাওয়া-পাওয়া ইত্যাদির বিস্তর সন্ধান করেছেন গবেষকরা।  অনাবৃত রয়েছে অনেক রহস্য।

অস্ট্রেলিয়ান মনোবিজ্ঞানী সিগমন্ড ফ্রয়েড মনে করেন, মেয়েদের মন পুরুষদের চেয়ে অনেক পরিষ্কার থাকে। আর সে কারণে মেয়েরা তাদের মনটাকে ঘন ঘন বদলান। আবার তাদের অনেক প্রিয় বিষয় আছে যা তারা একেবারেই বদলান না।

একজন নারী সঙ্গী বা পাত্র বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কোন কোন গুণাগুণ যাচাই করেন তারই কিছুটা –

শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ পাত্র নির্বাচনের জন্য অনেক তোড়জোড় দিয়েই শিক্ষাগত যোগ্যতা দেখা হয়। কারণ শিক্ষাগত যোগ্যতার সাথে ক্যারিয়ার জড়িত থাকে। সামাজিকভাবে সুপ্রতিষ্ঠিত পাত্র না হলে এবং ভালো ক্যারিয়ার না থাকলে পাত্রীর বাবা মা বিয়ে দিতে চান না। কিন্তু বর্তমান ক্যারিয়ারের পাশাপাশি ক্যারিয়ার ভিত্তিক চিন্তা ভাবনা, যোগ্যতা এবং উজ্জ্বল ভবিষ্যতটাও দেখা উচিত।

সঠিক বয়সের পার্থক্য: আজকাল অনেকে এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দেন না। সমবয়েসি কিংবা পাত্রী বড়ও বিয়ে করে থাকেন। কিন্তু স্বাভাবিক নিয়ম অনুযায়ী পাত্রের পাত্রীর চাইতে ৩-৫ বছরের বয়সের পার্থক্য থাকা উচিত। কারণ সাইকোলজিস্টদের মতে মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের ম্যচিউরিটি একটু দেরিতে আসে।

শারীরিক সুস্থতা: অনেকেই শুধুমাত্র বাহ্যিক সৌন্দর্য, বয়স, ক্যারিয়ারের কারণে পাত্র পছন্দ করে ফেলেন। কিন্তু বয়সের আগে শারীরিক সুস্থতা নিয়ে সচেতন হওয়া উচিত। এর মানে এই নয় যে সাধারণ বিষয় ধরে বসে থাকা উচিত। ভবিষ্যৎ এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা ভেবে পাত্র/পাত্রীর সুস্থতার পরীক্ষা গুরুত্বপূর্ন।

মানবিক গুণাবলী: মানুষটির মানবিক মূল্যবোধ কতোটা ভালো তা পরীক্ষা করে দেখা দরকার। কারণ নিজের চাইতে ছোটো এবং পজিশনের ছোটো মানুষের প্রতি তার আচরণ খারাপ হলে তার মানসিক এবং মানবিক মূল্যবোধ না থাকারই কথা। এবং এই ধরণের মানুষের সাথে সংসার পাতা যায় না।

ব্যক্তিত্ববান : আপনি দেখতে আকর্ষণীয় নাও হতে পারেন, কিন্তু ব্যক্তিত্ববান তো হতে পারেন। ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন পুরুষদের নারীরা বেশি পছন্দ করে থাকেন। কারণ ব্যক্তিত্ববান পুরুষ সঙ্গীর পাশাপাশি অন্যের দৃষ্টি কাড়তে সক্ষম।

সৎ এবং বিশ্বস্ত : সঙ্গী সৎ এবং বিশ্বস্ত হবে এমনটা প্রতিটি নারী আশা করেন। তারা চান সঙ্গী যেন অবশ্যই সৎ ও স্মার্ট হয়।  নারীরা সততার মাপকাঠিতে পুরুষকে সবার আগে যাচাই করেন তার বিশ্বস্ততা। এ ক্ষেত্রে সবসময় আপনার সঠিক অবস্থানটাই জানান। এতে তার মধ্যে বিশ্বস্ততা তৈরি হবে।

