সঙ্গীর মান ভাঙাবেন কিভাবে !

যে মানুষটি মনের সবচেয়ে কাছে, যে মানুষটিকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসি আমরা, তাঁর সাথেই কিন্তু মান-অভিমান হয় সবচেয়ে বেশি! মনে করে দেখুন তো, তাঁর অবজ্ঞা, তাঁর একটুখানি অবহেলা কতখানি কষ্ট দেয় আপনাকে। একই ব্যাপার কিন্তু তাঁর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। আপনার অবহেলা, আপনার তাচ্ছিল্য কতটা কষ্ট দেয় তাঁকে।মাঝে মাঝে ছোট খাটো বিষয় নিয়ে ভালোবাসার মানুষটির সাথে রাগারাগি হয়, হয় মান অভিমান।ভালোবাসার মানুষটি অভিমান করে থাকলে কোনো কিছু যেন ভালো লাগেনা। আর তাঁর মনে যে অভিমানের সৃষ্টি হয়েছে, সেটা দূর করার কথা নিয়েও আপনার দুশ্চিন্তার শেষ থাকে না।মান-অভিমানের তিক্ততা দূর করে সম্পর্কটা আবার মধুর করে তুলতে চাই বাড়তি কিছুর ছোঁয়া। আহামরি কিছু নয়, বরং আপনার সামান্য আন্তরিকতা আর ছেলেমানুষিতেই সম্পর্কটা হয়ে উঠতে পারে আগের চাইতেও মধুর। ভালোবাসায় একটুখানি ছেলেমানুষি,একটুখানি পাগলামি করাই যায়। বয়স যাই হোক,ভালোবাসা তো কখনো পুরনো হয় না।জেনে নিন ভালোবাসার মানুষটির মান সহজেই ভাঙিয়ে ফেলার কিছু উপায় সম্পর্কে।

‘সরি’ বলুন:মন থেকে বলুন ‘সরি’ এ এমন এক শব্দ যা আপনার গলার স্বর, বডি ল্যাঙ্গুয়েজ সব কিছুতেই প্রতিফলিত হয়। তাই মন থেকে ‘সরি’ বলছেন কিনা, তা বুঝতে পারেন কাছের মানুষ। তাই ‘সরি’ বলুন ইগো ঝেড়ে, দ্বিধা সরিয়ে। আন্তরিকতার পরশ যেন মিশে থাকে আপনার ‘সরি’-তে।

দেরি করবেন না: সমস্যা বাসি করবেন না। এটাই সুখী সম্পর্কের অন্যতম চাবিকাঠি। খুচখাচ ঝগড়া জীবনের সঙ্গেই স্বাভাবিক হয়ে যায় ঠিকই। কিন্তু কিছু মুশকিল বেয়াড়া। তা সরাতে খাটতে হয়। আর এই খাটনিতে দেরি করলে তার আর দাম থাকে না। তাই আপনার তরফেও কিছু ভুল হয়েছে বুঝলে সঙ্গীর এগোনোর অপেক্ষা না করে আগে ‘সরি’ বলুন।

ইগো ছাড়ুন: ‘ইগো’ নামের মারাত্মক বোধ অকারণে স্থান-কাল-পাত্র ভুলে আমাদের পথ আগলে দাঁড়ায়। তাই সরি বলতে যাওয়ার আগে রাস্তা আটকে দিন ইগো’র। ভালোবাসলে কখনো ‘নত’ হতেই হয়। তাতে লজ্জা থাকে না, বরং কাছের মানুষের হৃদয় ছুঁয়ে হয়ে ওঠা যায় আরও প্রিয়। না বুঝলে বুঝবেন, ভালোবাসায় গলদ আছে।

আলিঙ্গন করুন: ভালোবাসার মানুষটির মান ভাঙ্গাতে আলিঙ্গনের বিকল্প নেই। তাই ভালোবাসার মানুষটির মান ভাঙ্গাতে তাকে আলিঙ্গন করে ভালোবাসা প্রকাশ করুন। আপনার ভালোবাসার উষ্ণতায় নিমিষেই গলে যাবে তার মন।

