মানুষ কেন পরকীয়ায় জড়ায়

ইউকিপিডিয়ার মতে পরকীয়া (ইংরেজি: Adultery বা Extramarital affair বা Extramarital sex) হল বিবাহিত কোন ব্যক্তির (নারী বা পুরুষ) স্বামী বা স্ত্রী ছাড়া অন্য কোন ব্যক্তির সাথে বিবাহোত্তর বা বিবাহবহির্ভূত প্রেম, যৌন সম্পর্ক ও যৌন কর্মকান্ড। মানবসমাজে এটি লঘু বা গুরুভাবে নেতিবাচক হিসেবে গণ্য পাশ্চাত্য আধুনিক সমাজে এর প্রতি নেতিবাচক মনোভাব বজায় থাকলেও এটি আইনত অপরাধ বলে বিবেচিত হয় না, তবে অভিযোগ প্রমাণিত হলে পরকীয়াকারী ব্যক্তির বিবাহিত সঙ্গী তার সাথে বিবাহবিচ্ছেদের জন্য কোর্টে আবেদন করতে পারেন।

তবে কিছু ইসলামি রাষ্ট্রসমূহে এর জন্য কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে, যা হল পাথর নিক্ষেপ করে মৃত্যুদন্ড প্রদান। মনোচিকিৎসায় একথা স্বীকৃত যে, পিতামাতার পরকীয়া সন্তানের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর এবং সামাজিক সম্পর্ক ও যোগাযোগে বিরূপ প্রভাব ফেলে এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা সন্তানের মানসিক বিষন্নতার ও আগ্রাসী মনোভাবের জন্ম দেয়। এছাড়া পারিবারিক ও দাম্পত্য সম্পর্কের অবনতিতে পরকীয়া প্রভাব রাখে ।

জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের চাইল্ড অ্যাডোলসেন্ট ও ফ্যামিলি সাইকিয়াট্রি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন –

“মনোদৈহিক ও সামাজিক কারণে মানুষ পরকীয়ায় জড়ায়। প্রথমে আসে দৈহিক বিষয়। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যৌন সম্পর্কে অতৃপ্তি থেকে অনেকে এ সম্পর্কে জড়ায়। সেক্স মানুষের একটি শরীরবৃত্তীয় চাহিদা। যদি স্বামী-স্ত্রীর যৌনজীবন দুর্বল হয়, তাহলে অপর ব্যক্তির প্রতি আসক্তি তৈরি হতে পারে। কারো মধ্যে যদি DRD4 জিনের উপস্থিতি বেশি হয়, তাঁদেরও পরকীয়া বা বাড়তি সম্পর্কে জড়ানোর প্রবণতা থাকতে পারে।

অনেক সময় মানসিক সমস্যার কারণেও মানুষ পরকীয়ায় জড়াতে পারে। যাঁদের মধ্যে বাইপোলার মুড ডিজঅর্ডার আছে, তাঁদের পরকীয়ার সম্পর্কে জড়ানোর প্রবণতা দেখা যায়। তাঁরা কোনো কিছুর মধ্যে স্থিরতা খুঁজে পায় না।

সঙ্গীর উদাসীনতা ও দূরত্বের কারণেও অনেক সময় মানুষ পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে জানিয়ে তিনি বলেন, অনেক সময় স্বামী-স্ত্রী বাস্তবতার কারণে, কাজের কারণে হয়তো দূরে চলে যায়। তখন তাঁদের মধ্যে পরকীয়ার আগ্রহ বাড়ে। অনেক সময় পশ্চিমা সংস্কৃতির ধাঁচ নিজেদের মধ্যে আনতে চায়, তখন পরকীয়া বাড়ে। এ ছাড়া স্বামী-স্ত্রীর দ্বন্দ্ব, দূরত্ব ইত্যাদির জন্যও অন্যের প্রতি আগ্রহ, আসক্তির ঘটনা ঘটে”

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তানজির আহম্মদ তুষার বলেন –

“প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে পরকীয়ার বিষয়টি চলে আসছে। উন্নয়ন ও মঙ্গলের কথা চিন্তা করে মানুষ একগামী। তবে মানুষ মূলত বহুগামী। পরকীয়াতে যেকোনো একজনকে বিবাহিত হতে হবে অথবা দুজনই বিবাহিত থাকতে পারেন”।

মানুষ কেন পরকীয়ায় জড়ায় –

এ বিষয়ে তানজির আহম্মদ বলেন – “এক ধরনের প্রয়োজন বা চাহিদার কারণে মানুষ পরকীয়ায় জড়ায়। অনেক সময় শারীরিক প্রয়োজন থাকে। আর্থিক প্রয়োজন থাকে। স্ট্যাটাস বাড়ানোর জন্যও কেউ কেউ পরকীয়ায় জড়ায়। অনেক সময় মানসিক প্রয়োজন থাকে। আবার কিছু বিষয় শেয়ার করতে করতে অনেকে একসময় পরকীয়ায় জড়িয়ে যায়।

অতিরিক্ত নির্ভরতা থেকেও পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়তে পারে, আবার অনেক সময় অবস্থার কারণেও হয়তো পরকীয়ায় জড়ায়। হতে পারে একসঙ্গে কোথাও বেড়াতে গেল। একপর্যায়ে হয়তো ভালো লেগে গেল। তখনও পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। আবার দীর্ঘসময় একসঙ্গে কাটাতে কাটাতে, বন্ধুত্ব থেকেও অনেক সময় পরকীয়া হয়ে যায়। অনেকে শখ থেকেও পরকীয়ায় জড়ায়।

অন্য আরেকটি শরীর কেমন, একে জানার একটি আগ্রহ থাকে। অনেকে আবার ভাবে, ‘ওরা কি সুখী! এই মানুষটির সঙ্গে থাকতে পারলে হয়তো আমার অনেক সুখ লাগত।’ এ থেকেও অনেকে ওই ব্যক্তির প্রতি আগ্রহ অনুভব করে। অনেক সময় মিডিয়াও পরকীয়ার প্রবণতা তৈরি করে। বিভিন্ন ধরনের পর্নোসাইট দেখে পরকীয়ার প্রতি আগ্রহ তৈরি হতে পারে। আসলে অধিকাংশ মানুষেরই একটি বাড়তি চাহিদা থাকে। তবে সামাজিক ও ধর্মীয় নিয়মনীতির কারণে এ সম্পর্কে জড়ায় না। অনেকে কিছু সুবিধা আদায়ের জন্য পরকীয়া করে জানিয়ে তিনি বলেন, হয়তো আর্থিক সাহায্য পাবে এ সম্পর্কে জড়ালে, এমন ভাবনা থেকেও কেউ কেউ পরকীয়ায় জড়ায়”।

সাইকোলজিস্ট ইশরাত জাহান বীথি বলেন –

পরকীয়ার পেছনে জড়ানোর একটি বড় কারণ হলো শূন্যতা। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যখন শূন্যতা তৈরি হয়, তখন আরেকজন সেখানে প্রবেশ করে। হয়তো স্বামী বা স্ত্রীর আর আগের মতো করে কথা বলে না বা আদর করে না। যত্ন কম নেয়। এই বিষয়গুলোর কারণে অন্যের প্রতি আসক্তি তৈরি হয়। স্বামী-স্ত্রী দূরে থাকলেও এ সমস্যা হতে পারে। মেয়েদের বিয়ের আগে হয়তো যৌন চাহিদা তেমন থাকে না। বিয়ের পর তাঁরা বুঝতে পারে বিষয়টি। শুধু যৌনতায় অংশগ্রহণ নয়, কথাবার্তায়ও বিষয়টি থাকতে হয়। তখন যদি অন্য কেউ সেই কথাগুলো শোনায়, তাহলে তাঁর প্রতি আগ্রহ কাজ করে।

শারীরিক গঠন এ ব্যাপারে কাজ করতে পারে। কিছু কিছু ছেলে চিকন স্বাস্থ্যের মেয়ে পছন্দ করে। আবার কিছু কিছু ছেলে হয়তো একটু স্থুল স্বাস্থ্যের মেয়ে পছন্দ করে। সন্তান হওয়ার পর অনেক মেয়ে স্থুল হয়ে যায়। এতে স্ত্রীর প্রতি আগ্রহ কমে যেতে পারে। আবার নারীর বেলায়ও অনেকে হয়তো খুব হ্যান্ডসাম ছেলে পছন্দ করে, যা হয়তো তাঁর স্বামীর সঙ্গে মেলে না।

স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ছোট ছোট চাওয়াগুলো হয়তো পূরণ হচ্ছে না। হয়তো স্ত্রী চাঁদ দেখতে পছন্দ করে, স্বামী সেটিকে বিলাসিতা মনে করে। এ রকম সময় অন্য কেউ যখন সেই জায়গায় আসে, তখন নির্ভরতা বেড়ে যায়। আবার অনেকে ভাবে, আমি তো একসঙ্গে দুটোকেই ব্যালেন্স করছি। তাই আমি এমন একটি সম্পর্ক করতেই পারি।