পরিপক্ষ ও শান্ত স্বভাবের : লক্ষ্য করে দেখুন তিনি কতোটা খোলা মানসিকতার মানুষ। কারণ মানসিকতা যদি ছোটো হয় তাহলে আপনার ব্যক্তিস্বাধীনতায় তিনি হস্তক্ষেপ করবেন এবং আপনার ওপর কারণে অকারনে সন্দেহের দৃষ্টি দেবেন। তাই এই ধরণের মানুষ নির্বাচন করে বসবেন না। সাধারণত নারীদের মানসিক পরিপূর্ণতা পুরুষের আগে আসে। নারীরা চান তার পুরুষ সঙ্গীটি যেন মানসিকভাবে পরিপক্ক এবং শান্ত স্বভাবের হন। ভালোবাসার ক্ষেত্রে আবেগ প্রকাশ করেন এবং একইসঙ্গে সাহস করে সিদ্ধান্ত নেয়ার যোগ্যতা থাকে। এক কথায় নারীরা তার সঙ্গীর ওপর নির্ভর করতে পছন্দ করেন। তাই মুহূর্তে মুহূর্তে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা পুরুষের সঙ্গ থেকে নিজেকে মুক্ত রাখুন।

কিছুটা হলেও হাসিখুশি মেজাজের: অনেকেই আছেন অনেক গম্ভীর মেজাজের হয়ে থাকেন কিন্তু তার মধ্যে কিছুটা হলেও রসবোধ থাকে। কিন্তু যারা সত্যিকার অর্থেই একেবারে গম্ভীর তাদের সাথে সংসার করা এবং সময় কাটানো বেশ কঠিন।

আপনার সাথে মনের মিল: বিয়ের আগেই দেখে নিন আপনাদের মধ্যে মিলটা কতোখানি। আপনারা কি একই ধরণের চিন্তা করেন কিনা বা একই আদর্শে বিশ্বাসী কিনা। কারণ একজন অনেক খোলামেলা মনের অধিকারী হয়ে নিচু মনমানসিকতার মানুষের সাথে সংসার টিকিয়ে রাখতে পারবেন না।

সত্যবাদী : নারীরা সত্যবাদী পুরুষদের বেশি পছন্দ করেন। যদি দীর্ঘ সম্পর্কে জড়াতে চান সঙ্গিনীর সঙ্গে কখনো সত্য গোপন করবেন না। অথবা কোনো কিছু মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে সঙ্গিনীকে বিব্রত করবেন না। আপনি অপছন্দনীয় কিছু একটা করে ফেললেও তা লুকোনো হবে আপনার জন্যে আরো বড় ভুল। কারণ আপনার দোষের যদি কোনো কিছু থাকে তা সত্যি করে বলাটাকে মেয়েরা আরো বেশি পছন্দ করেন। তাই নারীদের সঙ্গী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে পাত্র কতটুকু সত্যবাদী তা পরখ করে নেয়াই শ্রেয়।

আর্থিক নিরাপত্তা: প্রতিটি নারীই কর্মঠ সঙ্গী পছন্দ করেন, এযুগে উচ্চ শিক্ষিত অনেক নারীই কর্মক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছেন,  তারপর ও বেশীর ভাগ নারীই চান নিজের জীবন সঙ্গী অবশ্যই কর্মঠ হবেন।  তবে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে অনেক নারীই সঙ্গী বাছাইয়ে সরকারী চাকুরীজীবীদের বেশী প্রাধান্য দিয়ে থাকেন।  আবার শহরের বেড়ে উঠা সচ্ছল ও উচ্চ শিক্ষিত নারীদের মাঝে উন্নত দেশে প্রতিষ্ঠিত অথবা প্রতিষ্ঠিত ব্যাবসায়ী, বহুজাতিক কোম্পানীর চাকুরীজীবীদের পছন্দের প্রধান্য লক্ষ্য করা যায়।  আবার মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়েদের ক্ষেত্রে খুব বেশী চাহিদা না থাকলেও শিক্ষিত ও কর্মক্ষম পুরুষ তাদের প্রথম পছন্দ হয়, হোক সে সরকারী, বেসরকারী চাকুরে কিংবা প্রবাসী; সেখানে আর্থিক নিরাপত্তার বিয়য়টি ব্যাপক প্রাধান্য পায়। এজন্য কর্মক্ষম, স্বাবলম্বী ও ব্যাক্তিত্ববান একজন পুরুষই প্রাধান্য পেয়ে থাকে।

