পাঁচবছর প্রেম করার পর দিয়া বিয়ে করে সৌরভকে। এমবিএ-র টিউশন ক্লাসে প্রথম আলাপ। তারপর দু’জনে চাকরি পেয়ে যাওয়ার পর, বিয়ে। কিন্তু সম্পর্কটা বড্ড তাড়াতাড়ি বদলে গেল। সৌরভ কর্পোরেট জগতের সিঁড়ি বেয়ে তরতর করে অনেক উঁচুতে পৌঁছে গেল। কিন্তু দিয়ার এই ইঁদুর দৌড়ের জীবন বেশিদিন ভাল লাগল না। চাকরি ছেড়ে নিজের বুটিক খুলল দিয়া। এই ব্যবসার সূত্রেই আলাপ নির্মাল্যর সঙ্গে। ও পেশায় ফোটোগ্রাফার। কাজের সূত্রেই বন্ধুত্ব গাঢ় হয়েছে। কিন্তু কখনও কখনও দিয়ার খুব অনুশোচনা হয়। দিয়া ভাবে ও কি ঠিক করছে? স্বামীকে কি ও ঠকাচ্ছে? এই বন্ধুত্বের পরিণতিই বা কী?
জীবনের অনেক ক্ষেত্রে আমরা এই ধরনের প্রশ্নের সম্মুখীন হই। কমিটেড রিলেশনে থেকে বিপরীত লিঙ্গের মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব নিয়ে আমাদের মধ্যে নানা টানাপড়েন কাজ করে। অনেক সময় এই বন্ধুত্বই কোনও রিলেশনে ঝগড়া, মনোমালিন্য, সন্দেহের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এইসব ক্ষেত্রে মাথা গরম না করে ঠান্ডা মাথায় ডিশিসন নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
আসলে সংসারের বাইরে ফ্রেন্ড সার্কল থাকা খুব প্রয়োজন। স্কুল কলেজের পুরনো বন্ধু, প্রতিবেশি, অফিস কোলিগ বা অন্য কেউযাঁর সঙ্গে সময় কাটাতে আপনার ভাললাগে তিনিই আপনার বন্ধু। বন্ধুত্ব সাংসারিক একঘেয়েমি থেকেও মুক্তি দেয়। বাইরের পৃথিবীর সঙ্গে যোগাযোগ ঘটায়। হতেই পারে আপনার বন্ধুদের মধ্যে কেউ কেউ পুরুষ। হয়তো অন্যদের থেকে আপনারা একে অপরকে বেশি বোঝেন। একে অন্যের সমস্যাগুলো গভীরভাবে অনুভব করেন। এই সম্পর্কে অপরাধবোধের কোনও জায়গা নেই। কিন্তু এই সম্পর্ককে বন্ধুত্বের পর্যায়েই রাখুন। এমন কিছু করবেন না যা নিয়ে পরে অপ্রস্তুত অবস্থায় পড়তে হয়। আপনার দাম্পত্যের প্রাইভেসির মধ্যে বন্ধুকে না ঢোকানোই ভাল। ভবিষ্যতে অশান্তি হতে পারে। বন্ধুর ব্যাপারে স্বামীকে কখনও অন্ধকারে রাখবেন না। সম্পর্কের খঁুটিনাটিতে না গিয়ে বন্ধুর ব্যাপারে ওঁকে জানিয়ে রাখুন।
• আপনার স্বামী এবং বন্ধু দুজন সম্পূর্ণ আলাদা মানুষ। দুজনেরই নির্দিষ্ট কিছু দোষগুণ রয়েছে। হয়তো আপনার স্বামীর কোনও ঘাটতি রয়েছে যা বন্ধুর মধ্যে নেই। এই গুণের জন্যে তাঁকে অ্যাডমায়ার অবশ্যই করবেন কিন্তু সেই সঙ্গে এটাও মনে রাখুন যে এর জন্যে কোনও মানুষ পুরোপুরি খারাপ হয়ে যান না। তাছাড়া স্বামীর সঙ্গে জড়িয়ে আছেন পরিবারের অন্যান্য সদস্য এবং সন্তান। নতুন বন্ধুত্বে এই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারগুলো মনে রাখবেন।
• স্বামীর সঙ্গে আপনার বন্ধুর আলাপ করিয়ে দিন। হয়ত ওরাও একে অপরের বন্ধু হয়ে উঠবেন। বন্ধুর পরিবারের সঙ্গেও ভাল সম্পর্ক গড়ে তুলুন। ছুটির দিনে নিমন্ত্রণ, একসঙ্গে বেড়াতে যাওয়ার মতো অ্যাক্টিভিটি দুই পরিবারকে কাছাকাছি আনবে।