আবার অনেকে মনে করেন, স্বামী বা স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও খুব ভালো একজন বন্ধু অথবা বান্ধবী থাকতে পারে। যার সঙ্গে মানসিক শেয়ারিং ও শারীরিক সম্পর্ক—দুটো বিষয়ই থাকতে পারে। এটা দোষের কিছু নয়। কারণ, বন্ধুত্বের সম্পর্কে কোনো প্রতিজ্ঞা নেই। যে কেউ যেকোনো সময় হয়তো এখান থেকে সরে আসতে পারে। একে অনেকে পরকীয়া বলে মনে করে না।

আবার অনেকে বিবাহবিচ্ছেদের পর বৈবাহিক সম্পর্কে জড়াতে চায় না। বিবাহিত কারো সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে নিজের চাওয়াগুলো পূর্ণ করতে চায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মানসিক ও শারীরিক প্রয়োজন মেটানোর বিষয়টিই এখানে মুখ্য হয়। এসব ভাবনা ব্যক্তিকে পরকীয়ার প্রতি আকৃষ্ট করে তোলে বলেই মনে করেন ইশরাত শারমীন রহমান।”

প্রত্যাশার উর্দ্ধে সম্পর্ক

বেশিরভাগ মানুষের ক্ষেত্রে তারা নিজেদের জীবনে সম্পর্কগুলিকে যেভাবে বজায় রাখেন, সেটিই মূলত তারা যেভাবে বেঁচে থাকেন তার মান নির্ধারণ করে। এটি যখন আপনার জীবনে এতখানি গুরুত্বপূর্ণ একটি ভূমিকা পালন করছে, তখন এটির দিকে নজর দেওয়ার প্রয়োজন আছে। কোন একটি সম্পর্কের ভিত্তি কী? মানুষের সম্পর্কের প্রয়োজন কেন পড়ে? বিভিন্ন স্তরে সম্পর্ক তৈরি হয়; বিভিন্ন ধরণের চাহিদা পূরণের জন্য বিভিন্ন ধরণের সম্পর্ক রয়েছে। চাহিদাগুলি শারীরিক, মানসিক, আবেগ সংক্রান্ত, সামাজিক, অর্থনৈতিক বা রাজনৈতিক হতে পারে – এগুলি যে কোনও ধরণের হতে পারে। 

জীবনের এই অংশটি নিজেই একটি সম্পূর্ণ সত্তা – কেন এটি অসম্পূর্ণ বোধ করছে? কেন এটি অন্য একটি জীবনের সাথে অংশীদারি করে নিজেকে পরিপূর্ণ করার চেষ্টা করছে?

সম্পর্কের প্রকৃতি যাই হোক না কেন, সম্পর্কের ধরণ যাই হোক না কেন, তবুও আসল ব্যাপারটি হলো আপনার একটি চাহিদা আছে যেটা পূরণ করা প্রয়োজন। “না, আমার কিছু পাওয়ার নেই, আমি দিতে চাই।” দেওয়াও গ্রহণ করার মতই একটি প্রয়োজন। “আমাকে কাউকে কিছু দিতে হবে” – এটি “আমাকে কিছু পেতে হবে” এর মতোই একটি চাহিদা। এখানেও একটা চাহিদা আছে। চাহিদাগুলি ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে, সেই অনুযায়ী সম্পর্কগুলিও বৈচিত্র্যময় হতে পারে।  

মানুষের ভেতর চাহিদা বেড়ে গেছে কারণ তাদের মধ্যে অসম্পূর্ণতার একটি বিশেষ অনুভূতি আছে এবং লোকেরা নিজের ভিতরে একটি বিশেষ পরিপূর্ণতা অনুভব করার তাগিদে সম্পর্ক তৈরি করছে। আপনি যখন আপনার কোন প্রিয়জনের সাথে ভাল সম্পর্ক রাখেন তখন আপনি নিজেকে সম্পূর্ণ অনুভব করেন। আপনার যখন সেটা থাকে না, আপনি অসম্পূর্ণ বোধ করেন। কেন এমনটা হয়? জীবনের এই অংশটি নিজেই একটি পরিপূর্ণ সত্তা – কেন এটি অসম্পূর্ণ বোধ করছে? কেন এটি অন্য একটি জীবনের সাথে অংশীদারি করে নিজেকে পরিপূর্ণ করার চেষ্টা করছে? মূল কারণটি হ’ল আমরা এই জীবনটিকে তার পূর্ন গভীরতা এবং মাত্রায় অনুসন্ধান করিনি। যদিও এটিই হলো ভিত্তি, সম্পর্কের একটি জটিল প্রক্রিয়া রয়েছে। 

প্রত্যাশার উৎস

যেখানে সম্পর্ক আছে সেখানে প্রত্যাশাও রয়েছে। বেশিরভাগ লোকেরা এমন সব প্রত্যাশা করে চলেছে, যা এই গ্রহের কোনও মানুষই কখনও পূরণ করতে পারে না । বিশেষত একটি পুরুষ-নারী সম্পর্কের ক্ষেত্রে, প্রত্যাশাগুলি এতটাই বেশি যে আপনি কোনও দেব-দেবীকে বিয়ে করলেও তারা আপনাকে ব্যর্থই করবে। আপনি যখন প্রত্যাশা বা প্রত্যাশার উৎস বুঝতে অক্ষম, তখন আপনি প্রত্যাশা পূরণ করতেও পারবেন না। তবে আপনি যদি এইসব প্রত্যাশাগুলির উৎস বুঝতে পারেন, তাহলে আপনি একটি খুব সুন্দর সম্পর্ক তৈরি করতে পারেন। 

যদি আপনি নিজের স্বাভাবিক প্রকৃতিতেই খুশি থাকেন, সম্পর্কগুলি আপনার কাছে সুখ খোঁজার উপায় না হয়ে নিজের আনন্দ প্রকাশ করার একটি মাধ্যম হয়ে উঠবে।

মূলত, আপনি সম্পর্ক খুঁজতে যান কেন ? কারণ আপনি দেখবেন যে আপনার জীবনে কোনও ধরণের সম্পর্ক ছাড়া আপনি হতাশ হয়ে পড়বেন। আপনি একটি সম্পর্ক চাইছেন কারণ আপনি সুখী হতে চান, আপনি আনন্দে থাকতে চান। বা অন্য কথায় আপনি অপর এক ব্যক্তিকে আপনার সুখের উৎস হিসাবে ব্যবহার করার চেষ্টা করছেন। আপনি যদি নিজের প্রকৃতিতেই খুশি থাকেন, তবে সম্পর্কগুলি আপনার জন্য সুখ খোঁজার প্রচেষ্টা না হয়ে আপনার আনন্দ প্রকাশ করার একটি মাধ্যম হয়ে উঠবে। আপনি যদি কারও কাছ থেকে সুখ নিঙড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন এবং সেই ব্যক্তি যদি আপনার কাছ থেকে‌ আনন্দ বার করে নেওয়ার চেষ্টা করে- তবে কিছু সময় পর এটি একটি যন্ত্রনাদায়ক সম্পর্কে পরিণত হবে। শুরুর দিকে এটি ঠিক মনে হতে পারে কারণ কিছু একটা পূর্ণ হচ্ছে। কিন্তু আপনি যদি নিজের আনন্দ প্রকাশ করার জন্য সম্পর্ক তৈরি করেন তবে কেউ আপনার সম্পর্কে অভিযোগ করবে না- কারণ আপনি অন্য ব্যক্তির কাছ থেকে আনন্দ চাইছেন না বরং নিজের আনন্দ প্রকাশ করার প্রক্রিয়াতে আছেন।  

আপনার জীবন যদি সুখের অন্বেষণ না হয়ে, আপনার আনন্দের অভিব্যক্তি হয়ে ওঠে তবে সম্পর্কগুলি স্বাভাবিকভাবেই সুন্দর হয়ে উঠবে । আপনার লক্ষাধিক সম্পর্ক থাকলেও সেগুলিকে ভালভাবে ধরে রাখতে পারেন। অন্য কারোর প্রত্যাশা পূরণের চেষ্টার এই পুরো সার্কাসটাই হয় না; কারণ আপনি নিজেই যদি আনন্দের বহিঃপ্রকাশ হয়ে ওঠেন, তবে যেভাবেই হোক তারা আপনার সাথেই থাকতে চায়। আপনার জীবনকে সুখের পশ্চাদ্ধাবন থেকে আনন্দের বহিঃপ্রকাশের দিকে নিয়ে যাওয়া -, সম্পর্কগুলিকে যদি সত্যিই সমস্ত স্তরে কাজ করতে হয়, এটাই হওয়া প্রয়োজন; কারণ তারা বিভিন্ন ধরণের।  

বিভিন্ন ধরনের সম্পর্ক

আপনার শরীর এই মুহূর্তে এমনভাবে তৈরি যে এটি এখনও এমন অবস্থায় রয়েছে যেখানে এটির একটি সম্পর্কের প্রয়োজন। আপনার মন এমনভাবেই তৈরি করা হয়েছে যে এটির এখনও একটি সম্পর্কের প্রয়োজন পড়ে। আপনার আবেগগুলি এমনভাবে রয়েছে যে এটির এখনও একটি সম্পর্কের প্রয়োজন আছে। এবং আরো গভীরভাবে তলিয়ে দেখলে- আপনার শক্তিগুলি এমনভাবেই তৈরি যে আপনার এখনও সেই স্তরে একটি সম্পর্কের প্রয়োজন। যদি আপনার শরীর কোনও সম্পর্কের সন্ধানে যায় তবে আমরা একে যৌনতা বলি। আপনার মন যদি সম্পর্কের সন্ধানে যায় তবে আমরা একে সাহচর্য বলি । যদি আপনার আবেগ সম্পর্কের সন্ধানে যায় তবে আমরা তাকে ভালবাসা বলে থাকি । যদি আপনার শক্তিগুলি কোনও সম্পর্কের সন্ধানে যায় তবে আমরা একে বলি যোগ।.  