পোশাকে রুচিশীল : বিশেষজ্ঞদের মতে, রুচিহীন পোশাকের পুরুষদের কোনো কিছুই মেয়েদের আকর্ষণ করে না। সাধারণত চলতি ফ্যাশন নারীদের কাছে প্রিয়। তাই একটু ফ্যাশনেবল থাকতে হবে। ভালো পোশাকই আপনার রুচির পরিচায়ক।

চুলে স্টাইলিশ : চুলের ভালো একটা কাটিং আপনার চেহারা বদলে দেবে অনেকখানি। চেহারার আদলের সঙ্গে মানানসই চুলের ছাঁট নারীদের কাছে আপনাকে আকর্ষণীয় করে তুলবে। তাদের সামনে আপনার উপস্থিতির ওপর চুলের ছাঁট অনেক গুরুত্ব রাখে।

কথা বলার স্টাইল : আপনার স্টাইলেই কথা বলুন। অন্যকে একদম নকল করবেন না। কথা বলার সময় অপ্রয়োজনীয় কিছু কথা একদম বলবেন না। বারবার যেন আঞ্চলিকতার টান কথার মাঝে চলে না আসে। শুদ্ধ সহজ ও সাবলীল ভাষায় কথা বলার চেষ্টা করতে হবে। মনে রাখতে হবে, ভালোভাবে কথা বলতে জানলে আপনার সঙ্গিনী শুধু আপনার কথা শোনার প্রতীক্ষায় থাকবেন।

উপহার দেয়া : মেয়েরা হঠাৎ করে পছন্দনীয় গিফট পেয়ে চমকে যেতে মারাত্মক ভালোবাসেন। চকোলেট, সুন্দর কথা লেখা গিফট কার্ড বা ফুল এগুলোর কথা নিশ্চয় সবাই জানেন। আরো কি কি জিনিস রয়েছে তাদের পছন্দের তালিকায় সেগুলো কৌশলী হয়ে জেনে নিতে হবে। তাকে হঠাৎ করে সুসজ্জিত কিছু একটা উপহার দিয়ে চমকে দেয়া খুব পছন্দ করেন। দেখবেন, আপনার কাছ থেকে এমনই একটা গিফট আশা করেছিলেন আপনার সঙ্গিনী।

কেউই চান না তার বিবাহবিচ্ছেদ হোক। মানুষ যখন বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তখন সারাজীবন একসাথে একই ছাদের নিচে বসবাসের স্বপ্ন নিয়ে বিয়ে করেন। কিন্তু একে অপরকে বুঝতে না পারা এবং ভুল বোঝাবুঝি বা সন্দেহের কারণে হয়তো বিবাহের সম্পর্কে টানাপোড়নের সৃষ্টি হয়। এবং বেশি টানাপোড়নের কারণে অনেক সময় না চাইতেও বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। তাই বিয়ের আগেই ভাবুন। পাত্র  পছন্দের সময় মাথায় রাখুন ভবিষ্যতের ব্যাপারগুলো। পাত্র পছন্দ হলেও মিলিয়ে দেখুন তার কিছু গুণ রয়েছে কিনা যা ভবিষ্যতে আপনাদের দাম্পত্যজীবন সুখী করে তুলবে।

