তাড়াহুড়া করে ভুল সম্পর্কে জড়িয়ে যাচ্ছেন না তো?

হয়তো নতুন নতুন ভালো লাগছে কাউকে। দুজনের আলাপ-পরিচয় হয়েছে, মন বোঝার চেষ্টা চলছে, কয়েকবার বাইরে বেড়াতেও গিয়েছেন। এই ব্যাপারটাকেই সহজ ভাষায় ডেট করা বা ডেটিং বলে। ডেটিং হছে সম্পর্ক শুরু করার আগের ধাপ। জানেন কি, অসংখ্য ভুল সম্পর্ক তৈরি হবার পেছনে একমাত্র কারণ হচ্ছে ডেটিং-এর সময় তাড়াহুড়া করা। কারণ এতে ভালো করে কিছু ভেবে দেখার আগেই সম্পর্ক হয়ে যায় এবং এক সময়ে সেই সম্পর্কই সর্বনাশ ডেকে আনে। সম্পর্ক হুট করে ভেঙে দেয়ার জিনিস যেমন নয়, তেমনই হুট করে তৈরি করার ব্যাপারও নয়। সম্পর্ক তৈরি করা চাই সময় নিয়ে, আস্তে আস্তে। যে সম্পর্ক যতটা সময় নিয়ে শুরু হবে, তার টিকে থাকার সম্ভাবনাও ততটাই বেশি।

কীভাবে বুঝবেন তাড়াহুড়া হচ্ছে কিনা? জানিয়ে দিচ্ছি কিছু লক্ষণ। এই ১০টি লক্ষণ মিলে গেলে বুঝবেন যে প্রেমের শুরুতে ভীষণ তাড়াহুড়ো করছেন আপনি এবং এখনই তা বন্ধ করা উচিৎ।  নতুবা শেষ হবে আপনার মন ভাঙার মধ্যে দিয়ে!

নিঃসঙ্গতা কাটানোর জন্য আপনি প্রেম চান: হয়তো কিছুদিন আগেই অন্য একটা সম্পর্কের সমাপ্তি ঘটেছে আপনার জীবনে। কিংবা হয়তো একা থাকতে থাকতে বিয়ে করার জন্য অস্থির হয়ে উঠেছেন আপনি। যদি কেবল এই কারণেই সম্পর্ক করতে চান কারণ আপনি নিঃসঙ্গ, তাহলে বুঝতে হবে তাড়াহুড়া করে ভুল সম্পর্কে জড়াতে চলেছেন অচিরেই।

ঘনঘন মেসেজ আদান-প্রদান চলছে: আপনি একটু পর পরই তাঁকে মেসেজ দিচ্ছেন বা কল করছেন।  তিনি কখনো জবাব দিচ্ছেন, কখনো দিচ্ছেন না। অর্থ একটাই, আগ্রহ আপনার তরফ থেকে অত্যন্ত বেশি। এবং এতটা আগ্রহ দেখালে সেই সম্পর্কটি শেষ পর্যন্ত না টেকার সম্ভাবনাই বেশি। কেননা প্রত্যেক মানুষেরই খানিকটা প্রাইভেসি প্রয়োজন আছে। দুই পক্ষের মাঝে সমান সমান আগ্রহ থাকলে তবেই সম্পর্ক স্থায়ী হয়।

অল্প দিনেই কিছু আর গোপন নেই : সম্পর্কের শুরুতেই সবকিছু পরিষ্কার ভাবে জানিয়ে দেয়া ভালো। কিন্তু সেটার অর্থ এই নয় যে নিজের বা পরিবারের ব্যাপারে সকল তথ্য বা দুর্বলতা প্রকাশ করে দিতে হবে। যেমন, আপনার পিতা কী কাজ করেন সেটা আপনি বলতে পারেন, কিন্তু আপনার পিতার কাছে কী পরিমাণ অর্থ আছে সেটা বলা অনুচিত। সম্পর্কের শুরুতেই এই অন্ধ বিশ্বাস ভালো নয়।

তাঁকে নিয়ে প্রায় সারাদিন কাটাচ্ছেন : সারাদিন তার সাথে চ্যাট বা কথা হচ্ছে, ঘন ঘন দেখা করতে যাচ্ছেন অথবা তার আথেই সারাক্ষণ থাকা হচ্ছে? জেনে নিন, সম্পর্কের শুরুতেই আসলেই খুব তাড়াহুড়া করছেন আপনি। এমন আচরণে সঙ্গীর চোখে নিজের মুল্যও কমিয়ে দিচ্ছেন।