আপনার মধ্যে যখন কোনও বাধ্যবাধকতা থাকেনা এবং আপনি যা কিছু করেন তা যদি সচেতন হয়ে ওঠে, সম্পর্ক সত্যিকারের আশীর্বাদে পরিণত হয়, কোনও আকাঙ্ক্ষা বা দ্বন্দ্ব নয়।

আপনি দেখবেন যে এই সকল প্রচেষ্টা- সেটি যৌনতা, সাহচর্য, প্রেম বা যোগ, যাই হোক না কেন, আপনি অন্য কোনও একটা কিছুর সাথে একাত্ম হওয়ার চেষ্টা করছেন; কারণ কোনও একটি কারণে এই মুহুর্তে আপনি যা, তা যথেষ্ট নয়। আপনি অন্য একজনের সাথে এক হতে পারেন কি করে ? শারীরিকভাবে আপনি চেষ্টা করেছেন। আপাতদৃষ্টিতে মনে হয় আপনি এটা করে ফেলবেন কিন্তু আপনি জানেন যে আপনি আলাদা হয়ে যান। মানসিকভাবেও আপনি চেষ্টা করেছেন, অনেক সময়ই আপনার মনে হয়েছে যে ওখানে সত্যিই পৌঁছে গেছেন; তবে আপনি জানেন দুটি মন কখনও এক হয় না। আবেগ বশত আপনার মনে হয়েছে আপনি এটি সত্যিই করে ফেলেছেন, কিন্তু বিভাজন খুব সহজেই চলে আসে। 

কোনো একটা কিছুর সাথে এক হয়ে যাওয়ার এই আকাঙ্ক্ষাটি পূরণ করার উপায় কী? অনেক ভাবে এটিকে দেখা যায়। আপনি হয়ত আপনার জীবনের কোনও একটা সময় এটি লক্ষ্য করেছেন- ধরুন আপনি খুবই আনন্দিত বা প্রেমময় বা পরমানন্দময় এবং আপনার জীবনীশক্তি খুবই উচ্ছ্বসিত বোধ করছে, আপনি একটি বিশেষ প্রসার অনুভব করছেন। এই যে বিস্তার, এর অর্থ কী? প্রথমত, ঠিক কাকে আপনি ‘আমি’’ বলে সম্বোধন করেন ? “এটি আমি এবং এটি আমি নই” – আপনার জানার ভিত্তিটা ঠিক কী? অনুভূতি, তাই না? আপনার অনুভূতির পরিসীমার মধ্যে যা কিছু আছে, তাই আপনি। এই অনুভূতির সীমানার বাইরে যা কিছু তাই “অন্য” এবং অন্যটি সর্বদাই খারাপ। আপনি এই খারাপের অভিজ্ঞতা নিতে চান না, তাই আপনি নিজের অংশ হিসাবে মানবতার অন্তত একটি ছোট্ট অংশ অনুভব করতে চান। আপনার জীবনের অংশ হিসাবে কাউকে বা অপরকে অন্তর্ভুক্ত করার এই ব্যাকুলতাকেই সম্পর্ক বলে। আপনি যদি অপরকে অন্তর্ভুক্ত করেন তবে সেই ‘খারাপ’ আপনার কাছে ‘স্বর্গের মতো সুন্দর’ হয়ে উঠতে পারে। সেই স্বর্গের অভিজ্ঞতা লাভ করতে, আপনার জীবনে স্বর্গের সেই টুকরোটিকে পেতেই সম্পর্ক স্থাপনের জন্য এত ব্যাকুলতা। 

কোনও সম্পর্কের পেছনে যে আকাঙ্ক্ষাই থাকুক না কেন, তা যদি আপনি দেহ বা মনের মাধ্যমে বা আবেগের মধ্য দিয়ে চেষ্টা করেন, আপনার আকাঙ্ক্ষা থেকেই যাবে; কখনই সেই একাত্মতা জানতে পারবেন না। আপনি একাত্মতার কোন মুহুর্ত হয়তো অনুভব করবেন, তবে এটি কখনই বাস্তবায়িত হবে না। আপনার চারপাশের সমস্ত জীবনকে যদি আপনি নিজের অংশ হিসেবে অনুভব করেন – যোগ হ’ল এই একাত্মতা অনুভব করার মাধ্যম ; এখানে আপনার অস্তিত্বের অভিজ্ঞতা সম্পূর্ণ অন্যরকম হবে। যখন এটা ঘটবে, তখন সম্পর্ক কেবল অন্যের প্রয়োজনের দিকে খেয়াল রাখার একটি উপায় হয়ে উঠবে, নিজের নয়; কারণ আপনার নিজের আর কিছুই প্রয়োজন নেই। আপনার মধ্যে যখন কোনও বাধ্যবাধকতা থাকে না এবং আপনি যা কিছু করেন তা যদি সচেতন হয়ে ওঠে, সম্পর্ক সত্যিকারের আশীর্বাদে পরিণত হয়, কোনও আকাঙ্ক্ষা বা দ্বন্দ্ব নয়। 

ফিচার টি সদগুরুর সম্পর্ক ও প্রত্যাশা বিষয়ক বক্তিতা থেকে সংকলিত

সম্পর্ক যখন অসমবয়সি

দু’জনেই প্রেমে মশগুল হয়ে রয়েছেন। একে অপরকে চোখে হারান। কিন্তু একজন যৌবন উত্তীর্ণ এবং আর একজন সদ্যযুবক বা যুবতী। এই ধরনের ‘মে-ডিসেম্বর’ প্রেম দেখলে অনেকেরই হয়তো ভ্রুযুগল ঈষৎ বাঁকতে পারে। কিন্তু তাতে কী যায় আসে! প্রকৃত প্রেম বলতে কি স্রেফ সমবয়সি যুগলকেই বোঝায়? হলই না হয় প্রেমে ‘এজ গ্যাপ’!

যে কোনও সম্পর্ক ধরে রাখার মূলমন্ত্রই দু’জনের মধ্যে বোঝাপড়া। তাই নিজেদের সম্পর্ক নিয়ে নিজেরা যদি যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী হন তাহলে এগিয়ে যেতে বাধা কোথায়? তবে বয়সের অনেকটা ফারাক থাকলে পরবর্তীকেলে কিছু সমস্যা আসতে পারে। তাই যে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ভাল করে ভেবে নিন।

দুটো মানুষের একে অপরকে ভাল লাগা, কাছে আসা, একে অপরের সঙ্গ উপভোগ করা— এর সঙ্গে বয়সের খুব একটা সম্পর্ক নেই। তবুও প্রেমের সম্পর্কে দু’জনের মধ্যে যদি বয়সের অনেকটা ফারাক থাকে তাহলে সেই সম্পর্ক নিয়ে দোটানায় থাকেন অনেকেই। কিন্তু দু’জনের মধ্যে সম্পর্ক যদি যথেষ্ট মজবুত হয় তাহলে বয়সের পার্থক্য থাকলেও খুব একটা সমস্যা হয় না। বলিউড থেকে শুরু করে খেলার জগতে এরকম উদাহরণ কিন্তু নেহাত কম নয়। তবুও অসমবয়সি সম্পর্কের ক্ষেত্রে অনেকসময়ই কিছু চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়। পরিবারের দিক থেকে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া আসতে পারে। সম্পর্কের পরিণতি নিয়ে নিজের মনের মধ্যেও প্রশ্ন জাগা অস্বাভাবিক নয়। তাই অসমবয়সি সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার আগে কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখুন।

  • অসমবয়েসি প্রেমের ক্ষেত্রে নিজেদের মনে কোনও দ্বিধা থাকলে ভবিষ্যতের দাম্পত্যে তার প্রভাব পড়তে পারে। তাই সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার আগে নিজেকে একটু সময় দিন। ভাল করে ভেবে দেখুন আপনি যা করতে যাচ্ছেন, তা আপনার কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ। পরিবার বা কাছের মানুষজনের কাছে নিজের দৃষ্টিভঙ্গি সঠিকভাবে মেলে ধরতে পারবেন তো?
     