জীবনসঙ্গীকে যে কথা বলতেই হবে

দুটি মানুষের কথোপকথনের মাধ্যমেই একটি সম্পর্কের সূচনা হয়। এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই কেউ একজনকে জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নেন। জীবনভরই দুজনের মধ্যে চলে কথার বিনিময়। তবে কিছু কিছু কথা আছে যেগুলো নিয়ে নারীরা লুকোচুরি করেন। ওই কথাগুলো তিক্ত হলেও আপনার জীবনসঙ্গীকে বলতেই হবে।

টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে এমন সাতটি বিষয় সম্পর্কে বলা হয়েছে, যেগুলো আনন্দময় সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে বড় ভূমিকা রাখে।

এ মুহূর্তে শারীরিক সংসর্গ নয়
আপনি চাইছেন না, অথচ আপনার সঙ্গী আপনাকে খুব কাছে পেতে চাইছেন। তাঁর ইচ্ছার কাছে আত্মসমর্পণ করবেন না। আপনি শারীরিক সংসর্গে লিপ্ত হতে না চাইলে সঙ্গীকে সরাসরি না বলে দিন। আপনার অনিচ্ছার কথাটি জানাতে রাখঢাক করবেন না।

আপনার প্রত্যাশা
আপনার সম্পর্ক কোন দিকে মোড় নিচ্ছে, আপনি কি মনের মানুষের কাছ থেকে আরও বেশি কিছু চান? তাঁর সঙ্গটাকে কেমন অনুভব করছেন? এসব বিষয় অবশ্যই তাঁকে জানাতে হবে।

অন্য কাউকে ভালোবাসা
আপনি একজনের সঙ্গে চার বছর ধরে সংসার করছেন। এরই মধ্যে অন্য একজনকে আপনার মনে ধরেছে। কিন্তু এটি লুকিয়ে রাখবেন না। প্রথম মানুষটিকে জানিয়ে দিন। অন্যথায় আপনি একই সঙ্গে দুজন মানুষের সঙ্গে অন্যায় করবেন।

বেশি খরচ করে ফেলেছি
এখানে-সেখানে সামান্য অর্থ খরচের বিষয়টি না জানালেও চলে। তবে কখনো কখনো গয়না, সম্পত্তি বা অন্য কোনো খাতে বেশি অর্থ খরচ হয়ে যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে খরচের বিষয়টি প্রিয় মানুষটিকে জানিয়ে দেন।

মানসিকভাবে বিপর্যস্ত
আপনার জীবনসঙ্গীর চাচি বা খালা আপনার পোশাক-আশাক নিয়ে বিদ্রূপাত্মক মন্তব্য করেছেন কিংবা আপনার দেবরের প্রেমিকা বিষয়টি ফাঁস করে দিলেন। এমন বিষয় নিয়ে আপনি প্রিয়জনের সঙ্গে অবশ্যই কথা বলবেন। আপনি তাঁর কাছে জানতে চাইবেন কীভাবে উদ্ভূত পরিস্থিতি থেকে নিজেকে বাঁচানো যায়।

পছন্দ, অপছন্দ এবং আরও কিছু
আপনার পছন্দ-অপছন্দ, পছন্দের খাবার, অতীতের গভীর সম্পর্ক কোনো কিছু বর্তমান সঙ্গীর কাছে আড়াল করবেন না।

আমার জন্য কিছুটা সময়
কিছু সময় আছে, যখন আপনি একাকীই কাটাতে চান। এ বিষয়ে সঙ্গীকে স্পষ্ট করে বলে দিন। এতে করে ওই মুহূর্তে আপনি সংঘাত এড়াতে পারবেন। কিন্তু আপনার একান্ত মুহূর্ত সম্বন্ধে কাছের মানুষটি যদি না জানে, তবে হিতে বিপরীত হতে পারে। সুত্রঃ প্রথম আলো