একতরফা ‘ভালবাসি’:   সঙ্গী এখনও আপনাকে কিছু জানান নি, কিন্তু আপনি নিজেই ‘ভালবাসি’ বলে ফেলেছেন এবং ভবিষ্যতের স্বপ্ন সাজাতে শুরু করে দিয়েছেন।  এতে সঙ্গীর সম্মতি আছে কিনা, সেটা নিয়েও বিশেষ ভাবছেন না আপনি। অবস্থা যদি এমন হয়ে থাকে, নিজের লাগাম টেনে ধরার সময় হয়েছে আপনার।

নেগেটিভ ব্যাপারগুলো আমলে নিচ্ছেন নাঃ সঙ্গীর ভালো না লাগার ব্যাপারগুলো নিয়ে ভাবছেন না আপনি, এসবের সাথে জীবন কাটাতে গেলে কী হবে সেটা নিয়েও ভাবছেন না। সমস্ত ভালো না লাগার ব্যাপারগুলো দেখেও না দেখার ভান করছেন? জেনে রাখুন, এভাবে সম্পর্ক তৈরি হলে পরিণতি হবে খুব খারাপ।

বিয়ের পরিকল্পনা নিয়ে ভাবছেনঃ সম্পর্ক এখনও শুরুও হয়নি, আপনি ভাবছেন কীভাবে বিয়েতে তাঁকে রাজি করানো যায়। কীভাবে পরিবারকে রাজি করাবেন, বিয়ে কীভাবে হবে, সন্তান কয়জন নেবেন ইত্যাদি ভাবতে শুরু করেছেন। এমনকি বন্ধুদেরকেও এসব বলে ফেলেছেন আপনি, বিভোর আছেন সুখ স্বপ্নে। ব্যাপার যদি তাই হয়ে থাকে, তাহলে স্বপ্ন থেকে বেরিয়ে আসার সময় হয়ে গেছে নিশ্চিত।

যত দ্রুত সম্ভব যৌন সম্পর্ক চানঃ আপনার মনে হয় যত দ্রুত সম্ভব যৌন সম্পর্ক করে ফেলা উচিত। শারীরিক সম্পর্ক হয়ে গেলেই সঙ্গী আর আপনাকে ছেড়ে যাবেন না, এমনটাই মনে করেন আপনি। সত্যি কি তাই? তাহলে অবশ্যই সম্পর্কের শুরুতে অতিরিক্ত তাড়াহুড়া করছেন আপনি।

তার বাসায় যাবার জন্য অস্থির হয়ে উঠেছেনঃ প্রেম এখনও শুরু হয়নি, কিন্তু আপনি তার বাসায় যেতে চান। তার পরিবারের সাথে পরিচিত হতে চান এবং এই কারণে তাঁকে চাপও দিচ্ছেন। মনে হতে পারে, এতে ভুল কী আছে? তাহলে জেনে রাখুন, পরিবারের কাছে আপনাকে নেয়ার মতন হলে তিনি নিজেই নেবেন। এটা সেই সম্মান, যা জোর করে আদায় করার মাঝে কোন সার্থকতা নেই।

তাঁকে বদলে ফেলার জন্য চাপ দিচ্ছেনঃ আপনি তাঁকে বদলে ফেলতে চান এখনই। হয়তো সিগারেট ছেড়ে দিতে বলছেন, কিংবা বাঁধা দিচ্ছেন পছন্দ মত পোশাক পরিধানে। তার বন্ধু-বান্ধব নিয়ে কথা বলছেন, ব্যক্তিগত ব্যাপারে নাক গলাচ্ছেন। কাউকে চাপ দিয়ে বদল করে সম্পর্কের নাম ভালোবাসা নয়। বরং কেউ আপনার জন্য নিজ থেকে নিজেকে সংশোধন করাই ভালোবাসা। আর সেটার জন্য প্রয়োজন সময়।

নতুন সম্পর্কের শুরুতে তাড়াহুড়া আপনাকে আবারও মন ভাঙার দিকেই নিয়ে যাবে। তাই ধৈর্য রাখুন। ভালোবাসা যদি আসার থাকে, সেটা ঠিক আসবে।  সঠিক সময়ে সঠিক সম্পর্কই সুখ আনবে, তাড়াহুড়া নয়।   উৎস –প্রিয়.কম