  • নিজেদের সম্পর্ক নিয়ে যদি যথেষ্ট কনফিডেন্ট থাকেন তাহলে পরিবার বা বন্ধুবান্ধবদের কাছ থেকে তা লুকিয়ে রাখবেন না। ভবিষ্যতে একসঙ্গে থাকার সিদ্ধান্ত নিলে তা পরিবারের কাছে খুলে বলুন। নিজেরা বলতে না পারলে কোনও পারিবারিক বন্ধু আত্মীয়র সাহায্য নিতে পারেন বাড়ির বড়দের বোঝানোর জন্যে। একে অপরের পরিবারের সঙ্গে মেলামেশা বাড়ান। একসঙ্গে ঘুরতে যাওয়া, কেনাকাটা, খাওয়াদাওয়ার মাধ্যমে সুন্দর সম্পর্ক গড়ে তুলুন। এতে দুই পরিবারের মধ্যেই আপনাদের সম্পর্কটা মেনে নেওয়া অনেক সহজ হবে। পারিবারিক সম্মতি সবসময়ই একটা ইতিবাচক প্রভাব বিস্তার করে।
     
  • অসমবয়সি সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার আগে সন্তান চাওয়া নিয়ে একে অপরের সঙ্গে পরিষ্কার ভাবে আলোচনা করে নিন। আপনার সঙ্গী যদি বয়সে আপনার চেয়ে অনেকটা বড় হন হতে পারে তাঁর আগের সম্পর্কে সন্তান আছে। তিনি নতুন সম্পর্কে হয়তো সন্তান নাও চাইতে পারেন। আবার সঙ্গী বয়সে অনেকটা ছোট হলে দেরিতে সন্তান চাইতে পারেন। তাই সম্পর্কের শুরুতেই এই ধরনের বিষয়গুলি নিয়ে পরিষ্কার করে আলোচনা করে নিন। একে অপরের মানসিকতা এবং কম্প্যাটিবিলিটি ভাল করে বুঝে নিন। এতে সম্পর্কে স্বচ্ছতা বজায় থাকে। 
     
  • বয়সের ফারাক বেশি হলে তাই নিয়ে বন্ধুবান্ধবরা ঠাট্টাতামাশা করতে পারেন, আত্মীয়স্বজন বা প্রতিবেশীরা বিভিন্নরকম মন্তব্য করতে পারেন। এই ধরনের পরিস্থিতির জন্য তৈরি থাকুন। নিজেদের মধ্যে কথাবার্তার সময় বয়েসের পার্থক্যের ব্যাপারটা সবসময় এড়িয়ে যাবেন না। বরং দুজনে মিলেই ঠিক করুন যে চারপাশের প্রতিবন্ধকতা কীভাবে জয় করতে পারেন।

সম্পর্কের সুখ দুখ

জানালার শিক ধরে আকাশ পানে চেয়ে আছে তামান্না। পড়ন্ত বিকেলে মেঘেরা বাহারী রঙ গায়ে মাখিয়ে ছোটাছুটি করছে। অপরূপ সে দৃশ্য। কিন্তু সেদিকে তাকিয়ে থেকেও তা দেখছে না তামান্না। কিংবা বলা চলে দেখতে পারছে না। পারবে কিভাবে, তার মন তো তার নিজের মাঝে নেই। উদাস মন মহাশূন্য ভেদ করে ছুটে যাচ্ছে, খুঁজে বেড়াচ্ছে তার হারানো ঠিকানা। কিন্তু পাচ্ছে না। এ জন্য তামান্নার কষ্ট হচ্ছে। ভীষণ কষ্ট। বুকের মাঝে কষ্ট যেন কামড়ে ধরছে। বার বার ঘুরে ফিরে একটি মুখ ভেসে আসছে হৃদয়পটে। আর সঙ্গে সঙ্গে ফাকা হয়ে যাচ্ছে বুক, ফিরে আসছে কষ্টগুলো। দীর্ঘ পাঁচ বছরের ভালবাসার মানুষের সঙ্গে ব্রেকআপ হয়ে গেছে। কিন্তু বার বার ফিরে আসছে কাটানো মধুময় সে সময়গুলো আর সেই সঙ্গে ভালবাসা হারানোর কষ্ট। কোন কিছুতেই মন দিতে পারছে না সে। অথচ আর কিছুদিন পরেই তার পরীক্ষা। এখন কি করবে তামান্না? এরকম পরিস্থিতি তামান্নার মতো হাজারো তরুণ-তরুণীর। হৃদয় ভাঙ্গা কষ্ট থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য বিশ্বখ্যাত সংবেশনবিদ (হিপনটিসট) পল ম্যাককেনা এবং মনোচিকিৎসক ড. হগ উইলবর্ন কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। সেই আলোকেই কিভাবে ভগ্ন হৃদয়ের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়া যায় তা তুলে ধরা হলো।

কষ্টকে মেনে নিন

যাকে নিয়ে স্বপ্ন বুনেছেন, তার সঙ্গে সম্পর্ক ভেঙ্গে গেলে কষ্ট লাগাই স্বাভাবিক। কষ্ট না লাগলে বরং বলতে হবে আপনার ভালবাসায় খাদ আছে। তাই কষ্ট লাগবেই, এমনটা ভাবা শুরু করুন, দেখবেন কষ্ট অনেকটাই কমে গেছে। মনে রাখবেন মানুষের জীবন সুখ-দুঃখ মিলেই। ভালবাসার রঙিন সময়টাতে সুখের ভেলায় চড়ে কল্পজগতে পাড়ি দিয়েছেন মহাসমুদ্র, বুনেছেন কতসহস্র স্বপ্ন তার ইয়ত্তা নেই। তাই বলে যে জীবন সবসময় একরকমভাবেই যাবে, তা তো নয়। এটা জীবনের ধর্মও নয়। রাতের অন্ধকার ঘরে প্রবেশ করে কোন কিছু চিন্তা না করেই আপনি লাইটের সুইচ দেন, ঠিক তেমনি ভালবাসার সম্পর্ক ভেঙ্গে গেলে অচেতনভাবেই আপনার মনে অতীতের স্মৃতি চলে আসবে আর তা আপনাকে পোড়াবে, ভেঙ্গেচুড়ে দিতে চেষ্টা করবে, এটাকে স্বাভাবিক ধরে নিন। দেখবেন ধীরে ধীরে কষ্ট কমে যাবে।

পুরনো অভ্যাসগুলোকে পাত্তা দেবেন না

ভালবাসার সময়টাতে আপনাদের জানতে কিংবা অজানন্তে অনেক অভ্যাসই তৈরি হয়ে গেছে। এই অভ্যাসগুলোই এখন কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে, তাই না? এক কথায় বলব, ঝেড়ে ফেলুন। যে অভ্যাসগুলো আপনি সে সময়ে করেছেন, সেগুলোকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসার চেষ্টা করুন। জানি কষ্ট হবে, কিন্তু কী আর করা। মাথায় কেউ আর আঙুল চালিয়ে চুলগুলো এলোমেলো করে দিচ্ছে না, আঙুলে আঙুলে কাটাকাটি খেলা আর হচ্ছে না। এরকম হাজারো রোমান্টিক কাজ, কত খুনসুটিতে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছিলেন। এখন তা পোড়াচ্ছে। মনে করার চেষ্টা করুন, এগুলো নিতান্তই সে সময়কার অভ্যাস, এগুলো চিরন্তন নয়। সে সময় এগুলোতে অভ্যস্ত হয়ে গেছেন বলে এখনও যে তা করতে হবে এমনটা তো নয়, এভাবেই ভাবা শুরু করুন। দেখবেন অভ্যাসগুলোর শূন্যতা আপনাকে আর পীড়া দিচ্ছে না। ও, আর হ্যাঁ, আপনি অবশ্যই দুঃখবাদী রোমান্টিক গান শুনবেন না। এটা আপনার পোড়ামনের জ্বালা না কমিয়ে শতগুণ বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, সম্পর্ক ভাঙ্গার পর বেশিরভাগ মানুষই দুঃখের গান শোনে। না, একদমই না। আপনি মোটেও এ ধরনের গান শুনবেন না।

পরিবর্তন আনুন ভাবনায়

প্রেমময় সময়ে কত কিছুই না চিন্তা করেছেন ভাললাগার মানুষটিকে নিয়ে। কত স্বপ্নই না বুনেছেন। এখন ছাড়ুন তো এসব। অনেক হয়েছে, এবার ভাবনা থামান। ভাবনায় ভাললাগার মানুষটি বার বার চলে আসলেও মাথা ঝাড়া দিয়ে সরিয়ে ফেলুন। দেখুন তো অন্য কোন কিছু ভাবা যায় কিনা। যেমন ধরুন, আপনি আপনার চারপাশের পরিবেশ, মানুষ, সমাজ ইত্যাদি নিয়ে ভাবা শুরু করতে পারেন। মনে রাখবেন, ভাবনার আগের ফ্রেম থেকে নিজেকে সরিয়ে এনে নতুন ফ্রেম বসাতে হবে, নাহলে আপনার মুক্তি নেই। কী বুঝলেন তো? আরে ভাই, পুরনোকে আঁকড়ে ধরে পড়ে থাকলে তো হবে না, পৃথিবীতে কত কিছুই তো হচ্ছে, এগুলো নিয়ে ভাবা শুরু করুন, নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে ভাবা শুরু করুন। দেখবেন, একটা সময় কষ্ট ফিঁকে হয়ে আসবে।