হিন্দু বিবাহ নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা উচিত

আমাদের দেশে হিন্দুধর্মাবলম্বীদের বিয়ে তাদের শাস্ত্রমতে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। হিন্দুধর্মাবলম্বীদের বৃহত্তম দেশ ভারত হিন্দু বিবাহ নিবন্ধন ও বিচ্ছেদসংক্রান্ত আইন বহু আগেই (১৯৫৫) প্রণীত হয়ে বলব আছে। এমনকি ভারতের একজন বিধবাও দ্বিতীয় দার পরিগ্রহ করতে পারেন।

আমাদের দেশে হিন্দু বিবাহবিচ্ছেদ ও বিধবা বিবাহ প্রচলন আইন প্রণীত না হওয়ায় আইনগতভাবে কোনো হিন্দু পুরুষ বা মহিলা বিবাহবিচ্ছেদ ঘটাতে পারেন না এবং একজন বিধবাও আবার বিয়ে করতে পারেন না।

স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বনিবনা না হলেও সারা জীবন ক্ষেত্রবিশেষে পৃথক বাসস্থানে অবস্থান করতেও বিবাহবিচ্ছেদ ঘটাতে পারেন না। অনুরূপভাবে একজন যুবতী হিন্দু মহিলা তাঁর স্বামী রোগে-শোকে বা দুর্ঘটনাজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করলেও আবার বিয়ে করতে পারেন না। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের উদ্যোগে প্রণীত হিন্দু বিধবা বিবাহ প্রচলন আইন (১৮৫৬) ভারতে আইন হিসেবে গৃহীত হলেও আমাদের দেশে আদৌ এ ব্যাপারে কোনো আইন প্রণয়ন করা হয়নি।

হিন্দু বিবাহ নিবন্ধন আইন

হিন্দু নারীদের বিয়েসংক্রান্ত প্রতারণা, বিয়ে-পরবর্তী দালিলিক প্রমাণ সৃষ্টির লক্ষ্যে ও সহজে হিন্দু নারীদের আইনি সুরক্ষা প্রদানের উদ্দেশ্যে হিন্দু বিবাহ নিবন্ধন হিন্দুধর্মাবলম্বীদের জন্য ঐচ্ছিক রেখে ‘হিন্দু বিবাহ নিবন্ধন আইন-২০১২’ সংসদে পাস করা হয়। বিদেশ ভ্রমণ, অভিবাসন ইত্যাদি ক্ষেত্রেও বিবাহ নিবন্ধন-সম্পর্কিত দালিলিক প্রমাণ একটি অপরিহার্য বিষয়।

১৯৬১ সালে মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশের ৫ ধারার মাধ্যমে মুসলিম বিবাহ নিবন্ধন বাধ্যতামূলক এবং নিবন্ধন না করাকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। মুসলিম শরিয়া আইন অনুসারে মুসলিম বিবাহবিচ্ছেদ ঘটানো যায় এবং বিধবা মুসলিম নারীও আবার বিয়ে করতে পারেন।

কোনো কোনো হিন্দু ধর্মীয় নেতার মতে, হিন্দু বিয়ে বৈদিক মন্ত্র উচ্চারণে সাত পাকে বাঁধা বিধায় এ বিয়ের মাধ্যমে আত্মার সঙ্গে আত্মার, মাংসের সঙ্গে মাংসের ও অস্থিতে অস্থিতে মিলন ঘটায়। বিয়ের নিবন্ধন আইন প্রণীত হলে হিন্দু বিয়ের মূল ভিত্তি নষ্ট হবে বলেও তাঁদের ধারণা। নিবন্ধনের ফলে একজন হিন্দু মহিলার একজন হিন্দু পুরুষের সঙ্গে শুধু সম্পর্ক স্থাপিত হবে, স্বামীর অবর্তমানে স্বামীর পরিবারের কোনো দায়বদ্ধতা থাকবে না—এমনটাই দাবি তাঁদের।