চিঠি লিখুন: আপনি তাঁকে কতটা ভালোবাসেন, তাঁর জন্য কতটা ভাবেন, তাঁকে কষ্ট দিয়ে আপনি নিজে কতটা কষ্টে আছেন এসব লিখে ফেলুন এক টুকরো কাগজে। তারপর চিঠিটা গুঁজে দিন তাঁর হাতে। চিঠিটা পড়ার পর তিনি দেবেন তাঁর শ্রেষ্ঠ হাসিটা!

চিঠি/কার্ড পোস্ট করুন:তাঁর মন আরো ভালো করতে, তাঁকে আরো চমকে দিতে আপনার চিঠিটা পোস্ট করুন ডাকে বা কুরিয়ার করুন তাঁর ঠিকানায়। অথবা পাঠাতে পারেন আপনার অনুভূতি লিখে কোনো কার্ড। তিনি না খুশি হয়ে কোথায় যাবেন! আজকালকার যুগে ডাকে একটা চিঠি পাওয়া রীতিমত সারপ্রাইজ বৈকি।

ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিন:তারুণ্যের সম্পর্কে ফেসবুকে খুব চমৎকার একটা স্ট্যাটাস দিয়ে ভালোবাসা প্রকাশ করাটাও কিন্তু হতে পারে মান ভাঙানোর একটি চমৎকার কৌশল। মিষ্টি কিছু কথা বলে দিয়ে দিন না চমৎকার একটি স্ট্যাটাস। সাথে লিখে দিন প্রিয় গানের কয়েকটি লাইন। দেখবেন সে রাগ করে থাকতেই পারবে না।

চকলেট উপহার দিন:তাঁর প্রিয় চকলেট তাঁকে উপহার দিন। চকলেটের মিষ্টতা আপনাদের সম্পর্কের তিক্ততাকে দূর করে দেবে। আর হ্যা, সাথে ‘ভালোবাসি’ লেখা একটা কার্ড দিতে ভুলবেন না যেন! বিশেষ করে প্রেমিকার মান ভাঙাতে প্রেমিকদের তরফ থেকে এই চকলেট থেরাপি সর্বদাই কাজ করে।

গান গেয়ে শোনান:ব্যাপারটা একটু সিনেমাটিক হয়ে গেলেও তাঁর জন্য গান গেয়ে উঠুন। আপাতদৃষ্টিতে বিষয়টি ছেলেমানুষী মনে হলেও কাজে কিন্তু দেবে! আপনার হেঁড়ে গলায় গান শুনে তিনি মন খারাপ ভুলে হেসেও ফেলতে পারেন।

শপিং করতে নিয়ে যান:কেনাকাটা করিয়ে মান ভাঙানো কিন্তু দারুণ একটা আইডিয়া! সারপ্রাইজ গিফট তো আপনি দিয়েই থাকেন, এবার তাঁকে নিয়ে শপিংয়ে চলে যান। তাঁর পছন্দমতো জিনিস তাঁকে কিনে দিন। এই উপায় কাজ দেবেই! একসাথে দুজনে ঘুরতে ঘুরতে দেখবেন অভিমান কোথায় উড়ে গেছে!

ভালবাসুন: সব সময় কেবল ‘সরি’-তে মন না উঠলে, ঝগড়া মেটাতে গিয়ে দেখা হলেই সরি-র বদলে চওড়া হাসুন। এতে আপনার আন্তরিকতা সামনে আসবে। ভালোবাসার প্রকাশ থাকুক আপনার আচরণে। চাইলে নিরালায় একান্তে সময় কাটান। দু’-একটা কাছের ছোঁয়াচ থাকুক না, ক্ষতি কি! দেখবেন, ‘সরি’ না বলেও কেমন কাজ হয়েছে।
সূত্র: দেশ বিদেশে, স্বাধীনবাংলা ২৪, প্রিয়.কম