অতীতকে যেভাবে দেখছেন তা পাল্টে দিন

সম্পর্ক ভেঙ্গে গেছে, তাই বলে কী স্মৃতিরা চলে গেছে? মোটেই না। অতীত সম্পর্ক নিয়ে ভাবা, কষ্ট কষ্ট খেলা এক ধরনের বদঅভ্যাস। কী, এই কথা শুনে মেজাজ বিগড়ে গেল? ভাবছেন, আপনাকে নিয়ে ইয়ার্কি করা হচ্ছে। তা নয়। অনেক নিরাশাবাদী মানুষ আছেন যারা অতীতের দুঃখ নিয়ে পড়ে থাকতেই বেশি ভালবাসেন। এটা তাদের বদঅভ্যাস। এই বদঅভ্যাসের জন্য তাদের দীর্ঘ সাধনা দরকার। সেটার অন্য সমাধান আছে। আর আপনি যদি নিরাশাবাদী না হন, তাহলে অতীতের স্মৃতি মনে চলে আসলে ভাবুন ঐটা আপনার কল্পনা ছিল। আপনি ওগুলো সিনেমায় দেখেছেন, বাস্তবে নয়। হোক না মিথ্যা, সমস্যা থেকে যদি ভাল থাকা যায়। মনকে যা বোঝাবেন তাই বুঝবে। মন বড় বোকা, হে।

বিবাহবিডি কল সেন্টারঃ +৮৮ ০১৯২২১১৫৫৫৫

মনে মনে প্রিয়ার ছবি আঁকুন

কী পাগল ভাবছেন। এতক্ষণ স্মৃতি ভুলে থাকতে বলে, এখন আবার বলছি প্রিয়ার ছবি আঁকতে, পাগল ছাড়া আর কী। কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলার বিষয়টা তো জানেন। এ পদ্ধতিটি আসলে সেরকমই। প্রথমে আপনি একটা দৃশ্যকল্প নিজের মনের মধ্য সেট করুন। চোখ বন্ধ করে দেখতে থাকুন আপনার ভালবাসার মানুষটি হাসছে, গাইছে, নাচছে, আপনার সঙ্গে খুনসুটি করছে। দেখতে বেশ ভালই লাগছে, তাই না। কিন্তু এ ভাললাগা তো বেশিক্ষণের নয়। একটু পরেই আসবে যন্ত্রণা। চিন্তা করবেন না। এবার দেখতে থাকুন আপনার ভাললাগার মানুষটি আপনার ওপর অযৌক্তিকভাবে রেগে যাচ্ছে, আপনি মান ভাঙ্গানোর চেষ্টা করছেন তবু কমছে না। দেখতে থাকুন তার বদ অভ্যাসগুলো আর সেই সঙ্গে আপনার খাপ খাওয়ানোর প্রাণান্তকর চেষ্টা। ভাবুন আপনি একজন সিনেমার পরিচালক ও অভিনেতা। আপনি আর আপনার ভাললাগার মানুষটি তাতে অভিনয় করছেন এবং দেখা দৃশ্যকল্পগুলো আপনার অভিনয় ও পরিচালনার মধ্য দিয়েই হচ্ছে। দেখুন তো আপনার অনুভূতিতে কোন পরিবর্তন আসছে কিনা। পরের দৃশ্যগুলোর কারণে আগের দৃশ্যকল্পের রঙিন ছবিগুলো সাদা কালো হয়ে যাচ্ছে, তাই তো। হ্যাঁ, এটাই আপনার বাস্তব জীবনে হতো যদি আপনার সম্পর্ক ছেদ না হতো। রঙিন জীবন সাদা কালো হয়ে যেত। এভাবে দৃশ্যকল্প আঁকলে দেখবেন ভালবাসার বেগ কমে গেছে।

সম্পর্কের উল্টো দিকটা তলিয়ে দেখুন

একটা কথা সবসময়ই সত্য, এক হাতে তালি বাজে না। এটা মাথায় আপনাকে রাখতেই হবে। যে সমস্যাগুলোর জন্য আপনার সম্পর্ক ভেঙ্গে গেছে, সেগুলো নিয়ে ভাবুন। সমস্যাগুলো তো নিশ্চয় ছোট ছিল না, তাই না? সম্পর্ক টিকে থাকলে সে সমস্যাগুলো আরও সৃষ্টি হতে পারত। তাই যা হয়েছে, ভাল হয়েছে, এমনটাই ভাবুন। মনে রাখবেন, দুষ্টু গরুর চেয়ে যেমন শূন্য গোয়াল ভাল, তেমনি সমস্যা তথা জটিলতাপূর্ণ সম্পর্কের চেয়ে না থাকাই ভাল। তাহলে আর সারা জীবন পস্তাতে হবে না। সম্পর্কের এই উল্টোদিকটি ভেবে দেখুন। দেখবেন, পুরনো সম্পর্কটি নিয়ে আপনার মধ্যে আর আপসোস জাগবে না। বরং মনে হবে, বেঁচে গেছি। আর যদি পারিবারিক কারণে আপনি নিজেই সম্পর্ক ছেদ করে থাকেন, তাহলেও সেটাকে আত্মত্যাগ হিসেবেই নিন। জীবনের প্রয়োজনে মানুষকে অনেক আত্মত্যাগ করতে হয়, অনেক কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়। তাই একে স্বাভাবিক ধরে নিন। নিজের পক্ষে যুক্তি দাঁড় করান। পরিবারের মানুষদের হাসিভরা মুখগুলোর কথা মনে করুন, দেখবেন আপনার কষ্ট অনেকটাই মনে যাচ্ছে।

নিজের দিকে তাকান

অনেক তো হলো, এবার নিজের দিকে তাকান। কান্নাকাটি অনেক করেছেন। আয়নায় নিজের চেহারাটি দেখুন। কী বিমর্ষ। চাঁদবদনের কী হাল করেছেন, দেখেছেন? এ কী সহ্য করা যায়! একটা কথা অপ্রিয় শোনায়, তবু চিরন্তন। আপনি বাঁচলে বাপের নাম। আর কিছু বলতে হবে? অনেক স্মৃতি স্মৃতি খেলা খেলেছেন, এবার নিজের দিকে একটু নজর দিন। এই দেশ সমাজ, আপনার পরিবারের প্রতি আপনার অনেক দায়িত্ব, এভাবে ভাবুন না একবার। নিজের জন্য এবং অন্যদের জন্য আপনাকে ঘুরে দাঁড়াতেই হবে, ভুলে যেতে হবে পুরনো স্মৃতি, এমন কথামালা আওড়াতে থাকেন। দেখবেন, আপনার ভেতর থেকে পুরনো স্মৃতি ভুলে নতুন করে বাঁচার তাগিদ সৃষ্টি হবে।

বিশ্বাস করুন আপনি আবারও প্রেমে পড়বেন

সময় বহমান, তাই তো? জীবনও বহমান। কারও জন্যই জীবন থেমে থাকে না। সম্পর্ক ভেঙ্গে গেছে বলে যে আবার কোন সম্পর্ক হবে না, তা তো না। এমন কোন নিয়ম তো কোথাও নেই যে, জীবনে আপনাকে একবারেই ভালবাসতে হবে। আর এমনটাও নয় যে, আপনি অতীতের ভালবাসা ছাড়া আর কাউকে ভালবাসতে পারবেন না। কেউ যদি বলে থাকে, তবে হয় আবেগের বশে বলে নয় ডাহা মিথ্যা কথা বলে। নতুন কারও সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধার চিন্তা করুন। বন্ধু খুঁজুন। পারলে বিপরীত লিঙ্গের কারও সঙ্গেই বন্ধুত্ব করুন। বিপরীত লিঙ্গের মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব আপনার পুরনো স্মৃতিকে ভুলে যেতে সাহায্য করবে। আর প্রেম করতে পারলে তো সোনায় সোহাগা।

হল্লার মাঝে ডুবে যান

দুঃখের সময় মানুষ যদি নিঃসঙ্গ থাকে, তখনই মানুষ বেশি কষ্ট পায়। স্মৃতিরা তাড়া করে ফেরে। এজন্য একাকী না থেকে বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে হৈহল্লায় মেতে উঠুন। জানি, মন সায় দেবে না। তবু বলছি, একটু মনে জোর এনেই আড্ডা দিতে যান। প্রয়োজনে বেশি সময় আড্ডা দিন। দেখবেন নির্মল আড্ডার মধ্যে দিয়েই আপনি ভুলে যেতে থাকবেন, পুরনো স্মৃতি। বন্ধুদের নিয়ে দূরে ঘুরে আসতে পারেন, পিকনিক করতে পারেন। কিংবা জড়িয়ে পড়তে পারেন সমাজসেবামূলক কাজে। আর ঘর থেকে বের হওয়ার অসুবিধা থাকলে বই পড়া শুরু করেন কিংবা লেখালেখি। যেভাবেই হোক নিজেকে ব্যস্ত রাখুন। দেখবেন ধীরে ধীরে আপনার কষ্ট কমে যাচ্ছে। আপনি আবার ফিরে যাচ্ছেন স্বাভাবিক জীবনে।

কোনো ভুল ছিল কি! এমন প্রশ্ন মনে উঁকি দিচ্ছে?