অনেকেই এটাকে খোঁড়া যুক্তি হিসেবে উড়িয়ে দিতে চান। তাঁদের বক্তব্য হলো, বিবাহ নিবন্ধন হিন্দু বিয়ের আচার-অনুষ্ঠান, রীতি-নীতিতে কোনোভাবেই খর্ব করবে না। বিবাহ নিবন্ধনের মাধ্যমে শুধু বিয়ে প্রমাণের জন্য একটি অতিরিক্ত দালিলিক প্রমাণ সৃষ্টি হবে।

আইনের ৬ ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে, ‘হিন্দু ধর্ম, রীতি-নীতি ও আচার-অনুষ্ঠান অনুযায়ী হিন্দু বিবাহ সম্পন্ন হওয়ার পর ওই বিবাহের দালিলিক প্রমাণ সুরক্ষার উদ্দেশ্যে, বিবাহের যেকোনো পক্ষের নির্ধারিত পদ্ধতিতে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হিন্দু বিবাহ নিবন্ধক নির্ধারিত পদ্ধতিতে বিবাহ নিবন্ধন করিবেন।’ অনেক আইনজ্ঞ ও বিশিষ্টজনের মতে, কোনো আইন ঐচ্ছিক হতে পারে না, আইন প্রণয়নের উদ্দেশ্য হলো আইনে বিধিবিধান প্রতিপালনের বাধ্যবাধকতা।

তাঁদের মতে, হিন্দু বিবাহ নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা হলে সাত পাক ঘোরা ও অন্যান্য আচার পালনে কোনো সমস্যা হবে না। গত ২৩ ডিসেম্বর প্রথম আলোর এক প্রতিবেদনে হিন্দু বিবাহ নিবন্ধন না থাকার কারণে কাননবালার বিড়ম্বনা তুলে ধরা হয়। সেখানে বলা হয়েছে, ১৭ বছর আগে কাননবালাকে তাঁর দুই সন্তানসহ ফেলে রেখে তাঁর স্বামী চলে যান এবং দ্বিতীয় বিয়ে করেন। গাজীপুরের স্বামী পরিত্যক্ত কাননবালা এখন একজন আশ্রয়হীন ভাসমান নারী।

কাননবালার দাবি, তাঁদের বিবাহের নিবন্ধনমূলক কোনো দালিলিক প্রমাণ না থাকায়ই তাঁর স্বামী তাঁকে এবং সন্তানদের অস্বীকার করার শক্তি পেয়েছেন। কাননবালা তাঁর জীবনের ঘটনাপ্রবাহ থেকে হিন্দু বিবাহ নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করার দাবি তুলেছেন সরকারের কাছে। দেশের আর্থ-সামাজিক ধর্মীয় ও যুগের চাহিদার কারণে হিন্দু বিবাহ নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা উচিত বলে মনে করি।

Hindu Marriage Media, Brahman Marriage Media, Kshatriya Marriage Media, Chhettri Marriage Media, Vaisya Marriage Media, Sudra Marriage Media, Hindu

সন্দেহের ভূত…

সন্দেহের ভূত অনেকের মাথাতেই চেপে বসে। দাম্পত্যেই সাধারণত বেশি দেখা যায় এমন পরিস্থিতি। কখনো স্বামী, কখনো স্ত্রী মনে করেন যে তাঁর সঙ্গীর অন্য কারও সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। যদিও তা বাস্তবে সত্য নয়। এই সন্দেহপ্রবণতাকে বলা হয় মরবিড জেলাসি, যার আরেকটি পোশাকি নাম ওথেলো সিনড্রোম। শেক্সপিয়ারের নাটকের চরিত্র ওথেলো এই সন্দেহের ভূতের কবলে পড়ে তাঁর স্ত্রী ডেসডিমোনাকে হত্যা করেছিলেন।