দ্বিধান্বিত মনের কারণে পড়াশোনা ও নিজের জীবনে যেন সময় দিতে পারছেন না দুজনে। হতাশা ভর করে সময় গুনে যাচ্ছেন ।  যেকোনো সম্পর্কের শেষের সময়টুকুতে আমরা ভেঙে পড়ি। দোষ-ত্রুটি আর ব্যর্থতাকে ধারণ করে জীবনকে অবসাদময় করে তুলি, যা আসলে ঠিক নয়। সম্পর্কচ্ছেদে মন খারাপ হতেই পারে, কিন্তু সেই মন খারাপ কখনোই দীর্ঘ সময় ধরে রাখা যাবে না। নিজের  জীবন বিকাশের জন্য সামনে পা বাড়াতে হবে। আপনি যদি নিজের মনকে বুঝতে পারেন, তাহলে যেকোনো দ্বিধা কাটিয়ে সামনে যেতে পারবেন। সম্পর্কচ্ছেদ নিয়ে বেশ কয়েকটি বিষয় খেয়াল রাখা উচিৎ।

দোষ-ত্রুটি নিয়ে ভাববেন নাঃ

সম্পর্কচ্ছেদের পরে আমরা সবচেয়ে বেশি ভাবি কার দোষ কিংবা কে দায়ী। মনের সঙ্গে লড়াই করে আমরা ব্যর্থতার জন্য কারণ খুঁজে বের করি। নানা কারণেই সম্পর্ক ভেঙে যেতে পারে, কিন্তু তাই বলে দোষ-ত্রুটি খুঁজে নেতিবাচক আচরণ করবেন না। দোষ-ত্রুটি মনে আসতে পারে, তা কাটিয়ে নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই কিন্তু জীবন।

এগিয়ে যেতে হবেঃ

যত দিনের সম্পর্ক থাকুক না কেন, কিংবা যত গভীর সম্পর্ক থাকুক না কেন, আপনাকে এগোতেই হবে। আপনি যদি অতীতের কথা ভাবতে থাকেন, তাহলে আরও বেশি হতাশাগ্রস্ত হবেন, কষ্ট পাবেন। রাতের পর রাত জেগে অতীতের সুন্দর সময়ের কথা ভাবলে আপনি আপনার বর্তমানকে নষ্ট করবেন। বর্তমান নষ্ট হলে কি আর দারুণ ভবিষ্য তৈরির সুযোগ থাকে, বলুন।

নিজের সঙ্গে বোঝাপড়া থাকতে হয়ঃ

সম্পর্কচ্ছেদ মানেই কিন্তু ব্যর্থতা নয়। নিজের মনের সঙ্গে কথা বলুন। নিজেকে বোঝার চেষ্টা করুন। এমন অবস্থায় আপনিই কিন্তু আপনার সবচেয়ে বড় সহায়। সম্পর্ক ভেঙে নিজেকে অপরাধী কিংবা দোষী ভেবে নিজেকে ছোট ভাবা ঠিক নয়। জীবনে অন্য সব সাফল্য-ব্যর্থতার মতোই সম্পর্কচ্ছেদকে ভাবুন।

ক্ষমা করতে শিখুনঃ

বিচ্ছেদের পর আমরা নিজেকে ক্ষমা করি না, নিজেই যেন নিজের শত্রু হয়ে যাই। আবার যে মানুষটিকে ভালোবাসতাম, তাকেও অপরাধী হিসেবে কল্পনা করতে থাকি, যা মোটেও ঠিক নয়। ওপাশের মানুষটিকে ক্ষমা করে, নিজের দুর্বলতা কাটিয়ে নতুন করে সামনে পা বাড়াতে শিখুন।

নিজের পায়ের ওপর দাঁড়াতে শিখুনঃ

বিচ্ছেদের পরে নিজেকে একাকী ভাবা শুরু করি আমরা। বন্ধুবান্ধব ও পরিবার থেকেও বেশ দূরে সরে যাই। এ সময়টায় নিজেকে নতুন করে চেনার চেষ্টা করুন। অতীতের গোলকধাঁধায় নিজেকে আটকে রাখবেন না। নিজের পায়ের ওপর দাঁড়িয়ে নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করুন।

নিজেকে শ্রদ্ধা করুনঃ

সম্পর্ক বিচ্ছেদের পরে নিজেকে ছোট আর দুর্বল মনে হয়। এটা কখনো ভাববেন না। জীবনে ব্যর্থতা আসবেই, নিজেকে কখনো অসম্মান করবেন না।

দৃঢ় চিন্তা করতে শিখুনঃ

সম্পর্ক থাকাকালীন ভবিষ্যৎ নিয়ে ইতিবাচক ভাবনা ভাবি আমরা, আর বিচ্ছেদ হলেই বিরহ। সম্পর্কের সমীকরণ ভেঙে গেলেও চিন্তাভাবনায় পরিবর্তন আনবেন না। সব সময় ইতিবাচক ও সৃজনশীল ভাবনায় মনকে ব্যস্ত রাখুন।

বিয়ের পরে ভালোবাসা কি আগের মত সতেজ থাকে!

রোমান্সের ব্যাপারে আমরা খোলামেলা আলোচনা না করলেও, আমরা সবাই স্বীকার করি যে দাম্পত্য সুখের জন্য রোমান্সের গুরুত্ব অনেক। যারা নতুন বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন তাদের উদ্দেশ্যে বলছি, বিয়ের প্রথম দিনের যে অনুভূতিটা পাচ্ছেন ঠিক প্রথম বিবাহ বার্ষিকী পর্যন্ত সেই একই রকম অনুভূতি পাওয়ার জন্য সম্পর্ককের যত্ন করতে হবে, বিষয়টা বলতে যতটা সহজ, মেনে চলা বেশ কঠিন।

বিয়ে করা মানে ভালোবাসা ফিকে হয়ে যাওয়া নয়।  বিয়ের পরেও ভালোবাসাকে সতেজ রাখাটা দম্পতি দুজনের উপরই নির্ভর করে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, বিয়ের পর কিছু সময় পার হওয়ার পর দাম্পত্য জীবনের রোমান্স কমতে থাকে।  বিশেষ করে বিয়ের পর বাবা, মা হওয়ার পর এই প্রবণতা বেশী বৃদ্ধি পেতে দেখা যায়। এরকম অবস্থা সৃষ্টিতে সঙ্গী একে অন্যকে দোষারোপ করে থাকে।

বিয়ের পরেও ভালোবাসাকে জীবিত রাখতে রোমান্স কে কি ভাবে কাজে লাগাবেন সে বিষয়ে ছোট একটা আলোচনা করা হলোঃ

বিয়ের পরের ডেটিং :  বিয়ের আগে যেভাবে একে অন্যের সাথে সময় কাটাতেন ঠিক বিয়ের পরেও চেষ্টা করবেন অন্তত মাসে একবার হলেও দুজনে বাহিরে কোথাও একান্ত সময় কাটাতে এতে করে দাম্পত্য জীবনে ভালোবাসা উচ্ছল থাকবে।

উপহার দিনঃ  সঙ্গীকে কোন কারন ছাড়াই প্রায়ই উপহার দিয়ে চমকে দিন এতে সঙ্গী অনেক খুশী থাকবে।  ফলে দুজনের মধ্যের ভালোবাসা অটুট থাকে।

সঙ্গীকে প্রশংসা করুনঃ আপনার জীবনে সঙ্গীর গুরুত্ব বোঝানোর জন্য তার প্রশংসা করুন যেমন- দিন শেষে স্ত্রীকে তার সারা দিনের কাজের জন্য প্রশংসা করতে পারেন, সাথে বলতে পারেন যে তাকে জীবন সঙ্গী হিসাবে পেয়ে আপনি অনেক গর্বিত। এরকম প্রশংসা সম্পর্কের গভীরতা বৃদ্ধি পায়।

প্রতিদিন একটা নির্দিষ্ট সময় এক সাথে কাটানঃ সারা দিনের কর্মব্যস্ততার পরে দুজন একটা নির্দিষ্ট সময় ঠিক করে রাখবেন একসাথে সময়টা কাটানোর, এই সময়টা গল্প করে বা নিজেদের পছন্দের কোন গেম খেলে কাটাতে পারেন।

ঘর সাঁজানোর জন্য দুজনে মিলে নতুন পরিকল্পনা তৈরি করুনঃ নিজেদের শোবার ঘর নতুন করে সাজানোর পরিকল্পনা করুন, পরিকল্পনা অনুসারে দুজনে মিলে কাজ করুন এতে একসাথে সময় কাটানো হবে মনও প্রফুল্য থাকবে, ভালোবাসার বৃদ্ধি হবে।

ছোট খাটো মনোমালিন্যতা কে মজার ছলে উড়িয়ে দেওয়াঃ দম্পতিদের মধ্যে যদি কোন মনোমালিন্যতা সৃষ্টি হয় তবে বিভিন্ন মজা ছলে বিষয়টাকে স্বাভাবিক করতে হবে।আরো অনেক উপায় আছে যার মাধ্যমে সহজে বিবাহিত জীবনের রোমান্স কে সারা জীবন একই রকম রাখা যায়, তবে চেষ্টাটা দুজনকে সমান ভাবে করতে হবে। একতরফা চেষ্টায় ভালোবাসা কখনো দীর্ঘস্থায়ী হয়ে টিকে থাকেনা।

দীর্ঘদিনের সম্পর্ক ভাঙতে পারে এ সাত কারণে

কারো সঙ্গে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার জন্য কী করা যাবে ও করা যাবে না, তার একটা সাধারণ তালিকা আছে। আপনার আচরণে যদি নিচের বিষয়গুলো বেশি থাকে, তাহলে ধরে নিন আপনার সম্পর্ক শীঘ্রই ভাংছে।

১. খুতঁখুঁতে স্বভাব
খুঁতখুঁতে স্বভাব কোনো সম্পর্কের ক্ষেত্রে লাল পতাকার মতো কাজ করে। আপনি যদি সবকিছুতেই খুঁত বের করেন তাহলে তা হতে পারে সম্পর্ক ভাঙার কারণ। আপনার সঙ্গীর পরিধেয় কাপড়, কথাবার্তা কিংবা দৈনন্দিন বিষয়ে সমালোচনা ও খুঁত খোঁজার ফলে ধারণা হতে পারে তার উপস্থিতি আপনার সহ্য হচ্ছে না। হতে পারে তার অনেক কিছুই আপনার মনের মতো নয়। তার মানে এই নয় যে, তার সব বিষয়ে পরিবর্তন আনার অধিকার সে আপনাকে দেবে। তার অদ্ভুত বন্ধুদের দূরে সরানো কিংবা রাত-দিন ভিডিও গেম খেলা বন্ধ করা– এসব অসংখ্য বিষয়ে চাপ না দেয়াই ভালো। মনে রাখবেন, সব বিষয়ে তাকে বিরক্ত করবেন না।

২. কাজই আপনার জীবন
আপনার চাকরি কিংবা কাজ নিঃসন্দেহে আপনার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। তবে আপনার সব বিষয়ের মধ্যমণি হিসেবে এ কাজকে রাখবেন না। কাজে তার কোনো জরুরি সাহায্য দরকার না হওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে বেশি আলোচনা না করাই ভালো। কাজের জন্য কোনো গুরুত্বপূর্ণ তারিখ মিস করা কিংবা সঙ্গীর সঙ্গে থাকার সময়েও অফিসের কাজে ব্যস্ত থাকা নিঃসন্দেহে তার জন্য বিরক্তিকর। এতে সঙ্গীর মনে হতে পারে তার সঙ্গে সম্পর্কের চেয়ে আপনার কাছে কাজই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য পরামর্শ হচ্ছে, কাজের সময় কাজ। সঙ্গীর সঙ্গে সময় কাটানোর সময় দূরে সরিয়ে রাখুন কাজ।

৩. আপনার ঘোড়া সামলান
কারো সঙ্গে ডেটিং শুরুর সঙ্গে সঙ্গে তাকে বিয়ের জন্য প্রস্তাব দিতে যাবেন না। অপেক্ষা করুন। স্রোতের সঙ্গে ভাসার চেষ্টা করুন। পরিচয়ের পরের দিনই আপনার পিতা-মাতার সঙ্গে তার পরিচয় করিয়ে দেয়ার চেষ্টা করবেন না। আগে আপনার মতামত তাকে জানান, তার মতামত জানুন। সে যদি আগ্রহী হয়, সবকিছু যদি ঠিক থাকে তাহলেই কেবল অগ্রসর হোন, নাহলে তাকে যেতে দিন।

৪. অতিরিক্ত ছেলেমানুষি
প্রতিদিন আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আপনি একজন দারুণ আকর্ষণীয় মানুষ বলা যেতে পারে। কিন্তু এসব বিষয় প্রতিনিয়ত আপনার নতুন সঙ্গীকে বলতে যাবেন না। এতে সে বিগড়ে যেতে পারে। সবকিছু একসঙ্গে না জানিয়ে ভবিষ্যতের জন্য কিছু সংরক্ষণ করে রাখুন।

৫. বিশ্বাসহীনতা
কোনো সুস্থ সম্পর্কের চাবিকাঠি হচ্ছে বিশ্বাস। বিশ্বাসকে ‍বুঝতে দিন। আপনি যদি ক্রমাগত সে কার সঙ্গে আছে, কার সঙ্গে কথা বলছে এসব নিয়ে ভাবতে হয়, তাহলে সম্পর্কের বিষয়ে নতুন করে চিন্তা করতে হবে। এভাবে ক্রমাগত ডুবতে থাকলে আপনি কাজি অফিস পর্যন্ত পৌঁছাতে পারবেন না।

৬. নিজের ছিদ্রগুলো দেখিয়ে দেয়া
আপনার বস আপনাকে ঘৃণা করে, আপনার বন্ধুরা হিংসা করে, আপনার বাবা-মা কোনো দাম দেন না, আপনি মোটা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে বেশি আলোচনা করবেন না। নিজের সব দুর্বলতা আপনার সঙ্গীর কাছে প্রকাশ না করাই ভালো। কোনো সঙ্গীই এসব বিষয় শুনতে পছন্দ করে না। তার বদলে সুখী ও ইতিবাচক বিষয় শুনতেই সবাই পছন্দ করে।

৭. খোলা রাখুন দরজা
আপনি যদি অন্য কারো সঙ্গে নতুন সম্পর্কে জড়িয়ে যান, তাহলে পুরনো সম্পর্ক থেকে পিছিয়ে যাওয়াই ভালো। এ বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা করাই বুদ্ধিমানের কাজ। মাথায় রাখতে হবে, নিজের ক্ষেত্র ছাড়া আপনার সঙ্গীর ক্ষেত্রেও এমনটা হতে পারে।

সুত্রঃ কালের কণ্ঠ 

বিয়েটা হলো মা-বাবার অমতে…

Couple-in-Loveবাড়ির সবচেয়ে ছোট, শান্ত আর চুপচাপ কলেজপড়ুয়া মেয়েটি একদিন হঠাৎ উধাও হয়ে গেলেন। খোঁজ করতে করতে তাঁর ঘরে পাওয়া গেল সাবেক গৃহশিক্ষকের লেখা একতাড়া চিঠি, যার কোনো কোনোটিতে এ রকম একটি ঘটনার পরিকল্পনার আভাস। কী ঘটেছে, তা নিয়ে আর সন্দেহ রইল না কারও। মা শয্যাশায়ী হলেন। বাবা লাইসেন্স করা বন্দুক নিয়ে চেঁচাতে লাগলেন। এমন লক্ষ্মী একটা মেয়ে এমন কাজ করতে পারে, বিশ্বাসই করলেন না বড় ভাইয়েরা। কাজেই সব দোষ গিয়ে পড়ল বেচারা গৃহশিক্ষকের ওপর। তাঁর নামে অপহরণের মামলা হলো, প্রভাব খাটিয়ে থানায় ধরে আনা হলো। কিন্তু মেয়ে সাবালক এবং স্বেচ্ছায় তাঁর সঙ্গে গেছে প্রমাণিত হওয়ায় পুলিশ তাঁকে ছেড়েও দিল। কিন্তু ভাইয়েরা ছেড়ে দেওয়ার পাত্র নন। তাই একদিন রাস্তায় মেয়ের ভাইয়েরা মারধর করলেন প্রেমিকপ্রবরকে। পালিয়ে বিয়ের সাধ মিটিয়ে দেওয়ার জন্য হাত-পা প্রায় ভেঙেই দিলেন। বর্ণনা করছিলেন ঘটনার নায়ক নিজেই। ২০ বছর আগে মফস্বল শহরের বেচারা গৃহশিক্ষক আর বর্তমানের এক উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা। সে যে কী সময় গেছে! হ্যাঁ, এখন দুই পরিবারের সবাই বিষয়টা মেনে নিয়েছেন বটে, বড় ভাইয়েরা বোনজামাইকে যথেষ্ট ভালোবাসেন এখন; কিন্তু সেই মারের দাগ এখনো হাঁটুতে রয়ে গেছে।

হুট করে কাউকে না জানিয়ে পরিবারের অমতে বিয়ে করে ফেলা সেই রোমিও-জুলিয়েটের আমল থেকে শুরু করে এখনকার দিনেও ঘটছে। কখনো কখনো দুই পরিবারে এমন ঘটনার প্রতিক্রিয়া হয় ভয়াবহ। কেবল সদ্যবিবাহিত ছেলেমেয়ের ওপর তাঁরা ঝাঁপিয়ে পড়েন তা নয়, কখনো কখনো তাঁরা নিজেরাও জড়িয়ে পড়েন নানা কোন্দল, মারামারিতে—এমনকি রক্তপাতও দেখা যায় এমন ঘটনাকে কেন্দ্র করে।

বিয়ে মানে কেবল দুটি ছেলেমেয়ের নয় বরং দুটি পরিবারের বন্ধন। বিয়ের আগে-পরে দুই পরিবারের নানা অনুষ্ঠান-আচার পালনের মাধ্যমে এই সম্পর্ক রচিত হয়। তাই হুট করে না জানিয়ে বিয়েতে এই প্রথা ও স্বাভাবিকতা ব্যাহত হয়। ফলে ভালোভাবে কেউই বিষয়টি মেনে নিতে পারেন না। আর এসব ক্ষোভ আর ক্রোধ গিয়ে পড়ে সেই ছেলেমেয়ে দুটির ওপর। এক ভয়ংকর বৈরী সময় পার করতে হয় নববিবাহিত দম্পতিকে। কিন্তু এই ক্ষোভ যদি রীতিমতো জিঘাংসা আর নিষ্ঠুরতায় পরিণত হয়, তখন? সম্প্রতি পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদটি একটু মনে করিয়ে দিচ্ছি।