ভ্রান্ত বিশ্বাস, খুঁতখুঁতে মনোভাব থেকে এ সমস্যা হয়ে থাকে অনেকের। এই সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তির স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড ব্যাহত হয়। সাধারণত ব্যক্তিত্বের ধরন, পারিপার্শ্বিকতার প্রভাব, আর্থিক অসংগতি, নিজের যৌন দুর্বলতা, আত্মবিশ্বাসের অভাব, মাদকে আসক্তি, মানসিক রোগ ইত্যাদি কারণে সন্দেহপ্রবণ হয়ে ওঠে ব্যক্তি। সন্দেহের কারণে অতি উৎকণ্ঠা, বিষণ্নতা, খুঁতখুঁতে বা মারমুখী আচরণ, ঘুমের সমস্যাও দেখা যায়। সন্দেহ দিনের পর দিন চলতে থাকলে দাম্পত্য সম্পর্কে ফাটল দেখা যায়, পারিবারিক সম্প্রীতি নষ্ট হয়। সবচেয়ে ভয়াবহ হলো সন্দেহের বশবর্তী হয়ে সন্দেহভাজনকে হত্যা, সন্তান হত্যা, গুরুতর আঘাত বা আত্মহত্যার মতো ঘটনাও ঘটতে পারে।

সন্দেহের বিষয়টি যখন বড় আকার ধারণ করে, তখন সেটাকে বলা হয় প্যারানয়েড ডিলিউশন। যাঁর মধ্যে এ সমস্যা থাকে, তিনি তাঁর সঙ্গীকে অবিশ্বাস করেন, বিশ্বাস করেন আশপাশের সবাই তাঁর ক্ষতি করতে চায়, কখনো মনে করতে পারেন তাঁর কাছের মানুষেরা তাঁর খাবারে বিষ মিশিয়ে দিচ্ছে ইত্যাদি। অপর দিকে ওথেলো সিনড্রোমের ক্ষেত্রে সন্দেহটি খুবই সুনির্দিষ্ট, সঙ্গীর অন্য কারও সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে—এই ভ্রান্ত বিশ্বাসের মধ্যেই সন্দেহ সীমাবদ্ধ।

সন্দেহের ভূত তাড়াতে:

দাম্পত্য সম্পর্কের মধ্যে সাধারণ ভুল-বোঝাবুঝি বা সন্দেহ তৈরি হলে বিষয়টিকে বড় হতে না দিয়ে শুরুতেই তা নিয়ে একে অপরের সঙ্গে আলোচনা করুন।
আপনার সন্দেহটি সঠিক কি না, তা বারবার যাচাই করে দেখুন।
সুস্পষ্ট প্রমাণ ছাড়া সঙ্গীকে দোষী সাব্যস্ত করবেন না, সন্দেহের ঘটনাটি তাঁর দিক থেকেও দেখুন।
সন্তানদের এই বিষয়ে জড়াবেন না।
গোপনে নজরদারি এড়িয়ে চলুন, গোয়েন্দার ভূমিকায় না থেকে বন্ধুর ভূমিকায় বিষয়টি জানার চেষ্টা করুন।
অধীনের কর্মচারী, কাজের লোক, গাড়িচালক বা নিরাপত্তাকর্মীদের কাছ থেকে এ বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করবেন না।
আপনাদের সম্পর্কে ফাটল ধরাতে তৃতীয় কেউ ষড়যন্ত্র করছে কি না, তা যাচাই করুন।
আপনি নিজে সন্দেহের শিকার হলে, সাময়িক সমাধানের জন্য মিথ্যা বলবেন না।
হঠকারী আচরণ এড়িয়ে চলুন।যদি মনে হয়, এটি সাধারণ ভুল-বোঝাবুঝির চেয়ে কিছু বেশি বা দুজনের কারও মধ্যে কোনো মানসিক সমস্যা রয়েছে, তবে দেরি না করে দ্রুত মানসিক রোগবিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

আহমেদ হেলাল (প্রথম আলো)