গত ১৮ জুন ঢাকার খিলক্ষেত থানার নিকুঞ্জ মডেল কলেজের ছাত্রী মনিরা পারভীনকে নিয়ে পালিয়ে বিয়ে করেন নাসির হোসেন। প্রথম দিন এক বন্ধুর বাড়িতে থাকলেও পরদিন পরিবারের আশ্বাসে বাড়ি ফেরেন তাঁরা। কিন্তু বাড়ি ফেরার পরই নাসিরের বাবা, চাচা ও অন্য আত্মীয়রা চড়াও হন মনিরার ওপর। নাসিরকে অন্য একটি ঘরে আটকে রেখে প্রচণ্ড মারধর করা হয় মনিরাকে। ইট ও কাঠ দিয়েও পেটানো হয়। গুরুতর জখম মনিরা ২২ জুন মারা যান। (সূত্র: প্রথম আলো, ২৬ জুন)

আমাদের সমাজের দৃষ্টিতে ‘পালিয়ে বিয়ে করা’ অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে, কিন্তু সেই অপরাধের শাস্তি কি ছেলে বা মেয়েটিকে একেবারে মেরে ফেলা? পরিবারের সম্মান কি একটা তরতাজা তরুণ প্রাণের চেয়েও বেশি হয়ে দাঁড়ায়? প্রতিবেশী দু-একটি দেশে মেয়েদের প্রায়ই শিকার হতে হয় ‘অনার কিলিং’-এর। এই অনার কিলিং মানে আর কিছু নয়, পরিবারের সম্মান রক্ষার্থে দোষী মেয়েটিকে হত্যা করা। মেয়েদের প্রাণ কি এই দুনিয়ায় এতই ঠুনকো আর সস্তা?

এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মাহবুবা নাসরীন বলেন, সন্তানেরা যদি নাবালক হয়, তবে এই বিয়ে যে বৈধ হবে না এবং নিজের পায়ে দাঁড়ানো পর্যন্ত অপেক্ষা করার পরামর্শ দিয়ে আপাতত বিষয়টা মেটানো যায়। দুই পরিবার একসঙ্গে বসে বিষয়টা মীমাংসা করতে পারে। আলোচনায় পরিবার ও পাড়ার মুরব্বিদেরও নেওয়া যায়। যদি তাঁরা সাবালক হন, তবে ধীরে-সুস্থে বিষয়টা মেনে নিয়ে কীভাবে একে সামাজিক রূপ দেওয়া যায়, তা নিয়ে আলোচনা চলতে পারে। কিন্তু সহিংস হওয়া, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা, এমনকি প্রাণে মেরে ফেলার মতো ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক ও অন্যায়। তাঁর সঙ্গে একমত জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির নির্বাহী পরিচালক সালমা আলী। তিনি বলেন, মেয়ের বয়স ১৮ বছর ও ছেলের বয়স ২১ বছর হলে আইন অনুযায়ী তাঁরা বিয়ে করতে পারবেন। এটি নিয়ে অভিভাবকেরা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত না হয়ে ছেলের সম্পর্কে খোঁজখবর নিন। ছেলেটি মাদকাসক্ত, বিবাহিত ইত্যাদি সমস্যা থাকলে মেয়েকে বুঝিয়ে বলতে হবে।

 সবচেয়ে বড় কথা, বড় কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ছেলেমেয়েরা পরিবারের কারও সঙ্গে পরামর্শ বা আলোচনা না করার অর্থ হলো পরিবারে তাঁদের বন্ধুস্থানীয় কেউ না থাকা। তাই অভিভাবকদের উচিত, সন্তানের আরও কাছাকাছি যেতে চেষ্টা করা, বন্ধুর মতো সবকিছু জানতে চেষ্টা করা, যাতে সন্তান অনাকাঙ্ক্ষিত ও হঠকারী কোনো সিদ্ধান্ত হুট করে না নেয়।

লিখেছেনঃ  তানজিনা হোসেন
প্রথম প্রকাশ – দৈনিক প্রথম আলো | জুলাই ০৩, ২০১৩

সন্দেহের ভূত…

সন্দেহের ভূত অনেকের মাথাতেই চেপে বসে। দাম্পত্যেই সাধারণত বেশি দেখা যায় এমন পরিস্থিতি। কখনো স্বামী, কখনো স্ত্রী মনে করেন যে তাঁর সঙ্গীর অন্য কারও সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। যদিও তা বাস্তবে সত্য নয়। এই সন্দেহপ্রবণতাকে বলা হয় মরবিড জেলাসি, যার আরেকটি পোশাকি নাম ওথেলো সিনড্রোম। শেক্সপিয়ারের নাটকের চরিত্র ওথেলো এই সন্দেহের ভূতের কবলে পড়ে তাঁর স্ত্রী ডেসডিমোনাকে হত্যা করেছিলেন।

ভ্রান্ত বিশ্বাস, খুঁতখুঁতে মনোভাব থেকে এ সমস্যা হয়ে থাকে অনেকের। এই সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তির স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড ব্যাহত হয়। সাধারণত ব্যক্তিত্বের ধরন, পারিপার্শ্বিকতার প্রভাব, আর্থিক অসংগতি, নিজের যৌন দুর্বলতা, আত্মবিশ্বাসের অভাব, মাদকে আসক্তি, মানসিক রোগ ইত্যাদি কারণে সন্দেহপ্রবণ হয়ে ওঠে ব্যক্তি। সন্দেহের কারণে অতি উৎকণ্ঠা, বিষণ্নতা, খুঁতখুঁতে বা মারমুখী আচরণ, ঘুমের সমস্যাও দেখা যায়। সন্দেহ দিনের পর দিন চলতে থাকলে দাম্পত্য সম্পর্কে ফাটল দেখা যায়, পারিবারিক সম্প্রীতি নষ্ট হয়। সবচেয়ে ভয়াবহ হলো সন্দেহের বশবর্তী হয়ে সন্দেহভাজনকে হত্যা, সন্তান হত্যা, গুরুতর আঘাত বা আত্মহত্যার মতো ঘটনাও ঘটতে পারে।

সন্দেহের বিষয়টি যখন বড় আকার ধারণ করে, তখন সেটাকে বলা হয় প্যারানয়েড ডিলিউশন। যাঁর মধ্যে এ সমস্যা থাকে, তিনি তাঁর সঙ্গীকে অবিশ্বাস করেন, বিশ্বাস করেন আশপাশের সবাই তাঁর ক্ষতি করতে চায়, কখনো মনে করতে পারেন তাঁর কাছের মানুষেরা তাঁর খাবারে বিষ মিশিয়ে দিচ্ছে ইত্যাদি। অপর দিকে ওথেলো সিনড্রোমের ক্ষেত্রে সন্দেহটি খুবই সুনির্দিষ্ট, সঙ্গীর অন্য কারও সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে—এই ভ্রান্ত বিশ্বাসের মধ্যেই সন্দেহ সীমাবদ্ধ।

সন্দেহের ভূত তাড়াতে:

দাম্পত্য সম্পর্কের মধ্যে সাধারণ ভুল-বোঝাবুঝি বা সন্দেহ তৈরি হলে বিষয়টিকে বড় হতে না দিয়ে শুরুতেই তা নিয়ে একে অপরের সঙ্গে আলোচনা করুন।
আপনার সন্দেহটি সঠিক কি না, তা বারবার যাচাই করে দেখুন।
সুস্পষ্ট প্রমাণ ছাড়া সঙ্গীকে দোষী সাব্যস্ত করবেন না, সন্দেহের ঘটনাটি তাঁর দিক থেকেও দেখুন।
সন্তানদের এই বিষয়ে জড়াবেন না।
গোপনে নজরদারি এড়িয়ে চলুন, গোয়েন্দার ভূমিকায় না থেকে বন্ধুর ভূমিকায় বিষয়টি জানার চেষ্টা করুন।
অধীনের কর্মচারী, কাজের লোক, গাড়িচালক বা নিরাপত্তাকর্মীদের কাছ থেকে এ বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করবেন না।
আপনাদের সম্পর্কে ফাটল ধরাতে তৃতীয় কেউ ষড়যন্ত্র করছে কি না, তা যাচাই করুন।
আপনি নিজে সন্দেহের শিকার হলে, সাময়িক সমাধানের জন্য মিথ্যা বলবেন না।
হঠকারী আচরণ এড়িয়ে চলুন।যদি মনে হয়, এটি সাধারণ ভুল-বোঝাবুঝির চেয়ে কিছু বেশি বা দুজনের কারও মধ্যে কোনো মানসিক সমস্যা রয়েছে, তবে দেরি না করে দ্রুত মানসিক রোগবিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

আহমেদ হেলাল (প্রথম আলো)